দেবী পর্ব ২২

0
298

#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি (ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
২২ঃ

সকলে রন্ধন শালা থেকে তরিপার কথা মতো ছুটে এলো। এসে দেখলো হাতভর্তি মিস্টি আর ফলমূল নিয়ে হাজির হয়েছে বকুল আর বকুলের পরিবার।বকুল মা-বাবা, বোন কে নিয়ে এসেছে। হয়তো আসার সময় খুব কষ্ট হয়েছে তাদের।পথের জমা পানিতে হাটু অব্দি ভিজে একাকার।

সুভা এগিয়ে গেলো তাদের দিকে। তারপর সালাম দিয়ে রানুর সাথে পাঠিয়ে দিলো হাত-মুখ দিয়ে আসার জন্য। সব কিছু সেড়ে বসার ঘরে তাদের কে বসানো হলো। সবাই বসার ঘরে উপস্থিত হলেও নেই কেবল সামিয়া। সে তো বকুল কে দেখেই উত্তেজনায় ঘরে খিল দিয়ে বসে আছে। নিজ চোখ কে যেন বিশ্বাস হচ্ছে না সামিয়ার।কাকন একবার চোখ বুলালো কিন্তু সামিয়াকে দেখতে পেলো না।লেখিকা স্রোতস্বীনি। আর এদিকে রানু মেহমানদের সেবার কাজে নিয়োজিত। কিছুক্ষণের মধ্যেই রানু আর তরিপা মিলে নাস্তা দিয়ে টেবিল ভরে ফেললো।

সকলে বকুলের বাবা-মার সাথে কথা বলছেন। বকুলের মা কাকন কে দেখে খুব পছন্দ করলেন।কাকন ও সম্মান দিয়ে কথা বললো। তারপর সুযোগ বুঝে কেটে পড়লো কারণ ও এখন সামিয়ার কাছে যাবে। সামিয়ার যে বউ হওয়ার সময় হয়ে গেছে সামিয়াকে জানাতে হবে তো।

বকুলের চোখ কেবল একজন কেই খুজছে। গত দুমাস যাবৎ যে নারীর অপেক্ষা করছে বকুল তাকে একপলক ও দেখা হয় নি। বকুল মনে মনে ভাবতে লাগলো সামিয়া বোধহয় জানে না সে এসেছে। আবার ভাবছে সামিয়ার বিয়ে হয়ে যায় নি তো। এসেছে বেশ অনেক্ক্ষণ অথচ সামিয়ার খবর নেই। মনটা যেন বড় আনচান আনচান করছে। (লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

কাকন সোজা চলে গেলো সামিয়ার কক্ষের সামনে। দরজার কয়েকবার কড়া নাড়লো। এদিকে দরজায় এমন কড়াঘাতে সামিয়ার আরো হৃদস্পন্ধন বেড়ে যাচ্ছে। একবার ভাবছে দরজা খুলবে আবার ভাবছে যে দরজা খুলবে না।
কাকন বললো, “সামিয়া দরজা খোলো আমি ”
কাকন এসেছে শুনে সামিয়া কিছুটা শান্ত হলো। তারপত দরজা খুলে দিলো। কাকন কক্ষে প্রবেশ করলো।
কাকন সামিয়ার এমন আতঙ্কময় চেহারা দেখে হেসে দিলো। সামিয়ার কাছে যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা লাগলো। সামিয়া মুখ গোমড়া করে বিছানায় খাটের হাতল ধরে বসে পড়লো।
কাকন সামিয়ার কাছে যেয়ে বললো, “কি ব্যাপার এতদিন যার প্রহর গুনেছো সে এসেছে অথচ তুমি ঘরবন্দী কেন দুঃখে বাপু?”

সামিয়া মুখটা ছোট করে বললো,” আমার ভীষণ লজ্জা করছে আর ভয় ও করছে।উনি বলেছিলেন বাবা-মা নিয়ে আসলে বিয়ের কথা বলবেন তাহলে কি উনি সত্যিই বিয়ে করতে এসেছে। আর তাছাড়া দাদাজান যদি রাজি না হয় তখন কি হবে। ”

–” আমি ওনাদের দেখেই বুঝেছি তারা তোমার জন্য প্রস্তাব নিয়েই এসেছে। আর একি কথা দাদাজানের তবে তুমি নিশ্চিত থাকো তোমার দাদাভাই আমাকে বলেছেন সে সব ব্যবস্থা করে দিবে। ”

সামিয়া কাকন কে জড়িয়ে ধরে বললো,”সত্যিই ভাবিজান, দাদাভাই বলেছে সব ঠিক করবে। ”

