বোনু Part_11

0
741

বোনু
Part_11
#Writer_NOVA

সামনে থাকা ব্যাক্তিটা কোন উত্তর দিলো না।শুধু মুচকি হাসলো। তবে সেটা আড়ালে।আরান এখনো ঘোরের মাঝে আছে। এটা কি করে সম্ভব? উষা এখনো বেঁচে আছে। উষা সামনে এগিয়ে এসে আরানের নাক বরাবর একটা পাঞ্চ মারলো।আরান ছিটকে কিছুটা দূরে সরে গেল।আরান আরেক দফা অবাক।উষা ওকে মেরেছে।যে মেয়ে কোন ছেলের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে সাহস পায় না সে ওকে মারলো।উষার সাথে তারিনও আছে।তারিন জোরে চেঁচিয়ে বললো।

তারিনঃ উষানি বেবি থামলি কেন?আরো দুইটা লাগা।মেয়েদের কি ভাবে ওরা? কত বড় সাহস ওর? ওরনা ধরতে আসছিলো।হাত কেটে প্যাকেট করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিবো।জিও ননদিনী জিও।এই না হলে আমার আদুরিনী, ননদিনী।
আরানঃ উষা তুমি? তুমি এখনো বেঁচে আছো?
উষাঃ তারিন কে রে ছেলেটা? এমন অবাক হচ্ছে কেন আমায় দেখে?আমিতো চিনতে পারছি না।
তারিনঃ উষানি তুই আরান কে চিনতে পারছিস না।ওহ সরি আমি তো ভূলেই গিয়েছি তোর স্মৃতি শক্তি নেই। এ ব্যাটার কথা পরে বলছি।আগে ওকে একটু শিক্ষা দিয়ে নে।মার তো আরো দুইটা।
উষাঃ ওকে তারু বেবি।

উষা হাত দুটোকে মুঠ করে একটু ঘুরিয়ে নিলো।তারপর আরানকে পরপর কয়েকটা ঘুষি মারলো।আরান ভাবতে পারেনি ওর সাথে উষা এমনটা করবে।
ও কিছুটা দূরে সিটকে মাটিতে পরে গেলো।

জয়ঃ আরান তোকে এই পুঁচকে মেয়েটা মারলো।
আসাদঃ এটা কি হলো? শেষ পর্যন্ত আরান একটা মেয়ের হাতে মার খেলো।
নিশানঃ আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবি নাকি মেয়েটাকে দু-চারটা মারবি।
আসাদঃ চল তো মেয়েটাকে দেই দুইটা।

জয়,আসাদ,নিশান সামনে এগিয়ে আসতেই তারিন ওদের পথ আটকালো।তারিনের হাতে ইয়া মোটা একটা বাঁশের টুকরা।মাঠে প্যান্ডেলের জন্য বাঁশ রাখা আছে। সেখান থেকে তারিন খুঁজে এটা জোগাড় করে এনেছে।

তারিনঃ খবরদার আরানের চামচারা আর এক পাও নড়বি না।যেখানে আছিস সেখানে দাঁড়িয়ে থাক।নয়তো প্রত্যেকের মাথায় এই বাঁশের বারি পরবে।বেশি না একটা বারি মারলেই বাপ-দাদার নাম ভূলে যাবি।
জয়ঃ বাপ রে এই মেয়ে এখানে কেন? আজ আমরা গেছি।যেই ডেঞ্জারাস মেয়ে এটা।(বিরবির করে)
আসাদঃ তুই আমাদের ভয় দেখাচ্ছিস? হাউ ফানি।তোর মতো একটা মেয়ে আমাদের কি করবে।
তারিনঃ ইন্দুরের বাচ্চা ভালো মতো বললাম ভালো লাগলো না।তবে রে তোদের একদিন কি আমার যতদিন লাগে।

বাঁশের টুকরাটা উঁচু করে বারি মারতে নিলে পড়িমরি করে বাকি তিনটা ছুট।তারিনও কম যায় না।সেও আরানের চামচাদের পেছনে ছুটতে লাগলো।জয়,আসাদ,নিশান প্রাণপণে ছুটছে।একটা বারি খেলে পুরো মাথা দুই ভাগ হয়ে যাবে।ছুটতে ছুটতে কথা বলছে তিনজন।

