পতিতা পল্লী পর্ব ১০

0
1062

পতিতা পল্লী
১০ম পর্ব
ক্যালেশনঃ গ্রুপ

মাবিহা বলল
—হ্যালো অরণ্য আমাকে মাফ করে দাও।আমাকে আর কষ্ট দিও না।আমি আমার ভুলটা বুঝতে পেরেছি।আমাকে আর যন্ত্রণা দিও না।তোমার সাথে এসব করা আমার ঠিক হয় নি।সেদিন আমি আকাশের ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।বুঝতে পারি নি কি করব।না বুঝে অন্যায় করে ফেলেছি।তুমি আমাকে মাফ করে দাও অরণ্য।আমাকে আর আাঘাত কর না।আমাকে তোমার জীবনে ফিরিয়ে নাও।আমি আর এমন করব না।শেষ বাবের মত আমাকে একটা সুযোগ দাও।

—মাবিহা কতবার বলেছি তোমাকে যে, আমাকে আর কল দিবে না।আমাকে আর কল দিয়ে বিরক্ত করবে না।তুমি কল দিলে আমার বিরক্ত লাগে।পৃথিবীতে কাউকে যদি ঘৃনা করি সেটা তোমাকে।আর কতবার তোমাকে এ কথা বলতে হবে।

—অরণ্য আমি জানি তুমি আমার উপর রেগে আছ।আমি জানি তুমি আমাকে এখনও ভালোবাস।প্লিজ অরণ্য আমাকে ফিরিয়ে দিও না।আমি আমার ভুলটা বুঝতে পেরেছি।

—আমি তোমাকে ভালোবাসি না মাবিহা।আর কতবার একথাটা তোমাকে বলতে হবে?মাবিহা প্লিজ আমাকে বিরক্ত কর না।আমার একদম ভালো লাগছে না তোমার সাথে কথা বলতে।তুমি প্লিজ আমাকে আর কল দিও না।

—প্লিজ অরণ্য এরকম কর না।আচ্ছা ইদানীং তোমাকে একটা মেয়ের সাথে প্রায়ই ঘুরতে দেখা যায় মেয়েটা কে?

—ওহ আমার ব্যাপারে ইনফরমেশন নেওয়াও শেষ তোমার।মেয়েটা কে জেনে তোমার কি হবে?

—প্লিজ বল মেয়েটা তেমার কি হয়?

—মেয়েটা আমার বউ হয়।

—অরণ্য তুমি এ মেয়েকে বিয়ে করেছ?

—হ্যা করেছি।কেন কোন সমস্যা?

—তুমি কি জান এ মেয়ের পরিচয় এ মেয়ে কে?

—ওহ এ মেয়ের পরিচয় নেওয়াও শেষ।হ্যা জানি এ মেয়ে কে।জেনেই বিয়ে করেছি।

—তুমি জেনে শোনে এমন একটা মেয়েকে বিয়ে করেছ।

—হ্যা করেছি।মেয়েটা আর যাই হোক তোমার মত ছলনাময়ী না।তোমার মত এত নিকৃষ্ট না।তোমার মত প্রতারক না।

—অরণ্য তুমি আমাকে এভাবে বলতে পারলে।ঐ মেয়েটার সাথে আমার তুলনা করতে পারলে।

—হ্যা পারলাম।প্লিজ মাবিহা।আমি এখন বিবাহিত।আমার বউ জানলে খুব কষ্ট পাবে।তুমি প্লিজ আর কল দিও না।আমাদের দাম্পত্য জীবনে কাটা হয়ে দাঁড়িও না।

—অরণ্য প্লিজ আমার কথাটা শোন।

আর কোন কথা শোনার নেই এই বলে অরণ্য মাবিহার ফোন কেটে দিল।আর এদিকে ডালিয়া বুঝতে পারল মাবিহা কল দিয়েছিল।ডালিয়া অরণ্যকে জিজ্ঞেস করল

—মাবিহা কল দিয়েছিল কেন?

—আমার কাছে আবার ফিরে আসতে চায় এজন্য।

—তাহলে আকাশের সাথে মাবিহার কি হয়েছে?

