দেবী পর্ব ১৪

0
350

#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি (ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
১৪ঃ

“কবুল” নামক এই শব্দটি তিনবার উচ্চারণ করলো কাকন। ব্যাস হয়ে গেলো সে এখন সিরাজী মঞ্জিলের বউ।সবাই ” আলহামদুলিল্লাহ” বলে উঠলো। বিয়ে সম্পন্ন হওয়াতে খেজুর বিতরণ করা হলো। ফাতিমা কাকনের হাত ছেড়ে দিলো। চারিপাশে কাকন কে ঘিরে কত মানুষ অথচ কাকনের মনে হচ্ছে সে ভীষণ একা। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে কাকন। বৈশাখের কালবৈশাখী বোধহয় শুরু হবে আজ। এক অন্যরকম ঝড়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। টিনের চালে পুরাতন আম গাছটা বার বার বারি খাচ্ছে। বোধহয় ঝড়ে আম গাছে আসা মুকুল গুলো ঝড়ে যাবে। ভয়ংকর প্রলয় বোধহয় আজ শুরু হবে। কিছুক্ষণ পর মাগরিবের আজান শোনা গেলো। এই তো আর কিছু সময় তারপর ই চলে যেতে হবে এবং চিরকালের জন্য সিরাজী মঞ্জিল ই হবে কাকনের নিবাস। এর ই মাঝে রিতা এসে বললো বর এসেছে। কথাটি শোনা মাত্রই কাকনের বুকের ভিতর ছেত করে উঠলো। লাবডাব এর নৃত্য শুরু করে দিলো। ঘরের মাটির মেঝেতে বিছানো শীতল পাটিতে কাকন বসে ছিল। পাশে থেকে মেয়েরা সরে গেলো। বড় ঘোমটা দিয়ে বসে আছে কাকন আর কাকন এর ডান পাশে বসানো হলো রুহুলকে। মাঝখানে বিছানার চাদর দিয়ে পর্দা করে দিলো।ফাতিমা গ্লাসে করে দুধ এনো দিলো রুহুলের হাতে। নিয়মানুসারে অর্ধেক গ্লাস দুধ খেয়ে বাকি টুকু কাকন কে দেওয়া হলো। বিনা বাক্যে কাকন তা পান করলো।

বিদায় যা বরাবরই বেদনাদায়ক। আর এবার সেই বিদায়ের পালা। মহিলা শালার গেইটের বাইরে সালু কাপড়ে ঢাকা পালকি চলে এসেছে। বিদায়ের জন্য যখন কাকন কে উঠানো হলো তখন কাকনের মনে হলো এই সময় থেকে যাক।লেখিকা স্রোতস্বীনি। সবাই পাথর হয়ে যাক আর সে থেকে যাক এখানেই। ফাতিমা কাকনের কাছে এসে কোনো কথা বলতে পারলো না কেবল চোখ ভড়া জল নিয়ে দুই হাত বাড়িয়ে দিলো কাকনের পানে। ঝাপিয়ে পড়লো কাকন ফাতিমার বুকে। চিৎকার করে বললো,
—–“আপা, আপা, আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না আপা,,,আমাকে যেতে দিয়েন না আপা, আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আপা,,প্রিয় মানুষদের বিদায় এত কষ্টের কেন,,,আমি আপনাকে ছাড়তে চাই না”
(লেখিকাঃ Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

কাকনের কথা শুনে ফাতিমা হাউমাউ করে কাদতে শুরু করলো। রিতা,নুপুর সহ বাকিরাও কাদছে।

দুলাল সিরাজী বললেন, “ফাতিমা ওরে ছাইড়া দেও,, ঝড় হওয়ার সম্ভবনা আছে, এমনেতেই দেরি হইয়া গেছে,,এখন যাওয়া লাগবো”।

দুলালের কথা শুনে কাকন আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ফাতিমা সর্বশক্তি দিয়ে নিজেকে কাকনের থেকে ছাড়িয়ে নিলো। কাকনের হাত রুহুল এর দিকে এগিয়ে দিলো। রুহুল কাকনের হাত ধরলো। প্রথম স্পর্শে কাকন কাপতে লাগলো। কাকনের কাপুনি অনুভব করে রুহুল আরো শক্ত করে হাত ধরলো।

