দেবী পর্ব ২৩

0
260

#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি (ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
২৩ঃ

বকুল-সামিয়াদের আলাপ করতে দিয়েই বিন্তি কাকন কে নিয়ে বেরোলো। কাকনের সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেলো যেদিন রুহুল তার দিকে হা করে চেয়ে ছিল। রুহুলের প্রথম কথা শুনেই লজ্জায় রাঙা হয়ে গিয়েছিল মুহুর্ত টি আজও লজ্জা দেয় কাকনকে।

বিন্তি কাকনের কাছে আবদার করেছে সে মহল দেখবে। আগে কখনোই এমন পুরনো জমিদার বাড়ি দেখা হয় নি তার। তাই কাকন ও সম্মতি জানালো। তিনতলা জমিদার বাড়ি। নিচতলায় সকল গুরুজন রা থাকে। আর দোতলায় রুহুল,মহীবুল, হেলাল, সামিয়া সহ আরো অনেক কক্ষ। তার মধ্যে কয়েকটা কক্ষ অতিথি দের জন্য। তবে কাকন এখন অব্দি তিনতলায় যায় নি। সব গুলোই অকেজো বলেছিলেন দাদিমা। তাই কাকম ও আগ্রহ করে নি। তবে সুযোগ বুঝে একদিন আসতে চেয়েছিল তিনতলায় কিন্তু সম্মুখীন হয়েছিল দুলাল সিরাজীর তারপর আর আসে নি।

দোতলার সব কিছুই দেখে বিন্তি বেশ মুগ্ধ।প্রত্যেকটা কক্ষ,প্রত্যেক টা আসবার সব কিছুই পুরনো আমলের আভিজাত্য যা বিন্তিকে মুগ্ধ করলো। বিন্তি সখ করলো এরপর সে আবার আসবে। আর অনেকদিন থাকবে তখন প্রত্যেক টা আকর্ষণীয় বস্তুর ছবি এঁকে নিয়ে যাবে। কাকন ও আর কিছুই বললো না।
দোতলা পার করে তিন তলয় যাবে এখন। বিন্তি বললো, “আআচ্ছা ককাকন ততোমার ব্বাড়ি ককোথায়? ”

কাকন স্পষ্ট ভাবে বললো, “আমার কেউ নেই। তাই আমার বাড়ি ও নেই আপা ”

বিন্তি বললো, “এএভাবে ববলছো ককেন কেউ ন্নেই মামানে,, ররুহুল ভভাই তো আআছে। ”

কাকম হেসে বললো, “হ্যাঁ সে ই তো আছে। সে ব্যতীত আমার আপন বলতে দুনিয়ায় কেউ নেই।উনি ভীষণ ভালো মনের একজন মানুষ”

–“হহুম, ততুমি জ্জানো আমি কিকন্তু রুহুল ভাই ককে পপছন্দ ককরতাম। এএইজন্যই তোতোমাদের বিবিয়েতে আসিনি।”
রুহুলকে অন্য নারী পছন্দ করে কথাটি কাকনের পছন্দ হলো না। তবুও বলল” হ্যাঁ অনেকেই চায় ওনাকে তবে সে শুধুই আমার”

–তুতুমি অঅনেক ভভাগ্যবতী ওনাকে জজীবন সসঙ্গী হিসেবে পেপেয়েছো।

কাকন মুচকি হেসে বললো , “সত্যি আমি ভাগ্যবতী ওনাকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে। ওনার ভালো বাসা,যত্ন সব কিছুই আমাকে ওনার প্রতি আকৃষ্ট হতে বাধ্য করেছে। জানেন আমি ওনাকে বিয়ে করতে চাই নি। কিন্তু এখন আমি সারাজীবন ওনার সাথে থাকতে চাই ” (লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

বিন্তি বললো, “হহ্যাঁ রুরুহুল ভাভাই অঅনেক ভালো মনের মামানুষ। রুরুহুল ভাভাই কে বুবুঝি অঅনেক ভালোবাসো কাকাকন।”
বিন্তির এমন কথায় কাকনের পা থেমে গেলো। কাকন একবার বিন্তির দিকে চাইলো তারপর বললো, ” ভালো বাসি কিনা জানি না আপা। লেখিকা স্রোতস্বীনি। তবে শেষ নিশ্বাস অব্দি ওনার সোহাগ নিয়েই বাচতে চাই। আমার শেষ ঠাঁয় যেন ওনার বুকেই হয়। মরনের আগে ওনার হাসিমুখ দেখতে চাই।”

