#তোমার_মায়ায়_আবদ্ধ_আমি ?
#পর্বঃ22
#লেখনিতেঃসামিয়া_আক্তার_মুনা ?
‘কিহ! নিহান স্যার তোকে প্রপোজ করেছে!ও মাই আল্লাহ নিশি আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।উফ আমার যে কি ভালো লাগছে না এই খুশির খবর টা পেয়ে দোস্ত এবার তো অন্তত তোর বিয়ে উপলক্ষে ট্রিটটা দিবি!’
কলেজে এসে একে একে সব ক্লাস শেষ করে রুহি আর নদীর সাথে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম আমি। নিহান স্যারের নাকি আজকে একটু কাজ আছে তাই ওনার একটু লেট হবে আসতে। তাই ভাবলাম নদী আর রুহির সাথে একটু আড্ডা দেই আর তখনই মুখ ফসকে ওদের বলে ফেলি ওনি যে আমাকে গতকাল প্রপোজ করেছে আর তাই শুনে এই কথা বল নদী। নদীর কথা শুনে আমি কিছু বলার আগেই নিহান স্যার হঠাৎ কোথা থেকে যেন এসে বললেন ___
‘হ্যাঁ, নিশি তোমার উচিত ওদের ট্রিট দেওয়া!’
ওনার কথা শুনে আমি বললাম __
‘এই শুনেন ওদের কি করতে হবে তা আমি খুব ভালো করেই জানি। আমার কাছে এখন বর্তমানে টাকা নেই আমি বাবাকে আজ ফোন করে বলবো কিছু টাকা পাঠাতে বাবা টাকা পাঠালেই তোদের ট্রিট দেবো ঠিক আছে!(নদী আর রুহিকে উদ্দেশ্য করে )আচ্ছা এক মিনিট এই কথা তো আমার মাথায় আগে আসেনি!’
নদী আমার কথা শুনে বলল___
‘ কি’
‘ বিয়ে কি আমার একা হয়েছে উনিও তো বিয়ে করেছেন!প্রথমত উনি আমাদের স্যার হয় তাই ওনার কাছ থেকে আমরা ওনার বিয়ে উপলক্ষে ট্রিট পাই, তাছাড়া উনি আমার হাজব্যান্ড সেই মতে উনি তোদের দুলাভাইও হয়! তাই আজকে আমাদেরকে নিহান স্যার ট্রিট দিবেন।’
আমার কথা শুনে নদী চোখ মুখ উজ্জ্বল করে মুচকি হাসি দিয়ে নিহান স্যারের দিকে চেয়ে বলল__
‘ স্যার নিশি কিন্তু ঠিকই বলেছে আমরা তো আপনার কাছ থেকে দুই ভাবেই ট্রিট পাই!’
নদীর কথা শুনে নিহান পকেটে দুই হাত গুঁজে ভাব নিয়ে বলল__
‘ হ্যাঁ অবশ্যই তোমরা আমার কাছ থেকে ট্রিট পাও আর আমি তোমাদের আজকেই খাওয়াবো আমি কি তোমাদের ফ্রেন্ডের মত কিপটা নাকি! যে বন্ধুদের খাওয়ানোর কথা শুনে বলব যে আমার কাছে টাকা নেই!’
নিহানের পিন্চ মারা কথা শুনে নিশি তেতে উঠে বলল___
‘ এই আপনি কি বলতে চাইছেন টা কি? আমি ওদের ট্রিট না দেওয়ার জন্য বলেছি আমার কাছে টাকা নেই?’
‘ হ্যাঁ তুমি তো তাই করছ!’
‘ আরে আপনি কি পাগল হয়ে গেলেন, আমার কাছে এখন টাকা কোথা থেকে আসবে?আমি তো বাড়ি থেকে আসার সময় এক পয়সাও আনিনি!’
নিশির কথা শুনে নিহান বলল__
‘হুম আর আনার দরকার ও নেই কেন তুমি জানো না বিয়ের পর মেয়েরা বাবার বাড়ি থেকে টাকা পয়সা আনে না?’
‘আরে আজব তাহলে আমি টাকা কোথা থেকে পাব?’
