তোকে চাই❤part:31/34

0
12008

#তোকে চাই❤part:31
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#


বেডে আধশোয়া হয়ে বসে আছি,,পাশে আপু আর মামানি।।আপু অনর্গল কথা বলে চলেছে,,আমার চুপচাপ বোনটা আজ এতো বাচাল কিভাবে হয়ে গেলো বুঝতে পারছি না।।হঠাৎই কেউ একজন প্রচন্ড জোড়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো,,,প্রথম দফায় চমকে গেলেও শুভ্রকে দেখে শান্ত হয়ে বসলাম।।উনি একপ্রকার দৌড়ে ভেতরে ঢুকলেও আমাকে বসে থাকতে দেখা মাত্র থেমে গেলেন।। কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে,,,আমার কাছে এসে হাত চেপে ধরলেন,,,

রোদ চলো,,,

আমি তো অবাকই সাথে আমার পুরো পল্টনও অবাক,,,এর মধ্যেই সবাই রুমে প্রবেশ করেছে।।মামুকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি বিন্দুমাত্রও অবাক হন নি।।শুভ্র যে এমন পাগলামো আবার কন্টিনিউ করবে তা সম্পর্কে তিনি অবগত।।।

কি হলো চলো,,,,ওপপস্ সরি তুমি তো হাঁটতে পারবে না,,,

কথাটা বলেই কোলে তুলে নিলেন,,,হাতে স্যালাইন লাগানো ছিলো,,,টান পড়ায় রক্ত উঠে গেলো,,ব্যাথায় কুকিয়ে উঠলাম।।।উনি ভ্রু কুচকে আমার হাতের দিকে তাকালেন,,,

আমি বলেছিলাম না ওকে এসব না লাগাতে??(রাগী গলায়)কেনো লাগিয়েছেন এগুলো??হোয়াই???(চিৎকার করে)

উনার চিৎকারে আমার অন্তরআত্মা কেঁপে উঠলো,,,লোকটা কি আসলেই পাগল টাগল হয়ে গেছে নাকি??।উনি আবার আমাকে সাবধানে বেডে বসিয়ে দিয়ে,, ধীরে ধীরে হাতের স্যালাইনটা খুলে নিলেন,,এমনভাব যেনো সুঁইটাও ব্যাথা পেয়ে যেতে পারে উনার হাতের ছোঁয়ায়।।আমি শুধু উনাকেই দেখছে,,কেমন বাচ্চা বাচ্চা লাগছে উনাকে।।।আচ্ছা?আজ যদি সত্যি মরে টরে যেতাম তাহলে কি সত্যিই উনি পাগল টাগল হয়ে যেতেন নাকি???উনার কাজ শেষ হতেই আবারো কোলে তোলে নিলেন আমায়,,আর সোজা দরজার দিকে হাঁটা দিলেন,,,

শুভ্র কই নিয়ে যাচ্ছিস ওকে??

বাসায়,,,

হোয়াট,,,আল্লাহ আমার ছেলে সত্যিই পাগল হয়ে গেছে,,,আরে বাপ আজই অপারেশন হলো,, আল্লাহর ওয়াস্তে,, দুটো দিন এখানে থাকতে দে ,,

এক মিনিটও থাকতে দিচ্ছি না,,,ও আমার সাথেই থাকবে,,,এখানে এই ডাফারদের মাঝে তো কখনোই ওকে রাখবো না আমি,,,,যখন তখন সুঁই ঢুকিয়ে দেই,,,,ম্যানারলেস।।

উনার কথা শুনে আমার হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে,,আল্লাহ আর কি কি দেখাবা??মিষ্টার আবরার শুভ্র কিনা এমন ভিত্তিহীন পাগলামো করছে,,,

চুপপ,,,এমন ভাব করছিস,,বউ তোর একার আছে,,,আরে এখানে আমাদের সবারই বউ আছে,,,বউকে নিয়ে চিন্তা আমরাও করি বাট তোর মতো বাড়াবাড়ি না,,,,

তোমাদের বউরা বুড়ো বাট আমার টা বাচ্চা,,,,সো ডিফারেন্স তো হবেই,,,

উনার এমন একনাম্বারের ফাউল যুক্তির পর মামু বলার মতো আর কিছুই খুঁজে পেলেন না।।।শুভ্র অন্য কারো বর হলে আর নামি হিরোইন না হয়ে অডিয়েন্স হলে এতোক্ষণে হাসিতে গড়াগড়ি খেতাম,,,বাট ব্যাপারটা যেহেতু আমায় ঘিরে তাই এখন বড্ড লজ্জা লাগছে।।।উনার জেদের সামনে সবাইকে হার মানতে হলো,,,অবশেষে বাসায়ই আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলো।।।

রাত ১১ঃ৩২ মিনিট,, আমি বিছানায় শুয়ে আছি,,আর উনি আমার পাশে আধশোয়া হয়ে বসে লেপটপে কিছু একটা করছেন,,,,

এটা কি হলো??(রাগী চোখে)

কি??(ভ্রু কুঁচকে)

কি মানে??আপনি এমনটা কেনো করলেন??

আমি আবার কি করলাম??(অবাক হয়ে)

হসপিটাল থেকে ওভাবে নিয়ে এলেন কেনো??সবাই কি ভাবছে বলুন তো,,,,

তুমি ওই উদ্ভট জায়গায় কেন থাকবা??তাছাড়া তুমি তো একদম ঠিক আছো,,,

কিহ??লাইক সিরিয়াসলি?? আমার মাথায় ব্যান্ডেজ,,হাতে -পায়ে ব্যান্ডেজ আর আপনার মনে হচ্ছে আমি ঠিক আছি??

উনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে উঠলেন,,,,

জাস্ট স্যাট আপ রোদ,,,,ওলওয়েজ বেশি কথা বলা ইম্পর্টেন্ট না,,,,চপচপ না করে ঘুমোও(রাগী চোখে)

ওহ,,অবশেষে মিষ্টার আবরার শুভ্র নিজের ক্যারেক্টারে ব্যাক করেছেন,,,থ্যাংক গড।।।বিছানায় শুয়ে উনার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি,,,,ইচ্ছে করছে উনার গোছিয়ে রাখা চুলগুলো এলোমেলো করে দিই,,,,এত্তো কিউট কেন উনি,,,ইসসস এত্তো কিউট এন্ড হ্যান্ডসাম ছেলেটা আমার হাজব্যান্ড ভাবতেই শরীর শিউরে উঠে,,,,

কি ব্যাপার এভাবে তাকিয়ে আছো কেন???(লেপটপের দিকে তাকিয়ে)

আপনি আসলেই অনেক সুন্দর,,,

উনি লেপটপ থেকে মুখ তুলে সামনে তাকালেন,,,তারপর একটা মুচকি হাসি দিয়ে লেপটপটা সাইড টেবিলে রেখে আমার দিকে তাকালেন,,,

তোহ,,মিসেস নৌশিন আবরার,,,আধা ঘন্টা তাকিয়ে থাকার পর আপনি বুঝতে পারলেন আমি সুন্দর??(বাঁকা হাসি দিয়ে)

হুম,,আপনি এতো সুন্দর কেন??ছেলেদের এতো সুন্দর হতে নেই,,,সৌন্দর্য তো মেয়েদের জন্য,,,,

তাই???তো ছেলেরা সুন্দর হলে কি সমস্যা??

