#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব: ০৪
তনু অন্তুকে নিয়ে সোজা বাসায় চলে গেল কিন্তু সায়ন নিজের জায়গায় স্থির হয়ে গেছে। ও স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে ভাবছে,,,
সায়ন : অন্তু রায়জাদা!!!! মানে ( আশ্চর্য হয়ে)
সায়ন কিছু একটা ভেবে প্রিন্সিপাল স্যার এর রুমে গেল।
প্রিন্সিপাল স্যার : আরে সায়ন কিছু বলবে? বসো।
সায়ন : স্যার আমি একজন সম্পর্কে কিছু জানতে চাই যদি আপনি বলতেন।
প্রিন্সিপাল স্যার : হ্যাঁ, অবশ্যই বলো কার সম্পর্কে জানতে চাও।
সায়ন : তনু।
প্রিন্সিপাল স্যার : তনু আমাদের কলেজে আজ পাঁচ বছর ধরে আছে। অনেক ভালো একটা মেয়ে। বাচ্চা নিয়ে থাকে এখানে।
সায়ন : আর ওর হাসবেন্ড??
প্রিন্সিপাল স্যার : ওর হাসবেন্ড নেই। জিজ্ঞেস করলে ও কখনো বলে নি তাই আমিও জিজ্ঞেস করি নি।
সায়ন : ( এর মানে টা কি? ও তো বিয়ে করেছে তাহলে ওর বর কোথায়? আর ওর মেয়ের নাম রায়জাদা কিভাবে? তাহলে কি অন্তু!!!) আচ্ছা স্যার আসি তাহলে।
সায়ন প্রিন্সিপাল স্যার এর রুম থেকে বের হয়ে একজন লোককে কল করে তনুর ডিটেইলস বের করতে বলে গাড়িতে উঠে বসলো।
তনু বাসায় এসে মেয়েকে ফ্রেশ করিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে নিল। অন্তু ফোনে গেইমস খেলায় বিভোর হয়ে আছে আর তনু,,
তনু : ( তুমি আবার আমার লাইফে এসেছো কেন সায়ন? আমি তো সব ছেড়ে চলেই এসেছিলাম। তোমার থেকে দূরে নিজের শহর ছেড়ে এই অচেনা জায়গায়। যেখানে আমার বলতে কেউ নেই। কতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমার নিজের বলতে এখন শুধু অন্তু আছে। আমি চাই না তোমাকে। আমি তোমাকে ঘৃণা করি সায়ন।)
এসব ভাবতে ভাবতে যে কখন চোখ দিয়ে পানি পরছিল তা বুঝতে পারে নি তনু। অন্তু মায়ের দিক তাকিয়ে দেখে তনুর চোখ দিয়ে পানি পরছে।
অন্তু : মাম্মাম তুমি কান্না করছো কেন? কেউ কি তোমাকে বকেছে? বল আমি তাকে পিট্টি দিয়ে দিব। ( চোখ মুছে দিয়ে)
তনু : ওরে আমার মাম্মাম রে। এতো বড় হয়ে গেছে আমার মেয়েটা। ( গাল টেনে)
অন্তু : আমি এখন স্কুল এ পড়ি বুঝতে হবে তো। আমি এখন অনেক বড়।( ভাব নিয়ে)
তনু : হ্যাঁ, বুঝেছি অনেক বড় হয়েছেন। এবার চলেন আপনাকে খাইয়ে দেই।
অন্তু : ওকে মাম্মাম।
তনু অন্তুকে খাইয়ে রুমে চলে এলো। অন্তুকে ঘুম পারানোর জন্য।
অন্তু : মাম্মাম শুনো না
তনু : হুম বলো
অন্তু : বাবাই কবে আসবে? তুমি বলেছিলে আমি স্কুলে পড়তে শুরু করলে আসবে। এখন তো আমি স্কুলে পড়ি। বল না, মাম্মাম বাবাই কবে আসবে।
তনু : হুম খুব শীঘ্রই আসবে। তুমি ঘুমাও। ( বলে অন্তুর চুলে হাত বুলাতে লাগলো)
