দেবী পর্ব ৩২

0
335

#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি (ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
৩২ঃ

প্রতিক্ষার পর ভালোবাসার মানুষ টিকে বিয়ে করে কাছে পেয়ে ও যেন পেলো না বকুল। পরিবারের সকল কে রাজি করিয়ে সেই বিয়ে হলো অথচ বিয়ের দিন ই হত্যাকাণ্ডের জন্য ওবিবাহিতা স্ত্রী ঠিক ভাবে কথাও বলছে না। বকুল বার বার কক্ষের দরজা দিয়ে উকি দিচ্ছে কখন আসবে সামিয়া। চলে যাওয়ার আগে একটা বার আলিঙ্গন ও কি করতে পারবে না নিজ স্ত্রীকে।

বকুল ধৈর্য্য হারা হয়ে নিচে নেমে এলো। বসার ঘরে ঢুকতে যাবে তখন মনে হলো এত গুলো মানুষের মধ্যে নিজে গিয়ে সামিয়া কে ডাকা লজ্জার ব্যাপার। তাই বুদ্ধি করে কাউ কে খুজলো। সেখান দিয়েই যাচ্ছিল রানু। রানু কে দেখে বকুল ডাকলো,” আপনি শুনছেন”

রানু বললো, “জি দুলাভাই কন,,কিছু দরকার? ”
–” না মানে দরকার নেই। সামিয়া কে একটু ডেকে দেবেন? ”
–” হ্যাঁ দিমু না কেন আমি এখুনই কইতাছি?”
–” ধন্যবাদ। আর হ্যাঁ বলবেন যে আমি কক্ষে অপেক্ষা করছি। আর আস্তে ধীরে বলবেন গুরুজনেরা আছে!”
–“আইচ্ছা, আপনে যান দুলাভাই। ”

বকুল সোজা সামিয়ার কক্ষে যেয়ে বসে পড়লো। কিছুক্ষণ পর সামিয়া কক্ষে এলো। এসে
বললো, “কিছু বলবেন? ”

–“হ্যাঁ, বসো আমার পাশে। কিছু কথা ছিল। ”

সামিয়া দুরত্ব বজায় রেখে বকুলের পাশে বসলো। বকুল দূরত্ব ঘুচিয়ে সামিয়ার নিকটে বসলো হাত দুটো ধরে বললো, “আমি আজ চলে যাবো সামিয়া।”

সামিয়া বকুলের দিকে চাইলো। সামিয়া বলতে চাচ্ছিলো যাবেন না। কিন্তু মুখ ফুটে বললো, “ওহহ”

বকুল আবারো বললো, “দেখো যেটা হয়েছে সেটা হয়তো আর ফিরে আসবে না। নিজে শক্ত হও আর আম্মাকেও শক্ত হতে বলো।এভাবে ভেঙে পড়লে
জীবন চলবে না।”

–“হুম ভেঙে পড়ি নি আমি। আর কিছু বলবেন কি? ”

–“হ্যাঁ, মা চায় তুমি আমার সাথে ঢাকা চলো কিন্তু এই দুর্ঘটনার জন্য আমি তোমায় নিয়ে যেতে চাই না। সেই সাথে তোমার পরীক্ষাও আছে। ”

–“আপনি নিয়ে যেতে চাইলেও আমি যেতাম না। ”
–“হুহ,আমি আমার সামিয়া রানি কে আমি চিনি। সে যে যাবে না সেও বুঝেছি তাই মাকে রাজি করিয়েছি।”

–“ধন্যবাদ, আর এখানে থাকা টা আমার দরকার।”

বকুল সামিয়ার গালে হাত রেখে বললো,”হুম, আর তুমি না চাইলে আমি জোর করবো এমন মানুষ আমি নই। ”

–” সাবধানে যাবেন, আর নিজের খেয়াল রাখবেন। ”

–” হ্যাঁ,তবে সুযোগ পেলেই তোমাকে চিঠি লিখবো।
তুমি না হয় দু মিনিট সময় অপচয় করে পড়ে নিয়ে
পড়ে নিও আমার চিঠিটি।”

–“আপনার চিঠি পড়তে আমার সময় অপচয় হবে এমন ধারণা রাখেন। আপনি আমার স্বামী আপনার চিঠি আমার কাছে অমুল্য উপহার হবে।”

