#প্রিয়_পৃথিবী
|২|
শহর থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে নওশাদ শেখের মৃত দেহটিকে। গ্রামের গোরস্তানেই কবর দেওয়া হয়েছে তাকে৷ পুরো পরিবারসহ নিকট আত্মীয়রা গ্রামের বাড়িতেই অবস্থান করছে৷ সে আত্মীয়দের মাঝে ফারজানা বেগমের ছোটো বোন ফাতিহা বেগমের পরিবার। অর্থাৎ প্রিয়দের পরিবারের সকলেই উপস্থিত রয়েছে। যদিও তাদের উপস্থিতি সাইফুল্লাহ, সু’আদ দুজনের জন্যই অসহনীয় হয়ে ওঠেছে। তবুও বড়ো ভাই এবং মা’য়ের মুখের দিকে চেয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছে না৷ কিন্তু পৃথিবীকে ঠিক হাতের মুঠোতে নিয়ে রেখেছে। গতকাল বাবাকে শেষ দেখা দেখার জন্য পৃথিবী যখন মেজো ভাই সাইফুল্লাহর পা ধরে আকুতি মিনতি করছিল, অনেক বড়ো একটি শর্ত দিয়েছে সাইফুল্লাহ। হয় পরিবার নয়তো প্রিয় যে কোন একটা বেছে নিতে হবে তাকে। যদি পরিবার বেছে নেয় তবেই বাবাকে শেষবারের মতো দেখতে পারবে৷ আর যদি প্রিয়কে বেছে নেয় তাহলে সারাজীবনের জন্য সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হবে৷ সদ্য বাবাকে হারানো মেয়েটা সে মুহূর্তে দিশেহারা হয়ে ভাইয়ের দেওয়া শর্ত মেনে নিয়েছে। প্রিয়র সামনেই এসব ঘটেছে প্রতিবাদ করেনি সে। কারণ পৃথিবীর ওপর সম্পূর্ণ ভরসা ছিল তার। তাছাড়া আকস্মাৎ নওশাদ শেখের মৃত্যুতে সকলের মনের অবস্থা বিবেচনা করেই প্রিয় কিছু বলেনি৷ বাবাকে হারিয়ে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছে পৃথিবী এবং বড়ো ভাই সাদমান।
তিনদিনায় কিছু দরিদ্র মানুষদের খানা আয়োজন করা হলো৷ প্রিয়দের বাড়ির কাউকে বলা হয়নি৷ ফাতিহা বেগম নওশাদ শেখের মৃত্যুর দিন এসেছিলেন৷ সবাই চলে গেলেও তিনি আর যাননি৷ সবসময় বোনের পাশে পাশেই আছেন৷ কিন্তু তিনদিনায় তার স্বামীকে জানানো হলো না এতে কিঞ্চিৎ অসন্তুষ্ট হলেও কাউকে কিছু বুঝতে দিলেন না৷ প্রিয় বাড়িতে না এলেও ছোটোবোন পূর্ণতার মাধ্যমে সমস্ত খবরই রাখছিল। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে যে চুপচাপ থাকা ছাড়া উপায় নেই। এরই মধ্যে ফাতিহা বেগম সিদ্ধান্ত নিলেন, সে এবার বাড়ি ফিরে যাবে৷ ফারজানাও ফাতিকাকে গোপনে চলে যেতে বলেছেন। জানিয়েছেন নওশাদ শেখের ভাই, বোন আর তার ছেলেরা ফাতিহা বেগমের উপস্থিতিতে সন্তুষ্ট নয়৷ ফাতিহা এর কারণ জানতে চাইলে ফারজানা নিরবতা পালন করল। তেমন কোন উত্তর দিতে পারল না৷ শেষে ফাতিহা বেগম পূর্ণতাকে রেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কারণ প্রিয়র আদেশ পৃথিবীকে একা ছাড়া যাবে না৷ তাই যাওয়ার আগে পৃথিবীকে বলে গেল,
-” পৃথি মা আমি আজ চলে যাচ্ছি। আবার এসে তোকে আমরা নিয়ে যাবো। আপাকে দেখে রাখিস নিজেরও যত্ন নিস। এখন তুই শুধু আমার আপার মেয়ে না, আমার ছেলের বউও মাথায় রাখিস। ”
