প্রীতিলতা আসবে বলে(পর্ব ১১+১২)

0
651

প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
পার্ট :১১

প্রীতী শাকিলের সাথে কথা বলছে ৷আর টেবিলের নিচে কিছু একটা করছে ৷প্রীতির চেহারা দেখে কেউ বলবেই না যে সে একজন মেয়ে ৷আর সে এমন ভাবে হেসে হেসে কথা বলছে যে শাকিল কেন ৷কেউ প্রীতিকে সন্দেহ করবে না ৷প্রীতি টেবিলের নিচে যা সেট করার ৷তা করে দিয়েছে ৷তারপর প্রীতি বলল

স্যার গো পায়ের ব্যাথায় রাইতে ঘুমাইতে পারি না ৷ বউ খালি বকে আমারে ৷কিছু একটা করেন ৷পায়ের গিড়ায় এমন ব্যাথা যে মইরা যাইতে মন চায় ৷

শাকিল পুরুষ রূপী প্রীতির দিকে তাকিয়ে ঝাঝাঁলো গলায় বলল

আরে আপনি বড্ড বেশি কথা বলেন ৷এই নিন এখানে কিছু টেস্ট দিয়েছি ৷ টেস্ট গুলো করিয়ে আসবেন ৷এখন যান আপনি ৷আধা ঘন্টা ধরে বকবক করে যাচ্ছেন ৷

প্রীতি হালকা হেসে বেড়িয়ে গেল ৷তারপর নিজের অফিসের দিকে রওনা দিল ৷

অপর দিকে নিরুপমাকে আবেশ বাড়ীতে নিয়ে এসেছে ৷তার ছেলে মেয়ে ভালো আছে জানার পর থেকে পাগলামি আর করছে না ৷তবে বেশ অসুস্হ সে ৷নিরুপমা নিজের ঘরে শুয়ে ছিল ৷এমন সময় ওর ঘরের দরজায় কেউ নক করলো ৷নিরুপমা ভেতরে আসতে বলতেই নক করা ব্যক্তি ভেতরে ঢুকলো ৷

নিরুপমা নিজের ছোট ভাইকে দেখে দুই হাতে জরিয়ে ধরলো ৷তারপর চুমু খেল তার গালে ৷নিরুপমা নিজের ভাইকে বলল

এই দুইদিন তো কম করলি না আমার জন্য ৷দিন রাত এক করে পুলিশের কাছে ছুটলি ৷আবার হাসপাতালেও আমায় নিয়ে কত করলি ৷এত ভালো কেন তুই ভাই ৷

নিজের বোনের জন্য করবো না তো কার জন্য করবো ৷পুচকু দুইটাকে তো এখনো খুজে পেলাম না ৷

নিরুপমা নিজের ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল একটা কথা বলবো ভাই ৷

হুমমম বলো ৷

যে ওদের কিডন্যাপ করেছে ৷ সে কাল রাতে তোর দুলা ভাইকে কল করে ছিল ৷

মানে কি বলছিস ৷তা কি বলেছে ও ৷উত্তেজিত কন্ঠে বলল ৷

বাবুরা ভালো আছে ৷আর দুই দিন পর আমার সন্তান ফেরত দেবে ৷তবে একটা শর্ত আছে ৷

কি শর্ত ৷

বাবুদের দূরে কোথাও পাঠিয়ে দিতে হবে ৷এখানে নাকি ওদের প্রানের ঝুকি আছে ৷

যা ভালো হয় করো ৷কিন্তু একজন কিডন্যাপার কেন আমাদের নিয়ে চিন্তা করবে ৷

আমিও তো তাই ভাবছি ৷আর একটা কথা ভাই ৷ঐ কিডন্যাপার কোনো ছেলে নয় ৷ও একটা মেয়ে ৷আর আমার সন্দেহ মতে সে আমাদের প্রীতিলতা ৷

মানে কি বলছো আপু ৷প্রীতিলতা চৌদ্দ বছর আগে মারা গেছে ৷আমার প্রীতিলতার লাশটাও আমি দেখতে পাই নি ৷আর এত বছর পরে ও কিভাবে ফিরে আসবে ৷তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে আপু ৷কথাটা বলেই নিরুপমার ভাই চলে যেতে নিলে ৷নিরুপমা বলল