বকুল সামিয়ার কপালে চুমু খেয়ে বললো, “বেশ তুমিও না হয় সময় পেলে একখানা চিঠির উত্তর লিখো আমার নামে। ভালোবেসে পরম যতনে গ্রহণ করবো।”

সামিয়া সকল কথা ভুলে বকুলকে জড়িয়ে ধরলো। বললো, ” আমার আপনার কথা খুব মনে পড়বে।”

–“আমারও অনেক মনে পড়বে আমার দুষ্টুরানি কে।”

_________________________

বকুলের পরিবার বেড়িয়ে পড়লো সিরাজী মঞ্জিল থেকে। গতবারের ন্যায় অত সুন্দর বিদায় তাদের দেওয়া হলো না।লেখিকা স্রোতস্বীনি। তবে নিয়ম মতো যতটুকু করতে পেরেছে করা হয়েছে। রুহুল ব্যাস্ত থাকায় মহীবুল কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের এগিয়ে দেওয়ার। মহীবুল মনে মনে বিরক্ত হলেও মুখ প্রকাশ করলো না। মহীবুল তাদেরকে নিয়ে গেলো এগিয়ে দিতে।

সবাই বসার ঘরে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এর ই মাঝে তড়িপা জানালো ফাতিমা এসেছে। কাকন খুশি হয়ে দৌড়ে গেলো ফাতিমার কাছে। কতদিন পরে আবার ফাতিমার সাথে দেখা হবে। কাকন ফাতিমাকে যেয়ে নিয়ে এসে বসার ঘরে গেলো। ভদ্রতার খাতিরে সকল কেই সালাম দিলো ফাতিমা। কিছুক্ষণ মালেকার কাছে বসে থাকলো সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদ শুএন ফাতিমার কষ্ট হলো।সেও একসময় সন্তানের জন্য কেদেছে। কাকন জানে ফাতিমা কারো সন্তান কে কত ভালোবাসে।

ফাতিমার মনের কথা বুঝে কাকন ফাতিমাকে নিজ কক্ষে নিয়ে গেলো। এই প্রথম ফাতিমা কাকনের শোবার ঘর দেখলো।এত সুন্দর ঘর দেখেই ফাতিমার মন ভড়ে গেলো। কাকনের সুখ দেখে খুশি হলন।
ফাতিমা কাকন কে বললেন, “এইখানে তুই মেলা সুখে আছা তাই না রে কাকন।”

–“হুম সে আছি আর কি। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়লা ভালোই রেখেছে। ”
–“আমি সবসময় দুয়া করি তর লিগা যাতে তুই সুখে থাকোস। তুই যে আমার মাইয়া। ”

কাকন ফাতিমার হাত ধরে বললেন, “আর আপনি আমার মা। ”

–” এই জন্যই ভয় হয় কাকম। নিজে অল্প বয়সে বেধবা হইছি তরে তা হইতে দেখবার পারুম না। তুই রুহুল সাব রে দেইখা রাখিস মা। ”

–“এভাবে বলছেন কেন হঠাৎ আপা।”
–“পুরা সিরাজপুরে আতঙ্ক। প্রথমে বিলাল সিরাজীর কেমনে কি হইলো। আবার তর দেওর হেলাল অকালে মরলো। আমার এখুন রুহুল সাব রে নিয়ে ডর হয়। ”

–“আপনি ভয় পাবেন না আপা। আমার বিশ্বাস ওনার কিছুই হবে না। ওনার মতো সৎ মানুষ হয় না।আর সৎ ব্যক্তিদের আল্লাহ তায়লা নিজে রক্ষা করে। ”

–“তর বিশ্বাস অটুট থাকুক। তবে তুই ও চোখ কান খোয়াল রাখিস।তর চাচা শশুড় এর মতলব ভালা না।”

–“সে আমি জানি আপা। তবে ঘরের মানুষদের শত্রু প্রমাণ করা দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজ। ”

–“হুম তয় এই দুঃখের সময় একখান সুখবর আছে। ”
–‘কি সুখবর আপা। ”
–” নুপুর পুয়াতি হইছে। আর ফুলের ও বিয়া আইছে ভালো ঘর থিকা। আশা করি বিয়া দিয়া দিমু। ”

–“সত্যি আপা এটা তো অনেক ভালো খবর। শুনে
খুব খুশি হলাম আপা।”
–“হুম তর দাদা শশুড় বিয়ার খরচ দিবো। তরে যাইতে দিলে যাস। ফুল খুশি হইবো।”

