ভালোবাসি বলে দাও পর্ব ২০

0
438

#ভালোবাসি_বলে_দাও
#আরিশ❤আরু
#Suraiya_Aayat

২০+বোনাস পর্ব.

এডমিশন নিয়ে বার হওয়ার পরপরই শুরু হলো আরিশ ভাইয়ার বিশ্ব বিখ্যাত সব বানী-
‘ঠিক মতো পড়াশোনা করবে। ‘

‘বেশি লাফালাফি ছটফট করবে না। ‘

‘পড়াশোনায় সিরিয়াস হও দুজনেই। ‘

‘ডিএমসি তেই চান্স পাওয়া লাগবে দুজনকেই। ‘

‘পড়ার সময় বাড়াতে হবে। মেইন টার্গেট এ ফোকাস করতে হবে। ‘

ওনার এতো আজাইরা কথা আমি আর সানা কানের একপাশ দিয়ে প্রবেশ করাচ্ছি আর এক পাশ দিয়ে তাদের বহির্গমন করাচ্ছি।
আমি আর সানা সরস্পরের হাত ধরে আছি আর উনি পাশাপাশি হাটছেন। ওনার এই মহামূল্যবান ভাষন থামাথামির নাম নেই দেখে আমি কথার মাঝে বাধা দিয়ে বলে উঠলাম,
‘ কই সবকিছুর মাঝে এটা তো বললেন না যে ভালো করে পড়াশোনা না করলে রিকশা ওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দেব। ‘

কথাটা শোনার পরপরই আরিশ ভাইয়া থেমে গেলেন যেন ওনার পা দুটো কেও আটকে নিয়েছে। এমন গম্ভীরতার মাঝে সানা হঠাৎ হো হো করে হেসে উঠলো আর আমি ওনার মুখ এর দিকে তাকালাম। উনি আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। আমার আর বোঝা বাকি রইলো না যে এই কথাটা অন্তত ওনার সামনে বলা উচিত হয়নি। অপরদিকে সানার হাসিতে আমার কান ফেটে আসার উপক্রম। উনি কিছু বলছেন না, আমি বুঝলাম এটা মটেও উপযুক্তকর পরিস্হিতি নয় আমার জন্য। আমার সময় থাকতে থাকতে এখান থেকে কেটে পড়া উচিত। আমি সানার হাত ছেড়ে আর ওনার সেই অগ্নিদৃষ্টির ভয়াল তাপমাত্রার সীমারেখার বাইরে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গাড়ির দিকে হাটা দিলাম।
সানা এখনো হেসেই চলেছে তা আমার কানে ভেসে আসছে। আর উনি ঠিক কিভাবে এখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমার জানা নেই। আমি গাড়িতে এসে বসে রইলাম চুপ করে, আজকে উনি যদি আর কোনপ্রকার চড় মারেন তো ওনার সাথে আমি আর থাকবো না কোনমতেই না।

কথাটা মনে মনে ভাবতে ভাবতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি, পাশে সানা এসে বসলো, সে এখনো খুট খুট করে হাসছে। উনি ড্রাইভিং সিট এ বসলেন আর রাসভারী কন্ঠে বলে উঠলেন,
‘ আমাকে কি তোমাদের ড্রাইভার মনে হয়? ‘

ওনার কথা শুনে আমি বুঝলাম না যে উনি ঠিক কি বোঝানোর চেষ্টা করছেন। বেশি বুঝতে যাওয়ার চেষ্টা করতেই উনি আমাকে উদ্দেশ্যে করে ধমক দিয়ে বললেন,
‘সামনে এসে বসো। ‘

আমি সানার দিকে তাকালাম, সে আমাকে সময় নষ্ট না করে যাওয়ার জন্য বললো। আমি দ্রুত নেমে গিয়ে তার পাশে গিয়ে বসলাম। করুন স্বরে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি আমার দিকে না তাকিয়েই বললেন,
‘কি হয়েছে, এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? ‘

