#ফাগুন_ছোঁয়া
#পর্ব_৫
#লেখিকা_সারা মেহেক
অনাড়ম্বর সাজসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে মিমের রুম। সেই রুমের খাটের উপর চুপচাপ বসেছিলো সে। দুশ্চিন্তায় ছিলো ভীষণ। হঠাৎ রুমে আদ্রিশের উপস্থিতিতে চমকে উঠলো সে। ভয়ে বুক দুরুদুরু কাঁপতে লাগলো। ভেতরে ভীষণ অস্থিরতা কাজ করলো। চিন্তাভাবনা সব এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে গেলো।
আদ্রিশ এসেই মিমকে সালাম দিলো। কয়েক সেকেন্ডের জন্য মিম সালামের কি জবাব দিতে হয় সেটিই ভুলে বসলো। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে সালামের জবাব দিলো সে। আদ্রিশ এসে তার সম্মুখে বসলো। সরাসরি তার দিকে দৃষ্টি স্থাপন করলো। সে খানিক ভড়কে উঠলো। আদ্রিশের এহেন চাহনিতে সে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করলো। সে দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো। আদ্রিশ তবুও চেয়ে রইলো তার দিকে।
আদ্রিশের দৃষ্টি মিমের এ নতুন রূপের উপর। সে নিজের মাঝেই নিজেই ভীষণ অবাক হলো। এই কি সেই মেয়ে যাকে একদম সাধারণ রূপে কিছুদিন পূর্বে দেখে এসেছে সে! কি মায়াবী লাগছে তার মিশমিশকে! এখনও তার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে সামনে চুপচাপ বসে থাকা এই মেয়েটিই তার অর্ধাঙ্গিনী। বাকি জীবনটা এই মেয়েটার সাথেই তাকে কাটিয়ে দিতে হবে। সে কোনো ভ্রমে আছে কি না নিশ্চিত হতে মিমকে বললো,
” এই শোনো, আমার হাতে একটু চিমটি কা’টো তো।”
বাসর ঘরে সালামের পর চিমটি কাটার আবদার শুনে তব্দা খেলো মিম। বিস্মিত চাহনিতে ঘাড় ফিরিয়ে আদ্রিশের পানে চাইলো। তার দু চোখে বিস্ময় উপচে পড়ছে যেনো। আদ্রিশ তা খেয়াল করলো। তবে তার এ বিস্ময়ভাবকে পাশ কাটিয়ে বললো,
” আরে চিমটি কা’টো না!”
মিম ভারী বিস্মিত কণ্ঠে শুধালো,
” আশ্চর্য! আপনাকে চিমটি কা’টবো কেনো!”
” কা’টতে বলেছি, কা’টো আগে। ”
মিম দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করলো না। আদ্রিশের হাতে চিমটি কাটলো। মিমের চিমটিতে আদ্রিশ তীব্র গোঙানি দিয়ে ব্যাথায় হাত সরিয়ে নিলো। হাতে ডলা দিতে দিতে অভিযোগের সুরে বললো,
” এতো জোরে দিতে বলিনি পাগলী। প্রথম দিনই দেখি অ্যা’টা’ক করে বসলে!”
