একজন বদ্ধ পাগলের সাথে মামা যখন আমার বিয়ের কথা বলে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।আজ আমার বাবা মা বেঁচে নেই বলে এমন পাগলের সাথে বিয়ের কথা বলতে পাড়ল মামা।যার সাথে বিয়ের কথা বলছে উনি কোটিপতি বাবার একমাত্র ছেলে।ফেমেলির মধ্যেই উনিই বেঁচে আছেন। বাকি সবাই কার এক্সসিডেনট এ দুই বছর আগে মারা গেছেন। ভাগ্য ক্রমে উনি বেঁচে গেলেও পাগল হয়ে গেছে।ওনার আছে একজন দাদা আর আপন বলতে কেউ নেই।দাদার বয়স হচ্ছে বাচঁবে কত্তদিন তার ঠিক নেই ।আর সেইজন্য সেই লোক কে বিয়ে করাতে চান।আর আমি অনাথ বলে মামার বাড়িতে থাকি বলে মামা চান সেই পাগল কে আমার গলার মধ্যে ঝুলাতে।তাও বিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমাকে তাদের ঘার থেকে একজন পাগলের কাছে বেচে দিবেন।মারিয়ার মুখ থেকে একথা সুনে হতভম্ব হয়ে বসে আছি এক ঘন্টা যাবত। আমাকে অনেক বার বলার পর আমি সেই মানুষটির বাসায় যেতে রাজী হোই।কারণ তাকে শিকল দিয়ে বেধে রাখতে হয়।আমাকে নিয়ে ঐ বাড়িতে বিয়ে করিয়ে রেখে আসবেন মামা মামিরা।আমার আর কোন উপায় নেই এই বিয়ে টা করতে মামারা জোর করছেন কিন্ত আমি বিয়ে করব না একবার এইখান থেকে বের হোই আমি তারপর পালাব।যেতে যেতে আমার পরিচয় টা তোমাদের দিয়ে নেই।
আমার নাম নুসরাত জাহান মুনতাহা।সবাই মুনতাহা বলেই ডাকে।এইবার মেডিক্যাল এ পরি সেকেন্ড ইয়ার ।আরো দশ বছর আগে বাবাকে হারাই।আর পাচঁ বছর আগে মাকে।তবে আমার বাবাকে খুন করা হয়েছিল। আর খুন করছিল আমার মা ও তার প্রাক্তন প্রেমিক। আমার চোখের সামনে গুলি করে মেরেছিল আমার বাবাকে।বাবার দোষ ছিল সে একজন সৎ পুলিশ অফিসার ছিলেন। মা প্রেম করা সত্ত্বেও নানা মাকে আমার বাবার সাথে বিয়ে দেন।তারপর সব ঠিক এই ছিল। কিন্ত আমার মায়ের প্রাক্তন প্রেমিক যখন রাজনীতি তে জড়িয়ে বড়লোক হতে শুরু করে ।আর সেই জায়গায় বাবা সৎ উপার্জন করে ও মধ্যবিত্ত এই ছিল তখন আমার মায়ের কাছে বাবাকে অসহ্য লাগতে শুরু করে।আমার তখন দশ বছর বয়স একদিন রাতে আমার মায়ের প্রাক্তন প্রেমিক এসে আমার বাবাকে আমারই সামনে খুন করে।মা তখন খুশি মনে তার সাথে চলে যান।আমাকেও সাথে নেন।যাই হোক তার একমাত্র মেয়ে ছিলাম তো।তারপর আমার ঘৃণা লাগলেও কিছুই করার ছিল না।কিন্ত আমার পনের বছর পরতেই আমার সৎ বাবার বন্ধুর আমার উপর নজর পরে।সে আমাকে বিয়ে করতে চান।সেই লোক ছিল 35বছরের আর অলরেডি তিনটা বিয়ে ও করেছিল।