জয়ঃ খুব তো বড় বড় ডায়লগ ছারলি।এবার
পালাচ্ছিস কেন?
আসাদঃ হারামী জান বাঁচানো ফরজ।এই মেয়ের সাথে লাগতে যাওয়া ঠিক হই নাই।
নিশানঃ একটা বারি দিলে চোখের সামনে সরিষা ফুল দেখবি।জলদি ভাগ। কথা বলিস না।
জয়ঃ আমি বারি খাইতে রাজি না।আমার এখনো বিয়ে হই নাই। আমার কত শখ আমি বিয়ে করবো।
নিশানঃ শালা,একটা বারি খাইলে জাহান্নামের চৌরাস্তায় থাকবো আর সে পড়ে আছে বিয়ে নিয়ে।আগে মেয়েটার হাত থেকে বেঁচে বাড়ি ফির তারপর বিয়ের চিন্তা করিস।
পেছন থেকে তারিন চিৎকার করে ওদের বকছে।
তারিনঃ ইন্দুরের বাচ্চাগুলি এখন পালাস কেন? একবার দাঁড়া তোদের মাথা যদি দুই ভাগ না করেছি তাহলে আমার নামও তারিন মাহমুদ নয়।

আরানের রাগে কান দিয়ে ধূয়া বের হচ্ছে। এতোগুলো মানুষের সামনে উষা ওকে মারলো।যেই আরান শিকদারের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকিয়ে কথা বলতে পারে না। তাকে সবার সামনে এভাবে মারছে।আর সবার মুখে প্রশান্তির হাসি।খুব খুশি সবাই। বিশেষ করে মেয়েরা।সব ছেলে-মেয়ে আগ্রহের সাথে আরানের নাজেহাল অবস্থা দেখছে।আরান সবার দিকে চোখ বুলিয়ে উষার দিকে তাকালো।

আরানঃ উষা তোর খবর আছে।তুই যে কি ভূল করলি তা নিজেও জানিস না।আরান শিকদারকে অপমান করা ও ঘুষি মারার প্রতিশোধ আমি কিভাবে নিবো তা তুই নিজেও জানিস না।দুইবার মরতে মরতে বেঁচে গেছিস।কিন্তু তৃতীয় বার বাঁচবি না।(দাঁতে দাঁত চেপে)
উষাঃ আমার ব্যাপার নিয়ে তোর না ভাবলেও চলবে।আমাকে নিয়ে ভাবার জন্য আমার চার ভাই আছে। যতদিন পর্যন্ত আমার চার ভাই আমার সাথে আছে ততদিন তুই আমার ক্ষতি তো দূরে থাক আমার চুলও স্পর্শ করতে পারবি না।(মনে মনে)

আরান রাগে , ক্ষোভে বাইক নিয়ে বাড়ি চলে গেল।আজ শিকদার বাড়িতে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাবে।

???

গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে পুরো ঘটনাটা দেখলো মির্জারা।চার ভাই তখন ড্রামা করে একমিনিটও বাড়িতে দেরী করেনি।তাদের বোনকে এই রূপে দেখে চার ভাই খুব খুশি।

ইশাতঃ আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। আমাদের বোনু পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছে। শুধু স্মৃতি শক্তি ফিরে নি।
আদিলঃ তবে আমরা ওকে ব্যাংকক নিয়ে গিয়ে অনেক ভালো করেছি।যার কারণে বোনু নিজেকে রক্ষা করতেও শিখে গেছে।
অর্ণবঃ ভাগ্যিস ৬ মাস আগে ঠিক সময় পৌঁছে গিয়েছিলাম।নয়তো আমাদের বোনুকে আমরা হারিয়ে ফেলতাম।
ঈশানঃ ব্যাংকক যাওয়ার প্লানটা ঠিক ছিলো।তাতে করে আমাদের বোনুটা শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে গেছে। সাথে সাথে আমরা ওকে নিজেক রক্ষা করার জন্য ফাইটিং টাও শিখাতে পেরেছি।
আদিলঃ আমাদের শত্রুতো জানে না কাদের কলিজায় হাত দিতে এসেছে? এবার পুরো ঘটনার নাটের গুরুকে ধরা দিতেই হবে।
অর্ণবঃ আমার মনে হয় না সামান্য ৫০ কোটি টাকার জন্য কেউ আমাদের বোনুর পেছনে লেগেছে। এর পেছনে অন্য কোন বড় রহস্য আছে।
ইশাতঃ সেটা আমাদের বের করতে হবে।
ঈশানঃ আমরা থাকতে আমাদের বোনুর কিছু হবে না। আমরা কিছু হতে দিবো না। সেদিন সামান্য একটু ভূলে বোনুকে হারাতে বসেছিলাম।আর কোন ভূল হচ্ছে না।
আদিলঃ তৈরি থাকো মিঃ…. । তোমার মৃত্যুর দিন গোনা শুরু করে দেও।খুব শিঘ্রই তোমার বিনাশ হবে।