মিম ভ্রুজোড়া কুঁচকালো। প্রতিবাদ করে খানিক উচ্চস্বরে বললো,
” অ্যা’টা’ক আমি করিনি। আপনি স্বেচ্ছায় আমার কাছ থেকে অ্যা’টা’ক করিয়ে নিয়েছেন। আবার আমাকে দোষ দিচ্ছেন! ”
আদ্রিশ মুহূর্তেই মিমের ওষ্টজোড়া হাত দিয়ে চেপে ধরলো। সাবধানী কণ্ঠে বললো,
” আস্তে আস্তে! এতো জোরে বলার কিছু নেই এখানে। আর সরি, তোমাকে দোষ দেওয়ার জন্য। আমি চিমটি দিতে বলেছি। তবে এতোটা জোরেও দিতে বলিনি। ”
মিম আদ্রিশের হাত সরিয়ে রাখলো। মুখ ঘুরিয়ে ফের অন্যদিকে নিলো। তবে তেরছাভাবে তাকিয়ে বললো,
” শুনুন, এভাবে নিজের দোষ কখনো অন্যের ঘাড়ে চাপাবেন না৷ বিশেষ করে আমার ঘাড়ে তো মোটেও না৷ আমার এগুলো পছন্দ না। চট করে রাগ হয়ে যায় এসব দেখলে।”
আদ্রিশ মিমের এ কথা বলার ধরণে ঠোঁট টিপে হাসলো। বিস্মিত হবার ভান করে বললো,
” তুমি রাগও করো! ”
মিম আদ্রিশের এহেন কথায় চট করে তার দিকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো,
” কেনো? আমি রাগ করতে পারি না?”
” পারো, তবে তোমাকে দেখলে মনে হয় না এমনটা। ”
” ভালো। যাদের দেখলে রাগী মনে হয় না, শান্তশিষ্ট লাগে তারা রেগে গেলে কিন্তু ভয়ানক কিছু হয়ে যেতে পারে।”
আদ্রিশ মিমের দিকে সামান্য এগিয়ে এলো। ঠোঁট উল্টে বললো,
” তাই নাকি! তুমি ভয়ংকর কিছুও করে ফেলতে পারো! জানা ছিলো না তো।”
” অবশ্যই করতে পারি। এই যে এখন থেকে জেনে নিন এসব। ”
” আরো কিছু কি জানার বাকি আছে?”
” হুম। এখনও আমাকে পুরোপুরি চিনেননি আপনি৷ আর না আমি আপনাকে চিনেছি। দুজন দুজনকে চিনবো, জানবো। তারপর না কথা আগে বাড়বে।”
” আর কি কথা আগে বাড়বে। বিয়ে তো হয়েই গিয়েছে। ”
মিম এবার গোমড়ামুখে বললো,
” তা অবশ্য ঠিক বলেছেন। বিয়ে একবার হয়েই গিয়েছে। এখন চাইলেই আর পালানো সম্ভব না।”
আদ্রিশ সন্দেহের সুরে শুধালো,
” কেনো? তুমি কি পালাতে চেয়েছিলে?”
মিম তীব্র আত্মবিশ্বাসের সহিত বললো,
” আপনার মাঝে খারাপ কিছু পেলে আমি সত্যি পালিয়ে যেতাম। আর ভবিষ্যতে আপনার মাঝে খারাপ কিছু পেলে আমি একদম পালিয়ে যাবো। এই যে বলে দিলাম। ”
আদ্রিশ মিমের এহেন কথায় কয়েক মুহূর্তের জন্য নিশ্চুপ রইলো। নিষ্পলক মিমের দিকে চেয়ে রইলো। অতঃপর আচমকা মিমের ডান হাত নিজের বুকের রেখে উপর প্রগাঢ় কণ্ঠে বললো,
” সাহস আছে কারো পালিয়ে যাওয়ার! তাকে আমি এই বুকের খাঁচায় বন্দি করে রাখবো সারাজীবন। আমার জীবদ্দশায় সে কখনো এখান থেকে পালাতে পারবে না৷ ”
ভারী বিস্ময়ে মিম ড্যাবড্যাব করে আদ্রিশের পানে চেয়ে রইলো। আচমকা এমন কিছু আশা করেনি সে। খানিক সময়ের জন্য তব্দা খেয়ে বসে রইলো সে। আদ্রিশের দৃষ্টি বরাবর সে চেয়ে থাকতে পারলো না৷ তার দৃষ্টিতে যেনো এ মুহূর্তে তীব্র অধিকারবোধের দেখা মিলছে। মিম দৃষ্টি হটিয়ে নিলো।
আদ্রিশ কয়েক সেকেন্ড বাদে মিমের হাত ছেড়ে দিলো। অতঃপর অকস্মাৎ মিমকে চমকে দিয়ে আরেকটি কাজ করে বসলো। খানিক পিছিয়ে গিয়ে খাটের উপর পা উঠিয়ে মিমের কোলে মাথা রাখলো। ঘটনাটি বুঝতে মিমের কয়েক সেকেন্ড সময় লাগলো। তার বুকের মাঝে ঢিপঢিপ শব্দ হলো। বোধহয় এই শব্দ বাইরেও শোনা যাচ্ছে। কে জানে, আদ্রিশও শুনতে পাচ্ছে কি না! আদ্রিশ শুনতে পারলে মানসম্মান নিয়ে টানাটানির একটা ব্যাপার হয়ে যাবে। কি লজ্জাজনক!
