ভালোবাসা আমার পর্ব ৫

0
569

#ভালোবাসা_আমার
#মোহনা_মিম
#পর্বঃ০৫
#অন্তিম_পর্ব

কান গরম হয়ে গেল। ধোঁয়া বের হচ্ছে বোধহয়। কিন্তু উপায় নেই, এটা আমাকে সারাজীবন সহ্য করতে হবে। সূক্ষ্ম শ্বাস ফেলে হাত বাড়িয়ে ওঁর চুলে ডুবিয়ে দিলাম। আলতো করে নাড়াচাড়া করতে করতে বললাম,

“আঙ্কেল আন্টি না তিন্নি কে পছন্দ করেছিলেন? তাহলে, মানে সব তো ঠিকই ছিল, কীভাবে কি হলো?”

ঠোঁট এলিয়ে হাসল ওঁ। কি সুন্দরটাই না লাগল! বলল,

“বাবা মা আমার জোরাজুরির জন্যই তিন্নিকে পছন্দ করেছিল। আমি তখনও একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। বারবার মনে হচ্ছিল কিছু ঠিক নেই। এক বছর রিলেশনের পরও হঠাৎ করেই মনে হচ্ছিল তিন্নি সে নয় যাকে আমার সারাজীবনের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু মস্তিষ্ক বলে আমি তো ও’কে ভালোবাসি। মন মস্তিষ্কের লড়াইয়ে আমি অস্থির হয়ে গেলাম। সারাক্ষণ মনে খচ খচ করতো। তার উপর তুই যোগাযোগ বন্ধ করে দিলি। আমি পাগল হয়ে গেলাম। তিন্নির কথা মাথা থেকে বেরিয়েই গেল। সারাক্ষণ তোকে নিয়ে ভাবলাম। তিন্নি অনেক ঝামেলা করল, আমি কেন ও’কে সময় দেই না, কেন ওর খরব রাখি না, কেন বিয়ের ডেট ঠিক করছি না ইত্যাদি ইত্যাদি! আমার তখনই মনে হলো আমার জীবনের সবথেকে প্রয়োজনীয় কিছু আমার সাথে নেই। মা আমাকে সাহায্য করল। বলল মনের কথা শুনতে, মন কি বলে? আমি ভাবলাম বারংবার তোর চেহারা ভেসে উঠল। আমি ঘাবড়ে গেলাম, নিজের অজান্তেই তোকে আমার মন ভালোবেসে ফেলেছে। তবে মস্তিষ্কে তিন্নি নামক পর্দা টানা ছিল। আমি ভাবলাম তুই আমাকে ভালোবাসিস না, আমি তো তোর শুধুই বন্ধু। অতঃপর আমি এই নাটকটা করলাম।”

আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে বললাম,

“তারমানে ওসব মিথ্যে ছিল? তিন্নির সাথে তোর কখনও বিয়ের ডেট ফিক্সড হয়ইনি!”

আবারও হেসে মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিল। আমি ওঁর বুকে কিল ঘুষি দিতে দিতে বললাম,

“শয়’তান! অস’ভ্য! আমার কি অবস্থা হয়েছিল জানিস? ম’রতে বসেছিলাম আমি।”

ওঁ শব্দ করে হেসে হাত ধরে ফেলল। শক্ত করে ধরে উল্টো পিঠে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল। বলল,

“জানি তো। তোর বুক ফাটবে কিন্তু মুখ ফুটবে না। জানিস অচেতন অবস্থায় তুই কতবার আমার নাম নিয়েছিস?”

” তুই কীভাবে জানলি? আমি তো বাবা মাকে বলতে বারণ..”

“জেনেছি কোনো এক ভাবে।”

“কিন্তু তিন্নি এতো সহজে মেনে নিল?”

ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে বলল,

“তিন্নির আরও ভালো হয়েছে। ও নিজের প্রাক্তন কে জেলাস ফিল করানোর জন্য আমার সাথে রিলেশনে গিয়েছিল। ও কোনোদিন ভালোই বাসেনি। শেষে আমি যখন ও’কে বিয়ে করতে পারব না বলে জানালাম, তখন ও কি বলল জানিস? বলল, ‘তুমি যদি বিয়েটা নাও ভাঙতে তো আমি বিয়ের দিন পালিয়ে যেতাম। আমার এক্স এর সাথে সব ঠিক ঠাক হয়ে গিয়েছে।’ জানিস? আমি শুধু হা করে তাকিয়ে ছিলাম। কি বাঁশ টাই না আমাকে দিতে যাচ্ছিল!”

শব্দ করে হেসে ফেললাম। ও একটু চেয়ে থেকে ঠোঁট আঙুল চেপে বলল,

“হুশ, এখন আর কথা নয়। ঘুমা, নাহয় কিন্তু আমি আর ঘুমাতে দেব না। জ্বালিয়ে মারব সারারাত। কীভাবে বুঝতে পারছিস নিশ্চয়?”

বুকের মধ্যে চেপে ধরল। ইতোমধ্যে ওঁর ঠোঁট কাটা কথা শুনে আমার গায়ে কাঁ’টা দিচ্ছে। চরম অ’স’ভ্য। একটু নড়ে উঠতেই বলল,

“আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। ঘুমিয়ে পড়।”

প্রশান্তিতে চোখ বুজে এলো। অনুভব করলাম এই চওড়া বুক আমার শান্তির স্থান, একান্ত আমারই।

পরীক্ষার পর আমাদের রিসিভশান হবে বলে ঠিক হলো। আমার জন্যই পেছানো হলো। কয়েকদিন পরেই পরীক্ষা, তারপর নাহয় ভাবা যাবে। বিয়ের দুদিনের মধ্যে আমি পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলাম। আমার অনেক যত্ন নিয়েছে ওঁ। আঙ্কেলের সাথে অফিস যাওয়াও শুরু করেছে। আমি বাড়িতে থাকি আন্টির সাথে। তিন তলা এই বিল্ডিং এর একটা ফ্লাটে আমরা থাকি এবং বাকিগুলো ভাড়া দেওয়া। আন্টির সাথে গল্প গুজব করতে করতে আমার দিন বেশ কেটে যায়।
কলিং বেল বেজে উঠল। আমি রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে দরজা খুললাম। ওঁ এসেছে। আশে পাশে না দেখেই কপালে ঠোঁট ঠেসে ধরল। মৃদু হাসলাম আমি। এই একটা অভ্যাস হয়েছে ওঁর। যেখানেই যাক না কেন, যাবার আগে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে যাবে আর ফিরে এসেও। রুমের দিকে অগ্রসর হতে হতে বলল,

“রুমে আয়।”

আমি দরজা বন্ধ করে রান্না ঘরে গেলাম। আন্টি বললেন,

“কে এসেছে?”

“তোমার ছেলে।”

“ঠিক আছে। তুই রুমে যা। আমি বাকিটুকু করে নিতে পারব।”

আমি নাকোচ করে বললাম,

“এতক্ষণ তো তুমিই করলে। এইটুকু আমি করে দিচ্ছি। তুমি রুমে গিয়ে একটু রেস্ট নাও।”

আন্টি যেতে না চায়লেও আমি ঠেলে পাঠিয়ে দিলাম। বাকি রান্নাটুকু সারতে গিয়ে দুপুরের আজান দিল। রুমে গেলাম। ওঁ মাত্রই শাওয়ার নিয়ে বের হলো। চুল থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। এগিয়ে গিয়ে বললাম,

“চুল মুছিস না কেন তুই বল তো? এভাবে থাকলে ঠান্ডা লাগবে না?”

গম্ভীর মুখ করে সরে গেল। সোফায় বসে বলল,

“আমার কথা ভাবতে হবে না কাউকে।”

তোয়ালে হাতে নিয়ে মাথা মুছিয়ে দিতে দিতে বললাম,

“কি হয়েছে? এমন করছিস কেন?”

