#ভালোবাসার_সংসার
#পর্বঃ১১
#ফারজানা
ঘড়ির কাঁটায় সময় সকাল সাতটা।পৃথিবীতে সূর্য তার উষ্ণতা ছড়িয়ে দিলেও ভারী পর্দার কারণে তা জানালা ভেদ করে রুমটির মধ্যে প্রবেশ করতে পারছেনা।ফলশ্রুতিতে রুমের ভিতরে চলছে আলো-আঁধারির লুকোচুরি খেলা।যার নেই কোনো শব্দ,নেই কোনো ছন্দ শুধু আছে এক মিষ্টি শীতলতাময় উষ্ণ অনুভূতি।
রুমটির শুভ্র বিছানায় উল্টো হয়ে ঘুমিয়ে আছে কেউ।দেখলেই বোঝা যাবে গভীর নিদ্রায় তলিয়ে আছে সেই ব্যক্তি।হঠাৎই পিঠের উপরে ভারী অনুভব হতেই গভীর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় বিরক্তিতে ভ্রুঁ কুঁচকে যায় সেই ব্যক্তির।তবে পরোক্ষণেই নিজের চুলে ছোটো ছোটো হাতের স্পর্শে তা মিলিয়ে যায়।ছোটো ছোটো হাতদুটি তার চুলগুলোর একাংশ হাতে নিয়ে টানছে।কিঞ্চিত ব্য’থা অনুভূত হলেও মুখে কোনো শব্দই উচ্চারণ করলোনা সে।এখনো চোখ বুজেই রয়েছে।তার এহেন কান্ডে পিঠের উপরে থাকা ব্যক্তিটির বোধহয় বিরক্তি অনুভব হলো।তাই সে এবার তার হাতের সাথে তার মিষ্টি কন্ঠের আদো-আদো বুলিতে ডাকতে লাগলো,,,
–“বা..পা.,পাপ্পা।”
সেই মানুষটির মিষ্টি কন্ঠের আদো-আদো বুলিতে পাপ ডাক শুনতেই মুখ জুড়ে স্নিগ্ধ হাসি ফুটে উঠলো আলভির।পিঠের উপরের ব্যক্তিকে সামলে ধরে ধীরে ধীরে সোজা হলো সে।আলভি সোজা হতেই সেই ব্যক্তি তার উপরে একপ্রকার ঝাঁপিয়ে পড়ে তার গলা জড়িয়ে ধরে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে।মেয়ের মুখের মিষ্টি হাসি দেখে হৃদয়টা প্রশান্তিতে জুড়িয়ে যায় আলভির।দুইহাত দিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে রাখে নিজের বুকে।আদুরে স্পর্শে ভরিয়ে দেয় মেয়েকে।ছোট্ট আয়রাও প্রতিউত্তরে নিজের কোমল ঠোঁটের স্পর্শ এঁকে দেয় পাপার গালে।
তখনই রুমের লাইট জ্বলে ওঠায় দরজার দিতে তাকায় আলভি।দেখতে পায়, তার দুই ছেলে ঘুম ঘুম চোখে টলমলে পায়ে দাঁড়িয়ে আছে।বোঝাই যাচ্ছে কেউ জোর করে তাদের সুখনিদ্রা ভঙ্গ করেছে।বিশাল বড়ো একটা হাই তুলে বিছানার দিকে এগিয়ে যায় সাইরিফ।সাইরিফের পিছনে পিছনে আদনানও যায়।বিছানার কাছে এসেই ধপ করে বিছানায় শুয়ে আলভির গলা দুপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে দুইভাই।আলভিকে জড়িয়ে রেখেই আবারো চোখ বুজে ফেলেছে তারা।মেয়েকে বুকের উপরে রেখেই দুইছেলের মাথায় চুমু খায় আলভি।আলভির দেখাদেখি আয়রাও চুমু খায় দুইভাইকে।চোখদুটো কিছুটা খুলে আদনান, সাইরিফও চুমু খায় আলভি,আয়রাকে।শুয়ে শুয়েই তিন ছেলেমেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে আলভি।স্নিগ্ধ হাসির রেশটা এখনো তার মুখে লেগেই রয়েছে।
–“এই!..তোরা আবারও এখানে এসে শুয়েছিস?”
