ভালবাসা মানে নীল প্রজাপতি পর্ব ৫

0
347

ভালবাসা মানে নীল প্রজাপতি
Part : 5
Write : Sabbir Ahmed
_______________________________
-আপনি এভাবে আমার পায়ের উপর পা দিয়ে রাখছেন কেনো?(আদনান)
-আমার ইচ্ছা হইছে তাই রাখছি(রাত্রি)
-আপনার ইচ্ছা দিয়ে আমি কি করব?
-কি করবি মানে? আমার যদি ইচ্ছা হয় তোর উপর শুয়ে থাকবো কিচ্ছু বলতে পারবি না…
-আমি খাবো না চলে যাচ্ছি
-মাআআআ
-এই চিল্লাবেন না খাচ্ছি আমি
-কিছু লাগবে? একটু ভাত দেই
-না না কিছু লাগবে। বুঝতেছি এত দরদ আসলো কোথা থেকে (আদনান বিড় বিড় করে বলল)
-দরদ এমনি এমনি আসে নি একটা কারনে আসছে। আর হ্যা যত ধীরেই বলুন আমি শুনতে পাবো, মেয়েরা ধীরে কথা আরও বেশি শুনতে পায়
-ভালো..
,,
খাওয়া শেষে রাত্রির মায়ের সাথে দেখা করে আদনান তার রুমে চলে যায়। আদনান ঠিক করেছে যে এখানে আর সে থাকবে না, এই মাস শেষ হলে চলে যাবে। শুয়ে শুয়ে এসব কথা ভাবার পর ফোনটা হাতে নিয়ে ডাটা অন করতেই রাত্রির ম্যাসেজ। আদনান ম্যাসেজ দেখে মুচকি হাসলো আর ম্যাসেজ টা সিন করে রেখে দিলো। রাত্রি বুঝতে পারলো আদনান রিপ্লাই দিবে না তাই আবার ম্যাসেজ করলো…
-ম্যাসেজ চোখে পরে না?? (রাত্রি)
-হুমম পরেছে (আদনান)
-তো উত্তর কই?
-উত্তর দিয়ে আর কি হবে
-আচ্ছা শোনেন এখন ঝগড়া করতে চাই না কাজের কথা শুনেন
-বলেন
-আমাদের এই বিল্ডিং আর পাশের বিল্ডিং এখান থেকে জন পঞ্চাশ আমরা একটা বাস নিয়ে ট্যুর এ যাচ্ছি সিলেটে। আপনি কি যাবেন??
-দেখি
-দেখি মানে কি? যাবেন কি না?
-হুমম যাবো
-??
-কি ব্যাপার এই ইমোজি কি জন্য?
-এমনি দিলাম
-???
-ওই এভাবে কি দেখছেন?
-কিছু না
-কল দেই
-না
-কথা বলতে ইচ্ছা করছে
-দরকার নেই
-প্লিজ দেই
-না
-আমি তোমার ঐশী, রাত্রি না তো, রাত্রি খুব পঁচা ও কালো পছন্দ করে না ঐশী তো পছন্দ করে..
-……..(আদনান চুপ)
-ঐ আত্মা কল দেই??
-হুমম
-ইয়েএএএ??
,,
রাত্রি কল করলো আদনান রিসিভ করে করলো..
-সত্যি তুমি যাবে তো? (রাত্রি)
-হুমম আমার ঘুরতে ভালো লাগে (আদনান)
-আমারও অনেক ভালো লাগে
-ঘুমাবেন কখন?