আদ্রিশ মিমের বিস্মিত মুখখানা দেখে মুচকি হাসলো। বিনাবাক্যে মিমের বা হাত খানা নিয়ে বুকের উপর রেখে দু হাত চেপে ধরলো। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অভিভূত কণ্ঠে বললো,
” বউয়ের কোলে মাথা রাখার মাঝে যে এতো সুখ আছে আগে জানা ছিলো না। প্রথম অনুভূতি এটা।”
মিম অন্যদিকে তাকিয়ে আছে৷ এলেমেলো চাহনিতে ঘরের এদিক ওদিক দৃষ্টি ঘুরাচ্ছে। কেননা এভাবে আদ্রিশের দিকে চেয়ে থাকা অসম্ভব তার জন্য। ওদিকে বুকের ঢিপঢিপ শব্দ বেড়েই চলছে যেনো। বোধ হচ্ছে এখনই বুকের খাঁচা ছেড়ে পালিয়ে যাবে তার ছোট্ট হৃদয়খানা।
আশ্চর্যের বিষয় তার এ ধুকধুক শব্দ আদ্রিশের কান অব্দি পৌঁছালো। আদ্রিশ স্বাভাবিক কণ্ঠেই শুধালো,
” কি ব্যাপার মিশমিশ? তোমার হার্টবিটের শব্দ এখান থেকে শুনতে পারছি আমি। ভয় পাচ্ছো নাকি?”
মিম চট করে আদ্রিশের দিকে তাকালো। যেটার ভয় ছিলো শেষমেশ সেটাই হলো! এখন সে কি বলবে? এ শব্দ শুনতে পাবার কারণ কি বলবে সে? বুঝে পেলো না৷ নিশ্চুপ রইলো। আদ্রিশ বললো,
” বুঝতে পেরেছি, প্রথম এভাবে কাছে এসেছি সেজন্য ওমন ভয় করছে তোমার তাই না?”
মিম পুনরায় অন্যদিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। মনে মনে বললো,
” জানেন যখন জিজ্ঞেস করলেন কেনো তাহলে?”
আদ্রিশ তখন অন্য কথায় চলে গেলো। পুনরায় কয়েক মুহূর্ত মিমের পানে চেয়ে থেকে বিমুগ্ধ কণ্ঠে বললো,
” কতক্ষণ পর মন ভরে তোমাকে দেখছি। ভাবছি, আদৌ কি তুমি আমার সামনে আছো নাকি আমার কল্পনায়। এজন্যই তখন চিমটি কা’ট’তে বলেছিলাম। জানো, যখন আমি কবুল বললাম, তখনও মনে হচ্ছিলো, সবটাই বুঝি কল্পনা। কখনো ভাবিনি এভাবে সময়টা চলে যাবে। এই তো মাত্র দু সপ্তাহ আগে তোমার সাথে আমার দেখা। তারপর আজ বিয়ে। এতোদিন যাকে জুনিয়র বা স্টুডেন্ট হিসেবে ট্রিট করেছি, আজ থেকে তাকে ওয়াইফ হিসেবে ট্রিট করতে হবে। কি ভাগ্য আমার! ”
মিম প্রত্যুত্তর জানালো না। আদ্রিশ এবার খানিক অভিমানী স্বরে বললো,
” কতক্ষণ যাবত তুমি কথা বলছো না। ব্যাপার কি?”