খালামুনিকে জড়িয়ে ধরে প্রচণ্ড কাঁদল পৃথিবী। ফাতিহা আর পূর্ণতা ওকে সামলালো। পূর্ণতাকে দায়িত্ব দিয়ে গেল পৃথিবীর আগেপিছে যাই ঘটুক সবটা যেন সে তার ভাইকে জানায়৷ দশদিনের মাথায় সাইফুল্লাহর তাগাদায় শহরে ফিরতে হয় সবার৷ শহরে ফেরার পর পূর্ণতাকে বাড়ি চলে যেতে বলে পৃথিবী। পূর্ণতা খুবই চালাক মেয়ে সে জানে এর পেছনে মেজো ভাই রয়েছে। তাই সে বলল,
-” এখন তুমি দাদাভাইয়ের বউ হয়ে গেছ আপু। তোমাকে রেখে আমি একা যাব না। ”
দরজার বাইরে থেকে সু’আদ বলল,
-” এইটুকু মেয়ে মাথায় তো দেখি ভাইয়ের মতই প্যাঁচ।”
চমকে ওঠল পৃথিবী। সু’আদ রুমে এসে পূর্ণতার মাথায় মৃদু টোকা দিয়ে বলল,
-” যোগ্য ভাইয়ের যোগ্য বোন একেবারে। ”
পূর্ণতা ঠোঁট কাঁটা স্বভাবের মেয়ে। তাই সু’আদ কে সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর দিল,
-” হ্যাঁ বোন তো আমি তোমারও যোগ্য খালাতো ভাইয়ের যোগ্য খালাতো বোন। ”
সু’আদ মৃদু হাসলো। পূর্ণতা নেহাতই বাচ্চা একটা মেয়ে। সবে ক্লাস এইটে পড়ছে। ওর সঙ্গে তর্ক করে লাভ নেই। তাই পৃথিবীকে বলল,
-” ভালো করে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দে। এও বোঝা দু’পরিবারের সম্পর্ক এখন আর আগের মতো নেই। ”
দু-চোখ ভীষণ জ্বলছে পৃথিবীর। মানুষ যখন খুব বেশি অসহায় হয়ে পড়ে শেষ সম্বল হিসেবে চোখের পানিকে বেছে নেয়৷ কিন্তু পৃথিবীর সেই সম্বলটুকুও এ মুহূর্তে আর নেই। শুধু বুকের ভিতর পুরো পৃথিবীসমান শূন্যতা আর শূন্যতা। বুকচিরে এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সু’আদকে বলল,
-” তুমি চিন্তা করো না সেজো ভাই আমি আজকের মধ্যেই ওকে পাঠিয়ে দেব। ”
সু’আদ আর সময় অপচয় করল না। সাইফুল্লাহকে খুঁজতে গেল। যতদ্রুত সম্ভব ডিভোর্সের ব্যবস্থা করতে হবে। এখনই সুযোগ দেরি করা যাবে না। এতে পৃথিবীর সিদ্ধান্ত আবার পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে!
পাক্কা এগারোদিন পর নিজে থেকে প্রিয়কে কল করল পৃথিবী। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানেই রিসিভ হলো। প্রিয় বলল,
-” আলহামদুলিল্লাহ অবশেষে মহারানীর দয়া হলো। ”
-” তুমি আসতে পারবে? ”
উদ্দীপ্ত স্বরে প্রিয় বলল,
-” কী বলিস! কখন আসবো? ”
-” বিকেলের দিকে এসে পূর্ণকে নিয়ে যাও। ”
প্রিয়র মেজাজ খারাপ করল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-” এত বেশি বুঝিস কেন? ও থাকাতে কী সমস্যা হচ্ছে? ওকে কেন তোর কাছে রাখতে বলছি বুঝতে পারছিস না? ”
-” প্লিজ ভাইয়া আমার কথা শোনো তুমি। ”
-” কী শুনব? আমার বোন তোদের হাঁড়ির সব খাবার খেয়ে ফেলছে, তোদের খাবার কম পড়ছে এটা বলবি? যদি এটা হয় যতদিন তুই থাকবি ততদিন তোদের দু’জনের পুরো খাবার, খরচা সব পাঠিয়ে দেব বল। ”
-” আমি তোমার সঙ্গে মজা করছি না। ”
কিছুটা দৃঢ় কন্ঠে বলল পৃথিবী। প্রিয় বলল,
-” আমিও মজা নিচ্ছি না৷ বড্ড প্যারায় রেখেছিস আমাকে তুই। ফোন করিস না, ফোন দিলে ফোন ধরিস না আমাকে তুই কী পেয়েছিস বল? ”
-” তোমার কী মনে হয় আমি খুব সুখে আছি? ”
-” দুঃখে পাশে থাকতে চাইছি রাখতে অসুবিধা কী? বিয়ে করে এখন ঢং দেখাচ্ছিস। ”
-” বিয়ে! এই বিয়ের জন্যই বাবাকে হারালাম। বিয়েটাই কী সব প্রিয় ভাই? ”
