#প্রতিদান
(13ও14)
পর্ব:13
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ
আচ্ছা আমরা দূরে কোথাও চলে যাব।(আসফি)
এখন চলো ডিনার করবে।দুপুর এতো কিছু খাওনি?(মুনতাহা)
মুনতাহা এত্তক্ষণ আমার বুকে মাথা রেখে কোলে বসে ছিল।আমার কিযে ভালো লেগেছে কি বলব। যখন ও উঠতে নিবে আমি ওকে ধরে বসিয়ে দিলাম।তারপর ওর গালের মধ্যে ছোট্ট একটা কিস করলাম। ও অবাক চোখে তাকালো এইবার আমি ওকে একটু জোড়েই আমার সাথে জড়িয়ে নিলাম যেই কিস করতে যাব অমনি ওর হাত দিয়ে আমার মুখটা চেপে ধরল। (আসফি)
খবরদার কিস করবানা।আমিতো ভুলেই গেছি তোমার সাথে আমি অভিমান করেছি।সব ঐ তিহান এর জন্য হলো।কই ভাবলাম তোমার সাথে অভিমান করে থাকব।ওর সেই সময়েই এটাক করতে হল।ওরে মন চাইতাছে বুড়িগনগার পচা পানিতে চুবাই বেটা ফাজিল। আর তুমি শোন লম্বু তালগাছ কোথাকার খবরদার আমার ধারে কাছেও ঘেসবানা।তাহলে তোমাকে মাইরা আলুর ভর্তা বানিয়ে ভাত দিয়ে খেয়ে ফেলব।এখন ছাড় আর খেতে চলো
তোমার চাচা বসে আছে।ঐ লোকটা আরেক বদ আসতে না আসতে সন্দেহ করে বসে আছে।(মুনতাহা)
মানে কি আমার বউ এর কাছে আমি যাবনা।এটা কিরকম কথা!আর এত্তক্ষণ ভালোবাসা নিয়ে এখন আসছ অভিমান দেখাইতে।এসব চলবেনা।আমার বউ আমিতো আদর করবোই। তুমি কে বলার?(আসফি)
আমি কিন্তু আবার পালাব বলে দিলাম। কোন আদর চলবেনা।এখন চল চুপচাপ বেশি ফাউ কথা মজা লাগেনা।
বলেই দাড়িয়ে গেলাম। হিহিহি কি মজা আকাশে বাতাসে জামাইটারে জ্বালাতন করতে তো সেই মজা। উফফ আরো ঢং করো আমার সাথে কথা না বলে অভিমান করে ছিলানা।এখন দেখবা এই মুনতাহা কি জিনিস। তারপর ওকে জোর পূর্বক নিচে নিয়ে আসলাম। চাচার সাথে কথা বলে সব সমাধান করে নিল।জিটি উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাবস্থা করল।রাত দশটার দিকে উনি চলে গেল। এইরে আমিতো ভুলেই গেছি আমার জামাকাপর আনতে।চেঞ্জ করে কি পরব।এই ছেলেটার জন্য হলো সব।এর সাথে রাগ আর আমার পাকনামির জন্য সব হলো।হোস্টেল থেকে অনেক বকা খাইতে হবে।কত্ত অনুরোধ করে রুম নিলাম ।এখন কিনা দুইদিন না যেতেই আবার চলে আসব।কি যে পেরা।রাতের খাবার খেয়ে আমার রুমে আসতে নিলাম হঠাৎই আসফি আমার হাত ধরে আমাদের রুমে নিয়ে যেতে শুরু করল। ওরে আল্লাহ আবার ওর রোমান্টিক অত্যাচার শুরু করল বলে।দূর আমার এখন খুব লজ্জা লাগছে।ওতো পাগল নাই এখন আমি তো ভুলেই গেছি।এখন কি করব। পাইছি!