‘আপনি আমাকে মাঝ রাস্তায় গাড়ি থেকে ঠেলে ফেলে দেবেন না তো? ‘

উনি গাড়ির স্টার্ট দিয়ে দ্রুত স্পিড বাড়াতেই আমি টলমল হয়ে গেলাম। সিটবেল্ট বাধা নেই আমার, উনি যেভাবে চালাচ্ছেন তাতে মুখে না বললেও এভাবে সিটবেল্ট ছাড়া বসলে আমি এমনিই পড়ে যাবো। আমি সিটবেল্ট লাগাতে লাগাতে বিড়বিড় করে উঠলাম,
‘এমন রেকলেস ড্রাইভিং করার জন্য আপনাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিতে চাওয়া আমার নিষ্পাপ মন। ‘

কথাটা বোধহয় উনি শুনতে পেলেন আর বললেন,
‘থাপ্পড় খেতে না চাইলে মুখ বন্ধ রাখো। আজাইরা কথা কিভাবে বলো এতো? ‘

আমি চুপ হয়ে গেলাম ওনার কথা শুনে। উনি কখন ভালো মুডে থাকেন আর কখন ওনার মুডের ওপর কে পেট্রোল ডিজেল ছড়িয়ে আগুন লাগিয়ে দেন তা আমার জানা নেই।
সানা ফিকফিক করে হাসছে, আমার মতো একটা অসহায় মেয়ের ওপর। মাঝে মাঝে আমার প্রশ্ন হয় যে এই পৃথিবীতে মনুষত্ব নামের জিনিসটা কি চিরতরে উঠে গেল নাকি?

/

না উনি কোন কথা বলছেন না আমি কোন কথা বলতে পারছি, সানা মোবাইলের মাঝে ঢুকে আছে তাই সেও কথা বলতে নারাজ। এই পরিবেশে আমার একটা গানের কথাই মনে আসছে ভীষনরকম,
‘Such a boring day….
such a boring people… ‘

কিন্তু এই গানটা এখন ওনার সামনে গাইলে উনি বোধহয় সত্যিই আমাকে মাঝ রাস্তায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দেবেন। আচ্ছা উনি যে খুবই বোরিং একটা মানুষ সেটা কি ওনার মেনে নিতে কষ্ট হয়?
এমন পরিবেশ আমার কেবল ঘুম পায়, আমি চোখটা বন্ধ করে গাড়ির সিটের সাথে মাথা এলাতেই দেখলাম উনি স্লো মোশন এ গাড়ি চালাতে শুরু করলেন। আমি যতদূর জানি এরপর আমরা শপিং মলে যাবো আর এতো এতো শপিং করবো।
শপিং মল এলে উনি নিশ্চয়ই আমাকে ‘এই মেয়ে’ বলে ধমক দিয়ে হলেও ডাকবেন। কথাটা ভেবে একটা আরামের ঘুম দিতে লাগলাম। কত সেকেন্ড, কত মিনিট বা কত ঘন্টা আমি ঘুমিয়েছি আমার মনে নেই, চোখ খুলে কাওকে দেখতে না পেয়ে আমি চমকে উঠলাম। একপ্রকার থতমত খেয়ে গেলাম আমি। ঘুমের ঘোরে থাকার দরুন এমনিতেই চোখ ছোট ছোট হয়ে আছে তারপর বাইরের তীব্র রোদ, যদিও গাড়িতে এসি বিদ্যমান।
আমি আমার পাশে, পিছনের দিকে সব জায়গায় ৯০ ডিগ্ৰি আর ১৮০ ডিগ্ৰিতে চাওয়াচাইয়ি করলাম, তাদের দুজনকে কোথাও দেখতে পেলাম না আমি। তারপর বাইরের দিকে তাকাতেই দেখি লেখা আছে,

‘Metro Shopping Mall, Mirpur Rd, Dhaka 1209’