দরজার দিক থেকে কারো রা’গ’ত স্বরে বলা কথা কানে আসতেই সেদিকে তাকায় আলভি।দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিকে দেখে তার হাসিটা আরও বিস্তৃত হয়ে যায়।অবশ্য সেই মানুষটির আপাতত আলভির দিকে কোনো খেয়ালই নেই।সাইরিফ, আদনানকে ঘুম থেকে তোলাই যেনো এখন তার সবথেকে বড়ো কাজ।আর সেই কার্য পালন করতেই বিছানার দিকে এগিয়ে আসে সে।সাইরিফ,আদনানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আদুরে স্বরে বলে,,,
–“সাইরিফ! আদনান!..উঠে পড়ো সোনা।নাহলে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে তাইনা?”
ডাকার পরেও ছেলেদুটোর কোনো হেলদোল না দেখে আলতো করে দুইভাইয়ের কান মু’চ’ড়ে ধরে মেয়েটি।বলে,,,
–“এবার না উঠলে সত্যি সত্যি মা’ই’র লাগাবো ধরে।ওই রুম থেকে ডেকে উঠিয়ে এই রুমে পাঠিয়েছি তবুও ঘুমিয়েই চলেছে।ওঠ বলছি!..নাহলে কিন্তু খবর আছে বলে দিচ্ছি।”
শেষের কথাটি কানে আসতেই হুড়মুড় করে উঠে পড়ে দুইভাই।সামনে বসে থাকা মেয়েটির কুঁচকানো ভ্রুঁ দেখে শুকনো একটা ঢোক গিলে দুজন দুজনের দিকে তাকায়।অতঃপর আর কি!..দে ভোঁ দৌঁড়।ভাইদের ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় দেখে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে আয়রা।সেই শব্দ শুনে সাইরিফ, আদনানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে আয়রার দিকে নিজের দৃষ্টি স্হাপন করে মেয়েটি।বাবার বুকের উপর শুয়ে থাকা আয়রার দিকে কিছুটা ঝুঁকে বসে আদুরে স্বরে বলে,,,
–“কি?.. শুধু ভাইয়াদের দেখে হাসলে আর পাপাকে জড়িয়ে রাখলেই হবে?খেতে হবেনা?হুম!”
মেয়েটির কথা শুনে পিটপিট করে চোখ নাড়ায় দেড় বছর বয়সী আয়রা।মেয়েটি বুঝতে পারে এবার তার কোলে উঠার শখ হয়েছে। তাই সেও আলতো করে কোলে তুলে নেয় আয়রাকে।অনেকগুলো চুমু এঁকে দেয় আয়রার গালে, কপালে, ঠোঁটে, নাকে।তার সাথে সাথে তাল মিলিয়ে আয়রাও খিলখিল করে হেসে চলে।কিছুক্ষণ বাদেই কোল থেকে আয়রাকে নামিয়ে দেয় মেয়েটি।মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,,,
–“যাও সোনা।ভাইয়াদের কাছে যাও।গিয়ে দেখো তো কি করছে দুজন।”
মেয়েটির কথা শুনেই তাকে একটু আদর করে দিয়ে গুটিগুটি পায় ভাইদের রুমের দিকে দৌড় দেয় আয়রা।হাসিমুখে সেদিকে তাকিয়ে থেকে নিজেও বাইরে বেরোনোর জন্য পা বাড়াতেই বাঁধা পায় সে।পিছনে তাকিয়ে দেখে আলভি তার শাড়ির আঁচল আঁ’ক’ড়ে ধরে রেখেছে।সে তাকাতেই আলভি চোখের ইশারায় কাছে ডাকে তাকে।প্রেমিক পুরুষটির ডাক উপেক্ষা করতে পারেনা মেয়েটি।আলতো পায়ে হেঁটে আলভির মাথার কাছে বসে পড়ে।আলভির মাথার চুলগুলো হাত দিয়ে এলোমেলো করে দিয়ে ভ্রূঁ নাচিয় বলে,,,
–” কি স্যার উঠতে হবেনা?..বহুত আরামের ঘুম দিয়েছেন কিনা?”
