তুমি আমি দুজনে পর্ব ১৯

0
3048

#তুমি_আমি_দুজনে
#লেখিকা_হুমাইরা_হাসান
পর্ব- ১৯

বসার ঘরে সোফাতে একসাথে বসে সবাই। ইনসাফের ডান পাশে আমেনা খাতুন, আর বাম পাশে রুবি। মিনু পাশের চেয়ারটাতে বসা। সামনে বসা সফেদ পাঞ্জাবি পরিহিত দুজন মাঝ বয়সী ভদ্রলোক একজন ভদ্রমহিলা। ইসহাক চৌধুরী চায়ের কাপে শেষ চুমুক টা দিয়ে বলল

-আমরা সামনের সপ্তাহেই বিয়ের কার্যক্রম শুরু করতে চাচ্ছি, যদি আপনাদের আপত্তি না থাকে

-না না,আমাদের এ ব্যাপারে কোনো আপত্তি নেই,আমরাও চাচ্ছি যত দ্রুত সম্ভব বিয়েটা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হোক।

সরল সোজা জবাব ইনসাফ মাহবুব এর,পাশ থেকে আমেনা খাতুন মৃদু কেশে বলল

-আমার দিদিভাইয়ের বিয়ে বলে কথা, সুষ্ঠু ভাবে তো অবশ্যই সম্পন্ন হতে হবে। তবে ইমানের তো খবর পেলাম নাহ। আমরা যতই আলোচনা করি,বিয়েটা তো ওদের দুজনের। ইমান তো এখনো দেশে ফিরেনি

-ও খুব শীঘ্রই ফিরবে খালাম্মা,ওর সাথে প্রতিনিয়ত ই কথা হচ্ছে,,আমরা সব ঠিক করতে করতে ও চলে আসবে

সাবলীলভাবে হাস্যকর মুখে আমেনা খাতুনের কথার জবাব দিলো ইসহাক চৌধুরীর ভাই মারুফ। তার কথায় রুবি খাতুন ও আস্বস্ত হলো। ইমানের দেশে ফেরার ব্যাপার টা নিয়ে সেও বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে ছিল।

-সেসব না হয় মানলাম। কিন্তু আমার মামনী টা তো কিছুই বলছে নাহ। এই যে সকলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এতে তোমার কোনো মতামত নেই রাইমা?

রাইমার থুতনি ধরে আদুরে গলায় বলল আজমেরি চৌধুরী। ইসহাক চৌধুরীর সহধর্মিণী আর ইমানের মা। অপরপাশের সোফাতেই রাইমার পাশে বসে তিনি। বড়দের আলাপে এতক্ষণ মাথা নিচু করেই শুনছিল রাইমা। হবু শাশুড়ীর প্রশ্নে মুখ তুলে মৃদু মাথা ঝাকিয়ে বলল

-আপনারা যেমনটা সিদ্ধান্ত নিবেন আমি তাতেই খুশি আন্টি

রাইমার নরম কণ্ঠের মিষ্টি কথা শুনে আজমেরি চৌধুরী এক হাতের আলিঙ্গনে ধরলেন রাইমাকে। মমতা মিশ্রিত স্বরে বলল

-আমার ঘরের লক্ষীকে বরণ করে নেওয়ার জন্য তো সেই কবে থেকেই আমরা ব্যকুল।শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। এখন সুযোগ টাও পেয়েছি। একটুও দেরি করব না। কি বলেন আপা?

বলেই একদম তার সামনে বরাবর বসা রুবি খাতুনের দিকে তাকালেন। রুবি খাতুন মুখের হাস্যকর রেখা বহমান রেখে সম্মতি সূচক ঘাড় নাড়িয়ে বলল

-তা তো। মেয়ে তো আমার আপনার ঘরের ই সম্বল এখন। আপনারা নিতে চাইলে কি আর আপত্তি করতে পারি।

-আহান কই ভাই সাহেব? আসার সময় কুশল বিনিময় করে গেল, তারপর ওকে তো আর দেখছি না

ইসহাক চৌধুরীর কথায় রুবি খাতুন আজিমেরির সাথে আলাপচারিতা ভেঙে তার দিকে তাকিয়ে বলল

-এইতো চলে আসবে এক্ষুনি, উপরে গেছে কোনো দরকার ছিল হয়তো

-বউমার মুখ টা তো এখনো দেখার সৌভাগ্য হলো না আপা। আহানের বউ দেখার জন্যেই তো অর্ধেক উৎকণ্ঠা নিয়ে আসলাম আমরা

