#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্বঃ১৫
#Jhorna_Islam
চারিদিকে রোদের তাপমাত্রা প্রখর ভাবে বেড়ে চলছে । গরমে অ’তি’ষ্ঠ হয়ে যাওয়ার মতো অ’বস্থা। এইদিকে সূর্য মামা তার তা’প দিয়ে ঝ’লসে দিচ্ছে। এই গরমে চুলার পাশে দাঁড়িয়ে রান্না করা মানে হা’ল বে’হাল হওয়ার মতো অব’স্থা।
সোহা রান্না করতে গিয়ে ঘেমে নেয়ে একাকার।বারে বারে ওড়না দিয়ে ঘাম মোছার দরুন মুখ কেমন জ্বা’লা করছে।
তাও কোনো ক্লা’ন্তির ও বির’ক্ততার ছি’টে ফোটাও নেই মুখের মধ্যে। মনের সুখে খাবারের বিভিন্ন প’দ রান্না করে চলেছে।
ছোটো বেলা থেকেই দুই বোনের একটা ভাইয়ের ক’মতি অনুভব করতো।ভাইদের বোনদের প্রতি আলাদা একটা টা’ন আছে। কতো খেয়াল রাখে স্নেহ করে।এসব অন্যদের ভাই বোনদের প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখে আসছে।নিজের অবচেতন মন খুব করে চাইতো ভাইয়ের স্নেহ ভালোবাসা। কিন্তু মুখ ফোটে বলতোনা।ভাগ্যে মনে হয় ছিলো না তাই হয়নি।
এখন যখন একটা ভাইয়ের দেখা পেলো তখন,,এই ভাইকে দিয়েই নিজের এতোদিনের ভাইয়ের প্রতি জমিয়ে রাখা সব সখ আ’ল্লাদ পূরণ করবে।এসব ভাবতে ভাবতেই খুশি মনে সকল রান্না শেষ করে। এবার হাঁড়ি থেকে নামিয়ে বাটিতে সার্ভ করে খাবার টেবিলে নিয়ে রাখার পালা।
এরি মাঝে দায়ান রান্না ঘরে এসে ঢুকে।সোহার দিকে তাকায়।
সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে সৌজ’ন্যেতা মূলক হাসি দেয়।
ঘামে পুরো শরীর চি’প চি’পে হয়ে আছে সোহার। পুরো মুখ গরমে ঘেমে লাল হয়ে আছে। মুখে ক্লা’ন্তির ছাপ।সোহার দিকে তাকিয়ে দায়ানের খারাপ লাগলো।মেয়েটা এই গরমে আগু’নের পাশে দাড়িয়ে ছিলো এতোসময়।আর সে কিনা এসির ঠাণ্ডা হাওয়ায় এতোসময় বসে ছিলো।একটু সাহায্য তো করতে পারতো তাহলে হয়তো মেয়েটা এই গরমের থেকে তাড়াতাড়ি মু’ক্তি পেতো।মেয়েটাকে ফ্রেশ হতে দেওয়া দরকার।ভেবেই দায়ান আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বলল,,,,,,
সোহা তুমি যাও।বাকিটুকু আমি করি।গিয়ে কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হও।বাতাসের নিচে গিয়ে কতোক্ষন বসো।এরকম ঘামে ভেজা জামায় আর কিছুসময় থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে তোমার।
— না না।আরেকটু বাকি আছেই।এই গরমে আপনাকে এখানে থাকতে হবে না।আপনি যান এটুকু কাজ শেষ করে তারপর গিয়ে আমি ফ্রেশ হয়ে নিবো।আপনি গিয়ে ড্রইং রুমে বসেন।রুশ ভাইয়া হয়তো কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবে।
— এবার দায়ানের রা’গ হলো।মেয়েটা সোজা কথা বুঝতে পারে না নাকি।এই গরমের মাঝে থেকে যে লাল টমেটো হয়ে গেছে সেই দিকে কোনো খেয়ালই নেই।নিজের চিন্তা না করে আমার চিন্তা করতে আসছে।
দায়ান এইবার সোহার দিকে তাকিয়ে কিছুটা রাগী লুক নিয়ে বলল,,,,সোজা ভাবে কথা বললে তোমার কান দিয়ে ঢুকে না তাইনা?
