তোর শহরে রেখেছি পা (পর্ব ১৭)

0
511

#তোর_শহরে_রেখেছি_পা
#পর্ব_১৭
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

আরহামদের গাড়ি থামলো মাহমুদ ভিলার সামনে।আরুহি তাড়াতাড়ি করে বাড়িতে ঢুকে পরলো। এদিকে সবকিছু আজিম খানের স্ত্রী ঠিক করে রেখেছিলেন। আরহাম গাড়ি থেকে নেমে আফরিনের দিকে হাঁত বাড়িয়ে দিল। আফরিন আরহামের হাত ধরে গাড়ি থেকে বের হলো। আরহাম আফরিনের হাত ধরে দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আজিম খানের স্ত্রী ওদের বরন করে নিল। আরুহি আরহাম আর আফরিন কে নিয়ে মাহমুদ খানের রুমে গেল। এই রুমটাতে আরহাম আর আরুহি কাউকে থাকতে দেয় নি। আরুহি আলমারি থেকে একটা গয়নার বাক্স বের করলো। আরুহির চোখ ছলছল করছে। আরুহি গয়নার বাক্স আফরিন এর হাতে দিয়ে বলল,,,

“ভাবি এগুলো আমার মা তার ছেলের বউয়ের জন্য রেখে গিয়েছে। যেহেতু তুমি তার ছেলের বউ হয়ে এ বাড়িতে এসেছো। তাই এই সব কিছু তোমার।’

“আমি গয়না সামলাতে পারি না আরু। ওগুলো তোর কাছে রেখে দে আমার যখন দরকার পরবে তখন নিয়ে নেব।”

“তুমি এ বাড়ির বউ তারওপর একমাত্র বউ। কিছু কিছু দায়িত্ব তোমাকেই নিতে হবে বুঝলে। এগুলো তোমাকে চাপিয়ে দিচ্ছি না। এগুলো তোমার অধিকার তোমার দায়িত্ব।”

“এত দায়িত্ব নিতে হবে জানলে বিয়েই করতাম না আমি। ”

এ কথা শুনে আরহাম হেসে বলল,,,

“তোমাকে এখনি সব দায়িত্ব এখনি নিতে বা পালন করতে হবে না। ওটা তো বোনু এমনিই বলল। ধীরে ধীরে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে।”

“হুম বুঝতে পেরেছি। আরু আপাতত তুই ওগুলো তোর কাছেই রেখে দে। আর তুই হুট করে তুমি তুমি করছিস কেন? আরে তোর ভাইয়ের বউ হওয়ার আগে আমরা বন্ধু ছিলাম তো! তুই করে বল!”

“নতুন বউকে যদি তুই করে বলি তাহলে লোকে কি বলবে। সব আত্মীয় স্বজন চলে যাক তারপর থেকে আবার তুই বলবো।”

“মিস আরুহি আবার লোকের কথা কানে নেয় বুঝি?”

“তা অবশ্য ঠিক। এখন তোরা রুমে গিয়ে রেস্ট নে ! ভাইয়া তুমি এখন তোমার রুমে ঢুকতে পারবে না। রুপা শিহাব ভাইয়া আর রুহানি কি যেন করছে। আমি আফরিন কে আমার রুমে নিয়ে যাচ্ছি। ওখানে ফ্রেশ হয়ে নেবে। ”

“ভাই তোরা প্লিজ বাসর ঘরে টাকা নিস না। আমার টাকা নাই সব শেষ। ”

“তা বললে তো হবে না। দিতেই হবে !”

“টাকা দিয়ে কি করবি শুনি !”

“চকলেট কিনে খাবো। এখন তুমি চুপ থাকো!”

আরুহি আফরিন কে নিয়ে ওর রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলল। আফরিন ফ্রেশ হয়ে ভারি লেহেঙ্গা ছেড়ে একটা লাল রঙের কাপড় পড়ানো হলো। আরুহি হালকা কিছু এনে আফরিন কে খায়িয়ে দিল। বাইরে গিয়ে নিজের ভাইকেও খাওয়ালো।

বাসর ঘরে আফরিন লজ্জা রাঙ্গা হয়ে বসে আছে । ফুল দিয়ে সজ্জিত বিছানায় মাঝখানে ঘোমটা টেনে বসে আছে। বাইরে আরহাম আরুহিদের আবদার মিটিয়ে রুমে প্রবেশ করলো। আরহাম কে ঢুকতে দেখে আফরিন আরো বেশি লজ্জা পাচ্ছে। অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। আরহাম এসে সালাম দিল।,

“আসসালামু আলাইকুম বিবি সাহেবা!”