কিন্ত আমার সৎ বাবার তাতে কিছুই আসে যায়না।সে আমাকে ঐ লোকের সাথে বিয়ে দিতে চাইলে আমার মা বাধা দিতে চান।আর আমার সৎ বাবা সেই জন্য আমার মাকেও আমার সামনে খুন করেন।আর আমাকে বিয়ে দিতে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার চোখের সামনেই আমার সৎ বাবা ও যে আমাকে বিয়ে করতে চাইছিল তাকে কারা যেন খুন করে দেন।তারপর আমার সাথে আরো খারাপ কিছুই হত যদিনা আমাকে একজন এসে বাচাতে। সেইখান থেকে কোন রকম বেঁচে আমি মামার বাড়ি চলে আসি।আর এখানেই থাকতে শুরু করি।সব ঠিক এই ছিল। নানা আমার পড়ার খরচ চালাতো।কিন্ত গত এক সপ্তাহ আগে নানার মৃত্যু হতে দেরি আমার মামার আসল রূপ বের হতে দেরি হলনা।
তোমাদের সাথে কথা বলতে বলতে একটা বিশাল বাড়ির সামনে পৌঁছে গেলাম। এত্ত বড় বাড়ি মুভিতে অনেক দেখেছি।দুপলেক্স সিস্টেম এর বাড়ির চার পাশে গাছ আর গাছ।ফুলের ফলের গাছ। সব গাছ এই শুকিয়ে আছে।একটু পানির জন্য হাহাকার করছে।কত্তদিন যত্ন ছাড়া আছে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। আমার জীবনের মত বিষাদ এ ভরে আছে।তবে দুরের একটা জবা গাছে ফুল ফুটেছে।কি যে সুন্দর লাগছে লাল জবা দিয়ে গাছের নিচে বিছিয়ে আছে।পালানোর সময় কয়েকটা নিয়ে যাব।(মুনতাহা)
এই মুনতাহা এমন দাড়িয়ে আছিস কেন ভেতরে চল।(ঝাড়ি দিয়ে মামি)
আসছি মামি।(মাথা নিচু করে মুনতাহা)
বাড়ির ভেতর যেতেই একজন বৃদ্ধ লোক লাঠি হাতে এগিয়ে আসল।মুখে মুচকি হেসে আমাদের ভেতরে নিয়ে গেল।
আপনাদের আসতে কষ্ট হয়নি তো?(বৃদ্ধ লোকটি)
না এত্ত বড় গাড়ি করে আসতে কষ্ট কিসের। (খুশিতে মামা)
বসুন আপনারা ।তা মুনতাহা তোমার আমার নাতীকে বিয়ে করতে সমস্যা নেই তো?(গম্ভীর ভাবে বৃদ্ধ লোকটি)
ওর আবার কিসের সমস্যা থাকবে।রাজী বলেইতো আমাদের সাথে আসল।আপনি বরং কাজি ডাকেন বিয়ের ব্যাবস্থা করেন।(মামা উৎসাহিত কন্ঠে)
তাও ওর থেকে আমি শুনতে চাই।তা বল মুনতাহা তোমার আসফিকে বিয়ে করতে কোন সমস্যা নেইতো?(বৃদ্ধ লোকটি)
আমি একবার ওনাকে দেখতে চাই।(মুনতাহা মাথা উচু করে)
একবার দেখতে যেতে দিন ঐখান থেকেই আমি ফুরুৎ হয়ে যাব।এই মুনতাহার জন্য কলেজের ছেলেদের লাইন লেগে থাকে আর আমি কিনা বিয়ে করব এক পাগল কে জীবনেও না।(মনে মনে মুনতাহা)
হ্যা চল তবে প্রথমেই বেশি সামনে যেওনা মারতে পারে।আমি ছাড়া কেউ ওর সামনে গেলে তাকে মারতে শুরু করে।আগে সময় নেও তারপর নাহয় ওর কাছে যেও।এখন চল দূর থেকে দেখিয়ে আনি।(বলেই হাটা দিলাম বৃদ্ধ লোকটি)
