তোমার_তুমিতেই_আমার_প্রাপ্তি লেখক-এ রহমান পর্ব ৩

0
1377

তোমার_তুমিতেই_আমার_প্রাপ্তি
লেখক-এ রহমান
পর্ব ৩

বেশ ব্যস্তভাবে কলিং বেল চাপার আওয়াজ কানে আসতেই ভর সন্ধ্যে বেলা তড়িঘড়ি করে বই রেখে বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল ঈশা। তার ধারনা ইভান এসেছে। তাই সে এমন নাটক করতে প্রস্তুতি নিলো। কারন এক মাত্র তাকে ঘুমতে দেখলেই ইভান একদম বিরক্ত করবে না। কিছুক্ষন চুপচাপ তাকে দেখেই চলে যাবে। এটা ভেবেই তার ভালো লাগছে। সে চোখ বন্ধ করেই ভাবছে এসব। আজ কাল কলিং বেলের শব্দে ঈশার ফোবিয়া তৈরি হয়েছে। কলিং বেল বাজলেই তার মনে হয় জল্লাদটা বুঝি এলো। অনেকক্ষণ যাবত কাউকে ঘরে আসতে না দেখে ধিরে ধিরে চোখ খুলে ফেলল ঈশা। চোখ খুলে দেখল সে ছাড়া এই ঘরে আর কেউ নেই। ঠোট জোড়া গোল করে একটা তপ্ত শ্বাস ছেড়ে আবার বই হাতে নিলো। সামনে তার পরিক্ষা। কিন্তু সে ভালো মতো পড়তে পারছে না। তার জীবনটা এভাবে পরিবর্তন হয়ে গেলো সেটা মানতেই পারছে না সে। এটা ভাবলেই অদ্ভুত একটা চাপা কষ্ট মনের মাঝ জেঁকে বসে। হতাশা ভরা একটা শ্বাস ছাড়ে সে। টেবিলে হাত বাড়িয়ে পানির বোতলটা হাতে নিয়ে দেখে পানি নেই। বই রেখে উঠে দাড়ায়। পানি নেয়ার জন্য ডাইনিং এ যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়। কিন্তু কিছুদুর যেতেই কারও চাপা আওয়াজ কানে আসে।

–শুনেছি তোমার ননদ নাকি তোমার শশুরের বন্ধুর ছেলেটাকে ভালোবাসে। কি কথা! আমি তো শুনেই লজ্জায় পড়ে গেছি। না জানি তোমাদের কি অবস্থা? আমার কানে তো আগেই এসেছিল অনেক কথা। আমরা তো প্রথমে ভেবেছিলাম যে ছোট ছেলেটার সাথে লটর পটর। কিন্তু এটা তো একদম অবাক করা কথা। বড় ছেলেটা যে কোথা থেকে এসে ঢুকল কে জানে? যাই হোক সবাই এসব নিয়েই কথা বলছিল। অল্প বয়সী আবেগের ব্যাপার। এই জন্য ছেলে মেয়েদের এক সাথে চলতে দেয়া উচিত না। এক সাথে চলাফেরা করতো। অনেকবার চোখে পড়েছে। তোমার শাশুড়িকে বলেছিলাম কিন্তু পাত্তা দেয়নি। আগুন আর ঘি এক জায়গায় রেখে কিভাবে যে তোমার শশুর শাশুড়ি নিশ্চিন্তে বসে ছিল। এরকম যে হবেই সেটা তো জানা কথা। বাবা মা কি মেয়েকে চিনে না নাকি।

ঈশা থেমে গেলো। এমন কথা শোনার জন্য সে প্রস্তুত ছিল না। গলা শুনেই বুঝে গেলো পাশের ফ্ল্যাটের আনটি এসেছে। তিনি রুমার কাছে মাঝে মাঝেই আসেন গল্প করতে। কিন্তু আজকের গল্পের টপিক যে ঈশা সেটা হয়ত কারও ধারনা ছিল না। ভাবতেই রুমার গলার আওয়াজ কানে আসল।

–আমার ননদ একা না ওরা দুজন দুজন কে একি রকম ভালোবাসে। তাই তো তাদের এঙ্গেজমেন্ট হয়েছে। আর ঈশার ফাইনাল পরিক্ষা শেষ হলেই ওদের বিয়ে হবে। দুই পরিবারের সবাই ওদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে আর সবাই খুব খুশি। এতে কারও কোন সমস্যা হওয়ার তো কথা না।

