#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্বঃ৩১
#Jhorna_Islam
সোহাকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে দায়ান সোহার হাতটা নিজের মাথায় টেনে নেয়।
মাথাটায় একটু হাত বুলিয়ে দাওতো ঐদিনের মতো।মাথাটা খুব ধরেছে।খুবই আদুরে ভঙ্গিতে বলে।
সোহা চুপচাপ মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।
দায়ান সোহার হাতের ছোয়া পেয়ে চোখ বুঁজে নেয়।।।
আরেকটু জোরে টানো। বলেই চুপ হয়ে যায়।
সোহা প্রায় বিশ মিনিটের মতো দায়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। তারপর দায়ানের দিকে তাকিয়ে দেখে লোকটার গভীর নিশ্বাস পরছে।ঘুমিয়ে গেছে।জাগাতে ইচ্ছে করলো না।আরো আধা ঘণ্টার মতো দায়ানের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে বসে রইলো।
পরোক্ষনেই মনে হলো দায়ানের খিদে পেয়েছে অনেক বলেছিলো।কিছুই খাওয়া হয়নি এই কয়দিন। চোখ মুখ শুকিয়ে আছে।এরকম ভাবে না খেয়ে থাকলেতো অসুস্থ হয়ে পরবে।
এখনই ডাকতে হবে লোকটা কে ভেবেই সোহা আস্তে করে দায়ানকে ডাকে,,, শুনছেন? উঠুন খাবেন না? আপনার না খিদে পেয়েছে?
দায়ানের কোনো সারা শব্দ নেই সে ঘুমে ব্যস্ত। সোহা আবার ডাকে দায়ানকে তাও কোনো সারা পায় না।
এইবার দায়ানের শরীরে একটু ধা’ক্কা দিয়ে ডাক দেয়।
দায়ান নড়েচড়ে ঘুমু ঘুমু কন্ঠে বলে,,,একটু ঘুমোতে দাও না।প্রচুর ঘুম পেয়েছে।এই কয়দিন এক ফোঁটা ও ঘুমোতে পারি নি।এখানে তোমার কোলে প্রচুর শান্তি লাগছে ঘুমোতে।বলেই আবার চোখ বুজতে নেয় দায়ান।সোহা দেয়না তারাতাড়ি দায়ানকে কোল থেকে উঠিয়ে দেয়।
দায়ান এতে কিছুটা বিরক্ত হয়ে বিরক্তিকর চোখে সোহার দিকে তাকায়।
সোহা দায়ানকে পা’ত্তা না দিয়ে ব’লে উঠে,,,,, ঘুম পরে আগে খাওয়া।আপনার না খিদে পেয়েছে? উঠুন খাবেন চলুন।পরে যতো ঘুম পারেন ঘুমিয়ে নিয়েন।এখন খেয়ে নিবেন আসুন।এখন ঘুম আসলেও পরে খিদের জন্য ঠিক ঘুম ভেঙে যাবে।আরাম করে ঘুমোতে পারবেন না। সো চুপচাপ আসুন খেয়ে গিয়ে ঘুমান।নয়তো খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে।
দায়ান আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়ায়,, ঠিক আছে তুমি যাও।আমি চোখে মুখে পানি দিয়ে আসি।নয়তো চোখ থেকে ঘুম সরবেনা।খেতেও পারবোনা।সোহা মাথা নাড়িয়ে চলে যায়।
খাবার টেবিলে খাবার প্লেটে নিতে নিতেই দায়ান এসে পরে।সোহা দায়ানের দিকে তাকায়। বিনিময়ে দায়ান মুচকি হাসি দেয়।
সোহা দায়ানের সামনে প্লেট দিয়ে বলে নিন খাওয়া শুরু করুন।
দায়ান একবার প্লেটের দিকে তো একবার সোহার দিকে তাকায়।
