#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব : ১১
তাহা : সায়ন বেবি!!! জানো আমি কতক্ষণ ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।আই মিস ইউ সো মাচ। ( জড়িয়ে ধরেই)
সায়ন : ওফ্ তাহা ছাড়ো তো। কিসব নেকামি করছো। কয়বার বলবো আমার থেকে দূরে থাকো। ( নিজেকে ছাড়িয়ে)
সায়নকে একটা মেয়ে এসে জড়িয়ে ধরে আছে তা দেখে না চাইতেও তনুর চোখে পানি চলে আসে৷ তনু অন্তুকে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে চলে যায়। সায়ন কয়েকবার ডাক দেওয়ার পরও দাড়াঁয়নি তনু।
সায়ন তনুকে ডাকছে দেখে তাহা এসে জিজ্ঞেস করতে লাগলো তনু কে?
সায়ন : ও হলো তনু। যাকে আমি ভালোবাসি। ( বলে সায়ন চলে গেল)
তাহা রাগে ফুসছে। আর সায়নের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবছে,,
তাহা : তোমাকে তো আমি আমার করেই ছাড়বো। কোনো তনুকে আমার জায়গায় আসতে দিবো না। এই তনু যদি সোজা কথায় না মানে তাহলে আমি এর শেষ করে ছাড়বো। হুহ
সায়ন তনুর কাছে এসে দাড়ালো। কিন্তু তনু সায়নের দিকে তাকাচ্ছেও না।
সায়ন : তনু শুনো তুমি আমাকে ভুল বুঝো না প্লিজ। ও আমার কাজিন। ও এমন সভাবেরই তাই এমনটা করেছে।
তনু : আমাকে এসব কেন বলছেন? আমি কি জানতে চেয়েছি যে কে এই মেয়ে? আপনাকে কে জড়িয়ে ধরলো আর আপনি কাকে জড়িয়ে ধরলেন তা নিয়ে আমার বা আমার মেয়ের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাই এইসব আমাকে বলতে আসবেন না। ( বলে তনু চলে গেল সায়নের সামনে থেকে)
সায়ন : তনু শুনো তো,,, ধুর!!!
কলেজে যতক্ষণ পর্যন্ত ছিলো ওরা ততক্ষণে সায়ন অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করছে তনুর সাথে। কিন্তু তনু কথা বলে নি। সায়নকে এভয়েড করেছে৷ সায়ন ব্যাপারটা নিতে পারছিলো না।
কলেজ শেষ এ সায়ন গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলো। তনু সায়নের সামনে দিয়ে হেটে চলে যাচ্ছিলো। সায়ন তা দেখে তনুকে ডাকলো।
সায়ন : মেরি জান, তুমি ওইখানে কোথায় যাচ্ছো। আমি তো এখানে অপেক্ষা করছি।
তনু : আমরা রিকশা করে যেতে পারবো সবসময় এর মতো।
অন্তু : না আমি বাবাই এর সাথে যাবো। ( বলে তনুর হাত ছেড়ে সায়নের কাছে চলে গেলো।
সায়ন : মেরি জান এবার তো আসো।
তনু আর উপায় না পেয়ে সায়নের গাড়ির দিকে যেতে শুরু করলো। সায়ন তা দেখে খুশি হয়ে গাড়ির সামনের দরজা খুলে দিল। কিন্তু তনু উঠার আগেই তাহা ঝড়ের বেগে আগে বসে পড়লো। তা দেখে তনু দাড়িয়ে পরলো। সায়নও অবাক তাহার কান্ডো দেখে। তনু কিছু না বলে পেছনের সিটে বসে পরলো। সায়ন অসহায়ের মতো যেয়ে ড্রাইভিং সিটে বসলো অন্তুকে নিয়ে।
সায়ন গাড়ি চালাচ্ছে আর অন্তুকে এটা ওটা বলছে আর অন্তুও পকপক করে যাচ্ছে। তনু চুপচাপ বাইরে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ তাহার প্রশ্ন শুনে সামনে তাকালো।
তাহা : এই বাচ্চাটা কে সায়ন?