কাকন সামিয়ার নাক টেনে বললো, “জি সত্যি। ওইদিন রাতে উনি আমাকে বলেছিল বকুল বাবা-মা নিয়ে এলে উনি বিবাহ মেনে নেবে”।

–” আর তুমি আমায় আজ বলছো ভাবিজান। এতদিন কত চিন্তাই না করলাম আমি। ”

–” হুম তোমার ভালোর জন্যই বলি নি। এখন এই রকম ভাবে না থেকে সুন্দর করে পরিপাটি হও দেখিনি।বকুল এর বাবা-মার ও তো তোমায় পছন্দ হতে হবে নাকি ”

সামিয়া বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বললো, “হ্যাঁ তাই তো। কামের বেটি সখিনা হইয়া আছি আমি।ভাগ্যিস ওনাদের সামনে যাই নাই। যাই সাবান দিয়া মুখ ধুয়া আসি ”
কাকন সামিয়ার এমন ভাবে যাওয়া দেখে হাসলো।
(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
_______________________

লতিফ কে দিয়ে খবর দেওয়া হয়েছিল রুহুল কে। বন্ধুর আসার কথা শুনে রুহুল বেশ আন্দাজ করতে পেরেছে যে বকুল কেন এসেছে। রুহুল সাথে করে দুলাল সিরাজী কেও নিয়ে এলো। পরিবারের আসল অবিভাবক তো তার দাদাজান ই। রুহুল তার দাদাজান কে নিয়ে সিরাজী মঞ্জিলে আসলো।

দুলাল সিরাজী আর রুহুল যখন বসার ঘরে গেলো তখন বকুলের পরিবার সালাম দিলো।রুহুল যেয়ে বন্ধুকে আলীঙ্গন করলো তারপর বকুলের পাশেই সোফায় বসলো। বকুল দুলাল সিরাজীকে সালাম করলো।
বকুলের বাবা বললেন, “আসলে চাচা এবার আসল কথাই আসি। আমি যতদুর জানি আপনি এ বাড়ির কর্তা তাই আপনাকেই বলা উচিৎ। আমরা এখানে প্রস্তাব নিয়ে এসেছি আপনাদের মেয়ের জন্য।”

রুহুল বাদে বাকি সকলেই কিছুটা অবাক হলো। দুলাল সিরাজী বললেন, ” আমাদের মাইয়ার জন্য প্রস্তাব।খোলাসা কইরা কইলে খুশি হইতাম”

–“আসলে আমার ছেলে বকুল রুহুলের বোন কে বিবাহ করতে চায়। আর আমাদের কাছে ছেলের মতামত ই সবার আগে। তাই আপনাদের বাড়ির মেয়েকে আমার বাড়ির বউ করতে চাই। ”

দুলাল সিরাজী বকুল কে রুহুলের বিয়েতে দেখেছিল। ছেলেটা যে মন্দ না তখনি বুঝেছিল।দুলাল সিরাজী রুহুলের দিকে চাইলেন। রুহুল চোখ দিয়ে ইশারা করলো মেনে নিতে।
দুলাল সিরাজী বললেন, “বিয়া তো আর দুই দিনের ব্যাপার না। সারাজীবন এক সাথে থাকার চুক্তি।বেশ আপনারা যখন আমাদের বাড়ির মাইয়া নিতে চান আমাদের কোনো আপত্তি নাই।আর বড় কথা হইলো বকুল রে আমার পছন্দ। আশা করি সে আমার নাতনি
রে সুখেই রাখবো। ”

দুলাল সিরাজী যখন কথা বলছিলেন তখন বকুলের জান যায় যায় অবস্থা। দুলাল সিরাজীকে বকুলের ভালো ভাবেই চেনা হয়ে গেছে রুহুলের বিয়ের সময়। অত্যন্ত রাগী স্বভাবের বুড়ো মনে হয়। এত সহজে মেনে নেওয়ার ব্যাপারটা বুঝলো না বকুল। লেখিকা স্রোতস্বীনি। তবে রাজি হয়েছে এতেই বকুলের শান্তি।সামনে থাকা গ্লাসের পানি খেলো বকুল। পানির সাথে সকল দুশ্চিন্তা শেষ করলো বকুল। এখন কেবল সামিয়া কে দেখার অপেক্ষা।

রুহুল এবার বললেন, “আমার কিছু কথা আছে। বকুল আমার বন্ধু ওকে আমার চেয়ে ভালো বোধহয় খুব কম মানুষই চেনে। ও আমার বোনের জন্য সুপাত্র। তবে আমি চাই আমার বোন নিজের মতামত জানাবে।সামিয়া যদি রাজি থাকে তবেই এই বিয়ে হবে। ”