‘ কেন তোমার হাজবেন্ড এর টাকাই তো এখন তোমার টাকা ওখান থেকে নিবে।’
নিহানের কথা শুনে নিশি বলল__
‘ আরে এটা তো আমার মাথায়তেই আসেনি তাহলে স্যার আপনাকে আর আমাদেরকে আজ ট্রিট দিতে হবে না।উল্টো চলুন আজকে আমি বরং আপনাদের সবাইকে খাওয়াবো যা বলবেন তাই খাওয়াবো!!’
নিশির কথা শুনে নদী বলল__
‘আরে তোরা যেই খাওয়াস না কেন টাকা তো সেই নিহান স্যারেরই যাবে আমরা বরং তোদের দুজনের পক্ষ থেকেই ট্রিটটা গ্রহণ করব!এবার চল কোন রেস্টুরেন্টে যাই।’
নদীর কথা শুনে নিহান স্যার বললেন___
‘হুম চলো ‘
তারপর আমরা সবাই গিয়ে গাড়িতে বসে পড়লাম আমি আর নিহান স্যার সামনে। নদী আর রুহি গিয়ে বসলো পেছনের সিটে আমরা গাড়িতে বসতেই নিহান স্যার গাড়ি স্টার্ট দিলেন। আর গাড়ি চলতে শুরু করল তার আপন গতিতে।
________________
বেশ খানিকক্ষণ পর,,,,,,,
আমাদের গাড়ি এসে থামলে একটা বড় রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামতেই আমরা সবাই নিজেদের কাধের ব্যাগগুলো গাড়িতে রেখে চললাম ভেতরে। রেস্টুরেন্টের ভেতরটাও দেখতে বেশ সুন্দর।ভেতরে গিয়ে আমরা একটা খালি টেবিল দেখে ওখানে গিয়ে বসে পড়লাম। আমরা বসতেই একজন ওয়েটার এগিয়ে এসে আমাদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে গেলেন।আর আমরা খাবার আসার আগ পর্যন্ত বসে বসে এটা ওটা নিয়ে আড্ডা দিতে থাকলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই খাবার আসতেই আমরা হাসাহাসি গল্প এর মধ্য দিয়ে খাবার শেষ করে যার যার বাসায় চলে আসলাম। নদী আর রুহি কে নিহান স্যার অনেক বলেছিল বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার কথা কিন্তু ওরাই জোর করে একা চলে গেছে।
___________
‘আরে ভাইয়া তুমি!’
আমি আর নিহান স্যার বাড়িতে এসে দেখি নিলয় ভাইয়া এসেছে। নিলয় ভাইয়া আমাকে দেখে বলল__
‘ হ্যাঁ আমি, কেমন আছিস তুই?’
‘ ভালো আছি ভাইয়া, তুমি কেমন আছো আর বাড়ির সবাই কেমন আছে?’
‘ আমরা সবাই ভালো আছি এখন যা তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে আয় আমি তোকে নিতে এসেছি।সেই কখন থেকে বসে আছি আজ এতো লেট কেন হলো?’
নিলয় ভাইয়ার কথা শুনে আমি কিছু বলব তার আগেই নিহান স্যার বললেন___
‘আসলে আজকে ক্লাস শেষে একটু কাজ ছিল তাই লেট হয়ে গেছে।আর তুই ওকে নিতে এসেছিস মানে?’
‘ আরে তুই কি সব ভুলে গেছিস?দুইদিন পরই তো মেঘলার বিয়ে সবকিছুর তোর জোর তো শুরু হয়ে গেছে।কাল আমরা যাব মেঘলার বিয়ের শপিং করতে তাই মা আর ছোট মা বলল নিশিকে নিয়ে যেতে।তাই ওকে নিতে এসেছি আর হ্যাঁ মা বলেছে তোকেও কাল শপিং এর সময় যেতে।’
বাড়ি যাবার কথা শুনে নিশি খুশিতে লাফিয়ে বলল__
‘ ভাইয়া তুমি একটু বসো আমি এক্ষুনি রেডি হয়ে আসছি।আর আফরিন চলো তুমিও যাবে আমার সাথে।’
নিশির কথা শুনে আফরিন বলল__
‘ না ভাবী মা আমাকে যেতে দিবে না!তুমিই যাও।’
‘আরে তুমি এটা নিয়ে চিন্তা করো না আমি মামুনিকে ঠিক মানিয়ে নিব,তুমি আগে বলো মামুনি কোথায়?’