চার ভাই রহস্যময়ী হাসি দিয়ে গাড়িতে উঠে পরলো।তাদেরও যে দাবার গুটি চালতে হবে।নয়তো আবার বোনের বিপদ হতে হবে।যদিও খেলাটা উষার এক্সিডেন্টের পর থেকে শুরু হয়েছে। উষাকে খেয়াল রাখার জন্য গোপন সূত্রে ভাইদের বডিগার্ডতো আছেই। তারপরও যে খেলা একজন শুরু করেছে তাতো শেষ করতেই হয়।

৬ মাস আগে যেদিন উষার মুখে বালিশ চেপে ধরেছিলো রোহান ও নিলয়।ঠিক তখনি চার ভাই সেখানে গিয়ে হাজির হয়।রোহান ও নিলয়কে হাতেনাতে ধরে ফেলে।ঈশান ও আদিল ইচ্ছে মতো দুটোকে মারতে থাকে।ইশাত ও অর্ণব দুজন উষার সামনে গিয়ে পাগলের মতো আচরণ শুরু করে। উষা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আর ২ মিনিট বালিশ চেপে রাখলে মরে যেতো।দুই ভাই পানির ঝাপটা মারতেই উষার জ্ঞান ফিরে। চার ভাইয়ের প্রাণ ফিরে আসে।রোহানকে দিয়ে ওদের মালিকের কাছে ফোন করে বলতে বলে যে উষা মারা গেছে। বেচারা রোহান ও নিলয় নিজেদের প্রাণের ভয়ে চার ভাইয়ের কথা মতো তাই করে।যার কারণে ওদের শত্রুরা জানে উষা মারা গেছে। সেদিন রাতেই রোহান ও নিলয়ের থেকে ওদের শত্রুর সব খবরা-খবর নিয়ে নেয়। তারপর দুটোকেই এমন জায়গায় গুম করে দেয় যার খবর ওরা চার ভাই ছারা কেউ জানে না।তবে জানে বাঁচিয়ে রেখেছে। যাতে পরবর্তীতে কাজে লাগাতে পারে।

সকালে বোনকে নিয়ে পারি দেয় ব্যাংকক।যাতে উষা সুস্থ হওয়ার আগে কেউ ওর কোন ক্ষতি করতে না পারে।সেখান থেকে ৬ মাসে বোনকে সুস্থ করে গতকাল দেশে ফিরলো।উষা পুরোপুরি সুস্থ। চার ভাই বোনের সেফটির জন্য ফাইটিং টাও শিখিয়ে এনেছে।এখন ভাইদের একটাই আফসোস বোনুকে কেন আরো আগে ফাইটিং শিখালো না।তাহলে হয়তো এতো কিছু হতো না।

???

শিকদার ভীলা……

আরান বাড়িতে এসে পুরো ড্রয়িং রুমের জিনিসপত্র ভাংচুর করে তেরটা বাজিয়ে ফেলেছে। এতো কিছু ভাঙ্গার পরও মাথাটা ঠান্ডা হচ্ছে না।আরানের মা সুমি বেগমও তার একমাত্র ছেলেকে শান্ত করতে পারছে না।যা জিদ ছেলের।একদম বাপ কা বেটা।

সুমিঃ আরান জাদু বাবা আমার।এমন করে না কি হয়ছে মাকে বল।
আরানঃ একদম কথা বলবে না আমার সাথে। যাও এখান থেকে। আমি আজ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিবো।এত বড় সাহস ঐ উষার আমাকে সবার সামনে মেরেছে।ওকে আমি যতক্ষণ পর্যন্ত উপরে শিফট করতে না পারবো ততক্ষণে আমার মনের জ্বালা মিটবে না।দুইবার বেঁচে গেলো এবার বাঁচতে দিবো না।আমি তাকে সব কিছু এখনি বলছি।বারবার আমাদের প্লান ভেস্তে যাচ্ছে। আর সহ্য করতে পারছি না।কিভাবে কি হচ্ছে? (রেগে +চিৎকার করে)

