#পঞ্চভূজ_তারা
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ০৮
ইন দ্যা ফার্ম হাউস_____________________
এখানে এসে সবাই ফ্রেস হয়ে নিলো।তারপর একটা লম্বা ঘুম দিলো ওরা সবাই একঘুমে সন্ধ্যায় উঠলো।
সাদু উঠেই লাফানো শুরু করে দিয়েছে,,,
–“আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া!!”
–“কিচ্ছে ফকিন্নি চিল্লাস কেন?”বিরক্ত হয়ে বলে আফরান।
–“আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া!!”””সাদু চিল্লাতেই আছে।
আলিফা ধরাম করে একটা কিল দিয়ে দিলো সাদু কে।সাদু হা করে তাকালো আলিফার দিকে কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ মারলো কেন?
–“কি এখন চিল্লা।তখন তো হুদ্দাই চিল্লাতে ছিলিস!এখন মেরেছি এখন চিল্লা।অন্তত চিল্লানোর একটা কারন তো বানিয়ে দিলাম তোকে।”
সাদু পিঠে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।সে ঠোট উল্টিয়ে বলে,
–“আলু কি বাচ্চি আমি আগেও একটা কারনে চিল্লাচ্ছিলাম।”
–“হ্যা তুমি তো যতোসব ফালতু কারনে চিল্লাও!”মনির চোখ ছোট ছোট করে বলে।
–“আপনি চুপ থাকেন গন্ডার কোথাকার।”সাদু দিলো এক ধমক।
–“তোমার কি হয়েছে সেটা তো বলবা না-কি?”মনির বললো।
সাদু’ রাগের চোটে বলে,
–“হ্যা হয়েছে তো!আমার বাচ্চা হয়েছে আর আপনি মামু হয়েছেন।সো সবাই কোনগ্রাচুলেট করো আমায়।”
সাদু’র কথা শুনে মনির হা হয়ে রইলো বেচারা প্রচন্ড শোক খেয়েছে।নিবির আস্তে করে মনির এর কাধে হাত দিয়ে বলে,,
–“দোস্ত যেখানে তুই আমার বোন এর বাচ্চার আব্বা হইতে চাস।আমার বোন দেখি তোরে ওর বাচ্চার মামু বানায় দিলো।মানে ‘ছাইয়া থেকে ভাইয়া’ টাইপ ছ্যাকা দিলো তোরে।”
মনির রাগী চোখে তাকালো নিবির এর দিকে।এইদিকে নূর চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে সাদুকে বলে,
–“কিরে ছ্যামরি পাগল হয়ে গেছোস?”
–“আমি নিশ্চিত ওয় ড্যাট ওভার গাঞ্জা খাইছে।”আলিফা চিন্তিত হয়ে বলে।
–“তোরা দুইটা চুপ থাকবি না-কি তোদের সব কটাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবো।”দাতেদাত চেপে বলে সাদু।
–“আমি আর আলিশা কি করেছি আমাগো পেচাস কেন হ্রামী।”মিম ভ্রু-কুচকে বললো।
–“বাল করছো তোমরা?!” সাদু রাগে ফোসফোস করছে।
মনির অসহায় ফেস বানিয়ে আফরানকে বলে,,
–“এ ভাই এরে চুপ করা।কি সব ছিহহহঃ মার্কা কথা বলতেছে।”
আরিফ বললো,
–“আগে ভাবতাম সবগুলা তারছিরা হলেও সব দিক দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ আছে এখন দেখি আলহামদুলিল্লাহ থেকে নাউজুবিল্লাহ টাইপ এরা।”
–“ওইসব বাদ দে আমি জানি সাদুর খিদে পেয়েছে তাই তো এরকম রেগে গেছে কারন ও খুদা সজ্য করতে পারে না।”মনির বলে উঠে।
মেরাজ বলে উঠে,
–“ইউ মিন হোয়েন সি বিকাম হাংগ্রী, সি টার্ন ইন্টু জাংলি।”
আবার লাফিয়ে উঠে বলে,
–“হেই মনির ব্রো গিভ হিম স্নিকার’স।টিভিতে এড দেখিস না। ‘স্নিকার্স খা ভুখ মিটা’।”
আরিফ মেরাজ এর মাথায় একটা গাট্টা মেরে বলে,
–“এখনে স্নিকার্স কোথায় পাবো বলদ কোথাকার!”
মেরাজ মাথা চুলকে বলে,,
–“তাই তো!”