অসহায়ের মতো বলে,,,,তুমি আমার সাথে মজা করার জন্য এনেছো না।আমার হাতের অবস্থা দেখে ও তুমি আমায় নিজ হাতে খেতে বলছো? ঠিক আছে আমি খাবো না। তুমি খেয়ে নাও।আমি গেলাম।আমার খিদে নেই ঘুম পেয়েছে ঘুমোবো।
চুপচাপ বসুন এখানে দিচ্ছি খাইয়ে।একদম উঠবেন না।
দায়ান মনে মনে খুশি হলেও বাইরে প্রকাশ করলো না।দায়ান তো এটাই চায় সোহা তাকে সব সময় খাইয়ে দেক।সোহার হাতে খাবার খেয়ে দায়ান তৃ’প্তি পায়।
সোহা চুপচাপ দায়ানের পাশের চেয়ারটা টেনে বসে পরে। খাবার প্লেট টা নিজের কাছে এনে ভাত মাখাতে থাকে।মনে মনে ভাবে ভালো হয়েছে আজ খালা ভাত করেছে। লোকটার এতোদিন ধরে ভালো মতো খাওয়া নেই।ভাত না খেলে শরীরে ব’ল পাবে না।সোহা ভাত মাখাতে ব্যস্ত।
দায়ান সোহাকে দেখতে ব্যস্ত।
সোহার ভাত মাখানো হলে দায়ানের মুখের কাছে এক লোকমা নিয়ে ধরে।
সোহা যে মুখের সামনে খাবার ধরে আছে,,দায়ান এখনো বুঝতেই পারেনি। সে সোহাকে দেখে চলেছে।ধ্যা’ন ভাঙে সোহার কথায়।
কি হলো কই হারিয়েছেন গেলেন? কখন থেকে মুখের সামনে খাবার ধরে আছি।নিন খান তারাতাড়ি।
দায়ান কিছুটা হকচকিয়ে যায়।পরোক্ষনে নিজেকে সামলে,,হাসি মুখে হা করে।সোহা খাবার মুখে তুলে দেয়।
দুই লোকমা খাবার পরই দায়ান দুষ্টুমি করে সোহার হাতে কা’মড় বসায়।সোহা উহ্ বলে উঠে ।
ছিঃ বউ এগুলা কি ধরনের আওয়াজ? লোকে শুনলেতো খারাপ ভাববে।মজার ছলে বলে দায়ান।
সোহা মনে মনে বলে বে’টা খ/বি’শ। আমার সাথে মজা নেয়।
মুখে বলে,,, একদম বা’জে কথা বলবেন না বলে দিলাম। হাতে কাম’ড় দিয়েছেন কেনো? রা/ক্ষস হয়েছেন।বলেই চোখ রাঙায়।
দায়ান কিছুটা ভ’য় পাবার ভা’ন করে বলে,,,ওকে বাবা স’রি।আর দুষ্টুমি করবো না।
সোহা মুখ ভেংচি কেটে আবার দায়ানের মুখে খাবার তুলে দেয়।
দায়ান মুখে খাবার নিতে নিতে বলে,,,তুমি খাবানা? খেয়ে নাও এখান থেকেই। এক সাথে খাই দুজনে।পরে একা খেতে ম’জা পাবানা।
আমি পরে খেয়ে নিবো।এখন খিদে নেই। আপনাকে এতো আমার কথা ভাবতে হবে না।নিজের খাবার চুপচাপ খেয়ে গিয়ে ঘুমান।
ঠিক আছে আমিও আর খাবোনা।তুমি না খেলে।বলেই উঠে দাঁড়ায়।
সোহা আবার দায়ানের হাত টেনে বসিয়ে দেয়।উফফ কি শুরু করলেন বলুনতো।খাচ্ছি আমিও।এবার খুশি? এখন খান।
হ্যা এখন খুশি।তারপর দুজনেই এক সাথে এক প্লেট থেকে খাবার খেয়ে নেয়।
খাওয়া শেষ হলে দায়ান উঠে দাঁড়ায়। সোহার উড়না টান দিয়ে নিজের মুখ নিজেই মুছে। রুমের দিকে হাঁটা দিলেন।
সোহা সব কিছু গুছিয়ে রাখতে রাখতে দায়ানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে হাসে।
সব কিছু গুছিয়ে সোহা নিজের রুমে চলে যায়। নিজের ও ঘুমের প্রয়োজন। এতোদিন তার ও ঘুম হয়নি।বিছানায় গিয়ে শুতে নিবে,,,,এমন সময় দায়ান এসে হা’জির হয়।
একি আপনি এখানে? না ঘুমিয়ে এখানে কি চাই?