-” জন্ম,মৃত্যু আল্লাহর হাতে আর তুই দোষ দিচ্ছিস বিয়ের? মাথায় কে ঢোকালো এসব তোর কংস ভাইয়েরা? ”
এক কথায়, দুকথায় দু’জনের মধ্যে বেশ কথা-কাটাকাটি হলো। যদিও পৃথিবী তেমন কিছুই বলতে পারল না। কারণ প্রিয় যখন বলবে তখন অন্য কেউ বলার সুযোগ পাবে না। তার ওপর পৃথিবী স্বভাবতই কম কথা বলে। অল্প বাক্যে কথা শেষ করে সে। খুব বুঝিয়ে শুনিয়ে কিছু বলতে পারে না, চেষ্টাও করে না। পরের দিন বিকালে প্রিয় এলো। বাসায় তখন ফারজানা বেগম, সাইফুল্লাহ, সু’আদ আর পৃথিবীর ছোটো ভাই সাউদ ছিল। ড্রয়িং রুমে বসে সাউদ আর পূর্ণতার সঙ্গে কথা বলছিল প্রিয়৷ ফারজানা বেগম প্রিয়র জন্য হালকা নাস্তার ব্যবস্থা করছিল৷ এমন সময় সাইফুল্লাহ বের হলো পৃথিবীর রুম থেকে৷ বেরিয়েই প্রিয়কে বলল,
-” যা পৃথির সঙ্গে দেখা করে আয়। ”
সন্দেহী চোখে তাকালো প্রিয়। সাইফুল্লাহর পেছন পেছন সু’আদ’কে দুর্বৃত্ত ভঙ্গিতে হাসতে হাসতে বের হতে দেখে সন্দেহটা আরো গাঢ় হলো। সকলের থেকে চোখ ফিরিয়ে চাপা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পৃথিবীর রুমে চলে গেল সে। পৃথিবী বিছানায় এক পাশে গুটিশুটি হয়ে বসে ছিল। প্রিয় রুমে ঢুকতেই ত্বরিতগতিতে বিছানা থেকে নেমে আচমকাই প্রিয়কে জড়িয়ে ধরল সে। দু’চোখ বেয়ে গড়াতে লাগল নোনাপানির স্রোত৷ প্রিয়ও তাকে সন্তর্পণে নিজ বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিল। মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
-” কাঁদিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। ”
পৃথিবীর চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করল,
-” কিচ্ছু ঠিক হবে না। ”
কিন্তু বলতে পারল না সে। শুধু মন খুলে কাঁদল। এই কান্নাটুকুর জন্যই এই বুকটার খুব প্রয়োজন ছিল তার৷ কান্না শেষে হঠাৎ করেই সরে গেলো সে। কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বলল,
-” পূর্ণকে নিয়ে যাও ভাইয়া আমার এই অনুরোধটা রাখো। ”
দু’হাত পকেটে ঢুকিয়ে উদ্বিগ্ন ভঙ্গিতে রুমজুড়ে পায়চারি করল প্রিয়। তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিজোড়া এক সেকেন্ডের জন্যও পৃথিবীর থেকে সরায়নি। একসময় হাঁটা পা থামিয়ে দিয়ে পৃথিবীর সামনে এসে দাঁড়ালো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়েই গম্ভীর স্বরে প্রশ্ন করল,
-” পূর্ণকে নিয়ে গেলাম। তোকে কবে নিতে আসব? ”
-” এ মুহূর্তে আম্মুকে একা রেখে যাওয়া সম্ভব না। ”
-” একা কোথায় ভাইরা আছে। বড়ো ভাবি আছে। বাচ্চারা আছে। ”
-” নিজের মেয়ে থাকা আর এরা থাকা এক নয়৷ আম্মুর পাশে আমাকে প্রয়োজন। ”
-” ওকে ফাইন। খালামুনির অনুমতি নিয়েই তোকে নিয়ে যাব৷ আর ক’টা দিন থাকতে দিলাম, খুশি? ”
কান্না আঁটকে পৃথিবী মাথা নাড়ালো। প্রিয় পুনরায় ওকে জড়িয়ে ধরতে উদ্যত হতেই সু’আদ ঢুকে পড়ল রুমে৷ বলল,
-” প্রিয় ভাই খাইতে আসো। ”