–“চেষ্টা করবো।” কথাটি বলে কাকন আলমারি খুললো। তারপর কিছু টাকা ফাতিমার হাতে দিয়ে বললো,”রাখুন এগুলো। নিজের মতো করে খরচ করবেন। ”

ফাতিমা কাকনের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে বললো,” না আমি কেন টাকা নিমু। তর টাকা তুই রাখ। ”

–“না আপা, আপনি রাখুন। আমি না আপনার মেয়ে। মেয়ের দেওয়া জিনিস ফেরাতে নেই। ”

–“কিন্তু কাকন তুই বোঝার চেষ্টা কর। মাইয়ার শশুড় বাড়ি থিকা টাকা নেওয়া খুব লজ্জার কাম।কেউ দেখলে খারাপ হইয়া যাইবো।তরেও খারাপ কইবো।”

–” আপনি কাউকে বলবেন না যে আমি দিয়েছি তাহলে কেউ জানবেও না।আর এগুলো আপনি নিজের চিকিৎসা করবেন। আপনার বুকের ব্যাথার ওষুধ কিনে খাবেন কেমন। আপনি ভালো নেই আপা আপনার চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।”

ফাতিমা কাকনের কথায় কেদে দিলো।বললো, “আমার জন্য এত ভাবোস তুই। তুই আমার পেটের সন্তান না হইলেও আমার মাইয়া।আয় বুকে আয়।”

______________________

জামাল সিরাজী বাড়ির কান্না কাটি দেখে বিরক্ত।
বকুলতলার আগে মসজিদের সামনে ফারুকের চায়ের দোকানে বসে আছে জামাল।একটা কড়া চা খাবে। একেই তিনদিন হলো মদ খেতে পারছে না। তার উপর কান্নাকাটি তার অসহ্য লাগছে। আবার হাত নিয়েও ভোগান্তি তে পড়েছে।লেখিকা স্রোতস্বীনি। এক হাত দিয়ে কাজ করাটা বেশি কষ্টের। হাতের দিকে চাইলেই সেদিনের ওই দৃশ্য ভেসে উঠে চোখের সামনে~~

জামালের দায়িত্বে থাকা আম বাগানের ছোট্ট ঘরে বসে মহীবুল, হেলাল আর জামাল তাশ খেলছিল। পিছন থেকে এসে রুহুল লা”থি মেড়ে দিলো জামাল সিরাজীর পিঠে বরাবর । যার ফলে জামাল সিরাজী উপুড় হয়ে পড়ে যায় নিচে।

জামাল অশ্রাব্য গালি দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। হাত বাড়ায় মারার জন্য মহীবুল। নিজে। কিন্তু রুহুলের রক্ত চোখের দিকে চেয়ে আর সাহস হয় না রুহুলকে কিছু বলার।

জামাল রুহুলের কলার ধরে বলে, ” তর সাহস এত্ত বড় হইয়া গেছে।তুই আমার গায়ে, তর চাচারে লা’ত্থি দেস।”

রুহুল নিজের কলার ছাড়িয়ে জামালের হাত মুছড়ে বলে,”তোর সাহস কি করে হয় আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেছিস।আমার স্ত্রীর চুলের মুঠি ধরেছিস তাই না। তোর মাথার একটা চুল ও আস্তো রাখবো না আমি। ”

জামাল হাত এর ব্যাথায় আর্তনাদ করে ওঠে। মহীবুল রুহুলের হাত থেকে নিজের বাবাকে ছাড়াতে আসে। হেলাল ও যোগ দেয়। তারপর রুহুল ছেড়ে দেয় জামাল কে। কিন্তু হাত এর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

হেলাল রুহুল সামনে এসে অনুরোধের সুরে বলেছিল,” দাদাভাই, মাফ কইরা দেন চাচাজান রে। সে আমাগো আব্বার মতো। হের গায়ে হাত তুলতাছেন। দাদাজান শুনলে আপনের উপর নারাজ হইবো। ”

–“যা দাদাজান কে যেয়ে বল রুহুল চাচাজানের গায়ে হাত তুলেছে। পারলে এটা ও বলবি কেন তুলেছে। ”

মহীবুল বললো, “কেন তুলছেন শুনি দেহি। আপনের বউ আমার আব্বারে ধাক্কা দিয়া যে মাথা কাইটা দিছে তার বেলা ?”