অবশ্যই সমস্যা,,,এইযে আপনার বদলে যদি আমি বেশি সুন্দর হতাম তো আপনি আমার দিকে তাকিয়ে থাকতেন,,,,কিন্তু এখন উল্টো হচ্ছে,,ব্যাপারটা প্রকৃতি মেনে নিতে চাচ্ছে না।।।এটা নিসন্দেহে হাস্যকর,,,কোনো মেয়ে একটা ছেলের দিকে “হা” করে তাকিয়ে আছে ব্যাপারটা ভালো দেখায় না।।।(ঠোঁট উল্টিয়ে)

উনি আমার কথায় হো হো করে হেসে উঠলেন,,,দেখেই বুঝা যাচ্ছে মন খুলে হাসছেন আর আমি মন ভরে দেখছি,,,,মিনিটে হাজারবার আমি এই ছেলেটার প্রেমে পড়তে রাজি।।আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে উনি হাসি থামিয়ে আমার কপালে একটা চুমু এঁকে দিলেন,,,,আমি তো রীতিমতো ফ্রিজড,,এটা কি হলো??উনি নিজে থেকে??কেমনে কি??উনি মুচকি হেসে আমার শরীরে কাঁথা টেনে দিয়ে,, লাইট অফ করে অন্যদিক হয়ে শুয়ে পড়লেন।।হয়তো শান্তির ঘুম ঘুমুচ্ছেন,,কিন্তু আমার ঘুম তো হারাম করে দিলেন।।চোখে তো শুধু স্টার জলসার মতো একটা সীনই চলছে,,,”হি কিসড মি”….


সকালে ঘুম ভেঙে নিজেকে উনার দুই হাতের বাঁধনে খুজে পেলাম।।।খুব শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখেছেন আমায়,,যেনো এখনি ছুটে পালাবো।।আমি একটু নড়েচড়ে উঠতেই উনি আরো শক্ত করে চেপে ধরলেন ,,,উনার গায়ের একদম অন্যরকম স্মেলটা আমার নাকে ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে বার বার,,,নিজেকে উনার এতো কাছে ফিল করার সুযোগ করে দিচ্ছে যেনো।।।আমি শুধু উনাকেই দেখছি,,,,বুজে থাকা দুটো চোখে ঘন লম্বা পাপড়ি,,হালকা বাদামি এলোমেলো চুল,,,,ডার্ক রেড একজোড়া ঠোঁট,,খাড়া নাক,,,থুতনির কাছে একটা টকটকে কালো তিল আর টকটকে ফরসা চামড়া,,,,উনার গায়ের প্রতিটা লোমও যেনো একেকটা কিউটের ডিব্বা,,,, ইসসসস,,,এতোটা সুন্দর না হলেও তো চলতো,,,,


সময়গুলো থেমে থাকে না,,,কেমন অবিরাম ছুটে চলে,,,দেখতে দেখতে আরো দুটো সপ্তাহ চলে গেলো।।।আমি এখন একদম সুস্থ।।রাত ৮ টা বাজে,,খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছি,,,কিছুদিন পরই এডমিশন টেস্ট,,,,কিছুই যেনো পড়া হয় নি।।।উফফ টেনশন।। হঠাৎই উনি এসে চোখ থেকে চশমাটা খুলে নিলেন,,,

আরেহ,,,এটা কি হলো??আমি পড়ছি তো,,চশমা দেন।।

চশমা পড়ো কেন??(ভ্রু কুঁচকে)আগে তো পড়তে না।।

মাথা ব্যাথা করলে মাঝেমাঝে পড়ি,,এখন দেন তো।।

মাথাব্যথা করলে মাথায় তেল দিতে হয়,,,তুমি তো জীবনেও তেল দেও না,,,আমি তেল লাগিয়ে দিচ্ছি ওয়েট,,,

হোয়াট??নো ওয়ে,,,আমি তেল দিচ্ছি না।।।তেল দিলে কেমন চিপচিপে লাগে,,তারউপর পেত্নী পেত্নী লাগে।।।কাল আমার কোচিং আছে,,,আজ তো কোনোভাবেই তেল লাগাবো না,,,

তেলের সাথে কোচিং-এর কি সম্পর্ক?? (ভ্রু কুঁচকে)

অবশ্যই সম্পর্ক আছে,,তেল দিয়ে ভূত সেজে যাবো,,মানুষ কি বলবে??

ঠাডায় দিবো একটা,, কোচিং এ চেহারা দেখাতে যাও??এখন তো আরো বেশি করে দিয়ে দিবো,,,

নোওওওওওওও

ইয়য়য়য়য়েসসসসস

উনার জেদের সামনে কোনো দিনই পেরে উঠি নি,, আজ যে পারবো সে আশা রাখাটাও নিরাশা।।উনি আমার মাথায় বেশ যত্ন করে তেল লাগিয়ে দিচ্ছেন,,প্রতিটি চুলকে এমন ভাবে নাড়াচাড়া করছেন,,যেনো চুলগুলোকে উনি ঘুম পাড়ানোর চেষ্টায় আছেন,,,,তেল লাগানো শেষ করে,,,চিরুনি নিয়ে আচড়াতে বসলেন,,,

বাহ,,তোমার চুল তো অনেক বড়,,আগে খেয়ালই করি নি,,,

হুমম,,কোমরের নিচ পর্যন্ত পড়ে,,,

জানো,,আমি ভেবে রেখেছিলাম আমার মেয়ের এত্তোবড় চুল রেখে দিবো,,,সবাই অবাক চোখে দেখবে,,,

তাই??কিন্তু আপনি তো বাবাই হতে চান না,,,

হুমম,,এখন আর ইচ্ছে নেই।।

কেনো??স্বপ্নগুলো নীলি আপুর সাথে দেখেছিলেন তাই??নাকি হারানোর ভয় পান??

উনি আমার কথার উত্তর না দিয়ে দুই কাঁধে দুটো বেনী ঝুলিয়ে দিয়ে বললেন,,,

একদম বাচ্চা বাচ্চা লাগছে,,,ইসসস,,,,তুমি এতো পিচ্চি কেন???আমি তো ভেবেই পাচ্ছি না,,সামনে বসে থাকা গুলুমুলু বাচ্চাটা আমার বউ,,,,

#চলবে,,,,,

(সবাই শুধু শুভ্রর ভালোবাসায় দেখলো,,আমারটা কেউ দেখলো না,,,যাওয়ার আগে যে হালি হালি ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছি সেটার কি??????টানা ৫ টা পার্ট দিলাম,,,,আমিও শুভ্র থেকে কম কিসে,,টোটাল ধামাকা দিয়া দিছি,, শুধু আপনাদের ভালোবাসাটাকে রেসপেক্ট জানাতেই,,,,,সো রটার্ন গিফ্ট হিসেবে এত্তোগুলো দোয়া আর ভাললবাসা চাই,,,ফাঁকা হাতে কিছু চলবে না??)

