#ভালোবাসি_বলে_দাও
#আরিশ❤আরু
#Suraiya_Aayat
14.
আজকে আমার এইচএসসি এক্সামের শেষ দিন। প্রত্যেকটা দিন আরিশ ভাইয়া আমাকে আর সানকে দিয়ে এসেছেন এবং নিয়ে এসেছেন। সব দিন সব কটা এক্সাম ভালো হয়েছে। আজকে এক্সাম শেষ হিসাবে আরিশ ভাইয়ার কাছে আমি একটা ছোট্ট আবদার করেছি। উনি কি আমার ছোট্ট আবদার রাখবেন? উনি যদি আবদার না রাখেন তাহলে উনি কি আমার পচা আলাদিন?
সময়ের আগেই খাতা জমা দিয়ে সানার জন্য রুমের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি। সানার ও লেখার শেষ প্রায় তা ইশারা করে একবার বুঝিয়েছিল। আমি রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে এমন ভাবে পাইচারি করছি যেন আমি সানার গার্ডিয়ান। এক্সাম শেষ ভাবতেই ভীষনরকম ভাবে খুশি খুশি লাগছে। কালকে রাতে যখন আরিশ ভাইয়া ফোন করে বললেন,
‘কালকে আপনার এক্সাম শেষ! এনি অন্যায় আবদার মিস টুইটুই? ‘
ওনার কথাটা শুনে আমি খুব খুশি হয়ে গেছিলাম আর পড়া শেষ করে সারারাত ধরে ভেবেছি কি অন্যায় আবদারটা ওনার কাছে করা যায় যেটা উনি রাখতে পারবে না আর আমি ওনাকে ঝাড়ি দেওয়ার সুযোগ পাবো। আমি এক্সাম রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে পাইচারি করছি ঠিক সেই সময়ে আচমকা রুম থেকে সানা বার হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। হঠাৎ এমনটা হওয়াই আমি চমকে গেলাম।
ভয়ে ওকে ঝাড়ি দিয়ে বললাম,
‘এভাবে কেও আসে? ভয় পেয়ে গেছিলাম আমি। ‘
সানা হিহি করে হেসে বলল,
‘সরি দোস্ত।’
আমি মুখ ভাঙচি দিলাম। সানা আমার দু বাহু চেপে ধরে বলল,
‘ভাইয়া আজকে নিতে আসবে? না হলে চল না আমরা দুজন মিলে আজ ঢাকার অলিগলি ঘুরবো। সেই আনন্দ হবে। ‘
আমি ওর হাতটা ছাড়িয়ে বললাম,
‘উহুম তা হচ্ছে না। উনি বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তাড়াতাড়ি চল। ‘
কথাটা বলে হাত ধরে আমি আর সানা বেরিয়ে এলাম। বাইরে আরিশ ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছেন আর ওনার সাথে আজকেও সেই প্রথমদিনের মতো ফারিন আপু। ফারিন আপুকে দেখে আমার পায়ের গতি কমে গেল। সানা আমার কানের কাছে বিড়বিড় করে বলল,
‘ এই ফারিন আপু এখানে কেন? ‘
আমি অন্যমনস্ক হয়ে তাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে বললাম,
‘সে প্রথম এক্সামের দিনও এসেছিল। ‘
সানা অবাক হওয়ার ভাব করে বলল,
‘ কি বলিস। ‘
আমি আর জবাব দিলাম না। ওনাদের দুজনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম আর একবার আরিশ ভাইয়ার দিকে আর একবার ফারিন আপুর দিকে তাকাতে লাগলাম। ফারিন আপুকে বেশ হাসি খুশি লাগছে আর আরিশ ভাইয়া! ওনাকে দেখলে তো বোঝাই যায় না যে খুশি নাকি দুঃখী। আমাকে আর সানাকে দেখতেই ফারিন আপু মিষ্টি ভাষায় বললেন,