মিম এবারও জবাব দিলো না। আদ্রিশ এবার এক হাত ছেড়ে মিমের থুতনি ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিলো। বললো,
” কিছু তো বলো।”
মিম কোনোমতে জবাব দিলো,
” কি বলবো?”
” কিছুই কি বলার নেই?”
” উঁহু, নেই।”
আদ্রিশ এবার কি মনে করে জিজ্ঞেস করলো,
” আচ্ছা, তুমি কি লজ্জা পাও না? ”
মিম প্রশ্নাত্মক চাহনিতে আদ্রিশের পানে চেয়ে বললো,
” মানে?”
” মানে আবার কি? কখন থেকে দেখছি হয় তুমি ভ্রজোড়া কুঁচকিয়ে রাখো, না হয় ভয় পাও। কই একটু মিষ্টি মিষ্টি হেসে লজ্জা পাবে তা না। তোমার গালটা লজ্জায় লাল হয়ে যাবে, সেটাও দেখছি না। মেয়েদের তো এমন সিচুয়েশনে লজ্জায় লাল লাল টমেটো হয়ে যাওয়ার কথা। ”
মিম কি প্রত্যুত্তর জানাবে ভেবে পেলো না৷ এই যে আদ্রিশ তার কোলে এভাবে অধিকার খাটিয়ে মাথা রেখেছে তার তো লজ্জা লাগছে, ভয় লাগছে। কিন্তু সে ঠিক প্রকাশ করতে পারছে না। এখন বুঝি আদ্রিশকে জানান দেওয়ার জন্য সে লজ্জায় টমেটোর রূপ ধারণ করবে!
মিম খানিক সময় নিয়ে বললো,
” লজ্জায় লাল নীল হওয়া ফর্সা মেয়েদের দেখা যায়। শ্যামলা বর্ণে অতশত চোখে পড়ে না৷ ”
আদ্রিশ মিমের এ কথা মানতে নারাজ হলো। বলল,
” এ লজিক মানি না। আমার মনে হয় তুমিও লজ্জায় লাল হচ্ছো। তবে সব তোমার মেকআপের আড়ালে লুকিয়ে আছে। ”
মিম ডান হাত দিয়ে নিজের গালের ব্লাশঅনের উপর হাত রেখে বললো,
” মেকআপের আড়ালে লুকিয়ে নেই। এই যে দেখুন, গোলাপি গোলাপি ব্লাশঅন। আপনার যখন আমার লাজুক চেহারা দেখার এতোই ইচ্ছা হচ্ছে, এই যে দেখুন এর দিকে। আমি লজ্জা পাচ্ছি। ”
মিমের এহেন কান্ডে না পেরে আদ্রিশ হো হো করে হেসে উঠলো। তবে কিছু বলার পূর্বেই তার ফোনটা বেজে উঠলো। শেরওয়ানির পকেট হতে ফোন বের করে দেখলো আফসার স্যারের ফোন। সে দ্রুত উঠে বসে কল রিসিভ করলো। কল রিসিভ করতেই ওপাশ হতে আফসার স্যার বললো,
” আদ্রিশ, কোথায় তুমি?”
“স্যার, আমি একটু শহরের বাইরে আছি। ছুটিতে।”
” কতক্ষণের দূরত্বে আছো?”
” এই তো স্যার সর্বসাকুল্য পঁয়তাল্লিশ মিনিট। ”
” আচ্ছা। তাহলে এক্ষুণি হসপিটালে চলে আসো। ”
” কেনো স্যার! আমি তো ছুটিতে আছি। ”
” এখন ওসব ছুটির চিন্তা বাদ দাও। আমাকে ওটিতে এসিস্ট করতে হবে। আর কোনো জুনিয়র ডাক্তার নেই।”
” কি বলেন স্যার! রায়হান, হারুন ভাই ওরা নেই?”