সিঁড়ির কোণা থেকে বড় ফুলদানিটা নিয়ে সজোরে আছার মেরে উপরে নিজের রুমে চলে গেল। সুমি বেগমের কলিজা কেঁপে গেলো ছেলের কান্ড দেখে।ছেলে আজ অনেক রেগেছে।ওকে যদি শান্ত করতে পারে একজনি।তাই আরানের মা তাকে কল করলো।

সুমিঃ হ্যালো বাবা।
—-হ্যাঁ চাচি।কেমন আছেন?
সুমিঃ আমি ভালো আছি বাবা।কিন্তু আরান ভালো নেই। ওর আজ কি জানি কি হয়েছে?
— কি হয়েছে আরানের?
সুমিঃ কি জানি বাবা? সকালে তো খুশি মনে কলেজে গেল।কিন্তু কলেজ থেকে ফিরে পুরো বাড়িতে ধ্বংস লীলা চালিয়েছে।তুমি যদি বাবা একটু ওকে জিজ্ঞেস করে দেখতে কি হয়েছে? আমি তো ভয়ে সামনেও যেতে পারবো না।ওর রুমে এখন গেলেই আরো রাগ দেখাবে।একমাত্র তোমার কাছেই তো একেবারে ভিজা বিড়াল হয়ে থাকে।বাড়ির সবার সামনে বাঘ।
—আপনি চিন্তা করবেন না চাচি।আমি দেখছি।এমনিতেও ওর সাথে আমার হিসাব-নিকাশ বাকি আছে। ওর কপালে কি আছে ও নিজেও জানে না।
সুমিঃ আচ্ছা বাবা। তুমি তাহলে ওর সাথে কথা বলো।

ফোন কেটে দিয়ে সে ব্যাক্তিটা চিন্তায় পড়ে গেল।কি এমন হয়েছে যাতে আরান পাগলামি করছে।মির্জাদের সাথে কি কোন ঝামেলা হয়েছে। গতকাল নাকি মির্জারা ব্যাংকক থেকে ফিরেছে।

—-কি হয়েছে কলেজে?আরানতো কোন কারণ ছারা এমন করবে না।তবে কি উষা বেঁচে আছে? তাতো কখনি সম্ভব না।কিন্তু উষা যদি মরে যেত তাহলে পরেরদিন মির্জারা ব্যাংকক কখনি যেত না।রোহান,নিলয় কোথায়? ওদের কোন হদিস তো পাওয়া যায় নি।আমার এই হিসাবটা আরো আগে মিলানো উচিত ছিলো।আমি ৬ মাস এদের ওপর নিশ্চিন্তে কি করে থাকলাম।ডেম ইট।আমার নিজের ওপর রাগ হচ্ছে। এতোটা বোকা হয়ে গিয়েছিলাম।

আরাভ শিকদার ও সুমি বেগমের একমাত্র ছেলে আরান শিকদার।আরাভ শিকদার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক। তবে কতটা খাঁটি তিনি তাতে সন্দেহ আছে।মানুষটা বেশি সুবিধার নয়।তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ২য়।বড় ভাই মুশফিক শিকদারের এক ছেলে এক মেয়ে। মেয়েটা এখন আর বেঁচে নেই।কয়েক বছর আগে মারা গেছে। মুশফিক শিকদার ও তার স্ত্রী সিলেটে থাকে।আরাভ শিকদারের ছোট ভাই রিজুওয়ান শিকদার।তার কোন ছেলে নেই। দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে আমেরিকা থাকে।

আরান রুমে এসে বড় করে একটা শাওয়ার নিলো।তারপর মোবাইল হাতে নিয়ে কল করলো তার চেনা কারো কাছে যে আমাদের কাছে অচেনা।কলটা গিয়ে পৌঁছালো সুদূর নিউইয়র্কে।যেখানে সে অচেনা ছেলেটি থাকে।

???