‘ রান্না ঘরে আছে!’
‘ আচ্ছা ঠিক আছে আমি এক্ষুনি মামুনিকে রাজি করিয়ে আসছি।তুমি একটু অপেক্ষা করো!’
এই কথা বলে নিশি চলে গেল রান্না ঘরে। নিশি যেতেই নিহান নিলয়কে বলল ___
‘এই নিশয় একটু এদিকে আয় তো!’
নিহানের কথা শুনে নিলয় একটু সাইডে যেতেই নিহান নিলয়ের পিঠে একটা ঘুসি মেরে বলল___
‘ শালা তোর মধ্যে কি মায়া দয়া বলতে কিছুই নেই! সবেমাত্র কালই তোর বোনকে প্রপোজ করেছিলাম, আর তুই আজকেই আমার বউকে নিয়ে চলে যাচ্ছিস!’
নিহানের কথা শুনে নিলয় ভ্রুনাচিয়ে বলল __
‘আমি কাকে দেখছি! তুই কি সেই নিহান যে আমার বোনকে সহ্য করতে পারতিস না। যে তুই কিনা সারাদিন আমার বোনকে নিয়ে নালিশ করতি এখন সেই তুই কিনা আজ আমার বোনকে চোখে হারাচ্ছিস কাছ ছাড়াই করতে চাচ্ছিস না!!’
নিলয়ের কথা শুনে নিহান কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিশি এসে লাফাতে লাফাতে বলল __
‘আফরিন রেডি হয়ে নাও মামুনি রাজি আমরা আজই যাব।মামনিরা সবাই মেহেন্দির দিন যাবে আমাদের বাড়িতে।এখন চলো তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও!’
নিশির কথা শুনে আফরিন খুশি হয়ে বলল __
‘হ্যাঁ ভাবি আমি এক্ষুনি যাচ্ছি!’
এই বলে আফরিন তাড়াতাড়ি উপরে চলে যায় রেডি হতে।আফরিন যেতেই নিশিও উপরে চলে যায়। নিশিকে উপরে যেতে দেখে নিহান নিলয়কে বললো__
‘ তুই থাক আমিও ফ্রেশ হয়ে আসছি!’
নিহানের কথা শুনে নিলয় বলল__
‘ হ্যাঁ,আমি তো কিছুই বুঝিনা নারে?’
‘তুই চুপ করবি! তোর লজ্জা লাগেনা আমাকে এভাবে কথা শুনাতে আমি না তোর ছোট বোনের হাজবেন্ড হোই।’
নিহানের কথা শুনে নিলয় মেকি হাসি দিয়ে বলল___
‘ আরে আমি তো তোর বন্ধু হিসেবে বলেছি!’
‘তুই যদি আমার বন্ধুই হবি তাহলে আমার বউকে এভাবে নিয়ে যেতে পারতিস না!এর শোধ তো আমি নিবোই দেখিস। তোর বিয়ের দিন তোর বউকে আমি গুম করে দেব।দেখিস!’
নিহানের কথা শুনে নিলয় বলল__
‘ আরে দোস্ত রাগ করছিস কেন? এইতো বেশি না এক সপ্তাহ পর তো তোর বউ আবার তোর কাছেই চলে আসবে। আর তাছাড়া কাল শপিং এর সময় তো দেখা হবেই আবার তার একদিন পর তো মেহেন্দি অনুষ্ঠানে তোরা যাবিই তখন তো দেখা হবে। এখন আপাতত উপরে যান নইলে দেখবি তুই যাওয়ার আগেই নিশি নিচে চলে আসবে।’
নিলয়ের কথা শুনে নিহান বলল __
‘হুম তুই বস আমি এক্ষুনি আসছি!’
এই বলে নিহান উপরে চলে যায়।
‘বাহ বাড়ি যাওয়ার জন্য দেখছি খুব তাড়া এরই মধ্যে রেডি হয়েও গেছ!’