ফাতিমা রুহুল কে বললো, ” ওর কেউ নাই, তয় আইজ থিকা আপনেই ওর সবচেয়ে আপন, ওরে কোনোদিন ও কষ্ট দিয়েন না,আগলাইয়া রাইখেন ”
বলেই আবারো কাদতে শুরু করলো।

রুহুল ফাতিমা কে আশ্বাস দিয়ে কাকনের হাত ধরে নিয়ে মহিলাশালার গেইট থেকে বেড়িয়ে পালকিতে উঠালো। পালকি উচু করা হলে কাকন পালকির পর্দা সরিয়ে শেষ বারের মতো মহিলা শালা টা দেখে নিলো। পালকি চলতে লাগলো প্রত্যেকটা কদম যেন কাকনের হৃদয়ে পারা দিয়ে দিয়ে যাচ্ছে এতটা কষ্ট হচ্ছে কাকনের। নিরবে চোখের জল ঝড়তে লাগলো কাকনের।

অন্যদিকে প্রত্যেকটা কদম রুহুলের মনের বাগানের একটি একটি করে ফুল ফুটিয়ে দিচ্ছে। চারিদিকে ঝড়ের আগের এই শীতল বাতাস রুহুলের হৃদয়ে আরো সুখের আকুলতা সৃষ্টি করছে। এই সুখের ব্যাথা বোধহয় রুহুল আর কোনোদিন অনুভব করে নি। রুহুল ভাবতে লাগলো জীবনে বোধহয় আর কোনোদিন দুঃখ তাকে স্পর্শ ও করতে পারবে না। এত সহজেই ভালোবেসে ফেলেছে সে কাকন কে কাকন ও বোধহয় ওকে ওর তো করেই ভালোবাসবে। সিরাজী মঞ্জিলের সামনে পালকি থামলো।

হৈহৈ করতে লাগলো সকলে। দুলাল সিরাজীর স্ত্রী তার ছেলের বউদের নিয়ে বেরোলো। দুলাল সিরাজীর স্ত্রী নিজে কাকন কে পালকি থেকে বের করলেন।কাকন সকল কে সালাম করলো। সুভা কাকন কে মিস্টি খাইয়ে সিরাজী মঞ্জিলের ভিতরে প্রবেশ করালেন। এই প্রথম সিরাজী মঞ্জিলের গেইটেই ভিতরে পা রাখলো কাকন । চারিদিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন। অত্যন্ত সুন্দর এই মহল অথচ এই মহলের মানুষের মন কি এত সুন্দর।জানা নেই কাকনের। আজ কাকন কে মিস্টি মুখ করিয়ে নিয়ে আসা হলো অথচ একদিন এই সিরাজী মঞ্জিলের গেইটের কাছে দাড়িয়ে থাকলে কেউ উঁকি ও দিতো না। ডান পা দিয়ে অন্দরমহলের সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করলো কাকন। সকল আত্মীয় স্বজনরা কাকন কে ঘিরে রইলো নতুন বউ দেখার জন্য। কাকন কে সর্বপ্রথম নিয়ে যাওয়া হলো একটি কক্ষে। যেখানে কেবল সুভা,রুহুল, তার দাদিমা আর কাকন গেলো। কাকনের হাত ধরে রেখেছে রুহুল। ওদের কে অনুসরণ করেই কাকন গেলো।লেখিকাঃSrotoswini_স্রোতস্বীনি)

অত্যন্ত সুক্ষ কাজে করা ঘরের প্রত্যেকটি আসবাব পত্র। কাকন এক প্রকার অবাক হলো এত সুন্দর কারুকাজ সে আগে কখনো দেখেনি। তবে তার চেয়ে বেশি অবাক হলো খাটে শুয়ে থাকা ব্যক্তিকে দেখে। চিনতে খুব বেশি অসুবিধে হলো না কাকনের। রুহুল কাকন কে নিয়ে নিজের আব্বার কাছে গেলো। আব্বার কাছে বসে বললো,”আব্বা আপনার বৌমা নিয়ে এসেছি দেখবেন না”। তারপর রুহুল কাকনের ঘোমটা তুলে দিলো। কান্না মিশ্রিত মুখে কাকন কে এই প্রথম বিয়ের সাজে দেখলো রুহুল। নিজেকে সংযত করে বললো,”আমার আব্বা, তবে আজ থেকে আপনার ও আব্বা, সালাম করুন”