বিবি সাহেবা শুনে আফরিন অন্যরকম ভালোলাগা অনুভব করলো। আফরিন মুলায়েম কন্ঠে জবাব দিলো,,

“ওয়ালাইকুমুস সালাম জনাব।’

আরহাম ড্রয়ার থেকে একটা প্যাকেট নিয়ে এলো। আবরার আফরিনের সামনে ধরলো। তা দেখে আফরিন বলল,,

“কি আছে এতে?”

আরহাম মুচকি হেসে আফরিন কে বলল,,

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষগণ নারীদের প্রতি দায়িত্বশীল, যেহেতু আল্লাহ একের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং তারা তাদের সম্পদ হতে ব্যয়ও করে।’ (সুরা: ৪ নিসা, আয়াত: ৩৪)। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর প্রথম দায়িত্ব বা কর্তব্য হলো মোহরানা পরিশোধ করা। বাকিতে হলেও তা পরিশোধ করতে হবে। কিস্তিতেও পরিশোধ করা যাবে। মোহরানা পরিশোধ না করে মৃত্যু হলে তা ঋণ রূপে পরিশোধ করতে হবে।
তাই এখানে তোমার দেনমোহর এর টাকা রয়েছে।”

“ওটা আপনি ড্রয়ারে রেখে দিন। আমি আমার প্রয়োজন মতো নিয়ে নেব।”

“আচ্ছা ঠিক আছে। আজ থেকে আমার যতটুকু এই ঘরের অধিকার ততটুকু অধিকার তোমার ও। এখন ওঠো ওযু করে এসো আমরা দু- রাকাত নফল সালাত পরে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবো। যাতে আমাদের বিবাহিত জীবন সুখের হয়।”

আরহাম আগেই ওযু করে এসেছে। আফরিন “ঠিক আছে” বলে ওয়াশরুম থেকে উযু করে এলো। আরহাম ওর পাশে একটু পেছনে জায়নামাজ বিছিয়েছে। আফরিন আসতেই আরহাম ওকে নিয়ে নামাজ পরলো। নামাজ শেষ করে লম্বা মোনাজাত শেষ করে আরহাম আফরিন এর মাথায় একটা দোয়া পরে ফু দিল। তা দেখে আফরিন মুচকি হাসলো। তখন আরহাম ড্রয়ার থেকে একটা বক্স আনলো আর আফরিনের হাতে দিল। আফরিন বক্সটা খুলে দেখলো তাতে একটা একটা আল কোরআন ,একটা তজবিহ আর একটা হাত ঘড়ি রয়েছে। আফরিন কিছু বলবে তার আগেই আরহাম বলল,, বলল,,,

“তোমাকে কিছু কথা বলি। আমরা জানি না আমাদের বিবাহিত জীবন কতোটুকু সুখের বা সুন্দর হবে। তবে রাসুলের সুন্নাত মোতাবেক আমাদের জীবন কে আরো সুন্দর করে তুলতে পারি।দাম্পত্য জীবনে স্বামী ও স্ত্রীর রয়েছে নির্দিষ্ট অধিকার ও কর্তব্য। স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের সহায়ক ও পরিপূরক। সুতরাং উভয়েরই রয়েছে উভয়ের প্রতি বিশেষ দায়িত্ব ও করণীয়। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল করিমে বলেন, ‘তারা তোমাদের আবরণ এবং তোমরা তাদের আবরণ।
(সুরা: ২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

এই যে তোমাকে যে জিনিস গুলো দিলাম এটার মাধ্যমে আমরা শুধু পৃথিবীতে না জান্নাতের পথ টাও সুগম করতে পারি। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা খুব স্ট্রং রাখতে হবে ।যাতে তৃতীয় ব্যক্তি আমাদের মাঝে না ঢুকতে পারে। দুজনের দুজনের প্রতি বিশ্বাস ভরসা রাখতে হবে। দুজন দুজনকে সম্মান করতে হবে। দুজন দুজনের সিদ্ধান্ত কে সম্মান করতে হবে। তাহলে দেখবে আমাদের জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে।”

আফরিন মনোযোগ দিয়ে আরহাম এর কথা শুনলো। আফরিন এর খুব গর্ব হচ্ছে এরকম একটা মানুষ কে নিজের জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়ে। আরহাম আবারও বলল,,

“এই পৃথিবীতে আমার আর আমার বোনের তেমন কেউ ছিল না। এখন তুমি হয়েছো। আশা করছি তেমন কোন কাজ করোনা যাতে আমি বা আমার বোন কষ্ট পায়। আশা করছি আমার বোন ও তোমার সাথে তেমন কোন কাজ করবে না যাতে তুমি কষ্ট পাও। কখনো কিছু দরকার পরলে আমাদের জানাবে। তোমাকে আমার জীবনে আসার জন্য ধন্যবাদ। নিজের পরিবার পরিজন কে ছেড়ে আমার জীবনে আসার জন্য ধন্যবাদ। আমার জীবনের সঙ্গী, বন্ধু এবং অর্ধাঙ্গিনী তুমি। কথা দিচ্ছি তোমার সব সুখ দুঃখের সাথী হবো আমি। আমাদের সম্পর্কে সৎ হয়ে থাকবো আমরা। সততার সহিৎ একে অপরের পাশে থাকবো।
“শ্রেষ্ঠ মানুষ হলো সে”যার অন্তর পরিচ্ছন্ন ও মুখ সত্যবাদী।”
( ইবনে মাজাহঃ ৪২১৬)
রাসুল(ﷺ) বলেছেন!

