তোমার আমার প্রণয় পর্ব-৭

0
4524

#তোমার_আমার_প্রণয়
#israt_jahan_arina
#part_7

বসন্তের প্রথম দিনেই চারিদিকে চোখ পরতেই শুধু বাসন্তী রঙ আর নানা ফুলের ঘ্রাণ ভেসে আসছে। চারদিকে ফুলের মৌ মৌ গন্ধ। মেয়েরা বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে খোপায় নানান ধরনের ফুল গুঁজে রেখেছে।তবে এতো সবের মাঝে মাহাদের হৃদস্পন্দন বহুগুণে বেড়ে গেছে।পনেরো বছর বয়সী এক কিশোরী তাকে মাতাল করে তুলছে। এই কিশোরীর শাড়ির প্রতিটা ভাঁজে মাহাদ নিজেকে হারাচ্ছে। আচ্ছা!এই কিশোরী কি বুঝবে কখনো তার এইরূপ সামনের মানুষটাকে ঠিক কতভাবে ঘায়েল করেছে?

দৃশ্য কিছুটা সামনে আসতেই স্টেজের পাশে মাহাদকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো। কেমন ড্যাব ড্যাব করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। এমনিতেই আজকাল মাহাদের আশেপাশে আসলে তার কেমন অস্থির লাগে। মাহাদের চোখের চাহনি তাকে অস্বস্তিতে ফেলে। কিছুদূর আসতেই মৌ আর সায়মা সাথে দেখা হলো দৃশ্যর। দৃশ্য তাদেরকে দেখেই বললো

-“তোদের তো অনেক কিউট লাগতেছে।”

মৌ মুচকি হেসে বললো
-“আমাদের যদি এতোই কিউট লাগতো তাহলে মাহাদ ভাইয়ের চোখ তোর দিকে কি করে?”

-“বেশি কথা বলিস। চেয়ে দেখ সব মেয়েরা মাহাদ ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।”

কয়েক মিনিট পরেই মাহাদ দৃশ্যের সামনে এসে দাড়ালো। আর বলতে শুরু করলো

-“এই যে কিউট পিচ্চিরা, আজকে দোকানের সব আইসক্রিম তোমাদের জন্য উন্মুক্ত। যার যতটা ইচ্ছা খেতে পারো। আমার পক্ষ থেকে ছোটখাটো অফার।”

দৃশ্য ভীষণ এক্সাইটেড হয়ে বললো
-“সত্যি! আজকে তো আপনার পকেটে পুরো ফাঁকা হয়ে যাবে।”

-“তোমাকে সে চিন্তা করতে হবেনা পিচ্চি।”

দৃশ্যর মনটা কিছুটা খারাপ হয়ে গেলো।
এত সুন্দর করে শাড়ি পড়েও সে পিচ্চির খেতাব থেকে বের হতে পারলো না। মন খারাপ করে বললো

-“আমাকে কি আজকেও পিচ্চি লাগছে ভাইয়া? ধুর শাড়ি পড়ে কি লাভ হলো?”

মাহাদ মুচকি হাসলো। সে কেমন করে এই বাচ্চাটা কে বোঝাবে ঠিক কতটা লাবণ্যময়ী,আবেদনময়ী, মায়াবিনী লাগছে। সে বলে উঠলো

-“তোমার কি মনে হয় শাড়ি পরলে পিচ্চিরা বড় হয়ে যায়? শাড়ি সামলাতে পারবে তো?দেখো আবার খুলে না যায়।”