তাহলে বিয়ে করানোর কি দরকার। পাগলের সাথে থাকতে থাকতে এই বুইড়া ও পাগল হোইছে।যতো সব ফালতু মানুষ।টাকা আছে বলে যা ইচ্ছা তাই করবে।এসব ভাবতে ভাবতে উপরের একটা রুমের সামনে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি একটা জঙ্গল থুক্কু বড় চুল দাড়ি ওয়ালা মানুষ বসে আছে।পড়নে কালো গেঞ্জি আর কালো পাজামা।পা দুইটা শিকল দিয়ে বাধা।চেহারাটা চুলের কারণে তেমন দেখা যাচ্ছে না।তবে আমার খুব কৌতূহল হচ্ছে ওনাকে দেখার জন্য। বৃদ্ধ লোকটি আমাকে বলে গেল যাতে ওর সামনে না যাই তারপর নিচে চলে গেল কাজী ডাকবে তাই।এইতো সুযোগ পালানোর। কিন্ত কেন জানিনা মন চাইছে লোকটাকে দেখি।তাই মনের কথা রক্ষার্থে আমি রুমে প্রবেশ করলাম।হঠাৎই দেয়ালে টানানো ছবির দিকে তাকিয়ে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। এই ছবি এখানে কেন?তাহলে কি এই আসফি ঐ আসফি!আমি কোন কিছু না ভেবেই লোকটার সামনে গিয়ে ওর মাথাটা আমার দিকে করে চুল সরিয়ে অবাক চোখে তাকিয়েই আছি।কিন্ত হঠাৎই ও আমার হাত কামড়ে ধরল।আমি চিৎকার করতে গিয়েও করলাম না ।এতে ও ভয় পাবে।ও কামড়ে আমার হাতের মাংস আলগা করে দেওয়ার জোগান।কিন্ত আমি দাঁতে দাঁত চেপে ওর মাথাকে সরানোর চেষ্টা করছি।আর না পেরে ওকে জোড়ে একটা ঝাড়ি মারলাম।
আসফি ছাড় নাহলে এখনি একটা থাপ্পর মারব। আমি ছাড়তে বলছি কিন্ত?(চিৎকার করে মুনতাহা)
ঝাড়ি মারতে দেড়ি ও ভয়ে সরে গেল সাথেসাথেই আর ছলছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
একটু পর তোমার সাথে আমার বিয়ে হবে।বিয়ের আগেই বউকে কামড় দিলা।দেখ রক্ত বের হচ্ছে আমার কষ্ট হচ্ছে দেখছ!এটা কি ঠিক করছো বলো তুমি?(মুনতাহা করুন সুরে)
আমার সামনে আসছো কেন?আমার সামনে থেকে যাও ।তুমি পচা আমাকে বকা দিছো তুমি।(কান্না করে আসফি)
ও আমি বকছি তাই আমি পচা আর তুমি যে আমাকে কামর দিলা এই দেখ রক্ত বের হচ্ছে এখন আমি জদি বলি তুমিও পচা তাহলে ভাল লাগবে?(মুনতাহা আসফির পাশে বসে)
যাও এইখান থেকে বের হোও আমার ঘর থেকে।(মুনতাহাকে ধাক্কা মেরে আসফি)
ধাক্কার কারনে নিচে পরে গেলাম খাট থেকে।এমনেই কামরের দাগ এ ব্যাথা তার উপর ধাক্কা দেওয়ার কারনে পরে হাতে মচোর লেগে গেল। আমি কান্না সিক্ত নয়নে আসফির দিকে তাকালাম। এর সাথে বিয়ের কথা ভাবতেই আমার গা শিহরিত হচ্ছে।বিয়ের আগেই কামর ও ধাক্কা খাইলাম। বিয়ের পর এক রুমে থাকা এবং ওকে দেখে রাখতে কত্ত যে অত্যাচার সহ্য করতে হবে আল্লাহ মালুম। কিন্ত তাও আমি ওকে বিয়ে করব।আমার প্রতি ওর উপকারের #প্রতিদান দিব আমি।