উঠে দাঁড়াল। টুপি হাতে নিয়ে আমার কথার জবাব না দিয়েই বেরিয়ে গেল। অবাক হলাম। হঠাৎ ওঁর আবার কি হলো?
সেই যে নামাজে গেল, ফিরল না। ফোনের পর ফোন দিয়েও পেলাম না। আঙ্কেল বললেন চিন্তা না করতে। কোনো বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছে হয়তো। ওঁ নিশ্চয় আমার উপর কোনো বিষয়ে রাগ করেছে। তখন রুমে আসিনি বলেই কি? বিছানায় বসে এসবই ভাবছিলাম, তখন চোখ গেল সোফায় রাখা একটা শপিং ব্যাগের দিকে। এগিয়ে গিয়ে হাতে তুললাম। আজ দুপুরে ফেরার সময় এটা হাতে ছিল বোধহয়। ব্যাগ খুলে দেখি সাদা রঙের জর্জেট শাড়ি। এটা দেওয়ার জন্যই হয়তো ডাকছিল। হাসলাম আমি। এখন মহাশয়ের রাগ ভাঙাতে আমাকে কি করতে হবে?

রাত বেশ হলো। অবশেষে এগারোটার দিকে ফিরল ওঁ। আন্টি দরজা খুলে দিয়েছিলেন। বাইরে থেকে খেয়ে এসেছে বলে সোজা রুমে চলে এলো। রুম আমি অন্ধকার করে রেখেছি। মুখটা না দেখেও বুঝতে পারছি যে ওঁ ভ্রু কুঁচকে ফেলেছে। লাইক জ্বালতে নিলেই আমি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। ঝটকা খেল বোধহয়। মিনমিন করে বললাম,

“আলো জ্বালাস না।”

“কেন?”

“আ আমার ভীষণ লজ্জা লাগছে।”

লজ্জা লাগার কারণ হলো ওঁর আনা শাড়িটা আমি পরেছি। নিজেই নিজেকে দেখে লজ্জা পেয়েছি। সব দ্যাখা যাচ্ছে এমন শাড়ি। ওঁর কি কোনো কান্ড জ্ঞান নেই নাকি? এমন শাড়ি কেউ আনে? ওঁ আমার হাত ধরে হেঁচকা টানে সামনে দাঁড় করাল। পরপরই আলো জ্বেলে ঘর আলোকিত করল। চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেললাম। কিছু মুহূর্ত পরও যখন কোনো সাড়া শব্দ পেলাম না, তখন পিটপিট করে চোখ মেললাম। পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওঁ। চোখের পলকও যেন পড়ছে না। ফাঁকা ঢোক গিলে বললাম,

“এ এভাবে ত তাকিয়ে আছিস কেন? আ আগে কখনও মেয়ে মানুষ দেখিসনি নাকি?”

পালিয়ে যেতে চায়লাম। তবে পারলাম না। ধরে ফেলল। কাছে টেনে নিয়ে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,

“আমি ভাবতেও পারিনি এই শাড়িটাতে তোকে ঠিক এতোটা!”

কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,

“হ.. আই মিন সুন্দর লাগবে!”

জমে গেলাম আমি। অনেক কিছু বলতে চায়লাম, পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করতে চায়লাম। কিন্তু পারলাম না। গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না আমার। ওঁ আরও ঘনিষ্ঠ হলো। ব্যাকুল কন্ঠে বলল,

“আজ যদি বন্ধু থেকে সম্পূর্ণ ভাবে তোর স্বামী হতে চাই, অনুমতি কি পাব মৌ?”

কিছু বললাম না। চোখ বন্ধ করেই পড়ে রইলাম। ওঁ বলল,

“নীরবতা সম্মতির লক্ষণ, মৌ।”

হাত বাড়িয়ে আলো নিভিয়ে নীল বাতি জ্বেলে দিল। অতঃপর টেনে কোলে তুলল। বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বলল,

“এই মৌ? তাকা না একটু?”