–“আর মেইন পয়েন্ট সেটা না মেন্ট পয়েন্ট হলো তুই যদি ওর সামনে এখন চকোলেট ফ্লেভার এর কিছু খেতে দিস তাহলে তোকে এক ঘুসিতে ও মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দিবে।কয সি হেট চকোলেট্স।”
আফরান ঠোট উল্টিয়ে বলে,
–“এই একমাত্র আমার এই তারছিরা বোনকেই দেখলাম যে ও চকোলেট পছন্দ করে না।নূর হলে এক নিমিষেই সব সাবার করে দিতো।”
–“ওতো সতো বাদ দে এখন ওকে কি খেতে দিতে পারি সেটা ভাব।এখানে কোন স্নেক্স জাতিয় খাবার নেই। রান্না করা লাগবে।”বললো মনির।
“আইডিয়া” বলে লাফিয়ে উঠলো নিবির সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
–“আমরা রান্না করতে না পারি বাট বাকি মেয়েরা তো পারবে আই মিন সাদু রান্না পারে না কিন্তু বাকি চার জন তো পারবেই।”
মনির সাফ জানায়,,
–“জ্বি না নূর ও পারে না।বাট আই থিং আলিফা পারে তুই ওকে জিজ্ঞেস করে দেখ(আরিফকে উদ্দেশ্য কর)।”
এক ডোক গিললো আরিফ,,
–” এ ভাই আমারেই কেন শাকচুন্নি’র কাছে বলির পাঠা বানিয়ে পাঠাতে চাস।আমি জাইতাম না।”
সবাই চিল্লিয়ে বলে,,” তোকেই যেতে হবে” বলে ঠেলে ঠুলে ওকে আলিফার কাছে পাঠিয়ে দিলো।
এদিকে আলিফা সোফায় মাথা চেপে ধরে বসে আছে।ওর বিরক্ত লাগছে সাদুর চেচামেচি। এই মেয়ের খুদা পেলেই এমন করে।ওই রান্না করতো কিন্তু আজ ওর মাথাটা বড্ড যন্ত্রনা করছে কাল ঠিক মতো ঘুম হয়নি বলে এখন আরো বেশি পেইন করছে সাদুর চিল্লাচিল্লিতে। হঠাৎ সামনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মুখ তুলে তাকায় আলিফা।আলিফা মুখ তুলে তাকাতেই আরিফ এর বুকটা যেন ধ্বক করে উঠলো।আলিফা’র চেহারা শুকনো লাগছে,চুলগুলো এলোমেলো,চোখ গুলো লাল হয়ে আছে কেমন যেন বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে ওকে।আরিফ কে এইভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আলিফা বলে,
–“কিছু বলবেন?”
আরিফ এর ধ্যান ফিরে আসে আলিফার কথায় গলায় স্বরটাও যেন কেমন অসুস্থতার ছোয়া’র আবাস পাচ্ছে আরিফ।এদিকে আলিফা আবারো বলে,
–“কিছু বলবেন?”
–“হ্যা না মানে!ওইযে!”আমতা আমতা করছে আরিফ।
–“না মানে করে স্পষ্ট বলুন।”
–“আসলে সাদু বোনুর খুদা পেয়েছে। কিন্তু খাবার রান্না করা লাগবে আর এখানে কেউ রান্না পারে না শুধু তুমি ছাড়া….”
আরিফ কে মাঝপথে থামিয়ে আলিফা বলে,
–“বুজেছি আর বলতে হবে না।আমি যাচ্ছি রান্না করতে সবার জন্যেই রান্না করে দিবে নো প্রোবলেম।”
–“কিন্তু তোমায় দেখে তো অসুস্থ মনে হচ্ছে পারবে না।”
–” নাহ!কিছু না ওই একটু মাথা ব্যাথা করছে আসলে কাল রাত্রি ঘুম হয় নি ঠিক মতো তাই আর কি একটু মাথাটা ধরেছে।”
–“আচ্ছা আলিফা শুনো?”
–“জ্বি!”
–“ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড।আমি কি তোমায় হেল্প করতে পারি।মানে তুমি এখন একটা মাথা ব্যাথার মেডিসিন নিয়ে তারপর রান্না করো আমি তোমাকে হেল্প করবো।”
মুগ্ধ হয়ে তাকালো আলিফা।আরিফ তার জন্যে চিন্তা করছে ভাবতেই মনটা খুশিতে ভরে গেলো।বললো,
–“নাহ নাহ!তার কোন দরকার নেই।আমি ওই তিন ডাইনি থেকে একজন কে সাথে করে নিয়ে যাবো।”
–“হাহ্ ওদের নিবা।যাবে না-কি রান্না ঘরে।আর গেলেও এই রান্নাঘর আস্তো থাকবে।দেখা যাবে রান্না ঘর কে বোম মেরে উগান্ডা পাঠিয়ে দিয়েছি।তার থেকে ভালো আমি যাই তোমার সাথে।”
আলিফা খিলখিল করে হেসে ফেললো।অবাক নয়নে ওর হাসি দেখছে আরিফ।হাসলে কি সুন্দর লাগে।ইসস!