‘আরু আর সানা কেমন হলো এক্সাম? ‘
আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানালাম। তারপর নিরবে গাড়িতে উঠে গেলাম। সানা আমার পাশে বসে আমাকে খোঁচা দিয়ে বলল,
‘ব্যাপারটা কি রে? ফারিন আপু ভাইয়ার সাথে আবার। ‘
আমি বাইরে ওনাদের দিকে তাকালাম। আরিশ ভইয়া ফারিন আপুর দিকে ভ্রুনাক্ষরেও তাকাচ্ছেন না কেবল ফারিন আপুই হেসে হেসে কথা বলে যাচ্ছেন। ওনাদের দুজনকে আমার আর একসাথে দেখে সহ্য হলো না, গাড়ির জানালা থেকে মাথা বার করে বললাম,
‘ বাসায় যাবো আমি। লেট হয়ে যাচ্ছে আমার। ‘
আরিশ ভাইয়া ফারিন আপুকে বাই বলে গাড়িতে উঠলেন। শেষে ফারিন আপুর বলা কথাটা শুনে আমি অবাক হলাম বেশ।
‘ওদেরকে নামিয়ে দিয়ে সোজা আমাদের বাসায় আসবে কিন্তু। আমি অপেক্ষায় থাকবো। ‘
আরিশ ভাইয়া হ্যাঁ না কিছুই জানালেন না। উনি ড্রাইভ করতে শুরু করলেন। আমি কেবল ভ্যাবলার মতো আরিশ ভাইয়ার দিকে চেয়ে আছি। উনি এখনো পর্যন্ত আমার সাথে একটাও কথা বলেন নি। বুকের ভিতর কেমন একটা হয়ে উঠলো আমার। মনে মনে ভাবলাম ‘থাক আমিও তার সাথে কথা বলবো না।’
যা ভাবা তাই কাজ। ওনার সাথে কথা বললাম না আমি, উনিও বিন্দুমাত্র আগ্ৰহ দেখালেন না।
বাসার সামনে গাড়ি থামালেন উনি। আমি আর সানা নেমে গেলাম গাড়ি থেকে। আজ আম্মু পোলাও বানিয়েছে আমার এক্সাম শেষ সেই খুশিতে তাই সানা আর আরিশ ভাইয়ার দাওয়াত। সানা গাড়ি থেকে নামলেও আরিশ ভাইয়া গাড়ি থেকএ নামলেন না দেখে আমি মুখ গোমরা করে ওনাকে গম্ভীর ভাবে বললাম,
‘আম্মু দুপুরে খেতে যেতে বলেছিল আপনার মনে নেই? ‘
উনি গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বললেন,
‘মামী কে বলো আমার একটু কাজ আছে। আজকে আর খাবো না। অন্য কওন দিন। তঝয়রা যাও। ‘
সানাকে উদ্দেশ্যে করে উনি বললেন,
‘সানা আমি সন্ধ্যায় তোকে নিতে আসবো। ‘
কথাটা বলেই উনি চলে গেলেন। সানা আর আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম সেখানেই। সানাও হয়তো আরিশ ভাইয়ার এই অদ্ভুত আচরন লক্ষ করেছে। আমার গলা ধরে এলো, চোখটা ঝাপসা হতে লাগলো কিন্তু আমি কাঁদবো না। কথাটা ভেবে আমি সানাকে কিছু না বলে বাসায় ঢুকএ গেলাম, সানা আমার পিছন পিছন দৌড়াতে দৌড়াতে বলল,
‘দোস্ত দাড়া আমিও যাবো। ‘
/
পড়ন্ত বিকেল, সূর্য পশ্চিমে অস্ত যাবে প্রায়। পশ্চিম দিক এর আকাশটা ঘন কমলা বর্ন ধারন করেছে ইতিমধ্যে। হাতেগোনা কয়েকটা পাখির দেখা মিলছে, আবহাওয়া টা চমৎকার। দোলনার ওপর হাটু ভাজ করে হাটুতে মুখ গুজে বসে আছি আমি। বাসায় ফিরে শ্যাম্পু করে শাওয়ার নেওয়ার দরুন চুলটা একটু ভিজে তাই খুলে রেখেছি। সানা ছাদের কার্নিশে থাকা ফুল গাছগুলোকে ভালোভাবে দেখছে, কখনো কখনো ফুল এর ঘ্রাণ নিচ্ছে।