নির্ঝর ভাই আমার ৷আমি মিথ্যে বলছি না ৷ওই মেয়েটা কাল এমন একটা কথা বলেছে যে ৷তোর দুলাভাইও তাই সন্দেহ করছে ৷

নির্ঝর চুপ করে দাড়িয়ে আছে ৷ কোনো কথা বলছে না ৷

নিরুপমা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল তুই কি এখনো ওকে ভালোবাসিস ৷ ও যদি সত্যি আবার ফিরে আসে ৷

নির্ঝর নিজের বোনের দিকে একবার ফিরে তাকালো ৷তার চোখে পানি টলমল করছে ৷নির্ঝর নিরুপমার দিকে তাকিয়ে বলল

প্রীতি যদি ফিরে আসে ৷ তাহলে এইবার আমি ওকে মেরে ফেলবো ৷চৌদ্দ বছর আমাকে কষ্ট দেওয়ার শাস্তি দেব ৷আমি আসি এখন ৷নিচে মা , বাবা আর মিলা এসেছে দেখা করতে ৷

কি চাচা আর চাচি এসেছে ৷তুই যা আমি আসছি নিরুপমা বলল ৷

ঠিক আছে ৷

হ্যা নির্ঝর আর নিরুপমা ভাই বোন ৷তবে তারা চাচাতো ভাই বোন ৷চাচাতো ভাই বোন হলেও তারা আপন ভাই বোনের থেকে কম না ৷

অন্যদিকে ডাঃ শাকিল ভয়ে কাপঁছে ৷তার মাথায় কাজ করছে না ৷এসির মধ্যেও সে কাপঁছে ৷প্রীতি হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার পর ডাঃ শাকিলের কাছে পিয়ন একটা খাম দিয়ে যায় ৷ ডঃ শাকিল জিজ্ঞাসা করে কে দিয়েছে ৷কিন্তু পিয়ন নাম বলতে পারে না ৷শাকিল খামটা খুলতেই তার ভেতর থেকে কিছু ছবি বেড়িয়ে আসে ৷ যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তিনি চারুলতা অর্থাৎ প্রীতির মা কে নির্যাতন করছেন ৷আর আয়ান চৌধুরীকে বাকিরা প্রহার করছে ৷ খামের ভেতর থেকে শাকিল একটা চিরকুট পায় ৷কাপাঁ কাপাঁ হাতে সেটা পড়তে শুরু করে ৷

তোমার মৃত্যু হয়ে আয়ান চৌধুরী ফিরে এসেছে শাকিল ৷ তোমায় আমি কঠিন মৃত্যু দেব ৷নিচে নাম লেখা আয়ান চৌধুরী ৷

শাকিল ভয়ে কাপঁছে চিঠিটা পড়ার পর ৷এই হাতের লেখা তার খুব চেনা ৷এটা তার বন্ধু আয়ানের লেখা ৷কিন্তু সে তো চৌদ্দ বছর আগে মারা গেছে ৷নিজের হাতে তাকে মাটি চাপা দিয়েছে সবাই মিলে ৷ওর মাথায় কাজ করছে না ৷তবে কি এখনো আয়ান বেচেঁ আছে ৷ শাকিল ছবি গুলোকে ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলল ভয়ে ৷তারপর পাগলের মতো বাড়ীর দিকে রওনা দিল ৷

প্রীতি বাড়ি ফিরলো সন্ধ্যায় ৷বাচ্চা দুটো খেলছে ফ্লোরে বসে ৷প্রীতি ওদের জন্য অনেক কিছু কিনে এনেছে ৷বাচ্চা দুটো প্রীতির হাতে খেলনা দেখেই দৌড়ে এলো ৷প্রীতি ওদের জিনিস গুলো দিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেল ৷কোনো কথা বলল না৷ ওদের কাছে টেনে কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাবে না সে ৷কথা অনুযায়ী কালকেই দিয়ে আসবে ৷তাহলে ওদের কাছে টেনে কি লাভ ৷শুধু শুধু আবার কষ্ট পাবে ৷কাল থেকে আবারো সে একা ৷এই একাকিত্ব আর তাকে ছাড়লো না ৷