নিশ্চয়ই সততা মানুষকে কল্যাণের পথে নিয়ে যায়। আর কল্যাণ মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়।( মুসলিম- ৬৫৩১)

কোন সমস্যায় পরলে দু জনে একসাথে এর হাল করবো। না জেনে কারো ওপর কোন কোন রুপ অভিযোগ করবো না। আমরা একে অপরের পুরিপূরক হয়ে উঠবো‌ ইনশাআল্লাহ। ভরসা রাখো মহান আল্লাহর এবং আমার ওপর আগামী জীবন নিশ্চয়ই সুন্দর হবে আমাদের ইনশাআল্লাহ। সবথেকে বড় কথা সর্বাবস্থায় আল্লাহর ওপর বিশ্বাস,ভরসা রাখতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আল কোরআন এ বলেছেন,,

“যারা শুধু আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেন, তিনি তাদের কে নিরাপত্তা দেন।( সূরা নূর -৫৫)

সর্বাবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে তুমি,,

” যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো”।
( ইবরাহীম-৭)

সবশেষে একটা কথাই বলবো ভরসা করে আমার হাত ধরবে তো?”একবার এ হাত ধরেই দেখো না। আমৃত্যু পর্যন্ত এ হাত ছাড়াবো না ওয়াদা করলাম। জানিনা কতটুকু তোমাকে ভালো রাখতে পারবো তবে চেষ্টা করবো পৃথিবীর সব সুখ তোমায় এনে দিতে।

আফরিন মুচকি হেসে হাত রাখলো আরহাম এর হাতে। এতে আরহাম তার জবাব পেয়ে গেল। আরহাম মুচকি হেসে বলল,,,

“ওহে আমার উনি, আমি আপনাকে ভালোবাসি। যে কথাখানি এত দিন ছিল অপ্রকাশিত। তবে আজ প্রকাশিত ভাবেই বলছি আমি তোমাকে ভালোবাসি।”

এ কথা শুনে আফরিন লজ্জায় আরহাম এর বাহুডরে মুখ লুকালো। আর বলল,,

“ওহে জনাব, আপনার উনিও আপনাকে ভালোবাসে। কিন্তু লজ্জায় সে বলতে পারে নি। আমি আপনাকে ভালোবাসি।”

আরহাম আফরিনের কথায় মুচকি হেসে আফরিন কে জরিয়ে ধরলো। আর নিজেদের অতল প্রনয়ে হাড়িয়ে গেল।

___________________

আল্লাহর রহমতে আরেকটা নতুন দিনের সূচনা হলো। সূর্যের আলো চোখে পরতেই আরহাম এর ঘুম ভেঙ্গে গেল। ওর বুকের ওপর আফরিন ঘুমিয়ে আছে। আরহাম ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। কাল রাত টা ওদের মধুর রাত গিয়েছে। আরহাম ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল করে ওযু করে এসে কাযা সালাত আদায় করে নিল। তারপর আরহাম আফরিন কে ডেকে তুলল আফরিন ঘুম ভেঙ্গে আরহাম কে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখলো। তা দেখে আফরিন কালকের কথা ভেবে লজ্জা পেল। আফরিন আরহাম কে জিজ্ঞেস করল,,,

“কয়টা বাজে?”

“সকাল সাতটা বেজে গেছে ম্যাডাম। যাও গিয়ে গোসল করে ওযু করে কাযা সালাত আদায় করে নাও। আমি বাইরে যাচ্ছি দরজা ভিরিয়ে দিয়ে যাচ্ছি। ”

আরহাম এর কথা মতো আফরিন ওয়াশ রুমে গেল গোসল করে ওযু করে বের হলো। আফরিন একটা সুতির কাপড় পরলো। কাযা সালাত আদায় করে দাড়াতেই। আরুহি দরজায় নক করে বলল,,

“আসবো ভাবি?”

“আয় !”

“রুমী তৈরি হয়ে গেছো চলো এখন খেয়ে নাও। তারপর আশেপাশের কিছু মহিলা আসবে তোমাকে দেখতে।”

আফরিন ভালো করে গোমটা টানলো। আরুহির সাথে নিচে চলল মাঝপথে আরুহি মুচকি হেসে বলল,,

“বাসর রাত কেমন কাটলো নতুন বউ?”