বিন্তি কাকনের অনুভূতি বেশ বুঝতে পারলো। বিন্তি কাকন কে বললো, “তুতুমি এই টুকু ববয়সেই অনেক বেবেশি বুদ্ধিমতী কাকাকন। ”

–“সময় মানুষকে সব কিছু শিখিয়ে দেয় আপা। আমিও সময়ের শিক্ষায় পরিপক্ক ”

বিন্তি আর কাকন তিনতলায় উঠে গেলো। প্রত্যকেটি কক্ষে তালা ঝুলানো। কেউ থাকে না বিধায় এখানে ধুলো বালি জমে আছে। কাকন আর সামিয়া তিনতলার বেশিরভাগ অংশই দেখলো। তবে তিন তলা কেমন যেন অদ্ভুত। দোতলা আর নিচতলায় একই রকম করে বানানো। অথচ তিনতলা ভিন্ন ভাবে বানানো। কক্ষ গুলো ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়। কাকন আর বিন্তি ঘুরে ঘুরে দেখছে সব। তবে তিনতলার সব কিছু দেখতে দেখতে একেবারে শেষের দিকে চোখ গেলো হাতের বামে একটা ফাকা অংশ। আশেপাশে জানালা নেই। আর যা আছে সব বন্ধ।
বিন্তি এবার ভয় পেলো। কাকনের হাত ধরে বললো, “ককাকন চচলো নিনিচে যযাই, আআমার খুখুব
ভভয় ককরছে।”
কিন্তু কাকনের কেন যেন ওই সরু দিকটায় ঢুকতে ইচ্ছে করছে। কাকন বিন্তির হাত শক্ত করে ধরলো। তারপর জানালা খুজতে লাগলো। কিন্তু সে রকম পেলো না।তবে হালকা আলো আসছে বাহির হতে। কাকন সেই সরু গলির মতো অংশ টা অনুসরণ করলো। কিন্তু কিছুদুর যেয়েই দেখলো পুরনো ভাঙা আসবাব পত্র দিয়ে আটকে আছে। সেই সাথে নানা আবর্জনা ও আছে।তবে কাকনের কেন যেন মনে হচ্ছে সামনে একটি কক্ষ আছে। হালকা আলোয় দরজার মতো কিছু একটা দেখা যাচ্ছে। দুদিকে দেওয়াল উপরে ছাদ এটা নিশ্চিত গুপ্ত কোনো কক্ষে যাওয়ার পথ এই জন্য এভাবে আড়াল করে রাখা হয়েছে।

এদিকে বিন্তি বার বার এখান থেকে যাওয়ার জন্য জোর করছে কাকন কে। কাকন বিন্তির অবস্থা বুঝতে পারলো। তাই দুজনেই নেমে এলো তিন তলা থেকে।
কাকন ভাবলো সে রুহুল কে জিজ্ঞেস করবে যে ওই কক্ষে আগে কি ছিল। যেহেতু এটা একটা জমিদার বাড়ি তাই হয়তো কোনো গুরুত্বপূর্ণ কক্ষ ছিল। কাকন রুহুল কে নিয়ে সেই কক্ষ দেখবে। কারণ আর যাই হোক রুহুল কাকনের ইচ্ছা কখনোই ফেলবে না।
___________________

বিন্তি আজ সামিয়ার সাথেই থাকবে। তাই বিন্তিকে সামিয়ার কক্ষে দিয়ে এসে কাকন রন্ধনশালায় গেলো।
বকুলের মা সেখানে বসে আছে। কাকন কে দেখেই মালেকা কাজের হুকুম দিলো। অজ্ঞতা কাকন কাজ করতে ব্যস্ত হলো।তবে বাড়ির সকলের মুখে হাসি দেখে কাকনের ভালো লাগলো।
তবে আজ মালেকা সবচেয়ে বেশি খুশি। মেয়ের জন্য ভালো পাত্র পেয়েছে। বেয়াই-বেয়াইন দের আতিথেয়তায় কোনো কমতি রাখবে না। তাই হরেক রকমের রান্না চড়ানো হলো আজ। আর এমনিতেও সিরাজী মঞ্জিলে মেহমান দের সম্মান সবার আগে। মেহমান দের আপ্যায়ন করার রীতি অমান্য কেউ করতে পারে না।(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

