তুমি নামক যন্ত্রণা পর্ব ৮

0
350

#তুমি_নামক_যন্ত্রণা
#লেখনীতেঃহৃদিতা ইসলাম কথা
পর্বঃ৮

রাত দুটো।নিস্তব্ধ প্রহরে আধারে ডোবা ঘরটি চাঁদের আবছা আলোয় নিয়ন আলোকিত।আকাশে পুর্ন চাদের সমাহার।দুধ সাদা জোৎস্নায় ছেয়ে আছে বিশাল মহাকাশ। বেলকনির পর্দা সরিয়ে দেওয়া। মৃদু বাতাস বইছে আর সেই সাথে জোস্নামাখা আলোয় স্বর্গীয় লালিত্য ছাপিয়ে পড়ছে মেয়েটার চোখেমুখে।জোৎস্না প্রতিচ্ছবিতে এক মায়াবন বিহারিনী নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে।আর ওই মায়ারানীর মায়াবি মুখশ্রীতে অপলকে দৃষ্টি স্থির রেখেছে এক প্রেমিক পুরুষ। যে তার প্রেয়সীর ঘুমন্ত মায়াবী মুখটার অপরুপ সৌন্দর্যের সাগরে গা ভাসিয়েছে।খুঁটিয়ে খুটিয়ে দেখছে রুপ লাবণ্যের ভরপুর এই শ্যামাকন্যাকে।শ্যামা রঙটাতে এক অনবদ্য মায়া যেন ভিড় করে থাকে।যেমনটা এখন স্রোতের মনে হচ্ছে। তার শ্যামাঙ্গিনীর মুখশ্রীতে যেন পৃথিবীর সকল মায়ারা ভিড় জমিয়েছি।এক মুহুর্তের জন্যও পলক ফেলার মত শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার মত অপরাধ করকে চায় না।ওই মুখটির মায়া আর ওই নিষ্পাপ শিশুর মন সাদামাটা মনের মেয়েটার কাছে যে ও বাধা পড়ে গেছে।খুব বাজেভাবে বাধা পড়ে গেছে। সেখান থেকে আদৌ ফিরে আসা সম্ভব! না সম্ভব না! এই সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এইটুকুন বাচ্চা মেয়ের প্রতি এতটা আসক্তি। সত্যিই বিশাল এক অপরাধ।অপ্রতিরোধ্য এক মস্ত বড় ভুল।যে ভুল করা হয়ে গেছে স্রোতের।

কথার বিছানার একপাশে ফ্লোরে বসে দুহাত বিছানায় ঠেকিয়ে নিরব নিস্তব্ধতায় তার প্রেয়সীর রুপের মুগ্ধতা হারিয়ে গেছে স্রোত।এই বাচ্চা মেয়েটা ওকে পাগল করে দিয়েছে।ও ছাড়া আর অন্য কোন কিছুই চোখে ধরা দেয় না।যেখানে সেখানে যখন তখন এই মায়াবীনির প্রতিচ্ছবি ধরা দেয়।ঘুমন্ত অবস্থায় যেন তার মায়াবী মুখটার স্নিগ্ধতা আরো বাড়িয়ে দেয়।ওই চাদের আলোয় ওই মুখটা আরো মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিচ্ছে যেন।কেন যেন ওই চাঁদের থেকেও ভিষন সুন্দর আর রুপসী প্রতিত হচ্ছে এই রমনীর রুপের সৌন্দর্য। আচ্ছা ওকে এত সুন্দর কেন হতে হবে! কেন? আমাকে পাগল করার জন্য! ঘায়েল করার জন্য! এভাবে তার রুপের জাদুতে বশ করার জন্য! আমার হৃদয়কে অসম্ভব যন্ত্রণায় ছটফট করতে বাধ্য করার জন্য।
নিজের মনের মাঝে জমে থাকা অব্যক্ত অনুভূতিকে প্রকাশ করে স্বাচ্ছন্দ্যে, নিরানন্দে।

— তোমার ওই মায়াবী চোখের ভয়ার্ত দৃষ্টিতে প্রতিমুহূর্তে তোমার প্রেমে পড়ে যাই।আমার প্রতিটা নিশ্বাসে শুধুই তুমি।শুধু তুমি। কি এমন জাদু করেছো বলো তো।তুমি ছাড়া আমার চারপাশটা বিষন্নতায় ছেয়ে।খুব অস্থিরতা কাজ করে।দম বন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।কেন হয় এমন? একেই কি তবে ভালোবাসা বলে! আমি কি তবে সত্যি তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি!