রুহুলের এমন কথা শুনে বকুল মনে মনে ইচ্ছামতো গালি দিলো রুহুল কে। রুহুল বকুলের দিকে বাকা হেসে সকলের অগোচরে চোখ মারলো। বকুল এমন চোখ করলো যার মানে পরে দেখে নেবো তোকে সা’লা।

বকুলের বাবা বললেন, “তোমার সাথে সহমত রুহুল। একটা মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার আগে মতামত নেওয়া উচিত। তুমি আসলেই বুদ্ধিমান ছেলে। ”

দুলাল সিরাজী বাড়ির বউদের বললেন, ” তোমরা সামিয়ারে নিয়া আসার ব্যবস্থা করো। ”

সুভা বার বার বকুলের পরিবার কে লক্ষ করলো। সুভার কেন যেন মনে হচ্ছে বকুলের মা বিয়েতে রাজি নয়। মুখে মেকি হাসি টানা শুধু। তবে বকুলের বাবা এবং বকুল কে সুভার পছন্দ হয়েছে। সুভা নিশ্চিত বকুল সামিয়াকে ভালো রাখবে। তবে বকুলের মা কে পরখ না করে সামিয়ার সঙ্গে বিয়ে কিছুতেই দেবে না সুভা।

মালেকা আর কাকন মিলে সামিয়া কে নিয়ে এলো। নীল রঙের একটি জামদানী শাড়ি পড়ে এসেছে সামিয়া। সামিয়ার ভীষণ লজ্জা করছে তবুও একপ্রকার বাধ্য হয়েই এলো। সকলকে সালাম করলো মায়ের কথা মতো। তারপর মাথা নিচু করে বসলো।

সামিয়াকে দেখেই বকুলের মনের পাখিরা উড়তে শুরু করেছে। বকুল এর চেহারার দশা এমন হয়েছে বোধহয় এখনি তিন কবুল বলে ফেলবে। কতদিন পর প্রেয়সীর মুখখানা দেখলো ইশ।

অন্যদিকে সামিয়া মাথা নিচু করে আছে।হুট করে এভাবে বকুলের পরিবারের সামনে সম্মুখীন হওয়াতে কিছুটা বিব্রতবোধ করছে সামিয়া। ভয়,লজ্জা সব ঘিরে ধরেছে সামিয়া কে।
(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

বকুলের মা’য়ের মুখে কিছুটা হাসি দেখা গেলো। উনি ছেলেকে নিজের বোনের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সামিয়াকে ওনার পছন্দ হলো। গায়ের রঙ, গঠন সব দিক দিয়েই ঠিকঠাক সামিয়া।

দুলাল সিরাজী সামিয়াকে বললো, “সামিয়া, তোমায় আমরা সকলেই বকুলের লগে বিয়া দিতে চাই। তোমার কি বকুল রে পছন্দ হয়। যদি হইয়া থাকে তাইলে আমরা পাকা কথা কমু। ”

দাদাজানের মুখে এমন কথা শুনে সকল লজ্জায় যেন কথা বের ই হচ্ছে ন। গুরুজনদের সামনে রাজি হওয়ার ব্যাপারটা প্রকাশ করা নিতান্তই লজ্জাজনক মনে হচ্ছে সামিয়ার। সে তো রাজি কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারছে না।গলা অব্দি আসছে কিন্তু মুখ অব্দি আসছে না।”

সামিয়ার এমন অবস্থা দেখে রুহুল বললো, ” সামিয়া বুড়ি, আমরা তোর মতামত জানতে চাই। তুই কি বকুল কে বিয়ে করতে রাজি আসিস। তুই রাজি না থাকলে সমস্যা নেই আমরা তোকে জোর করবো না।”

ই কথা শুনে সামিয়া রুহুলের দিকে তাকালো। সে তো রাজি কিন্তু কেন যেন বলার সাহস হচ্ছে না।
রুহুল সামিয়ার দিকে চোখ দিয়ে ভরসা দিলো। আর কাকন সামিয়ার কাধে হাত রাখলো যার অর্থ হলো তোমার মতামত জানাও।
সামিয়া মুখে কিছু না বলেই মাথা উপর নিচ করে সম্মতি জানালো। যার অর্থ সে রাজি।

এর ই মধ্যে মহীবুল, হেলাল আর জামাল সিরাজী ও এলো। সামিয়ার বিয়ে শুনে জামাল আর মহীবুলের কোনো হেলদোল নেই। তবে হেলাল ভীষণ খুশি। ছোট বোন কে রুহুল যেমন ভালোবাসে হেলান ও তেমন ভালোবাসে। হেলাল মায়ের দিকে চাইলো। দেখল তার মাও খুশি। হেলাল বকুলের সাথে বসে কথা বলা শুরু করলো।

