ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-৯

0
844

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#writer_Nusrat_jahan
#part_09

নেশাঃ ট্রান্সফার তাও আবার ইশান ভাইয়া!বাট কেন?

রোজাঃ তাতো জানি নাহ।।শুনেছি ইশান ভাইয়া নাকি প্রিন্সিপালের কাছে কমপ্লেন করেছে স্যারের নামে।।।আর তাই প্রিন্সিপাল স্যার তাকে এই কলেজ থেকে রিজাইন নিতে বলেছিলো।।বাট স্যার নেয়নি।।তাই প্রিন্সিপাল স্যার উপর মহলের লোকদের জানিয়ে স্যারকে এই কলেজ থেকে সরিয়ে দেয়।।

নেশাঃ এমনকি আদোও সম্ভব ?

রোজাঃ কেন সম্ভব নাহ যেখানে ইশান ভাইয়া নিজে বলেছে।।সেখানে স্যার এই কলেজ থেকে বের না হয়ে কি উপায় আছে।।

নেশাঃ তাও ঠিক।বাট কি এমন করলো স্যার

রোজাঃ তাতো জানি নাহ।।তুমি বরং ভাইয়া কেই জিজ্ঞাসা করো।

নেশাঃ হু

ছুটির পর।।ইশান একটু পর পর নেশার দিকে তাকাছে আর ড্রাইভ করছে।।কারন নেশা এখনো একটা কথাও বলেনি।।ইশান গাড়িটা সাইড করে নেশার দিকে ঘুরলো।

ইশানঃ কিছু কি হয়েছে নেশা।।কেউ কিছু বলেছে?

নেশাঃ নাহ

ইশানঃ তাহলে

নেশাঃ কিছু নাহ।

ইশানঃ আমি বলতে বলছি

নেশাঃ বললাম তো কিছু নাহ

ইশানঃ বলবি?

নেশাঃ একটা কথা জিজ্ঞাসা করি

ইশানঃ কি

নেশাঃ তুমি নিরব স্যার এর নামে কমপ্লেন করেছিলে কেন।।স্যার কি করেছে?

ইশানঃ এইটার জন্য এতো মন খারাপ।।তা নিরবকে মিস করছিস নাকি

নেশাঃ ছি ভাইয়া।।উনি তোমার স্যার হয়।

ইশানঃ ধুর।।বেশি হলে ৪ বছরের বড় হবে।।একে স্যার বলবো কেন

নেশাঃ হুহ।।আচ্ছা বাদ দাও।। বলো কেন করলে এমন।।স্যার কি কিছু করেছে

ইশানঃ হ্যা আসলে স্যারের চরিত্র খুব খারাপ।অনেক মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করতো।।তাই প্রিন্সিপালকে বলেছি।।

নেশাঃ কিহ স্যার এতো খারাপ??

ইশানঃ হু।।।একটা মেয়ের সাথে খুব বাজে অফার করেছিলো।।ওই মেয়েকে সাথে নিয়ে গেছিলাম।।ও সাথে স্যারের নামে কমপ্লেন করেছে।।

নেশাঃ ওহহ

ইশানঃ হ্যা তো বুঝেছিস কেন কমপ্লেন করেছি

নেশাঃ হুম?

ইশানঃ তো এখন বাড়ি যাওয়া যাক।।

ইশান নেশাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো।।

২ দিন পর।।

ইশান প্রতিদিনই দেখে নেশা কি এক ব্যাপার নিয়ে যেন চুপচাপ হয়ে আছে।।

ইশানঃ কিরে তুই এমন চুপচাপ হয়ে আছিস কেন কয়দিন ধরে
নেশাঃ কিছু নাহ ভাইয়া কিছু নাহ

ইশানঃ নাকি নিরব স্যার কে মিস করছিস

নেশাঃ ???

ইশানঃ আচ্ছা বলবি তো কি হয়েছে

নেশাঃ আসলে ভাইয়া নিরব স্যারকে যতোদুর দেখেছিলাম দুইদিনে উনাকে খুব ভালোই ভেবেছিলাম।।আর দেখো কি হয়ে গেল।।মানুষকে ভালো করে চিন্তেই পারলাম নাহ এখনো

ইশানঃ এই জন্য মন খারাপ??