.
সেই একঘন্টা ধরে একভাবে এক ঘোর জড়ানো চাওনিতে চেয়ে আছে স্রোত।ওর চোখ দুটো যেন ক্লান্ত হয় না।ক্লান্তিতে নুইয়ে পড়ে না।অসম্ভব মুগ্ধতায় ছাড়িয়ে যায় মনপ্রান।
সেই যে জ্ঞান হারিয়েছে কথা এখনো হুশ ফেরেনি ওর।স্রোত বুঝতে পারছে ভিষন ভয়ে আতঙ্কিত ওর মন।তাই ওর জ্ঞান ফেরার পর ওকে পরিস্থিতি বুঝিয়ে শান্ত করতে হবে।তাই এখানে এসেছে ও।কিন্তু এখনো জ্ঞান ফেরেনি বলে ডাক্তারকে কল করেছিল।তিনি বলেছে পার্লস চেক করতে।যদি নরমাল মনে হয় তাহলে সব ঠিকাছে চিন্তার কিছু নেই।যখন কথা জ্ঞান রাত তখনও বেশ হয়েছে।১২ টার কাছাকাছি এত রাতে ডাক্তার বাড়িতে আনলে সবাই জেনে যাবে।বিষয়টা ধামা চাপা দেওয়ার লক্ষ্যেই বাড়িতে ডাক্তার ডাকা নিয়ে ভিষন চিন্তায় ছিল স্রোত।পরমুহূর্তে নিজেই সবটা সামলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।তারপর থেকে সারাক্ষণ কথার ঘরের আশেপাশেই ছিল।কথার মা এসেছিল ওকে দেখতে। যেই না দেখলো মেয়ে আরামসে ঘুমাচ্ছে। ওকে আর ডাকেনি।এমনিতেই ও ভিড় থেকে দুরে থাকতেই পছন্দ করে বেশি।তাই আর তিনি তেমন ঘাটলেন না।

সবাই যখন ঘুমাতে চলে গেছে তখনই এ ঘরে আসে স্রোত।অন্য সময় আসাটা সবাই ভালো চোখে দেখবে না।ওর পরিবারের সবাই তবুও। কি দরকার সবার কাছে ব্যাপারটাকে বিশ্রী করে তোলা।
স্রোত পার্লস চেক করতে গিয়ে দেখলো তখন হাত চেপে ধরায় হাতে রক্তে জমে কালসিটে পড়ে গেছে।বিরক্ত হলো নিজের উপর।ক্ষোভ জমলো।নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা উচিত ছিল ওর।তাহলেই মেডেটাকে এত কষ্ট পেতে হতো না।এত সব কিছুতেই হতো না।উজ্জ্বল শ্যামবর্নের হওয়াতে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।ও গিয়ে ওষুধ নিয়ে এলো তারপর আদুরে হাত ওষুধ লাগিয়ে দিল।গায়ের তাপমাত্রা পরিমাপ করে স্বাভাবিক অনুভব করলো।ফুস করে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লো।এরপর হাটু গেড়ে মেঝেতে বসে পড়লো।অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর স্রোত নিজেকে আর সামলাতে পারলো না।ভয়ংকর এক কান্ড ঘটিয়ে বসলো।প্রেয়সীকে একটু ছুয়ে দেয়ার। একটু ভালোবাসার স্পর্শ দেয়ার মত লোভকে সংযত করতে না পেরে।টুপ করে কথার কপালে ভালোবাসার ছোয়া দিল।উনার উষ্ণ ঠোঁটের গভীর ছোঁয়ায় নড়েচড়ে উঠলাম আমি। পিটপিটিয়ে চোখ খুলতেই দৃষ্টি স্থির হলো স্রোত ভাইয়ের মুখে।স্রোত ভাই ঠিক আমার মুখের উপর ই ঝুকে আছে।হুট করে ঘুম ভাঙাতে নিস্তেজ মস্তিষ্ক কিছুটা সময় নিল সচল হতে।যখনই সে সচকিত হলো পরিস্থিতি বুঝতে পারলো।প্রতিক্রিয়া বিহীন একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম।কিছুক্ষনের মধ্যেই তখনকার বাজে ঘটনাটা মনে পড়ে গেল।লাফিয়ে ওঠে আমার উপর ঝুকে থাকা স্রোতের বুকে দুহাতে জেরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলাম।অপ্রস্তুত ছিল স্রোত। তাই ছিটকে নিচে পড়ে গেল।আমি গায়ের কাথা টেনে নিজের সাথে জরিয়ে নিলাম।হকচকিয়ে যাওয়া দৃষ্টি নিয়ে কিছুক্ষন চুপচাপ তাকিয়ে ছিল স্রোত ভাই।আচমকাই আমার চোখ খোলা আর তাকে এভাবে আমার মুখের উপর ঝুকে থাকতে দেখবে বা এভাবেই ভীত গ্রস্ত হয়ে এত ভয়ংকর কান্ড করবো হয়তো ধারনা ছিল না উনার।সবটাই হঠাৎ করে হয়েছে।অপ্রতিভ হলো স্রোত ভাই।দৃষ্টি নত হলো।নিচ দিক তাকিয়ে বুক ফুলিয়ে শ্বাস নিয়ে ছেড়ে দিল।ভিতরের বিরক্ত আর অস্থিরতাকে কাটানোর চেষ্টা।