–সে তো খুশি হওয়ার ভান! এতো বড় একটা ঘটনা ঘটাল ছেলে মেয়ে মেনে না নিয়ে উপায় আছে? সমাজে মুখ দেখাত কিভাবে? এখন তো পরিস্থিতি সামলাতেই বলছে খুশি। কিন্তু মনের কথা তো আমরা বুঝি।

–আপনি এতো উত্তেজিত হবেন না আনটি। আমরা আসলে এতো কিছু ভাবিনি। আর এভাবেও যে ভাবা সম্ভব সেটা আমাদের মাথাতেই আসেনি।

রুমার কথা শুনে মহিলা কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলো
–তোমার সামি ঈশান কি বলেছে? সে কি বোনের এই সম্পর্ক মেনে নিয়েছে?

রুমা খুশি হয়ে বলল
–অবশ্যই! খুশি না হয়ে কি উপায় আছে। ইভানের মতো ছেলেই হয়না। সে যে এই বাড়ির জামাই হবে সেটা ভেবেই আমরা সবাই খুশি। আর এমনিতেও আমার সামি ইভান কে ব্যক্তিগত ভাবে খুব পছন্দ করে।

রুমার কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই মহিলা কথা বলা শুরু করলেন। যেন তিনি এই কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। ব্যঙ্গ করে বললেন

–সবি ঠিক আছে। কিন্তু ওই ছেলেটার জন্য খুব কষ্ট হয়েছে জানো। ওই ছেলেটার কি দোষ ছিল? তোমার ননদের যদি অন্য কোথাও সম্পর্ক থাকতো তাহলে সেটা আগে বললেই হত। অজথা অরকম একটা নিরীহ ছেলের সাথে নাটক করার কি দরকার ছিল। আর তোমরাও পার। আগে জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল না? না জেনে একটা ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেললে। তারপর শুনলাম আংটি পরানোর দিনে মেয়ে পালিয়েছে। তারপর তো আসল ঘটনা জানতে পারলাম।

দুই হাতে পানির বোতলটা শক্ত করে চেপে ধরল ঈশা। জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলতে লাগলো। সেখানে আর দাড়িয়ে থাকতে পারল না। ঘরে চলে এলো। পানির বোতলটা ছুড়ে ফেলে বিছানায় বসে পড়লো। অতি দ্রুত তার দম উঠা নামা করছে। এরকম একটা পরিস্থিতির স্বীকার হতে হবে তাকে কেন? এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। তার সম্পর্কে এভাবে কথা হয় বাইরে? কিন্তু আজ পর্যন্ত তাকে নিয়ে কেউ কোন বাজে কথা বলতে পারেনি অথচ তার চরিত্র নিয়ে কথা উঠছে আজ। সেটাও বাড়ি বয়ে বলতে এসেছে। কিছুতেই মানতে পারছে না সে। ফোনের তীব্র শব্দে চমকে উঠলো। হাতে নিয়ে ফোনের স্ক্রিনে নামটা দেখেই আবার রাগটা চাড়া দিয়ে উঠলো। ইভান অনেক বার কল করেছে। এতক্ষন সে বাইরে থাকায় শুনতে পায়নি। ঈশা সহ্য করতে না পেরে ফোনটা কেটে দিয়ে ছুড়ে দিলো বিছানায়। খানিক বাদে ইভান আবার ফোন করলো। ঈশা এবার কেটে দিয়ে ফোনটা বন্ধ করে দিলো। দরজা বন্ধ করে মেঝেতে বসে পড়লো। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করলেও এই মুহূর্তে সেটার উপায় নেই। সে তার কষ্ট কাউকে দেখাতে চায় না। নিশব্দে কাঁদতে লাগলো। ঈশা কিছুতেই বিষয়টা সহজ ভাবে নিতে পারছে না। তার সাজানো জীবনটা এক মুহূর্তেই এলোমেলো হয়ে গেলো। ভাবতেই ডুকরে কেদে উঠলো সে। ইভান আজ সবার কাছে ভালো ছেলে কিন্তু তার আসলে রুপ সম্পর্কে তো শুধু ঈশাই জানে।

————
অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে ঈশা মেঝেতেই শুয়ে আছে। কেদে কেদে চোখ মুখ ফুলে তুলেছে। চেহারায় অস্থির ভাব। বেশ কয়েকবার তার মা সামিনা বেগম এসে ডেকে গেছেন। কিন্তু সে কিছুতেই দরজা খুলছে না। এমন কি কোন কথাও বলছে না। সবাই বেশ চিন্তিত তাকে নিয়ে। আবার কখনও ভাবছেন হয়ত খুব টায়ার্ড তাই ঘুমিয়ে পড়েছে। অনেক সময় পর দরজায় জোরে জোরে ধাক্কার আওয়াজ আসতেই ঈশা নড়েচড়ে উঠলো। কিন্তু মেঝেতেই শুয়ে থাকল। দরজা খুলল না।

