প্রীতিলতা আসবে বলে ( সিজন ৩ পর্ব ১)

0
678

চুয়ান্ন নাম্বার খুনটা করার সব ব্যবস্থা প্রীতি করে নিয়েছে ৷এই বার খুন করে আর লাশটাকে গুম করবে না ৷এই বার জনগনকে দেখার সুযোগ করে দেবে ৷এবারের শিকার ব্যরিস্টার সোহেল ৷একটা বেইমানের লাশ সবাইকে দেখাবে ৷যার জন্য তার মা বাবা খুনের তদন্ত হয় নি ৷সবাইকে তার অন্যায়ের যোগ্য জবাব প্রীতি দিয়ে ছাড়বে ৷আর প্রীতি খুব ভালো করেই জানে ব্যরিস্টার সোহেলকে কিভাবে খুন করতে হবে ৷কথাটা ভেবেই বাকাঁ হাসলো সে ৷

প্রীতি নিজের কাজে বেরিয়ে পড়লো ৷হাতে সময় অনেক কম ৷অন্যদিকে কাল এলাকা থেকে পাচঁটা মেয়ে নিখোজঁ হয়েছে ৷প্রীতি খুব ভালো করেই জানে মেয়ে গুলো কোথায় ৷প্রীতি তার জুনিয়ার অফিসার শান্তকে কল দিল ৷কিছুক্ষন রিং হওয়ার পর শান্ত কল রিসিভ করলো ৷তারপর বলল

আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম ৷

ওয়ালাইকুম আসসালাম ৷তোমার সাথে একটু জরুরী কথা ছিল শান্ত ৷

জ্বী ম্যাডাম বলুন ৷

প্রীতি শান্তকে কিছু কথা বলে ফোনটা রেখে দিল ৷গতকাল নিখোজঁ হওয়া মেয়ে গুলোকে তার বাচাঁতে হবে ৷মেয়ে গুলোর সাথে খারাপ কিছু হওয়ার আগেই সব করতে হবে ৷

আজ ভার্সিটিতে এসে নির্ঝর না চাইতেও প্রীতিকে খুজতে লাগলো ৷কিন্তু তাকে হতাশ করে দিয়ে প্রীতি এলো না ৷কিছুই তার ভালো লাগছে না ৷কাল সারারাত তার ঘুম হয় নি ৷ প্রীতির কথা গুলো বারবার কানে বাজতে ছিল ৷আজ তার বোনও এই মেয়েটার জন্যই ধর্ষনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ৷চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভুল গুলো দেখিয়ে দিয়েছে ৷

রাত সাতটা বাজে নারায়নগঞ্জের একটা পতিতা পল্লীর সামনে দুইজন ছেলে দাড়িয়ে আছে ৷তারা একে ওপরের দিকে তাকিয়ে বাকাঁ হাসলো ৷তারপর ভেতরে চলে গেল ৷

পতিতাদের সর্দারনীর সামনে ছেলে দুটো বসে আছে ৷একটা ছেলে সিগারেটে টান দিতে দিতে বলল

আপনার এইখানে আমরা নতুন কাস্টমার ম্যাডাম৷আপনার এই পাড়ার অনেক নাম শুনেছি ৷তাই এখানে আসা আর কি ৷

সর্দারনী নিজেও সিগারেটে টান দিয়ে বলল তা বাবুরা তোমাগো কেমন মাইয়া লাগবো ৷এইখানে সব রকমের মাইয়া আছে ৷একবার আসলে বারবার আইবা ৷বলেই হাসতে লাগলো ৷

একদম নতুন মাইয়া লাগবো ৷একেবারে ফুলের মতো পবিত্র ৷যা আগে কেউ টেস্ট করে নাই ৷ এমন একটা হইলেই হবে ৷আর বয়স ১৫ থেকে ২০ এর মধ্যে হলে আরো ভালো হয় ৷