আমি ভয়ে কাপছে। চোখমুখে আতঙ্ক। শঙ্কিত অজানা কোন কারনে।স্রোত ভাই ভাবলো হয়তো তখনকার জন্য ভয় পেয়ে আছি।তবে আমার মনে ভয় এই কারনে যে স্রোত ভাই কি আমাকেও ওভাবে শাস্তি দিবে।যেভাবে ছেলেগুলোকে দিল।আমার দিকে উনার একহাত এগিয়ে শান্তনা দেওয়ার প্রচেষ্টা করতেই ভয়ে বেডের সাথে আরো সিটিয়ে গেলাম আমি।লেপ্টে গেলাম একদম।স্রোতকে আমার ভয় করছে।প্রচন্ড রকমের ভয়।যে ভয়ের কারন সেই নাকি ভয় কাটাতে এসেছে ভাবা যায়।অদ্ভুত না।স্রোত শ্বাস ছাড়লো।নিজেকে যথা সম্ভব শান্ত করে বললো,

— ভয় পাস না।তুই এখন বাড়িতে আছিস।সেইফ আছিস।কেউ নেই ওরা।ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

আমি তবুও ভয়াবহ ভাবে ভয়ার্ত।আমার কাছে স্রোত ভাইকে যমদূত মনে হচ্ছে। যেন আমার প্রানপাখি ছিনিয়ে নিতে এসেছে।আমাকে সামলাতে ডানহাতটা আবারো বাড়াতেই আটকে আসা ভয়ার্ত কণ্ঠেই বললাম,

— ক্..কাছে আ্..আসবেন না।ছ্..ছোবেন ন্ না আমায়।
দ্..দুরে থাকুন প্লিজ।

প্রেয়সীর কান্নামিশ্রিত অসহায় কন্ঠস্বর যেন প্রেমিক পুরুষের হৃদয়ে গভীর ক্ষত একে দিল।অদৃশ্য ঝড় বইতে শুরু করলো। ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করলো হৃদয়ের অন্তস্তল। ওই ছেলেগুলোকে এই মুহুর্তে শেস করে দিতে ইচ্ছে করছে ওর।রাগটাকে কন্ট্রোল করলো স্রোত।

তারপর গলার স্বর নরম করে বললো,

–আচ্ছা! ছোব না তোকে। আর না কাছে যাব।দুরেই আছি আমি।তুই শুধু একটু শান্ত হ।কিছ্ছু হয়নি। তখন যা কিছু হয়েছিল ভুলে যা।মন থেকে মুছে ফেল।

— আ্.. আপনি ও্.. ছেলেগুলোকে মেরে ফেলেছেন তাই না।বলুন! আমাকেও মেরে ফেলবেন তাই না!