দৃশ্যর ভীষন রাগ হলো। সে মোটেও এতটা পিচ্চি না যে শাড়ি সামলাতে পারবে না। আজকে সারাদিন শাড়ি পড়েই মাহাদের সামনে ঘুরঘুর করবে আর দেখিয়ে দিবে সে সব পারে।
কিছুক্ষণ পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হলো। টিচাররা বিভিন্ন বক্তৃতা দিয়ে শুরু করলেন। ধীরে ধীরে নাচ গান আবৃত্তি আরো অনেকগুলো পারফরম্যান্স হলো। এবার মাহাদের নাম এনাউন্স হলো। বরাবরই মাহাদের গান সকলের খুব পছন্দ। স্টেজের আশেপাশে কিছুটা জনসমাগম বেড়ে গেলো। দৃশ্য ভেতর ভেতর অনেক এক্সাইটেড। এর আগে সে কখনো মাহাদের গান সরাসরি শুনেনি। চার বান্ধবি বসার জায়গা জোগাড় করে স্টেজের দিকে মনোযোগ দিলো। কিছুক্ষণ পর মাহাদ স্টেজ উঠলো হাতে তার গিটার। এক পলক আশেপাশে তাকিয়ে দৃশ্য কে খুজে বের করল মাহাদ। তারপর টুংটাং সুর তুলতে শুরু করল গিটারে।

কিছু কথার পিঠে কথা
তুমি ছুঁয়ে দিলেই মুখরতা,
হাসি বিনিময় চোখে চোখে
মনে মনে রয় ব্যাকুলতা।

আমায় ডেকো একা বিকেলে,
কখনো কোনো ব্যথা পেলে।
আমায় রেখো প্রিয় প্রহরে,
যখনই মন কেমন করে।

কোনো এক রূপকথার জগতে,
তুমি তো এসেছো আমারই হতে।
কোনো এক রূপকথার জগতে,
তুমি চিরসাথী আমার জীবনের
এই পথে।

কোথা’ও ফুটেছে ফুল,
কোথাও ঝরেছে তারা।
কোথাও কিছু নেই
তোমার আমার গল্প ছাড়া।

তুমি আমার স্বপ্নসারথি,
জীবনে তুমি সেরা সত্যি।
তুমি আমার স্বপ্নসারথি,
জীবনে তুমি সেরা সত্যি।

কোনো এক রূপকথার জগতে,
তুমি তো এসেছো আমারই হতে।
কোনো এক রূপকথার জগতে,
তুমি চিরসাথী আমার জীবনের
এই পথে।

সময় ফুরিয়ে যাক
প্রেমের কবিতা পড়ে,
ছড়াও কিছু সুখ
যখন তোমার ইচ্ছে করে।

তুমি আমার গল্প জোনাকি,
তোমারই আশায় আশায় থাকি।
তুমি আমার গল্প জোনাকি,
তোমারই আশায় আশায় থাকি।

কোনো এক রূপকথার জগতে,
তুমি তো এসেছো আমারই হতে।
কোনো এক রূপকথার জগতে,
তুমি চিরসাথী আমার জীবনের
এই পথে।

সকলের করতালিতে পুরো মাঠ মুখরিত হয়ে উঠলো। দৃশ্য মুগ্ধ হয়ে এতক্ষণ মাহাদের গান শুনছিলো। মাহাদ ভালো গান গায় সেটা তো সে শুনেছে। তবে এতটা ভাল গায়ে সেটা তার ধারণা ছিল না।

কিছুক্ষণ পর ভীষণ কষ্টে শাড়ি সামলে দৃশ্য ওরা গেলো দোকানে। মাহাদ আজ তাদের বিশাল অফার দিয়েছে। চার বান্ধবী মিলে দোকানে অ্যাটাক করে বসলো। একের পর এক আইসক্রিম খেয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ কারো ডাকে পিছনে ঘুরে তাকাল দৃশ্য। মানুষটাকে দেখে ভীষণ বিরক্ত হলো দৃশ্য। আবার সেই সাব্বির ভাইয়া। দৃশ্য বিরক্ত হয়ে নাবিলা কে বললো

-“নাবিলা চলতো এখনই বাসায় যাব আর এক মুহূর্ত এখানে না।”

তারা এখান থেকে বেরিয়ে যেতে নিলেই সাব্বির আবার বলতে শুরু করল

-“দৃশ্য আমার তোর সাথে কথা আছে।”

দৃশ্য বিরক্ত নিয়ে বললো

-“আপনার সাথে আমার কোন কথা নেই। তাছাড়া ফাহিম ভাইয়া জানলে কি হবে বুঝতে পারছেন?”