ঘরে এসে নিশি কে রেডি দেখে এই কথা বলল নিহান। রেডি হয়ে ব্যাগে সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছিল নিশি নিহানের কথা শুনে নিশি বলল __
‘হ্যাঁ তা তো একটু তারা আছেই, মা রোজই ফোন করে বলে ঐবাড়ি যেতে।তাছাড়া দুদিন পর আপুর বিয়ে এই বিয়ে নিয়ে আমার কত প্ল্যানিং আছে ঐগুলো নিয়ে ও আমি বেশ উৎসাহি।তাছাড়া অপুও ফোন করে বলছিল ওই বাড়ির সবাই নাকি আমাকে অনেক মিস করে তাই ওই বাড়ি যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করছিলাম আর কি।’
নিশির কথা শুনে নিহান নিচু স্বরে বলে__
‘ আমি বুঝি তোমাকে মিস করবো না!’
নিহানে কথা শুনে নিশি বললো__
‘ কিহ! কি বললেন আপনি!’
‘ না মানে তুমি চলে গেলে তো এই বাড়ির মানুষগুলোও তোমাকে মিস করবে তাই না? এটাই বলছিলাম আরকি!’
নিহানের কথা শুনে নিশি বলল__
‘ এ বাড়ির সকল সাথে সাথে কি আপনিও মিস করবেন?’
নিশির কথা শুনে নিহান হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ায়। নিহানের মাথা দেখেন নিশি মুচকি হেসে বলল __
‘কালই তো আবার দেখা হবে তাই না আর বেশি মিস করলে কল করবেন ঠিক আছে।এখন চলুন নিচে যাই ভাইয়া ওয়েট করছে।’
এই বলে নিশি ব্যাগটা নিয়ে যেই যেতে যাবে তখনই হঠাৎ নিশি নিহান কে পেছন থেকে ডেকে বলল__
‘ শুনুন ‘
নিশির ডাক শুনে নিহান পেছন ফিরতে নিশি দৌড়ে গিয়ে নিহানকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা কিস দিয়ে যেই এক হাতে ব্যাগ নিয়ে দৌড় দিতে যাবে তখনই নিহান নিশির কোমর জড়িয়ে ধরে অবাক হয়ে বলে___
‘ এটা কি ছিল?’
নিহানের কথা শুনে নিশি মেকি হেসে বলে__
‘ কি,কই কিছু নাতো!’
‘ ও আচ্ছা কিছু ছিল না!এই বলে নিহান নিশির মুখ টা দু হাতের মধ্যে নিয়ে কপালে আর দুই গালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে বলল,,হ্যাঁ এবার যাও! এবার ঠিক আছে।’
নিহানে স্পর্শে নিশি শরীর যেন কেঁপে উঠলো। নিহানের কান্ড দেখে নিশি অবাক হয়ে বলল __
‘আপনি এটা কি করলেন?আমিতো আপনাকে একটা কিস দিয়েছিলাম আর আপনি আমাকে দুটো বেশি দিলেন কেন!’
‘ তেমন কিছুই না,আসলে কি বলতো কেউ আমাকে কিছু দিলে আমি তাকে তার দ্বিগুণ ফেরত দেই! এখন চলো নিচে চলো নিলয় অপেক্ষা করছে তো।’
নিহানের কথা শুনে নিশি মুখ ভেংচি দিয়ে বলল__
‘হ্যাঁ চলুন ‘
এই বলে নিশি আর নিহান নিচে চলে যায়। নিশিরা নিচে এসে দেখে আফরিন ব্যাগ পত্র রেডি করে নিচে দাঁড়িয়ে আছে।নিশিদের নিচে নামতে দেখে নিলয় বলল__
‘ এখন তাহলে যাওয়া যাক!’
‘ হ্যাঁ ভাইয়া চলো!’
তারপর নিশিরা সবাইকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে পড়লো খান বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে।
_______________
বেশ খানিকক্ষণ পর,,,,,,
নিশিদের গাড়ি এসে পৌঁছায় খান বাড়িতে, বাড়িতে এসেই নিশি দৌড়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে চেচিয়ে বলে__
‘ মা, বড়মা,অপু,ভাইয়া তোমরা কোথায় দেখ আমি গেছি!’
রান্না ঘরে কাজ করছিলেন মিসেস আয়েশা,হঠাৎই নিশির কন্ঠ পেয়ে ছুটে যায় মেয়ের কাছে। মাকে দেখেই নিশিও দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে__
‘ কেমন আছো মা?’