রাত হয়ে গেছে অনেক ৷আকাশে আজ তারার মেলা ৷নির্ঝর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে ৷চাদেঁর আলোয় চারিদিক আলোকিত ৷নির্ঝরের হাতে একটা ছবি ৷এই ছবিটা দেখে চৌদ্দটা বছর পার করেছে সে ৷নির্ঝর ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলল

আমার প্রীতিলতা ৷ তুই কি সত্যি ফিরে আসবি আমার জীবনে ৷সত্যি কি এই নির্ঝর শাহরিয়ার কথা তোর মনে আছে ৷নাকি পাল্টে গিয়েছিস ৷আমি তো পাল্টাই নি ৷জানিস ভার্সিটিতে একটা মেয়ে এসেছে ৷ওর নামও প্রীতিলতা ৷ও যেই দিন ওর নামটা বলেছিল ৷ঐ দিন থেকেই ওকে দেখলে আমার রাগ হয় খুব ৷আর জানিস ওই মেয়েটা একদম তোর মতো ৷এত উল্টা পাল্টা কথা বলি ৷তবুও আমার গলাই জরিয়ে ধরে সবার সামনে ৷আর তোর মতই ঠোটঁ কাটা স্বভাবের ৷লোকের সামনেই উল্টা পাল্টা কথা বলে ৷ঐ মেয়েটা আর তোর মধ্যে একটাই তফাৎ ৷ ঐ মেয়েটা আধারের মতো কালো ৷আর তুই পূর্নিমার মতো সুন্দর ৷মাঝে মাঝে মনে হয় ঐ টা তুই ৷ ঐ মেয়েটার জায়গায় তুই কেন ফিরে আসলি না আমার জীবনে বলতে পারিস ৷

চলবে…..

প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা : আফরিন ইসলাম
পার্ট : ১২

জীবন থেমে থাকে না ৷সময়ের সাথে জীবনের মানে পাল্টে যায় ৷সময়ের সাথে ভালোবাসার রং বদলায় ৷সময়ের সাথে ভালোবাসার ধরন পার্টায় ৷সময়ের সাথে ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম পাল্টায় ৷তবুও দিন শেষে আমরা ভালোবাসি ৷তবুও দিন শেষে ভালো থাকার চেষ্টা করি ৷

প্রীতি আজ তার ভাইয়ের কাছে ছেলে মেয়ে দুটোকে দিয়ে আসবে ৷বুকের ভেতরটা তার খাঁ খাঁ করছে ৷সত্যি কি আর দেখা হবে ওদের সাথে ৷ওদেরকে কি আবারো নিজের বুকে জরিয়ে ধরতে পারবে ৷প্রীতির তা জানা নেই ৷একাকিত্ব আর হতাশা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে দেয় ৷প্রীতিও যার শিকার ৷পাল্লা দিয়ে রাতের গভীরতা বেড়েই চলেছে ৷প্রীতির চোখে ঘূম নেই ৷কত রাত সে ঘুমায় নি তার হিসেব নেই ৷প্রীতি বারান্দা থেকে ঘরে গেল ৷তারপর বক্স থেকে ঔষুধ বের করে খেয়ে নিল ৷গত চৌদ্দ বছর ধরে এই ঔষুধ যেন তার নিত্য সঙ্গী ৷তারপর আবারো চলে গেল বারান্দায় ৷কিছুই আর আজ ভালো লাগছে না ৷আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রীতিলতা হাসে ৷কষ্ট হয় খুব নিজের বুক মাঝারে ৷আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রীতি বলল