-“তোর ভাইকে আমি মোটেও ভয় পাইনা। শুধুমাত্র তোকে পছন্দ করি বলে চুপচাপ তোর ভাইয়ের মার খেয়েছি।”

-“যদি আবার মার খেতে না চান তাহলে আমার পিছু নেওয়া বন্ধ করুন।”

এতোটুকু বললেই দৃশ্য সামনের দিকে এগুলো। কিন্তু হঠাৎ থেমে গেলো। কারন সাব্বির তার রাস্তা আগলে দাঁড়িয়েছে।

-“তোকে ভীষণ সুন্দর লাগছে দৃশ্য। তুই এতটা হট আগে তো বুঝতে পারিনি।”

দৃশ্যর ভীষণ খারাপ লাগলো কথাটা। সে বয়সে ছোট হলেও কথাটা যে কতটা বাজে ভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে সেটা সে বুঝতে পেরেছে। সে চাইলেই পারে সাব্বিরকে দুই গালে দুইটা থাপ্পড় দিতে। কিন্তু সে এখানে কোনো সিনক্রেট করতে চাচ্ছেনা। কারণ বহু কষ্টে সে বাসা থেকে কিছুটা স্বাধীনতা পেয়েছে। এখন এসব বিষয়ে বাসায় বাবা-মা ভাইয়া জানতে পারলে সে আবার আবদ্ধ জীবনে পড়ে যাবে।

হঠাৎ কিছু পরে যাওয়ার শব্দের দৃশ্যর ধ্যান ভাঙ্গলো। সে দেখতে পেলো সাব্বির রাস্তায় পড়ে আছে আর সামনে রক্তচক্ষু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাহাদ। চোখের পলকেই মাহাদ বেশ কয়েক ঘা দিয়ে বসলো সাব্বিরকে। ইচ্ছে মত লাথি ঘুঁষি দিয়েই যাচ্ছে। ফাহিমের বদৌলতে এধরনের মারামারি দেখে দৃশ্য অনেকটাই অভ্যস্ত। কিন্তু তবুও আজ তার কিছুটা ভয় হচ্ছে। কারণ মাহাদ ভীষণ বাজে ভাবে সাব্বিরকে মারছে। আর বারবার মুখ দিয়ে খুব বাজে বাজে গালি দিচ্ছে। মাহাদ যে এতো সুন্দর গালি দিতে পারে দৃশ্যর জানাই ছিল না। মাহাদ সম্পর্কে দৃশ্যর অনেক ধারণাই বদলে গেছে। সে মাহাদকে ভীষণ শান্তশিষ্ট ভাবলেও আজ বুঝতে পারলো সে ভিশন বদমেজাজী।

আশেপাশে মানুষ জড়ো হয়ে গেছে। দৃশ্য এবার কিছুটা করুন চোখের জয়ের দিকে তাকালো। দৃশ্য চোখের ভাষা বুঝতে পেরে জয় ও তার বন্ধুরা মাহাদকে আটকাতে চেষ্টা করলো। কিন্তু মাহাদ যেন কিছুতেই থামতে রাজিনা।
রাফসান চোখের ইশারায় দৃশ্যকে এই জায়গা ত্যাগ করতে বললো। কারণ এখানে একজেক্টলি কি কারণে মারামারি হচ্ছে তার বেশিরভাগ মানুষই জানে না। তবে মেয়ে সংক্রান্ত কোন ঘটনা ঘটেছে সেটা সবাই বুঝতে পারছে। দৃশ্য আর নাবিলা দ্রুত সেই জায়গা ত্যাগ করলো।

বাসায় পৌঁছে দৃশ্য ভীষণ অস্থির হয়ে আছে। সেখানে শেষ অব্দি কি ঘটেছে তা তার ঠিক জানা নেই। সন্ধ্যার দিকে ফাহিম দৃশ্যর রুমে আসলো। আর বলতে শুরু করলো

-“তোদের স্কুলে কি আজ মারামারি হয়েছিল?”