—আাকাশের সাথে মাবিহার ডিভোর্স হয়েছে ২ বছর যাবৎ।এরপর অনেক বার কল দিয়েছে আমার কাছে ফিরে আসতে চেয়েছে কিন্তু আমি তাকে গ্রহণ করে নি।

—আপনি তো মাবিহাকে ভালোবাসেন।মাবিহা যেহুত আসতে চাচ্ছে তাহলে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন।

—নাহ এটা আর সম্ভব না।আমি মাবিহাকে ঘৃনা করি।কে বলতে পারে এটা তার আর আকাশের নতুন নাটক না?যে মেয়ে এত বড় ছলনা করতে পারে সে আরও বড় ছলনা করতে পারবে।মাবিহাকে আমি বিশ্বাস করি না।যে আমার সন্তান কে দুনিয়াতে আাসার আগেই খুন করে ফেলেছে তাকে আমি মরে গেলেও মেনে নিতে পারব না।

—কিন্তু মাবিহা কোন মেয়ের কথা বলল? আর আপনি তাকে বউ বলে পরিচয় দিয়েছেন।

—তোমার কথা বলেছে।

কথাটা শোনে ডালিয়া বিস্মিত হয়ে গেল।তার মত একটা মেয়েকে অরণ্য বউ বলে পরিচয় দিল এটা শোনে।কিছুটা বিস্মিত হয়ে ডালিয়া উত্তর দিল

—কিন্তু আমি তো আপনার বউ না।

—হুম জানি তুমি আমার বউ না।

—তাহলে এমন বললেন যে

—সেটা তুমি বুঝবে না।

—কিন্তু….

— হয়েছে একদম চুপ আর কোন কিন্তু না আর কোন কথা শোনতে চাচ্ছি না এ ব্যাপারে।

এ কথা বলে অরণ্য ডালিয়ার রুম থেকে চলে গেল।হঠাৎ রহমত চাচা এসে ডালিয়াকে বলল

—ডালিয়া মা।অরণ্য জানি কেমন করছে তাড়াতাড়ি চল

ডালিয়া রহমত চাচার কথা শোনে ভয় পেয়ে গেল।তাড়াতাড়ি অরণ্যের রুমে গেল।আর গিয়ে দেখল অরণ্যের রুমের লাইট বন্ধ।ডালিয়া ঘরের লাইট জ্বালিয়ে পুরা অবাক হয়ে গেল কারন চারদিকে বেলুন আর ফুল দিয়া সাজানো।অরণ্য ড্রয়ার থেকে একটা পেপার দিয়ে ডালিয়াকে পড়তে বলল।ডালিয়া পেপারের হেডলাইন পড়ে খুশিতে আত্ন হারা হয়ে গেল।কারন পেপারে লিখা ছিল।”আজ থেকে ৬ বছর আগে ডাক্তার অরণ্যের নামে করা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।ডাক্তার অরণ্য কোন ধর্ষক না।ওনাকে ফাঁসিয়েছেন ডাক্তার অনুরাগ।তাই অরণ্যকে পুনরায় চাকুরী প্রদান করা হল আর অনুরাগকে চাকুরীচ্যুত করা হল।”ডালিয়া সংবাদ টা পড়ে খুশিতে যেন পাগল হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।পাশ থেকে অরণ্য বলে উঠল

—সারপ্রাইজ টা কেমন লাগল।

ডালিয়া আদো আদো কন্ঠে জবাব দিল

—এভাবে কেউ সারপ্রাইজ দেয়।আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।ভেবেছিলাম কি না কি হয়েছে।

—তুমি থাকতে আমার কিচ্ছু হবে না ডালু

—কিন্তু আপনি এটা কিভাবে করলেন?এত কিছু হয়ে গেল আর আমাকে আগে কিছু জানালেন না।

—আরে পাগলি সারপ্রাইজ দিব বলে জানায় নি।এটার মামলা আমি আগেই করেছিলাম।মাঝখান দিয়া আমার প্রবলেমের জন্য মামলাটা আর চালিয়ে যায় নি।তোমার কাছে এসে জীবনের মানেটা বুঝি নতুন করে।তারপর আবার মামলা ওপেন করি। নার্সকে জিজ্ঞেস করি।নার্স ও তার ভুল বুঝতে পেরেছে।আবার কোর্টে গিয়ে আমার পক্ষে সাক্ষী দেয় আর রায় আমার পক্ষে আসে।তা কেমন লাগল সারপ্রাইজ টা।

—সারপ্রাইজটা অনেক ভালো লাগল।অনেক খুশি হয়েছি এতটা খুশি হয়েছি বলে বুঝাতে পারব না।