মেজাজ বিগরে গেল প্রিয়র। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-” তোর বোন এখন বিবাহিত। বোন জামাই এসেছে। প্রাইভেট মোমেন্ট বুঝিস না ? ”
সু’আদ ভ্রু কুঁচকে বলল,
-” পৃথির বড়ো ভাই আমি। আমার সঙ্গে রয়েসয়ে কথা বলা উচিৎ এটা তুমি বোঝো না? ”
পৃথিবী বিরক্ত হয়ে বলল,
-” তোমরা থামবে। ভালো লাগছে না আমার। ”
প্রিয় পৃথিবীর দিকে আড়চোখে তাকালো তারপর সু’আদকে বলল,
-” ওর উপর বেশি চাপ দিস না সু’আদ। ফলাফল খুব খারাপ হবে। ”
আর অপেক্ষা করল না প্রিয়। ড্রয়িং রুমে গিয়ে ফাতিহাকে সময় দিল। ঘন্টাদুয়েক পর পূর্ণতাকে নিয়ে চলেও গেল। প্রিয় চলে যাওয়ার পর সাইফুল্লাহ পৃথিবীর ফোন নিয়ে নিল। ফারজানা প্রতিবাদ করতে গেলে সে কড়া গলায় বলল,
-” তুমি কোন কথা বলবে না। ওর জন্য আব্বুকে হারিয়েছি আমরা। ওর বাপ যদি আব্বুর কথা মেনে নিত তাহলে আজ আমরা পিতৃহারা হতাম না! ”
ফারজানা বললেন,
-” তোরা যদি তোদের বাবাকে না উষ্কাতি এইসব হতো না৷ যা কিছু ঘটেছে এতে প্রিয় বা ওর পরিবারের দোষ নেই। ”
-” তোমার কাছে তোমার বোন আর তার ছেলে আগে নাকি আমরা চার ভাই আগে? ”
ফারজানা বেগম আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদতে শুরু করলেন। স্বামী হারিয়েছেন তিনি এবার ছেলেদের চক্ষুশূল হলে কোথায় যাবেন? তার কান্না সহ্য করতে না পেরে পৃথিবী চিৎকার করে ওঠল। বলল,
-” তোমরা যা বলছো সব শুনছি তবুও এই অশান্তি কেন করছো? দোহাই তোমাদের আম্মুর সাথে এমন করো না। ”
-” আমার শেষ কথা একটাই তুই প্রিয়র সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবি না৷ যতদ্রুত সম্ভব বিয়ে দেব তোর৷ আমার বন্ধু সামনের মাসেই দেশে আসবে৷ প্রিয়র চেয়ে হাজারগুণ ভালো পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেব তোকে। ”
সু’আদ বলল,
-” তার আগে প্রিয় ভাইয়ের সঙ্গে ডিভোর্স করাতে হবে। না হলে সমস্যা হবে। ”
-” সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে ”
.
বিয়ে হতে না হতেই ডিভোর্স! পৃথিবী ভেবেছিল সময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভাইদের বুঝিয়ে সবটা সামলে নেবে। সবটা সামলানোর পূর্বেই ডিভোর্স? কোনোদিন সম্ভব না। সে প্রিয়কে ভালোবাসে খুব ভালোবাসে। এত যুদ্ধ করে দু’জন এক হতে গিয়েও আলাদা হয়ে যাওয়া।মেনে নিতে পারবে না সে। দিন রাত এক করে চিন্তা করল পৃথিবী কিন্তু কোন সুরাহা পেল না। সাদমানের বউ মিমকে দিয়েও সাদমানকে বোঝানো হলো। কিন্তু সে বুঝল না। এক কথায় দুকথায় ঝগরা বেঁধে গেল৷ শেষ পর্যন্ত চার বছরের ছেলে মিলন, ছয়মাসের মেয়ে মিলিকে নিয়ে মিম চলে গেল বাপের বাড়ি৷ রোজ রোজ এত অশান্তি এত চিন্তার মাঝে ভাই ভাবির সংসারেও অশান্তি। সব কিছুর মূলে দায়ি করা হলো পৃথিবীকে। ফারজানা আর সহ্য করতে না পেরে পৃথিবীকে বলল,
-” হয় তুই প্রিয়র হাত ধরে এ বাড়ি ছেড়ে চিরদিনের মত বেরিয়ে যা। নয়তো প্রিয়কে ডিভোর্স করে দে!”
চলবে… ইনশাআল্লাহ
®জান্নাতুল নাঈমা
[ কার্টেসী ছাড়া কপি নিষেধ। একদিন পর পর দেব গল্পটা ]