বিনি সুতোর টান পর্ব ৭

0
311

#বিনি_সুতোর_টান
#লেখিকা_জেনিফা_চৌধুরী(মেহু)
#পর্ব_সাত

—আমার সব শেষ হয়ে গিয়েছে । আমি এখন আমার বাবা মায়ের সামনে কোন মুখে দাড়াব। আমি এখন কি করবো তুমি বলে দাও প্লিজ। নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। কাল রাত থেকে অসহ্য যন্ত্রনা ভোগ করে এসেছি আর পারছিনা আমি। আর পারছিনা…..

বলেই আরো কান্নায় ভেঙে পড়লো। জেমি এই মুহূর্তে কি বলবে খুঁজে পাচ্ছেনা। রাগে ওর শরীর ফেটে যাচ্ছে। কিছুক্ষন আগে নিজের চোখে যেই দৃশ্য দেখলো এর পর মায়ার উপর ওর রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। জেমি কিছু না বলে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে। কিছুক্ষন আগেই এইসব ভেবে ও নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছিলো কিন্তু এখন আর নিজেকে গুটালে চলবে না। জেমি মায়াকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে শক্ত কন্ঠে বললো……

— সবটা খুলে বলো মায়া। কি হয়েছে? আমি নিশ্চয়ই তোমাকে তোমার যোগ্য প্রাপ্যটা ফেরত দিব। বলো?

জেমির কথা শুনে মায়া কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো…..

—জায়ান ! জায়ান ! জায়ান আমার সাথে…..

বলেই আবার কেঁদে উঠলো। জেমি শক্ত চেহারা করে দাতে দাত চেপে জোরে বলে উঠলো……

—কান্না বন্ধ করো। আই স্যা স্টপ মায়া। কি হয়েছে খুলে বলো? তোমার এই অবস্থা কেনো?

জেমির কথা শুনে মায়া কাঁদতে কাঁদতেই বলতে লাগলো……

—কাল রাতে জায়ান আমার শরীর ভোগ করেছে। শ/কুনের মতো খুবলে খে,……….

আর বলতে পারলো না তার আগেই ওর গালে সজোরে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলো জেমি। থাপ্পড় খেয়েই মায়া ঘুরে তাকাতেই আবারো আরেকটা থাপ্পড় পড়লো মায়ার গালে। দ্বিতীয় থাপ্পড় দিয়েই পরপর আরো দুইটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো মায়ার গালে। পরপর চারটা থাপ্পড় খেয়ে মায়ার মাথা কিছুটা ঘুরে গেলো। ফর্সা গাল দুইটা লাল টকটকে হয়ে আছে। মায়া গালে হাত দিয়ে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জেমি দিকে। মায়ার ঠোঁট আর শরীর সমানে রাগে কেঁপে উঠছে বার বার। মায়া জোরে চিৎকার করে বলতে লাগলো……..

—হাউ ডেয়ার ইউ। তুমি আমার গায়ে হাত তুললে। এত বড় সাহস তোমার। আমি তোমার কাছে আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার চাইতে এসেছিলাম আর তুমি আমাকে থাপ্পড় মা/রলে। তোমাকে আমি…..

বলেই মায়া জেমির দিকে তেড়ে যেতেই জেমি খপ করে মায়ার হাতটা ধরে পিঠের সাথে মুঁচড়ে ধরে রাগী কন্ঠে বলতে লাগলো…….

— এই থা/প্পড় গুলো তোমার কু-র্কমের কাছে খুব সামান্য। এতটা নিচ তুমি। নিজের সম্মানে এত বড় একটা দাগ লাগাতে তোমার লজ্জা করলো না। কি করে পারলে এই কাজটা করতে। আজ তুমি শুধু তোমার গায়ে দাগ লাগাও নি আজ তুমি পুরো মেয়ে জাতির গায়ে দাগ লাগালে। নিজের শরীরটা এতই সস্তা করে দিয়েছো যে, এই নোংরা খেলা খেলতে চাইছো। এতটা নোংরা একটা মেয়ে কি করে হতে পারে? একবার ভেবেছো এই কথাগুলো বাইরের লোক জানলে তুমি সমাজে মুখ দেখাবে কি করে?
ছিঃ মায়া ছিঃ। তোমার এই শরীরে হাত দিতেও আমার ঘৃনা হচ্ছে।

