#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব: ১৬
১ বছর পর,,,,,
সায়ন একটা জরুরি কাজে অফিসে এসেছে। সায়ন নিজের কেবিনে বসে কাজ করছিলো। হঠাৎ বাসা থেকে কল আসে। সায়ন বাসার কল দেখে সাথে সাথে রিসিভ করে জিজ্ঞেস করলো তনু ঠিক আছে কি না। তারপর যা শুনলো তা শুনে সায়ন সব কাজ ছেড়ে বাসায় চলে এলো।
বাসায় এসে কলিং বেল বাজতেই কেউ এসে দরজা খুলে দিলো। সায়ন সেদিকে খেয়াল না করে সোজা তনুর রুমে গেল।তনুর রুমে যেতে সায়ন অবাক। রুমে কেউ নেই। তনুও না। তনুকে না দেখে সায়ন ঘাবড়ে যায়। তনু তনু বলে রুম, বারান্দায়, ওয়াশরুমে খুজতে লাগলো। কিন্তু তনু নেই। তাই জোরে জোরে কাজের লোকদের ডাকতে লাগলো। সবাই সায়ন এর সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। সায়ন সবাইকে বকা-ঝকা করছে সবাই মাথা নিচু করে আছে৷
সায়ন : আপনাদের কারনে যদি আমার তনুর কিছু হয় তাহলে একজনকেও ছাড়বো না।
তনু : হুম আমিও। ( তনু পেছন থেকে বলে উঠলো)
সায়ন : হুম। ( বলে হঠাৎ খেয়াল হলো এটা কে বললো)
পিছনে ঘুরে যা দেখলো তা দেখে সায়ন বিশ্বাস করতে পারছে না যে, ও কি ঠিক দেখছে নাকি ভুল। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না যে ওর সামনে তনু দাঁড়িয়ে আছে। সায়ন আস্তে আস্তে তনুর সামনে গেলো। সামনে দাড়িয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে তনুর গালে স্পর্শ করলো।
সায়ন : মেরি জান আমি কি ঠিক দেখছি!!! তুমি ঠিক হয়ে গেছো!
তনু : হুম তুমি এতো ভালো করে খেয়াল রেখেছো ভালো না হয়ে পারি।
সায়ন তনুকে জড়িয়ে ধরলো কাজের লোকদের সামনেই৷ তাও তনু কিছু বললো না। তনু কাজের লোকদের ইশারা করে চলে যেতে বললো। তারা চলে গেলো। অনেকক্ষণ কেটে গেলো তাও সায়ন তনুকে ছাড়ছে না। এমনভাবে ধরে আছে যেন ছেড়ে দিলেই তনু পালিয়ে যাবে৷
তনু একই ভাবে সায়নকে জড়িয়ে ধরে আছে। হঠাৎ তনু নিজের ঘারে ভেজা অনুভব করলো। সাথে সাথে সায়নকে ছাড়িয়ে সায়ন এর দিক তাকালো। তাকিয়ে দেখে সায়ন কান্না করছে। একটা ছেলে এভাবে কান্না করতে পারে তা তনুর ভাবনার বাইরে ছিল।
তনু : এই তুমি কান্না করছো কেন? আজব৷ আমি তো এখন ঠিক হয়ে গেছি। কান্না করলে কিন্তু চলে যাবো। ( কথাগুলো বলছিলো আর সায়ন এর চোখ মুছে দিচ্ছিল )
সায়ন : আমার জন্য তুমি কত কষ্ট সহ্য করেছ তারপর আবার তাহা এভাবে কষ্ট দিলো। সব আমার কারণে হয়েছে। আমি,, আমি অনেক খারাপ তাই না মেরি জান? ( অশ্রু সিক্ত নয়নে)
তনু : কে বলেছে। আমার হাসবেন্ড দুনিয়ার বেস্ট। আমাকে কতো বেশি ভালোবাসে।
সায়ন : I love you meri jan. Please don’t leave me ?