সামিয়ার রাজি হওয়াতে সকলেই খুশি। বকুল ও হাফ ছেড়ে বাচলো। অবশেষে নিজেকে সার্থক মনে হচ্ছে। একটা স্বর্ণের আংটি সামিয়ার হাতে পড়িয়ে দিলো বকুল। সামিয়া বকুলের দিকে তাকালেই বকুল চোখ টিপ মারলো। সামিয়া লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলেন।

সকলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিলো এক মাস পর যেহেতু সামিয়ার পরীক্ষা তাই বকুলের জোড়া জুড়িতে ১৫ দিন পর বিয়ের তারিখ ঠিক করা হলো। সব কিছু ঠিকঠাক করা হলো। দুলাল সিরাজী জানালো আগামীকাল বকুলের পরিবার যাবে। আজ তাদের সিরাজী মঞ্জিলে থাকতে হবে। অজ্ঞতা তারা থাকার জন্য রাজি হলো।
_________________________

সামিয়া খুশিতে নাচা শুরু করেছে নিজ কক্ষে। আর কাকন সামিয়ার কীর্তিকলাপ দেখে হাসছে। নিজের বিয়ের খুশিতে এমনভাবে নাচতে প্রথম কাউকে দেখছে কাকন।যেখানে সে নিজেই লজ্জায় নুইয়ে পড়েছিল আর সামিয়া নাচছে।
রানু সামিয়ার কক্ষে একটা মেয়েকে নিয়ে এলো। বয়স ২০ হবে আরকি। সালোয়ার কামিজ পড়া। বেনি করে একপাশে ছেড়ে দিয়েছে বেনি।
তাকে দেখে কাকন সামিয়া দুজনেই ভদ্রতা বজায় রাখলো এবং তাকে বসতে দিলো। লেখিকা স্রোতস্বীনি। কাকন চিনতে পারলো এটা হলো বকুলের বোন যে চুপচাপ নিচে বসে ছিল। কাকন বুঝেছে মেয়েটা এখানে ভাব করতেই এসেছে।(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

কাকন চেয়ার টেনে বসতে দিলো তারপর বললো, “আসসালামু আলাইকুম ”

মেয়েটা বললো, “ওওওয়া ল্ললাইকুম আসসালাম।
আআমি বিবিন্তি। আআমি ববকুল এর বোবন। ”

মেয়েটা যে তোতলা তা বুঝলো কাকন-সামিয়া। সামিয়া যেহেতু চঞ্চল এবং দুষ্টু স্বভাবের ওর হাসতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু নিজেকে সংযত রাখলো।

কাকন নিজেদের পরিচয় দিলো। সামিয়াও ভদ্র ভাবে কথা বললো। তবে ওরা একটি জিনিস স্পষ্ট ভাবে বুঝলো আর তা হলো বিন্তি খুব ভালো মনের মেয়ে। উচ্চশিক্ষিত পরিবারের হলেও মার্জিত মেয়েটা।
বিন্তি আরো বললো, সে ঢাকা চারুকলা ইন্সটিটিউট এ পড়াশোনা করে। সে দারুণ ছবি আঁকতে পারে।

রানু এসেছিল বিন্তি কে চা নাস্তা দিতে। এই কথা শুনে সে বিন্তির কাছে বললেন, “আফা আপনে মানুষের হুবুহু আঁকবার পারেন?”
বিন্তি হেসে বললো, ” হহ্যাঁ আআমি আঁআকতে প্পারি ”

রানু খুশি হয়ে বললো, “তাইলে আমারে একটু আঁকায়া দিবেন আফা। আমি রাইখা দিমু আর আমার সুয়ামিরে দেখামু।আমি তাইলে আইজ বিকালেই শাড়ি পইড়া সাইজা গুইজা আমু নে”

রানুর কথা শুনে সকলেই হেসে দিলো। বিন্তি বললেন, “ঠঠিক আআছে ”

বেশ অনেক্ক্ষণ এভাবেই গল্প করেই কাটিয়ে দিলো কাকন,সামিয়া আর বিন্তি।তিনজনে বেশ ভাব হয়ে গেলো।
_________________

এর ই মাঝে দরজায় কেউ কড়া নাড়লো। তিনজন ই খোশগল্পে মজে ছিল। কাকন জিজ্ঞেস করলো, “কে?”

