প্রিয়োসিনী পর্ব ১৪+১৫

0
406

#প্রিয়োসিনী
#নীরা_আক্তার
#পর্ব_১৪
হটাৎ করে তাদের অবাক করে দিয়ে নওরিন পুকুরে ঝাপ দেয়।দুইজন বিস্ফোরক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে পানির দিকে…..নওরিনকে দেখা যাচ্ছে না।
ইশা ভীষণ জোরে চিৎকার দেয়।ভয়ে কাঁপছে সে।বার বার নওরিন নওরিন করে চিৎকার করছে।
নোহা পাশ থেকে চিৎকার দিয়ে বলে উঠে,
-নওরিন দাঁড়াও আমি যাবো তোমার সাথে….
নওরিন পানির ভেতর থেকে মাথা বার করে বলে উঠে,
-কোথায় যাবা….?আমি তো এখানেই আছি
ইশা ভয়ে কান্না করে দিয়েছে।
-ভয় পাশ না ইশা আমি সাঁতার জানি তো।গ্রামে থাকতে কতো এ পুকুর সে পুকুর করে বেরিয়েছি। পানি আমায় বড্ড টানে।
নোহা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে নওরিনের দিকে।
-ঐভাবে কেউ লাফ দেয়?ভয় পেয়ে গিয়েছি।
-কি সুন্দর পানি দেখো….লোভ সামলাতে পারিনি।তুমিও আসো

কথাটা বলেই নওরিন মুচকি হাসি দেয়।নোহা পা ডুবিয়ে আবার বসে পড়ে।
এদিকে ইশাও কাঁদতে কাঁদতে ধপ করে বসে পরে।
-আমি তো ভাবলাম,আমায় ক্ষমা করে দিস নওরিন…….

নওরিন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইশার দিকে।মুখে তার মুচকি হাসি।
–আমি যদি মরতে চাইতাম তোর সামনে কি লাফ দিতাম বোকা কোথাকার!

নোহা মুখ বাকিয়ে বলে উঠে,
-যতোসব ন্যাক্যামো!!
________

এদিকে ইসরাক তিন জনকে এখানে সেখানে খুজতে থাকে।জিনাত সিকদার চাইছেন এক্ষুনি ইসরাককে নিয়ে বাড়ি চলে যেতে।বাকিরা থাকতে চাইলে থাকুক।কিন্তু ইসরাককে সে নিয়ে যাবেন।ছেলে অসুস্থ।ডাক্তার দেখানো জরুরি।কিন্তু ইসরাক কিছুতেই যাবে না।তিনি মনে মনে চিন্তা করে নেন দরকার পরলে জোর করে নিয়ে যাবেন।

ইসরাক এদিকেই আসছিলো
মাঝ রাস্তায় আসতেই ইশার চিৎকার শুনে দ্রুত ছুটে আসে।উওেজিত কন্ঠে প্রশ্ন করে,
-কি হয়েছে।চোখ যায় নওরিনের দিকে।
নওরিনকে পানিতে দেখে সে প্রথমে ভেবেছিলো নওরিন হয়তো পানিতে পড়ে গিয়েছে।সে নিজেও লাফ দিতে চায়…কিন্তু নোহা ইসরাকের হাত টেনে ধরে,
-দাভাই ও সাতার জানে ভয় নেই!থাকুক!

ইসরাক একটু শান্ত হয়।
নোহা নওরিনকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে….
-ওহে কলঙ্কিনী বধু, ভেবেছিলাম তুমি আর আমি দুই কলঙ্কিনী একসাথে গলায় কলসি বেধে এই জোড়া পুকুরে ডুবে মরবো।ইতিহাস সৃষ্টি করবো।কিন্তু তুমি তা হতে দিলে কোথায়।আগেই সাঁতার শিখে বসে আছো।এখন কি হবে?আমি কি একা একা মরবো?

নওরিন মুচকি হেসে উওর দেয়,
-পানিতে ডুবে মরলে বেশি কষ্ট হবে তার চেয়ে সহজ কিছু ভাবো….

-বিষ খাবে?নাকি গলায় দড়ি দেবে?নাকি উঁচু কোথাও থেকে লাফিয়ে পরবে?
নওরিন নোহাকে সায় দিয়ে বলে উঠে,
-চলো মাউন্টেনে যাই কিছুদিন ঘোরাঘুরি ও করা যাবে আবার লাফ দিয়ে মরাও যাবে….একবার পরলে হাড়গোড় সব গুড়ো গুড়ো হয়ে যাবে।বাঁচার চান্স জিরো পার্সেন্ট।

নোহা হেসে বলে
-হুম্ম চলো, রূপসী আপুর বিয়েটা হয়ে যাক তারপর যাই।বিয়ে না খেয়ে গেলে আপু রাগ করবে।যাওয়ার আগে শেষ বিয়েটা খেয়েই যাই

