#বাবার_ভালোবাসা
পর্বঃ৩৫
লেখাঃ #রাইসার_আব্বু
” আচ্ছা মা রাজ কী কোনদিন সুস্থ হবে না? ঠিকমতো চলা ফেরা করতে পারবে না?
” না মা সে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে আল্লাহ চাইলে সব পারে। ”
” মা তুকে কিভাবে যে বলি, তুই আমাদের পছন্দ করা ছেলেটাকেই বিয়ে করে নে। কাল তাদের আসতে বলি?
” মা আমি বাসায় এসে বলছি। ”
” কণা রাজের বাসায় গিয়ে দেখে রুমে কেউ নেই রাজ ফ্লরে পড়ে আছি। মাথা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
” কণা দৌড়ে গিয়ে রাজের মাথাটা কুলে তুলে নেয়। মাথার পিছনে হাত দিয়ে দেখে মাথা সামান্য ফেটে গেছে। কণা কোন মতো রাজকে তুলে মাথায় ড্রেসিং করে দেয়। ড্রেসিং শেষ করতে না করতেই রাইসা বাসায় এসে পড়ে । রাইসা বাসায় এসে রাজকে এই অবস্থায় দেখে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে।
”ডাক্তার আন্টি বাবার কি হয়েছে? বাবার মাথায় বেন্ডেজ করেন কিসের?
” মামনি তোমার বাবা মাথায় একটু আঘাত পেয়েছে। তুমি কান্না করো না সব ঠিক হয়ে যাবে।
”রাইসা দৌড়ে তার বাবার কাছে আসো। রাজের মাথায় হাত ভুলাতে ভুলাতে বলতে লাগল, ‘বাবাই তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না?” বাবাই এই দেখ তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। তোমার কিছুই হবে না। তুমি আবার ভালো হয়ে যাবে।
” রাজ কোন কথা বলতে পারছে না। চোখ থেকে বিরামহীনন ভাবে পানি পড়ছে।
” রাইসা চোখের পানি মুছে দিয়ে রাজের কপালে চুমু এঁকে দেয়। ”
” কণা মুগ্ধ নয়নে বাবা মেয়ের ভালোবাসা দেখে। কণার কাছে মনে হয় এমন একটা মেয়ে যদি তার হতো। সত্যিই রাজের পাশে যদি থাকতে পারতো। এসব ভাবতে ভাবতে কণার ফোনটা বেজে ওঠে।
” ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কণা মা বলে’ কণা তুমি কোথায়? তাড়াতাড়ি বাসায় আসো। ”
” মা কি হয়েছে কোন সমস্যা? ”
” তুমি বাসায় এসো তারপর বলছি। ”
” আচ্ছা মা আমি আসছি।, কণা রাইসাকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে রাইসার কপালে একটা চুমু দিয়ে বললো মামনি তুমি কোন চিন্তা করো না। তোমার বাবাই এর কোন সমস্যা হলে আমাকে ফোন দিয়ে বলবে।
” আচ্ছা ডাক্তার আন্টি।”
” আচ্ছা এবার তাহলে আমি আসি। তার আগে আমার ফিসটা দাও তো। ”
” কাছে এসো, কণা রাইসার কাছে আসতেই রাইসা কণার দু’গালে পাপ্পি দিয়ে দেয়। কণা রাইসাকে জড়িয়ে ধরে আবারো কপালে চুমু এঁকে দেয়। এমন সময় রাইসা বলে, আন্টি একটা কথা বলি?
” হ্যাঁ বলো মামনি।”
” তুমি যখন আমাকে আদর করো তখন মনে হয় আমার মা আমাকে আদর করছে। আমার মা থাকলে হয়তো এভাবেই আদর করতো।’
” কণা কিছু বলছে না চুপ করে আছে। ”
” সরি ডাক্তার আন্টি তুমি মন খারাপ করলে?
” কণা রাইসাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বললো, মামনি আমি রাগ কেন করবো। বরং আমি আরো খুশি হয়েছি। এখন আসি মামনি।
” আচ্ছা সাবধানে যেয়ো।”
” এদিকে কথার খুব মনে পড়ছে রাজের কথা। কথা গাড়ি নিয়ে বের হয়ে সোজা রাজের বাসায় এসে যায়। রাইসা কথাকে দেখে দৌড়ে গিয়ে কথাকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগে মম তুমি কোথায় ছিলে? জানো বাবাই খাট থেকে পড়ে গিয়েছিল। কি বলছো এসব মামনি?