আমি ধড়ফড় করে উঠে পড়লাম তা দেখে। তাহলে কি আমার সন্দেহ টাই ঠিক? ওনারা কি আমাকে এখানে রেখেই একা একা শপিং করতে চলে গেছেন।
আমি জনি যে উনি জাতীয় অভদ্র। কিন্তু সানা সে তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, সে কি করে আমাকে একা রেখে চলে যেতে পারলো? কথাটা ভাবতেই আমি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলাম। আমার চোখের ঘুম উড়ে গেল নিমেষেই। দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম আমি, এতখন এসির বাতাস খেয়ে এখন বাইরের চড়চড়ে রোদে দাঁড়াতেই মনে হলো কেও গায়ে গরম পানি ঢেলে দিয়েছে। এত ভাবাভাবির সময় নেই আমার। আমি পা চালিয়ে মলের দিকে যেতে লাগলাম। আমার সাথে এমন ব্যাভিচার আমি সহ্য করবোনা কোনভাবেই, ওনাকে কল করলাম দুইবার উনি ধরলেন না আর সানার ফোন নেটওয়ার্কের বাইরে। আমার রাগ হচ্ছে ভীষনরকম। শপিং মলে ঢুকতে যাবো তখনি আম্মুর এক ফ্রেন্ডের সাথে দেখা। উনি আমাকে দেখামাত্রই উচ্ছাসিত হয়ে চেঁচিয়ে বললেন,
‘আরে তুমি আফসানার মেয়ে আরু না? মাশাআল্লাহ কি সুন্দর হয়ে গেছ দেখতে? ‘

আমার মাথায় এমনিতেই রাগে দাওদাও করছে তারপর ওনার এমন কথা শুনে অবাক হওয়ার ভান করে বললাম,
‘ কেন আন্টি আমি আগে কি খারাপ দেখতে ছিলাম। ‘

উনি হেসে আমার গালে চুমু দিতেই আমি হাত দিয়ে ওনার চুমু মুছে নিলাম। উনি বললেন,
‘ আরে তা কেন হতে যাবে। তুমি আগে তো আরও বেশি গোলগাল ছিলে, এখন একটু ওজন কমিয়েছো মনে হচ্ছে। তাও মুখটা দেখলে মায়ায় পড়ে যায়। ‘

আমার মনটা অস্থির হয়ে আছে শপিং মলে ঢোকার জন্য আর এদিক আমার আম্মুর কোন কস্মিনকালের বান্ধবী উনি এই মুহূর্তে আমার পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বললেন,

‘ তোমার মনে আছে তুমি যখন ছোট বেলায় আমাদের
বাড়িতে আসতে তখন আমার ছেলে রাহানের সাথে কতো খেলা করতে। ‘

আমি শুনে একটু অবাকও হলাম বটে। আমার যতদূর মনে আছে আরিশ ভাইয়া আমার আশেপাশে উনি ব্যাতিত কাওকে আসতেই দিতেন না তাহলে এর মাঝে ওনার ছেলে রাইহান এলো কি করে।
আমাকে কল্পনার জগত থেকে বার করে এনে বললেন,
‘তোমার হয়তো মনে নেই, আর না থাকারই কথা। অনেকদিন তোমাদের বাসায় যাওয়া হয় না। ‘

আমি ওনার দিকে তাকিয়ে মিথ্যা একটা হাসি দিয়ে বললাম,
‘আমাদের বাসায় যাবেন, আম্মু খুশি হবে। আচ্ছা আমি এখন আসি আন্টি, আমার দেরি হচ্ছে। ‘

আমি যেতে নিলেই উনি আমার হাত ধরে বললেন,
‘ওমা একা যাবে নাকি? কেও আসেনি তোমার সাথে? ‘

ওনার এমন কথা শুনে মনে হলো যে বলেই ফেলি যে আমি একা এসেছি কারন আরিশ ভাইয়া আর সানা তো আর আমাকে তাদের সাথে নিয়ে যাননি।
আমি হাসতে হাসতে বললাম,
‘ জ্বি না আন্টি আমি একাই এসেছি। ‘