–“আচ্ছা চলুন যাওয়া যাক!”আলিফার কথায় আরিফ সম্মতি ফিরে পেলো।তারপর মাথা ঝাকিয়ে চললো আলিফা’র সাথে।আলিফা মনে মনে বলে,
–” আপনি বললে তো আমি মরতেও রাজী।এতো শুধু রান্না করার কথা।আর সেখানে আপনি আমার সাথে থাকবেন।এর থেকে সুখের কি আছে।ভালোবাসি আপনাকে আপনি যা বলবেন আমি সব শুনবো।”
হ্যা আলিফা আরিফকে ভালোবাসে আজ থেকে না সেই ছোট থেকে যখন থেকে আলিফা বুজতে শিখিছিলো ভালোবাসা কি?তখন থেকেই নিজের সবটা উজার করে ভালোবাসে সে আরিফ কে।কিন্তু ভয়ে কখনো বলতে পারে না।অবশ্য তার এই কথা সাদু,নূর,আলিশা,মিম জানে যে সে আরিফ কে ভালোবাসে।
___________________
“” ভাইয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া!!””সাদু চিৎকার করছে।আলিশা দু-হাতে কান চেপে ধরে নিবির এর কাছে গেলো।রাগী গলায় বলে,
–“ওইইই ব্যাটা উগান্ডার পোলা আপনার রাক্ষসী বোনকে থামান নাহলে আপনাকে আমি কচু গাছের পিচাশিনী’র সাথে বিয়ে দিবো বলে দিলাম ।”
–“হুয়াট!!কচু গাছেও কি পিচাশিনী থাকে?”অবাক নিবির।
–“কান কাটা হাতি,কাইল্লা গন্ডার এখন কি আপনার বোনকে থামাবেন না-কি আপনাকে আমি মাছ চোরা ডাইনির গলায় ঝুলিয়ে দেবো।”দাতে দাত চেপে বলে আলিশা।
নিবির এক ঢোক গিলে তড়িঘড়ি করে দৌড় দিলো।এদিকে বাকিরা হাসতে হাসতে শেষ।
আর আমাদের সাদু চিল্লাচ্ছে তো চিল্লাচ্ছে।মনির শেষমেষ বিরক্ত হয়ে সাদু’র কাছে গিয়ে ওর হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে একটা রুমে নিয়ে গেলো।দরজা আটকে সাদুর কাছে গেলো মনির।দাতেদাত চেপে বলে,
–“এখন বলো কি হয়েছে সমস্যা কি চিল্লাচ্ছো কেন?”
–“আমার খুদা পেয়েছেএএএএএএ।”চিৎকার করে সাদু।
মনির এর সজ্য সীমা শেষ সে সাদুকে দেয়াল এর সাথে চেপে ধরে বলে,
–“আর একবার চিল্লানি দিলে তোমাকে আমি একপায়ে খারা করে এই বাড়ির সব কাজ করাবো।খুদা পেয়েছে তো চুপচাপ থাকবা চিল্লাও কেন?”
–“আমার বাড়ি এসে আমাকেইইইই…”
–“সাট আপ!ইউ স্টুপিট।”
মনির এর ধমকে সাদু চুপচাপ মুখে আংগুল দিয়ে দাডিয়ে রইলো।
–“আর একটা কথাও না। আবার যদি মুখ খুলো তো এর থেকেও বড় শাস্তি দেবো।সো নাউ ফোলো মি।নিচে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকবা।”
মনির হাটা ধরলো সাদুও চুপচাপ সুরসুর করে মনির এর পিছেপিছে হেটে এসে সোফায় বসে পড়লো।বেচারি ভয়ের চোটে স্টেচু হয়ে গেছে।
নিবির সাদুকে এইভাবে হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যেতে দেখে আফরান এর কানে ফিসফিসিয়ে বলে,
–“হেই ব্রো মনির এমন কি ডোজ দিলো।যে আমাদের পিকু ‘জাংলি শেরনি থেকে ভিগি বিল্লি’, টাইপ হয়ে গেলো।”
আফরান ঠোট উল্টালো যার অর্থ এই যে “আরা গাধা নিবিররা আমি কিভাবে জানবো তুই যেখানে আমিও সেখানে।আর আমার কি মাথার তার ছিড়া যে হবু দুলাই বোনের সাথে একলা রুমে কি করছে তা দেখতে যাবো বলদ কোথাকার।”
চলবে,,,,
আমার হাত কেটে গেছে আমি কাল বলেছি।এইটুকুন অনেক কষ্টে লেখেছি।ব্যাথা করছে খুব হাতটা।ভূল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।আমি কাটা হাত দিয়ে লিখতে পারলে আপনারা কি আমার জন্য সুন্দর মন্তব্য করতে পারবেন না।