-মন ভরে কথা বলব তারপর
-আমার ঘুম পাচ্ছে
-এই ন্যাকামি করবি না আর ভাব নিবি না কল আমি দিয়েছি যখন ইচ্ছা কাটবো আর অনেক কথা আছে আজকে
-কি কথা বলেন
-আমি তোমাকেই বিয়ে করবো
-না না আমাকে কেনো করবেন আমি তো কালো
-দেখো এমন করো না আমার ভুল হইছে
-না আপনার জায়গা থেকে আপনি ঠিক কথাই বলছেন আমি আপনার সাথে যা করেছি আর যা বলেছে সব ভুল ছিলো
-তুমি এমন করছো কেনো
-দেখেন আপনি হয়তে মেনে নিবেন আমাকে, কিন্তু আপনার পরিবার মেনে নিবে না আপনার বন্ধুবান্ধব এর কাছে ছোট হতে হবে
-আমি সব ম্যানেজ করবো
-আমি ভাবতে পারি নি আপনি এতটা সুন্দর, জানলে কথাই বলতাম না
-এমন করে বলো না
-আর মানানসই বলতে একটা কথা আছে, তোমার সাথে আমাকে মানাবে না
-না মানাবে
-এসম্পর্কিত আর কোনো কথা হবে না, যদি বলেন আমি ফোন কাটবো
-..(ওপাশ থেকে রাত্রি রাগ করেই কল কেটে দিলো)
,,
তারপর রাত্রিও আদনান এর সাথে কথা কম বলা শুরু করলো। রাত্রি আদনান এর সাথে অভিমান করেছে সেটা আদনান টের পেয়েছে কিন্তু আদনান রাত্রির অভিমান ভাঙাবে না আর ঐদিকে রাত্রি আদনান এর জন্য ওয়েট করছে।
,,
এমন চলতে চলতে ট্যুর এর দিন এসে গেলো। বাসার সামনে বাস দাড়িয়ে আছে। দুই একজন আগে রেডি হয়ে বাস গিয়ে উঠেছে। আদনান এর রেডি হওয়া শেষের দিকে। ব্যাগ টা কাঁধে নিয়ে দরজা খুলতেই দেখে রাত্রি তার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
,,
রাত্রি শার্ট প্যান্ডেল পড়েছে অনেকটা ছেলে ছেলে লাগছে রাগি মুড থাকায় আরও কিউট লাগছে।
-আপনি বাসে না গিয়ে এখানে দাড়িয়ে..(আদনান)
-….(রাত্রি এক পলকে তাকিয়ে আছে)
-আমি কিন্তু ভয় পাচ্ছি হি হি হি
-বাবা ডাকে
-চলুন
,,
রাত্রির বাবার সামনে গিয়ে…
-আদনান আমি আর তোমার আন্টি তোমাদের সাথে যেতে চাইছিলাম কিন্তু যেতে পারলাম না তুমি রাত্রি কে একটু দেখে রেখো..(রাত্রির বাবা)
-আর ঐটা বলো (রাত্রি তার বাবাকে বলল)
-কোনটা?(রাত্রির বাবা)
-ঐ যে বললাম
-ওহহ হ্যা তোমার পাশে ওকে বসাবে আর চোখে চোখে রাখবে
-আচ্ছা ঠিক আছে
-বাবা আসি এখন
,,
,,
দুজন বেড়িয়ে বাস এর কাছে আসলো। এখনো বাস পুরো ভর্তি হয় নি। দুজন বাসা উঠলো রাত্রি আগে আর পিছু পিছু আদনান।
-কোথায় বসা যায় বলুন তো (রাত্রি)
-আপনার ইচ্ছা (আদনান)
-আমি এই সাইডে জানালার ধারে বসবো
-বসেন
-আপনি আমার পাশেই বসেন
-আপনার বাবা যখন বলেছে বসতে তো হবেই
-হুমম ব্যাগ গুলো ঐ উপরে রাখুন
-ওকে আপনার ব্যাগ টা দিন আমি রেখে দিচ্ছি
-হুমম নিন
,,
কিছুক্ষণ পর বাস ছাড়লো..
দুজনই চুপচাপ। আদনান মোবাইল বের করে এফ বিতে ঢুকেছে
-ঘুরতে আসছি মোবাইল দেখতে আসি নাই, মোবাইল রাখো(রাত্রি)
-আপনি জানালার ধারে বসছেন আপনি প্রকৃতি দেখেন আমি মোবাইল দেখি (আদনান)
,,
হঠাৎ আদনান কে একটা মেয়ে ম্যাসেজ করলো..