সুভা রান্না করছে। যেহেতু কাজের লোক দের চুলোয় হাত দেওয়া নিষেধ তাই সকল রান্না বাড়ির মেয়ে-বউ দের কেই করতে হয়। সুভার আজ যেন খুব জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে। সিরাজী মঞ্জিলে আসা সকলেই যদি মেহমান হয় তবে সুভার পরিবার থেকে যখন এসেছিল তখন কোথায় ছিল এই আতিথেয়তা। কেন সুভার বেলায় হয়নি। তবে সুভা মুখ ফুটে বললো না।

কিছুক্ষণ পর সুভা কাকনের কাছে পানি গরম করে দিলো।পানি ঠান্ডা হলে এই পানি দিয়ে ওষুধ খাইয়ে দিতো বললো বিলাল সিরাজী কে। যেহেতু সুভা কাজ করছে আর এখন ওষুধ খাওয়ানোর সময় হয়েছে তাই কাকনকেই বললো।
সুভার কথা মতো কাকন বিলাল সিরাজীর কক্ষে গেলো। আজ সে প্রথম একা এই কক্ষে যাচ্ছে। দরজার কাছে সর্বদা একজন বলিষ্ঠ দেহের অধিকারী পাহারাদার থাকে যে বিলাল সিরাজী কে পাহারা দেয়। কাকন কে দেখেই যেতে দিলো। কাকন বিলাল সিরাজীর কক্ষে গেলো। তারপর বাটিতে ওষুধ গুড়ো করলো। লেখিকা স্রোতস্বীনি। পানি মিশিয়ে সম্পুর্ন ওষুধ টুকু চামচে নিলো। এরপর বিলাল সিরাজীর মাথা উচু করে সম্পুর্ণ ওষুধ ঢেলে দিলো। কিন্তু বিলাল সিরাজী ওষুধ খাওয়ার সময় অর্ধেক ওষুধ ফেলে দিলো। পুরোপুরি ভাবে গিলতে পারে নি।
কাকন পাশে থাকা গামছা দিয়ে ওষুধ টুকু মুছে দিলো। বিলাল সিরাজীর চোখ মুছে দিয়ে হাসি মুখে বললো, “আপনার জন্য সুখবর আছে আব্বা।সামিয়ার বিয়ে ঠিক হয়েছে আপনার খোকার বন্ধুর সাথে। আপনাকে তো তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে হবে নাকি। কাল থেকে কিন্তু ওষুধ সব টুকু খেতে হবে কেমন। আমি চাই আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন ”
বিলাল সিরাজী আবারো দুচোখ ভরে জল ছাড়তে লাগলো। কাকন এক পলক দেখে চলে এলো। আদোও কি ঠিক হবে লোকটা। যেই ওনাকে মেরে থাকুক না কেন নৃশংস ভাবেই মেরেছে এই জন্যই এই অবস্থা।

যেহেতু বিলাল সিরাজী কক্ষ একেবারে শেষ প্রান্তে তাই সেখান থেকে খুব সহজে বাইরের কিছু শোনা যায় না। কাকন বিলাল সিরাজীর কক্ষ পার করে বাকি দুই কক্ষ পার করে আসবে ওমনি কানে এলো কারো কান্নার আওয়াজ। কাকনের পা থেমে গেলো।
কাকন এদিক ওদিক উকি দিয়ে দেখলো আওয়াজ টি জামালের ঘর থেকে আসছে। কাকন কিছুটা এগিয়ে গেলো শোনার জন্য।ঘর থেকে শোনা যাচ্ছে —
–“আমারে মাফ কইরা দেন। ভুল হইয়া গেছে আর হইবো না, আপনের পায়ে পড়ি ”
–“মা** আমার পিছে গোয়েন্দা হস, আমার খাওয়া নষ্ট করস আইজ তরে খুন করমু। খালি মহীর মুখের দিক চাইয়া তক এই বাড়ি রাখছিলাম। শা** মর তুই ”
–“খোদার কসম আমি বুঝি নাই, আহ আহ মাগো আর মাইরেন না,মাফ কইরা দেন।”
এটুকু শুনেই কাকন আৎকে উঠলো। তার মানে জামাল সিরাজী চাচি আম্মা কে মারছে। কিন্তু এমন অত্যাচার কাকনের সহ্য হলো না। কাকন দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে গেলো। গিয়ে দেখলো মেঝেতে লুটিয়ে আছে মহীবুলের মা আর জামাল এলোপাতাড়ি লাথি দিয়ে দিচ্ছে।
আকষ্মিক কারো আগমন আশা করে নি তারা দুজন। চাচি শাশুড়ি কে এমন অবস্থায় দেখে কাকনের রাগ উঠে গেলো। কাকন তীব্র ক্রোধে জামাল কে ধাক্কা দিলো। যার কারনে জামাল সিরাজীর মাথা যেয়ে পড়লো খাটের হাতলে।
কাকন চাচি আম্মা কে হাত ধরে তুললো। গায়ে চড়ের ছাপ স্পষ্ট। ঠোঁটের কোনা দিয়ে রক্ত পড়ছে। কাকন নিজ হাতে তা মুঝে দিলো।
(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
খাটের হাতলে মাথা লেগে জামালের মাথা বেশ অনেক খানি কেটে গেছে।হাত দিয়ে দেখলো রক্ত পড়ছে যা জামাল সিরাজীকে রাগিয়ে দিলো। জামাল সিরাজী কাকনের চুলের মুঠি ধরলো।ধরে বললো, “ছেমরি তুই আমারে ধাক্কা দেস,, তরে ******* ”