#তোকে চাই❤
# writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:32


রান্না ঘরে মুখ গোমরা করে দাড়িয়ে আছি।।মনটা বেশ খারাপ।।আজ শুভ্রর বড় খালামনি এসেছেন।।মহিলাটা দেখতে ঠিক স্টার জলসার দজ্জাল শাশুড়িদের মতো।।।সংসারে আগুন ধরানোর জন্য আমাদের সমাজে কিছু থার্ড পার্সোন মানুষ আছে,,উনি তাদের অন্তর্ভুক্ত।। এখানে এসেও শুরু হয়ে গেছেন।।।কিন্তু মামানির কাছে ঠিক পাত্তা পায় নি।।আমার শাশুড়ি আবার বউমাদের বিরুদ্ধে একটা কথাও শুনতে পারেন না।।।আগেই বলে দিয়েছেন,,”ওরা আমার বউমা নয় আমার মেয়ে।।দোষী হলেও আমার আর গুণী হলেও আমার।।আমার মেয়েদের সম্পর্কে অন্যকারো কাছ থেকে আমার জানতে হবে না বড়আপা”।।কিন্তা বজ্জাত মহিলা বলে কথা।।।এতো সহজে মানবে নাকি??এসেই আপুকে এক দফা ঝেরে দিয়েছেন।।আপুর অপরাধ,,আপু উনাকে পা ধরে সালাম না করে, মুখে সালাম দিয়েছে।।তাতেই আমার বোন আনকালচার্ড হয়ে গেছে,,,তার নাকি শিক্ষা নেই।।আপু বরাবরই চুপচাপ,,বড়দের কথার পিঠে কথা কখনোই বলে না,,তাইতো রান্না ঘরে এসে চোখের জল ফেলে চলেছে,,,,আমারও খুব কান্না পাচ্ছে,,ইচ্ছে করছে এই মহিলার চুলে আগুন ধরিয়ে দিই,,পুড়ে যাক সব।।।উনার চায়ে চিনির বদলে হারপিক দিয়ে দেওয়া উচিত,,,মনটা পরিষ্কার হতো।।আমার সবচেয়ে খারাপ লেগেছে অভ্র ভাইয়ার বিষয়টি,,আপুকে এতোগুলো কথা শুনানোর পরও উনি একটা কথাও বললেন না।।মানছি বড়দের রেস্পেক্ট করেন তাই বলে চোখের সামনে ওয়াইফকে অপমান করবে আর উনি তার প্রতিবাদ করবেন না??এটা তো রীতিমতো কাপুরুষতা।।। উনি জানেন উনার স্ত্রী প্র্যাগনেন্ট আর এ ও জানেন যে দিদার কথাই আপু নিচু হয়ে সালাম করেনি তবু কিচ্ছুটি বলেন নি,,,,হায়রে পুরুষজাতি।।।


রাতে ঘুমুচ্ছিলাম,,,মাঝরাতের দিকে শুভ্রর চিৎকারে ধরফরিয়ে উঠে বসলাম,,,উনি চুপচাপ বসে আছেন,,উনার শরীর অসম্ভব রকম কাঁপছে,,, কোনো দুঃস্বপ্ন দেখেছেন কি??তাড়াহুড়ো করে উনার কাঁধে হাত রাখলাম,,

কি হয়েছে??ঠিক আছেন??কোনো দুঃস্বপ্ন….

আমাকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন,,,আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না,, তবে উনার শরীরের কম্পনটা আরো বেশি করে ফিল করছিলাম,,,উনার হার্ট যেনো বেরিয়ে আসতে চাইছে,,,,কি এমন হয়েছে যে উনি এতোটা ভয় পেয়েছেন??

কি হলো??এভাবে কাঁপছেন কেনো??কি হয়েছে??খারাপ স্বপ্ন দেখেছেন??

ত,,,ত,,,তুমি যাবে না।।।ও,ওর স,,সাথে যাবে না।।

কোথায় যাবো না?আর কার সাথে না যাওয়ার কথা বলছেন??আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।।

নী,,,নীলি তোমাকে নিয়ে যাবে।।।ও তোমাকে আমার থেকে নিয়ে য,,,যাবে।।।তু,,,তুমি কিছুতেই যাবে না ওর সাথে,,কিছুতেই না।।(আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)

কি বলছেন এসব??নীলি আপু কোথা থেকে আসবে??আর আমাকেই বা কেনো নিতে যাবে??আপনি জাস্ট স্বপ্ন দেখেছেন,,,

না,,ও ও বলেছে,,তুমি আমার থেকে ওকে বেশি ভালোবাসো।।তোমাকে আমার থেকে কেড়ে নিবে ও।।।নিয়ে যাবে,,,আমি আবার একা হয়ে যাবো।।।

আপনি শান্ত হোন প্লিজ,, দেখুন নীলি আপু এখানে নেই,,কেউ নেই এখানে,,,আমাকে নিবে না

ত,,তুমি তো আমার রোদ তাই না??ওর সাথে কেন যাবে??মোটেও যাবে না,,,,একদম যাবে না,,,আমি যেতে দিবো না ,, কিছুতেই না।।

আমি যাবো না,,,আপনি একটু শান্ত হোন,,,

ও নিয়ে যাবে,,,নিয়ে যাবো তোমায়।।।কি করি আমি??কিভাবে আটকাবো তোমায়??কি করবো আমি??কি করবো??

উনি হন্তদন্ত হয়ে এদিক ওদিক খুঁজে,, বালিশের পাশে রাখা আমার ওড়নাটা নিয়ে,,,উনার হাতের সাথে আমার হাতটা,শক্ত করে বেঁধে নিলেন,,,

এখন আর যেতে পারবে না,,, ও আর নিতেই পারবে না।।।আমার রোদকে আমি কেনো দিবো??কিছুতেই দিবো না,,,সবাইকে মেরে দিবো,,তবু নিতে দিবো না,(আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)

মাঝরাতে উনার এমন পাগলামোতে আমি কি রিয়েকশন দিবো তাই বুঝতে পারছি না।।টুটালি বাচ্চাদের মতো বিহেভ করছেন।।

কেউ নিবে না আমায়,,,কারো এতো সাহসই নেই,,আপনি এমন পাগলামো বন্ধ করুন,,, নয়তো আমিই চলে যাবো,,

না,,,যেও না প্লিজ,,আমাকে রেখে যেয়ো না,,আমার কষ্ট হয় খুব,,(করুন গলায়)বলো যাবে না,,কখনো যাবে না,,,আমি যেতে দিবো না।।।