” হুমম মম কণা আন্টি আসছিল। ড্রেসিং করে দিয়েছে। আচ্ছা মম তুমি আমাদের বাসায় থাকতে পারো না? তুমি না বলেছো বাবাইকে বিয়ে করবে?
” হুমম মামনি। তুমি চিন্তা করো না। আর বাসা ভাড়া দিয়ে দিয়েছি তোমাদের। খেয়েছো মামনি?
” না মম খায়নি, ভুয়া রান্না করে রেখে গেছে কিচেনে দেখলাম। ”
” আচ্ছা খাবার নিয়ে আসি, একসাথে খাবো। ”
” হুম মম তুমি খাবার নিয়ে এসো।” কথা খাবার নিয়ে আসলে রাইসা তার বাবাইকে খাইয়ে দিচ্ছিল। কথা রাইসাকে। কথার কাছে দৃশ্যটা মনোমুগ্ধকর ছিল। খাওয়া শেষ হলে কথা বিদায় নিয়ে বাসায় এসে পড়ে। কথা বাসায় আসতেই তার বাবা বলে ‘ মা রাজের ওখানে গিয়েছিলি?”
” হ্যাঁ, বাবা।
” মারে একটা কথা বলি?
” হ্যাঁ বাবা বলো।”
” আমি চাচ্ছি তুই একটা বিয়ে করে নে। আমি কবে যে মরে যাবো। মরে যাওয়ার আগে স্বামীর সাথে দেখে যেতে চাই। ”
” বাবা এ অবস্থায়?রাজ কে ছাড়া কিভাবে বিয়ে করবো?
” মা রাজ তো সুস্থ হবে না। জানি না কোনদিন মরে যায়। তাই বলে তুই তোর ফিউচারটা নষ্ট করবি?”
” বাবা আমি রাজকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারছি না ”
” মারে তুই কাল কোন বড় ডাক্তার দেখা রাজকে। ডাক্তার কি বলে শুনে তারপর সিদ্ধান্ত নে । ”
” কথা পরের দিনই সিদ্ধান্ত নিল, যে রাজকে শহরের সবচেয়ে বড় ডাক্তার দেখাবে। কথা শহরের সবচেয়ে বড় ডাক্তার, কবিররের কাছে রাজকে নিয়ে গেল। ডাক্তার কবির রাজের অবস্থা দেখে বললো, ভালো হওয়ার চান্স ২০ ভাগ। আশা না করাই শ্রেয়। যতদিন এভাবে বেঁচে থাকবে এটাই ভাগ্য।
” কথা বাসায় এসে তার বাবাইকে হ্যাঁ বলে দিল। ”
”সামনে শুক্রবার কথার বিয়ে। দেখতে দেখতে বিয়ের দিন এসে গেল। ” কথা প্রায় সবাইকেই দাওয়াত দিয়েছে। ডাক্তার কণাকেও দিয়েছে। এদিকে ডাক্তার কণা ভাবলো রাইসাকে সাথে করে নিয়ে যাবে। রাইসাদের বাসায় এসে দেখে, রাইসা তার বাবাই এর বুকে ঘুমিয়ে আছে। রাইসাকে দু’বার ডাক দিতেই রাইসা ঘুম থেকে ওঠে পড়ে। কণাকে দেখেই বলে ” ডাক্তার আন্টি আপনি সেজেগুছে কোথায় যাচ্ছেন?
” কেন তুমি জানো না? আজ তো তোমার কথা আন্টির বিয়ে। ভাবলাম তোমাকে নিয়ে যায়!
” কি বলছেন ডাক্তার আন্টি? মম আমার বাবাইকে রেখে বিয়ে করতে পারে না। আমাকে নিয়ে যাবেন আমি মমকে বুঝিয়ে বলবো।
” কণা রাইসাকে নিয়ে বিয়ে বাড়িতে যায়। কথাদের বাড়িটা নানা রঙের আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। কথা লাল শাড়ি পড়ে কনের আসনে বসে আছে। রাইসা কথাকে দেখেই মম বলে দৌড়ে গেল।
” কথা রাইসাকে দেখেই বললো,” দেখ তো এই মেয়ে কে?
চলবে”””””””