দায়ান মাথা চুলকিয়ে বলে,,,না মানে আসলে।
কোনো আসলে নকলে নাই গিয়ে ঘুমান।আপনার ঘুম প্রয়োজন। আমিও ঘুমাবো হাই তুলতে তুলতে।
ঠিক আছে তুমি ঘুমাও।তুমি ঘুমালেই আমি চলে যাবো।
না এখনই যান।
দায়ান চুপচাপ সোহার পাশে এসে দাড়ায়।সোহাকে নিজে বিছানায় শুইয়ে দেয়।।
আরে কি করছে,,,,,,
হুসসস।কোনো কথা না।
সোহার শরীরে কাথাটা টেনে দেয়। মাথায় হাত বুলিয়ে সোহার দিকে একটু ঝুঁকে কপালে গাড়ো একটা চুমু খায়। মুচকি হেসে বলে,,,একদম ভ’য় পাবা না ওকে? আমি পাশের রুমেই আছি।কোনো দরকার হলেই আমাকে ডাকবা।
আবার মিনমিনিয়ে বলে,,, তুমি চাইলে আমি এখানেই থাকতে পারি।
সোহা শুনে বলে কি বললেন আপনি?
নানা কিছু না। তুমি ঘুমাও ওকে? আমি গেলাম।বলেই দায়ান বেরিয়ে যায়।
সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে নিজের কপালে চুমু দেওয়া জায়গায় হাত বুলায়। মুচকি হেসে বলে,,, আমার পাগল।বলেই লজ্জা পেয়ে দুই হাতে নিজের মুখ ঢেকে ফেলে।
চারিপাশ নিরব শুনশান। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে মানুষ এখন,,,ঘুমে বিভোর।
ঘড়ির কাটা যখন দুইটার ঘরে,, তখনই সোহার ঘুমের মাঝেই অনুভব করলো,,অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে সে।কেউ যেনো গলা টিপে ধরেছে।কাশি হচ্ছে। শ্বাস নিতে পারতেছেনা ঠিক মতো।ছটফট করতে লাগলো।
একসময় এক প্রকার চিল্লিয়ে মা বলে ডেকে বসে পরে।রীতিমতো ঘাম ছুটে গেছে হাঁপাচ্ছে। জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।
সোহার চিৎকার শুনে দায়ানের ঘুম ভেঙে যায়। যেহেতু পাশাপাশি রুম তাই সোহার চিৎকার টা ভালো ভাবেই শুনতে পায়।
তরিঘরি করে বিছানা থেকে নেমে দৌড়ে সোহার রুমে আসে।
এই কি হয়েছে তোমার সোহা? তুমি ঠিক আছো।
সোহা এখনো হাঁপিয়ে চলেছে।
দায়ান সোহার পাশে বসে সোহাকে দুই হাতে একেবারে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
কি হয়েছে? ভ’য় পেয়েছো? এভাবে ঘেমেছো কেনো এই শীতের মাঝেও।হাঁপাচ্ছো ও।
দায়ানের কথাতে সোহার হুঁশ আসে।সোহা দায়ানকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে। সোহার শরীরের কম্পন দায়ান বেশ ভালো ভাবে উপলব্ধি করতে পারছে।
সোহা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,,, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম।মনে হলো কে যেনো আমার গলা চেপে ধরে আছে।আমাকে কোথায় যেনো টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো।আমি কিছু করতে পারতেছিলাম না।নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতেছিলো।বলেই হাঁপাতে থাকে।
দায়ান সোহার মুখের চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে বলে,,,কিছু হয়নি,,সোনা।স্বপ্ন দেখেছো।কেউ নেই।শান্ত হও।
সোহা এবার কেঁদে দেয়।কাঁদতে কাঁদতে বলে,,আমি খুব ভ’য় পেয়ে,,,,, আর বলতে পারে না কাশি শুরু হয়ে যায়। অনবরত কাশতে থাকে।
দায়ান সোহার অবস্থা দেখে, পিঠে মাথায় হাত বুলাতে থাকে।আর কাদেনা।রিলেক্স হও।
কাশতে কাশতে সোহার শ্বাস বেড়ে যায়। জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে।একেকটা শ্বাস নেওয়ার সময় দায়ানের পিঠে রাখা হাত খামচে ধরে। দায়ান বুঝতে পারে সোহার শ্বাস কষ্ট উঠে গেছে।ঐদিনের মতো হলে মেয়েটা বেশি দূর্বল হয়ে যাবে। তাই তারাতাড়ি কিছু করার জন্য চোখ এদিক ওদিক ঘুরায়। সোহাকে জড়িয়ে ধরে আগলে নিয়েই এক হাতে,বিছানার পাশে রাখা ছোটো টেবিলের ড্রয়ার টা খুলে।কাংখিতো বস্তুুটি পেয়ে যেনো স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে।