কথাগুলো বলেই বাচ্চাদের মতো ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।।।ইসসস,,,কি একটা পরিস্থিতি।। আমি উনাকে শান্ত কি করে করবো তাই বুঝতে পারছি না,,,,ক্রমাগত ফুপিয়ে চলেছেন,,সেইসাথে ঘেমে একাকার,,,আর এমনভাবে জড়িয়ে ধরে আছেন যেনো এখনি ধমফুটো হয়ে মরে যাবো।।আর কিছু না ভেবে,,নিজেকে কোনো রকম ছাড়িয়ে বাম হাতে উনার গলা জড়িয়ে উনার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম,,,উনি শান্ত হতেই ছেড়ে দিলাম,,,মুখের কি অবস্থা করেছেন,,,

শোয়ে পড়ুন তো ঘুমাবো,,,কাল কোচিং-এ যেতে হবে।।।

না,, না,,, কোথাও যাবে না তুমি।।শুধু আমার সাথে থাকবে,,,আর কোথাও যাবে না।।শুভ্রর রোদ,শুভ্রর কাছে থাকবে,,,

আচ্ছা কোথাও যাবো না,,,কিন্তু ঘুমাতে তো হবে,,ঘুম পাচ্ছে খুব।।

ঘুমালে ও তোমায় নিয়ে যাবে,,,,

নিবে না,,শুয়ে পড়ুন তো,,(বিরক্ত হয়ে)

উনি আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে আমায় নিয়ে বিছানা থেকে নামলেন,,,সোফার সব কোশন নিয়ে বিছানার একপাশে রাখলেন,,,আলমারি থেকে বালিশ বের করে সেগুলোও পাশে রেখে আমাকে শুইয়ে দিয়ে গায়ে ভালো করে কম্বল পেঁচিয়ে দিলেন।।।তারপর আমার অন্যপাশে নিজে শুয়ে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে নিলেন।।আমি শুধু উনার কান্ড দেখছি।।সারাদিন নীলি নীলি করা ছেলেটা,,,আমাকে সেই নীলির হাত থেকে বাঁচাতেই এসব বাচ্চামো করছেন,,ভাবা যায়???বালিশ আর কম্বল দিয়ে আমাকে প্রটেক্ট করার চেষ্টা,,এটা বাচ্চামো নয়তো আর কি??উনার এসব পাগলামোতে হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না।।খুব ভালো করেই জানি,,সকাল হলেই সব ভুলে যাবেন,,তবু কেমন একটা শান্তি লাগছে।।

সকালে ঘুম ভেঙে উনাকে পাশে পেলাম না।।হাতের ওড়না খোলা।।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি নয়টা বাজে।।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই দেখি,,নিচে গল্পের আসর জমেছে।।ডান সাইডের সোফায় মধ্যবয়স্ক দম্পতি আর তাদের পাশে সাহেল ভাইয়া বসে আছে।।।এই সকালে উনাকে দেখে বেশ অবাক হলাম।।।সাহেল ভাইয়ার পাশের সোফায়,শুভ্র বসে আছে,,রিমোট হাতে ক্রমাগত চ্যানেল পাল্টাচ্ছে,,,তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে চরম বিরক্ত।।।আমি কাছে আসতেই সাহেল ভাইয়া বলে উঠলেন,,

মা-বাবা,,এইতো রোদ।।ওর কথায় তোমাদের বলেছিলাম।।

বাহ বেশ মিষ্টি তো,,

আসসালামু আলাইকুম,,

ওয়ালাইকুম আসসালাম,,, কেমন আছো মা??

জি ভালো,,

খুব মিষ্টি মেয়ে তো তুমি,,,(মুচকি হেসে)

মিষ্টি তো হবেই আমাদের মেয়ে বলে কথা,,,

তা ঠিক,,,তবে ভাইজান আজ একটা আবদার নিয়ে এসেছি,,,,আবদারটা কিন্তু রাখতে হবে,,

কি আবদার সেটা তো বলুন ভাবি,,

আসলে কথাটা সাহেলের বিয়ের ব্যাপারে,,,

বাহ,,সাহেলের বিয়ে??কবে?মেয়ের নাম কি??

তারজন্যেই তো তোমার কাছে আসা,,,

মানে??ঠিক বুঝলাম না,,,

তোমার ভাগ্নী রোদকে সাহেলের বেশ পছন্দ,,তোমরা রাজি থাকলে বিয়ের কথাটা পাকা করা যেতো আরকি,,,

উনার কথাটা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়লাম।।।চারপাশে ভয়াবহ নিস্তব্ধতা।। বাড়ির সবাই তো অবাকই,,কাজের লোকরাও অবাক।।।এই প্রথম হয়তো শশুড়ের কাছে কেউ তারই পুত্রবধূর বিয়ের কথা বলছে।।।আমি আড়চোখে শুভ্রর দিকে তাকালাম,,,সে আগের মতোই চুপচাপ বসে রিমোট নিয়ে গুতাগুতি করছেন।।।যেনো ব্যাপারটাই তিনি মোটেও বিস্মিত নন।।।কিন্তু মামু ব্যাপারটি হজম করতে পারলেন না,,,

হোয়াটট???কি বলছো??ইম্পসিবল,,,,

#চলবে,,,,

#তোকে চাই❤
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:33


হোয়াটট,??কি বলছো??ইম্পসিবল,,,,

কেনো ভাইজান??এভাবে বলছেন কেন??সাহেলের মধ্যে কি কোনো সমস্যা আছে???যার কারনে আপনি মানা করছেন,,,

না সাহেলের মধ্যে কোনো প্রবলেম নেই,,,কিন্তু প্রবলেম যা আছে,,,তাও কম কিছু নয়,,

মানে??ঠিক বুঝলাম না,,,

রোদ ম্যারিড,,,, একটা ম্যারিড মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছো,, ব্যাপারটা খুবই অসস্তির,,তাই নয় কি??

মামুর মুখে “রোদ ম্যারিড ” কথাটা শুনে উনাদের তিনজনের মুখটাই ফ্যাকাসে হয়ে গেল।।।এমন কিছু হবে ভাবে নি তারা।।

রোদ ম্যারিড??(অবাক হয়ে)তাহলে শুভ্র?তুই বা রোদ কেউ কিছু বলিস নি কেনো??

সাহেলের প্রশ্নে শুভ্র একটু নড়েচড়ে বসলো,,,রিমোটের ব্যাটারী চেক করতে করতে খুব স্বাভাবিক গলায় বলে উঠলো,,”তুই তো জিজ্ঞেস করেস নি যে রোদ বিবাহিত কিনা,করেছিলি কি??”।।সত্যি তো সাহেল তো এমন কোনো প্রশ্ন শুভ্রকে করে নি।।তাই বলে কি শুভ্রর বলা উচিত ছিলো না??

তাহলে ওর হাজবেন্ড কোথায়??রোদ ওর হাজবেন্ডের সাথে কেনো থাকে না??এনি প্রবলেম??

কথাটা বলে,, কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই উনি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন,,,

রোদ,,তুমি যদি রাজি থাকো,,,আমি তোমায় এভাবেই বিয়ে করবো,,,তোমার হাজবেন্ডের সাথে কথা বলে ডিবোর্জ নেওয়ার দায়িত্ব আমার,,,,তুমি রাজি তো??