আরুহির কথা শুনে আফরিন লজ্জা পেল। আরুহিকে বলল,,

“আরু আমি তোর বড় ভাবি হই বুঝলি এসব কথা আমাকে একদম জিজ্ঞেস করবি না। আমার লজ্জা লাগে না বুঝি।”

“ওরে আমার লজ্জাবতী রে। আচ্ছা থাক আর বলতে হবে না। নিচে চলুন আপনার জামাই খাবার টেবিলে আপনার জন্য বসে আছে।”

আফরিন নিচে এসে দেখলো সবাই বসে আছে। আফরিন গিয়ে সবাইকে সালাম দিল,,

“আসসালামু আলাইকুম।”

তখন আনোয়ার গিন্নি এগিয়ে বলল,,

“ওয়ালাইকুমুস সালাম। মাশাআল্লাহ আমার নাতবউ কে তো এই কাপড়ে দারুন সুন্দর লাগছে।”

আফরিন কিছু না বলে মুচকি হাসলো। সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করে নিল। খাওয়ার পুরোটা সময় আরহাম আফরিনের দিকে তাকিয়ে ছিল। আরুহি আফরিন কে ওপরে নিয়ে আসলো। রুহানি কে দায়িত্ব দিল ওর সাথে থাকতে। কারন আরুহির আজ অনেক কাজ।

__________________

দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। লোকজন আসতে শুরু করেছে। লোকজন বলতে ওর আত্মীয় স্বজন তো এসেছেই। এখন শুধু আরহামের কলিগ আর আবরার দের বাড়ির লোকজন। আরহাম আজ আফরিন কে নীল রঙের লেহেঙ্গা হিজাবের সাথে নিকাব পরিয়েছে যার জন্য আফরিনের চোখ ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। এতে আফরিন কোন কথা বলেনি। আরহাম নীল রঙের স্যুট প্যান্ট পরেছে। নেওয়াজ আহমেদ আরহাম এর সাথে কথা বলছে হুট করে নেওয়াজ আহমেদ বলল,,,

“তা তোমার কাজের সঙ্গী A.K কে আসবে না!”

“না স্যার তার কি কাজ যেনো আছে তাছাড়া সে আমার বউকে দেখেছে আর বউয়ের জন্য গিফট পাঠিয়ে দিয়েছে।”

“আজ এলেও কি সেই কালো হুডি পরে আসতো নাকি?”

বলেই নেওয়াজ আহমেদ হাসলো। আরহাম কিছু বললো না শুধু মুচকি হাসলো।

আবরার দের বাড়ির লোকজন এসে পরেছে আরহাম আর আরুহি ওদের রিসিভ করছে। আরুহি নেভি ব্লু রঙের গ্ৰাউন আর হিজাব পরেছে। কাকতালীয় ভাবে আজও আবরারের সাথে মিলে গেছে। আবরার সাদা শার্টের উপর নেভি ব্লু রঙের স্যুট প্যান্ট পরেছে।

এদিকে নেহমাত শেখ এর মাথায় অন্য কিছু চলছে। কালকের থ্রেটটার জন্য সে কিছুই বলে নি। কিন্তু আজ ও কি বসে থাকবে নাকি‌। তাছাড়া ওপর থেকে প্রেসার পরছে কিছু তো করতেই হবে। আরুহি নেহমাত শেখ কে চোখে চোখে রাখছে। আরুহি একটা লোক কে দেখতে পেল আরুহি তাকে চেনে না। তাকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় কারন লোকটা বারবার আরহাম এর দিকে তাকিয়ে আছে সাথে একটু ভয় ও পাচ্ছে। হুট করে আরুহি দেখতে পেল লোকটা বারবার পকেটে হাত দিচ্ছে আর তাতে রিভলবার। আরুহি দ্রুত লোকটার কাছে গেল। লোকটা একেবারে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল ওখানে কোন লোক ছিল না আর কিছুটা অন্ধকার ও ছিল। আরুহি পেছন দিকে গিয়ে লোকটার ঘাড়ের একটা জায়গায় আঘাত করলো লোকটা ওখানেই অজ্ঞান হয়ে গেল। আরুহি কাউকে কল করে লোকটাকে নিয়ে যেতে বলল। আর লোকটার ফোন আরুহি নিজের কাছে নিয়ে অন্য জায়গায় সরে গেল। লোকটার ফোনে বারবার কল করছে কেউ কোন প্রাইভেট নাম্বার থেকে। এই নাম্বার তো কোনো কাজেই লাগবে না। তবুও আরুহি ফোনটা ধরে কানে নিল কিন্তু কোন কথা বললো না ওপাশ থেকে আওয়াজ আসলো,,,