নেশাঃ মন খারাপ নাহ।।ভাবছিলাম আরকি.।মানুষকে সহজে বিশ্বাস করা ঠিক নাহ

ইশানঃ হু।।তাই তো বললাম কলেজে যার তার সাথে বন্ধুত্ব করিস না

নেশাঃ হুম?

ইশানঃ আচ্ছা বাদ দে।।।একটু চা বানিয়ে খাওয়া

নেশাঃ ওকে।

নেশা চা বানাতে চলে গেল।

ইশানঃ সরি গো নেশা বেবি।।নিরব তো খারাপ নাহ আমি খারাপ বানিয়েছি।।ওই মেয়েকে তো আমিই বলেছি নিরবের নামে বানিয়ে বলতে।।কি করবো বলো আমার খেলাতে কেউ বাধা দিবে তাতো হতে পারে নাহ???

পরেরদিন কলেজে

নেশা খেয়াল করলো ইশান একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে।।নেশা লুকিয়ে তাদের কথা শুনার ট্রাই করলো

ইশানঃ ইভা বিশ্বাস করো যেদিন তোমায় দেখেছি আমি পাগল হয়ে গেছি।।আই রেলি লাভ ইউ

ইভাঃ কিন্তু তুমি তো প্রেম করো

ইশানঃ আরে ওইগুলাতো যাস্ট টাইম পাস ছিলো।।তুমি আমার আসল ভালোবাসা।। তোমাকে দেখে আমি শিখেছি ভালোবাসা কাকে বলে।প্লিজ এক্সেপ্ট মি ইভা।।আমি তোমায় ছাড়া বাচবো নাহ?

ইভাঃ তুমি সত্যি বলছো???

এইদিকে
নেশাঃ আহা আমার প্রেমিক সাগররে।।আজ তোমার প্রেম করা গোচাচ্ছি

নেশা ফট করে দুইজনের মাঝখানে চলে গেল।

ইশানঃ আরে নেশা তুই??

নেশাঃ হ্যা জান আমি এখানে।।তুমি নাহ বললে আজ আমায় তোমার মার সাথে দেখা করিয়ে বিয়ে ঠিক করবে

ইশানঃ কিসব বলছিস তুই এগুলো?

ইভাঃ ও কে ইশান আর ওকে বিয়ে করবে মানে কি?

ইশানঃ আরে বেবি ওইরকম কিছু নাহ

ইভাঃ তাহ….

নেশাঃ আরে বেবি তুমি ভয় পাচ্ছো কেন।।ইভাকে বলে দাও।।ওতো তোমার বোনের মতোই।।ওর থেকে লুকানোর দরকার কি?

ইভাঃ হোয়াট! বোন?

ইশানঃ নেশা তোকে তো??

নেশাঃ উফফ বেবি তোমার এই ছোট বলার তুই বলার অভ্যাস এখনো গেল। আসলে আপু আমরা ছোট থেকেই একে অন্যকে ভালোবাসি।।তাই ও এখনো আমাকে তুই করেই বলে

ইভাঃ তার মানে ইশান তুমি আমাকে মিথ্যা বলেছো

ইশানঃ আরে নাহ ও মিথ্যা বলছে।।আরে ওতো আম….

নেশাঃ এই রে ভাইয়া তো সব বলে দিচ্ছে।।কিছু একটা করতে হবে।।(মনে মনে)

নেশাঃ আহ আমার মাথাটা।।(বলেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল?)

ইশান গিয়ে নেশাকে ডাক দিতে লাগলো

ইশানঃ এই নেশা কি হলো আবার।।এই উঠ। এই নেশা

উপায় না পেয়ে কোলে তুলে নিয়ে যেতে নিলো ইভা এসে আটকালো

ইভাঃ তুমি ওকে কোলে তুলেছো কেন?