আমার এবার কান্না পাচ্ছে,,,একটা মেয়ের জন্য একটা নিঃসন্দেহে অপমানজনক।।নিজের হাজবেন্ডের সামনে কেউ আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে আর উনি চুপ করে বসে আছেন।।।এসবের মানে কি?আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি,,চোখ থেকে যেকোনো টাইম জল ঘরিয়ে পড়বে,,,,ঠিক তখনই শুভ্র মুখ খুললেন,,

কিন্তু আমি রাজি নই,,

তুই রাজি নস মানে??আর তুই রাজি হওয়া না হওয়ার কি আছে??এটা আমার,,রোদের আর ওর হাজবেন্ডের ব্যাপার,,,

সেটাই তো,,হাজবেন্ড হিসেবে আমাকেও তো রাজি হতে হবে নাকি??(পকেটে হাত দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে)

হাজবেন্ড হিসেবে?মানে বুঝলাম না(ভ্রু কুচঁকে)

তোর পাশে যে দাঁড়িয়ে আছে তার নাম কি জানিস??মিসেস নৌশিন আবরার রোদেলা।।অর্থাৎ আবরার আহমেদ শুভ্রর ওয়াইফ।এখন বুঝতে পারছিস,,হোয়াট আম ছেয়িং??

শুভ্রর কথায় সাহেল ভাইয়া চরম শকড।এমন কিছু শোনার আশা হয়তো উনি কোনো কালেই করেন নি।নিজেকে কোনোরকম সামলে নিয়ে বলে উঠলেন,,

তাহলে সেদিন যে বললি রোদ তোর ফুপ্পির মেয়ে,,আর রোদের তোকে ভাইয়া ডাকার কারনটাই বা কি??

কেন, ফুপ্পির মেয়ে কি বউ হতে পারে না?আমার ভাইও ফুপ্পির মেয়েকেই বিয়ে করেছে,,,এখানে অবাক হওয়ার কি আছে?আর রোদ ভাইয়া ডাকাটা ফাস্টলি ওর অভ্যাস কাটিয়ে উঠতে সময় লাগছিলো,,,তাছাড়া তোর সামনেই আমি ওকে ভাইয়া ডাকার জন্য ধমক দিয়েছি,,,তোর ব্যাপারটা ভাবা উচিত ছিলো,,,

সাহেল ভাইয়া ব্যাপারটা নিতে পারছেন না,,,হয়তো আরো কিছু বলতেন বাট উনার বাবা-মার জন্য পেরে উঠলেন না,

সরি ভাইজান,সাহেলের বোকামীর জন্য না জেনে এমন একটা বিশ্রী কাজ করার জন্য আমরা খুবই লজ্জিত।।সাহেল চলো,,

কিন্তু মা,,

সাহেল তোমার মা ঠিকই বলছে,,চলো এখান থেকে।অনেক নাটক হয়েছে আর নয়।

সাহেল ভাইয়া উনার বাবা-মা নিয়ে চলে গেলেন।যাওয়ার সময় বেশ কয়েকবার সরিও বলেছেন আংকেল আন্টি।আমি স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে আছি,,কি থেকে কি হয়ে গেলো,কিছুই বুঝলাম না।।আমার লাইফ স্টার জলসার নাটক হতে হতে বেঁচে গেছে,,থেংক গড।।তবে আমার মধ্যে একটা খারাপ লাগা কাজ করছে ক্রমাগত,,সাহেল ভাইয়াকে আগেই ব্যাপারটা বলে দিলে আজ হয়তো এই পরিস্থিতি ক্রিয়েটই হতো না।।কিছুক্ষণের মধ্যেই মামানি খাবারের জন্য ডাক পাঠালেন,,,আমিও বাধ্য মেয়ের মতো শুভ্রর পাশে গিয়ে বসে পড়লাম,,,খানিকপর বড় খালামনিও খেতে এলেন,,আমাকে দেখেই বলে উঠলেন,,,

কি মেয়েরে বাবা,,,আরে বাড়ির বউ এর যোগ্যতা আছে নাকি এই মেয়ের?কই সবাইকে খাবার সার্ভ করবে তা না,,সবার আগে কব্জি ডুবিয়ে খাচ্ছে,,বেহায়া মেয়ে কোথাকার।।

উনার কথায় খাবারটা গলায়ই আটকে গেলো,,,এতোটা বাজে ভাবে এর আগে কেউ বকেনি আমায়,,,এত্তো খারাপ লাগছিলো কি বলবো,,আজ মনে হচ্ছে শশুড়বাড়ি আছি,,খাবার নিয়েও যেখানে খোটা শুনতে হয়।।আগে তো মনে হতো,,মা আর মামুর কাছে আছি,,সব আবদার গ্রেন্টেড,,,,

রানু?কি দেখে এই মেয়েকে বিয়ে করিয়ে এনেছিস শুনি??পড়ালেখার নামে বাইরে ছেলেদের সাথে ফষ্টিনষ্টি করে,,তাইতো ছেলেরা বাড়ি বয়ে চলে আসে।।সরি দুলাভাই কিছু মনে করবেন না,ভাগ্নি বিয়ে করিয়ে এনেছেন বলে মাথায় তুলে রাখতে হবে নাকি??কবে কোন ছেলের সাথে ভেগে যায় কে জানে??বড় বউটা তো তাও বংশের আলো আনতে চলেছে,,এর তো কোনো খবরই নাই।।বিয়ে তো একসাথেই হয়েছে তাহলে সমস্যা কই??কে জানে,,বাচ্চা জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা আছে কি না??আমার বউমা হলে তো পিটিয়ে ঠিক করে ফেলতাম,,আর শুভ্র তোকেও বলি হারি যায়,,,এতোকিছু হলো আর বউকে কিছুই বললি না??আমার রাজ হলে তো এতোক্ষণে কানে-কপালে চড় লাগাতো।।হুহ