“কানে মনে হয় জং ধরে গেছে বুঝলে?আর আমি ভালো করে জানি জং ধরানো কিভাবে ছাড়াতে হয়।ওয়ান্না ট্রাই ইট?” নিজের হাত দেখিয়ে ইশারা করে বলে দায়ান।
সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢুক গিলে। কি ব’জ্জা’ত লোক দেখো।কথা না শুনায় শান্ত স্বরে কি ভ’য়ানক হুমকি দিচ্ছে।
আর কিছু না ভেবেই হাতে থাকা বাটিটা আস্তে করে রেখে দিলো।দরকার নেই আমার জং ছাড়ানোর। নেন করেন কাজ।যার জন্য করি চু’রি সেই বলে চো’র।হুহ নিজের ভালোর জন্য বললাম আর দেখো আমাকেই হু/মকি দেয়।বলেই সোহা রান্না ঘর থেকে বের হয়ে গেলো।
সোহা চলে যেতেই দায়ান সবগুলো খাবার বাটিতে নিতে লাগলো।তারপর আস্তে আস্তে খাবার টেবিলে নিয়ে রাখলো। এটুকু সময়ের মধ্যে ঘেমে নেয়ে একাকার দায়ান নিজেও।গরম একটুও সহ্য করতে পারে না দায়ান।প্রচুর গরম তার।অফিসে বাড়িতে সারাদিন এসির নিচে থাকতে থাকতে অভ্যাস হয়ে গেছে।
খাবার রেখেই নিজের টি-শার্টের কলার টা একটু পিছনে ঠেলে দিলো।পাখার দিকে তাকিয়ে পাওয়ার বাড়িয়ে দিলো।
——————————————–
দায়ান আর রুমে যায়নি সোফায় বসে মোবাইল টিপতেছিলো।এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠে। দায়ানের মোবাইল থেকে মনোযোগ সরে।মোবাইলটা সেন্টার টেবিলে রেখে উঠে আসে। টি-শার্ট টা একটু টেনে,, চুলে হাত চালাতে চালাতে দরজার কাছে এগুতে থাকে দরজা খোলার উদ্দেশ্যে।
দরজা খুলতেই দেখলো রুশ দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে।
দায়ানকে দেখেই রুশ মুখটা কাচু’মাচু করে এদিক ওদিক তাকায়। গলা খাঁ’কারি দিয়ে কিছু বলার জন্য আ’মতা আ’মতা করতে থাকে।
রুশের এই অবস্থা দেখে দায়ানের প্রচুর হাসি পায়।এমনিতেই বেচারার এই হা’ল। এখন যদি দায়ান তার মধ্যে আবার হাসি দেয়।তাহলে সব ছেড়ে ছুড়ে দৌড়ে পালাবে।তাই হাসিটা নিজের মধ্যেই দ’মিয়ে রাখলো।
নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে বলে উঠলো,,, কিরে ব্যা’টা বাইরে দাড়িয়ে থাকার পরিকল্পনা করে এসেছিস নাকি? যদি তাই হয় তাহলে তোর বোনকে বলি,,,এখানেই তর আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতে।যদি তোর কোনো আপত্তি না থাকে।ব্যা’ঙগা’ত্তক গলায় বলে দায়ান।
রুশ দায়ানের কথা শুনে,,দৌড়ে দায়ানের পাশ কাটিয়ে ঘরে ঢুকে সোফায় গিয়ে ধ’পাস করে বসে পরে।দায়ান দরজা লাগিয়ে রুশের দিকে একবার তাকিয়ে সোফার অপর পাশে বসে পরে।
এবার একটু সিরিয়াস ভাবে জানতে চায়,,, রুশ অল ডান?
রুশ সোজা হয়ে বসে উওর দেয়,,হুম সব কমপ্লিট করে এসেছি।পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিবে ওদের বি”রুদ্ধে।
দুই বন্ধুর কথার মাঝেই এসে সোহা হা’জির হয়।রুশকে দেখে দৌড়ে উ’চ্ছসিত মনে পাশে এসে দাঁড়ায়।
— রুশ ভাইয়া কখন আসলেন? আমায় ডাকলেন না কেনো?