পুরুষ কন্ঠে বকুল বললো, “আমি বকুল। সামিয়ার সাথে কিছু কথা বলতে চাই।”

তিনজনের ই বুঝতে অসুবিধে হলো না কেন এসেছে।
কাকন আর বিন্তি উঠে দাড়ালো। বিন্তি কাকনের হাত ধরে বললো,”চচলো কাকন তুতুমি আআমাকে তোতমাদের পুরো মমহল টা ঘুরিয়ে দদেখাবে ”

কাকন কিছু বলবে তার আগেই বিন্তি জোর করে নিয়ে গেলো। আর এদিকে সামিয়ার কথা যেন গলায় আটকে গেছে।
কাকন-বিন্তি চলে গেলে সামিয়া মাথায় কাপড় দিয়ে চুপটি করে বসে রইলো।
বকুল কক্ষে এসে দরজা ভিড়িয়ে দিলো। বকুল সামিয়ার দিকে এগোলো তবে কিছু না বলে সোজা গিয়ে সামিয়ার বিছানায় শুয়ে পড়লো। এমন অবস্থায় সামিয়া কিছুটা ভড়কে গেলো। বলা নেই কওয়া নেই সোজা বিছানায় শুয়ে পড়লো এ আবার কেমন।

সামিয়া মাথার কাপড় ফেলে কোমড়ে হাত রেখে বললো, “এই বজ’জাত লোক আমার বিছনা থিকা নামেন। শুইলেন কেন হ্যাঁ ”

বকুল হাসি নিয়ন্ত্রণ করে বললো, “বিয়ের পর বউকে নিয়ে এই বিছানায় থাকতে হবে তো তাই একটু শুয়ে দেখলাম কেমন লাগে”।

সামিয়া নাক ফুলিয়া বললো, “আপনে আস্ত একটা বজ’জাত। আপনেরে বিয়া করমু না”।

–“তাই তাহলে বসার ঘরে সম্মতি জানালো কে। আমি তো ভেবেছিলাম আমার বউ ই ছিল ওইটা।এখানে কি তাহলে অন্যকেউ দাড়িয়ে আছে নাকি আমার সামনে? ”

সামিয়া বউ শব্দ টা শুনে লজ্জা পেলো। তবুও বললো, “আপনার সাথে রাগ করছি আমি কথা কমু। বাহির হন আমার ঘর থিকা ”

বকুল আধশোয়া হয়ে বললো, “কেন আমি কি করেছি রানি সাহেবা”(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

–” যাওয়ার আগে দেখা করছিলেন এই কয়দিন আমার খোজ নিছিলেন। নেন নাই তাই আপনের লগে কথা নাই। স্বার্থপর পুরুষ মানুষ জানি কোনকার ”

বকুল এবার সোজা হয়ে বসলো। তারপর সামিয়া কেও বসতে বললো। সামিয়া খাটের হাতল ধরেই দাড়িয়ে রইলো। বকুল সামিয়াকে বলল, ” এই কয়মাস অনেক ব্যস্ত ছিলাম।চাকরি করে খেতে হয় তাই সরকার কে হিসেব না দিলে কি চল বলো। তবে এক মুহুর্তের জন্য ও তোমায় ভুলি নি।বাবা-মাকে রাজি করিয়েছি। মা প্রথমে রাজি ছিল না। পরে আমার অনুরোধে রাজি হয়েছে। আর বন্যা হয়েছিল তাই একটু দেরি হয়ে গেলো আরকি”

সামিয়ার মন টা এখন একটু নরম হলো। তবুও বললো, “একটু না অনেক দেরি। আর কিছুদিন পর আসলে আমি অন্য পোলারে বিয়া করতাম হ্যাঁ ।

বকুল বললো, ” কিহ বিয়ে করতে, তা কাকে বিয়ে করতে শুনি”

–“আপনেক কমু কেন। ”

–“তাই ঠিক আছে আমিও তাহলে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতাম”

ব্যাস এই কথা টা শুনেই কাকন ক্ষেপে গেলো। তারপর বললো, “আপনে বাহির হন ঘর থিকা।আপনের চোপাও দেখতে চাই না আমি। ”
সামিয়া একপ্রকার জোর করে বের করে দিলো বকুলকে। বেচারা বকুল তো জ্বালাতে চেয়েছিল সামিয়াকে উল্টো নিজেই বোকা বনে গেলো।

আর এদিকে সামিয়া দরজা আটকিয়ে দু-হাত মেলে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লো। মন টা তার বিয়ে বিয়ে করছে।

চলবে……
#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি

বিদ্রঃ দয়া করে কপি করবেন না। ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করে পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ

®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here