আজমেরি চৌধুরীর কথায় রুবি সৌজন্য সূলভ হেসে উঠে দাড়ালো,

-আমি দেখে আসছি

বলে পেছনে ফিরে যেতে নিলেও সিড়ির দিকে তাকিয়ে থেমে গেল। আহান এক হাতে তুরাকে আগলে ধরে সিড়ি বেয়ে নামছে। ভীষণ যত্নসহকারে আগলে রেখে নামছে যেন ব্যথা তুরার না তারই লেগেছে। এক মুহুর্তের জন্য রুবির মনটা প্রশান্ত হয়ে গেল যেন।

-ওই তো আসছে আহান

ইনসাফ মাহবুবের কথায় রুবি দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে আবারও নিজের জাগায় এসে বসল। আহান আস্তেধীরে তুরাকে নিয়ে এগিয়ে এসে সোফাতে বসিয়ে বাবার পেছনে গিয়ে দাঁড়াল

-ও তুরা, আহানের স্ত্রী, আসলে আজ সকালে পা মোচকে ব্যাথা পেয়েছে তো তাই আহান ওকেই আনতে গেছিল

ইনসাফ মাহবুব এর কথা শেষেই তুরা সকলের উদ্দেশ্য সালাম দিল। আজমেরি সালামের উত্তর দিয়ে উঠে তুরার পাশে বসল। তুরার গালে হাত রেখে বলল

-মাশা-আল্লাহ!মাশা-আল্লাহ! কি মিষ্টি বউ হয়েছে আহানের৷ একদম পুতুলের মতন সুন্দর

মিশুক স্বভাবের মহিলাটির সমাদরের প্রেক্ষিতে তুরা সামান্য হেসে তাকাল। সকলের সাথে সৌজন্য সূলভ বাক বিনিময় করলে কথার মাঝেই আজমেরি তার ব্যাগ থেকে একটা নীল মখমলি কাপড়ে মোড়া বর্গাকৃতির বক্স বের করল। কোলের উপর রাখা তুরার হাতে বক্স টা রেখে বলল

-আন্টির তরফ থেকে ছোট্ট উপহার

-এসবের কি দরকার ছিল আন্টি

তুরাকে থামিয়ে দিয়ে আজেমেরি বললেন

-অবশ্যই দরকার ছিল। রাইমা তো আমাদের ই মেয়ে,তাই আহান ও তো ছেলেই হয়। ছেলে বউকে দেখে উপহার দেব না? আর এটা তো দোয়া আমাদের তরফ থেকে তোমার জন্য

প্রত্যুত্তরে তুরা আবারও স্মিত হাসলো। ফর্সা গালদুটো প্রসারিত করে বলল

-এই তো বললেন আমি আপনার ছেলে বউ। তাইলে তো আপনিও আমার আরেক মা ই হলেন তাই না,,আর মা কে কি কখনো উপহার দিয়ে তার সন্তানের জন্য দোয়া করতে হয়? মা তো মা ই। মা দুটো হেসে কথা বলাও তো দোয়া

তুরার মিষ্টিসুলভ কথায় উপস্থিত সকলের ভালো লাগল। এতটুকু মেয়ে,অথচ কত সুন্দর কথা বলে দিলো

-বাহ,এত মিষ্টি বউটা কোত্থেকে আনলেন ভাই সাহেব। যেমন চেহারা তেমনি সুন্দর ব্যবহার। আহানের পাশে একদম রাজজোটক। দুজনকে খুব মানিয়েছে

আজমেরি চৌধুরীর কথায় ইসহাকের ভাই মারুফ ও বলল

-তা আহান, কেমন যায় সংসার জীবন। তোমার বউ ও তোমার মতই বুঝদার। আশা করি দুজনে মিলেমিশে সুখে থাকবে

-তা বইকি। থাকবেই তো। আহান তো বউয়ের বেশ খেয়াল রাখে দেখলাম। কত সুন্দর যত্ন করে তুরাকে ধরে আনলো। আল্লাহ তোমাদের সুখে রাখুক বাবা