সায়রার কথা শেষ হতেই একটানে তাকে নিজের বুকের উপরে ফেলে আলভি।সায়রাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই আঁ’ক’ড়ে ধরে সায়রার কোমল ঠোঁটদুটো নিজের রু’ক্ষ, শু’ষ্ক ঠোঁটজোড়া দিয়ে।কিছুক্ষণ পরেই সায়রাকে মুক্ত করে দেয় আলভি।জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে নিতেই কিঞ্চিৎ রা’গী দৃষ্টিতে তাকায় সায়রা।সায়রার রা’গী দৃষ্টি দেখে ইনোসেন্ট ফেস বানিয়ে আলভি বলে ওঠে,,,
–“এটাতো দরকার ছিলো রে বউ! ”
আলভির কাঁচুমাচু মুখ দেখে রা’গ করতে গিয়েও হেসে ফেলে সায়রা।ভালোবাসামাখা একটা স্পর্শ আলভির কপালে এঁকে দিয়ে বলে,,,
–“বুঝলাম!..এবার উঠুন তাহলে অফিসে তো যেতে হবে নাকি!..ছেলেদেরও তো স্কুলে পৌঁছে দিতে হবে।..ওঠো..ওঠো! ”
সায়রার তাড়া দেয়ায় উঠে পড়ে আলভি।সায়রার কপালে আলতো স্নেহের পরশ দিয়ে পা বাড়ায় ওয়াশরুমের দিকে।এবার না উঠলে সত্যিই বড্ডো দেরি হয়ে যাবে।হাসিমুখে আলভির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে সায়রা।তার হাসিটাই তাদের জীবনের স্নিগ্ধতা, সুখ, আনন্দের বহিঃপ্রকাশ।
*************************
*************************
*************************
রাতের আকাশে আজ ভরপুর তারা।জোছনার স্নিগ্ধ, মায়াবী আলোয় আলোকিত চারিপাশ।রাত এখন অনেকটাই।চারিদিকের পরিবেশ শান্ত-স্তব্ধ।কোনো কোলাহল নেই।ছাদের দোলনায় বসে আছে আলভি। তাকিয়ে আছে দূর আকাশের চাঁদের দিকে।যে চাঁদ ধরা যায়না,ছোঁয়াও যায়না।শুধু দূর থেকেই চক্ষুতৃ’ষ্ণা মেটানো যায়।আকাশের থেকে চোখ সরিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে রাখা নিজের একান্ত চাঁদটির দিকে তাকালো আলভি।যাকে ইচ্ছে করলেই ছোঁয়া যায়, অনুভব করা যায়, চোখের সামনে বসিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যাকে দেখে নিজের আকুল তৃ’ষ্ণা মেটানো যায়।
মেয়েটা যেনো আগের থেকেও সুন্দরী হয়ে গেছে।তার মায়াবী মুখশ্রী আরও মায়াবী হয়ে উঠেছে।সারাক্ষণ মুখে একটা মিষ্টি হাসি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় এই মায়াপরী তার বাড়ির, তার মনের আঙিনায়।এই পরীকে, তার মিষ্টি হাসিটা না দেখলে হাঁসফাঁস লাগে আলভির।শুধু তার নয় তার ছেলেমেয়েদেরও একই অবস্হা।এই মেয়েটাকে ছাড়া থাকার কথা ভাবতেও পারেনা তারা।আগেও পারেনি, এখনও পারেনা।সেই ভ’য়’ঙ্ক’র দিনটির কথা এখনও মনে পড়লে গা শি’উ’রে ওঠে আলভির।ভুলে যেতে চাইলেও সেই বি’ভী’ষি’কা’ময় দিনটি আজও দ’গ’দ’গে ঘা হিসেবে রয়ে গেছে তার হৃদয়ের মনিকোঠায়।
সেদিন সায়রা আলভির গায়ে বমি করে দিয়েই ধীরে ধীরে নি’স্তে’জ হয়ে যায়।তীব্র শ্বাসক’ষ্ট শুরু হয়।সায়রার ওই অবস্হা দেখে আলভি নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারছিলোনা।সায়রাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বোধটুকুও তার লোপ পেয়েছিলো।সায়রার আ’ত’ঙ্কি’ত কন্ঠের ধীরে ধীরে বলা কথাগুলো তার কর্ণকুহরে প্রবেশ করে তাকে একেবারে স্তব্ধ করে দিয়েছিলো।কোনো এক ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলো সে।