সায়ন : ও অন্তু আমাদের মেয়ে। মানে আমার আর তনুর। ( সোজা সাপ্টা জবাব দিয়ে দিলো)
তনু : আবার বাইরে চেয়ে রইলো।
তাহা : মানে!!!
সায়ন : তুমি কি বাংলা বুঝোনা নাকি। আজব। ( কিছুটা বিরক্ত হয়ে)
তাহা আর কিছু বললো না। ও ভাবছে যে অন্তু সায়ন এর মেয়ে কিভাবে!!!
সায়ন বাসার সামনে গাড়ি থামায়। তনু নেমে চলে যেতে নিলে তাহা বলে উঠলো,,,
তাহা : সায়ন তুমি কোন হোটেলে?
সায়ন : আমি হোটেলে কেন থাকবো? আমি এখানে থাকি তনু আর অন্তুর সাথে।
তাহা : আমি তো ভাবলাম তোমার হোটেলে উঠবো কিন্তু এখন! তনু আমি কি তোমার বাসায় থাকতে পারি?
তনু : জ্বি অবশ্যই। ( বলে চলে গেল)
সায়ন অন্তুকে নিয়ে বাসায় আসতে লাগলো তার পিছু পিছু তাহা।
তনু রুমে ঢুকে ওয়াশরুম চলে গেল ফ্রেশ হতে। ওয়াশরুমের আয়নার সামনে দাড়িয়ে তনু একা একা বকবক করছে,,
তনু : পেয়েছে টা কি। এটা আমার বাসা নাকি হোটেল। আজব। যার ইচ্ছে হচ্ছে সে চলে আসে থাকতে। বিরক্তিকর যত্তসব। ( রেগে)
তনু রাতের খাবার রেডি করে সবাইকে ডাইনিং এ ডাকলো। সায়ন আর অন্তু একসাথে বসেছে। তনু সায়নের পাশে বসতে নিলে তাহা সেখানে বসে পরলো। তাই তনু অন্য একটা চেয়ারে বসে পরলো। সবাই খাবার খেয়ে উঠে গেলো। সায়ন আর অন্তু রুমে চলে গেলো। তনু রুমে যেতে নিলে তাহা বলতে লাগলো,,,
তাহা : ছি কি নির্লজ্জ মেয়ে, একটা পরপুরুষ এর সাথে ঘুমাতে যাচ্ছে। কি দিন দেখতে হচ্ছে। ( বলে চলে গেলো)
তনু তাহার কথা শুনে কিছু বললো না। চুপচাপ রুমে যেয়ে অন্তুর পাশে শুয়ে পরলো। অন্তু আগেই ঘুমিয়ে পরেছে। সায়ন খেয়াল করলো তনুর চোখ ছলছল করছে।
সায়ন : তনু কি হয়েছে? তুমি কান্না করছো কেন? তাহা কিছু বলেছে? ( উঠে বসে তনুর হাত ধরে কথাটা জিজ্ঞেস করলো)
তনু এক ঝটকায় নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
তনু : আমার কি হয়েছে তা আপনার না যানলেও চলবে। ( বলে লাইট ওফ করে শুয়ে পরল)
সায়ন আর কথা না বাড়িয়ে শুয়ে পরলো।
In morning,,,,
তনু সবার জন্য নাস্তা বানিয়ে সায়ন আর অন্তুকে ডেকে তুললো। সবাই খাচ্ছে হঠাৎ অন্তু নতুন বায়না ধরলো,,,
অন্তু : বাবাই আজ তুমি মাম্মাম কে খাইয়ে দাও।
তনু : অন্তু তুমি বেশি কথা বলা বন্ধ করে খাও।
অন্তু : বাবাইইই( রেগে)
সায়ন : আচ্ছা মামনি দিচ্ছি তুমি রাগ হওয়ার দরকার নেই।
সায়ন খাবার তুলে তনুর মুখে দিতে যাচ্ছিলো তার আগে তাহা তা খেয়ে নিলো। তা দেখেও তনু কিছু বললো না। সায়ন রেগে তাহার দিকে তাকালো কিন্তু তাহা সেদিকে পাত্তা না দিয়ে উঠে চলে গেলো।
#চলবে