উনি এবার আমার হাতটা আরও শক্তপোক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললেন,
‘আচ্ছা তাহলে চলো আমিও তোমার সাথে শপিং এ যায়, তারপর তোমার সাথে তোমার আম্মুর সাথে দেখা করে আসবো। ‘

ওনার কথা শুনে আমি বুঝে উঠতে পারলাম না যে আমি নিজেই বিপদ ঘিড়ে টেনে আনলাম নাকি বিপদ নিজেই আমার ঘাড়ে এসে চাপলো। তাছাড়া শপিং করার মতো কানাকড়িও আমার কাছে নেই। আমি কিন্তু কিন্তু করলেও উনি শুনবেন না তা আমি ভালোই বুঝতে পেরেছি অতঃপর ওনার সাথে যাওয়া ছাড়া আর উপায় দেখলাম না। বাধ্য হয়ে ওনার সাথে মলের ভিতর ঢুকলাম। ওনার একহাত জুড়ে ইতিমধ্যেই জামাকাপড়ের ব্যাগে পরিপূর্ণ আর একহাত দিয়ে আমার বাম হাতটা জাপটে ধরে আছেন যেন আমি জেলের আসামী, উনি হাত ছাড়লেই আমি পালিয়ে যাবো।

থার্ড ফ্লোরে গেলাম আমি, সেখানে লেডিস ক্লোথ এর বেস্ট কালেকশান। কিছু কেনার জন্য না, আরিশ ভাইয়া আর সানকে খোঁজার জন্য। এদিক ওদিক জামাকাপড় দেখার ভান করছি আর ওনাদেরকে খোঁজার চেষ্টা করছি। উনি এখনো আমার হাত ছাড়েননি। আমি এটা পছন্দ না ওটা পছন্দ না বলে কোনরকম সময় পার করার চেষ্টা করছি কিন্তু উনি শোনার বান্দা না, উনি না পেরে বলেই উঠলেন,
‘আরে কিছু তো একটা নাও, অত সুন্দর সব জামা গুলো তোমার একটাও পছন্দ হচ্ছে না? ‘

আমি বুঝলাম উনি খানিকটা হলেও ব্যাথিত আম্মুর সাথে দেখা কথার জন্য। আমি কিছু পছন্দ করছিনা দেখে উনি নিজেই একটা জামা আমার গায়ের মাপ নিয়ে বললেন,
‘বাহ এটা তোমাকে বেশ মানাচ্ছে। তুমি এটা নাও। ‘

আমি না করবো কিন্তু উনি শুনলেন না। আমার হাত ধরে কাউন্টারের কাছে নিয়ে গেলেন। এতোটা সময়ে আরিশ ভাইয়া আর সানাকে একটিবারের জন্যও দেখলাম না আমি, আমি একা থাকলে বোধহয় এতখনে তাদের হদিশ লাগাতে পারতাম। কাউন্টারে গিয়ে আমার বুক এর ভিতর ধুকধুক করতে লাগলো, কারন আমার কাছে টাকা নেই। জামাটার দাম সাড়ে চার হাজার। আমি ব্যাগ থেকে টাকা বার করার ভান করতে নিলেই আন্টি বললেন,
‘আরে দূর বোকা মেয়ে, তোমাকে টাকা দিতে কে বলেছে। আমি দিচ্ছি। তোমার আঙ্কেলের কার্ড আছে না! আর কি চাই। বিয়ের জামাইয়ের কার্ডটা দখলে নিতে পারলেই কেল্লাফতে। তোমাকেও বলে রাখলাম কথাটা। ‘