আমি সানার দিকে উদাস চাহনিতে তাকিয়ে আছি। আমাকে এমন ভাবে চুপ থাকতে দেখে সানা বলে উঠলো,
‘কি রে সেই ভাইয়া যাওয়ার পর থেকে দেখছি মন খারাপ করে আছিস। কিছু হয়েছে? ‘
আমি মাথা নাড়িয়ে জবাব দিলাম যে না কিছু হয়নি। সানা আমার কথা বিশ্বাস করলো না সহজে। টবে লাগানো ছোট্ট কাঠগোলাপ গাছ থেকে একটা গোলাপী রঙের কাঠগোলাপ ছিড়ে আমার কানে এসে গুঁজে দিতেই আমি চমকে গেলাম। ওর দিকে নির্বিকারে চেয়ে রইলাম। কান থেকে ফুলটা খুলতে গেলেই সানা ধমক দিয়ে বলল,
‘একদম খুলবি না। একদম মায়াবতী লাগছে আমাদের আরুপাখিকে। ‘
আমি পুনরায় আগের মতো করে বসে রইলাম। আমাকে এভাবে দেখে সানা বোধহয় বিরক্ত হচ্ছে বেশ তাই আমাকে পাশ দিয়ে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে বলল,
‘কি ফারিন আপুকে ভাইয়ার সাথে দেখলে তোমার বুকের ভিতর জ্বালা ধরে তাইনা? হমম হমম হমম। ‘
আমি সানার কথায় থতমত খেলাম। ওর দিকে বিরক্ত ভাব নিয়ে বললাম,
‘এসব আজাইরা কথা কোথায় পাস তুই? ‘
সানা মুখ টিপে হেসে বলল,
‘আচ্ছা আমি না হয় আজাইরা কথা বলি। তাহলে তুই এমন ভাবে চুপ করে আছিস কেন? ‘
আমি উত্তর দিলাম না। হঠাৎ পিছন থেকে কারোর কন্ঠস্বর শুনতে পেয়ে আমি চমকে উঠলাম। পিছন থেকে আরিশ ভাইয়া গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন,
‘ সানা তুই এখনও রেডি হসনি যে! ‘
সানা আরিশ ভাইয়া কে দেখে আমতা আমতা করতে শুরু করল।
‘আসলে তুমি তো সন্ধ্যায় আসবে বলছিলে কিন্তু এখনো তো সন্ধ্যা হয়নি তাই আর কি। আচ্ছা আমি গিয়ে রেডি হচ্ছি। ‘
কথাটা বলে সানা আমার দিকে মুখ চেপে হেসে চলে গেল। তার এই হাসির কারন আমি বুঝেছি। সে আমাকে বাঘের মুখে ফেলে রেখে দিব্যি চলে গেল। সানা চলে গেলেই আমিও চলে যাওয়ার চিন্তা আটলাম। অতঃপর ওনার পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই উনি আমার হাত ধরে আটকে ওনার সামনে এনে দাঁড় করালেন। আমি ওনার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলাম। দুজনের মুখ এই কোন কথা নেই কেবল উনি আমার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে আছেন নিরবে। আজ যেন কেও একে অপরের নিরবতা ভাঙাবো না তেমনটাই পন করেছি। এখন ওনার সামনে দিয়ে যদি ওনার পারমিশন ছাড়াই আমি নীচে যায় তো পারলে উনি আমাকে ছাদ থেকেই ফেলে দেন। আমি ওনার দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে বললাম,
‘আমি নীচে যাবো। ‘
উনি ইশারা করলেন যাওয়ার জন্য। আমি সাড়া পেয়ে ওনার পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই উনি পুনরায় আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,
‘যাই? ‘