এই টেনে নিয়ে আসলা কেন?আমি আমার রুমে যাব ঘুমাতে ছাড় আমাকে।(মুনতাহা)
তোমার রুমেই তো আনলাম।
মুনতাহার কোমর জড়িয়ে ওকে কাছে টেনে নিলাম। ও বারবার ছুটতে চাইছে।এইবার আমার হাত থেকে পালাবা কোথায়!অনেক জ্বালাতন করছ।ঐদিন কত্ত খারাপ কথা বলছ ।বউ হওয়া সত্ত্বেও তোমাকে কিস করেছিলাম বলে বলছিলা আমি টাকা দিয়ে কিনে আনছি তাই এমন করছি।এখন থেকে বুঝবা আসফি কি?
আচ্ছা আমার পুতুল বউ এর সাথে তো আমার স্বামীর স্ত্রী এর সম্পর্ক হয়েছে তাও এত্ত ভয় কেন পাচ্ছ বলতো?(আসফি)
ভয় পাওয়ার কি আছে।আমি বললাম তো আমি তোমার সাথে অভিমান করেছি।তাই আমার থেকে দূরে থাকবা আর _
এরপর আর বলতে পারিনি আসফি হঠাৎই আমাকে ওর সাথে মিশিয়ে নিল।পাগলের মত ভালোবাসার ছোয়া দিতে লাগল। পুরো মুখে কিস করতে লাগল। তারপর যখন আমি ওকে গভীর ভাবে আলিঙ্গন করতে যাব হঠাৎই ও আমাকে ছেড়ে চোখ টিপ দিয়ে বিছানায় গিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ল। আমি ভেবাচেকা খেয়ে দাড়িয়েই আছি।(মুনতাহা)
মুন বেবি লাইট অফ করে ঘুমাতে আস।আমার খুবই ঘুম পেয়েছে ঘুমাব। গুড নাইট। (আসফি)
মন চাইতাছে ওরে তুলে একটা আছাড় মারি খারুস পোলা।আবার আসিস তোর তখন খবর আছে বেটা ফাজিল।ও অন্য দিকে ঘুরে আছে।মেজাজ গরম আছে এখনি শাওয়ার নিতে হবে।মাথা গরম আছে। মাথা ঠান্ডা না করলে ওর কপালে দুঃখ আছে।আর এমনেই অনেক মার খাইছে এখন মারলে অককা তুলবে।শাওয়ার তো নিব কিন্ত পরে পড়ব কি।ও হ্যা আসফির টিশার্ট আর টাওজার নিয়া পড়ব।কিন্ত ও যেই লম্বা এর জামাকাপর পরলে মনে হবে দাদার জামা পরছি।আচ্ছা যাই হোক আমার মাথা ঠান্ডা করা জরুরি। তাই আলমারি খুলে গেঞ্জি আর টাওজার নিলাম তারপর শাওয়ার নিতে গেলাম। মেজাজ ঠান্ডা হতে টাইম লাগবে।প্রায় আধা ঘন্টার মত শাওয়ার নিলাম তারপর ওর টিশার্ট আর টাওজার পরলাম। টাওজার এর ভাজ দিতে দিতে পেট বড় হয়ে গেছে।এখন টিশার্ট এর উপর এমন ফুলছে মনে হচ্ছে আমি ছয় মাসের প্রেগন্যান্ট হব।বাবা কি অবস্হা। আমি বের হয়ে দেখি আসফি বসে আছে।আমি ওকে দেখেও না দেখার ভান করে বারান্দার মধ্যে জামাকাপর মেলে আসলাম। তারপর এসে চুল মুছতে লাগলাম। আয়নায় দেখি আসফি রাগ নিয়েই তাকিয়ে আছে কিন্ত কিছু বলছেনা।