“এই তুই কোথায় মরেছিস। আরহাম কে শ্যুট করতে এতক্ষন লাগে। ওর জন্য আমার সব অবৈধ কারবার ধরা পরে যাচ্ছে এক এক করে। A.k কে আমি জানিনা নাহলে ওকেই আগে শেষ করতাম। আর এই NS এর সাথে লাগতে এসেছে। কাল সব করতে চেয়েছিলাম কিন্তু নেহমাত কিছুই করতে দিল না। কাল ওদের দুই ভাই-বোন কে বোম দিয়ে উরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু কিছুই হলো না। আর তুই করছিস টা কি এতক্ষন লাগে। কিরে কথা বলছিস না কেন? NS এর কথার জবাব দিচ্ছিস না এর ফল কি হবে তুই জানিস।”

কিছুক্ষণ মৌন থেকে আরুহি বলল,,,

“আপনার সাথে কথা বলার এবং দেখা করার শখ ছিল আমার আমি আপনার অনেক বড় ফ্যান। ”

আরুহির কথা শুনে ওপাশের লোকটা হকচকিয়ে উঠলো আর বলল,,,

“কে কে তুমি আমার লোক কোথায়। তুমি এই ফোন কোথায় পেলে আর অন্যের ফোন তুমি ধরেছো কেন?”

“আপাতত আপনার লোক মাটিতে শুয়ে আছে। আর আমি আপনার সবচেয়ে কাছের শত্রু A.K বলছি। তবে এটা জেনে ভালো লাগলো আজকাল কার যুগে মেয়েরা খুব এগিয়ে গেছে। দেখুন নাহলে আপনার মতো মহিলা একজন সবার কাছে এতবড় ট্রাস এতদিন জানতাম হয়তো কোন পুরুষ মানুষ হবে। তবে আপনার গলা শুনে আমার পুরো বিশ্বাস টাই মিথ্যে হয়ে গেল।আমি জানতাম আজ আপনি কিছু করবেন তাই সবার অগোচরে পাহাড়া দিচ্ছিলাম। এতো সহজে যে আপনার সাথে কথা বলতে পারবো ভাবতেই পারি নি।”

ওপাশ থেকে ভয় পেল না কি হলো বোঝা গেল না। কিছুক্ষণ পর ওপাশ থেকে হাসির আওয়াজ শোনা গেল। আরুহি হাত মুখ শক্ত করে তার হাসি শুনতে লাগলো। হাসি থামিয়ে NS বলল,,

“তোর কথা মতো আমার ও ভালো লাগলো যে মেয়েরা আসলেই খুব এগিয়ে গেছে। নাহলে এতদিন কেও আমার লোক বা আমার কাজ কে ধরতে পারলো না। আর তুই মেয়ে হয়ে সহজেই করে ফেলেছিস। আমিও জানতাম না তুই একটা মেয়ে। তোকে অবশ্য আমি দেখেছিলাম একবার ঐ জঙ্গলের বাড়িটায় কিন্তু তোর ড্রেস আপ এমন যে তুই ছেলে না মেয়ে বুঝতে পারে নি। তারওপর ছিল অন্ধকার। তবে এরপর থেকে তুই কিছুই করতে পারবি না আমার। আমি আর ভুত একই রকম যার নাম তো সবাই শুনেছে কিন্তু কেউ দেখেনি।”

এ কথা শুনে আরুহি হাসলো আর বলল,,

“এরপর থেকে আপনার কিছুই করতে পারবো না। এটা আপনার ভুল ধারনা। কারন আপনি নিজেই সেকেন্ড NS কে সেটা জানিয়ে দিলেন। নেহমাত শেখ ওরফে NS-2.! NS-3 তো ধরা পরেছেই কিন্তু আপনি কিছুই করতে পারলেন না। এমন কি রবিন কেও কিছু করতে পারলেন না। তবে দুঃখের বিষয় এটাই আপনি সত্যি একটা ভুত তার নাম সবাই শুনেছে কিন্তু কেউ দেখেনি এমন কি নেহমাত শেখ ও না। আপনার কথামতো সব করে কিন্তু আপনাকে দেখতে পায় নি। এটা তার জীবনের একটা আফসোস বলতে পারেন তবে আপনাকে ধরে অবশ্যই তার সামনে নিয়ে যাবো যাতে মৃত্যুর আগে তার কোন আফসোস না থাকে। ”

“আমাকে ধরা অত সহজ নয়। ”

“আমার সহজ জিনিস পছন্দ নয়। তবে কি বলুন তো আমি আপনার হদিস পেলেও আপনি আমার হদিস পাবেন না। তবে বেশি দিন আপনাকে অপেক্ষা করাবো না খুব তাড়াতাড়ি আমাদের দুজনের দেখা হবে। পৃথিবীতে তো আপনি আমার থেকে ছাড়া পাবেন না আর পরবর্তি তে আমার আল্লাহর থেকেও না। একটা কথা মনে রাখবেন সবসময়।