তারাতাড়ি করে ই’নহে’লার টা নিয়ে সোহার মুখের সামনে ধরে বলে।শ্বাস নাও সোনা।
সোহা দায়ানের কথা মতো আস্তে আস্তে শ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে কিছুটা।
দায়ান ই’নহে’লারটা ঠিক জায়গায় রেখে দেয়। দুই হাতে সোহার মুখ আগলে ধরে।চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। চোখের পানিতে ভিজে আছে মুখটা।দায়ান যত্ন সহকারে হাত দিয়েই মুখটা মুছে দেয়।
সোহা চোখ বন্ধ করে আছে।
দায়ান সোহার মুখটা আরো কাছে নিয়ে আসে। চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে সারা মুখে।
সোহা চোখ বন্ধ অবস্থাতেই কেপে উঠে দায়ানের ঠোঁটের স্পর্শে।আরো জোরে দায়ানকে আকড়ে ধরে রাখে।
দায়ান প্রায় অনেক সময় নিয়ে সোহার সারা মুখে চুমু খেয়ে তারপর সোহার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকায়। কিছু হয়নি জান।কেউ নেই। একদম ভ’য় পাবানা।আমি আছি না।ঠান্ডা লাগায় তোমার এমন মনে হয়েছে।
তারপর সোহাকে বালিশে আস্তে করে শুইয়ে দিয়ে বলে তুমি ঘুমোও।
সোহা ভ’য়ার্ত দৃষ্টিতে দায়ানের দিকে তাকায়।
দায়ান সোহার তাকানো দেখে বুঝে যায় মেয়েটা ভ’য় পাচ্ছে। আ’শ্ব’স্ত করে বলে,,,,ভ’য় পেতে হবে না পাগলি।তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাও।এই যে আমি পাশে আছি।কোথাও যাবো না। ঘুমাও বলেই সোহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে দায়ান।
সোহা তাও যেনো কিছুতেই নিজের ভ’য় টা শান্ত করতে পারছিলোনা।তাই দায়ানের টি-শার্টের নিচের অংশ হাতের মুঠোয় শ’ক্ত করে ধরে রাখে।দায়ান সেই দিকে তাকিয়ে মনে মনে হাসে।
দায়ানের হাত বুলিয়ে দেওয়ার একপর্যায়ে সোহা ঘুমিয়ে যায়। দায়ান এক দৃষ্টিতে সোহার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যে বসে নিজেও ঘুমিয়ে যায় বুঝতেই পারে না।
————————————–
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই নোহা থালা বাসন ধুয়ে। ঘর দুয়ার ঝাড়ু দেওয়ার জন্য ড্রয়িং রুমে আসতেই দেখতে পায়।
ওমি আর তমা বাড়ি থেকে বের হচ্ছে। এতো সকালে ওমি কখনো ঘুম থেকে উঠে না।বিয়ের পর নোহা অন্ততো দেখেনি।আজই প্রথম এতো সকালে উঠতে দেখলো।বেশ অবাক হয়েছে নোহা।
তারপর তমার সাথে বাইরে যেতে দেখে কপালে ভা’জ পরে।এ তো সকালে এরা কোথায় যাচ্ছে? এমন তো নয় যে এরা জগিং করে।
নোহা কৌতুহল হয়ে নিজেকে দ’মাতে পারে নি।জিজ্ঞেস করেই বসে,,এতো সকাল সকাল কোথাও যাচ্ছেন আপনারা?
ওমি কিছু বলতে নিবে,তার আগেই তমা ওমিকে থামিয়ে দিয়ে বলে,,,, কেনো নোহা তোমার কাছে বলে যেতে হবে? আমরা যেখানে ইচ্ছে যাই নিজের কাজে মন দাও।
নোহার ও তমার প্রশ্নে মাথায় রা’গ উঠে যায়। সে চি’বিয়ে চি’বিয়ে বলে অবশ্যই বলে যেতে হবে। আমার স্বামী কে নিয়ে যাচ্ছো।তো আমায় বলে যাবা না। আর তুমি আমার নাম ধরে ডাকছো কেনো? সম্পর্কে আর বয়সে দুটোতেই আমি তোমার থেকে বড়।সো সম্মান দিয়ে ভাবি ডেকে কথা বলবা।
তোমাকে আমি ভাবি ডাকবো? কখনো না।
ওমি এবার বলে,,,আহ তমা তুমি বড্ড বেশি কথা বলো।বলে দিলেইতো হতো কোথায় যাচ্ছিলাম এতো কথা বাড়াও কেনো।তাছাড়া মা তো পরে আমাদের খুজতো।তাই না?