মা তুমি বলে ছিলে আমি নাকি অনেক বড় ডাক্তার হব ৷আমি নাকি লোকের প্রান বাচাঁবো চিকিৎসা করে ৷আমাকে দেখে নাকি মানুষ অনেক অনেক দোয়া করবে ৷কিন্তু জানো মা আমি বড় হয়েছি ঠিকই ৷কিন্তু ডাক্তার হই নি ৷আমি একটা খুনি হয়েছি মা ৷আমাকে এখন সবাই ভয় পায় ৷ খুব রাগ হয় না আমার উপর ৷কি করবো বলো আমি চাই না এমন করতে ৷কিন্ত আমার মাথাটা ঠিক থাকে না ৷জানো প্রথম খুনটা করে ছিলাম মেন্টাল হাসপাতালে ভর্তি থাকা কালীন এক ডাক্তারকে ৷ওর গলাটা ব্লেড দিয়ে কেটে দিয়ে ছিলাম ৷একটা গলা কাটা মুরগীর মতো ছটফট কর ছিল ঐ জানোয়ার টা ৷ কাল আবার একটা খুন করবো আমি ৷তাই বাচ্চা দুটোকে সড়িয়ে দিতে হচ্ছে ৷ওদের নিয়ে কোনো রিস্ক আমি নেব না ৷ আচ্ছা আমাকে কি তুমি এখনো আগের মতোই ভালোবাসো ৷তোমার কথা বড্ড মনে পরে ৷কোনো এক শ্রাবনে সময় করে আমায় না হয় নিয়ে যেও তোমাদের কাছে ৷তোমার নামের খোলা চিঠি পাঠিয়ে দিলাম নীল আকাশে ৷সময় হলে পড়ে নিও ৷

পরের দিন সকালে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিল শাকিল ৷কালকের ভয়টা তার কাটে নি এখনো ৷কাল সারা রাত ঘুমাতে পারে নি সে ৷হঠাৎ তার মোবাইলে একটা মেসেজ এলো ৷শাকিল নিজের ফোন হাতে নিল৷ তারপর মেসেজ ওপেন করতেই সে ঘামতে লাগলো ৷সেখানে স্পষ্ট লেখা

নিজের প্রিয় জিনিস যদি নষ্ট হয়ে যায় ৷ তাহলে খুব কষ্ট হয় ডঃ শাকিল ৷আর নিজের সন্তান যদি চোখের সামনে ছটফট করতে করতে মরে যায় তাহলে আরো কষ্ট হয় ৷তোমার সন্তান যদি মরে যায় ৷তোমারও কি এমন কষ্ট হবে শাকিল ৷যেমনটা আমার হয়ে ছিল ৷

শাকিল মেসেজটা পরে আবারো ভয়ে ঘামতে লাগলো ৷শাকিল অতি দ্রুত বেগে গাড়ী চালাতে লাগলো ৷তার একমাত্র ছেলের কিছু হলে সে বাচঁবে না ৷না কেউ তার ছেলেকে কিছু করতে পারবে না ৷

অপর দিকে আবেশ নিজের ছেলে মেয়েকে বুকে নিয়ে কাদঁছে ৷আজ কত দিন পর সে নিজের ছেলেমেয়েকে পেয়েছে ৷তাদের জ্ঞান নেই ৷অজ্ঞান অবস্থায় ওদের পেয়েছে ৷নিজের স্ত্রীকে কিছুক্ষন আগে আবেশ খাইয়ে দিচ্ছিল ৷হঠাৎ ওর মোবাইলে একটা কল আসে ৷আবেশ কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে শুধু একটা কথাই বলে

আপনার ছেলে মেয়ে বাইরে আছে ৷এসে নিয়ে যান ৷তারপর ফোনটা কেটে যায় ৷

আবেশ আর দেরি করে না ৷দৌড়ে গেটের কাছে চলে যায় ৷গেটের সামনেই তার ছেলে আর মেয়ে পরে আছে ৷তাদের কোনো জ্ঞান নেই ৷আবেশ ওদের তাড়াতাড়ি বাসার ভেতরে নিয়ে যায় ৷আর ডাক্তারকে কল করে ৷ছেলে মেয়েকে দেখে ডাক্তার বলল

ওদের ঘুমের ঔষুধ খাওয়ানো হয়েছে ৷তাই এমন অচেতন হয়ে ঘুমাচ্ছে ৷তবে কয়েক ঘন্টা পরে এমনিতেই জ্ঞান ফিরবে ওদের ৷চিন্তার কোনো কারন নেই ৷আবেশ চোখের পানি মুছে ডাক্তারকে বিদায় জানালো ৷

শাকিল নিজের ছেলের কলেজের সামনে দ্রুত গাড়ী চালিয়ে আসে ৷কোনো রকম দৌড়ে ভেতরে যায় সে ৷তার হাত পা কাপঁছে ৷একটু দূরেই তার ছেলে রাসেল বন্ধুদের সাথে হেসে কথা বলছে ৷তার ছেলে ভালো আছে এটাই অনেক ৷শাকিল ছেলের সাথে আর কথা বলল না ৷শাকিল চলে আসবে এমন সময় তার ফোনে আবারো মেসেজ এলো ৷