-হ্যালো
,,
রাত্রি দেখতে পেলো..
-এই কে ম্যাসেজ করেছে?(রাত্রি)
-করেছে একজন (আদনান)
-দেখি তো
,,
আদনান এর হাতে থেকে রাত্রি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো একটা মেয়ে এস এম এস করেছে..
-কয়টা লাগে তোর? (রাত্রি)
-একটা (আদনান)
-তাহলে এই মেয়ে কে
-হয়তো মেয়ে, ছেলেও হতে পারে
-একটা থাকতে আরেকটার সাথে কথা বলতে হবে কেনো?
-আমার তো একটাও নেই
-নেই মানে!তো আমি কি
-হা হা হা আপনি!
-হাসবি না
,,
আদনান হেসেই চলেছে। আদনান এর হাসি দেখে রাত্রির মাথা গরম হয়ে যায় আর তখনই আদনান এর ফোনটা রাস্তার পাশে একটা পুকুরে ঢিল দেয়।
-আ আ আ আরে আ আমার ফোন (আদনান)
-নে এখন কথা বল (রাত্রি)
-এইটা কি করলেন আপনি? আমার ফোনটা ফেলে দিলেন কেনো?
-তুই এমনিতে আমার সাথে ইদানীং কথা বলিস না +এখন আমি তোকে মানা করতেছি আর সেটা শুনে হাসতেছিস সব রাগ একসাথে হয়ে মাথায় উঠেছে তারপর যা করার আমার মাথার ব্রেইন করেছে আমি কিছু জানি না
-আরে এইটা কোনো কথা ফোন এর মধ্যে আমার অনেক কিছু আছে
-সব বাদ কিচ্ছু লাগবে না
-আমার প্রিয় গান গুলো আমি কই পাবো
-এই যে নে আমার ফোনটা ধর এই একটাই দুজন ব্যবহার করবো
-এখন না হয় কাছে রাখছি এখান থেকে ফেরার পর!
-তবুও দুজন একটাই
-সম্ভব না আমি থাকবো এক জায়গায় আর আপনি থাকবেন অন্য জায়গায়
-জ্বিইই না আমরা একসাথে থাকবো
-ছি ছি কি বলেন
-জ্বি ঠিক বলছি আর আমরা তো ট্যুরে যাচ্ছি না
-তাহলে?
-বিয়ে করতে
-মানে!
-এত প্রশ্নের তো উত্তর দিতে পারবো না। শর্টকাটে বলি, আমি আপনি ট্যুর থেকে ফেরার সময় বিয়ে করে বাসায় যাবো তারপর যা হবার হবে
-না এ আপনি কি বলছেন! এটা ঠিক হবে না
-বেশি কথা বলার কারনে তোর মোবাইল ফেলে দিয়েছি, আবার যদি বক বক করিস তো আমি নিজেই লাফ দিবো
-নাহহ কি বলেন। এটা মেয়ে না অন্য কিছু
-চুপ আর কোনো কথা না এবার আমরা একটু রোমান্টিক মুডে চলে যাবো হুমম
-উহুমমমম
,,
রাত্রি আদনান এর কাধের উপর হাত রাখলো..
-দেখো আমাকে কিন্তু এই পোশাকে বেশ মানিয়েছে তাই না? (রাত্রি)
-হ্যা খুব মানিয়েছে (আদনান)
-শোনো কানে কানে একটা কথা বলি
-কি?
,,
রাত্রি আদনান এর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল
-সন্ধ্যায় আমি তোমাকে না লিপ কিস করবো (রাত্রি)
-এই না (আদনান)
-এত না না করো কেনো? তুমি কি সব ভুলে গেছে আমাদের সেই ম্যাসেনঞ্জারে কথোপকথন এর কথা, তুমি বলেছিলে যে ঠোঁট দিয়ে আমি বক বক করি সেখানে তোমার আদর দিয়ে দিবে
-আমি ভুলে গেছি
-আমি তো ভুলি নি চান্দু হি হি হি
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
চলবে
#SSSS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here