দৃশ্য ভীষণ ভয় পেয়ে গেলো। ফাহিম ভাইয়া যদি কোন কারনে জানতে পারে সেই মারামারি ঠিক তার কারণে ঘটেছে তাহলে ভীষণ সমস্যা হয়ে যাবে।সে ভয়ে ভয়ে বললো

-“আ..আমি ঠিক জানিনা ভাইয়া। আমি তো আগেই চলে এসেছি।”

-“ও। স্কুলে তোর কোন সমস্যা হচ্ছে না তো? কেউ কোন ডিস্টার্ব করলে সাথে সাথে আমাকে জানাবি।”

-“ঠিক আছে।”

-“ছবি তুলিস নি? অন্য দিন তো ফেসবুকে আগে আগে সব ছবি আপলোড হয় আজকে কি হলো?”

দৃশ্যত আজকের ঘটনার জন্য ছবি আপলোড করতে ভুলেই গেছে। কিছুটা আমতা আমতা করে বললো

-“এইতো ভাইয়া একটু পরেই আপলোড দিব আমার কিন্তু লাভ রিয়েক্ট চাই।”

ফাহিম হেসে দিলো। দৃশ্যর চুল টেনে ধরলো। আর বললো

-“পচা পিকে আমি লাভ রিয়েক্ট দেয়না। তোর ছবি তো সব বাঁদরের মতো। তাই শুধু হা হা রিয়েক্ট দিব।”

-“একদম ঠিক হবে না কিন্তু ভাইয়া। তোমাকে আমি ব্লক মারব।”

-“যা যা তোর সাথে ফেসবুকে অ্যাড থাকার আমার এত ঠেকা পরছে।”

-“দাঁড়াও আজকেই তোমাকে ব্লক দিব আমি।”

-“হইছে এখন খেতে আয়।”

-“তুমি যাও আমি আসছি।”

ফাহিম চলে যেতেই দৃশ্য যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। আল্লাহ বাঁচিয়েছে ফাহিম কিছু জানেনা। না হলে কাল থেকে তো তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেত। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দৃশ্য খাটে শুয়ে আছে। ভয়ে মাহাদকে মেসেজও দিতে পারছে না। কিন্তু তার ভীষণ টেনশন হচ্ছে।উনি ঠিক আছে তো?

এইদিকে তার বন্ধুরা বহুকষ্টে মাহাদকে থামিয়ে সেখান থেকে নিয়ে এসেছে। মাহাদ যেন রাগে ফুঁসছে। তানিম বললো

-“চুপচাপ বস এখানে আর ব্যান্ডেজ করতে দে। হাতটা একদম থেতলে গেছে।”

রাফসান মুচকি হেসে বললো

-“মামা যাই বলো, আজ বহুদিন পর আমাদের মাহাদের এই রূপ দেখতে পেলাম। কিন্তু মাহাদ,পিচ্ছি ভাবী মনে হয় আজ ভীষণ ভয় পেয়েছে তোর এই রূপ দেখে।”

মাহাদ মাথা কিছুটা ঠান্ডা করে বললো

-“ওই বাস্টারের সাহস কিভাবে হয় ওকে বাজে কথা বলার। ওকে আজকে আমি মেরে ফেলতাম।”

জয় বললো
-“মাথা ঠান্ডা রাখ রাগারাগি করে কিছুই হবে না। তবে দৃশ্য ভাবি মনে হয় কিছুটা ভয় পেয়েছে।”

বাসায় ফিরতেই মহাদের হাতে ব্যান্ডেজ দেখে তার মা ভীষণ অস্থির হয়ে উঠলো। মাহাদের দাদি বিলাপ করতে শুরু করলো।

-“আমার নাতির কি হলো আল্লাহ? কোন শয়তানের নাতি আমার চান্দের টুকরা নাতিরে ব্যথা দিলো।”

মাহাদের বিরক্ত লাগছে। বিরক্ত নিয়ে এসে বলল

-“মা,দাদী তোমরা থামবে প্লিজ। কিছুই হয়নি। আর তোমার কি মনে হয় তোমার নাতি মাইর খেয়ে বাসায় ফিরবে। মাহাদ মার খেয়ে না,মার দিয়ে বাসায় আসে।”

মাহাদের কথা শুনে দাদী মনে হয় কিছুটা খুশি হলো।
খুশি হয়ে বললেন

-“এই না হলে আমার নাতি। বাঘের বাচ্চা একটা। একদম দাদার মত সাহসী হয়েছে।”