–আমি জানি তুই জেগে আছিস। ভালই ভালই দরজা খোল। দরজা না খুললেও আমি যে তোর ঘরে ঢুকতে পারব সেটা তুই জানিস। আর আমাকে অন্য ভাবে ঢুকতে হলে সেটা তোর জন্য ভালো হবে না বলে দিলাম।

ইভানের ঠাণ্ডা মাথার হুমকিতে ঈশা উঠে বসলো। চোখ বন্ধ করে দুই ফোটা চোখের পানি ফেলল। এটা কেমন বিচার। এই জল্লাদ তার জীবনটা এলোমেলো করে দিয়ে এখন কি চায় আবার?

–আমি ঠিক কি চাই সেটা ভিতরে এসেই বলি। তুই এতো ভেবে নিজের ব্রেনকে অযথা কেন প্রেসার দিচ্ছিস?

কথাটা কানে আসতেই শুকনো ঢোক গিলল। কারন ইভানের এবারের বলা কথাটার ধরন আর গলার সর দুটোই ভিন্ন ছিল। যা ঈশার ভয়ের কারন। সে জানে এই মুহূর্তে দরজা না খুললে ইভান সিন ক্রিয়েট করবে। সবার সামনে বিষয়টা মোটেই শোভনীয় নয়। ঈশা চোখ মুছে জোরে একটা শ্বাস টেনে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো। ধির পায়ে গিয়ে দরজা খুলল। দরজা খুলেই বিছানায় এসে আধ শোয়া হয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল। ইভান ঘরে ঢুকে চারিদিকে একবার ভালো করে দেখে নিলো। দরজা লাগিয়ে দিয়ে ঈশার পাশে গিয়ে বসলো। স্বাভাবিক ভাবেই বলল
–দরজা খুলতে এতো দেরি হল কেন?

ইভানের গলার সর শুনে ঈশা চমকে উঠে স্থির কণ্ঠে বলল
–মাথা ব্যাথা করছিল তাই শুয়ে ছিলাম।

–বুঝলাম কিন্তু এসবের কারন কি?

বিছানায় শুয়ে মাথার নিচে একটা হাত দিয়ে কথাটা বলল। ঈশা বুঝতে না পেরে ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো
–কিসব?

ইভান উঠে একবারে ঈশার কাছে এলো। চোখে চোখ রেখে বলল
–আমি তোকে না ছুয়েই তোর হার্ট বিটের আওয়াজ শুনেই বলতে পারি সেটা কি কারনে লাফাচ্ছে। আর নিজের চোখে দেখেও কিছুই বুঝতে পারব না সেটা ভাবা তোর জন্য বোকামি।

ঈশা চোখ নামিয়ে নিলো। কোন কথা বলল না। ইভান বাকা হেসে বলল
–আমাকে ইগ্নর করিস?

কথাটা কানে আসতেই ঈশা আঁতকে উঠলো। এই একটা কথা ইভানের সম্পূর্ণ আচরন মুহূর্তেই পরিবর্তন করে দিতে পারে। ঈশার কোন আচরন বা কোন ভুল ভাল উত্তর পরিস্থিতি বেগতিক করতে সক্ষম। ঈশা পরিস্থিতি সামলাতে কাপা কাপা কণ্ঠে বলল
–ফ…ফোনে চার্জ নেই।

ইভান শব্দ করে হাসল। উঠে দাড়িয়ে হাঁটু ভেঙ্গে মেঝেতে বসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সমস্ত জিনিস তুলতে তুলতে বলল
–ঈশা আমি আমার জিবনে কখনও সেকেন্ড হইনি। আমি গোল্ড মেডেলিস্ট। সবাই আমার কাছ থেকে সাজেশন নেয়। আর তোর মতো একটা মেয়ে আমাকে প্রতি নিয়ত বোকা বানায়। কারন কি জানিস?

বলেই ঈশার দিকে তাকাল। কোন উত্তর এলনা সেদিক থেকে। কাছে গিয়ে খুব শান্ত ভাবে বলল
–কারন আমি বোকা হতে চাই। এতেই যদি তুই ভালো থাকিস তাহলে সেটাই হোক না ক্ষতি কি তাতে!

ঈশা শুকনো ঢোক গিলে বলল
–কি বলছ এসব?