-হুম্ম তাই করো।যা করবে দ্রুত কর এই জীবন আর ভাল লাগছে না…মা ভালোবাসে না বাবা ভালো বাসে না একটা মাত্র বর সেও ভালোবাসে না।কথায় কথায় মেরে তক্তা বানিয়ে দেয়।শ্বাশুড়ির কথা নাই বা বলি।
ঐযে দেখো একটা মাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড সে ঠকালো….এই জীবন আর রাখতে চাই না।
কথাগুলো বলে নোহা আর নওরিন দুজনেই ইশার দিকে তাকায়।ইশা হাউ মাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ছুট লাগায়।

ইশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নোহা হাসতে থাকে।

ইসরাকের মাথা ভনভন করছে।একোন পাগলদের পাল্লাই পড়লো সে।এসব কথা শুনতে ভীষন বিরক্ত লাগছে তার।
ইসরাক নোহা কে ধমক দেয়….
-কিসব কথা বলিস পাগলের মতো!
-মেয়েদের কষ্ট তুমি কি বুঝবা হে পুরুষ।তোমরা তো স্বার্থপর জাতি শুধু নিজেরটা বুঝো!

ইসরাক নোহাকে আরেকটা ধমক দেয়।
-মাথা ঠিক আছে?….ঘরে চল আম্মা ডাকে।এক্ষুনি বাড়ি ফিরবো আমরা….

ইসরাকর আর নোহা দুই কদম এগিয়ে গিয়ে ইসরাক পেছন ফিরে নওরিনের দিকে তাকায়,

-এই যে মৎস্যকুমারী আপনি জমিনে উঠে আসবেন না সারাজীবন পানিতেই ভাসতে থাকবেন?বিছানা পত্র এনে দিই?
নওরিন মুখ কালো করে তাকায়..
—-আমি যেখানে খুশি থাকি তাতে আপনার কি?
–আমারই তো সব।নিজে থেকে উঠবে না তো?আমি কি জেলে ডেকে তোমাকে তুলে নিয়ে যাবো?তুমি তো আবার নিজে থেকে কিছু করা পছন্দ করো না?উঠে আসো বলছি….

নওরিন ইসরাকের ধমক শুনে মুখ বাঁকিয়ে উঠে আসে।
নোহা অনেক দূর এগিয়ে গেছে।ইসরাক নওরিনের জন্য সেখানে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে নওরিনের জন্য।নওরিনের
কাপড় ভিজে গায়ের সাথে লেগে গেছে।হালকা রং হওয়ায় শরীরের সবগুলো ভাজ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।ইসরাককে তাকাতে দেখে নওরিন ভেজা ওড়নাটা টেনে গায়ে জড়িয়ে নেয়…..
-তাতে কি যা দেখার তা তো দেখেই ফেলেছি নতুন করে কিছু দেখা বাকি আছে?
ইসরাক পা থেকে মাথা পর্যন্ত আবারও চোখ বেলায়!

-এভাবে রাস্তা দিয়ে হেটে যাবে?
-কিছু হবে না চলুন!
ওড়নাটা আরেকটু টেনে দেয় নওরিন…টানাটানি করার জন্য গায়ের সাথে আরো চিপকে গেছে।
ইসরাক একটু বিরক্ত হয়। বিরক্তের স্বরে বলে উঠে…
-এটা টানলেই নিশ্চয়ই শুকিয়ে যাবে না…..
নওরিন মুখ ভেংচি কাটে।ইসরাকের এবার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
-মৎস্যকুমারীরা জামা কাপড় পরে না তুমি পড়ছো কেন?খ
-কি সব বলেন?
-ইডিয়েট। সাথে তোয়ালে নেই পানিতে নামছো কেন?কোনো কোমনসেন্স নাই?এটা যে গ্রাম এতোটুকু মাথায় থাকে না?মাথায় কি গোবর পুরা?
নওরিন মুখ বাঁকায়
-শুধুতো এটাই পারো।এতোটুকু রাস্তা কিভাবে যাবে কোনো সেন্স আছে তোমার?
নওরিন কোনো উওর দেয় না!

ইসরাক গা থেকে শার্টটা খুলে নওরিনকে পড়িয়ে দেয়।তারপর হাটা দেয় বাড়ির পথে।নওরিন ও ইসরাকের পিছু পিছু আসতে থাকে

নওরিন বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই ধাক্কা খায় জিনাত সিকদারের সাথে।নওরিনের দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়,
-তোমার গা ভেজা কেন?
নওরিন মৃদুস্বরে উওর দেয়,
-পুকুরে নেমেছিলাম।
-কোন পুকুর?
-জোড়া পুকুরে….
পাশ থেকে ইসরাকের নানী হায় হায় করে উঠে,
ইসরাক আর নওরিন মুখ তাকাতাকি করে…
ইসরাক প্রশ্ন করে,
-কি হয়েছে নানু…..
-ঐ পুষ্করিণীতে পেত্নী থাকে।তোমার পাও ধরে টাইনা নিয়া গেলে কি হইবো?