ধীরে ধীরে চোখ মেললাম। চোখে চোখ রেখে মৃদু হেসে বলল,

“আমার সকল পাগলামি আজ থেকে সহ্য করার দায়িত্ব তোর।”

পরপরই অধরে অধর মিলতেই আমার চোখ আবারও বন্ধ হয়ে এলো। ওঁর প্রতিটি ছোঁয়া কাঁপিয়ে দিচ্ছিল আমায়। অতঃপর? অতঃপর আমরা মিলেমিশে এক প্রাণ হয়ে গেলাম।

ঘরের লন্ডভন্ড অবস্থা দেখে আমার মাথায় ধপ করে আ’গুন জ্ব’লে উঠল। দিনে দশ বার এই রুম আমাকে গোছাতে হয়, তারপর আবার যদি এই অবস্থা হয়! পুরো রুম জুড়ে জামা কাপড় ছড়িয়ে আছে, ড্রেসিং টেবিলের উপর একটাও জিনিস নেই সব গড়াগড়ি খাচ্ছে নিচে। আজ কাউকেই ছাড়ব না। রুমে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পেলাম না। রুম থেকে বেরিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,

“আম্মু? এই গাধার বাচ্চাটা কই? তুমি দেখেছ?”

আম্মু মেকি হেসে বললেন,

“কি হয়েছে? ও’কে এভাবে খুঁজছিস কেন?”

“আজ আম্মু আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না। ও’র পিঠে দু ঘা লাগিয়ে তবেই আমি থামব। এতো জ্বালাতন ভালো লাগে না।”

আম্মু আমার রাগ দেখে মৃদু হেসে বললেন,

“তোর রাগ হাই দেখে গাধার বাচ্চাকে গাধা বাইরে নিয়ে গিয়েছে। তোর রাগ কমলেই আসবে।”

আমি সূক্ষ্ম শ্বাস ফেললাম। আজ আসুক, খবর করে না ছাড়লে আমিও মৌহি না।

বেশ খানিকক্ষণ ঘুরে ফিরে তারা ঘরে ফিরলেন। রুমে দাঁড়িয়ে জামাকাপড় গুলো ভাঁজ করছিলাম। এমন সময় ছোট ছোট দুটো হাত আমায় পেছন থেকে ধরে ফেলল। আমি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালাম না। নিজের কাজ করে গেলাম। ছোট হাতের বাঁধন আরও শক্ত হয়ে এলো। কানে এলো,

“মাম্মা!”

আমি ফিরলাম না। মুখ গম্ভীর করে কাজ করে গেলাম। একটু পর অনুভব করলাম আমার আঁচল ধরে টানছে। গম্ভীর মুখে ফিরে বললাম,

“কেউ যেন আমার সাথে ভাব জমাতে না আসে।”

মুখ কালো করে চলে গেল। পরপরই বাপের কোলে উঠে ফিরে এলো। বাপ তার সাফাই গেয়ে বললেন,

“এমন করছিস কেন? ভুল করে ফেলেছে। স্যরি বলতে এসেছে। অথচ তুই শুনছিসও না!”

পরেই ছোট কন্ঠটি বলল,

“স্যলি মাম্মা। আল এমন কলব না। কানে ধলছি।”

আমি মুখ গম্ভীর করে রাখতে যেয়েও হেসে ফেললাম। হাত বাড়িয়ে তাকে কোলে নিয়ে গালে কপালে দুটো চুমু খেলাম। দেখতে দেখতে এতো বড় কবে হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। এইতো গতমাসে চার পেরিয়ে পাঁচে পা রেখেছে, আমাদের মেয়ে আরা। বজ্জাতের হাড্ডি হয়েছে ঠিক বাপের মতো। চোখ দুটো ছাড়া আমার আর কিছুই পায়নি। একদম বাপের ফিমেল কপি হয়েছে। আরা আবার বলল,

“তুমি আল লাগ কলে নেই তো মাম্মা?”