” এভেইলেভল থাকলে তোমাকে ফোন করতাম না। আর জানোই তো, সবাইকে বিশ্বাস করা যায় না।”
” স্যার, ওটিটা কালকে সকালে করা যায় না?”
” না। বাইপাস সার্জারির পেশেন্ট। এক্ষুনি চলে আসো। আর কথা শুনতে চাই না।”
বলেই আফসার স্যার ফোন কেটে দিলো।
আদ্রিশ কিছুক্ষণের জন্য চুপচাপ বসে ছিলো। মিম আদ্রিশের এ নীরবতা দেখে শুধালো,
” কি হয়েছে?”
” হসপিটালে যেতে হবে। ”
মিম বিস্মিত হলো,
” এই রাতে!”
” হ্যাঁ। ওটি এসিস্ট করার মতো কেউ নেই। তাই স্যার ডাকছে আমাকে। ”
” কি পেশেন্ট? ”
” বাইপাস সার্জারির।”
“ওহ। যান তাহলে।”
মিম আর কথা বাড়ালো না। দেয়াল ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখলো, দশটা ত্রিশ বাজে। খানিক মন খারাপ হলো তার।
আদ্রিশ গোমড়ামুখে বিছানা হতে নেমে শেরওয়ানি বদল করতে ওয়াশরুমে গেলো।
ওয়াশরুম হতে বেরিয়ে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,
” পছন্দের জিনিসগুলো মাঝে মাঝে এতো প্যারা কেনো যে দেয়!”
মিম তার এ কথা শুনতে পেলো। বললো,
” নিজেকে মানিয়ে নিন। ভবিষ্যতে আপনি যখন নিজেই ওটি করবেন তখন রাত বিরাতে যেতে হতে পারে।”
” হুম। এই হলো কার্ডিওলজি ইউনিটে যাওয়ার কুফল।”
” কুফল বলছেন কেনো। আপনার স্বপ্ন এই লাইনে আসার।”
আদ্রিশ দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
——
নিজেকে স্টেরিলাইজড করে ওটিতে প্রবেশে করলো আদ্রিশ। নার্স এসে তাকে ওটি ড্রেস পরিয়ে দিলো। আদ্রিশ গিয়ে দাঁড়ালো আফসার স্যারের মুখোমুখি। স্যার মাস্কের উপর হতে আদ্রিশকে একনজর দেখে জিজ্ঞেস করলো,
” বিরক্ত তুমি?”
জোরপূর্বক মেকি হাসি দিয়ে আদ্রিশ বললো,
” কি বলেন স্যার। বিরক্ত হবো কেনো। আপনার ওটি এসিস্ট করার সুযোগ সবাই পায় নাকি স্যার। আমি পেয়েছি৷ সুযোগটা কাজেও লাগিয়েছি।”
আফসার স্যার খুশি হলেন। বললেন,
” তাহলে শুরু করা যাক!”
আফসার স্যার প্রথমত পেশেন্টের পায়ে ইনসিশন দিয়ে স্যাফিনাস ভেইন হারভেস্ট করলেন৷ অতঃপর পায়ের কাজ শেষে তিনি পেশেন্টের বুকের মাঝ বরাবর স্কালপেল দিয়ে স্কিন ইনসিশন করলেন। স্টার্নোটমি করে বোন ওয়্যাক্স এপ্লিকেশন করলেন। অতঃপর ইনসিশনের দু পাশে রিট্র্যাক্টর দিয়ে ফাঁকা করে নিলেন। এরপর একে একে প্লুরা, মেডিয়াস্টিনাম ডিসেকশন করে পেরিকার্ডিয়াম ওপেন করলেন। এভাবে পুরো সার্জারি করতে উনার সময় লাগলো প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা।
ওটি এসিস্ট করা শেষে ক্লান্ত আদ্রিশ এসে মেডিকেল অফিসারদের রুমে বসলো। ফ্রেশ হয়ে সেখানে রাখা খাটে গা এলিয়ে দিলো। কয়েক মিনিটের মাঝে সে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো।
#চলবে
®সারা মেহেক