বলেই জেমি মায়াকে ছিটকে সরিয়ে দিলো। মায়া রাগে ফোসফোস করছে। জেমি মায়াকে ছিটকে সরিয়ে দিতেই মায়া ফোসফোস করে বলে উঠলো……

— এই মেয়ে তোমার কি মনে হয় আমি বানিয়ে বানিয়ে এইসব বলেছি। তাহলে, আমার দিকে চেয়ে দেখো একবার। লুক, লুক এট মি। আমার এই অবস্থা হলো কি করে বলো? এন্সার মি…

মায়া চিৎকার করে বলতেই জেমি পাল্টা চোখ গরম করে মায়ার মুখের সামনে আঙ্গুল তুলে জোরালো কন্ঠে বললো……

— গলা নামিয়ে কথা বলো। তোমার মতো নোংরা রাস্তার মেয়ের মুখে গলা উঠিয়ে কথা বলা মানায় না। নিজের শরীরে নিজেই কলঙ্কের দাগ লাগিয়ে এখন তুমি গলা চেঁচিয়ে কথা বলছো। কি ভেবেছো? জেমি বোকা, তুমি যা বলবে তাই বিশ্বাস করে জায়ান কে ছেড়ে চলে যাব। ব্যাপার টা নিত্যান্তই হাস্যকর! জায়ান আমার সাথে যেই অন্যায় করেছে সেই অন্যায়ের শাস্তি যতদিন না অব্দি ও পাচ্ছে ততদিন এখান থেকে আমি এক পাও নড়ব না। কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে নিও। এক্ষুনি আমার চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে যাও। তোমার নোংরা চেহারাটা দেখতেও করুনা হচ্ছে আমার। গেট আউট।

জেমির চিৎকার শুনে মায়া রাগে কাপছে। কাঁপার জন্য পাল্টা জবাব দিতে যেয়েও পারছেনা। কারন মায়া ভালো করেই বুঝে গেছে জেমি সবটা জানে। কিন্তু কি করে জানলো? এই বিষয়টাই ও বুঝতে পারছে না। মায়া রাগে দাত কড়মড় করতে করতে বললো…..

— আজকের এই অপমানের ফলাফল কতটা ভয়ংকর হবে তুমি কল্পনা ও করতে পারছোনা। প্রত্যেক টা থাপ্পড়ের হিসাব আমি তুলব….

মায়ার কথা শুনে জেমি কিছু বলতে যাবে তখনি পেছন থেকে কেউ বলে উঠলো…..

— কোন থাপ্পড়ের হিসাব তুলবে তুমি মায়া? এত চিৎকার চেঁচামেচি কিসের সকাল বেলা?

মায়ার জেমি দুজনেই পাশ ফিরে দেখে জায়ান দাড়িয়ে আছে। জায়ানের শার্টের প্রত্যেকটা বোতাম খোলা। জায়ানের ঠোঁটের কোনে লিপস্টিক লেপ্টে আছে। শার্টের এক পাশেও লিপস্টিকের দাগ। জায়ানের গালে নখের দাগ বসে আছে। জায়ান হয়তো ঘুম থেকে নিজের দিকে একবার ও তাকায় নি তাই এই অবস্থায় এখানে চলে এসেছে। জায়ানের এই অবস্থা দেখতেই জেমির বুকের ভেতর মুচড়ে উঠলো। যতই হোক জায়ানকে তো ও ভালোবাসে, জায়ান ওর স্বামী। কোনো স্ত্রী কখনো স্বামীর সাথে অন্য একজন কে সহ্য করতে পারেনা। জায়ান কে দেখেই মায়া একটু ঘাবড়ে গেলো। জেমি এক নজরে জায়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।

—এখন যদি এই মেয়েটা সব বলে দেয় জায়ান কে। তাহলে তো জায়ান আমাকে কোনোদিন কাছে টেনে নিবেনা। আমার এতদিনের সাজানো সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাবে। না! জায়ান কে সত্যিটা জানতে দেওয়া যাবে না। কিছুতেই না। তা-ছাড়া আমার এই অবস্থা দেখে যে কেউ আমার কথা নিমিশেই বিশ্বাস করবে। আর এই মেয়েটার কাছে তো কোনো প্রমান নেই ওর মুখের কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। যে করে হোক জায়ান কে আমার কথা বিশ্বাস করাতে হবে?