ইশানঃ দেখছো ও অজ্ঞান হয়ে গেছে আর তুমি আমার পথ আটকাচ্ছো।।রাস্তা থেকে সরো।।তোমার সাথে পরে কথা বলবো

ইভাঃ তার মানে এই মেয়েটা যা বলেছে সব সত্যি

ইশানঃ এইসব নিয়ে পরেও কথা বলা যাবে ইভা

ইভাঃ নাহ সব এখন বলো

ইশানঃ উফফ হ্যা ও যা বলেছে সব সত্যি।। হেপি।।এখন আমায় যেতে দাও। ইডিয়েট

বলেই ইভাকে পাশ কাটিয়ে ইশান চলে এলো।।

নেশাকে নিয়ে একটা খালি রুমে নিয়ে গেল।।পানি যেই নাহ মুখে ছিটাতে যাবে দেখে নেশা উঠে বসে আছে

ইশানঃ তুই ঠিক আছিস??

নেশাঃ আমারতো কিছু হয়নি

ইশানঃ মানে

নেশাঃ আসলে তুমি তখন ওই মেয়েকে সব সত্যি বলে দিচ্ছিলে তো তাই এই নাটক টা করলাম।।আমি জানতাম আমি অজ্ঞান হয়ে গেলে তুমি আগে আমাকে ধরবে।।

ইশানঃ এতো বিশ্বাস

নেশাঃ হুহ?

ইশানঃ আচ্ছা বুঝলাম।।তা এই মেয়েকে মিথ্যা কেন বললি।।আমি কবে তোকে বিয়ে করবো বললাম

নেশাঃ আসলে ওই মেয়েটাকে আমার পছন্দ নাহ।।কেমন নাক বোচা।।দেখতে চাকমাদের মতো।।চোখ গুলো চাইনিজ দের মতো ছোট ছোট।দেখতে হনুমানের বোনের মতো লাগে।।এইসব মেয়েদের সাথে লাইন মারা ঠিক হবে নাহ।।যতোই হোক আমার ভাই বলে কথা।।যার তার সাথে প্রেম করা মানায় নাকি?

ইশান কিছুক্ষণ রাগি চোখে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দিলো।নেশাও সাথে হেসে দিলো।

এই ভাবে কয়েকদিন কেটে গেল।।ইশান নেশার অনেক কেয়ার করে।বলতে গেলে একেবারে চোখে হারায়।।
নেশাও দিন দিন ইশানের উপর আরো দুর্বল হয়ে পরছে।।ভালোবেসে ফেলছে তাকে।
কিন্তু তবুও নেশা তার ফিলিংস গুলোকে দমিয়ে রেখেছে।।কারন রক্তের সম্পর্কে না হলেও সমাজের সম্পর্কে তারা ভাই বোন।তারউপ্র ইশান তার জন্য সেইম ফিল করে কিনা তা ও নেশা জানে নাহ।

একদিন কলেজ থেকে ফিরার সময় নেশা বললো সে আইসক্রিম খাবে।। ইশান গাড়ি থামিয়ে আইসক্রিম পার্লারে নিয়ে গেল

নেশা গপাগপ খাচ্ছে আর ইশান দেখছে

নেশাঃ কি দেখছো এইভাবে আমার পেট ব্যাথা করবে তো।

ইশানঃ আচ্ছা নেশা আমার দিকে তাকাতো একটু

নেশাঃ কেন

ইশানঃ তাকা তো

নেশাঃ আচ্ছা বলো(ইশানের দিকে তাকিয়ে)

ইশানঃ তুই কি কিছুই বুঝিস নাহ নেশা

নেশাঃ কি বুঝবো

ইশানঃ আমার ফিলিংস গুলো

নেশা চোখ নামিয়ে নিলো।।কারন এই ফিলিংস গুলো থেকেই তো সে পালাতে চেয়েছিলো।।কারন ভেবেছিলো সে একাই ইশানকে।।।কিন্তু আজ।।ইশান ও কি তাকে…..

চলবে

((ও পোলারে কেন করো এতো ছলনা,, কতো মেয়ে তোমার লাগে বলো নাহ??))

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here