“কিয়ামতের দিন প্রত্যেককেই তার আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে।প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।”
~সূরা আল- মুদ্দাসসির:-৩৮

কাল নেহমাত শেখ এর নামে একটা ব্রেকিং নিউজ বের হবে পারলে দেখে নিয়েন আর পারলে তাকে বাঁচিয়ে দেখাবেন। কিন্তু পারবেন না আমি জানি। কাল যে ধামাকা হবে সেটা আপনি ভাবতেও পারবেন না। Good Bye and Good Luck. ”

আরুহি ফোনটা কেটে দিলো। এ কথা শুনে NS ভয় পেল । কারন A.K এ সম্পর্কে তার কোন ধারনাই নেই। আর কন্ঠটাও তার পরিচিত এর মধ্যে না। আর কাল কি ধামাকা দেখাবে সে সম্পর্কেও সে কিছু জানে না। তবে নেহমাত কে সাবধান করতে হবে। কিন্তু এখন সেটা করা টাফ হবে নাহলে সে ধরাও পড়ে যেতে পারে।

আপনারা যা ভাবছিলেন তাই আরুহিই A.K . আরুহি তাড়াতাড়ি আরহাম এর কাছে গেল। মাঝরাস্তায় দেখা হলো আবরার এর সাথে আবরার আরুহি কে দেখে বলল,,

“আসসালামু আলাইকুম মিস,, আপনাকে তো দেখতেই পেলাম না আসার পর থেকে। ”

আরুহি মুচকি হেসে বলল,,,

“ওয়ালাইকুমুস সালাম। ঐ একটু কাজ ছিল তাই আর কি?”

“আপনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ব্যস্ত মানুষ।কতোদিন একসাথে সামলাতে হচ্ছে। একবার এদিকে যাচ্ছেন তো আরেকবার ও দিকে আবার ফোনে কথা বলেছেন আবার অন্য দিকে হাঁটছেন।”

“তা আমার ওপর নজর রাখা হচ্ছিল নাকি?”

“স্পাই মানুষ নজর কতো জায়গায় যায়। মূল কথা রাখতে হয়। ”

“ওহ আচ্ছা। ”

“বাই দ্য ওয়ে আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে। কিন্তু কাকতালীয় ভাবে আমাদের ড্রেস আপ এক রঙের হয়ে গেছে। ”

“কাকতালীয় না ইচ্ছে করে সেটা আমি ভালোই করেই জানি মিস্টার।”

এ কথা শুনে আবরার একটু হকচকিয়ে গেল। কারন ও সেদিন শপিং করার সময় দেখে নিয়েছিল আরুহি কি রঙের ড্রেস পরবে। এটা দেখে আরুহি মুচকি হেসে বলল,,

“থাক আর কিছু বলতে হবে না। আপনারা খেয়েছেন?”

“না আমার এখনো খাওয়া হয় নি। আসলে একটা মাত্র বোনের ননদ আর আমার বেয়াইন তাকে রেখে খাওয়া যায় নাকি। তার ওপর কতো কাজ করছেন। আপনার জন্য আপনার ভাই ও না খেয়ে আছে। ”

“বাকি সবাই খেয়েছে আপনাদের সাথে আসা লোকজন?”

“হ্যা খেয়েছে। ”

“ওহ আচ্ছা তাহলে আপনি ভাবিকে নিয়ে গিয়ে বসুন আমি ভাইয়াকে নিয়ে আসছি। আসলে তার সাথে আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে।”

“আচ্ছা ঠিক আছে। ”

আরুহি ওখান থেকে সোজা স্টেজে গেল। আরহাম কারো সাথে কথা বলছিল পাশে আফরিন আরো অনেকে। আরুহি সোজা গিয়ে আরহাম এর হাত ধরলো আর আরহামের হাত ধরে দাঁড় করিয়ে বলল,,

“সরি ভাইয়াকে এখন এখান থেকে নিয়ে যেতে হচ্ছে। ভাবি তুমি মিস্টার নিশান এর সাথে খেতে বসো আমি আর ভাইয়া কিছুক্ষণ পর আসছি। ”

আরুহি আরহাম এর হাত ধরেই সবার সামনে থেকে নিয়ে এলো। আরুহির এরকম কাজে সবাই অবাক।

আরহাম কে ওভাবে নিতে দেখে আফরিনের মামি বলল,,

“জামাইকে হাতে রেখো আফরিন। বোন যে অধিকার দেখিয়ে সবার সামনে থেকে ওকে নিয়ে গেল। তাই জামাইকে নিজের কন্ট্রোল এ রেখো নাহলে দেখবে তোমার সংসার এ তোমার ননদের কথায় -ই সব হবে। তোমাকে কেউ পাত্তা ও দেবে না।”

তখন আফরিন মুচকি হেসে বলল,,

“আমার সংসার আমি বুঝে নেব মামি!তোমার ওতো চিন্তা করতে হবে না।”