জামালের আচরণ শান্তশিষ্ট কাকন কে আবারও খেপিয়ে দিলো। কাকন নিজেকে ছাড়িয়ে জামালের দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকালো।বললো, “খবরদার ভুলে যাবেন না আমি কার স্ত্রী। আমার শরীরে স্পর্শ করার আগে ভেবে দেখবেন পরিনাম কত টা খারাপ হতে পারে।”

জামাল কিছু টা নত হলো। তবুও বলল ” এই ফকিন্নির মাইয়া, তুই আমার লগে চোখ গরম কইরা কথা কস। তোর সাহস তো কম না ”

–“আমার সাহস আছে কি নেই সেটা আপনাকে বলতে হবে না। তবে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা ভীতুর কাজ। কাপুরুষতার পরিচয় দেয়।তাহলে ভেবে দেখুন আপনি কি? ”
–“কিহ কইলি তুই আমি কাপুরুষ। তর এত বড় স্পর্ধা দেখ তোর কি করি আমি। তর তেল না কমাইলে আমি জামাল সিরাজী না।”

কাকন দু’হাত ভাজ করে দাড়ালো তারপর বললো, “আপনার যা খুশি করতে পারেন।আমি আপনাকে ভয় পাই না। তবে এইটুকু মনে রাখবেন আপনার স্ত্রীর গায়ে এভাবে হাত তোলার শাস্তি আপনাকে পেতে হবে। আমি নিজে দাদাজান কে বলবো আপনার এই সকল কাজের কথা। দিন দুপুরে ঘরে বসে মদ গিলে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা তাই না। ”

–“কি করবি তুই হ্যাঁ কি করবি। আব্বাজান রে কইবি যা ক, সকলেই জানে। এই বাড়িতে আমি প্রথম পুরুষ না যে বউ পিটাই। আব্বাও এককালে আম্মারে মারছে। খালি তর ভা**র তরে কিছু কয় না। তয় কেবল বিয়ার কয়েকমাস তো।সময় যাইক তর পিঠেও মাইর পড়বো।”

এমন কথা শুনে যেন কাকনের গা জ্বলে গেলো। কাকন কিছু বলবে তার আগেই মহীবুলের মা হাত ধরে ধামিয়ে দিয়ে বললেন,”বউ তুমি চইলা যাও। হাত টা ধইরা কই যাও তুমি। বাড়িতে মেহমান আছে। অশান্তি কইরো না। লক্ষী মা আমার যাও চইলা যাও।”

কাকন আর কিছু বললো না। জামাল সিরাজী বললেন,” আপনার করা সকল কাজের শাস্তি আপনি পাবেন। সময় থাকতে নিজের স্ত্রী কে ভালোবাসুন।এমন যেন না হয় মরার আগে স্ত্রীর হাতের পানিটাও মুখে না জোটে। ”
কথাটি বলেই কাকন বেড়িয়ে এলো। তবে ভিতরে ভীষণ ঘৃণা হচ্ছে এটা জেনে সিরাজী মঞ্জিলে স্ত্রীদের এত নির্মম ভাবে পেটানো হয় অথচ স্ত্রীরা কোনো বিচার পায় না। একজন স্ত্রী হয়ে অন্য স্ত্রীর অত্যাচার সহ্য করতে পারবে না কাকন।