ইসরাক উচ্চ স্বরে হাসতে হাসতে বলে উঠে,
-ভয় নাই নানু….ঐ পেত্নী এই পেত্নীকে দেখেই ভয়ে পালাবে….হাত পা ধরে টানা টানি তো পরের কথা।

জিনাত সিকদার নিজের অজান্তেই ছেলের কথায় হেসে দেয়।

নওরিন আর ইসরাক ভেতরে চলে যায়!

পাশ থেকে নানুমুনি বলে উঠেন….

-হাইসো না….!যদি কোনো পোয়াতি বউ তেনাদের ক্ষপরে পড়ে তইলে আর ছাওয়ালের মুখ দেহন লাগবো না!আমি কবিরাজ চাচারে খবর পাঠাই…আইস্যা একবার বউডারে ফুক দিয়া যাক।
_____________________
নোহা ইশার পেছনই ছাড়ছে না।ইশা পালাই পালাই করছে আর নোহা একটু পর পর চেপে ধরছে।ইশা কিছুতেই মুখ খুলবে না আর নোহাও ছাড়বে না।নওরিনের অতীতের সব রহস্য ইশার মাঝেই লুকানো আছে এটা নোহার ধারণা।শুধু ধারণা নয় বিশ্বাস।ইশা সাজুগুজু করার সময় নোহা ইশার জুয়েলারি বক্সে একটা খুব দামী ঘড়ি আবিষ্কার করে….
নোহা ইশার সামনে উচিয়ে ধরে,
-এটা কে দিয়েছে তোকে?
ইশা এক পলক দেখে নোহার হাত থেকে ছোঁ মেরে কেড়ে নেয়,
-কে আবার দিবে আমি কিনেছি!কেন কিনতে পারি না?
-মিথ্যে বলিস না ইশা এটা আমি নিজে আমান ভাইকে পছন্দ করে দিয়েছিলাম….।
ইশা একপলক নোহার দিকে তাকায়….
-এমন জিনিস কি আর বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না?
-কেন যাবে না কিন্তু আমার বিশ্বাস এটা সেই ঘড়িটাই।
ইশা মুচকি হাসি দেয়,
-তুই যে ভাবে আমার থেকে আমার সব স্বপ্নগুলো কেড়ে নিয়েছিলি আমিও তাই করেছি।ভালোবাসা আর যুদ্ধে সব কিছুই সম্ভব।
ইশা সেখান থেকে দৌড়ে পালায়…..
নোহা ধপ করে বিছানায় বসে পড়ে।

“ইশা আমার প্রতি তোর এতো হিংসে?”

____________________

রূপসী আপুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলছে।সবাই নাচ গান করছে তবে ইসরাক ঘরে শুয়ে আছে।মিউজিকের শব্দে মাথা যন্ত্রণা আরো বেড়ে যাচ্ছে
ইসরাক ঘরের আলোটা নিভিয়ে
বিছানায় শুয়ে ফোন চাপছিলো।রং নাম্বারটা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আরো কয়েকটা ছবি রিসিভ হলো।ইসরাক জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে….
ছবিগুলো না দেখেই কনটাক্টটা ব্লক করে দেয়।

ইসরাক উপর হয়ে বালিসে মুখ গুজে।আবার অস্বস্তি হচ্ছে।মাথা যন্ত্রণা কিছুতেই ছাড়ছে না।শরীর ঝিম মেরে আছে।তবে এবার মেজাজ হারালে চলবে না……
“অতীত সবারই থাকে।হয় সেটাকে মেনে নিয়ে বর্তমানটাকে উপভোগ করতে হবে নাহয় অতীতের আগুনে প্রতিনিয়ত দগ্ধ হতে হবে”ইসরাক বর্তমানটা চায়।

নওরিন ঘরে আসে,ইসরাককে উবু হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে উদ্বিগ্নতার সাথে ইসরাকের পাশে এসে বসে,
-শরীর কি খুব বেশি খারাপ লাগছে?
ইসরাক মুখ তুলে তাকায়…
-নাহ্ ঠিক আছি।তোমাদের একা ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করলো না।ঘরে এলে কেন?সবাই আনন্দ করছে সেখানে যাও!