সোহার কথায় দুই বন্ধুর আলাপে ব্যা’ঘাত ঘটে। দুইজন ই সোহার দিকে দৃ’ষ্টি দেয়। রুশ মুখে হাসি ফোটিয়ে বলে,,,
— এই তো বোন মাত্রই আসলাম।
— এই গরমের মধ্যে আসতে নিশ্চয়ই আপনার তে’ষ্টা পেয়েছে? দাড়ান আমি এখনই শরবত দিচ্ছি।
— না না এতে ব্যস্ত হওয়ার কিছু নেই।আর এতো ঝা’মেলা করতে হবে না।
— কিসের ঝা’মেলা? আমি আগেই করে রাখছি শরবত।এখন শুধু ফ্রিজ থেকে বের করে দিবো।
রুশকে আর না বলতে দিয়েই সোহা শরবত আনতে দৌড়ে চলে যায়।
দুই মিনিটের ভিতরেই আবার রান্না ঘর থেকে ট্রে তে করে,দুই গ্লাস শরবত নিয়ে বেরিয়ে আসে।এক গ্লাস উঠিয়ে রুশের দিকে এগিয়ে দেয়।
রুশ সোহার দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে হাত বাড়িয়ে গ্লাস টা নিয়ে নেয়।
আরেক গ্লাস নিয়ে দায়ানের পাশে গিয়ে দাঁড়ায় সোহা। দায়ান আপন মনে তখন ফোন দেখতে ছিলো।সোহা দায়ানের মনোযোগ পাওয়ার জন্য গলা খেঁ’কারি দেয়।
দায়ান চোখ উঠিয়ে সোহার দিকে তাকায়। তারপর কথা না বারিয়ে শরবতের গ্লাস টা হাতে তুলে নেয়। নিয়ে পুরো গ্লাস এক ঢুকেই ফাঁকা করে ফেলে।গ্লাস টা সোহাকে ফিরিয়ে দিয়ে আবার ফোনে মনোযোগ দেয়।
আপনারা দুজন গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন। আমি খাবার দিচ্ছি। প্রচুর খিদে পেয়েছে।
সোহার কথা শুনে দুজনেই উঠে দাঁড়ায়। দায়ান নিজের রুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে। আর রুশ যায় গেস্ট রুমে। যেহেতু এই বাড়িতে আসা যাওয়া আছে।থেকেছে ও অনেক বার তাই চিনতে অসুবিধে হয়নি।
———————————————
নোহা রান্না বান্না সেরে গোসল করে মাত্রই বের হয়েছে।কাপড়ের বালতি নিয়ে ছাদে যেতে হবে।বারান্দায় কাপড় শুকাতে দিলে শুকায় না।
বাড়িতে নোহা আর তার শাশুড়ী। ওমি ও তার বাবা কাজে বেরিয়ে গেছে,সকালের খাবার খেয়েই।
সকাল থেকে এতো কাজ করে ভালো করে সকালের খাবারটাও খেতে পারেনি নোহা।শরীরটা দূর্বল লাগছে।তাড়াতাড়ি এসে খাবারটা খেতে হবে। নয়তো কখন মাথা ঘুরিয়ে চিৎ হয়ে পরে যায় তার ঠিক নেই।
অসুস্থ হয়ে গেলে সেবা করা দূরে থাক,,কেউ ফিরে ও তাকায় না।ঔষধ আনাতো স্বপ্নের ব্যাপার।
নোহা অসুস্থ হলে শাশুড়ীর থেকে একটু সহানুভূতি ও পায়নি।উল্টো অসুস্থ শরীর নিয়ে সব কাজ করা লাগছে।শশুর তো এসব সাংসারিক কাজে কোনো কালেই ছিলো না। সংসার ভেসে গেলেও ওনার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
আর ওমির কথা ভাবতে গেলেই বড্ড হাসি পায় নোহার।বর একটা পাইছে।লাখে একটা।নোহার ঠান্ডা, কাশি,জ্বর হলে ঐদিন রুমেই আর থাকে না।গেস্ট রুমে চলে যায়। যদি ছোঁয়াচে হয়ে ওমির ও হয়ে যায় সেই ভয়ে।অবশ্য ওমিকে ওমির মা ই মানা করে দিয়েছে অসুস্থ হলে নোহার ধারে কাছেও যেনো না যায়।
ছাদে গিয়ে কাপড় মেলে দিয়ে ঘরে ফিরে আসে।
রান্না ঘরে নিজের শাশুড়ী নিজের শ/য়তানি বুদ্ধি খা’টাতে ব্যস্ত।যেহেতু বাড়িতে দুপুরে ওমি আর তার বাবা থাকেনা।তাই দুইজন এর জন্যই রান্না করে নোহা দুপুরে।