আমি কোনরকম চুল মুছে লাইট অফ করে দিলাম। তারপর ফোনের আলোতে বিছানা পর্যন্ত গেলাম। দেখি সে কোলে বালিশ নিয়ে বসে আছে।তাই এক প্রকার ছো মেরে বালিশ টা নিয়ে আমি শুয়ে পড়লাম। চুলের পানিতে পিট ভিজে গেছে।মন চাইছেনা চেঞ্জ করি বা ভালো মত চুল মুছি।আমার সাথে এমন করছনা।দেখ এখন আমি এমন ভিজে আর রাতের গোসলের কারণে জ্বর আসুক তোমাকে দিয়েই সেবা করাব ফাজিল বজ্জাত লোক।(মুনতাহা)
এত্ত রাতে শাওয়ার নিলা কেন?আর এমন ভিজে আছো কেন?চুল মুছোনি কেন?(আসফি)
খবরদার ধরবানা।আমার ঘুম পাইছে ঘুমাতে দেও।আর শাওয়ার নিলাম কেন?ভিজলাম কেন আমার শরীর আমি বুজব তুমি কেন এত্ত কথা বলছ।
বলেই ঘুরে শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম আসফি টাওয়াল দিয়ে চুল মুছে দিচ্ছে। তারপর আমাকে বারবার বলছে যেন জামা চেঞ্জ করে আসি।কিন্ত আমি না শুনে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।(মুনতাহা)
এই মেয়ে রাগ করে জ্বর বাধিয়েই ছাড়বে।অনেক বার বলেও ড্রেস চেঞ্জ করাতে পারলাম না।খুব জেদি।যাইহোক এখন ঘুমাচ্ছে মনে হয়।জদি জ্বর আসে ওর আমি বারোটা বাজায় ছাড়ব।আমি আস্তে করে ওকে পেছন থেকেই জড়িয়ে ধরলাম খুব ঘুম পাচ্ছে। ব্যাথার ঔষধ খাওয়ার কারণে।কখন ঘুমিয়েছি খেয়াল নেই।
ঘুম থেকে উঠে দেখি সকাল নয়টার কাছাকাছি।পাশে দেখি মুনতাহা নেই।তাড়াতাড়ি উঠে ওকে ডাকতে লাগলাম। ভাবলাম ওয়াশরুমে কিন্ত ডাকার পর আসে নাই দেখে ওয়াশরুম চেক করলাম দেখি ও নাই।তারপর বারান্দা তে ও দেখলাম ওকে পেলাম না।তাই রুম থেকে নিচে চলে আসলাম।
এই মরিয়ম তোমার ছোট্ট আপা কোথায়?(আসফি)
ছোট্ট আফায় হোস্টেল গেছে সকাল ছয়টার দিকে হের জিনিস পত্র আনার জন্য। (মরিয়ম)
এত্ত সকালে ও একলা গেল তুমি ওকে আটকালেনা কেন?(আসফি)
হেয় আমি আসার আগেই গেছে দাড়োয়ান কইল।(মরিয়ম)
এই মেয়েটার এত্ত সাহস কেন?ওর আজকে খবর আছে।আমাকে টেনশন না দিলে ওর চলেইনা।কোন হোস্টেল থাকে আমিতো জানিও না।যাব কি ভাবে?উফ আজকে আসুন ওর খবর আছে?(আসফি)