নওরিন ইসরাকের পাশ থেকে উঠে জ্বানালার কাছে যায়।বাহিরে উঁকি দেয়।সারা বাড়িতে আলো জ্বলছে।এই ঘরে আলো না জ্বালানো থাকলেও চারদিকের আলোয় আলোকিত হয়ে আছে
–আপনাকে দেখতে আসলাম।ঠিক আছেন কি না….!
-কেন?আমায় ভালোবাসো নওরিন?
নওরিন কোনো উওর দেয় না….
ইসরাক নওরিনের পাশে এসে দাড়ায়,
-তোমায় একটু জড়িয়ে ধরবো?
নওরিন ইসরাককে পা থেকে মাথা পযর্ন্ত দেখে,
-গিরগিটিও আপনাকে দেখে লজ্জা পাবে!আপনার কতো রং ঢং আর দেখবো!কাল এই সময় আমাকে ইচ্ছে মতো আঘাত করলেন আজ এসেছেন আদর করতে?লজ্জা লাগে না?

ইসরাক মুচকি হাসে….
-কখন মারলাম?
-শরীররে আঘাতের চেয়ে কথার আঘাত বেশি যন্ত্রণা দেয়।
-একটু জড়িয়ে ধরি?
–আমি যদি বলি ধরিয়েন না তাহলে কি ধরবেন না?
ইসরাক নওরিনকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে….
–আমার বউ আমি ধরবো।এতো ফর্মালিটি মানতে পারবো না।
-(…)
-নওরিন…আমায় ক্ষমা করো।বড্ড অন্যায় করে ফেলেছি তোমার সাথে।
নওরিন একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে উঠে,
-বাদ দিন।এমনটাই হয়…যখন ইচ্ছে আঘাত করবেন,যন্ত্রণা দেবেন আবার মন চাইলেই কাছে টানবেন….মেয়েদের জীবনেট গল্পগুলো এমনই হয়।

-কথা দিচ্ছি আর এমন হবে না,
-বাদ দিন দিন শেষে আমরা সবাই একা
-মৃত্যু ছাড়া আর কেউ তোমাকে আমার থেকে আলাদা করতে পারবে না।একা হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।

ইসরাক নওরিনের কপালে আলতো করে চুমু খায়।নাকে নাক ঠ্যাক্যায়….এমন সময়,কোথা থেকে নোহা ছুটতে ছুটতে ঘরে আসে।দুম করে আলোটা জ্বালিয়ে দেয়,
নওরিন আর ইসরাক ছিটকে দূরে সরে যায়,নোহা মাথা নিচু করে নেয়,
-নওরিন তোমার সাথে কথা আছে…দ্রুত আমার সাথে আসো।

কথাগুলো বলেই নওরিনের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে নোহা।
ইসরাক খোলা জ্বানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে।নওরিনের সাথে ভুলবোঝাবুঝি মেটানো দরকার।নাহলে পরবর্তী পরিস্থিতি সে সামলাতে পারবে না।

ইসরাকের ফোনটা বেজে উঠে।হাতে নিতেই দেখে আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছে।ইসরাক ফোনটা কানে ধরতেই কানে বাজে সেই চিরচেনা কন্ঠস্বর…
-দাভাই তুমি ভালো আছে?
ইসরাক চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়…

চলবে…….
।।

#প্রিয়োসিনী
#নীরা_আক্তার
#পর্ব_১৫
নোহা নওরিনকে ঘরে ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
-কি হয়েছে নোহা?কোনো সমস্যা হয়েছে কি?
-সত্যিই করে একটা কথা বলবে?
-কি কথা?
-কিছু লুকাবে না কসম খাও….
-কিহ সব বলো?কসম খেতে নেই জানো না!
-হুম্ম।দাভাইয়ের নামে কসম খাও একটাও মিথ্যা বলবা না লুকাবাও না!
নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে,
–আমান ভাইয়ের সাথে তোমার সত্যিই কি কোনো সম্পর্ক ছিলো?
দপকরে নওরিনের চোখ দুটো জ্বলে উঠে…
-এগুলো বলার জন্য আনছো?
-বলো
–আমি ক্লান্ত নোহা।সবাইকে চরিত্রে ক্লারিফিকেশন দিতে দিতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো আমার কষ্টটা বুঝবে বাট…তোমারা সবাই কেন আমাকে বার বার এভাবে কাঠগড়ায় দাড় করাচ্ছো বলো তো?সব জেনে শুনেই তো তোমার দাভাই আমাকে বিয়ে করেছিলো। তাহলে এতো কিসের প্রশ্ন আমাকে ঘিরে।
নওরিন উঠে দাড়ায়।নোহা নওরিনকে হাত ধরে বসিয়ে দেয়….
–আমি শুধু তোমাকে প্রটেক্ট করতে চাই!
-কিহ?
–আমান ভাইকে আমার থেকে বেশি কেউ চিনতো না।দাভাই আমান ভাই দুজনই আমার খুব কাছের মানুষ।দুজনকেই আমি খুব ভালোবাসি।কিন্ত দুজনের চরিত্রে আকাশ পাতাল ফারাক।আমি আমান ভাইকে একটু একটু করে বদলাতে দেখেছি।সিকদার বাড়ির সবচেয়ে বদরাগী বদমেজাজি চরিত্রহীন পুরুষটা একটু একটু করে নিজেকে বদলে নিয়েছিলো তোমার জন্য।তোমার কথাতে নওরিন।এগুলো মিথ্যে নয় সব সত্যি।আমান ভাইয়ের পাগলামো ক্রেজিনেস সব কিছুই আমি দেখেছি।এগুলো কিচ্ছু মিথ্যে নয়!
-ও গড! আমি পাগল হয়ে যাবো। আমি কখন তোমার আমান ভাইকে বদলাতে গেলাম।এগুলো কেন বলছো আমায়?আমি শুনতে চাই না…..কিছু!