নিউ ইয়র্ক………

অচেনা ছেলেটি দুহাত গুঁজে ভাবনায় ডুবে আছে।কোনভাবেই অঙ্ক মিলাতে পারছে না।কি থেকে কি হচ্ছে?ওর পিছনে দাঁড়িয়ে আছে জিকু।জিকু ওর বসের হাব-ভাব বোঝার চেষ্টা করছে।

জিকুঃ বস,আপনাকে কেউ কল করেছে?
—ফোনটা আমার কাছে দেও।
জিকুঃ এই নেন বস।
— কি হয়েছে ? হঠাৎ ফোন করলি।তুই বাড়ি গিয়ে এমন করেছিস কেন?
আরানঃ তুমি জানলে কি করে?
—-আমার কাছে তোর সব খবর থাকে।
আরানঃ উষা বেঁচে আছে?
—-হোয়াট? কিভাবে কি?(অবাক হয়ে)
আরানঃ আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না।
—-৬ মাস আগে সেদিন তো খুব বড় বড় কথা বলেছিলি।আজ সব ভেস্তে কি করে গেলো? আমারি ভূল হয়েছে যে তোকে বিশ্বাস করেছি।আমার দুই দুইবারের প্ল্যান নষ্ট হয়ে গেল।টাকা নেওয়ার সময় তো ঠিকই লেকচার দিস।এখন তোকে সামনে পেলে জ্যান্ত পুঁতে ফেলতাম।
আরানঃ আমি তোমার কাছে থেকে ৪/৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলাম সেদিনের কথা তোমার মনে আছে।
—-হুম মনে আছে।আমি তোর ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।তো কি হয়েছে?
আরানঃ সেদিন আমাদের সব কথা কেউ শুনে নিয়েছিলো।যার কারণে উষা আজও জিন্দা আছে।
—তোকে দুই বার উষাকে মারতে পাঠালাম আর দুইবার তুই ব্যর্থ হলি।আমার ইচ্ছা করছে তোর ঠিক কপাল বরাবর শুট করতে।
আরানঃ আজ কলেজে অনেক কাহিনী হয়ে গেছে।
—ভনিতা না করে বল কি হয়েছে?

আরান কলেজের পুরো ঘটনা অচেনা ছেলেটিকে খুলে বললো। অচেনা ছেলেটির রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। হাত মুঠো করে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে। সামনে থাকা টি-টেবিল জোরে ঘুষি মারলো।টেবিলের সামন্য কিছু অংশ ভেঙ্গে গিয়ে ওর হাতটা কেটে গেলো।হাত থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত পরছে। তাতেও ভ্রুক্ষেপ নেই।

—-আরান তোকে একটা কাজ দিলাম সেটাও কমপ্লিট করতে পারলি না।দুইবার ফেল হলাম।এবার মির্জারা বোনকে তৈরি করে মাঠে নেমেছে মনে হচ্ছে। তোকে টাকা দিয়ে পুষে আমি সবচেয়ে বড় ভুল করেছি।আমি হাল ছারছি না।একভাবে না একভাবে আমি ওদের বোনকে শেষ করবোই।তোর সাথে আমার আর কোন যোগাযোগ নেই।
আরানঃ প্লিজ আমার সাথে এমন করো না।আমার কথাটা তো —

আরানের কথা শেষ হওয়ার আগেই অচেনা ছেলেটি হাতে থাকা মোবাইলটা ফ্লোরে আছাড় মারলো।মোবাইলটা টুকরো টুকরো হয়ে ফ্লোরে পরে রইলো।
তারপরও মেজাজ ঠান্ডা হয়নি।

জিকুঃ এনিথিং রং বস্।
—-আমার প্লান আবারও নষ্ট হয়ে গেছে। মির্জাদের বোন বেঁচে আছে।
জিকুঃ কিভাবে হলো এসব?
—আমি হার মানছি না।আবারও জাল বিছাবো।যতদিন পর্যন্ত ওদের বোনকে ওদের কাছে থেকে কেড়ে না নিবো ততদিন পর্যন্ত আমি হাল ছাড়বো না।
জিকুঃ শান্ত হোন বস।আরো ঠান্ডা মাথায় আমাদের ভাবতে হবে।তারপর প্লানিং করতে হবে।
—শান্ত তো আমি সেদিন হবো যেদিন মির্জাদের বোনকে আমার বোনের কাছে পাঠাতে পারবো।আমি কাউকে ছারবো না।সবাইকে আমার মতো কষ্ট পেতে হবে। আমি এই ছয় মাস নিশ্চিন্তে কি করে থাকতে পারলাম।

টেবিল থেকে কফির মগটা হাতে নিয়ে দেয়াল টিভি তে ছুঁড়ে মারলো। শব্দ করে টিভিটা চুরচুর করে ভেঙ্গে নিচে পরে গেলো। সারা ফ্লোরে কাচের টুকরোর ছড়াছড়ি। জিকু আজ ওর বসের কান্ড দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো।

#চলবে

#Part_10
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/2946965698865496/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here