মায়া কথা গুলো মনে মনে ভেবেই জায়ানের দিকে ছলছল নয়নে ঘুরে দাড়ালো। জায়ান মায়াকে এই অবস্থায় দেখেই আকাশ থেকে পড়লো। জায়ান তৎক্ষনাৎ মায়ার কাছে এসে মায়ার দুই কাঁধে হাত রেখে বলতে লাগলো…….

— মায়া তোমার এই অবস্থা হলো কি করে? কি হয়েছে? তোমাকে এমন বিধ্বস্ত লাগছে কেনো?

জেমি এক নজরে চুপ করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। মায়ার নোংরামি কান্ড গুলো নিজের চোখে দেখে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে। সকাল বেলা জায়ানের রুমের দরজা খুলতেই মায়ার নোংরামি চোখে পড়েছে জেমির। ঘুমন্ত জায়ানের ঠোঁটে ইচ্ছেকৃত ভাবে নিজের ঠোঁটের লেগে থাকা লিপস্টিকের দাগ বসিয়ে দিচ্ছে মায়া। জায়ানের সাথে ঘনিষ্ট হয়ে নিজের ফোনের ক্যামেরাটা চালু করে টেবিলে রাখলো। জায়ানকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে জায়ান গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। এইটুকু দৃশ্য দেখতেই জেমির বুঝতে বাকি রইলোনা মায়া কি নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। একটা মেয়ে এতটা নোংরা কি করে হতে পারে ভাবতেই জেমি নিজেকে বার বার গুটিয়ে নিচ্ছিলো, ওই মুহূর্তে ওর কি করে উচিত ও বুঝতে পারছিলো না। রাগে ভেতর টা শক্ত পাথর হয়ে গিয়েছিলো। এই মুহূর্তে জায়ানের সামনে দাড়িয়ে ন্যাকা কান্না কাদঁছে মায়া। জায়ান একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে মায়ার দিকে। জেমি বুকে হাত ভাঁজ করে দাড়িয়ে দেখছে মায়া আর কি কি করতে পারে? মায়া আড়চোখে একবার জেমির দিকে তাকিয়ে জায়ানকে এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলে উঠলো…..

—তুমি আমাকে টার্চ করবে না জায়ান। আই হেইট ইউ। তুমি এতটা নিচে নামতে পারলে জায়ান।

মায়ার কথা শুনে জায়ানের ভ্রু যুগল কুচকে এলো। জোরে বলে উঠলো….

— হোয়াট? কি বলছো আবল-তাবল? আমি কি করেছি মায়া?

মায়া মনে মনে পৈশাচিক হাসি দিয়ে কাঁদো কন্ঠে বলে উঠলো….

—একবার নিজের মুখটা আয়নায় দেখো জায়ান। তারপর সবটা নিজেই বুঝে যাবে তুমি।

জায়ান এতক্ষনে নিজের দিকে খেয়াল করলো। ওর হাত নখের আঁচড়ে ভরপুর। শার্টের বোতাম গুলো খোলা। অজান্তেই নিজের মুখে হাত দিতেই হাতে লিপস্টিক লেগে আসলো। জায়ান নিজের অবস্থা কল্পনা করতেই বিধ্বস্ত চোখে প্রথমেই জেমির দিকে তাকালো। জেমি শীতল চাহনী নিক্ষেপ করে আছে ওর দিকে। কি হচ্ছে জায়ান কিছু বুঝতে পারছেনা। জায়ান কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো…..