উনার কথাগুলো শুনে মরে যেতে ইচ্ছে করছিলো,,,বাবা-মার কথা মনে হচ্ছে খুব,,,আজ নিজের বাড়ি থাকলে হাজারো প্রতিবাদের স্বর উঠে আসতো।।আড়চোখে আপুর দিকে তাকালাম,,,আপু একদৃষ্টিতে প্লেটের দিকে তাকিয়ে আছে,,ঠোঁট দুটো কাঁপছে,, বুঝতে পারছি রেগে আছে।।আপুকে আমি সবসময় দেখেছি,,নিজের অপমানে মুখ ফুটে কিচ্ছু বলবে না কিন্তু আমাকে কেউ একটা কটু কথা বললে সে সিংহী রূপ ধারন করে।।আর ভাইয়া থাকলে তো এতোক্ষণে লঙ্কাকাণ্ড শুরু করে দিতো।।কিন্তু আজ আপু নিজের রাগকে দমন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওইযে শশুড়বাড়ি বলে কথা,,,বউদের তো বোবা হয়েই থাকতে হবে।।এতোকিছু শোনার পরও এখানে বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়,,যেকোনো টাইম চোখে জমে থাকা পানিগুলো ঝরে পড়তে পারে।।একবার শুভ্রর দিকে তাকিয়ে উঠে গেলাম,,শুভ্র আপন মনে খাচ্ছে,,তার কোনো ভাবান্তার নেই।।আমি উঠে দাঁড়াতেই উনি আমার হাত ধরে ফেললো,,সামনের দিকে তাকিয়েই বলে উঠলেন,, “খাবার কমপ্লিট করে যাও” আমি উনার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে আছি যার অর্থ এই,,,প্লিজ যেতে দিন আমায়,,,আর সহ্য করতে পারবো না আমি।।চাইলে মেরে রক্তাক্ত করে দিন তবু এভাবে মানসিক দিক দিয়ে খুন করবেন না আমায়,,,দোহাই লাগে।।উনি আমার দিকে একটিবার তাকালেন না,,,আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি,,উনি এবার আমাকে টেনে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে পা দিয়ে আমার চেয়ারটা ঘুরিয়ে নিজের দিকে করে নিলেন,,,নিজের প্লেটটা সরিয়ে রেখে আমার প্লেটটা হাতে তুলে নিলেন,,,টলমলে চোখে অনেকটা অবাক হয়েই উনার কান্ড দেখছি,,কি করতে চাইছেন উনি??সবার সামনে আবার অপমান করবেন না তো??উনি খাবার তুলে আমার মুখের সামনে ধরে বললেন, “হা করো”।। আমি চুপচাপ বসে আছি।।আমাকে চুপ থাকতে দেখে আবারো শান্ত গলায় বললেন,,,” হা করো রোদ”….আমার চোখ থেকে দুফোটা পানি ঘরিয়ে পড়লো,,,খাবারটা মুখে নিয়ে কান্নাভেজা চোখে সবার দিকে আড়চোখে তাকালাম,,,মামু আর মামানি মুখ টিপে হাসছেন,,দিদার মুখটাও খুশিতে চিকচিক করছে,,আপুর চোখে পানি,,বোনের জন্য কিছু না করতে পারার কষ্ট হয়তো ওকে কুড়ে খাচ্ছে,,,খালামনির দিকে তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিলাম,,,উনি পারলে যেনো আমায় খেয়ে ফেলে,,উনার চোখে-মুখে বিরক্তি স্পষ্ট।। শুভ্রর কাজে সে মোটেও সন্তুষ্ট নয়।।।উনি আবারো উনার মুখ খুললেন,,

শুভ্র?তোর মধ্যে পুরুষত্ব কিছু আছে??কই বউকে দুটো চড় থাপড়া দিবি তা না আদর করে খাওয়াচ্ছিস??ওকে তো দুদিন ভাত দেওয়াই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।।।

উনার কথায় শুভ্রর কোনো ভাবান্তর হলো না,,উনি খুব যত্ন সহকারে আমাকে খাইয়ে চলেছেন,,উনাকে দেখে মনে হচ্ছে আমাকে খাওয়ানোটাই এখন উনার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে ইম্পোর্টেন্ট কাজ।।আমি মাথা নিচু করে খেয়েই চলেছি।।।আমাকে খাওয়ানো শেষ করে,, বাটিতে পানি নিয়ে আমার ডান হাত আর মুখ ভালো করে ধুয়ে টিস্যু দিয়ে মুছে আবারো চেয়ারটা আগের মতো ঘুরিয়ে দিলেন।।নিজের হাতটাও পরিষ্কার করে মুচকি হেসে খালামনিকে বলে উঠলেন,,

তো কি বলছিলে বড়খালামনি???

কি বলছিলাম মানে তুই শুনিস নি??আবার বউয়ের সাথে প্রেম দেখাচ্ছিস(চড়া গলায়)

শুনবো না কেন??অবশ্যই শুনেছি আমার বউয়ের এতো এতো সুনাম করলা আমি না শুনে পারি???

আমি উনার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি,,উনি বাঁকা হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,,,

খালামনি??আমার বউ কিন্তু বোবা না,,,কথা জানে।।এই যে আমি বসে আছি,,আমার রেসপেক্ট রাখতেই সে চুপ আছে,,,হাজার হলেও আমার খালামনি আর ওর মামানির বোন,,,,নয়তো এতোক্ষণে তোমায় ধুয়ে দিতো।।।আর যায় বলো না কেন?মা আমাকে অবলা মেয়ে দেখে বিয়ে করায় নি বুঝলে??

তুই আমাকে কথা শুনাচ্ছিস??(রাগী গলায়)

এতোক্ষন তুমি শুনাইলা আমি কিছু বলছি??এখন আমার পালা তুমিও চুপচাপ শুনো,,তুমি শুনাবে আর আমি শুধু শুনবো তা তো হয় না তাই না??

আমি উনার কথা শুনে পরপর অবাক হচ্ছি আর সবার রিয়েকশন দেখছি।।।সবার কালো মুখ এখন বেশ স্বাভাবিক বেশ মজা পাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে,,,উনি শরীর টেনে সোজা হয়ে বসে আবারো বলে উঠলেন,,,

এই যে তুমি বললা যে আমার বউয়ের বউ হওয়ার যোগ্যতা আছে কি না,,আমার কিন্তু যথেস্ট সন্দেহ আছে যে তোমার মধ্যে কোনো মেয়ের শাশুড়ী হওয়ার কোনো যোগ্যতা আছে কি না।।আর কি যেনো বলছিলে খাবার সার্ভ??হাসালে আমায়,,তোমার কি মনে হয় ওকে আমি খাবার সার্ভ করার জন্য বিয়ে করে এনেছি??আমার তো মনে পড়ছে না।।।এত্তোগুলো সার্ভেন্ট থাকতে আমার বউ কেনো খাবার সার্ভ করতে যাবে শুনি???আর বেহায়া?খালামনি আমি ওর মধ্যে বেহায়া টাইপ কিছু কোনো কালেই দেখতে পাইনি,,,তবে তোমার মধ্যে এই জিনিসটা প্রবল।।