সর্দারনী চেয়ারে এক পা তুলে আবারো সিগারেটে টান দিল ৷তারপর বলল

পাচঁটা ইনটেক মাইয়া আছে ৷কালকেই আনা হইছে ৷কেউ এখনো টাচঁ করে নাই ৷তোমরা চাইলে দেখতে পারো ৷কিন্তু টাকা বেশি দিতে হইবে ৷প্রতি ঘন্টা বাবদ দশ হাজার ৷

ছেলে দুইটা হাসলো তারপর বলল প্রতিঘন্টা বাবদ পনেরো হাজার দেব ৷যদি ভালো লাগে ৷

সর্দারনী যেন হাতে আকাশের চাদঁ পেয়েছে ৷তাই খুশিতে গদগদ করতে করতে মেয়ে দেখাতে নিয়ে গেল ৷

ছেলে দুটো একটা ঘরে প্রবেশ করলো ৷দেখলো পাচঁটা মেয়ে ঘরের এক কোনে বসে কাদঁছে ৷তাদের যে খুব মারা হয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে ৷কারো গায়ে ওরনা নেই ৷একটা ছেলে মেয়েদের এই অবস্থা দেখে চোখ ঘুড়িয়ে নিল অন্যদিকে ৷অপর ছেলেটি মেয়েদের দেখে হাসঁলো ৷তারপর পাচঁটা মেয়ের মধ্যে একজনকে বেছে নিল ৷তারপর বলল

এই মেয়েটাকে আমার চাই আজ রাতের জন্য ৷ আর বোনাস পঞ্চাশ হাজার দিলাম আপনাকে ৷সর্দারনী খপ করে টাকা টা নিয়ে নিল ৷তারপর চাদঁনী নামে একটা মেয়েকে ডাকতে লাগলো ৷চাদঁনী নামের মেয়েটা ডাক শুনেই দৌড়ে এলো ৷তারপর বলল জ্বী বলেন ৷

ঐ সাদা জামা পরা মাইয়াডারে সাজা সুন্দর কইরা ৷এই বাবু আজকে ওর লগে থাকবো ৷

সাদা জামা পরা মেয়েটা ফ্লোরে বসে কাদঁতে লাগলো হাউমাউ করে ৷ চাদঁনী নামের মেয়েটা তাকে টানতে টানতে নিয়ে গেল ৷

সর্দারনী বলল নতুন তো তাই কাদঁতাছে ৷আস্তে আস্তে একদম ঠিক হইয়া যাইবো ৷

সর্দারনীকে উদ্দেশ্য করে দ্বিতীয় ছেলেটি বলল আমার নতুন মেয়ে লাগবে না ৷কিন্তু মোটামুটি নতুন হলেই হবে ৷সারারাত ঘ্যানঘ্যান শুনতে পারবো না আমি ৷

সর্দারনী দ্বিতীয় ছেলেটাকে নিয়ে গেল অন্য একটা ঘরে ৷তারপর মেয়ে পছন্দ করতে বললো ৷

রাত নয়টা বাজে ছেলে দুটো দুইটা ঘরে তাদের পছন্দ মতো মেয়ে নিয়ে ঢুকেছে সারা রাতের জন্য ৷

প্রথম ছেলেটি ঘরে ঢুকতেই নতুন ধরে নিয়ে আসা মেয়েটা চিৎকার করে কাদঁতে লাগলো ৷ছেলেটা কোনো কথা বললো না ৷মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইলো ৷তারপর মেয়েটার পাশে যেয়ে বসলো ৷মেয়েটা ছেলেটাকে দেখেই দূরে সরে গেল ৷ছেলেটা হাসলো মেয়েটার কান্ড দেখে ৷কিন্তু তার চোখে পানি টলমল করছে ৷হ্যা একদিন এইভাবে তার গর্ভধারিনী মাও চিৎকার করে ছিল ৷কিন্তু কেউ তাকে দয়া করে নি ৷ছেলেটা কাদঁতে থাকা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল

আমাকে দেখে প্লিজ ভয় পাবে না ৷তুমি আমাকে যেমন ভাবছো আমি আসলে তেমন নই ৷আমি তোমাদের বাচাঁতে এসেছি ৷আর আমি কোনো ছেলে নই ৷আমি একটা মেয়ে এই দেখো ৷

ছেলেটা নিজের আলগা দাড়ি,গোফ আর চুল খুলে ফেললো ৷তারপর বলল আমি সিআইডি অফিসার প্রীতিলতা ৷আমরা এখানের গোপনখবর নিতে নকল রূপ ধরে এসেছি ৷এখানে কাল পুলিশ আসবে ৷এখানে কোথায় কোথায় সর্দারনীর লোক আছে তা জানার জন্যই আজ আসা ৷এখানে আজ আমাদের বিশ জন অফিসার এসেছে ৷

মেয়েটা প্রীতিকে জরিয়ে ধরলো ৷তারপর কাদঁতে কাদঁতে বলল

আমাদের বাচাঁন আপু প্লিজ ৷আমরা এখানে থাকতে চাই না ৷

প্রীতি মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে শান্তনা দিল ৷তারপর বলল কিছু হবে না তোমাদের ৷আমরা কাল তোমাদের বাড়ী পৌছে দেব ৷এখন একদম কাদঁবে না ৷

অপর দিকে শান্ত বসে আছে একটা অর্ধনগ্ন মেয়ের সামনে ৷মেয়েটার দিকে মাথা তুলেও তাকাচ্ছে না ৷কিন্তু মেয়েটা তাকে বারবার নিজের দিকে আকৃষ্ট করছে ৷শান্ত নিজের রাগ দমন করতে না পেরে সজোরে মেয়েটাকে থাপ্পর মারলো ৷তারপর বলল

তখন থেকে বলছি আমার কাছে না আসতে ৷ কিন্তু তুই তো কথাই শুনছিস না ৷তোরা বেশ্যারা আসলেই পুরুষ দেখলে থাকতে পারিস না ৷

মেয়েটা ফ্লোরে বসে কাদঁতে লাগলো ৷তারপর নিজের চোখের পানি মুছে বলল

হ্যা আমরা বেশ্যা ৷হ্যা আমরা পুরুষ দেখলে আর থাকতে পারি না ৷কিন্তু আমাদের বেশ্যা বানায় কারা হ্যা ৷আর নিজে যখন এতই ভালো তাহলে এখানে কেন এসেছেন ৷আর তখন থেকে শুধু প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন ৷কেন আপনার প্রশ্নের উত্তর আমি দেব হ্যা ৷আপনি জানেন আমি যদি এখানের একটা কথা আপনাকে বলি ৷আর তা যদি সর্দারনী জানতে পারে তাহলে কি হবে ৷আপনার লাশটাও কেউ খুজে পাবে না ৷তাই এত প্রশ্ন না করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে চলে যান ৷এখানে কেউ আপনার মতো বসে থাকতে আসে না ৷বেশ্যাদের দেহ খুবলে খেতে আসে ৷দেহ খুবলে খাওয়া শেষ হলে চলে যায় ৷আর এখানে কেউ ইচ্ছে করে বেশ্যা হয় না ৷তাদের বেশ্যা বানানো হয় ৷যেমনটা আমার স্বামী আমাকে বানিয়েছে ৷

শান্ত চমকে গেল তার সামনে থাকা অর্ধনগ্ন মেয়েটার কথায় ৷তার স্বামী তাকে এই পথে এনেছে ৷

যারা গল্পটা নতুন পড়ছেন ৷তাদের জন্য বলবো গল্পের সিজন ওয়ান আর টু পড়বেন ৷নইলে কিছুই বুজবেন না ৷ গ্রুপে লিংক দিয়ে দেব ৷তাও যদি কেউ খুজে না পান ৷তাহলে জানাবেন আমাকে ৷হেল্প করার চেষ্টা করবো ৷

প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
সিজন:৩
পার্ট:১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here