রুহুলের কথা মতো কাকন বিলাল সিরাজী কে সালাম করলো। তারপর রুহুল কাকনের হাত ধরে বিলাল সিরাজীর সম্মুখে নিয়ে গেলো। রুহুল বিলাল সিরাজীকে কাকনের দিকে মুখ করে দিলো।
বিলাল সিরাজী পলকহীন ভাবে কাকন কে দেখতে লাগলো। যেন সে চোখ কাকন কে কিছু বলতে চায়। কিছু বলতে না পারার আক্ষেপে অস্থির হয়ে গেলো প্রায় বিলাল সিরাজী। আজকের এই ঠান্ডাময় প্রকৃতিতে ঘামতে শুরু করলো বিলাল সিরাজী। একভাবে চেয়ে রইলো কাকনের পানে। দুচোখ বেয়ে দুফোঁটা অশ্রুকণা ঝড়ে পড়লো তার চোখ বেয়ে।
বিলাল সিরাজীর চোখের পানি কাকন মুছে দিলো। তারপর “আব্বা” বলে ডাকলো। রুহুল কাকন কে দেখলো। মনের ভিতর একটা আনন্দ অনুভব করলো এটা ভেবে যে তার স্ত্রী তার আব্বাকে নিজের আব্বা হিসেবে গ্রহণ করেছে। এতক্ষণ নিরব দর্শকের মতো সব কিছু দেখছিল সুভা। এই প্রথম সে তার স্বামীকে কাদতে দেখলো। একরোখা, জেদি, হৃদয়হীন মানব বিলাল সিরাজীর চোখে আজ পানি। শরীরে জোর না থাকলে বোধহয় মানুষের চোখে পানিও আসে। অথচ একটা সময় এই লোকটার কতই না দাপট ছিল।

_______________________

নানা রকম প্লাস্টিকের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে বাসর ঘর। আর সেই ঘরে সাজানো খাটে বউ হয়ে বসে আছে কাকন। আর কাকন কে ঘিরে আছে আলেয়া, রোকেয়া, সামিয়া আর পারুল। সাথে আরো মেয়েরা আছে তবে কাকন তাদের চেনে না। সকলে নানা রকমের হাসি তামাশা করছে।
সামিয়া বলে উঠলো,”ইশ ভাবি তোমায় যে সুন্দর লাগতাছে আইজ রাইত দাদাভাই খালি চাইয়াই থাকবো”
চারিদিকে শুরু হল আবার সেই ধ্বনি “হিহিহিহিহিহি”
–“আরে সামিয়া বাসর রাইত আজকা। শুধু কি চাইয়াই থাকবো নাকি হুম”

—“হাহাহাহাহা”

–” শোনো গো ভাবি আমার দাদাভাই কিন্তু লাখে একটা তাই আচলে বান্ধা রাইখো।”

এর ই মাঝে রুহুলের দাদিমা এলো। এসে বসলো কাকনের কাছে। তারপর বললো, “শোন কাকন আজ রাইত ই হইলো জামাই রে হাতে করার। তোর সুয়ামি খালি বিলাত যাইবার চায় তুই ওরে হাত করবি যাতে ও আর না যায়। আর হ্যা তুই হইলি এই সিরাজী বাড়ির বড় পোলার বউ। তোর দায়-দায়িত্ব বেশি। আমার আর তর দাদাজানের খুব সখ মরার আগে রুহুলের ঘরের পোলাপান দেইখা যামু। তাই ছয়মাসের মধ্যেই জানি সুখবর পাই। আর আমার বিলালের শরীরডা ও ভালা না তাই তাড়াতাড়ি বংশের বাত্তি দিবি তুই, কী পারবি না তুই?” (লেখিকাঃ Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

দাদিশাশুড়ীর কথা শুনে ভড়কে গেলো কাকন। সবে এ বাড়িতে এলো সে এর মধ্যেই কত কি চেয়ে বসলো। কাকন কি পারবে এগুলো পুরণ করতে। কাকন মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো যে সে পারবে। মুখ ফুটে বললো,”আমি চেষ্টা করবো দাদিমা ”