“তোমার ভালোর জন্যই তো বললাম।”

“আমার কোন টা ভালো কোনটা খারাপ সেটা আমি ভালো করেই জানি। তোমার মাথা না ঘামালেও চলবে।”

তখন আফরিনের মামি ওখান থেকে মুখ বাঁকিয়ে চলে গেল আর বলল,,

“আজকাল কার যুগে কাউকে ভালো কথাও বলা যায়না। ”

একথা শুনে আফরিন মুচকি হাসলো। কারন সে ভালো করেই জানে আরুহি খুব দরকার না হলে এভাবে আরহাম কে নিয়ে যেতো না। আবরার আফরিন এর পাশে এসে দাঁড়াল তা দেখে আফরিন একটা হাসি দিলো। আর বোনকে একহাত দিয়ে জড়িয়ে নিল। কারন একটু আগে ওর মামির সব কথাই ও শুনেছে।

আরুহি সবাই এখানে আছে দেখে রুমে গেল না। কারন এভাবে সবার সামনে থেকে নিয়ে গিয়ে দরজা আটকানো ভদ্রতার কাজ নয়। তাছাড়া ওদের আশেপাশেই ওদের শত্রুরা ঘুরে বেরাচ্ছে আজ আরুহি বলতো না কিন্তু কালকেই কাজ টা করতে হবে তাই আরুহি কে এখনি বলতে হবে। তাই পাশেই গেল যেখানে কেউ নেই সেখানে গিয়ে আরহাম এর হাত ছেড়ে বলল ,,,

“ভাইয়া NS এর সাথে কথা হয়েছে আজ।”

আরহাম অবাক হয়ে বলল,,

“কি কিভাবে?”

“ওর কথা কথা শুনে কি রাগ হচ্ছিল তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না। ইচ্ছে তো করছিল ওকে এখনি মেরে দেই। ”

আরুহি অনেক রেগে গেছে সেটা আরহাম ভালো করেই বুঝতে পারলো। ওর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। আরহাম আরুহির দল বাহু ধরে বলল ,,,

“রিল্যাক্স বোনু কি হয়েছে আমাকে বল। আর তুই এতো রেগে যাচ্ছিস কেনো?”

“ভাইয়া ও তোমাকে,,,

আরুহি কিছু বলতে পারলো না ওর গলা ধরে আসছে। ও যদি ঠিক সময় মতো না দেখতো তাহলে কি হতো। আরুহির অবস্থা দেখে আরহাম ওকে জরিয়ে ধরে বলল,,,

“রিল্যাক্স বোনু এভরিথিং ইজ ফাইন। কি হয়েছে বল NS কি বলেছে। ”

“ভাইয়া ও তোমাকে মারতে চাইছিল। কাল আমাদের গাড়িতে বোমা রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু নেহমাত কে ভয় দেখিয়েছিলাম বলে কাল কিছু করে নি । নেহমাত শেখ কিছু করতে দেয় নি। কিন্তু আজ একটা লোক হায়ার করেছিল তোমাকে শ্যুট করতে । যদি আমি ঠিক সময় মতো না দেখতাম তাহলে কি হতো ভাইয়া।”

“NS কার সাথে কথা বলেছে আরুহি মাহমুদ খানের সাথে নাকি A.K এর সাথে।”

আরুহি মুখ তুলে বলল,,

“A.K এর সাথে আর দুর্ভাগ্য বশত তাকে আমি কনফিউজড করে দিয়েছি। সে আমাকে কোনভাবেই চিনতে বা ধরতে পারবে না। ”

“হুম ভালো এখন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব বল।”

আরুহি আরহাম কে সব খুলে বলল। আরহাম বলল,,,

“তার মানে লেডি ব্ল্যাক ওয়ার্ল্ড মাফিয়া। তারমানে আমরা তা ভাবছিলাম তাই। তবে তুই তারসাথে এমন ভাবে কথা বলেছিস যেনো তুই আজকেই সব জানতে পারলি। আর A.K একটা আলাদা অস্তিত্ব। তোর কথা শুনে আমিও কনফিউজড হয়ে গেছিলাম আসলে তুই কার কথা বলছিস।

“আচ্ছা এখন এসব বাদ দাও তোমাকে যার জন্য ইমার্জেন্সি এখানে সব বলতে হলো।সেটা হলো কাল কে একটা ভিডিও দিতে হবে সব নিউজ এ। সেটা যেনো ব্রেকিং নিউজ হয়। আর নেহমাত শেখ এর কালকেই খোলামেলা ভাবে শেষ দিন হয়। তার ব্যবস্থা আজকে রাতের মধ্যেই সব করতে হবে। NS কে চ্যালেন্জ করেছি পারলে নেহমাত কে বাঁচাতে। তাছাড়া সব জানলেও কাল যে ভিডিও টা টেলিকাস্ট হবে সেটা কেউ জানেনা আরহাম আর আরুহি মাহমুদ ছাড়া। তুমি নেওয়াজ আহমেদ কে সব বলে রাখবে। কাল যেনো আমাদের বাড়ি থেকে খুব সুন্দর ভাবে নেহমাত কে তুলে নেওয়া হয়। আর হ্যা গার্ড করা রাখতে হবে। যাতে NS চাইলেও ওকে কোনভাবে রেসকিউ করতে না পারে। ”

“কোন ভিডিও?”