-নওরিন লাস্ট এক বছর তোমার সাথে আমান ভাইয়ের রিলেশনশিপ ছিলো।এটা আমরা সবাই জানি।আমিও জানি আর দাভাইও জানে।বাড়ির সবাই জানে।আমান ভাই নিজে সবাইকে সব কিছু বলেছে।সারা রাত আমান ভাইকে আমি বারান্দায় বসে তোমার সাথে কথা বলতে শুনেছি।একটার পর একটা গিফট কিনতে দেখেছি।কিছু গিফ্ট আমি নিজেও কিনে দিয়েছি।এগুলো তো আমি মিথ্যে বলে মানবো না।কারণ আমি নিজে দেখেছি সব কিছু ।
-রিয়েলি?পাগলের প্রলাপ বকছো তোমরা?তোমরা সবাই এক!
-তোমার একটা কথায় আমান ভাই সব ছেড়ে ছুটে আসতো তোমার স্কুলে তোমার কাছে….আর তুমি পাগলের প্রলাপ বলছো?

নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে নোহার দিকে….
-বিশ্বাস করো আমি মারা যেতাম তবুও আমান সিকদারের সাথে কোনো সম্পর্কে যেতাম না।ওনার মতো অসভ্য লোকের সাথে কখনোই না।আর তার চেয়ে বর কথা আমি ওনাকে কখনো সেই চোখে দেখিই নি।ইনফ্যাক্ট তখন তো আমি এনগেজড ছিলাম।কেন করবো এমন রিলেশনশিপ।আমার কোনো দামি গিফ্টের প্রয়োজন না সেদিন ছিলো না এখন আছে।

নওরিন অসহায় দৃষ্টিতে নোহার দিকে তাকিয়ে আছে….
-তাহলে কে নওরিন? কে করেছে এই সব কিছু?আমান ভাই কার সাথে প্রেম করলো এতোদিন?
–আমি কি করে জানবো?
-তুমি জানো না?হয় সেটা তুমি ছিলে নয় তো কেউ তোমার আইডেনটিটি ইউজ করেছে….বুঝো না কিছু?ছোট বাচ্চা তুমি?

নওরিনের বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠে!
-চুপ করে থাকলে সমস্যা বাড়বে বয় কমবে না…আমান ভাইয়া বেঁচে আছে মরে যায় নি আজ না হোক কাল ঠিকই ফিরে আসবে আর তারপর কি করবে?
প্রচুন্ড ভালোবাসা যখন প্রচুন্ড ঘৃনায় পরিনত হয় তখন সেই ঘৃনা কতোটা ভয়ংকর হয় জানো?সবকিছু শেষ করে দিবে ও এর চেয়ে ভালো না যে সত্যিইটা বলে দাও।ঝামেলা শেষ হয়ে যাক।তারপর তুমিও মুক্ত আমিও তোমার দায় থেকে মুক্ত
-কি বলবো?
-অদ্ভুত তো।এতোক্ষণ কি বললাম আমি তোমায়?
-আমি জানি না!কিছু না জেনে প্রমান ছাড়া কাউকে দোষ দেওয়া ঠিক নয়।আর তোমার ভাইরাও ধোঁয়া তুলসি পাতা নয়। হতেই পারে সে সবকিছু মিথ্যে বলেছে….আমাকে বদনাম করার জন্য।

-তুমি কি কিছু বুঝোনা নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করছো।
নওরিন মাথা নিচু করে নেয়,
–আমি শুধু তোমায় বাঁচাতে চায়েছি নওরিন!
-কেন চাইছো?