—আমার এই অবস্থা কেনো? কি হয়েছে? মায়া তুমি কি বলতে চাচ্ছো?

জায়ানের কথা শুনে মায়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই জেমি পাশ থেকে বলে উঠলো…..

— আমি বলছি! আসলে জা….

জেমির কথার মাঝে ব্যাঘাত ঘটিয়ে মায়া বলে উঠলো…..

— তুমি কি বলবে? তোমার জন্যই আজ আমার এই অবস্থা। তুমি যদি জায়ান কে একা ফেলে না আসতে তাহলে জায়ান নিজের চাহিদা আমাকে দিয়ে পূর্ন করতোনা।

মায়ার কথা শুনে জায়ান কয়েক পা পিছিয়ে গেলো। ওর স্নায়ু কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে হঠাৎ। শরীরের সমস্ত অঙ্গ প্রতঙ্গ গুলো নিজ নিজ অবস্থানে স্থির হয়ে রইলো। জায়ানের চোখ থেকে অটোমেটিক পানি গড়িয়ে পড়তে লাগলো। জেমি মায়ার কথা শুনে মায়ার সামনে গিয়ে মায়ার হাত থেকে ফোন টা এক টানে কেড়ে নিয়ে কড়া কন্ঠে বলে উঠলো…..

–অন্যের জন্য কুয়া খুড়লে সেই কুয়ায় নিজেই পড়তে হয় মাই ডিয়ার ননদিনী। জাস্ট এ মিনিট।

বলেই মায়ার ফোন থেকে একটা ভিডিও ওপেন করে জায়ানের সামনে ধরলো। মায়ার ফোনটা আনলক করা ছিলো বিধায় জেমির বেগ পেতে হলো না। খুব সহজেই মায়ার জালেই মায়াকে ফাসিয়ে দিলো। মায়ার ভয়ে গলা শুকিয়ে আসচ্ছে। জায়ান ভিডিওটা দেখেই মায়ার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষপ করলো। জায়ানের রাগী চাহনী দেখে মায়া আমতা আমতা করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই জায়ান শরীরের সমস্ত জোর দিয়ে চড় বসিয়ে দিলো মায়ার গালে। রাগে মায়ার গলা চেপে ধরে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে নিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো…..

—তোর এত বড় সাহস তুই আমার চরিত্রে কালি লাগানোর চেষ্টা করেছিলি। আজ তোকে নিজের হাতে খু/ন করব আমি। কি করে পারলি এতটা নিচে নামতে। তোকে আজ আমি…..

বলেই আরো জোরে চেপে ধরলো মায়ার গলা। জেমি সমস্ত শক্তি দিয়ে জায়ান কে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। ওদের চিৎকারে ইরা বেগম ছুটে এসে এমন দৃশ্য দেখে তিনিও জায়ান কে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। এমন জোরে গলা চেপে ধরে ধরায় মায়ার দম বন্ধ হয়ে যেতে লাগলো। ইরা বেগম আর জেমি দুজনেই ধস্তাধস্তি করে জায়ান কে মায়ার কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনতেই জায়ান রাগে ফোসফোস করতে লাগলো। জায়ানের থেকে ছাড়া পেতেই মায়া কাশতে লাগলো। কাশতে কাশতে ওর দম বন্ধ হয়ে যেতে লাগলো। ইরা বেগম ছুটে গিয়ে পানি এনে দিতেই এক চুমুকে শেষ করে ফেললো। মায়া ফের কাঁশতে লাগলো।

— ওকে আমার চোখের সামনে থেকে এক্ষুনি দূরে সরিয়ে নিয়ে যাও মা। নয়তো ওকে আমি এই মুহূর্তে মে/রে ফেলব।

ইরা বেগমের জায়ানের ধমক শুনে মায়াকে টানতে টানতে নিয়ে গেলো। মায়া চলে যেতেই জেমি হাফ ছেড়ে বাঁচলো। জায়ানের জেমির দিকে তাকাতে লজ্জা করছে। জায়ানের অবস্থা বুঝতে পেরে জেমি তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে উঠলো……