আমি উঠে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বের হয়ে গেলাম তারপর বিয়ের ব্যাবস্থা করতে বললাম। আমার জন্য বিয়ের লাল একটা কাটান শাড়ি আনা হয়েছে। শাড়ি পরে কোন রকম লিপস্টিক আর চোখে কাজল দিয়ে রেডি হয়ে নিলাম। তারপর কাজী বিয়ে পড়ালেন। কিন্ত আসফিকে কবুল বলাতে খুব কষ্ট হয়েছে। আসফির দাদা অনেক কষ্টে তিন কবুল বলাতে সক্ষম হয়েছেন।তারপর উনি আসফির হাত ধরে সাইন ও করিয়েছেন।কাজী সাহেব আসফির সামনে যায়নি ভয়ে দুরে দাড়িয়ে ছিল।
বিয়ের কিছুক্ষণ পর মামা মামি টাকা নিয়ে চলে গেল। আমার থেকে বিদায় নেওয়ার প্রয়োজন ও বোধ করলেন না।আমি শাড়ি পাল্টে আবার থ্রিপিস পরে নিলাম। এখন রাত দশটা বাজে।আসফির খাওয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে।ওর দেখাশোনা করেন দাদা একাই।কারণ উনি ছাড়া কেউ ওর সামনে যেতে পারেনা।কাজের লোক গুলো রান্না করে ঘর গুছিয়ে চলে যায়।তাও ওর রুম ঘুছাতে কেউ যায়না।কারণ ও ওদের উপর ও আক্রমণ করে বসে।খাবার নিয়ে আমি ওর রুমে গিয়ে বসলাম। দাদা ওকে বুঝানোর চেষ্টা করছে যাতে আমাকে আর না মারে।আর এখন থেকে আমি ওর সাথেই থাকব। কিন্ত ও অনেক চিৎকার করছে।বারবার আমাকে বের হতে বলছে।আর ওর দাদাকে থাকতে বলছে।মেজাজ গেল গরম হয়ে। বিয়ে যখন করছি তোর পাগলামি ছুটিয়ে ছাড়ব।
দাদা আপনি বরং গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন ওকে আমি দেখছি।এটা বলতে দেরি আসফির চিৎকার দিতে দেরী হয়নি।(মুনতাহা)
এই মেয়ে তুই ঘর থেকে বের হো ।নাহলে আবার কামর দিব।দাদা আমার সাথে থাকবে আর তুই বের হবিযা এখান থেকে।(আসফি চিৎকার করে)
ঠিক আছে আমি যাচ্ছি দাদা আপনি এসে গেট বন্ধ করে যান।আমার ইশারা উনি বুঝতে পারলেন।(মুনতাহা)
আমি গেট বন্ধ করে এখনি আসব।তুমি হাতটা ছাড়।(দাদা আসফির উদ্দেশ্য)
না ও এমনেই যাবে গেট লাগানোর দরকার নেই(আসফি দাদার হাত চেপে ধরে)
গেট না লাগালে ও রাতে আবার আসবে তখন কি করবা?(দাদা )
আচ্ছা ওরে বের করে গেট লাগিয়ে আস।(আসফি হাত ছেড়ে)
আচ্ছা। (দাদা)