আজমেরি চৌধুরীর প্রশংসার উত্তরে আহান সৌজন্যমূলক হেসে ছোট ধন্যবাদ দিয়ে তার স্বভাব সুলভ আচরণের বহিঃপ্রকাশ জানান দিল। আহানের স্বল্পভাষী স্বভাবের ব্যাপারে সবাই ই অবগত। তাই সেসবে আর মাথা না দিয়ে বিয়ে সম্পর্কিত আলোচনা নিয়ে আবার কথা বলতে নিল। সবার হাসিখুশী আমেজের ভেতরেও রাইমার ভেতরটা মন খারাপে বি’ষিয়ে গেল। মানুষটা আসল না এখনো?তার বাড়ির লোক বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করতে এসে গেছে অথচ তার দেশে ফেরার ই নাম নেই। দু বছর পার হয়েছে তাদের মাঝে দূরত্বের, রাইমার আর সহ্য হয়না এ ব্যবধান। ভালোবাসার মানুষটার অনুপস্থিতি তাকে প্রতিনিয়ত বিরহ বেদনায় ভুগায়, ব্যথিত হয় মন মন্দির,প্রিয় মানুষটার অপেক্ষায়।তবুও যেন দূরত্বের অবসান নেই

••••••••

বাড়ির মেহমান ফিরতে বিকেল গড়িয়েছে। আহানের কিছু কাজ থাকাই সে বাইরে গেছিল। সেখান থেকে ফিরতে রাত বেশ হয়েছে। এসেই মিনু খাবার জন্য জোরাজোরি করতে সে বাধ্য হয়েই ঘরে না এসে নিচ থেকে রাতের খাবার সেরে একবারে উপরে উঠে আসলো। হাত ঘড়িটায় চোখ বুলিয়ে দেখলো রাত সাড়ে দশটা। তুরা নিচে ছিলনা। মা বলল তার নাকি পায়ের মধ্যে ব্যাথা করাই সন্ধ্যা থেকেই ঘরে শুয়ে,রাতের খাবারও পরেনি পেটে। কি করছে কে যানে!
ঘরের সামনে এসে সাবধানি হাতে দরজার নব মুচড়ে ঢুকলো ঘরে। বিছানায় এলোমেলো ভাবে ঘুমিয়ে আছে তুরা। পা বাড়িয়ে এগিয়ে গেল আহান তুরার দিকে। বালিশ থেকে মাথা সরিয়ে ঘাড় কাত করে শুয়ে আছে মেয়েটা। এই মেয়েটা এত এলোমেলো কিভাবে ঘুমাই আহান বোঝেনা। আহান ঠিক যতটাই ছিমছাম স্বভাবের, তুরা ঠিক ততটাই অগোছালো অপক্ক স্বভাবের,দুটো দুই মেরুর মানুষ কি করে এক বন্ধনে আবদ্ধ হলো আহান এখনও বুঝে পাইনা। হাত বাড়িয়ে ড্রয়ার থেকে স্প্রে টা বের করে তুরার পায়ে লাগালো। মেয়েটা যত বেপরোয়া নিশ্চয় ব্যাথার ওষুধ লাগাইনি। তাই পায়ের ব্যাথাটা আবারও বেড়েছে। ফোস করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ল আহান। তুরার দিকে এক পলক চেয়ে আলমারি থেকে একটা টি-শার্ট আর ট্রাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো। মিনিট কয়েক ব্যয় করে ফ্রেশ হয়ে চেঞ্জ করে বেরোলো। আজ সারাদিন যে নিজ কাজে সময় দিতে পারেনি। সকালে তুরার জন্য আর দুপুরে মেহমান আসায়। বেড সাইড টেবিল থেকে ল্যাপটপ টা হাতে নিয়ে সোফাতে গিয়ে বসল। সাটার তুলে জ্বলজ্বল করা স্ক্রিনে তাকিয়ে আঙুলের চালনায় খটখট শব্দ করে নিজ কাজে মনোযোগ দিল।
বেশ ঘন্টা খানেক সময় নিয়ে ক্লাসের কয়েকটি প্রজেক্ট তৈরি করে ঘাড় পিঠ কেমন টাস ধরল আহানের। স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে সোফাতে গা এলিয়ে দিল। এই মুহুর্তে একটা কফির ভীষণ দরকার। অন্যদিন তো তুরাই এসে এই সময়ে কফি দিয়ে যায় বলে তাকে আর কষ্ট করে বানাতে হয়না।