নোহাকে ছাদে যেতে দেখতে পেয়েই নোহার শাশুড়ী তাড়াতাড়ি রান্না ঘরে ঢুকে যায়।আজ কিছুতেই এই মেয়ে কে দুপুরে খেতে দিবে না।যেই ভাবা সেই কাজ।নিজের জন্য আলাদা করে প্লেটে ভাত তরকারি নিয়ে নেয় বেশি করে।নিজের জন্য নেওয়া শেষ করে,,ভাতের ও তরকারির হা’ড়ি সব নিচে ধা’ক্কা দিয়ে ফেলে শ/য়তানি হাসি দেয়।
নোহা মেঝেতে কিছু পরার আওয়াজে পেয়ে ছুটে রান্না ঘরে আসে।এসে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে চোখ চ’ড়ক গাছ।ভাত তরকারি মেঝেতে সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছে।
সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে নোহার শাশুড়ী মা নোহার দিকেই তাকিয়ে আছে।
নোহাকে দেখেই নোহার শাশুড়ী মুখটা দুঃখি দুঃখি ভাব করে নিয়েছিলো।
ইয়ে মানে বউমা খুব খিদে পেয়েছিলো তো।তাই নিজেই নিয়ে খেতে এসেছিলাম।কিন্তু দেখো কি হয়ে গেলো।আমার প্লেটে খাবার নিতেই,, হাত ফ’স্কে সব পরে গেলো।বয়স হয়েছেতো মা। আহারে তোমার জন্য খুব মায়া হইতাছে মা।তোমার তো আর দুপুরে খাওয়া হইবো না।অবশ্য তোমরা জো’য়ান জা’য়ান মানুষ এক বেলা না খাইলে কিছু হইবো না।আমি আমার খাবারটা রুমে নিয়ে গিয়ে খেয়ে নিচ্ছি। তুমি এগুলো সব পরিষ্কার করে রেখো কেমন? বলেই খাবার প্লেট টা হাতে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ধরে।
নোহা এতোখন সব নিরব হয়ে শুনছিলো ও দেখছিলো।এবার মুখ খুলে বলল দাড়ান মা।বলেই,,,,
এগিয়ে এসে শাশুড়ীর হাত থেকে প্লেট টা নিয়ে নেয়।
আপনার তো বয়স হয়েছে মা।এতো গুলো খাবার তো একা খেতে পারবেন না।খেতে পারলেও শেষ বয়সে এতো খাবার খাওয়া ঠিক না।পেটের হ’জমের তো একটা ব্যাপার আছে তাই না?
বলেই নোহা ঐই খাবার গুলো থেকেই নিজের জন্য আরেকটা প্লেট নিয়ে অর্ধেক টা ঢেলে নেয়। এবার আর কোনো সমস্যা হবে না।আপনার ও পেট ঠান্ডা আমার ও পেট ঠান্ডা। মুচকি হেসে খাবার নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।
একবার যদি নোহা পিছনে তাকাতো তাহলে দেখতে পারতো।এক জোড়া ভ/য়ং/কর রাগে লাল হয়ে যাওয়া চোখ তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখ দিয়েই মনে হয় নোহাকে জ্বা’লিয়ে দিবে।
তাতে নোহার কি? অনেক হয়েছে এদের অ’ত্যাচার আর না।এবার জবা’ব দেওয়ার সময়।
——————————————–
দায়ান ও রুশ ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার টেবিলে বসে।
সোহা প্লেটে খাবার বেড়ে দেয়।বেড়ে দিয়ে খাওয়া শুরু করতে বলে।ওরা আর কথা বাড়ায় না। দু’জন খাওয়া শুরু করে।
সোহা ওদের খাওয়া শুরু করতে দেখে নিজে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে যায়। এসব বাহারি রকমের বড়লোকি খাবার খেতে পারবেনা এখন সোহা।রান্না করতে গিয়ে এসব খাবারের গন্ধেই,,, এসব খাবার থেকে রুচি চলে গেছে।এখন ঝা’ল ঝা’ল কিছু না হলে খাবারই খেতে পারবেনা।এমনিতেই সোহা ঝা’ল প্রেমি।ঝাল হলে আর কিছুই লাগেনা।ঐসব খাবারে ঝাল বেশি দেয়নি সোহা।দায়ান ঝাল বেশি খেতে পারে না তাই।তাই নিজের জন্য আলাদা করে ঝাল ঝাল ধনিয়া পাতা ও ডাল সিদ্ধ করে ভর্তা করেছে।তাই নিতে যাচ্ছে। বানিয়ে আলাদা করে রাখায় মনে হয় দায়ান দেখতে পায়নি।তাই টেবিলে নেয় ও নি।