ইভান শক্ত করে দুই আঙ্গুলে ঈশার মুখ চেপে ধরল। দাতে দাত চেপে বলল
–আমাকে ঠিকই উত্তর দিতে পারিস কিন্তু বাইরের মানুষ যখন তোর চরিত্র নিয়ে কথা বলে তখন সেটার উত্তর দিতে তোর বাধে। কিন্তু পর মুহূর্তে আবার আমাকেই দায়ি করিস। তোর জিবনের সব দুঃখ কষ্টের দায় ভার আমি নিতে রাজি আছি। বিনিময়ে শুধু চাই তুই ভালো থাক। কিন্তু সেটাও পারিস না। নিজেও ভালো থাকতে পারিস না আর আমাকেও দিস না। কেন?

ঈশার ব্যাথা লাগছিল। সে চোখ বন্ধ করে ফেলল। ইভান তাকে ছেড়ে দিলো। চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করে নিয়ে বলল
–আমার কাছে মিথ্যে বলার সাহস তুই করিস না জান। আমি তোকে না দেখেই তোর পুরো হিস্ট্রি পড়তে পারি সেটা তুই জানিস।

ঈশা উঠে দাঁড়ালো। ইভানের পিছনে দাড়িয়ে বলল
–আমি মিথ্যে বলতে চাইনি।

–জানি। কিন্তু এভাবে ঘরে ঢুকে নিশব্দে কেদে নিজেকে মহান প্রমান করার কোন দরকার নেই তো। যা প্রমান করার ঘর থেকে বের হয়ে কর। মিন মিনে কণ্ঠে কথা না বলে বাইরে গিয়ে গলা তুলে বল। আমাকে খারাপ বানা আপত্তি নাই। কিন্তু নিজেকে ভালো প্রমান করতে শেখ। তুই যে কোন অপরাধ করিস নি সেটা প্রমান কর। অযথা নিজের মধ্যে অপরাধ বোধ তৈরি করে ধরে রাখাটা কোন মহান কাজ নয়। মনে রাখিস তুই নিজেকে মুল্যায়ন না করলে তোর মুল্য কারও কাছে থাকবে না। তোর জিবনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য তুই তো দায়ি নয়। তাহলে কেন নিজেকে গুটিয়ে রাখিস এভাবে? জোর গলায় বলতে পারিস না সব দোষ আমার। তুই একদম পবিত্র ঠিক জেমনটা আগে ছিলিস।

ঈশা চোখ তুলে ইভানের দিকে তাকাল। ইভান খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলল
–তুই কি ঠিক করেই ফেলেছিস যে আমার কোন কথার উত্তর দিবি না? কিন্তু এভাবে তো চলতে থাকলে বিষয়টা ভালো পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে না। কারন তুই জানিস আমি তোর বেলাতে ঠিক কতটা অধৈর্য। আর আমার ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেলে আমি তোকে কষ্ট দিতেও দ্বিতীয় বার ভাবি না। এতে আমার কষ্ট হয়। তুই একদম বুঝিস না। খুব নিষ্ঠুর তুই।

–কখনো জানতে চেয়েছ কেন আমি এতো নিষ্ঠুর?

ঈশা ঝাঝাল কণ্ঠে বলল। ইভান এগিয়ে এসে ঈশার নাকে এক আঙ্গুলে স্পর্শ করে ম্লান হেসে বলল
–জানি। দিন শেষে তোর কাছে করা ভুলটার শাস্তি এটাই নাহয় হল। মেনে নিলাম তোর এই নিষ্ঠুরতা।

বলেই বের হয়ে যেতে নিয়ে আবার থেমে গেলো। ঈশার দিকে ঘুরে বলল
–তবে হ্যা। তোর এই নিষ্ঠুরতা বেশিদিন থাকবে না। আমার তীব্র ভালবাসার দহনে গলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। এখন শুধু সেই দিনটার অপেক্ষা।

একটু থেমে ঈশাকে দেখে নিয়ে আবার বলল
–রাতে খেয়ে নিস। আর মনে করে ফোনটা অন করিস। আমি আর কল দিয়ে ডিস্টার্ব করবো না। প্রমিজ! আর ইভান ঈশাকে করা প্রমিজ কখনও ব্রেক করেনা।

চলবে………
(আজ কিন্তু অনেক কিছু বলে দিয়েছি। ইভানের কথাতেও হয়ত কিছুটা আন্দাজ করতে পারছেন। বাকিটা ধিরে ধিরে জানতে পারবেন। আশা করছি সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here