–“না চেষ্টা না তর কইরা দেখান লাগবো। আমার রুহুল রে এই ঘরে বাইন্ধা রাখার একমাত্র উপায় হইলো তুই। রুপ যৌবন সব ই তো আছে তোর এই জন্যই তরে আমি পছন্দ করছিলাম। তাড়াতাড়ি আমার বংশের বাত্তি দিবি তুই। আমি তো তেরো বছর এই বিলাল রে জন্ম দিছিলাম। তোর ১৫ বছরের ও বেশি বয়স। তুই ও পারবি। আমি কইয়া দিলাম আমার ছয় মাসের মধ্যেই তোরে পুয়াতি দেখবার চাই”

কাকন কি বলবে বুঝতে পারলো না। আসতে না আসতেই তার উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাথা নিচু করে রইলো। সামিয়া কাকনের কাধে হাত রেখে বললো,” দাদিমা আপনে এইখান থিকা যান তো। এইখানে আমরা সিয়ানা (যুবতী) মাইয়ারা থাকমু”

— ওরে আমার সিয়ানা মাইয়ারা থাকবি থাক আমি থাকবাই জন্য আসি নাই। তয় আলেয়া রোকেয়া ভাই এর বউ নিয়ম কানুন শিখায়া দিয়া তরাও সুয়ামির কাছে চইলা যা আমি যাই রুহুল রে পাঠায়া দেই”

দাদি চলে যাওয়ার পর সামিয়া কাকনের হাত ধরলো তারপর বললো, “ভাবিজান চিন্তা কইরো না,,দাদাভাই থাকতে তোমারে কেউ কিছুই কইতে পারবো না। দাদাভাই শুনলে উলটা বুড়িরেই পুয়াতি বানাইয়া দিবো ” হাহাহাহা

সামিয়ার কথায় কাকন এবার হাসলো। বুড়ো বয়সে পুয়াতি হওয়া কি আর আদোও সম্ভব।

আলেয়া, রোকেয়া, পারুলরা কাকনের সাথে নানা হাসি ইয়ার্কি করতে থাকলো।কাকন এর এখন ওদের সাথে ভীষণ ভালোই লাগছে।
_____________________

সিরাজী মঞ্জিলের অন্দরমহলে বকুলের কক্ষে রুহুলকে ঘিরে রয়েছে বকুল আর তার দুই বোনের স্বামীরা। তাদের কথা মতো তাদের চাওয়া জিনিস না দেওয়া পর্যন্ত যেতে দিবে না। রুহুল ওদের বলা সব কিছু নিয়ে এসেছে কিন্তু সেইটা লতিফের নিয়ে আসার দায়িত্ব । কিন্তু লতিফ না নিয়ে আসা অব্দি রক্ষে নেই।একেবারে নাছোড়বান্দা যাকে বলে। অজ্ঞতা রুহুল কে এখানেই থাকতে হচ্ছে।
লতিফ হাসতে হাসতে ব্যাগ নিয়ে এলো। সেখানে বিদেশি মদ আছে যা রুহুল লোক দিয়ে নিয়ে এসেছে এবং লতিফ তা সিরাজি মঞ্জিলে নিয়ে এলো কেবল।

লতিফ কে দেখেই রুহুল বলে উঠলো ” এতক্ষণ লাগলো আসতে, তোর জন্য এতক্ষণ ধরে আমার এখানে থাকতে হলো।”(লেখিকাঃ Srotoswini_স্রোতস্বীনি)

লতিফ পান খাওয়া ফোকলা দাঁতের হাসি নিয়ে বললো, “ইয়ে মানে রাস্তায় খুব জোরে হাগা আইছিল তাই ক্ষেতের মধ্যেই বইসা পড়ছিলাম,, গাটে যাইয়া হাত দুইয়া আইতে আইতে দেরি হইয়া গেছে ”

লতিফের কথায় বকুল হোহোহো করে হেসে দিলো।

রুহুল এবার বললো, “এবার আমি উঠি, যা
চেয়ে ছিলে সব ই আছে, আশা করি এখন আর আমাকে এখানে ধরে রাখবে না ”