ভর্তা নিয়ে আসতে আসতে ওদের খাওয়া অনেকটাই এগিয়ে গেছে।
রুশ সোহাকে আসতে দেখেই উচ্ছসিত মনে বলে,,,
— উফফ বোন তোমার কি রান্নার হাত।আমিতো পাংখা হয়ে গেলাম।
— বিনিময়ে সোহা মুচকি হাসে।চেয়ার টেনে সোহা ও খাবার পাতে তুলে নেয়।
— সত্যি বলছি বোন।মনে হচ্ছে ফাইভ স্টার রেস্টুরেন্টে খাবার খাচ্ছি। তোমাকে তো বেস্ট সেফ এওয়ার্ড দিতে মন চাচ্ছে আমার।
— সোহা আনন্দিত মনে বলে থ্যাংক ইউ ভাইয়া।আপনি একমাত্র আমার যোগ্যতা গুলো বুঝলেন।অন্যদের বোঝার ক্ষমতা নেই। আর ভালো কিছুর যে প্রশংসা করতে হয় কিছু কিছু মানুষ মনে হয় জানেই না। বলেই মুখ ভেংচি দেয়।
দায়ানের বুঝতে বাকি থাকেনা যে তাকে উদ্দেশ্য করেই কথা গুলো বলছে সোহা।তাও কিছু বলল না চুপচাপ খেতে লাগলো।
রুশ সোহাকে ভর্তা নিতে দেখে আগ্রহী হয়ে জানতে চায়,, বোন এগুলা কি নিচ্ছ খাওয়ার জন্য?
—- এগুলা ধনে পাতা ও ডালের ভর্তা ভাইয়া।
— ভর্তা?
–হুম।
— আমাকে একটু দেও আমিও খাবো।বলেই প্লেট এগিয়ে দেয়।
দায়ান রুশের কথা শুনেই চোখ বড় বড় করে রুশের দিকে তাকায়। তাও দায়ান একটু ঝাল খেতে পারে।রুশ একবারেই ঝাল খেতে পারে না।আর এই মেয়ে যেই ঝাল দেয়,,,এটা যদি রুশ খায় নির্ঘা’ত হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে এক্ষুনি।
তাই দায়ান বলে উঠে,,,,এই রুশ একদম না।এগুলা খেতে হবে না যেগুলো দিয়ে খাচ্ছিস ওগুলো দিয়েই খা।এগুলা অনেক ঝা,,,,,,,,
দায়ান আর কিছু বলার আগেই সোহা দায়ানকে থামিয়ে দেয়। আপনি চুপ করুন আপনার কি? নিজে খেতে পারেন না বলে হিংসে হয়? এই ভাইয়া আপনি খান, বলেই ভর্তা রুশের প্লেটে তুলে দেয়।
দায়ান রুশকে বলে,,, রুশ খাস না।
কে শুনে কার কথা।রুশ অলরেডি খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। দুই লোকমা ভাত মুখে পুড়েই রুশের খাওয়া থেমে যায়।
সোহা রুশের কাছ থেকে হাসি মুখে জানতে চায়,,, খুব মজা হয়েছে তাই না রুশ ভাইয়া?
সোহার হাসি মুখ দেখে রুশ আর কিছু বলার সাহস পায় না।চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে খাবার নাড়তে থাকে।দুই একটা করে ভাত মুখে দিতে থাকে জোড় পূর্বক।
দায়ানের খাবার শেষ সেই কখনই।চুপচাপ দুটোকে এতোক্ষণ দেখতেছিলো।
সোহারও খাবার শেষ করে,,রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে যায় প্লেট নিয়ে রাখার জন্য।
রুশ মনে হয় সোহার যাওয়ার অপেক্ষাতেই ছিলো এতো সময়।সোহা যেতেই পানির উপর হা’ম’লে পরে।চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে। কান নাক লাল হয়ে গেছে।কান দিয়ে যেমন ধো’য়া বের হচ্ছে। মুখ চেপে চাপা আ’র্তনাদ করে ওঠে। করুণ চোখে দায়ানের দিকে তাকায় যার অর্থ ভাই আমায় এই ডা’কা’ইতা ঝা’ল থেকে রক্ষা কর।
দায়ান রুশের এসব কাজ দেখে,,, পেট চেপে ধরে হো হো করে জোরে হেসে দেয়।
হাসতে হাসতেই বলে তরা দুইটাই তো একই ক্যা’টা’গরির। আমার কথা শুনিস? এতোক্ষন তো বলার চেষ্টা করে ছিলাম।আমায় পাত্তাই দিলিনা।
“এবার মজা বোঝ কেমন লাগে”।
#চলবে,,,