সকালে ঘুম থেকে উঠেই একটা মেসেজ পেলাম। দেখে মেজাজ বিগরে গেল পুরাই।এর শেষ না দেখে আমার শান্তি হচ্ছে না।আমি উঠে জামা চেঞ্জ করলাম এখন ও ভিজে আছে কিছুটা। এখন সকাল ছয়টার কাছাকাছি। এই সময় যাওয়া খুব বিপজ্জনক কিন্ত আমার যেতেই হবে অনেক হলো আর কত্ত। আসফির জানার বাইরে আরো কিছু জিনিস আছে যা জানলে ও পাগল এই হয়ে যাবে।কিন্ত এটা জানাতে চাইনা আমি।বেয়াদব গুলোর জন্য আমার একটা ব্যাবস্থা করতেই হবে।আমি আমার সব ফ্রেন্ড দের কল করে জানিয়ে দিলাম ওদের সাহায্য দরকার। ওরা জলদি আসবে কিন্ত আগে আমার যাওয়া উচিত। আমি রেডি হয়ে হোস্টেল গেলাম তারপর আবার হালকা ভেজা জামাকাপর চেঞ্জ করে আবার রেডি হলাম তারপর বেরিয়ে পড়লাম উত্তরার ঐদিকে।গিয়ে আমার ফ্রেন্ড দের কল করলাম ওরা পাচঁ মিনিট এই আসছে।তাই আমি আগে গেলাম। একটা হোটেল এর তিন তালাতে তিহান আমাকে ডেকেছে।সে এর মধ্যেই আমার মামাতো বোন মারিয়ার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে ছে।মারিয়াকে প্রেম ও ভুয়ো বিয়ের নাম করে গত একমাস যাবত সংসার সংসার খেলা খেলছে।ওর ভিডিও ফুটেজ সোশাল মিডিয়াতে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আমাকে আসতে বলছে।
কিরে তিহান তোর কয়টা লাগে।আমার উপর এত্ত আসক্ত হলে আবার এত্ত মেয়ের সাথে জড়িয়ে পরলি কেন?আর তোর কি মনে হয় ওর ভিডিও ছাড়বি সেই ভয় দেখালেই আমি তোর কথা শুনব।ভুলে যাস কেন তুই একজন পলিটিক্যাল লিডার।আচ্ছা তোর মাথায় কি ইয়াবা আর গাজা ছাড়া কিছু নাই।এখন এইটা বলিস না তুই ভিডিও এডিট করে তোর জায়গার মধ্যেই অন্য কাউকে বসিয়ে দিবি।(মুনতাহা)
হ্যা আমি এইটাই করব।তোর বোন কষ্ট পাবে সবার কাছে নিজের সম্মান হাড়িয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিবে তখন তুই কি করবি?(তিহান)
চল্লিশার বিরিয়ানি খেতে খুব মজা লাগে জানিস তিহান। কত্ত দিন খাইনা।তোর শশুর কে বলবি গরুর বিরিয়ানি রান্না করতে।খেতে সেই মজা।(মুনতাহা)
তোর কোন ভয় হচ্ছে না?(তিহান অবাক হয়ে )
তুই ভুলে কেন যাস আমার চোখের সামনে আমি চারটা খুন হতে দেখেছি,বড় একটা এক্সিডেনট এ আরেকজন এর মৃত্যু দেখেছি,আর একজনের জীবন নষ্ট হতে দেখেছি,একজনের রেপ হতে ও দেখেছি।আর তার উপর আমি ডাক্তার এমন কত্ত মানুষ চোখের সামনেই মারা যায় এতে ভয়ের কি আছে!
তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে (মুনতাহা)
মানে?এত্ত কিছু দেখেছিস কিভাবে তুই?(অবাক হয়ে তিহান)
আমার বাবার মৃত্যু হলো তার কপালে গুলি করে,মায়ের মৃত্যু হল তার প্রাক্তন এর হাতে গলা টিপে,সেই সৎ বাবা আর আমার হবু বুড়ো বরের মৃত্যু হলো অনেক গুলো গুলি খেয়ে, তুই বাসার কাজের মেয়েকে রেপ করলি আমার সামনে না হলে আমি দেখেছি,আর জীবন নষ্ট আমার বোন মারিয়ার হয়নি হয়েছে ইষানির। মারিয়ার মত ছেছড়া মেয়ে দুইদিন পর আবার একটা ধরে নিবে।কিন্ত মি আবির আহমেদ তিহান ওরফে ইষানির ফুফাতো ভাই ওরফে ইষানির বর্তমান হাজবেন্ড। তোর বউ এর না বেবি হবে তাও কেন তুই এখন ও ভাল হলিনা।(মুনতাহা)
আমি ইষানির হাজবেন্ড তুই জানলি কিভাবে?(তিহান)
আরে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত খালি মে মে এই করতে পারোস। আমার সব খবর রাখতে পারছিস আর এটা জানিস না আমি আর আসফি চট্টগ্রাম গেছিলাম। তুই যখন তোর বউ নিয়ে ঘুমাচ্ছিলি তখন আমি আর আসফি তোদের দেখেছিলাম। কিন্ত আসফি তোর দিকে ভাল মত নজর দেই নাই।আমি তোকে দেখেই আসফি কে ঐখান থেকে সরিয়ে আনি।আচ্ছা তুই যে এমন অমানুষের ন্যায় আচড়ণ করে চলাচল করছিস।তোর কি কোন অপরাধ বোধ কাজ করেনা।আর কয়েকদিন পর তোর বাচ্চা টা হবে এখন ও তুই মানুষ হলিনা।তুই জানিস আমি ইচ্ছে করলেই তোকে জেলে দিতে পারি আর সব প্রমাণ ও দিতে পারি।কিন্ত একমাত্র ইষানির জন্য আর বেবির জন্য তোকে এমন ছেড়ে রেখেছি।কালকে তুই আবার আসফির উপর হামলা করেছিলি।তোর ধারণা আছে আমি তোর কি করতে পারি।বাইরে তোর কোন লোক নেই কারণ তুই ওদের আনিস নাই।কিন্ত এটা ভুল করে ফেললি তুই।বাইরে আমার বন্ধুরা এসিড,লাঠি,চাকু,চাপাটি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।বুঝলি আমরা ডাক্তার প্রয়োজনে মাঝেমাঝে সুই এর জায়গায় চাকু তুলতে পারি।এখন দেখ কি করবি।মারিয়ার সাথে সব ঠিক কর ওকে বুঝিয়ে বল সব ভুলে যাবে কয়েকদিন পরেই।আর ইষানির সাথে সুখে শান্তিতে থাক।আমি আবার বলছি।তোর সব দিক গুলো আমি জানি তাও ইষানির কথা ভেবে তোর নামে জিটি করলেও উঠায় নিব।এখন ভেবে দেখ?(মুনতাহা)
তোর মনে হয় এইসব শুনে ভয় পাব।তোর দেখার বাইরেও কত্ত অপরাধ করছি করব।কিন্ত তোর উপর আমার আসক্তি যাবেনা।আমার তোকে চাই চাই।এর জন্য দরকার হয় আসফিকে মেরে ফেলব। (তিহান)
ওকে তুই আসফির মারার ব্যাবস্থা কর আর আমি ইষানির মারার ব্যাবস্থা করব।এমনেই প্রেগন্যান্ট এখন আমার ওকে মারতে সুবিধা এই হবে।
এটা বলতে দেড়ি তিহান আমার গলা চেপে ধরতে দেড়ি করে নাই ।এত্ত জোরে ধরছে চোখে লাল নীল সর্ষে ফুল দেখছি।না পেরে ওর জায়গা মতো লাথি মারতেই পরে গেল। আমি কয়েকটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সোফার উপরে বসলাম। তারপর ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ওর লাফালাফি দেখতে লাগলাম ।