অন্তু ঘুমিয়ে পরেছে দেখে তনু অন্তুর কপালে চুমু দিয়ে উঠে বারান্দায় চলে এলো৷ তনু ভাবছে অন্তুকে ও কি বলেছিল আগে। একদিন অন্তুকে নিয়ে মাঠে গিয়েছিল তনু। ওইখানে অনেক বাচ্চারা তাদের বাবা-মায়ের সাথে এসেছিল তা দেখে অন্তু জিজ্ঞেস করেছিল ওর বাবা কোথায়,,, তখন তনু বলেছিল যে ওর বাবা একটা সিক্রেট মিশনে গেছে ও স্কুলে ভর্তি হতে হতে চলে আসবে। কিন্তু এখন!! একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুমে চলে এলো।
সায়ন এখানে ওদের কিনা একটি ফ্লাটে উঠেছে। সায়ন যাকে তনুর খোজ নিতে বলেছিল সে কল করায় সায়ন বারান্দায় চলে এলো। লোকটির কথা শুনে সায়ন যেন আর নিজের মাঝে নেই। ওইদিন তনু বিয়ে করে নি এমনকি বাড়িতে আর ফিরেও যায় নি। ওইদিন এর পর থেকেই তনু নারায়ণগঞ্জ থাকে আর তার ৭ মাস পরই অন্তুর আগমন। তাই সায়ন ঠিক করেছে ও তনুর সাথে কথা বলবে।
সায়ন : আমি যা করেছি তা আমি করতে চাই নি তবুও আমিই সব কিছুর জন্য দাই। আমি তোমার সামনে কিভাবে দাঁড়াব জানিনা। ক্ষমা চাওয়ার মুখও নেই। আসছি আমি কাল যা হওয়ার হবে।
In morning,,,
বাইরে থেকে আসা আলোর দিকে তাকিয়ে আছে তনু। সারা রাত না ঘুমিয়ে পার করেছে ও। কতো নির্ঘুম রাত কেটে গেছে তনুর। অন্তুর মুখ দেখে নিজের কষ্ট গুলো ভুলতে শিক্ষেছিল কিন্তু আজ কেন যেন একটা ভয় জেগে উঠেছে মনের মধ্যে। তনু নিজের ভাবনার থেকে বের হয়ে অন্তুকে ডাকতে লাগলো।
তনু : অন্তু বেবি উঠো। তুমি না লক্ষী বেবি আমার।
অন্তু : উম,,,,,,
তনু : উঠ না রে মা। কাজ আছে তো আমার। তুমি না বললা তুমি এখন বড় তাহলে আমার কেন ডাকা লাগছে।
অন্তু : নাহ আমি তো এখনো বাবু। দেখ না আমার মাম্মাম আমাকে বেবি বলে।
তনু : ওরে দুষ্টু। এতোক্ষণ জেগে জেগে মাম্মাম এর সাথে এক্টিং করছিলে।দাড়াও দেখাচ্ছি মজা। ( বলে অন্তুকে সুরসুরি দিতে লাগলো)
অন্তু : মাম্মাম! হা হা হা হা প্লিজ হা হা আর দিও না। হা হা ( হাসছে অন্তু)
তারপর তনু আর অন্তু রেডি হয়ে বের হলো কলেজের উদ্দেশ্যে। অন্তু কলেজে বসেই অনলাইন ক্লাস করবে।
কলেজে এসে তনু অন্তুকে অফিস রুমে রেখে ক্লাস করাতে চলে গেল। আর অন্তু জুমে নিজের ক্লাস করছে।
সায়ন মাত্র কলেজে এসেছে। কলেজে এসে নিজের রুমে যাওয়ার সময় ওর চোখ যায় অফিস রুমে বসে থাকা অন্তুর দিকে। ও অফিস রুমের দিকে পা বাড়ালো,,,
#চলবে
⭕⭕আজ বজ্রপাত এর কারণে আমাদের বাসার রাউটার জ্বলে গেছে তাই দুপুরে গল্প দিতে পারি নি।
গল্প কেমন হয়েছে আপনারা প্লিজ কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের কমেন্ট পেলে আমার লিখতেও ভালো লাগবে। তাই আশা করি আপনারা গল্প ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট ও রিয়েক্ট করবেন।
সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। ??