গেট পর্যন্ত যেতেই দাদা আমার মাথায় হাত রেখে বলল আসফিকে দেখে রেখ।জ্বালাতন করলে দূরে বসে থেক নাহলে আবার কামর দিবে নাহলে মারবে।আসি আমি পাশের রুমে থাকব কিছুর দরকার হলে ডাক দিও বলেই বেরিয়ে গেল আর আমি গেট বন্ধ করে দিলাম। আসফি সাথেসাথেই চিৎকার করতে লাগল। আমার খুবই ভয় লাগছে।কি যে করি।বরের হাতে বিয়ের প্রথম দিন এত্ত অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। কিন্ত ওর সেন্স নেই বলেই এমন করছে।নাহলে ওর মত ভাল মানুষ এই দুনিয়ার মধ্যে কম এই আছে।ও বালিশ গুলো আমার দিকে ফিকে মারছে আর চিৎকার করছে ।আমার ভয়ে কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে।আমি অনেক ভয় নিয়ে ওর সামনে গিয়ে বসলাম। ও সাথে সাথেই আমাকে ওর সাথে চেপে ধরল আর কামর দিতেই যাবে।
আসফি প্লিজ কামর দিওনা আমি ব্যাথা পাই অনেক। আমার কষ্ট হয় দেখ তখন কামর দিছো হাত ফুলে গেছে।দেখছো।এখন কামর দিলে আমি মরেই যাব।ও কি ভেবে যেন আমাকে ছেড়ে দিল।এইতো ইমোশনাল ব্লাক মেইল কাজে লাগছে।কারো মরে যাওয়ার কথা ও সহ্য করতে পারেনা দাদা বলছে।ও আমাকে ছেড়ে ঘুরে বসল।আমি খাবার এনে ওর সামনে বসলাম।
আসফি দেখ তোমার ফেভারিট পোলাও আর গরুর মাংস আনছি আসো আমি খাইয়ে দেই।কি হল রাগ করছ?দেখ আমার অনেক ক্ষুদা লেগেছে।আমি আর তুমি একসাথে খাই আসো।তারপর ও চুপচাপ খেয়ে নিল সাথে আমিও খেয়ে নিলাম। খাওয়ার পর হাত ধুয়ে এসে দেখি ও বিছানা ভিজিয়ে বসে আসে।এইরে এত্ত বড় ছেলে বিছানার মধ্যে ইয়ে করে।আল্লাহ মাবুদ সহায় হোও।
এটা কি করছ তুমি?(আসফির সামনে এসে মুনতাহা)
আমার দাদাকে ডাকো ।(মাথা নিচু করে আসফি)
কেন?(মুনতাহা)
আমার দাদা আমাকে পরিষ্কার করে দিবে ।(আসফি)
তুমি এত্ত বড় ছেলে হয়েও বলতে পারোনা।জানো তোমর বয়স কত 30বছর।আর তুমি বিছানার মধ্যে হিস করো।আবার বল দাদাকে ডাকতে।তুমি ওয়াশরুম এ যেতে পারোনা।(কপট রাগ নিয়ে মুনতাহা)
ভ্যা ভ্যা ভ্যা ভ্যা (কান্না করে আসফি)
কান্না করছ কেন?আরে থামতো।কি হয়েছে কান্না করছ কেন?(মুনতাহা)
আমার পায়ে শিকল দেখনা।আর আমি ছোট বাবুনা তাই বিছানার মধ্যেই হিসু করি।দাদা আমাকে এই নিয়ে বকেনা তুমি বকছ কেন?তুমি পচা খুব পচা।(কান্না করে আসফি)
তুমি বাবু ওরে আল্লাহ ছেলে বলে কি ঠিক বয়সে বিয়ে হলে এখন তোমার একটা বড় বাবু থাকত।
দূর মুনতাহা তুই ও পাগল হলি ভুলে যাচ্ছিস কেন ও একজন মানসিক রুগি।(মাথায় হাত দিয়ে)
আচ্ছা চল তোমাকে ড্রেস চেঞ্জ করায় দেই।(আসফির হাত ধরে মুনতাহা)
না আমার লজ্জা করে।তুমি মেয়ে মানুষ না আমার সব দেখে ফেলবা তুমি।তুমি তার থেকে ভালো আমার দাদাকে ডাকো।(আসফি হাত ছাড়িয়ে)
উফ জ্বালারে।চুপচাপ নেমে দাড়াও।