শুভ্র?আমি তোর খালামনি,,,

সেটাই তো,,তুমি আমার খালামনি অথচ আমার বাচ্চা কেনো হচ্ছে না,,সেই নিয়ে পাব্লিক্যালি আলোচনা করছো,,পারলে নিশ্চয় বেডরুমে ঢুকে যেতে??রোদ এখনো পিচ্চি একটা মেয়ে বউমনির সাথে ওর তুলনা কোনোভাবেই যায় না,,,,আর বেবি নিবো কি নিবো না সেটা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার,,,তোমাকে আমাদের এভিলিটি খুজতে আসতে হবে না,,,,সরি টু ছে,, এটাকে আমি বেহায়াপনা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছি না।।তারপর এলো আমার বউয়ের ক্যারেক্টার,,,বউ আমার আর ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট আমার তোমার থেকে নিতে হবে??স্ট্রেঞ্জ না??খালামনি আমার বউয়ের ক্যারেক্টার সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণ সচেতন।।এখানে হাজার ছেলেকে দাঁড় করিয়ে দিলেও ও আমাকে ছাড়া অন্য কারো দিকে ফিরেও তাকাবে না,,,সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি।।আর কোনো ছেলে যদি বাড়ি বয়ে এসে ওকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়,তো এতে ওর কোনো দোষ আমি দেখি না,,,আর ছেলেটারও দোষ নেই এটা একটা মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং যা এখন ক্লিয়ার।।।আর কি বলেছিলে?মারার কথা??ওকে মারবো??আর আমি??মারা তো দূরের কথা কেউ ওর দিকে আঙ্গুল তুলে দেখাক,,পুরো হাতটিই গুড়িয়ে দেবো।।।আর আমি ওর গায়ে হাত তোলার প্রশ্নই ওঠে না,,,পারলে আমার বাচ্চা বউকে কলিজায় ঢুকায় রাখতাম।।বউকে মারার মধ্যে না,,তাকে ভালোবেসে আগলে রাখার মধ্যেই আমি পুরুষত্বটা বেশি দেখি,,,,ওই হিসেবে আমাদের খালুজানের কিন্তু পুরুষত্ব জিরো লেভেলের,,,তোমাকে মারা তো দূর,,আজ পর্যন্ত কাপাকাপি ছাড়া কথায় বলতে পারলো না,,,তাই নয় কি খালামনি??আমাকে অভ্র ভাইয়া ভেবো না যে,,আমার বউকে আমার সামনেই যাতা বলবে আর আমি শুনে নিবো,,,আমি শুভ্র,,কথাটা মনে রেখো।।।তুমি আমার খালামনি বলে কিছু বললাম না,,,তোমার জায়গায় অন্যকেউ রোদের দিকে আঙ্গুল তুললে তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলতে দুবার ভাবতাম না আমি।।বি আ মাদার নট আ মাদার ইন লো,,,নিজের ছোটো বোন থেকেও তো শিখতে পারো।।।এই হলো আমার মা যাকে দেখলে তার প্রতি সম্মান প্রতি মুহূর্তে বাড়ে বয় কমে না।।।এই যে রোদকে এতো কিছু শুনালে,,রোদের আগে চোখে জল আমার মায়েরই এসেছিলো।।একেই বলে মা।।।

উনার কথাগুলো মুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম,,আর চোখ থেকে অনর্গল পানি ঝরাচ্ছিলাম।।।হ্যা এটাই আমার স্বামী।।আম প্রাউড ফর হিম,,,হি ইজ আ পারফেক্ট ম্যান,,দ্যা রিয়েল ম্যান।।।

#চলবে,,,,
#তোকে চাই❤
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:34


মা আমার অফিস আছে আমি আসছি,,,,রোদ তুমিও চলো,,

কথাটা বলেই উঠে দাঁড়ালেন উনি,,,সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গিয়েও পিছন ফিরে বলে উঠলেন,,,”খালমনি তুমি আমার বউ আর আমার ফ্যামিলি থেকে দূরে থেকো,,, তোমার জন্য উইথআউট রিজন আমার ফ্যামিলি মেম্বার কষ্ট পাবে তা আমি মেনে নিবো না,,,আর হ্যা,,মনে রেখো বউমনি কিন্তু আমার বোনের থেকে কোনো অংশে কম না।।”আমি উনার যাওয়ার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি।।এই মানুষটির ক্যারেক্টার এখনো আমি বুঝে উঠতে পারি নি।।।এখানে বসে থাকা সবার মনে উনার জন্য হয়তো সম্মানবোধটা হাজার গুন বেড়ে গেছে আর আমার মনে উনার জন্য ভালোবাসাটা।।প্রচন্ডরকম ভালোবাসি এই লোকটিকে,,

বিছানায় পা গুটিয়ে বসে উনার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি,,আর উনি ঘরময় ঘুরে অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছেন,,কখনো চুল তো কখনো টাই ঠিক করছেন,,,ঘড়ি পড়ছেন,,,ফাইল গুছাচ্ছেন,,,আমি সবসময়ই উনার প্রতিটি মুভমেন্টে প্রেমে পড়ে যায়।।আচ্ছা,,উনি কি জানেন??আমি যে মিনিটে দশবার করে উনার উপর ক্রাশ খাই।।মাঝে মাঝে মনে হয়,, এই ছেলেটাকে জুস বানিয়ে খেয়েই নিই,,শান্তি লাগলেও লাগতে পারে।।হঠাৎই উনি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন শার্টের হাতা ফোল্ট করতে করতে বলে উঠলেন,,,

হোয়াট হ্যাপেন্ট রোদ??এভাবে তাকিয়ে আছো কেন??

আই লাভ ইউ

আমি এমন কিছু বলবো তা হয়তো উনি কোনো কালেই ভাবেন নি।।অনেকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েই আমার দিকে তাকালেন,,,কি বলবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না,,

আপনি এত্তো কিউট কেন?(ঠোঁট উল্টিয়ে)

এবার আর উনি দাঁড়ালেন না,,,চরম অস্বস্তিটা কাটিয়ে উঠতে না পেরে “অফিসে লেট হচ্ছে” বাহানা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।।আমাকে যে সাথে নিবেন সেটাও ভুলে গেলেন।।।তো কি আর করা,,কোনো রকম ব্যাগটা নিয়ে আমিও ছুটলাম তার পিছু পিছু,,,

কি ব্যাপার??আমাকে রেখে চলে যাচ্ছেন কেনো??(হাঁপাতে হাঁপাতে)

ওহ,,ভুলে গিয়েছিলাম,, গাড়িতে উঠো।।

উনি একমানে গাড়ি চালাচ্ছেন,,,হঠাৎই কি মনে করে গাড়ি থামিয়ে দিলেন,,,

কি ব্যাপার??থামালেন কেনো?(ভ্রু কুঁচকে)

যাবো না,, অফিস যাবো না আজ।।

আপনি না গেলে নাই,,আমাকে তো এটলিস্ট কোচিং এ দিয়ে আসুন লেট হচ্ছে,,,

তুমি তো আরো যাবে না,,

হোয়াট??কিন্তু কেনো??আমার আজ কোচিং এ এক্সাম আছে,,,,সারারাত পড়ছি কাল,,এক্সাম তো আমি দিবোই।।আপনি ড্রপ না করলে আমি একাই চলে যাবো,,,

কথাটা বলে গাড়ির দরজা খুলতে যাবো তখনই উনি আমার হাত চেপে ধরলেন,,,

এই পিচ্চি,,এই আমার কথা মাঝে মাঝে শুনে নিলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে??এতো জেদ কেন তুমি??যাবে মা মানে যাবে না।।বেশি কথা বললে কানের নিচে দিবো দুটো,,,(দাঁতে দাঁত চেপে)

এহহহহ,,,জানতাম,,আই নিউ ইট।।সব ছেলেরা এক টাইপ হয়,,,খালামনির সামনে হিরো সেজে এখন একা পেয়ে আমাকে মারতে চাইছেন,,(মুখ গোমরা করে)

আমার কথায়,উনি হাতটা আরো জোড়ে চেপে ধরে আমাকে আরো কাছে টেনে নিয়ে রাগী গলায় বলে উঠলেন,,,

আমার বউ,,আমি ইচ্ছে হলে মারবো,,ইচ্ছে হলে আদর করবো,,তোমার সমস্যা কি??