“না সোনা। তুমি যদি দুষ্টুমি না করে লক্ষ্মী হয়ে থাকো, তাহলে আমি আর কখনও রাগ করব না। বুঝেছ?”

ভদ্র বাচ্চার মতো মাথা কাত করল সে। যেন এবার থেকে আমার কথা কাঁ’টায় কাঁ’টায় শুনবে। কিন্তু রাত পেরোলেই আবার যা তাই। আমি চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম,

“কোথায় গিয়েছিলে?”

“পাপাল সাথে, চকলেট খেতে। তোমাল জন্যও এনেছি।”

আমি একগাল হাসলাম। কিছু বলার আগেই ওঁ আরাকে কোলে নিয়ে বলল,

“তোমাকে তো দাদু ডাকছিল। যাও শুনে এসো তো কি বলছে।”

নামিয়ে দিতেই দৌড়ে চলে গেল। আমি আবার কাজে লেগে পড়লাম। এবার অনুভব করলাম মেয়ের বাপ পেছন থেকে চেপে ধরেছে। হাতের বাঁধন দৃঢ় করে কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে বলল,

“কি এতো কাজ করিস সারাদিন? রাতেও কাজ করতে হয়। এক দন্ড কাছে পাই না তোকে।”

“বজ্জাত মেয়ে সারাদিন অগোছালো করবে আর আমাকে গোছাতে হবে। আর জিজ্ঞেস করো কি করি?”

নিজে তুই থেকে তুমিতে না আসতে পারলেও আমাকে বাধ্য করেছে। এখন আমার অভ্যেস হয়ে গিয়েছে তুমি বলতে। ওঁ বলল,

“ছাড় এসব। চল ব্যালকনিতে যাই।”

আমি মানা করলেই শুনল না। টেনে কোলে তুলে নিয়ে গেল। কোলে নিয়েই দোলনায় বসে পড়ল। এটা আমার প্রেগন্যান্সির সময় কেনা, আমি আবদার করেছিলাম। যেদিন বলেছিলাম ঠিক তার পর দিনই এনে হাজির করেছে। হাত বাড়িয়ে চুল গুলো এলোমেলো করে দিলাম। ওঁ টুপ করে ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলল,

“আমার এখনও আগের কথা মনে পড়ে জানিস? যদি তুই দুরত্ব তৈরি না করতি, তাহলে আমি কখনো বুঝতামই না যে আমি তোকে এতোটা ভালোবাসি। দুরত্ব বাড়লেই মানুষ গুরুত্ব বোঝে। যেমন আমি।”

“হু।”

“হু কি? আমি তো রোজ একশো বার বলি, ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি। তুই ক’বার বলিস?”

ফিক করে হেসে ফেলে বললাম,

“একবারও না। সব সময় কি ভালোবাসি বলতে হয়? তুমি বোঝো না?”

“তবুও শুনতে খুব ভালো লাগে। বল না?”

আমি মৃদু হেসে ওঁর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললাম,

“এই যে মিস্টার আরভিন জুহায়র! আমি আপনাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি এবং ভালোবাসি।”

মুহূর্তেই বুকের মাঝে ঠাঁই হলো। প্রফুল্ল চিত্তে কতবার যে ভালোবাসি বলল তার হিসেব নেই। ওঁদের নিয়েই তো আমার জীবন, আমার অস্তিত্ব, আমার সব। সেদিনও যার বন্ধুত্ব ভাঙার ভয়ে পিছিয়ে ছিলাম, আজ সেই আমাতে আধিপত্যকারী। তার জন্যই পূর্ণ আমি।

সমাপ্ত!
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই ছোট্ট লেখিকার ছোট্ট একটা গল্প পড়ার জন্য আমি অনেক কৃতজ্ঞ। ভালোবাসা সবাইকে।🫶

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here