কিন্তু মাহাদের মা মোটেও খুশি হতে পারলেন না। এ ধরনের মারামারি ঝগড়াঝাঁটি তিনি মোটেও পছন্দ করেন না।

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে মাহাদ মোবাইল হাতে নিলো। ফেইসবুকে ঢুকতেই দেখতে পেলো তার পরী টা বেশ কয়েকটা ছবি আপলোড করেছে। প্রত্যেকটা ছবি মাহাদ খুব নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তার মধ্য থেকে একটা ছবি তার মোবাইলের ওয়ালপেপারে সেট করে নিলো। দৃশ্যর খোপায় গোজা গাজরার সুভাষ নেওয়ার ভীষণ ইচ্ছা হচ্ছিল তার। কিন্তু পিচ্চিটা হয়তোবা ভয় পাবে ভেবে ইচ্ছাকে দমন করে নিয়েছে।
কিছুক্ষণ পর সে দৃশ্য কে কল করলো। প্রথম বারে রিসিভ না হলেও দ্বিতীয়বারে কলটা রিসিভ হলো।
মাহাদ বললো

-“ঠিক আছো পিচ্ছি?”

-“হুম।”

-“ও তোমাকে ডিস্টার্ব করে আমাকে আগে বলনি কেন?”

-“এমনি। তাছাড়া ভাইয়া বেশ কয়েকবার তাকে আচ্ছা মত ধোলাই দিয়েছে।”

-” ভালো করেছে তোমার ভাইয়া। নেক্সট টাইম এমন কিছু হলে অবশ্যই আমাকে আগে জানাবা।”

-“হুম।”

-“ভয় পাচ্ছ আমাকে?”

-“তেমন কিছু না। আসলে এমন কোন সিনক্রিয়েট হোক আমি তা চাইনি। ভাইয়া জানলে ভীষণ সমস্যা হয়ে যেত।”

-“চিন্তা করো না বুড়ি। এরপর থেকে এ ধরনের সমস্যা হলে আমাকে বলবে।”

-“আপনি ঠিক আছেন?”

-“হাতে একটু ব্যথা পেয়েছি। এছাড়া তেমন কিছু না।”

-“আপনি শুধু শুধু ঝগড়া করতে গেলেন। আমার জন্যই আপনার আঘাত লেগেছে।”

-“এইটা কোনো ব্যাপার না। নিজের জিনিসের খেয়াল আমি নিজেই রাখতে পারি। আমার জিনিসে অন্য কারও হস্তক্ষেপ আমি মোটেও পছন্দ করিনা।”

মাহাদের কথার মানে দৃশ্য কিছুই বুঝতে পারলো না।তাই বললো
-“মানে?”

-“মানে কিছুই না। আরেকটু বড় হও তখন বুঝবে।”

-“আপনি খালি আমাকে পিচ্চি পিচ্চি বলেন কেন? জানেন আজ চাচি বলেছে আমি অনেক বড় হয়ে গেছি কিছুদিন পর বিয়ে দিতে পারবে।”

-“তুমি যদি এখন সংসার করতে রাজি থাকো আমার তাতে সমস্যা নেই।”

-“আমি এখন সংসার কেন করব?”

-“তোমার চাচি না বললো?”

-“ও সেটাতো এমনি বলেছে। আমিতো এখন সংসার করবো না ।আগে আমি বড় হব অনেক ভালো চাকরি করব তারপর একটা কিউট ছেলে দেখে বিয়ে করবো।”

-“আমাকেও কিন্তু সবাই অনেক কিউট বলে।”

-“হ্যাঁ জানি তো, আপনি তো আসলেই কিউট।”

কথাটা বলেই দৃশ্য জিভ কাটলো। ইসস মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেলেছে সে।
দৃশ্যর চুপ থাকা দেখে মাহাদ কিছুক্ষণ মনে মনে হাসলো। পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে দৃশ্য দ্রুতই কথা শেষ করলো এবং ঘুমের মাঝে হারিয়ে গেলো। কিন্তু মাহাদের রাতে ঘুম হলো না। পিচ্চিটা তার ঘুম হারাম করে রেখেছে। হাজারো অনুভূতির মাঝে ঘীরে আছে মাহাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here