— না ওদেরকে একেবারে মেরে ফেলেনি হাসপাতালে পাঠিয়েছি। সুস্থ আছে এখন।যেটা তোর সাথে করতে চাইছিল সেটা যেন অন্য কারো সাথে না করতে পারে তাই শাস্তি দিয়েছি শুধু।

বলেই থামলো স্রোত।ইশারায় ওকে কাছে ডাকলো কথা গেল না।ও আরেকটু এগিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,

— ভয় পাস না প্লিজ।আমি তোকে কিছুই বলবো না।বকবো না।তখন বকাঝকা করেছি বলে সরি।এইযে কান ধরছি। সরি!সরি! সরি!

তার এমন বাচ্চামোতে যেখানে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাওয়ার কথা সেখানে আমার কোন রেসপন্স নেই।আমি চুপ করে আছি।আমার ভয়টা একটু কমলো।তবে পুরোটা নয়।তবুও স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলাম। সোজা হয়ে বসলাম।স্রোত ভাই বললো,

— তুই ফ্রেশ হয়ে নে।আমি খাবার নিয়ে আসছি।

বলেই চলে গেল।আমি নেমে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখেমুখে পানি দিলাম।ভয়টা একটু কমলেও পুরোটা কাটেনি।স্রোত ভাইয়ের ওমন ভয়ানক রুপ নিজ চোখে দেখেছি।প্রভাব তো একটু পড়বেই।স্রোত ভাই নিজ হাতে খাবার এনে মুখে তুলে খাইয়ে দিল।তারপর ওকে বিছানায় ঘুম পাড়িয়ে চলে গেল।

.
নিজের ভুলগুলো ভিষনভাবে উপলব্ধি করে ভিসন রেগে ফেটে গেল সে।নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হলো ওর
কেন তখন ওরকম করলো কথার সাথে। বাচ্চা মেয়ে না বুঝে বলে ফেলেছে ওর উচিত ছিল পরিস্থিতি সামলে নেওয়া তা না করে ওর উল্টো রেগে যাওয়া উচিত হয়নি।তবে রাগবে না তো কি করবে।পার্টির কয়েকটা ছেলে বাজে নজরে তাকিয়ে ছিল ওর পেটের কাছের কালো তিলটার দিকে।সহ্য হচ্ছিল না স্রোতের।তাই নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।রেগে গেছে ওর উপর।কিন্তু ও তো কম কথা শোনাইনি।যা না তাই বলেছে।চরিত্র নিয়ে কথা বলেছে।তবুও তার জন্য রাগ হয়নি ওর।ছেলেগুলোর দৃষ্টি ওর গায়ে কাটার মত বিধছিলো।কথার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছিল।রাগী চোখে বোঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু বোঝেনি।তাই কৌশলে পিচ্চুকে দিয়ে ওকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে এসেছিল।

তবে সবকিছু এত বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে সেটা ধারনাতেও ছিল না ওর।বরাবরাই রাগের পারদটা দু কাঠি উপরে তবে সবসময় নিজেকে সামলে নেয় স্রোত।সিন ক্রিয়েট হওয়ার মত কিছুই করে না।নিজের কাজ কৌশলে হাসিল করে আর কেউ তা টেরও পায় না। ওই ছেলেগুলোর চাওনির জন্য ও শাস্তি দিয়েছে নিজ হাতে তবে কেউ সেটা টেরও পায়নি। ছেলেগুলো পার্টি থেকে বেরোতেই ও চাপড়ে ওদের গাল লাল করে দেয়।সবাই বেকুবের মত শুধু তাকিয়ে ছিল।বুঝতে পারেনি হঠাৎ তাদের ওপর আক্রমনের কারন।কাউকে পাল্টা কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে উরাধুরা থাপড়ালো শুধু।কয়েক মিনিটের মধ্যে তাদের তিনজনের গাল গরম হয়ে গেল।তিনজন গালে হাত দিয়ে প্রশ্ন করলো,