রুহুল মহীবুলের গালে থাপ্পড় মেড়ে বলে,” তুই আসলেই একটা ********। নিজের আম্মার গায়ে তোর বাপ হাত তোলে আর তুই তোর আব্বার অন্যায়ে সায় দেস। আরে আমার স্ত্রী অন্তত তোর মত না যে অন্যায় সহ্য করবে। বেশ করেছে তোর আব্বাকে ধাক্কা দিয়েছে।”

–“তাইলে আমার আব্বা ও ঠিক করছে আপনের ওই ফকিন্নি বউ রে চুলের মুঠি ধরছে। ”

–“আমার বউ ফকিন্নি নাকি রাজরানি সেটা তোর না বললেও চলবে। আর কান খুলে শুনে রাখ জামাল সিরাজী আর একবার যদি আমার স্ত্রীর গায়ে টোকা দেওয়ার ও সাহস করিস তাহলে মনে করে নিস রুহুল সিরাজী তলোয়ার চালাতে কতটা পারদর্শী।”

কথাটি বলেই রুহুল চলে যেতে নেয় কিন্তু জামাল রাগের মাথায় ভুল করে বসে। রুহুলের দিকে চেয়ার তুলে ঢিল মারে কিন্তু সেটা রুহুলের লাগে না। উল্টো রুহুল ক্ষেপে যেয়ে জামালের হাতে সেই চেয়ার দিয়ে ইচ্ছে মতো পেটাতে থাকে। জামালের চিৎকারে সকলেই কেপে ওঠে। কিন্তু কিছু বলার সাহস হয় না।

হাত যখন রক্তাক্ত হয়ে যায় তখন রুহুল ছেড়ে দেয়। পকেট থেকে টাকা বের করে মহীবুলের হাতে দিয়ে বলে, “চিকিৎসা করে নিস তর আব্বার। এই ঘটনা যেন কেউ না জানে। তাহলে তোদের বাপ-বেটার কুকীর্তিও ছড়াতে সময় লাগবে না। আর হ্যাঁ মঞ্জিলে বলবি পা পিছলে পড়ে যেয়ে হাত ভেঙেছে। ”

তারপর আরেক দফা জামালের পায়ে লাত্থি মারে। আর বলে, “এটা চাচি আম্মাকে মারার জন্য।”

সেদিন জামালের চিৎকার কেউ শোনেনি। ছেলেকে নিয়ে কুকর্মের সব প্রমাণ রুহুলের কাছে আছে তাই দুলাল সিরাজী বেচে থাকতে রুহুলের কিছু করতে পারবে না। দুলাল সিরাজী এগুলো শুনলে মঞ্জিল হিতে বিতারিত হবে।এই ভয়ে নিরুপায় জামাল।

ফারুকের কথায় সেদিনের ঘটনা থেকে হুশে ফিরলো জামাল।
ফারুক ফোকলা দাতের হাসি দিয়ে বললো, “আপনের চা,, এই নেন খাইয়া দেহেন। ”
জামাল চা ছুড়ে ফেললো তারপর বললো, ” আবার বানা। ”

অন্যকোনো মানুষ হলে ফারুক কানের উপর দিতো দু-তিনটে মাইর। কিন্তু জামালকে কিছু বলার সাহস নেই। হাজার হলেও ফারুক দুলাল সিরাজীর ই লোক।বললো, “ঠিক আছে আপনে যা কইবেন তাই করুম। ”

সেখান দিয়েই যাচ্ছিল সাজু। সচারাচর সাজু কে দেখা যায় না। রুহুলের দেওয়া নানা ফরমায়েশ পালন করতেই সে ব্যাস্ত থাকে। সিরাজপুরের বিখ্যাত পালোয়ান ছিলো সাজু। এই জন্যই রুহুল সাজু কে নিজের খাশ লোক হিসেবে রেখেছে।সেই সাথে
বিশ্বস্ত ও বলা যায়। জামাল সাজু কে দেখে বাকা হেসে এগিয়ে গেলো। এগিয়ে গিয়ে বলল,”আরে সাজু মিয়া নাকি?”