—-আমিও আজকে অনেক খুশি।আবার নতুন করে সব শুরু করব।ডাক্তারি প্র্যাকটিস করব।আর তোমার জন্য একটা টিচার রাখেছি।তোমাকে যেন একটু শিখাতে পারে।কালকে থেকে তোমার টিচার আসবে তোমাকে টুকিটাকি শিখাবে।

—কিন্তু পড়ালেখা তো কবেই ছেড়ে দিয়েছি।আমি কি পারব আবার সব শুরু করতে।ভয় লাগছে অনেক

–আরে পাগলি ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই আমি আছি তো

ডালিয়া অরণ্যকে যতই দেখছে ততই যেন ডালিয়ার মনে হচ্ছে এ কি সত্যি অরণ্য বাবু নাকি স্বপ্ন।ডালিয়া নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছে না।পরদিন সকালে ডালিয়াকে অরণ্য ডাকতে লাগল

—ডালু,ডালু, নীচে আস।

—আসতেছি।

ডালিয়া নীচে গিয়ে দেখল একটা লোক।লোকটাকে দেখে ডালিয়া ভয়ে কোকরে গেল।আর লোকটাও ডালিয়াকে দেখে রহস্যময় হাসি দিতে লাগল।অরণ্য ডালিয়াকে বলল

—ডালিয়া ওনি রায়হান সাহেব তোমাকে আজকে থেকে পড়াবে।

—আর রায়হান সাহেব ও ডালিয়া আমার স্ত্রী আর আপনার ছাত্রী আজকে থেকে ওকে পড়ানোর দায়িত্ব আপনার

লোকটা অবাক হয়ে অরণ্যকে আবার জিজ্ঞেস করল

—ওনি আপনার স্ত্রী

—হ্যা আমার স্ত্রী। আপনি ওকে পড়ানো শুরু করুন।

—আচ্ছা আপনি যা বলবেন।

রায়হান সাহেব ডালিয়াকে পড়াতে বসল।ডালিয়াকে লক্ষ্য করে বলল

—আচ্ছা ডালিয়া তোমার হাসবেন্ড কি তোমার অতীত জানে।নাকি আমি সব বলে দিব।আমাকে একটু খুশি করে দাও। না হয় আমি তোমার স্বামীকে সব বলে দিব।

এ বলে লোকটা ডালিয়ার শরীরে হাত দিতে লাগল।ডালিয়া সেখান থেকে উঠে চলে আসল।আর রুমে এসে কাঁদতে লাগল।অরণ্য ডালিয়াকে এরকম করতে দেখে অবাক হল।ডালিয়ার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল

—ডালিয়া তুমি এভাবে চলে আসলে যে, কি হয়েছে?

ডালিয়া কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল

—লোকটা এর আগে অনেকবার পতিতা পল্লীতে গিয়েছিল।আজকে লোকটা আমাকে আবার দেখে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল।

ডালিয়ার কথা শোনে অরণ্য রেগে গিয়ে নীচে গেল রায়হান সাহেব কে বলল

—আপনার সাহস কি করে হয় আমার স্ত্রী কে উল্টা পাল্টা বলার।

—আমি উল্টা পাল্টা কেন বলব।আপনার স্ত্রী এর অতীত জানেন ও তো একটা নষ্টা মেয়ে।

—আর আপনি বুঝি খুব ভালো ছেলে।

—মানে?

—আপনার মত কাপুরুষরা যখন ওদের ভোগ করতে যান তখন আপনারা নিজেকে খুব সাধু মনে করেন তাই না?আর ওদেরকে নষ্টা বলতে মুখে আটকায় না।ওদেরকে ভোগ করার সময় আপনাদের নীতি বাক্য কোথায় থাকে।লজ্জা লগে না একটা টিচার হয়ে এত নোংরা কাজ করেন।আবার অন্য মেয়েকে অপবাদ দেন। বের হোন আমার বাসা থেকে

রায়হান সাহেব অরণ্যের কথা শোনে লজ্জিত হয়ে বের হয়ে গেল।ডালিয়া অরণ্যের কথা শোনে বিস্মিত হল।এ প্রথম কোন ছেলে যেন ডালিয়ার মনের কথা গুলো বলল।ডালিয়ার মনটাকে বুঝতে পারল।অরণ্যের প্রতিটা ব্যাবহার যেন ডালিয়াকে অরণ্যের প্রতি আরও দুর্বল করে দিতে লাগল।অপরদিকে অরণ্য ডালিয়ার কাছে এসে বলল