মিসেস আয়েশা মেয়েকে দেখে টলমল চোখে বলল __
‘তুই এতদিন বাড়িতে ছিলিনা? বাড়িটা কেমন খা খা করেছে এখন তুই এসে গেছিস এখন আমি আর এই বাড়ি যেন প্রাণ ফিরে পেলাম!’
(এই হলো মায়ের ভালোবাসা একটু কি চোখের আড়াল হলাম অমনি অস্থির হয়ে যান )
নিশি আর মিসেস আয়েশা কথা বলছিল তখনই ওখানে বাড়ির সব মেম্বাররা এসে হাজির হয়। তারপর সবাই মিলে মেতে ওঠে আড্ডায়।
রাত প্রায় বারোটা বেজে সাতাশ মিনিট বেডে শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে নিশি কারণ ঘুমাতে গেলেই চোখে শুধু নিহানের মুখটা ভেসে উঠে। আর নিহানের কথাগুলো বার বার মনে পড়ছে। সবার সাথে আড্ডা দিয়ে একটু আগেই রুমে এসেছিল নিশি আর আফরিন। আফরিন তো ঘরে এসেই বেডে শুতেই ঘুমের দেশে পাড়ি জমায়। আর নিশি সেই কখন থেকে বেডে শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে তখনই হঠাৎ নিশির ফোনটা বেজে ওঠে, ফোন বাজার শব্দ পেয়ে নিশি ফোন হাতে নিয়ে দেখে কোন অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন এসেছে।অপরিচিত নাম্বার থেকে এত রাতে ফোন এসেছে দেখে নিশি ফোনটা কেটে দেয়। ফোনটা কেটে দিতেই ফোনের মেসেজ টোন টা বেজে ওঠে। ফোনের আওয়াজে নিছি ফোন হাতে নিয়ে দেখে সেই একই নম্বর থেকে একটা মেসেজ এসেছে। তাই নিশি মেসেজটা চেক করে দেখে ওখানে লেখা__
‘ নিশি ইটস মি, আমি নিহান ফোনটা রিসিভ করো!’
নিহানের মেসেজ দেখে নিশি মুচকি হেসে যেই কল ব্যাক করতে যাবে তখনই ফোনটা আবার বেজে উঠে।এইবার ফোন বাজতেই নিশি ফোন রিসিভ করে বারান্দায় চলে যায় কথা বলতে। কল রিসিভ হতেই ফোনের অপর পাশ থেকে নিহান বলল__
‘ কি ব্যাপার এত রাতে জেগে আছো যে?আমার কথা ভাবছো নাকি!’
নিহানের কথা শুনে নিশি নিহান কে বলে__
‘ আপনার কথা মনে করতে যাব কেন? ঘুম আসছিল না তাই ঘুমাইনি,তো আপনি এত রাতে কি করছেন?’
‘ তেমন কিছুই না, ছাদে বসে বসে চন্দ্র বিলাস করছি!’
নিহানের কথা শুনে নিশি বেশ খানিকটা অবাক হয়ে বলে __
‘কিহ, আপনি চন্দ্রবিলাস করছেন বাহ ভালই তো!’
‘ হ্যাঁ ;জানো আজকে চাঁদটা না অনেক সুন্দর উঠেছে, তুমিও আসো ছাদে একসাথে বসে চন্দ্র বিলাস করি!’
‘ আপনার কি মাথা গেছে,আপনি ওই বাড়ির ছাদে আর আমি খান বাড়িতে আমরা কিভাবে একসাথে চন্দ্র বিলাস করব?’
‘ আমি কখন বললাম আমি আমাদের বাড়ির ছাদে! আমি তো তোমাদের বাড়ির ছাদে!’
নিহানের কথা শুনে নিশি বলল__
‘ কিহ,আপনি আমাদের বাড়ির ছাদে! এত রাতে কিভাবে এলেন,আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন?’
‘ আরে মজা করতে যাব কেন?বিশ্বাস না হলে তুমি নিজেই ছাদে এসে দেখো!’
নিহানের কথা শুনে নিশি বলল__
‘ছাদে এসে যদি আপনাকে না পাই না তো দেখবেন কি করি!’
এই বলে নিশি ফোনটা কেটে চললো ছাদের দিকে।
#চলবে,,,,,