-দেখো তোমার এই অসন্মানের দায় কিছুটা হলেও আমার।আমান ভাইয়ের রিলেশনশিপে গোড়া থেকেই আমি ইনভলভ ছিলাম।ধরো আমান ভাইয়ের ভালো লাগা খারাপ লাগা গুলো আমার সাথে শেয়ার করতো।অ্যাজ এ বেস্ট ফ্রেন্ড।আর আমি তাতে আমার মতো করে রিয়াকশন দিতাম।একদিন হটাৎ করেই আমান ভাই ইশার মুখে তোমার বিয়ের কথা শুনে…প্রচুন্ড ভেঙ্গে পড়েছিলো।আমার ও খুব রাগ হয়েছিলো তোমার উপর মানে আমান ভাইয়ের সেই গফের উপর।আমিই ভাইকে সাজেস্ট করেছিলাম তোমায় তুলে এনে রাখতে। শুধু সাজেস্ট না ইনসিস্ট করেছিলাম।আর এদিকে তোমার বিয়েটাও ভেঙ্গে যেতো আর তুমিও তোমার শাস্তি পেয়ে যেতে।পরে আমান ভাই তোমায় বিয়ে করে নিতো আর সব ঠিক হয়ে যেতো।বাট আই ওয়াজ রং।আমি বুঝতে পারিনি সব কিছু এতো জটিল হয়ে যাবে।আমি জানতাম না আমান ভাইয়ের সেই প্রেমিকা তুমি ছিলে নওরিন।

নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে নোহার দিকে,
-আসলে সেদিন ইশার ফোনের ওয়াল পেপারে আমি প্রথম তোমার ছবি দেখি।মানে ইশার বেস্ট সেই ফ্রেন্ডের ছবি দেখি।আমান ভাই কখনো আমায় তোমার ছবি দেখায়নি।আসলে আমান ভাই চেয়েছিলো একবারে তোমায় বিয়ে করে আমায় দেখাবে।কিন্তু ততোক্ষনে আমি বুঝে গিয়েছিলাম কোথাও একটা সমস্যা হয়েছে।আমার বিশ্বাস ছিলো তুমি এমন হতেই পারো না।আমি স্ব জ্ঞানে কখনো তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবো না।…..কিন্তু ততোক্ষণে আমান ভাই বেরিয়ে গিয়েছে।পরিস্থিতি হাতের বাহিরে বেরিয়ে গিয়েছিলো।আমি দাভাইকে সবটা জানায়।দাভাই ও চায় নি আমানভাই কোনো ভুল করে বসুক।দাভাই সেখানে যায় তোমাদের দুইজনকেই সেইফ করে।তুমি তো আমান ভাইকে প্রায় মেরেই ফেলেছিলে।

নওরিন কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না।

-ওনি?
-সেদিন তোমার যেই গাড়ির সাথে এক্সিডেন্ট হয়েছিলো ঐ গাড়িটা দাভাইয়ের ছিলো।দাভাই তোমায় হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলো।
-তার মানে ওনি সব জানতেন?
-উঁহু। যতোটুকু আমান ভাই বলেছে শুধু ততোটুকুই জানে।

নওরিন আর একমুহূর্ত সেখানে দাড়ায় না। ছুট লাগায় ইসরাকের ঘরে।ঘরে ঢুকতেই দেখে ইসরাক শুয়ে আছে আর তার পাশে স্নেহা বসে আছে…
নওরিনকে দেখে পাশ থেকে উঠে দাড়ায়…
-ইসরাক ভাইয়াকে দেখতে এসেছিলাম একা একা শুয়ে আছে তাই আর কি।

নওরিন কোনো কথা বলে না।স্নেহা নিজে থেকে নওরিনকে টানতে থাকে…
–আমরা সবাই আজকে ডিসাইড করেছি রাতে রূপসী আপুর সাথে থাকবো।সবাই এক সাথে চলো!

নওরিন বিরক্তের সাথে স্নেহার হাত ছাড়িয়ে নেয়….
–আমার ওনার সাথেই থাকবো।ওনার সাথে আমার কথা আছে
স্নেহা মুখ ভাঙ্গীয়ে উওর দেয়,
-তোমার বর এক রাতে কোথাও উধাও হয়ে যাবে না।কাল কথা বলিও।অনেক রাত হয়েছে চলো!

স্নেহা নওরিনকে টেনে নিয়ে যায় নিজের সাথে।ইসরাকের সাথে বোঝা পড়াটা আর হয়ে উঠে না…..!