কাকন এখন আবার রন্ধন শালায় গেলো। সুভার দিকে পলকহীন ভাবে চেয়ে রইলো। এই শান্তশিষ্ট মানুষ টার প্রতি কাকনের সবচেয়ে বেশি টান। এই মানুষ টাকেও কি বিলাল সিরাজী মে’রেছে আগে। না জানি কত সহ্য করতে হয়েছে।তবে কাকনের সকল প্রশ্নের উত্তর যে সুভার কাছেই আছে যা কাকনকে জানতেই হবে।

সুভা কাকন কে নিজের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো, “কি হয়েছে কাকন মা?”
কাকম মাথা নেড়ে জানালো কিছু হয় নি। অসম্পূর্ণ কাজ করতে লাগলো। তবে মনে মনে ক্ষোভ রয়েই গেলো। (লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
___________________________

বিন্তি ছবি আঁকবে তাই ছাদে নিয়ে গেছে সামিয়া। মুলত ছাদ থেকে সুর্য অস্ত যাওয়ার সুন্দর কিছু মুহুর্ত আঁকবে। বিন্তির এমন নিরিবিলি পরিবেশ ভীষণ ভালো লাগছে। খোলা মেলা জায়গা, নিশব্দতা, গ্রাম্য পরিবেশ সব মিলিয়ে বিন্তি দারুণ উপভোগ করছে।

ছাদের কিনারে দাড়ালো বিন্তি। ওমনি চোখ গেলো গেঈটের কাছে রুহুলকে। দেখলো রুহুল কারো সঙ্গে কথা বলছে। আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে হয়তো কিছু। আর রুহুলের পাশে দাড়িয়ে আছে বকুল। কালো রঙের একটি শার্ট পড়া কনুই অব্দি হাতা উঠানো উজ্জ্বল শ্যামলা রুহুল কে আরো সুন্দর লাগছে। বিন্তি মনে করে দুনিয়ার সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ টি হলো রুহুল। যাকে সে ৬ বছরের অধিক সময় ধরে ভালোবাসে। রুপ গুণ সব ই তো আছে বিন্তির। lলেখিকা স্রোতস্বীনি। কেবল তোতলা সেটা তো আল্লাহর দান। তবুও অনেক চিকিৎসা করিয়েছিল ঠিক হয় নি। রুহুল বকুল কে নিয়ে বাইরের দিকে চলে গেলো। যতদূর দেখা যায় বিন্তি চেয়েই রইলো। সময়ের প্রবর্তনে সব ই অতীত।

সামিয়া বিন্তির এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে
বললো, “এভাবে কি দেখেন আপা?”

বিন্তি কথা ঘুরানোর জন্য বললো, “কিকিছু না। ওই যে বাবাগান দেখছিলাম। ফুল গুলি খুখুব সুন্দর। কাঠগোলাপ, জজবা, ককদম, আর গোলাপ গুগুলো খুব সুসুন্দর লালাগছে। ”

–“হুম আমার কাঠগোলাপ খুব ভাল্লাগে। কিন্তু জবা গাছ গুলা দাদাভাই লাগাইছে ভাবিজান এর জন্য ”

–“বিন্তি বললো, “রুরুহুল ভাভাই লাগিয়েছে কিন্তু জজবাবফুল কেন? ”

সামিয়া হেসে বললো, “দাদাভাই এর মনে হয় যে ভাবিজান একটা ফুটন্ত রক্তজবা ফুল। প্রথম দিন
লাল শাড়ি পইড়া ভাবি রে দেইখা দাদাভাই তো টাস্কি খাইয়া গেছিলো। তারপর আমার গুতা খাইয়া হুশ হইছিল দাদাভাই এর।”

–“রুরুহুল ভাই কাকাকন কে বোধহয় অঅনেক ভালোবাসে তাতাই না সাসামিয়া ”

–“হ খালি ভালোবাসে নাকি চোক্ষে হারায়। বিয়ার আগেই দিওয়ানা হইয়া গেছিলো দাদাভাই।”

বিন্তি সামিয়া কে নিজের মতো করে বললো,
–“যে চরিত্র মানুষের মস্তিষ্ক স্পর্শ করতে পারে না,
সেই চরিত্রটিই মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে। ”

সামিয়া বললো, “এইডা আবার কেমন কথা আপা?”

–“তুতুমি বুবুঝবে না ববড় হও।”

চলবে…..

#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি

বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না। ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here