তনু : I love u too সায়ু বেবি। ?
সায়ন : তনু এসব কেমন নাম, আজব। মানুষ কি বলবে। কি সুন্দর নামটাকে তুমি কি বানিয়ে দিলে ?
তনু : এমন ঢং করছো কেন? আমি কি তোমাকে প্রথম বার ডেকেছি এই নামে?
সায়ন : আগে বলতে কিন্তু এখন আমি একটা বাচ্চার বাবা। so respect me as a senior person. ?
তনু : হুহ! ঢং দেখলে বাচি না। আসছে বাচ্চার বাবা। এখনো বিছানায় হিসু করে সে নাকি সিনিয়র। ?
সায়ন : তনুউউ,,,,,,,তোমাকে তো,,,( আর কিছু বলার আগে অন্তু হাজির)
অন্তু জোড়ে মাম্মাম বলে চিৎকার দিলো।
অন্তু : মাম্মাম!!! তুৃি ঠিক হয়ে গেছো। ( বলে দৌড়ে এসে তনুকে জড়িয়ে ধরলো)
তনু : হুম। আমার মেয়েটার কান্না দেখতে ভালো লাগছিলো না তাই ঠিক হয়ে গেছি।
সায়ন : আমাকে কেউ একটুও ভালোবাসে না। শুধু মেয়ের জন্য ঠিক হয়েছে।
অন্তু : বাবাই তুমি আমার সাথে হিংসা করছো আবারও ?। মাম্মামকে সব বলে দিবো কিন্তু
সায়ন : কই না তো. ( হাসার চেষ্টা করে)
তনু : কি বলার কথা বলছে অন্তু ( সন্দেহ দৃষ্টিতে)
সায়ন : ছাড়ও তো রেস্ট করবে চলো। চলো। ( অন্তুর দিকে তাকিয়ে কিছু না বলতে বললো)
সায়ন জোর করে তনুকে রুমে নিয়ে গিয়ে রেস্ট করতে বলে নিজে ফ্রেশ হতে গেলো।
সায়ন ফ্রেশ হয়ে একটা টিশার্ট আর ট্রাউজার পরে বের হলো। সায়ন তনুর পাশে বসে একজনকে কল করলো। কল রিসিভ হতেই সায়ন বলতে লাগলো,,
সায়ন : জলদি আমাদের বাসায় আসো। সমস্যা হয়েছে।
অপর জন :————-।
সায়ন : আগে আসো। জলদি। ( বলে কল কেটে দিলো)
তনু তা দেখে প্রশ্ন করলো,,,
তনু : এই কই সমস্যা হয়েছে তুমি যে কলে বললা।
সায়ন : একটু পরই বুঝবা।
তনু : আমরা এই বাসায় কবে এলাম?
সায়ন : ৯ মাস আগে।
তনু : বাবা মা কোথায়? দেখলাম না তো?
সায়ন : বাবা মা আমার খালাতো বোন এর বিয়েতে গেছে চট্টগ্রাম।
তনু : ওহ।
সায়ন : অনেক কথা হয়েছে এখন একটু ঘুমাও।।
বলে তনুর কপালে চুমু খেয়ে মাথায় বিলি কাটতে লাগলো। এরই মধ্যে অন্তু চলে এলো৷ অন্তু তনু সাথে শুয়ে পরলো।
অন্তু : এক বছর পর মাম্মাম এর কাছে শুশেছি। ( অসহায় ভাবে)
তনু : আমার মা টার কষ্ট হয়েছে অনেক তাই না?
অন্তু : নাহ। একটু হয়েছে। বানাই আমার অনেক খেয়াল রেখেছে।
তনু : তাই। ( বলে সায়ন এর দিকে কৃতজ্ঞতার নজরে তাকালো)
সায়ন : হুম ঘুমাও এখন মেরি জান।
#চলবে