যেখানে শুধুমাত্র সায়রার ব্যথায় কাতর মুখশ্রী, তার অার্তচিৎকার ছাড়া আর কিছুই বোধগম্য হচ্ছিলোনা তার।জুলেখার ডাকে ঘোর ভাঙে তার।হতবুদ্ধির মতো তার দিকে তাকিয়ে থাকে।জুলেখাই আবার তাকে বলে সায়রাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার কথা।তখনই টনক নড়ে আলভির।দুইছেলেকে সায়রার কাছ থেকে সরিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে কোলে তুলে নেয় আলভি।পাগলের মতো সায়রাকে নিয়ে নিচে নেমে অ্যাম্বুলেন্সে তোলে।পারিপার্শ্বিক কোনো চিন্তাই তখন আলভির মনে ছিলোনা একদৃষ্টিতে শুধু তাকিয়েছিলো সায়রার ব্য’থা’য় কাতর শুভ্র মুখশ্রীর দিকে।
সায়রার তখনও একটু একটু জ্ঞান থাকলেও কোনো কথা বলার মতো পরিস্থিতি তার ছিলোনা।জীবন কেড়ে নেয়ার মতো ব্য’থা, ভ’য় তাকে কাবু করে রেখেছিলো।সে বুঝতে পেরেছিলো তার আর তার অনাগত সন্তানের শেষ সময় আগত।অ্যাম্বুলেন্সে তোলার কিছু সময়ের মধ্যেই জ্ঞান হারায় সায়রা।
হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরেই তৎক্ষনাৎ সায়রাকে আইসিউতে নিয়ে যাওয়া হয়।প্রথমে তার সিজার করা হবে। এরপরেই তাকে তোলা হবে মেইন অপারেশন টেবিলে।সেইমতোই ব্যবস্হা করা হয় সবকিছু।সায়রাকে নিয়ে যাওয়ার আগে বন্ডসাইন করতে হয় আলভির।কারণ বাচ্চা বা সায়রা কারো জীবনেরই কোনো নিশ্চয়তা নেই তার উপরে আবার
সায়রার টি’উ’মা’র’টি’র অবস্হা খুবই আ’শ’ঙ্কা’জ’ন’ক।সেই মূহুর্তে আলভির মনে হচ্ছিলো কেউ বুঝি তার কলিজা টেনে ছিঁ’ড়ে নিয়ে যাচ্ছে।তার হৃদপিণ্ডটা কেউ প্রচন্ড জোরে চেপে ধরে রেখেছে যার ফলে নিঃশ্বাস আটকে আসছে তার।বুকের মধ্যিখানে কি এক অসহ্য চিনচিনে ব্য’থা, মাথার ভিতরে সব কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিলো।শুধু সায়রার কথাই মনে হচ্ছিলো। মনে পড়ছিলো তার য’ন্ত্র’ণাক্লিষ্ট মুখশ্রী।বাচ্চাটির কথাও সেসময় ভুলে গিয়েছিলো আলভি।
দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা পরে একজন নার্স এসে বি’ধ্ব’স্ত অবস্হায় বসে থাকা আলভি, জুলেখা, সাইরিফ, আদনানকে এসে জানায় সায়রার একটা মেয়ে হয়েছে। তবে তার জীবনের এখনো কোনো নিশ্চয়তা নেই।তীব্র শ্বাসক’ষ্ট হচ্ছে বেবির। ফলে স্পেশাল অবজারভেশনে রাখতে হবে বেবিকে।সংবাদটি শুনে সকলে আরোও বেশি করে ভে’ঙে পড়েছিলো।নার্সটি বললেও আলভি যায়নি নিজের মেয়েকে দেখতে।জুলেখা গিয়েছিলো। দূর থেকেই দেখে এসেছিলো নাকে নল লাগানে ফুটফুটে মূমুর্ষপ্রায় বাচ্চাটিকে।
আর সায়রাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো অপারেশনের জন্য।ক্রমাগত ডাক্তার, নার্সের ছুটোছুটিই বুঝিয়ে দিচ্ছিলো ভেতরের অবস্হা বেশ আ’শ’ঙ্কা’জ’ন’ক।যখনই সায়রার জন্য বোর্ড মিটিং ডাকার খবরটি আলভির কানে আসে তখনই একছুটে হাসপাতাল থেকে বাইরে বেরিয়ে যায় আলভির। পৃথিবীতে থাকা সবথেকে শান্তির স্হান, ভরসাযোগ্য স্হান মসজিদে চলে গিয়েছিলো সে।দুহাত তুলে প্রিয় মানুষগুলোর জীবন ভি’ক্ষা চেয়েছিলো মহান আল্লাহর কাছে।আল্লাহ তার ডাক শুনেছিলেন।পাঁচ ঘন্টা পরে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয় ডাক্তার। সেই খবর শুনে ছুটে গিয়েছিলো আলভি হাসপাতালে।ডাক্তার জানিয়েছিলো অপারেশন সাকসেসফুল হলেও সায়রার জ্ঞান ফিরে আসাটা পুরোটাই মহান সৃষ্টিকর্তার হাতে।