কিরে তিহান লাগল বুঝি।আহারে কি কষ্ট কি কষ্ট। কিরে তোর বউ এর মৃত্যুর খবর শুনে এমন রেগে গেলি কেন?ভালোবেসে ফেলেছিস বুঝি?কিন্ত এত্ত দেরিতে কেন বলত?শুধু শুধু মারিয়ার সাথে জড়িয়ে পড়লি।আর আগের কত্ত অপরাধ বাদ এই দিলাম। এখন সোজা হয়ে বস কিছু কথা বলি।বুঝবি তারপর ভাববি আগেই ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত লাফাবিনা।আচ্ছা দেখ তুই হয়ত আমার আর আসফির লাইফের ভিলেন,এখন মারিয়ার লাইফের ও।আর আগের গুলো বাদ এই দিলাম। কিন্ত তুই আবির সত্ত্বা কিন্ত ইষানির ও ওর অনাগত বাচ্চার লাইফের হিরো।তোর কু কর্মের কথা ইষানির জানার কথা না তাইতো।আর এই জন্য ও তোকে ভালোবাসতে পেরেছে।তোর অনাগত সন্তান এর জন্য অনেক্ষা করতে পারছে।আমি চাইনা তোদের বেবিটা সমাজে মুনতাহার মত বেচে থাকুক।আমি চাই ও আর দশটা বাচ্চার মত এই দুনিয়ার মধ্যে বেঁচে থাকুক।তুই চট্টগ্রাম চলে যা ঢাকার মধ্যে আর আসিসনা।ইষানির জন্য হলেও তোকে সুস্থ জীবনে ফিরতে হবে।আর তোর আমার প্রতি আসক্তি থাকলে ভালোবাসা থাকলে ইষানির মৃত্যুর কথা শুনে আমাকে মারতে আসতিনা।বরং আমার কথায় রাজী হয়ে যেতি।এখন আমি চলে যাচ্ছি আমার ফ্রেন্ড রা বাইরে আর আসফি বাড়িতে অপেক্ষা করছে।(মুনতাহা)
পর্ব:14
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ
বাড়িতে ঢুকতেই আসফির মুখোমুখি হলাম। ও যেইভাবে তাকিয়ে আছে মনে হয় কাচা চাবায় খাবে।সকাল ছয়টায় গিয়ে আসলাম বারোটা বাজে।আর উত্তরা থেকে আসার সময় জ্যাম আর হোস্টেল থেকে জিনিস আনতেই এত্ত দেরি।পুরো এক মাসের টাকা দিতে হলো।কত্ত কষ্টের ব্যাপার। দুইদিন থাকছি কিন্ত আরো আঠাশ দিনের টাকা বেশি নিছে।ঐ টাকা দিয়ে কয়েকদিন টিফিন খাইতে পাড়তাম।যাইহোক ব্যাগ রেখে সোফায় আসফির পাশে বসে পড়লাম।
মরিয়ম বোনুরে আমার ক্ষুদা লাগছে ব্রেকফাস্ট দেও।নাইলে আর কিছুক্ষণ এর মধ্যেই অককা তুলব। (মুনতাহা)
আচ্ছা ছোট আফা দিতাছি।(মরিয়ম)
তুমি ব্রেকফাস্ট করছ?(মুনতাহা)
সেইটা আপনার না জানলেও চলবে ।আমার শরীর আমি খাই না খাই তাতে আপনার এত্ত টেনশন না করলেও চলবে?(আসফি)
ঐ মরিয়ম শুনে যাও তো!(মুনতাহা)
হ্যা ছোট আফা বলেন।(মরিয়ম)
তোর ছোট সাহেব কি সিরির থেকে পড়ে গেছে বা মাথায় কোথাও ব্যাথা পাইছে নাকি?(মুনতাহা)
নাতো আফা আমি তো দেখি নাই।(মরিয়ম)
না আমাকে আবার ভুলে গেছে লাগছে।নাইলে আমাকে আপনি আপনি করে বলছে কেন?(মুনতাহা)
মুন মাথা গরম করাবা না ।না বলে সারাদিন বাইরে ছিলা এখন আইসা ফাজলামো করতেছ?(আসফি)