ইসরাক বালিশ দিয়ে মাথা চাপা দেয়,
“ইস্ কি যন্ত্রণা!কানে বার বার আমানের বলা কথাগুলো বাজছে,”
___________

[[একটু আগের কথপোকথন,
–দাভাই তুমি ভালো আছো?
ইসরাক চোখ বন্ধ করে উওর দেয়
-কেমন আছিস তুই?
-আগের চেয়ে বেটার।এখন ঠিক মতো হাটা চলা করতে পারি।তবে মেরুদন্ডের ব্যথ্যাটা কমে নি।
–আর পাগলামো করিস না ভাই….সুস্থ হয়ে যা
-তুমি নওরিনকে কেন বিয়ে করলে দাভাই?
–আমি তোর মতো পাগল নই।পরিবারের সন্মান নষ্ট হতো। দাদুর কথা ভেবেছিস।এই কলঙ্কের দায়ে মেয়েটা মরে যেত।
-মরলে মরতো।আমি তো চেয়েইছিলাম ও মরুক।আমিও মরতাম ও মরে যেতো।

-সবসময় পাগলামো চলে না আমান।

-লাইক সিরিয়াসলি দা ভাই…ঐ মেয়েটা আমার সাথে কতোটা ব্রুটাল রিলেশনশিপে ছিলো তার প্রমান তো আমি তোমায় দিয়েছি ছবিগুলো দেখোনি?ভিডিও কি দিবো?দেখবে?ভাল লাগবে দেখতে নিজের প্রেজেন্ট ওয়াইফ এর সাথে নিজের ভাইয়ের—ভিডিও দেবো বলো?
–আমান প্লিজ সন্মান দিয়ে কথা বল নয়তো!
-নয়তো কি?বলো?ওহ্ গড।ঐ মেয়েটা নিজের স্বার্থে আমার সাথে রিলেশনশিপে যায়।আবার নিজের স্বার্থে আমারই বুকে ছুড়ি মেরে পালিয়ে যায় এর পরও তুমি কি করে ওকে একসেপ্ট করো?দাভাই আমি সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম ওর জন্য ….

-লিসেন টু মি!ও এখন আমার বউ হয়।হয় তুই ওকে সন্মান দিয়ে কথা বল নয়তো ওর ব্যাপ্যারে কোনো কথায় বলিস না।
-দাভাই!
-ভুলটা তোর ছিলো আমান।জোর করে কখনো ভালোবাসা হয় না!
–আমায় বাঁচালে কেন?মরে যেতে দিতে।তারপর যা ইচ্ছে করতে।
-তুই আমার ভাই।
-ও শুধু আমাদের সম্পদের জন্য আমাকে ইউজ করেছে দাভাই।টাকার জন্য।ও তোমাকেও আমার মতো নিঃস্ব করে ছেড়ে দেবে।ওদের মতো মেয়েরা কখনো ভালো হয় না।ওরা বেঈমান দাভাই।আমি ওকে শেষ করে দেবো।মেরে ফেলবো।

ইসরাকের মাথাটা গরম হয়ে গেছে।প্রচুন্ড রাগে রিরি করতে করতে উওর দেয়,

–এরপর নওরিনের দিকে চোখ তুলে তাকালে আমি তোকে সিকদার বাড়ির মাটিতেই জান্ত পুঁতে ফেলবো আমায় বাধ্য করিস না আমান।

আমান হেসে বলে,
–আজ যদি আমি ফিরে যায় দুদিন লাগবে না ওর আমার কাছে ফিরে আসতে।ও তোমাকে ফাঁকি দিয়ে আমার কাছে চলে আসবে মিলিয়ে নিও।…তুমি কি জানো ও আমার সাথে কন্টাক্ট করার চেষ্টা করেছে?দেখবে টেকস্ট গুলো যেগুলো ও আমায় করেছে?নাকি ওর থেকে পাওয়া হাজার হাজার মিসড কলের স্ক্রিন শর্ট পাঠাবো?সব গুলোই কিন্তু এখনকার তোমার সাথে বিয়ের পরের…….

ইসরাক আর কিছু না শুনেই ফোন কেটে দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।মানসিক ভাবে সে বড্ড বিধ্বস্ত।চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়।মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ না খুলেয় হাত ধরে টান দেয়,
স্নেহা চিৎকার দিয়ে উঠে,
-কি করছো?আমি তোমার বউ নই আমি স্নেহা
ইসরাক দ্রুত হাত ছেড়ে দেয়,
-তুই এ ঘরে কি করছিস?
-বড় খালা পাঠালো….!তুমি নাকি অসুস্থ তোমার কিছু লাগবে কি না সেটা দেখতে বললো!