উনি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাতেই আমি পুনরায় পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই উনি আবার সামনে এসে দাঁড়ালেন। আমি এবার না পেরে গমগম দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
‘সমস্যা কি আপনার? যেতে দিন আমাকে। ‘
উনি এবার আমার হাত ধরে ওনার সামনে এনে আমাকে দাঁড় করালেন। আমার রাগের মাত্রা দ্বিগুন হলো। মনে হলে না চাইতেও ওনাকে কয়েকটা কথা শোনানো উচিত কিন্তু ওনার মুখ এর দিক তাকিয়ে আমি পুরোপুরি দমে গেলাম। উনি আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছেন। কিছুখন থেমে আমার নিরবতাকে লক্ষ করে উনি বলে উঠলেন,
‘ মিস টুইটুই আবরার আরিশ খানের ওপর রেগে আছে বলে মনে হচ্ছে! ‘
আমি ওনার কথা শুনে ওনার দিকে পিটপিট করে তাকালাম। জবাব দেব না ওনাকে কোনভাবে।
উনি এবার আমার নাকটা টেনে দিয়ে বললেন,
‘ আপনার বয়সী কতো মেয়েদের নাকি বিয়ে হয়ে যায়, বাচ্চা অবধি হয়ে যায়। আর আপনি এইচএসসি দিয়েছেন, একটু বড়োও হয়েছেন, আপনি বিয়ে করবেন না? ‘
আমি ওনার দিকে তাকালাম চোখ ছোট ছোট করে। নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললাম,
‘মজা করছেন? ‘
উনি দুদিকে মাথা নাড়িয়ে আমি যেভাবে বলি সেভাবে বললেন,
‘উহুম একদম না। ‘
ওনার এমন নিষ্পাপ হাবভাব দেখল আমার একদম সহ্য হচ্ছে না। ওনাকে নিষ্পাপ হাব ভাবে একদম মানায় না। ওনার মাঝে নিশ্চয়ই কিছু ভেজাল আছে। আমি চোয়াল শক্ত করে বললাম,
‘যেতে দিন আমাকে। নাহলে ফারিন আপুকে গিয়ে বলে দিবো যে আপনি আমাকে বিরক্ত করছেন। তখন নিশ্চিয়ই আপনার ভালো লাগবে না। ‘
উনি ফারিন আপুর কথা শুনে কোন রকম পতিক্রিয়া দিলেন না কেবল বললেন,
‘ কাঠগোলাপটা তোমাকে মানাচ্ছে বেশ। নিশ্চয়ই এটা ফারিনদের বাড়ি থেকে আনা কাঠগোলাপ! ‘
ওনার এমন কথা শুনে ওনাকে আমার আর মোটেও সহ্য হলো না। ওনাকে দু হাত দিয়ে সজোরে ধাক্কা মারতে গেলেই উনি আমার হাতদুটো ধরে ওনার বুকের সাথে মিশিয়ে নিলেন আমাকে। কিছুখনের জন্য চারিপাশটা যেন কেমন নিস্তব্ধ হয়ে গেল, আমি বোধহয় বাক হারা হয়ে গেলাম। আমার হাইট অনুযায়ী আমার মাথা ওনার বুকে গিয়ে ঠেকলো। উনি আমাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে আছেন। আমি ওনার হৃদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছি। অদ্ভুত ভাবে আমার হৃদস্পন্দনও বাড়তে লাগল।
ওনার শরীর থেকে অদ্ভুত সুন্দর এক ঘ্রাণ ভেসে আসছে।
আমাকে ওনার বুকের মাঝে আগলে নিয়ে উনি আমার মাথায় তিনবার ফু দিতে দিতে বললেন,
‘এত রাগ কেন তোমার? ‘