এরপরে কেটে যায় প্রায় একমাস।বেবি সুস্হ হয়ে উঠলেও কো’মা’য় চলে যায় সায়রা।সেই সময়টা এই মানুষগুলির জীবনে ছিলো সবথেকে বিভীষিকাময় সময়।অবশেষে দীর্ঘ একমাস পরে অলৌকিকভাবে রেন্সপন্স করে সায়রা। ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে আসে তার।সুস্হ হয়ে উঠতে শুরু করে।
সুদীর্ঘ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আলভি আবারও তাকায় সায়রার দিকে।কি শান্ত হয়ে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে তার বুকে।এই মেয়েটিকে ছাড়া তার জীবন অন্ধকার।তাইতো আল্লাহ তার জীবনের আলোকে কেড়ে না নিয়ে তার বুকেই ফিরিয়ে দিয়েছ। আর আলভিও সযত্নে তা তুলে রেখেছে নিজের বুকে।এই মেয়েটিই তার যাদুকাঠির ছোঁয়ায় চার দেয়ালের বদ্ধ কুঠুরিকে পুনরায় ভালোবাসার সংসারে রূপান্তর করেছে।ভালোবাসা, মায়ায় জড়ানো এক অদ্ভুত শক্ত বাঁধনে বেঁধে রেখেছে তাদের। এই সংসারের, তাদের জীবনের প্রতিটি কোনায় কোনায় লেগে আছে সায়রার ভালোবাসার ছাপ।তাদের র’ক্তে মিশে আছে এই মেয়েটি।
যেকোনো সম্পর্ককে শক্ত,মজবুত বাঁধনে বাঁধতে হলে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটি হলো সময়।কোনো সম্পর্ককে একটা চারাগাছের সাথে তুলনা করা যায়।যেমন কোনো গাছ বেড়ে উঠার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, সার ও যত্ন।তেমনি কোনো সম্পর্ক বেড়ে উঠার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় সার হলো পরস্পরকে দেয়া সময়।সময় ও যত্নে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে একটা সম্পর্ক আর বিশ্বাসে ভর দিয়ে তা টিকে থাকে।তবেই সেই সম্পর্ক ভালোবাসা নামক ছায়ায় আশ্রয় নিতে সক্ষম হয়।তাই আলভিও আর তাদের সম্পর্কের মধ্যে কোনোরকম দূরত্ব আসতে দেয়নি।শত ব্যস্ততা থাকলেও প্রতিদিন নিজেদের জন্য একটু সময় কুব সযত্নে তুলে রেখেছে তারা দুজন।সারাদিন সকলের খেয়াল রেখে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া সায়রাকে যত্ন করে আলভি।তার ভালোবাসার ছোঁয়ায় মুছে দেয় সায়রার সকল ক্লান্তি।তেমনি সায়রাও খুব যত্ন, ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখে আলভি, তার তিন সন্তানদের, সর্বোপরি এই সংসারকে।তাইতো তাদের আজ হয়ে উঠেছে #ভালোবাসার_সংসার।
“”””সমাপ্ত”””‘
___________________________________________________________________
অবশেষে শেষ হলো #ভালোবাসার_সংসার নামক গল্পটি।জানি অনেক অপেক্ষা করিয়েছি আপনাদের।তার জন্য আমি সত্যিই খুব খুব খুবই দুঃখিত।আজ শেষ পর্বে আপনাদের কাছে মতামত জানতে চাই। আশা করি সকলে জানাবেন।এবং আরোও একটি কথা জানতে চাই পরবর্তীতে আবারও কোনো গল্প নিয়ে আসলে এভাবেই আপনাদের সাপোর্ট পাবো তো?..জানাবেন কিন্তু।।
ভুল-ত্রুটি ক্ষ’মা’সু’ন্দ’র দৃষ্টিতে দেখবেন।
হেপি রিডিং!!!