হুট করে কি মনে হতে ঘাত মৃদু কাত করে তুরার দিকে তাকালো আহান,,কয়েক মুহুর্ত এক দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে ধপ করে উঠে বসল। ভীষণ অদ্ভুত অনুভূত হচ্ছে আহানের! তুরা বিছানায় এলোমেলো ভাবে ঘুমে বুদ। এক হাত মাথার কাছে আরেক হাত টান করে রেখেছে। পেটের উপর থেকে শাড়ির আঁচল সরে গিয়ে মেদহীন ফর্সা উদরের অর্ধেকাংশ উন্মুক্ত হয়ে আছে, এক পায়ের উপর থেকে শাড়ি সরে প্রায় হাটু অবদি স্পষ্ট দৃশ্যমান। পা থেকে মাথা অব্দি অবলোকন করল আহান, এবার নিজেকে কেমন বেপরোয়া লাগছে তার, এমন অনুভূতি নিতান্তই নতুন তার নিকট। সামনেই শুয়ে থাকা রমণীর এমন অবাধ স্বরূপে হুট করে কেমন ঘোর লেগে আসলো । বার বার চেষ্টা করেও চোখ ফেরাতে পারল না আহান। তার মাথায় অবাধ্য এক অনুভূতির প্রখরতা ছেয়ে গেল। শুকনো ঢকে গলা ভিজিয়ে উঠে দাঁড়াল।এক পা দু পা করে এগিয়ে আসল তুরার কাছে, এগিয়ে এসে একদম তুরার গা ঘেঁষে দাঁড়াল।
ঘড়ির এ্যালার্মে রাতের ঠিক বারোটার সময় জানান দিলো। মধ্য নিশুতি রাতের নিস্তব্ধতায় তুরার ঘন ঘন নিঃশ্বাস ছাড়ার ফোস ফোস শব্দই বিরতিহীন ভাবে বেজে চলেছে আহানের কানে। আবার চোখ বুলালো তুরার শরীরে। বুক থেকে আঁচল টা সরে গেছে নিঃশ্বাসের সাথে কণ্ঠনালির উঠানামা দেখে আহানের কেন যানি ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে হলো। অর্ধ উন্মুক্ত পেটের কম্পন মাত্রা ছাড়িয়ে আহানের সারা বদনে তড়তড় করে নিষিদ্ধ অনুভূতির জোয়ার বইয়ে দিলো। ফট করে চোখ বন্ধ করে নিলো আহান। সে কিছুতেই এমন চিন্তাভাবনা আনতে পারেনা। এ ভুল,চরম ভুল! শরীর ঘুরিয়ে ফিরে দাড়ালো, এ দৃশ্য আর এক মুহূর্তও সে অবলোকন কর‍তে চাইনা। এগিয়ে গিয়ে লাইট বন্ধ করে ডিম লাইট জ্বেলে দিয়ে এসে সটান হয়ে শুয়ে পরল। তবুও না চাইতেও অবাধ্য দৃষ্টি আবারও চলে গেলো তুরার দিকে। মাঝখানের দূরত্ব কমিয়ে এগিয়ে গেলো তুরার কাছে। এক হাতের কনুইয়ে ভর দিয়ে আধশোয়া হয়ে তুরার পায়ের কাছের কাপড় ঠিক করে দিল। হাতটা পা থেকে এনে বুকের আঁচল ঠিক করার জন্য ধরতেই তুরা টিপটিপ করে চোখ খুলে তাকাল।
শরীরে ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেয়ে তুরার ঘুম ছুটে গেলে চোখ খুলে তাকাতেই নিজের খুব কাছে আবিষ্কার করল আহানকে,যার এক হাত তার বুকের উপর স্থির। অজানা আতংকে অভিভূত হলো তুরা,,আকস্মিক ভয়ে চেঁচাতে নিলেই আহান তার হাত বুক থেকে তুলে তুরার ঠোঁট চেপে ধরল, ভয়ে আতকে ঘনঘন শ্বাস ফেলে বারবার চোখের পলক ফেলল তুরা
আহান তুরার মুখের উপর মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বলল