কিন্তু,,,,,,,,,,
এর মধ্যেই ওমির নানির গলা ভেসে আসে।তে’জি কন্ঠে তমা কে ডাকছে।তমা ঢুক গিলে বলে জ্বি দাদি।
কই যাচ্ছিস তুই রুমে আয়।আমার পা ব্যাথা করতেছে টিপে দে এসে।তোকে এখানে টইটই করে ঘুরার জন্য আমার সাথে পাঠায়নি তর মা।আমার খেয়াল রাখার জন্য পাঠিয়েছে।চুপচাপ রুমে আয়।নয়তো আমার হাত কিন্তু উঠবে তর গালে।বলেই নিজের রুমে চলে যান।
তমা নোহার দিকে তাকিয়ে হনহনিয়ে চলে যায়।
এতোসময় নোহা ওমির দিকেই তাকিয়ে ছিলো।নোহার চাহনিতে কেমন অ’স্ব’স্থিতে পরে যায় ওমি।তাই তারাতাড়ি নোহার থেকে চোখ সরিয়ে নিজের রুমের দিকে হাঁটা দেয়।
নোহা ওমির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের মনে মনে আওড়ায়,, কা/পুরুষ।
—————————————–
পাখির কিচিরমিচির ও বাইরে গাড়ির হ’র্ণে’র শব্দে ঘুম ভেঙে যায় সোহার।আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে।
হাই তুলতে তুলতে ঘড়ির সময় তাকিয়ে চক্ষু চ’ড়’কগাছ। আয় হায় এতো বেলা হয়ে গেছে। আর আমি এখনো ঘুম।ভাবা যায় এগুলা?
এসব ভাবনার মাঝেই দরজায় আওয়াজ হয়।সোহা চোখ তুলে দরজার দিকে তাকায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের প্রিয় মানুষটার মুখ দেখে মনটা প্রশান্তিতে ভরে যায়।
গুড মনিং পাগলি।
সোহা নিজেকে সামলে বলে হুু।
ঘুম হয়েছে ভালো মতো?
হুু।
যাও উঠে ফ্রেশ হয়ে আসো?
সোহা মাথা নাড়িয়ে উঠে যায়। ১০ মিনিট পর বেরিয়ে আসে।
আজ ঘুম থেকে উঠতে লে’ট হয়ে গেছে। আপনি বসুন আমি এক্ষনি আপনার কফি করে নিয়ে আসছি।
তোমাকে এতো ব্যস্ত হতে হবে না।নিজের পাশে দেখিয়ে বলে,,,এখানে বসো।
সোহা চুপচাপ গিয়ে দায়ানের পাশে বসে।
এতোদিন তো তোমার হাতের কফিই খেয়েছি। আজ ভাবলাম বউটা যখন ঘুমুচেছ আমিই নাহয় আজ কফি বানিয়ে ফেলি।
একটা কাপ সোহার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,,,টেস্ট করে দেখোতো কেমন হয়েছে।
যদিও সোহা কফি তেমন খায় না।তাও দায়ান এতো কষ্ট করে বানিয়ে এনেছে।তাই হাতে নিয়ে চুমুক বসায়।উমম অনেক টেস্টি হয়েছে।
দায়ান সোহার কথায় হাসে।
সোহা অর্ধেক কফি খেয়ে কাপটা রেখে দেয়।
দায়ানকে বলে,,একি আপনি খাচ্ছেন না কেনো? ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো আপনার টা।
দায়ান সোহার কথাতে সোহার খাওয়া কফিটাই উঠিয়ে খেতে থাকে।
সোহা অবাক হয়ে বলে আপনি আমার এঁটো খাচ্ছেন কেনো? আপনার টা না খেয়ে?
বউয়ের এটো খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে বুঝলা।আর একটাইতো কফি।
একটাই মানে ঐটাতে কি তাহলে?
ঐটাতো খালি?
খালি কেনো? কফি কই?
আনিনি এই এক কাপ ই এনেছি।ঐটা এমনিই এনেছি।আর আমি জানতাম তুমি পুরো কফিটা খাবে না।
সোহা অবাক হয়ে বলে,,,এই আপনি ঠিক আছেন? কি রকম আ’জব বিহেভ করছেন? পে’ত্নিয়ে ধরেছে নাকি আপনাকে?
হ্যা। ধরেছেতো তবে পে”ত্নি না প’রিতে ধরেছে।
“আমার বউ প’রি”
#চলবে,,,,,