সাজু জামাল কে এখানে আশা করে নি। তবে জামালের কথা শুনে বললো, ” আপনের দেখতাছি বুদ্ধির সাথে সাথে দৃষ্টি ও লোপ পাইছে। ”

–“মানে,, কি তুই কি কইবার চাস? ”

–” না আপনে যে আমারে দেইখা ও জিগাইতাছেন এই জন্য কইলাম দৃষ্টি শক্তি কইমা গেছে। ”

জামাল সাজুর ব্যাঙ্গ করা ঠিক ই বুঝলো।তবে আবার ও বললো, “আচ্ছা সে কইছা কইছাই, বাদ দে। তর জন্য একখান প্রস্তাব আছিল।”

–“হায় আল্লাহ তাই কিসের প্রস্তাব বিয়ার নাকি। বিয়ার প্রস্তাব হইলে আমি রাজি। ”

–“আরে ধুর আগে কথা ডা হুইনা নে তারপর চিল্লা।”
–“আচ্ছা কন দেহি কিসের প্রস্তাব।”

জামাল সাজু কে টেনে নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে গেলো। বললো, “শোন রুহুল আর আব্বা তরে যে টাকা দেয় তার চেয়ে দ্বিগুণ দিমু। আমার হইয়া কাম করবি?”

সাজু বেশ বুঝেছিল এটাই হবে।তবুও বললেন,
–” তাই তা এই টাকা কই পাবেন আপনে।সিরাজী আব্বাই তো আপনেরে টাকা দেয়। তাইলে ঘুরাইয়া ফিরাইয়া হের টাকাই তো পাইলাম। ”

–“আরে ওই সব দিয়া তুই কি করবি। তরে টাকা দিলেই মিটা গেলো। ভাইবা দেখ তর ই কিন্তু লাভ হইবো।”

–“হুম লাভ তো বুঝলাম কিন্তু আমি তো নুন খাইছি রুহুল সিরাজীর তার বেলা।”

–” ওইসব ভুইলা যা, আমার দলে আয় তুই যা
চাইবি তাই দিমু।

–“কিন্তু আমি তো তা করুম না।রুহুল সিরাজীর বিরুদ্ধে আমি যামু না। কারণ আমি আপনের মতো হাটুত বুদ্ধি নিয়া ঘুরি না। পারলে আপনে ভালো হইয়া যান।”

–“তুই আমাক খারাপ ভালো শিখাবি নাকি সাজু। তর ভালোর জন্যই কিন্তু কইলাম। ”

–” অনেক সময় শিখান ও লাগে। তয় আরেকটা কথা কই যেইডা রুহুল সাব জানে না।”
–“কি কইবার চাস হুনি? ”

–“আমি কিন্তু রুহুল সাব রে এখুনো কই নাই হাবিবুল্লাহ রে কেন পাঠাইছিলেন। আমি জানি কিন্তু আপনে গো সংসারে অশান্তি হইবো দেইখা কই নাই। তয় হেলাল ভাই এর খু’নের পিছে যদি আপনের হাত থাকে আমি কিন্তু কইয়া দিমূ।”

–“মা মানে , তুই কি জানোস। আর হেলালের মৃত্যুর পিছে আমার হাত নাই।”

–“মানে খুব সহজ,, রুহুল সিরাজীরে কইলে আপনের কি অবস্থা করবো ভাইবা দেহেন।আর হেলাল রে বাইরের কেউ খুন করছে। তয় হাবিবুল্লাহ আপনের জন্যই মরছে। ”

–“দেখ সাজু কাউ রে কইস না।যত ট্যাহা লাগে দিমু।আব্বাজান আর রুহুল জানি জানে না। ”

–“না কিছু লাগতো না। তা আপনের হাতের কি অবস্থা।”
–” আছে মোটামুটি কুনোরকম।”

–” আগের মতো হইবো কিনা সন্দেহ।আর একটা কথা শুইনা রাখেন আপনের ভালোর জন্যই কইতাছি।ভাবিমার ক্ষতি করতে চাইয়েন না। এইবার হাত ভাংছে পরের বার না আপনের অন্যকিছু ভাংতে পারে। ”

জামাল ঢোক গিলে বললো, “আরে আমি ক্ষতি চামু কেন ওই মাইয়ার। ও তো আমাগো বাড়ির বউ। ”

–” তাইলে যে লোক ভাড়া করছিলেন ভাবিমা রে খুন করার জন্য তার বেলা হাহ?”

চলবে,,,,,,,,
#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি

বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না।ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করে পাশে থাকবেন,।ধন্যবাদ।

®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here