— দেখলে তো নিজের চরিত্রে কালি লাগলে কতটা পুড়ে। সত্যি, মিথ্যার যাচাই না করে দিনের পর দিন তুমি আমার সাথে যেই অন্যায় গুলো করেছো। আমি তোমাকে কোনো দিন ক্ষমা করবো না জায়ান। কোনো দিন না। ঘৃনা হয় তোমার উপর। আবার করুনা ও। কারন তুমি চোখ থাকতেও অন্ধ। একদিন অনেক আফসোস করবে।
____________________________________________
সারাদিন বাড়িটা নিস্তব্ধ ছিলো। জায়ান সেই সকালেই বেরিয়ে গিয়েছে এখনো বাড়ি ফিরেনি। মায়া নিজের রুমের জিনিস ভেঙে-চূড়ে দরজা বন্ধ করে বসে আছে সকাল থেকে। জেমির শরীরটা আজ বড্ড খারাপ লাগছে। সকালের চেঁচামেচির পর আরো ক্লান্ত হয়ে গেছে শরীর। শুকনো খাবার খেয়ে নিজের রুমেই ছিলো। ইরা বেগম বা মায়া কারোর মুখ দেখতে ইচ্ছে করছে না ওর। সারাদিন পেড়িয়ে সন্ধ্যার অন্ধকার এসে গ্রাস করে নিলো সবটা। জেমি নিজের রুমে বসে বসে ডায়রি লিখছে। এই ডায়রি লেখার অভ্যাসটা ওর ছোট থেকে। মনের মধ্যে জমিয়ে রাখা কথাগুলো ডায়রির পাতায় বন্দি করে রাখে ও। জায়ান এখনো বাসায় ফিরেনি। কলিং বেলের আওয়াজ শুনতেই জেমি গিয়ে দরজা খুলে জায়ান কে দেখতে পেলো। জায়ান কে দেখে আজ বড্ড অচেনা মনে হচ্ছে জেমির। উস্কোখুস্কো চুল গুলো কপালে ছড়িয়ে আছে। মুখের লেগে আছে বিষন্নতা। জেমিকে দেখেই জায়ান ওর দিকে চোখ না দিয়ে ওকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। জেমিও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে স্থান ত্যাগ করলো। জায়ানের নিজেকে বড্ড ছোট মনে হচ্ছে। নিজের ভেতরে অনুশোচনা কুড়ে কুড়ে খেয়েছে আজ সারাদিন। আজ জায়ান বুঝতে পারছে শুধু মাত্র রাগের বশে কতটা অন্যায় করেছে ও। জায়ান ওর মায়ের রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু অপ্রত্যাশিত কথা শুনে থেমে গেলো। ইরা বেগমের রুম থেকে কয়েকটা শব্দ ভেসে আসলো জায়ানের কানে। জায়ান একটু এগিয়ে দরজার পাশে গিয়ে দাড়াতেই শুনতে পেলো……

—শুধু মাত্র তোমার কথায় আমি আমার ছেলের সংসারে আগুন লাগিয়েছি, নিজের হাতে নিজের ছেলের সংসার ভেঙেছি, ওই মেয়েটার গায়ে মিথ্যা অপবাদের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে অত্যাচার করেছি। আর সেই তুমি আমাকে এইভাবে অপমান করছো মায়া।

ইরা বেগমের কথা শুনতেই জায়ানের পায়ের তলার মাটি সরে গেলো। মুহূর্তেই ওর চারদিক ঘুরতে লাগলো।

#চলবে

শব্দসংখ্যাঃ- ১৮৫৮

(আসসালামু আলাইকুম। আজকের পর্ব টা একটু বেশি এলোমেলো আর প্যাচালে ভরপুর কিন্তু গল্পের স্বার্থে আমাকে এইগুলো ব্যবহার করাই লাগছে। কারোর কাছে খারাপ লাগলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন অনুরোধ রইলো। আজকের পর্ব কেমন লাগছে অবশ্যই জানাবেন একটু দুইলাইনের মন্তব্য করে আমার ভুল গুলো দেখিয়ে দিবেন প্লিজ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here