ওর পায়ের শিকল খুলে দিলাম তারপর ওকে দাড় করিয়ে দিলাম। ও অবাক চোখে তাকিয়েই আছে।আমি চাদর উঠিয়ে নিলাম দেখি নিচে ওয়াল কেলাথ বিছানো। আমি ওকে টেনে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলাম।
এখানে দাড়াও আমি জামা নিয়ে আসছি।এখন থেকে আমি সব করব তোমার। কারণ আমি তোমার বউ বুঝছ।
চাদরটা ছোট বালতি তে রেখে ওকে দার করিয়ে আলমারির থেকে গেঞ্জি আর পাজামা নিয়ে ওর সামনে গেলাম। তারপর ওর উপর পানি ডালতেই ও লাফিয়ে উঠল।
কি হয়েছে দাড়াও চুপ করে।তারপর পানি দিয়ে ওকে গোসল করিয়ে দিলাম। ওর গেঞ্জি খুলতে যাব চিৎকার করে উঠল।(মুনতাহা)
সরো আমাকে দেখবা না সরো।(আসফি দূরে সরে)
তাহলে তুমি চেঞ্জ করো।আমি জাস্ট গেঞ্জি খুলে দিব তারপর তুমি নিজে পাজামা আর গেঞ্জি পরে আসবে।(মুনতাহা)
হুম(আসফি)
আমি ওর গেঞ্জি খুলে ওয়াশরুমের গেটে এসে দাঁড়ালাম। ও সুন্দর মতই জামা পাজামা পরে বের হল।
এইতো গুড বয়।এখন তুমি এই চেয়ারে বস আমি চাদর বিছিয়ে দেই।চাদর কোথায় আছে?(মুনতাহা)
ঐ আলমারির মধ্যে আছে।(আসফি )
আচ্ছা।
তারপর আমি চাদর বিছিয়ে ওকে খাটে বসিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ঐ চাদর ধুয়ে বারান্দার মধ্যে মেলে আসলাম।
দেখ আসফি তোমার শিকল খুলে দিছি।এখন থেকে হিসু আসলে ওয়াশরুমে যাবা বিছানার মধ্যে হিস করবানা ঠিক আছে।(মুচকি হেসে মুনতাহা)
হুম।আচ্ছা তুমি আমার সাথে থাকবে কেন?তুমি আমার কি হোও?(আসফি)
আমি তোমার বিয়ে করা বউ বুঝছ। আমার নাম নুসরাত জাহান মুনতাহা ।আমাকে তুমি মুনতাহা বলেই ডাকবে।এখন চল ঘুমাব। (মুনতাহা)
তুমি দেখতে না আমার পুতুল এর মত। আমি তোমাকে পুতুল বউ বলে ডাকব?(আসফি)
আচ্ছা ডেক।এখন ঘুমিয়ে পড়তো গুড বয়ের মত।ও খাটে সুয়ে পড়ল কোল বালিশ জড়িয়ে। আমিও এক সাইট দিয়ে সুয়ে পড়লাম। আর ভাবতে লাগলাম এই বাচ্চা সুলভ মানসিক রোগিটা আমার হাজবেন্ড। যে কিনা বউ, ভালোবাসার সম্পর্কে কিছুই বুঝেনা।আমি অকে বিয়ে করেছি প্রতিদান হিসেবে।আমার জীবন ও সম্মান বাঁচানোর প্রতিদান জীবনের সুখ বিসর্জন দিয়েই দিব।(মুনতাহা)
#প্রতিদান
পর্ব:1
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ
*******************(চলবে)******************
গল্প কেমন লাগল কমেন্ট করে জানাবেন।আর এটা সমাজের কিছু বাস্তব দিক ভালো খারাপ, ভালোবাসার একটি সুন্দর দিক নিয়েই লেখার চেষ্টা করব।যদি ভাল না লাগে জানাবেন। ধন্যবাদ।