“যেটা আমরা এতদিন বুকে আগলে রেখেছিলাম। আমাদের বাবা মায়ের শেষ স্মৃতি কিন্তু,,

আরুহি আর কিছু বলতে পারলো না। আরহাম বোনের অবস্থা বুঝতে পারলো তাই কথা ঘুরিয়ে বলল,,

“সব ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে আজ শুশুরবাড়ি গেলে চলবে না। অনেক কাজ বাকি আছে সেগুলো সকাল হওয়ার আগেই করতে হবে।”

“সরি ভাইয়া আজ তোমার শুশুরবাড়ি যাওয়া হচ্ছে না। তবে A.K তোমাদের তো হানিমুন প্যাকেজ গিফট করেছে কক্সবাজার। সেটায় সব উসুল করে নিও।”

একথা শুনে আরহাম আরুহির হিজাব ধরে টান দিয়ে বলল,,

“আমি তোর বড় ভাই হই। তারসাথে এরকম মজা কেউ করে। ”

“ভাইয়া হিজাব টা ছাড়ো ছিঁড়ে গেলে কিন্তু তোমার খবর আছে।”

“তোর মতো পুচকি মেয়ে আমার কি করবে রে।”

“হিজাব টা ছাড়ো তারপর দেখাচ্ছি। ”

আরহাম হিজাব ছেড়ে মাথায় টুকা মারলো। আর দৌড় দিল পেছনে আরুহিও দৌড়াচ্ছে। আরহাম দৌড়ে আফরিনের পেছনে দাড়ালো। এতক্ষন সবাই ওদের কে দেখছিল কিন্তু কেউ কিছু বুঝতে পারে নি। হুট করে দৌড় দেওয়ায় সবাই অবাক হয়েছে। আফরিন নিজের বরকে বোনের দৌড়ানি খেতে দেখে অবাক। কিন্তু আফরিন খুব খুশি এরকম একটা পরিবার পেয়ে। আরুহি আফরিনের সামনে গিয়ে বলল,,,

“ভাবি সামনে থেকে সরো তোমার জামাই আমার মাথায় টুকা মেরেছে তারওপর আমার হিজাব টানছিল যদি ছিঁড়ে যেতো।”

তখন আরহাম পেছন থেকে বলল,,,

“বেশ করেছি টেনেছি আমার বোনের হিজাব আমি টানবো দরকার পরে ছিঁড়ে ফেলবো তাতে তোর কি?”

“যে নাকি বোনের দৌড়ানি খেয়ে বউয়ের পেছনে লুকায়।সে কেমন সাহসী বোঝা যাচ্ছে। তারওপর নাকি সে নাকি একজন সি আই ডি অফিসার হাও ফানি।”

“কি বললি তুই” বলেই আরহাম আফরিনের পেছন থেকে বেরিয়ে এলো। আর আরুহি গিয়ে আরহাম এর চুল ধরে টানলো। দু মিনিট পর ছেড়ে দিল। আরহাম মুচকি হেসে বলল,,,

“সব রাগ শেষ।”

“ধন্যবাদ ভাইয়া ইউ আর বেস্ট ব্রাদার ইন দি ওয়ার্ল্ড।”

আরহাম মুচকি হেসে বোনকে আগলে নিলো। আরুহিও মুচকি হেসে ভাইকে জরিয়ে ধরলো। এখানে কি হলো তাতে কারো মাথায় কিছুই ঢুকলো না। তবে নাহিয়ান খান বেশ খুশি তার মেয়েকে একটা ভালো পরিবার এ দিতে পেরে। আরুহি আরহাম আফরিন কে নিয়ে খেতে চলে গেল। সবার খাওয়া দাওয়া শেষ করে আরহাম জানালো ও আজ যেতে পারবে না। কারন ওকে আরেকটু পরেই অফিসে যেতে হবে। আফরিন চাইলে যেতে পারে কাল কে ও বাড়িতে পৌছে যাবে। আরহাম এর কথা শুনে সকলে রাজি হলো। কিন্তু আফরিন বলল সে কালকে আরহামের সাথেই যাবে। আফরিন এর কথায় সবাই ওকে রেখেই চলে গেল।অতঃপর কাল সকালের অপেক্ষা!

~চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here