এতখন পর আন্টিটাকে আমার বেশ কিউট মনে হতে লাগলো, আমি হেসে ফেললাম ওনার এমন কথাতে। উনি আমাকে নিয়ে বাইরে এলেন, হয়তো রিকশা ধরবেন কারন ওনার বাড়ি মিরপুরের কাছেই। আমি বাইরে যেতেই দেখলাম আরিশ ভাইয়া আর সানা গাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আমাকে আন্টির সাথে দেখে উনি ভ্রু কোঁচকালেন, আন্টিকে ইশারা করে বললাম,
‘আন্টি উনি আমার ভাইয়া। আমাকে নিতে এসেছেন মে বি। আপনি আমাদের সাথেই চলুন। ‘

আমি ভাবলাম উনি কিন্তু কিন্তু করবেন কিন্তু উনি কিছু বললেন না সহজেই রাজি হয়ে গেলেন। আমি আরিশ ভাইয়ার সামনে যেতেই দেখলাম উনি রিল্যাক্স হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আন্টিটা তার চোখ এর সানগ্লাস মাথায় তুলে বললেন,
‘ তুমি তো আরুর ভাইয়া তাইতো? ‘

আরিশ ভাইয়া একবার আমার দিকে গম্ভীর ভাবে তাকিয়ে তারপর ওনাকে মৌন স্বরে বললেন,
‘হমম।’

উনি আমাকে চমকে দিয়ে বললেন,
‘ আরুর মা আমার ফ্রেন্ড। আরুকে আমার ভীষন ভালো লাগে। তা বোনের বিয়ে দেবে না? ‘

ওনার কথা শুনে আমি ছ্যাত করে ওনার হাতটা ছেড়ে আরিশ ভাইয়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম যাতে উনি কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারেন যে আমরা বিবাহিত। এমনিতেই সকালে সেই ঘটনার পর থেকে উনি রেগে আছেন। তবে আমাকে আকাশে ছুঁড়ে আরিশ ভাইয়া আন্টিকে বললেন,
‘ভালো একটা উকিল খোঁজেন যে ভালো ঝগড়া করতে পারে, নিশ্চয়ই বিয়ে দেবো। ‘

কথাটা বলে দরজা খুলে দিয়ে আমাকে ইশারায় উঠতে বললেন। আমার হাত কাঁপছে উনি এসব কি বললেন যে ডক্টর পেলে আমার বিয়ে দেবেন। উনি যে রেগে আছেন তা বুঝতে বাকি নেই। সানা পিটপিট করে হাসছে। আন্টি গাড়িতে উঠে বললেন,
‘কিন্তু আমার ছেলে তো বিজনেস করে। ‘

আরিশ ভাইয়া শুধু বললেন,
‘বলুন ওকালতি শিখতে। ‘

আমি দমে গেলাম নিমেষেই। সাথে সবাই চুপ।

আমায় বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে আরিশ ভাইয়া বাসার দিকে গটগট করে হাটতে লাগলেন। আন্টি আর সানা পিছন পিছন আসছেন। শপিং এর পর এমনিতেও উনি আম্মুর সাথে আমাকে দেখা করতে আনতেন সেটা আমি জানতাম কিন্তু এর মধ্যে এতো কিছু হয়ে যাবে আমি সত্যিই ভাবিনি। আন্টি আম্মুকে দেখে খুশিতে গদগদ হয়ে গেল। আমি আর সেখানে নেই। আমি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলাম আর শুনলাম যে আম্মু আরিশ ভাইয়াকে দেখিয়ে বলছেন,
‘ওটা আরিশ। আমাদের জামাই। কালকে ওদের বিয়ে হয়েছে। ‘

আন্টির মুখ এর রিয়েকশান দেখার সময় এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই। আমি দৌড়ে রুমের দিকে ছুটলাম আর দেখলাম আরিশ ভাইয়াও আমার পিছন পিছন আসছেন। আমি রুমে ঢুকে দরজা দিতে নিলেই উনি তার আগেই ঢুকে রুমের দরজা দিয়ে দিলেন। উনি দরজায় হেলান দিয়ে হাতে হাত ভাজ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ওনার এ দৃষ্টি বোঝার ক্ষমতা আমার নেই। তবে আজ আমার কি হবে আমার জানা নেই।

#চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here