আমার ওনার থেকে সরে আসতে একেবারেই ইচ্ছা করলো না, আমার রাগ গুলো যেন নিমেষেই দমে গেল। হয়তো আমি কখনো কল্পনাও করিনি যে কখনো আমি ওনার এতো কাছে আসবো। ওনার কথাতে আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম বেশ। না চাইতেও ওনার থেকে সরে এলাম আমি। ওনার দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস পাচ্ছি না তবুও এর হ্যালুসিনেশন কাটাতে ওনাকে রাগী রাগী ভাব নিয়ে বললাম,
‘মোটেও না। নিজের হিটলারী স্বভাব গুলো আমার মাঝে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। রাগ তো সবসময় আপনার নাকের ডগায় লেগে থাকে আবার আমাকে বলা হাহ! ‘
আমি লক্ষ করলাম উনি জবাব দিলেন না,কেবল ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন,আর আমি তা দেখে ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে বললাম,
‘এভাবে তাকিয়ে দেখছেন কি হ্যাঁ? আমি কি এলিয়েন নাকি হ্যাঁ? আর এভাবে হাত ধরে আপনার এতো কাছে টেনে নিয়ে গেলেন কেন? আমি কি এখনো ছোট নাকি যে বুকের মধ্যে আছড়ে ধরে টেনে রাগ ভাঙাতে হবে। আমি বড়ো হয়ে গেছি হু। আর আপনি আমার এতো কাছে আসবেন না, দূরে দূরে থাকবেন আমার কেমন জানি হয়। ‘
ভ্রু কুঁচকে হাত দিয়ে ওনাকে ইশারা করতে করতে একনাগাড়ে ওনাকে কথাগুলো বলতেই উনি আমার মাথায় টোকা দিয়ে বললেন,
‘ এলিয়েন। ‘
কথাটা বলে উনি চলে যেতে নিজেই আমি ওনার পিছন পিছন দৌড়াতে লাগলাম। এখন আমি ঝগড়া করার মুডে । কেও আটকাতে পারবে না আমাকে।
‘আমি এলিয়েন হলে আপনি কি হু? মুখ দিয়ে তো কখনো মিষ্টি কথা বার হয় না, নিম পাতার ফ্যাক্টরি। আপনার জন্মই হয়েছে আমাকে জ্বালানোর জন্য। আর পরের বার আমার গালে আর মাথায় হুঠহাঠ মারবেন না। এগুলো সরকারি না। ‘
উনি নিরবে সিঁড়ি দিয়ে নামছেন আর মুচকি হাসছেন। আমার এ ঝগড়া জমছে না কারন উনি পাল্টা উত্তর দিয়ে ঝগড়া করছেন না। বিরক্ত হয়ে জোরে চেঁচিয়ে বললাম,
‘এই ছেলে! চুপ করে আছিস কেন ঝগড়া কর! ‘
উনি হঠাৎ করে থেমে গেলেন আর আমার দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে বললেন,
‘তুই তুকারি আমার একদম ভালও লাগে না ইউ নো দ্যাট। নেক্সট টাইম যেন এগুলো না শুনি।’
আমি দমে গেলাম। মাথা নাড়িয়ে বোঝালাম যে আর বলবো না। উনি পুনরায় বললেন
‘আর একটু বকবক করলেই হাতিরঝিল ও নিয়ে যাবো না আর আম্মুর বানানো কাচ্চিও খাওয়াবো না। একদম চুপচাপ এসো। ‘
নিমেষেই আমি গলে জল হয়ে গেলাম। ওনার পাশে গিয়ে বললাম,
‘সত্যি আপনি আমাকে নিয়ে যাবেন? ‘
উনি আলতো করে নাকটা টেনে বললেন,
‘এনি ডাউট? ‘
আমি হেসে ফেললাম। এই মুহূর্তে এই পৃথিবীতে আমার নিজের থেকে আর কাওকে সুখী মানুষ বলে মনে হচ্ছে না। এই প্রথম ওনার সাথে ঝগড়া করে জিতেছি আর প্রাইজ স্বরুপ হাতির ঝিল আর ফুপির হাতের কাচ্চি। ইয়াম ইয়াম। ব্যাপারটা সুন্দর না?
#চলবে,
অনেক বড়ো করে লিখেছি। কেমন হয়েছে?