-হুসস,ভয় পেয়ো না। আমি শুধু আঁচলটা ঠিক করছিলাম,আর কিছুই না

তুরার বুকের ভেতরের ঢিপঢিপ শব্দ তার নিজ কান অব্দিও স্পষ্ট বাজছে। পুরুষালির স্পর্শের উপস্থিতি এত কাছ থেকে পেয়ে সারা বদনে তার শিহরণ ধরেছে,কথার সাথে আছড়ে পরা আহানের গরম প্রশ্বাস তুরার এলোমেলো অনুভূতির প্রগাঢ়তা বাড়িয়ে স্নায়ুতন্ত্রের তাড়না বাড়িয়ে দিল। কাঁপা কাঁপা হাত উঠিয়ে খামচে ধরল ঠোঁটের উপর রাখা আহানের হাত।
চিকন নরম হাতটার স্পর্শে কেঁপে উঠল আহানের বক্ষস্থল, তুরার হাতের উত্তপ্ততা যেন চামড়া ভেদ করে ভেতরে বিধল আহানের হাতে।
এত গরম কেনো মেয়েটার হাত? জ্বর এসেছে? তুরার কাঁপা কাঁপা ঠোঁট থেকে হাত সরিয়ে কপালে রাখল আহান। নাহ,জ্বর তো নেই? তবে এত কেনো গরম মেয়েটার হাত?

-ঠিক আছো?

নরম সুরে বলা আহানের প্রশ্নে তুরা অপলক চেয়ে ভীষণ আস্তে করে বলল

-হু

-পায়ের ব্যাথা কমেছে?

-হু

আবারও একই স্বরে উত্তর দিল তুরা,আহান কিছু বলতে নিবে তার আগেই তুরা মিনমিনিয়ে বলল

-আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন

-বাইরে একটু কাজ ছিল

-কেনো দেরি করলেন এত?

ভীষণ অভিমানী স্বরে বলল তুরা,,আহানের একদম অন্যরকম লাগল তুরাকে,এভাবে আদুরে স্বরে আগে বলেনি তুরা। হুট করে আহানের শরীরে ঠান্ডা শীতল স্রোত বয়ে গেলো। হালকা রঙের ডিম লাইটের আলোয় তুরার জ্বলজ্বল করা চোখের দিকে চাইল আহান। অপলক দৃষ্টি স্থির তার দিকেই, শো করে নিঃশ্বাস টেনে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো, তুরা এখনো স্থির তার দিকে তাকিয়ে, যে চাহনিতে নেই আগের মত অপ্রস্তুততা,বা ভয়।
আহান যেনো নিজের ভেতরের ডানা ঝাপটানো অনুভূতির প্রতিফলন স্পষ্ট দেখল তুরার চোখে, চোখ থেকে দৃষ্টি নামিয়ে আনলো ঠোঁট পর্যন্ত, বুকের বা পাশের ছন্দময় ক্রীয়াটাও যেন এক মুহূর্তের জন্য থেমে গেলো, লালাভ পাতলা ঠোঁটের বিরামহীনভাবে কম্পন আহানের ভেতরটা নাড়িয়ে দিলো,,গলা থেকে বুক অবদি শুকিয়ে কাঠ হলো অজানা তেষ্টার চোটে। সরে আসতে নিলেও কোনো অদৃশ্য টান যেন ধরে রাখছে, না দৃষ্টি না সে নিজে কিছুতেই সরতে পারছে নাহ। মন্থর গতীতে একটু একটু করে এগিয়ে নিলো মুখ। একে অপরের নিঃশ্বাসের প্রবল উচ্ছ্বাস আছড়ে পরছে দুজনের মুখে। আহান নিজের মধ্যে নেই আর নাইবা আছে তুরা,,এগিয়ে আসতে আসতে মাঝের দূরত্ব একেবারে ঘুচে গেলো দুজনের নাক ঠোঁট প্রায় ছুঁইছুঁই,,তুরা নিজের অসম্ভব কম্পন ধরা হাত তুলে আহানের বুকের কাছের টি-শার্ট খামচে ধরল। এমন অসংলগ্ন মুহুর্তে তুরার এই অস্থির স্পর্শ যেনো চুম্বকের মতো আকর্ষণ ধরালো আহানের সারা বদনে! দু চোখ সয়ংক্রীয়ভাবে বুজে এলো, পুরু অধরযুগল ছুঁয়ে দিল তুরার ওষ্ঠ, না চাইতেও অজান্তে দুটো মনের প্রখর উন্মাদনা ভীষণ অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই আলিঙ্গন করল। বেসামাল, বেহুশ, বেপরোয়া হয়েই মিশে গেলো দুজনের অধর, পুরুষালি ঠোঁটের চটচটে চুমুতে শুষে নিলো তুরার অধরামৃত
.
.
.
চলবে ইনশাআল্লাহ

Humu_♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here