ইসরাক আবার ধপ করে শুয়ে পড়ে,
-কিছু লাগবে না। নওরিন কোথায় ওকে ডেকে দে…
স্নেহা ইসরাকের পাশে বসে,
–তুমি তো আমার ক্রাশ বয়।তুমি বললে তো আমি প্রানও দিয়ে দিতে পারি আর তো সামান্য ভাবিকে ডাক দেওয়া।দাড়াও এক্ষুনি ডেকে দিচ্ছি।
স্নেহা উঠতে যাবে তখনই ঘরে নওরিন প্রবেশ করে….]
_______________

সেদিন আর ইসরাক নওরিনের মাঝে কোনো কথা হয় না।দুজনের মনেই দুজনকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিলো তবে প্রশ্নগুলো অত্যন্ত ব্যক্তিগত। ভড়া বাড়িতে এতোগুলো মানুষের মাঝে এইসব কথপোকথন করাটা বোকামি।
স্বাভাবিক ভাবেই সেদিন রূপসী আপুর বিয়েটা হয়ে যায়।রিসিপশনের দিন বিকেলেই তারা স্ব পরিবারে বাড়ি ফিরে আসে।ইসরাক বাকিদের আরো কয়দিন থাকতে বললেও জিনাত সিকদার রাজি হয় না।ছেলের সাথে বাড়ি ফিরবেন তবে শিউলি পারভিন ফিরেন না।তিনি কদিন বাবার বাড়তেই থাকবেন।

এই দুইদিন দুজনের মনের মধ্যে ঝড় থাকলেও দুজনই বেশ স্বাভাবিক ছিলো।ইসরাক মেজাজ স্বাভাবিক রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।

বাড়ি ফিরেই গাড়ি থেকে নেমে ইসরাক নওরিনকে ঘরে টেনে নিয়ে যায়।
সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ইসরাকের দিকে,
নোহা একটা ফাঁকা ঢোক গিলে,
-দাভাইয়ের মাথায় কখন যে কিসের ভূত চাপে কে জানে।

সবাই গাড়ি থেকে নামলেও ইশা গাড়ি থেকে নামে না।
তাকে নামতে বললে উওর দেয়,
–আমি আজ এক্ষুনি হস্টেলে ফিরে যাবো।
জিনাত সিকদার বেশ বিরক্ত হয় ছেলে মেয়েদের উপর,রাগে গজ গজ করতে করতে বলে উঠে,
-রোজ রোজ তোমাদের নাটক আর নিতে পারছি না আমি। আমার তো বয়স হয়েছে।আর কতো নির্যাতন সহ্য করবো আমি।
ইশা করো কথায় কানে তুলে না।
ইশা জিদ করে সেখানেই বসে থাকে,তার ভাষ্য মতে কাল পরশু পরীক্ষা আছে আজই তাকে ফিরতে হবে।
নোহাও নাছর বান্দা।ইশার হাত ধরে টেনে নিচে নামায়।
-কোথায় পালাস তুই?
–আশ্চর্য পালাবো কেন?হাত ছাড় লাগছে।
-সবাইকে অন্ধকারে রেখে তুমি গোপনে ডুবে ডুবে পানি খাবা তা আমি হতে দেবো না!
-দেখ শাঁকচুন্নি আমার পেছনে লাগিস না ফল ভালো হবে না।
–থ্রেট দিস?চোরের মন পালায় পালায় না?
-কোনো প্রমান নেই তোর কাছে?
–আমি তো বলিই নি তুই কোনো ক্রাইম করেছিস তাহলে প্রমানের কথা আসলো কোথা থেকে?ঠাকুর ঘরে কে রে আমি তো কলা খাইনি!
ইশা চোখ মুখ কালো করে নেয়,
-দেখ নোহা তোর যা ভাবার ভাব। আমার তাতে কিছু যায় আসে না আমি তো আজই যাবো।কেউ আটকাতে পারবে না।
-ছি ইশা ধিক্কার জানায় তোকে!

-তুই আগে নিজেকে ধিক্কার জানা।নিজের ভাইয়ের মতো মানুষের সাথে ছি বলতেও লজ্জা করছে….

নোহার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।রাগে গজ গজ করতে থাকে।

দুই বোনের ঝগড়ার মাঝে ইমতিয়াজ সিকদার এন্ট্রি নেই।
ইশা বাবার কাছে আর্জি জানায় সে আজই চলে যাবে।কাল ইম্পোর্টেন্ট ক্লাস আছে।ইমতিয়াজ সিকদার তাকে যাওয়ার পার্মিশন দিয়ে দেয়।জিনাত সিকদার আর কিছু বলেন না।যার যা ইচ্ছে তাই করুক।আজকাল তার কথা কেই বা কানে তোলে….!!

নোহা অনেক চেয়েও ইশাকে আটকাতো পারে না।
____
গাড়িতে বসা ইশা।সে একই নাম্বারে বার বার ডায়াল করছে।কিন্তু অপর পাশ থেকে কোনো রেসপন্স নেই।তবুও ইশা বার বার কল করেই যাচ্ছে……….
“ইস যদি একবার গলাটা শুনতে পেতাম”
ফোনটা বুকে জড়িয়ে চোক বুজে আপন মনেই কথাটা বলে উঠে ইশা।বুকটা ধুক ধুক করছে তার।ইশা হাউ মাউ করে কান্না করে দেয়।

চলবে…….

[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here