—তুমি কষ্ট পেও না।এসব মানুষের কথায় চোখের জল ফেলো না।এরা কাপুরুষ।এরা মানুষ নামে অমানুষ।

কথাগুলা শোনে ডালিয়ার চোখ দিয়ে কান্না যেন বৃষ্টি হয়ে নামল।ডালিয়া অরন্যকে বলল

—আপনার মত করে আমাকে আর কেউ কখন ও বুঝে নি।এতটা ভালো কেউ কখনও বাসে নি।

অরণ্য ডালিয়ার চোখের জল মুছে দিয়ে ডালিয়াকে জড়িয়ে ধরল আর বলল

–ধুর পাগলি এভাবে কেঁদো না তো।তোমাকে কাঁদলে একদম ভালো লাগে না।আমি চাই তুমি আমার জন্য হলেও সবসময় হাসি খুশি থাক।

ঠিক এ মুহুর্তে অরণ্যের ফোনে মাবিহার কল আসল।আর অরণ্য ফোনটা কেটে দিল।মাবিহা আবার ফোন করল।আর অরণ্য ফোনটা আবার কেটে দিল।পাশ থেকে ডালিয়া বলে উঠল

—অাপনি বারবার ফোন কাটছেন কেন?কে ফোন দিয়েছে।ধরছেন না কেন?

—-মাবিহা কল দিয়েছে।

—ধরে দেখুন কি বলে।কোন দরকার আছে কি না।

—আমি চাচ্ছি না ওর কল ধরতে।নতুন কোন নাটক সাজিয়েছে হয়ত।এখন আর ফোন ধরার কোন ইচ্ছা নেই।শোন তাড়াতাড়ি রেডি হও।আজকে তোমাকে নিয়ে পার্লারে যাব।

—পার্লারে কেন?

—ভয় নেই।আজকে কিছু করব না।তোমার চুলে সুন্দর একটা হেয়ার কাট দিয়ে নিয়ে আসব।এখন চুল গুলো কেন জানি এলো মেলো লাগছে।

ডালিয়া অরণ্যের কথা শোনে তাড়াতাড়ি রেডি হল।দুজন মিলে পার্লারে গেল।পার্লারের মহিলা ডালিয়াকে জিজ্ঞেস করল কি কাট দেব বলুন। ডালিয়া চুপ করে রইল। কারন সে বুঝতে পারছিল না কি বলবে।হঠাৎ অরণ্য বলে উঠল ওর চুল তো ছোট আপনি শর্ট লেয়ারটা দিয়ে দিন ওকে মানাবে বেশ।পার্লারের মহিলা অরণ্যের কতা মত ডালিয়াকে শর্ট লেয়ার কাট দিয়ে দিল।কাটা শেষে ডালিয়া আয়নায় নিজেকে দেখে নিজে চিনতে পারল না।কারন ডালিয়াকে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল।এ কাট টা ডালিয়াকে বেশ মানিয়েছিল।অরণ্যও ডালিয়াকে বলল

—বাহ তোমাকে তো বেশ সুন্দর লাগছে।একদম পরীর মত লাগছে।

ডালিয়া লজ্জায় লাল হয়ে গেল। তারপর দুজন পার্লার থেকে বের হয়ে শপিং এ গেল ডালিয়ার জন্য বিভিন্ন জিনিস কিনল।ডালিয়াও অরণ্যের জন্য একটা শার্ট পছন্দ করে দিল।শপিং শেষে রেস্টুরেন্ট এ বসে দুজন খেল।আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে গেল।আজকে কেন জানি না ডালিয়ার খুব ইচ্ছা হচ্ছে সোডিয়াম বাতির নীচে বসে বাদাম খেতে আর আড্ডা দিতে।কিন্তু অরণ্যকে বললে কি ভাববে?সাহস করে বলবে বলবে ভেবেও যেন বলতে পারছিলনা।হুট করে বলেই ফেলল

—আচ্ছা ১০ টাকার বাদাম কিনবেন।

—-তা কিনা যায়।কিন্তু হঠাৎ

—হলুদ বাতির নীচে বসে আপনার সাথে বাদাম খেতে খুব ইচ্ছা করছে এজন্য।একটু আড্ডা দিতে ইচ্ছা করছে।