— ভাই কিসের অপরাধে এভাবে মারলেন আমাদের।কি করেছি আমরা?
ওদের গাল গুলো টমেটোর মত লাল করে দিয়ে শুধু এতটুকুই বলেছিল,

–ভদ্রতার পোশাক গায়ে জরিয়ে নিলেই শুধু ভদ্র হওয়া যায় না।আচরনেও তা ফুটিয়ে তোলা উচিত। পরবর্তীতে মেয়েদের দিকে চোখ পড়লে সম্মানের সাথে তাকাবি।হয়তো সে তোর বোন নয়।তবে সে অন্য কারো বোন।হয়তো সে তোর প্রেমিকা বা স্ত্রী নয়।কিন্তু অন্য কারো প্রেমিকা বা স্ত্রী।তাই মেয়েদের সবসময় সম্মানের দৃষ্টিতে দেখবি।ভবিষতে যদি কখনো কোন মেয়ের দিকে বাজে নজর দিতে দেখেছি।তাহলে যে চোখ দিয়ে দেখবি সেই চোখ আর থাকবে না।গট ইট।

বলেই হনহন করে বেরিয়ে এলো।কথার উপর ভিষন ভাবে রেগে যাওয়া একটু অনুশোচনা হলো।নিজেকে অপরাধী মনে হলে।দোষটা ওর ও কম নয়।তি দরকার ছিল এই পোশাক গুলো কথাকে পড়তে দেওয়ার জন্য। ও যদি না দিত তবে তিশাও কথাকে জোর করত না। আর না কথা ওটা পড়তো।তবে স্রোত তো ওকে পড়ে বলেই দিয়েছিল চেঞ্জ করে নিতে।ওই ঘাড়ত্যাড়া মেয়েটা চেঞ্জ করলো না।তাই তো এতসব হলো।যখন পার্টিতে ফিরে কথাতে পেল না।আর বাড়ির ভিতরেও পেল না তখন পিচ্চুকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে ও বলে,

–আপুকে তো ছুটে বাইরে যেতে দেখেছি।মনে হচ্ছিলো আপু কাঁদছে। আমি ডাকলাম তবু শুনলো না।কি হলো বলো তো ভাইয়া।

— তেমন কিছু না।তুমি কাউকে কিছু বলবে না প্রমিস কর।তাহলে তেমাকে অনেক চকলেট দেব।

–আচ্ছা।কাউকে বলবো না।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে এলো।তখন প্রায় ভোরের প্রথম প্রহর।তবে বাইরে আলোর ছটা দেখা যাচ্ছে না।বিছানায় শুয়ে এসব ভাবছিল।

.
এদিকে তার যাওয়ার পর উঠে বসি আমি।ঘুমোনো সম্ভব না।এই লোক স্বাভাবিক নয়।অস্বাভাবিক! কালকে কেমন হিংস্র হয়ে উঠেছিল।এখানে আর থাকা যাবে না।আর এই মানুষটার থেকে নিজেকে যথাসম্ভব আড়াল রাখবো।উনার কোন আচরনের মানে নেই।এই আষাঢ়ের মত বিশাল কালো মেঘে ছেয়ে থাকা মুখ,তো কখনো কাল বৈশাখি ঝড়ের মত তীব্র ভয়ংকর আবার কখনো ভিষন শান্ত।নমনীয়! উনার রাগের কারন খুঁজে পাই না আর না নমনীয়তার। যাই হোক আপাত দৃষ্টিতে এত চিন্তা ভাবনার পর আমার সিদ্ধান্তে আমি অটল।আজকের পর থেকে এই লোকের দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকবো আমি।
আমার এই সামান্য সিদ্ধান্ত যে এই দুই বছরে কারো জীবনে চরমভাবে আঘাত আনবে ভাবিনি আমি।আমার ভয় পেয়ে ভুল করে নেয়া একটা সিদ্ধান্তের পরিনতি ঠিক কতটা ভয়াবহ আকাড় ধারনা করবে সেটা ধারনাই ছিল না আমার।

#চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here