প্রেয়সী পর্ব ৭

0
1822

#প্রেয়সী
#পর্ব:৭
#তানিশা সুলতানা

“কি হলো ব্রো? তেলাপোকা দেখেছো?

মুহিতের কথায় আবার বসে পড়ে মাহিম। বাবা দাদা তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। এখানে সিনক্রিয়েট করা যাবে না।
মনি মুহিতের পিঠে ছোট করে থাপ্পড় দিয়ে বলে
” বাঁদর ছেলে৷ তোর জন্য তরকারি পড়ে গেলো।
মুহিত মনির গাল টেনে দেয়
“উফ ছোট মাম্মা
দিন দিন বয়স কমছে তোমার। রূপের রহস্য কি? অধরাকেও একটু বলিও। বেচারা অল্পতেই বুড়ি হয়ে যাচ্ছে।
অধরা পানি খেতে যাচ্ছিলো। মুহিতের কথায় বেষয় খায়। মনি মুহিতের কান টেনে অধরার মাথায় হাত বুলাতে থাকে। আলতাব আসিফ আর শরীফ হেসে ফেলে।
শীলা ডালের বাটি টেবিলে রেখে হেসে বলে
” আমাদের মুহিত আর বড় হলো না।

মুহিত বলে ওঠে
“কি যে বলো ফুপি। বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। আর তুমি বলছো বড় হলাম না? ঠিক সময়ে বিয়ে করলে

বাকিটা বলার আগেই মাহিম ধমকে ওঠে
” স্টপইট ইডিয়েট। তোর বকবকানির জন্য খেতে অসুবিধা হচ্ছে।

ধমক খেয়ে মুহিত ভেংচি কাটে।। মনি তাকে খাবার বেরে দিতে থাকে।

খাবার টেবিলে এখন পিনপিন নিরবতা। কারো মুখে কোনো কথা নেই৷ সবাই সবার মতো খেয়ে যাচ্ছে।
মুহিত চামচ দিয়ে খাচ্ছে। তার এই একটা স্বভাব চামচ ছাড়া খেতে পারে না। অবশ্য খাওয়ার চেষ্টাও করে না। মাহিম হাত দিয়ে খাচ্ছে। সেও চামচ দিয়ে খায়৷ তবে সেটা হাসপাতালে বা কলিগদের সামনে। বাবা দাদা হাত দিয়ে খাচ্ছে সেখানে নিজে চামচ দিয়ে খেলে কেমন দেখায়?

সবার আগে খাওয়া শেষ হয় অধরার৷ সে হাত ধুয়ে চলে যায় তার রুমে।

অধরার জন্য একটা রুম আগে থেকেই ছিলো। সেই রুমে কেউ থাকে না। মাঝেমধ্যে মনি পরিষ্কার করে রাখতো। আজকেও পরিষ্কার করেছে তিনি। অধরা এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। বই খাতা গুলো লাগেজ থেকে বের করা হয় নি। এখন বের করতে ইচ্ছেও করছে না। তবে অধরা জানে একটু পরে মাহিম ঠিক লাগেজ টেনে নিয়ে আসবে তার রুমে। একে একে বউ গুলো সাজিয়ে দেবে তার টেবিলে।
হাসি ফুটে ওঠে অধরার ঠোঁটের কোণে। মানুষটার প্রতি ভালোবাসা দিনকে দিন বেরেই চলেছে। এই ভালোবাসা কখনোই শেষ হওয়ার নয়। এই মানুষটাকে অধরার চাই। খুব করে চাই তাকে। তার সাথে সুন্দর একটা সংসার বাঁধতে চায় সে। ছোট একটা স্বপ্নের ঘর সাজাতে চায়। সেখানে কোনো দুঃখ থাকবে না। থাকবে শুধু সুখ আর সুখ।

এসব ভাবতে ভাবতেই অধরার চোখ লেগে আসে। তখনই মাহিম লাগেজ নিয়ে অধরার রুমে ঢুকে। খানিকটা শব্দ করে দরজা খোলাতে অধরার ঘুম ছুটে যায়। সে এক লাফে উঠে বসে।
মাহিম এক পলক অধরার দিকে তাকিয়ে লাগেজ টেনে পড়ার টেবিলের সামনে নেয়। একে একে বই গুলো সাজিয়ে রাখতে থাকে। অধরা গালে হাত দিয়ে দেখছে তাকে।

“কড়া কথা বলতে শিখবি কবে?

অধরা নরেচরে বসে মাহিমের শক্ত গলার কথা শুনে।
” মুহিতকে থামাচ্ছিস না কেনো?
“আপনি থামিয়ে দিন।
মুহিত আড়চোখে তাকায় অধরার দিকে
” ও কি আমাকে ডিস্টার্ব করছে? যে আমি থামাবো?
“আমাকেও তো করছে
বাকিটা বলতে পারে না অধরা। থেমে গিয়ে শুকনো ঢোক গিলে। বুঝে ফেলে ভুল কথা বলে ফেলেছে।
মুহিত নিজের হাতে থাকা বইটা ফেলে দেয়। কেঁপে ওঠে অধরা। চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে তার।
” মুহিত তোকে ডিস্টার্ব করে না? তুই এনজয় করিস? আমারই বোঝার ভুল ছিলো।
ঠিক আছে ফুর্তি কর।

বলেই মাহিম চলে যায়। অধরা মাথায় হাত দেয়। ইসস কি ভুল কথা বলে ফেললো। এবার কি করবে? মাহিমের রাগ কমাবে কি করে? কি বোঝাবে মুহিতকে সে এনজয় করে না?

অধরা কামড়া ছেড়ে বাহিরে আসে। মুহিতকে দেখা যাচ্ছে বাচ্চাদের সাথে খেলা করছে। আর মাহিম ল্যাপটপে কাজ করছে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here