—আইডিয়াটা খারাপ দাও নি।দাঁড়াও আমি বাদাম কিনে আনতেছি।

অরণ্য ডালিয়াকে দাঁড় করিয়ে রেখে বাদাম কিনে আনল।দুজন মিলে সোডিয়াম বাতির নীচে বসল।কত কথায় যে বলল তারা।অরণ্য ডালিয়ার বাচ্চা বাচ্চা কথাগুলো বেশ উপভোগ করতে লাগল।আর সত্যিই তো ডালিয়া একটা বাচ্চায়।কারন ডালিয়া তো অরণ্যের ১৮ বছরের ছোট।অরণ্য খুব মনযোগ দিয়ে ডালিয়ার কথা শ্রবণ করতে লাগল।ডালিয়া বলতেছিল

—দেখুন আমাকে আর আপনাকে এ বাতির নীচে কেমন হলুদ, হলুদ দেখাচ্ছে।হিহিহি।

—-হাহাহা। ডালু এটাকে সোডিয়াম বাতি বলে।

—কি বাতি বললেন?

—সোডিয়াম বাতি।

—এটা আবার কেমন নাম।আমি হলুদ বাতি বলেই ডাকব।

—হাহাহা।তোমার যা ইচ্ছা ডেকো।এখন কি বাসায় যাবা না?অনেক্ষণ তো আড্ডা দিলা।রাত তো বেশ হল।চারপাশ ও শান্ত হয়ে যাচ্ছে।চল গাড়িতে চল বাসায় যাই

—গাড়িতে উঠতে আজকে মন চাচ্ছে না। চলেন আজকে রিকশা দিয়ে যাই।আমার রিকশা দিয়ে ঘুরার খুব ইচ্ছা।

ডালিয়াকে যত দেখছে অরন্য ততই মুগ্ধ হচ্ছে।এটা ভবেই বিস্মিত হচ্ছে কত অল্পেই মেয়েটা খুশি হয়ে যায়।তারপর হাসি মুখে অরণ্য উত্তর দিল

—আচ্ছা তাহলে ড্রাইভার কে বলি চলে যাওয়ার জন্য। আজকে আমরা রিকশা দিয়েই যাব।

—ডালিয়া লাজুক স্বরে উত্তর দিল আচ্ছা।

এরপরে দুজন মিলে রিকশায় উঠল।খোলা আাকাশের নীচে রিকশায় চড়তে দুজনের বেশ ভালোই লাগছে।হালকা মৃদু মন্দ বাতাস দুজনের মনে আর শরীরে শিহরণ দিতে লাগল।চারদিকে তাকিয়ে দেখল ব্যাস্ত শহরটা থমথমে নিস্তব্ধ হয়ে গেল।ডালিয়া হুট করে অরণ্যের কাঁধে মাথা রাখল।অরণ্য ও ডালিয়াকে বেশ আঁটসাট ভাবে জড়িয়ে ধরে রাখল।এখন ডালিয়ার নিজেকে সবচেয়ে সুখী মনে হচ্ছে।

কিছুক্ষণ পর বাসায় ফিরল।বাসায় ফিরে যা যা কিনল তা বের করে ডালিয়া দেখতে লাগল।খেয়াল করল অরণ্য ডালিয়াকে একটা নীল শাড়ি কিনে দিয়েছে।ডালিয়া শাড়িটা নিয়ে আনন্দে নাচতে লাগল। ডালিয়া শাড়িটার ভাঁজ খুলে পড়ল।পড়ার পর ডালিয়া যখন আয়নায় নিজেকে দেখল ডালিয়ার মনে হল ডালিয়াকে একটা নীল পরী লাগছে।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক পড়ল।কপালে কালো একটা টিপ পড়ল।তারপর অরণ্যের কাছে গেল

অরণ্য ডালিয়ার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গেল।ডালিয়ার হেয়ার কাট শাড়ি আর হালকা সাজটা ডালিয়াকে এত মানিয়েছে যা অরণ্যকে বিমোহিত করে দিল। ডালিয়াকে দেখে অরণ্য ডালিয়াকে জড়িয়ে ধরে ডালিয়ার কপালে একটা চুমু দিল।ঠিক এসময় মাবিহা আবার কল দিল।এবার অরণ্য মাবিহার কলটা আবার কাটল।কাটার পর মাবিহা আবার কল দিল অরণ্য আবার কলটা কেটে দিল।বারবার কাটার পরও মাবিহা বারবার কল দিচ্ছিল।তারপর অরণ্য কলটা ধরে…..

#চলবে

(অরণ্য ভক্তরা কেমন বোধ করছ।অরণ্যকে এ রূপে কেমন লাগছে?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here