এত টুকুতেই ভয় পেয়ে গেলে নাকি শাকিল ৷তোমাকে তো কেবল একটু ভয় দেখালাম ৷বাকিটা তোলা রইলো কেমন ৷শাকিল কপালের ঘাম মুছে নিল ৷তারপর আবারো গাড়ীর দিকে এগিয়ে গেল ৷শাকিল আস্তে আস্তে গাড়ী চালিয়ে হাসপাতালে চলে গেল ৷

শাকিল নিজের চেম্বারে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে ৷কিছুই ভালো লাগছে না ৷হঠাৎ করেই একটা চাপা কান্নার আওয়াজ তার কানে এলো ৷কেউ কাদঁছে আর বলছে

শাকিল ভাই চারুকে ছেড়ে দে ৷আমাকে মেরে ফেলে দে কিন্তু ওকে ধর্ষন করিস না ভাই ৷শুধু একটা হাসপাতালের প্রধান প্রফেসর হতে এমন করিস না ৷ চারুলতা ডাক্তারি ছেড়ে দেবে ৷তবুও ওকে ধর্ষন করিস না ৷তোর পায়ে পরি আমি ৷চারু তোকে নিজের ভাই বলে শাকিল ৷এমন করিস না ৷আমার চারুকে তুই ছেড়ে দে শাকিল ৷চারু চারু না না ৷আল্লাহ তুমি কি বিচার করবে না ৷আল্লাহ আমার চারু ৷

শাকিল ভাই আমাকে ছেড়ে দিন ৷আমার সর্বনাশ করবেন না ভাই ৷একটু দয়া করুন ভাই ৷আল্লাহ তুমি কি দেখ না ৷না…….

সাইন্ডপ্রুফ ঘরটার মধ্যে শাকিল ভয়ে ঘামছে ৷হাঠাৎ করেই চিৎকারের আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল ৷শাকিল পাগলের মতো কাপঁছে ৷

শাকিল দৌড়ে চেম্বার থেকে বেড়িয়ে গেল ৷হাসপাতালের সবাই অবাক হয়ে শাকিলের দিকে তাকিয়ে আছে ৷শাকিল পাগলের মতো হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে গেল ৷তারপর দৌড়ে গাড়ীতে বসলো ৷শাকিল বাড়ীর দিকে রওনা দিল ৷ সে পাগলের মতো গাড়ী চালাচ্ছে ৷ভয়ে মাথায় কাজ করছে না ৷শাকিল গাড়ী চালাচ্ছে ৷হঠাৎ করেই শাকিল দেখলো তার গাড়ী নিয়ন্ত্রনে নেই ৷তার গাড়ী ব্রেক করছে না ৷গাড়ী ব্রেক করতে ব্যর্থ হচ্ছে সে ৷গাড়ী নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ধাক্কা খেল একটা গাছের সাথে ৷

শাকিলের কপাল বেয়ে রক্ত পড়ছে ৷চোখের সামনে একটা ঝাপসা অবয়ব সে দেখতে পেল ৷কিন্তু চোখ খোলা রাখা তার সম্ভব হলো না

রাত দুইটা ছুই ছুই ৷শাকিল আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালো ৷ মাথাটা অনেক ব্যাথা করছে ৷ নিজেকে খোলা আকাশের নিচে আবিষ্কার করলো সে ৷শরীরটা এখনো দুর্বল ৷আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই ৷কিন্তু এ কি তার হাত পা বাধাঁ কেন ৷মুখ থেকেও কোনো আওয়াজ বের করতে পারছে না ৷তার মুখ কাপড় দিয়ে বাধাঁ ৷তার পাশে বেশ কিছু জিনিস রাখা ৷যা দেখে সে আবারো ভয়ে কাপঁছে ৷

(আজ রাতে প্রথম খন্ড শেষ হবে…..কাল থেকে দ্বিতীয় খন্ড শুরু হবে ……যেখানে গল্পে প্রীতির মা বাবার হত্যার কাহিনী দেখানো হবে…..রাতে ১৩ পর্ব আসছে )

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here