এই লম্বু চিৎকার করবানা।ক্ষুদা লাগছে এমনেই কই আসছি একটু আদর করবে ভাল মন্দ জিজ্ঞেস করবে তানা খালি ঢং আর চিৎকার করতে পারো।সরো তো আমি ব্রেকফাস্ট করব।কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে গলা ব্যাথার কারনে।(মুনতাহা)
আমি রাতে বারবার বললাম ড্রেস চেঞ্জ করো জ্বর ঠান্ডা লাগবে। না সে রাগ দেখায় ঘুমিয়ে পড়ল।এখন দেখছ ঠান্ডার কারনে গলা বসে ব্যাথা করছে।(আসফি)
হুম এখন খেতে দেও।একটা ব্যাথার ঔষধ খেলেই ব্যাথা চলে যাবে।
এখন জদি বলি এই ব্যাথা ঠান্ডার না।গলাতে টিপে ধরার কারণে হয়েছে তাহলে আজকে ঝড়, তুফান ,আইলা হাইয়া হুয়া হুয়া হয়ে যাবে।ভাগ্যিস গলাতে ওরনা পেচানো নাইলে চার আঙ্গুল এর দাগ দেখতে পেত।বেটা তিহানের বাচ্চা খবিশটা এত্ত মানুষের ক্ষতি করিস তখন মানুষের কষ্ট হয়না।বউ এর মৃত্যুর কথা সুনেই আমাকে আজকে মারতে গেছোস।পড়েতো সব আমার কথা শুনলি হুদাই কাহিনি করলি।ফাউল মানুষ জন।হঠাৎই বাইরে শোরগোল শুনতে পেলাম। খাবার খাওয়া শেষ তাই উঠে দেখতে গেলাম। এই দুইজন আবার কেন আসল।দূর ছাই একটা ঝামেলা যায় আরেকটার আগমন হয়।
কি সমস্যা এখানে আসতে বারণ করেছিলাম না!তাও এইখানে আসার জন্য এমন চিৎকার চেঁচামেচি করার কারণ কি?(মুনতাহা )
এই মাসের টাকা নিতে আসছি।তোর দাদা শশুর কে ডেকে পাঠা।(মামা)
মরিয়ম মামাকে কবরের সামনে নিয়ে কবরের ভিতর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে আস।(মুনতাহা)
মুন কি আবল তাবল কথা বলছ?তোমার মামা হয়তো!(আসফি)
ও এই জন্য ইতোমধ্যেই মেয়ের চোপা বেড়েছে।দেখছ বাবা ঘরে পাগল রেখে বাইরের পুরুষ ঘরে তুলছে।আর তাই তোমাকে চলে যেতে বলছে।(মারিয়া)
মেজাজ গেল গরম হয়ে দিলাম মারিয়ার গালে একটা থাপ্পর ও হঠাৎই এমন হওয়ার জন্য পড়ে গেল।
একদম জিহ্বা টেনে ছিড়ে ফেলব।আমি তোর মত তিহান এর রক্ষিতা না।আমি আসফির বিবাহিত স্ত্রী। তোর মত বিয়ের আগেই থাক আর কিছু বলতে চাই না।আর এই যে নানার ছেলে ঝাড়ুর বাড়ি খেলেই শান্তি হবে নাকি?ফারদার আমার আর আসফির লাইফের ভেতর এ ইন্টারফেয়ার করতে আসবা আর টাকা চাইতে আসবা ভুলে যাব তুমি নানার ছেলে যে।এখন গেট ঐদিকে আছে জলদি বের হয়ে যাও নাহলে এই মরিয়ম ঝাড়ুটা আনতো।(চিৎকার করে মুনতাহা)
ওর মামা আর বোন প্রায় দৌড়ে পালালো।কিন্ত ওর বোন এর আবার তিহান এর সাথে সম্পর্ক হয় কিভাব?মুনতাহাকে এনে সোফায় বসলাম। মরিয়ম পানি এনে ওকে খেয়ে শান্ত হতে বলল কিন্ত ও হঠাৎই নিজের মাথায় পুরো গ্লাসের পানি ঢেলে দিল। আমি তো পুরাই টাসকি।হঠাৎই ও এমন কথা কাজ করল আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। (আসফি)
*****************(চলবে)********************
বিঃদ্রঃ আজকে বড় পেয়ে খুশিতো?গল্প কেমন লাগল কমেন্ট করে যানাবা প্লিজ?