–“আরে আরে কই যাও তোমারে ছাড়া কি আর আমরা খামু নাকি”

–“আরে রুহুল মিয়া তুমিও খাও শরীরে আলাদা জোর পাইবা যা তোমার দরকার”

দুই দুলাভাইএর কথা শুনে হাসতে শুরু করলো বকুল। বললো, “বাহ ভাই এই জন্যই বলে বিবাহিত দের থেকেই পরামর্শ নিতে হয়। আমার বিয়েতেও কিন্তু আপনারাই পরামর্শ দিবেন। হাহাহাহা”

এদের কথায় রুহুল বললো “চুপচাপ যা এনে দিয়েছি খাও এখন আর কোনো বাধা শুনতে পারবো না।তোমাদের সাথে থেকে কি রাত শেষ করব নাকি”

–“হুম তর সইছে না বুঝি সিরাজী সাব”

রুহুল বিরক্তিতে “চ” এর মত উচ্চারণ করলো

–“আহা কি ঘ্রাণ,, এক চুমুক খাইয়াই দেখো না রুহুল, রাইত তো এখনো পইড়াই আছে ”

রুহুল বললো, ” তিন কবুল বলে বিয়ে করা আমার বউ কে আমি কেন তাকে অপেক্ষা করাবো তাকে তাও আবার এইসব ছাইপাঁশ এর জন্য। তোমাদের জন্য যা দিয়েছি সেটা নিয়ে থাকো,আমি চললাম আমার বউ নিয়ে থাকতে।”

–“আরে বন্ধু তোর বউকে কেউ নিয়ে যাচ্ছে না,”

—”আর কোনো কথা নয় চুপচাপ এই কক্ষে থাকবি তিনজন।বাইরে লতিফ পাহাড়া দিবে,আমি চললাম”

রুহুল দরজা খুলে বেরোবে এমন সময় পিছন থেকে তিন জনেই একসাথে দাত কেলিয়ে হেসে বলে উঠলো,”শুভকামনা রইলো সিরাজী সাব”

রুহুল পিছন ফিরে মুচকি হেসে বেরিয়ে পড়লো নিজ কক্ষের উদ্দেশ্যে। সেখানে যে তার অপেক্ষার অবসান ঘটাতে হবে।(লেখিকাঃ Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
__________________

বিয়ে বাড়িতে সবাই যার যার মতো ব্যস্ত। সবাই যার যার কক্ষে নিদ্রায় আছন্ন । অন্যদিকে জামালের গুপ্তকক্ষে হেলাল, বেলাল, আর মহীবুল বসে আছে। সামনে মদের বোতল পড়ে আছে অথচ কেউ ছুয়েও দেখছে না। মুখ থমথমে অবস্থা সকলের মধ্যে বিরাজমান।তিনজনই চিন্তিত।

–“আব্বা হাবিবুল্লাহর তো কোনো খোজ পাইলাম না”

–“চাচা আমি আর মহী মেলা খুজছি আনাচে কানাচে লোক দিয়া খুজাইছি কিন্তু নাই হাবিবুল্লাহ”

জামাল এবার পড়নের লুঙ্গি দিয়ে কপালের ঘাম মুছলো তারপর বললো, ” হবি যদি মইরা যাইয়া থাকে তাইলে “আলহামদুলিল্লাহ” আর যদি কারো ধরা পইড়া থাকে তাইলে আমাগো অবস্থা খারাপ আছে “।

–” আব্বা আমার মনে হইতাছে এই কাম রুহুল ছাড়া কেউ করে নাই, নিশ্চিত ও টের পাইয়া এই কাম করছে”

হেলাল বলে উঠলো, “না এইডা দাদাভাই করে নাই কারণ আমি নিজে কাইল স্বচোক্ষে দাদাভাই এর বন্ধু আর দাদাভাই রে একসাথে ঘুমাইতে দেখছি তারপর হবিবুল্লাহ রে পাঠায়ছি।”

জামাল নিজের দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বললো, “তাইলে হবিবুল্লাহ গেলো ডা কই।”

চলবে…….
#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি

বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না। ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার দিয়ে পাশে থাকবেন।ধন্যবাদ।

®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here