জীবনে আদর করছেন?? মারতেই শুধু পারেন।।ওই হিসেবে আমিও আপনার সাথে যা ইচ্ছে তাই করতে পারি,,আমার হাজবেন্ড বলে কথা।।আদর টা না হয় আমিই করে দিই,,,(চোখ টিপে)

কথাটা বলেই উনার চমচমের মতো গালটাতে একটা টাইট কিস করে দিলাম,,,উনি হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকালেন,,,,রাগী চোখে কিছু একটা বলতে গিয়েও চুপ হয়ে গেলেন।।।কোনো রিয়েকশন না দিয়েই আবারো গাড়ি ড্রাইভ করায় মন দিলেন,,,উনার কপাল কুচঁকে আছে,, মনে হচ্ছে বেশ টেনশনে আছেন,,

আচ্ছা?আমারা হঠাৎ ফিরে যাচ্ছি কেন??কোনো সমস্যা??(ভ্রু কুচঁকে)

খুব বড় সমস্যা,,তুমি যদি সত্যি হারিয়ে যাও আমার থেকে??নীলি কি বুঝাতে চাইলো আমায়??তোমার বিপদ?? না,,বিন্দুমাত্র রিস্ক নিতে চাই না আমি আমার পিচ্চিটাকে নিয়ে,,,(ভ্রু কুচঁকে,,বিরবির করে)

কি বিরবির করছেন??জোড়ে বলুন না,,,কি হারিয়ে যাবে??(কৌতূহলী চোখে)

রোদ??কিছুদিন তুমি কোচিং যাবে না,,,কোচিং এর লেকচার শিট আর কোশ্চেন পেপার বাসায় এনে দিবো,,বাসায় বসেই পড়াশোনা করবে,,,

কিন্তু কেনো??

এত্তো প্রশ্ন করবে না রোদ,,যা বলছি তাই করবে ব্যাস(বিরক্তি নিয়ে)

ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে উনি টাই খুলছেন,,আর আমি সন্দেহ ভরা চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি,,,আমি কোচিংএ কেন যাবো না,,,কি চলছে উনার মাথায়??ভাবতে ভাবতেই উনার হাতের তিলটার উপর চোখ পড়লো,,,তিলটা উনার হাতের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে,,,কি আলতো হাতেই না টাইটা খুলছেন,, টাইও বুঝি যেকোনো টাইম তার প্রেমে পড়ে যাবে,,,আমাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে,,আয়নার ভেতর দিয়ে চোখের ইশারায় বুঝালেন,, কি হয়েছে??

আ,,আমি টাই বাঁধতে পারি না,,,

তো??তোমাকে টাই বাঁধতে শিখতে কে বলেছে??

না,,আপনি শাড়ি পড়াতে পারেন সো আমার টাই বাঁধতে পারাটা উচিত তাই না??

তোমাকে কে বললো আমি শাড়ি পড়াতে পারি??(ভ্রু কুঁচকে)

পারেন না??(অবাক হয়ে)

অবিয়েসলি নট,,,এসব ফালতু জিনিসের জন্য আমার টাইম নেই। অযথা শাড়ি পড়া শিখতে যাবো কেন??

কিহ,,ছেলে হয়ে আপনি শাড়ি পড়াতে পারেন না??

কেন??ছেলে হওয়ার পেছনে শর্ত জুড়ে দেওয়া আছে নাকি??যে ছেলে হতে হলে শাড়ি পড়া শিখতে হবে??

না তা নয়,,,সব ছেলেরাই,,আই মিন মোস্ট অফ দ্যা বয়েজ,,বউয়ের সাথে রোমান্স করবে বলে লুঙ্গি পড়া শেখার আগে শাড়ি পড়া শিখে,,,

আমি ওই মোস্ট অফ দ্যা,বয়েজ এর মধ্যে পড়ি না।।।তাছাড়া রোমান্স করতে হলে শাড়ি খুলে করবো,,পড়িয়ে করতে যাবো কেন??(ভ্রু কুঁচকে)

ছিহ,,আপনি এমন চিপ টাইপ কথা বলছেন কেন??

যা সত্য তাই বললাম,,এখানে “ছিহ” এর কি দেখলে??

আমি আর কিছু বললাম না,,কে জানে আবার কি বলে বসে???হঠাৎই উনি কাগজে মোড়ানো বড়োসড়ো কিছু একটা আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন,,যা ধরে রাখতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্চে আমাকে,,,,ভ্রু কুচকে অবাক চোখে বলে উঠলাম,,,

এটা কি??

হ্যাপি বার্থডে,,

কিহ,,আজ কতো তারিখ??

জুলাইয়ের ১ তারিখ,,,

বাট আমার জন্মদিন তো জুনের ১ তারিখ,,,

তো??১ তারিখেই তো নাকি???

তাতে কি??মান্থ আলাদা,,

আচ্ছা,,তুমি হ্যাপি বার্থমান্থ বলো,,নাকি হ্যাপি বার্থডে বলো??(ভ্রু নাচিয়ে)

বার্থডে অবিয়েসলি,,

তাহলে মান্থে কনসেনট্রেট না করে ডে-তে কনসেন্ট্রেট করো,,,

সত্যি তো উনার কথায় লজিক আছে,,,শুধু শুধু মান্থে কনসেনট্রেট করে কি লাভ??কথাগুলো ভাবতে ভাবতে হাতের জিনিসটার উপর চোখ পড়লো,, কাগজটা সরিয়ে,,ভেতরের জিনিসটা দেখেই অবাক হতে বাধ্য হলাম।।এটাকে আমাদের দু’জনের কেন্ডেট পিকও বলা যায়।।ছবিটা বিয়ের আগের,,রুমু আপুর বিয়েতে,,,উনি দাঁত কেলিয়ে হেসে আমার লম্বা বেনী ধরে টানছেন,,আর আমি কাঁদো কাঁদো হয়ে,,,ভ্রু কুচঁকে,, ঠোঁট উল্টিয়ে উনার দিকে ঘাড় বেকিয়ে তাকিয়ে আছি।।পিকটা এত্তো কিউট হয়ছে বলার বাইরে,,কিন্তু এই পিকটা কখন তোলা হয়েছে??

এই পিক কখন তুলছেন??(অবাক চোখে)

আমি না নীলি তুলেছিলো,,,রুমু ভাবির বিয়েতে,, নীলির ফটোগ্রাফির শখ ছিলো,,ছবিটা ওর কাছে বেশ কিউট লাগতো,,ছবিটা আসলেই অনেক কিউট,,,আর তোমার কিউট ফেস,,,

#চলবে,,,

(লিখছিলাম বড় করে বাট ডিলিট হয়ে গেছে সো সেকেন্ড টাইম টাইপ করা লাগছে,,,আপনাদের আর আমার দু’পক্ষেরই ভাগ্য খারাপ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here