তারকারাজি সিজন 1 পর্ব-২১

0
241

তারকারাজি- (২১)
লেখনীতে- অহনা নুযহাত চৌধুরী

বাহ্যজগতের হৈ-হুল্লোড় ভুলে গিয়ে মাত্রই বইয়ের পাতায় মন হারিয়েছে নীলাশা। আকাশটা ধূসর মেঘের আলাপনে লুকিয়েছে দৃষ্টির অগোচরে। বৃষ্টি হবে ঢাকা শহরে। এই কার্তিকের স্বল্প শৈত্যের শীতলতা বৃদ্ধিতে রাত্রির বর্ষণটা যে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে তা নীলাশা বুঝতে পেরেছে ইতোমধ্যেই। সে বইয়ে চোখ রেখেই জানালার দিকে হাত বাড়ায়। আনমনা যুবতী হাতড়ে চলে জানালার কাঁচ কিন্তু তা খুলে দেওয়ার উপায় খুঁজে পায় না কোনো। ঠিক সেই সময় কেউ সযত্নে তার হাতটা নামিয়ে দিয়ে জানালার কাঁচ সরিয়ে দিতেই চমৎকৃত নীলাশা বাহিরে তাকাল। মুহূর্তেই স্নিগ্ধশীতল হাওয়ার স্পর্শে তিরতির করে দুলে উঠল এলোথেলো চুল, পোশাকের রেশমি রোমশ ও নীলাশার কোমল অন্তর। চোখের পাতা বন্ধ করে নিল সে। অনুভব করল বইয়ের পাতার দোলন, প্রেমপরায়ণ বজ্রনাদ ও কড়া পুরুষালি সুগন্ধির ঘ্রাণ। জনম প্রণয়ী যুবতীর সংবিৎ ফিরলো সেই অনুভূত ঘ্রাণে। হঠাৎ মনে হলো এটা কোনো কড়া পুরুষালি সুগন্ধি না বরং সুগন্ধি ব্যবহার করা কোনো পুরুষই তার অতি সামীপ্যে রয়েছে। নীলাশা উড়ন্ত চুলে হাতের বাঁধা সৃষ্টি করে বা’পাশে তাকায়। দেখতে পায় দিবাস্বপ্নের সেই আরাভ নিজের ডান হাঁটু দিয়ে সীটে ভর করে, খানিকটা উবু হয়েই তাকিয়ে আছে তার দিকে। আরাভের মোহাবিষ্ট চোখে চোখ রেখে কেঁপে উঠল নীলাশার চিত্ত। উল্টো হাওয়ায় এলোমেলো হলো চুল। বইটা ছুটে গেল হাত থেকে। এলোমেলো হয়ে গেল নীলাশার স্নায়ুতন্ত্রের কর্মসঞ্চালন। ওষ্ঠদ্বারে পৌঁছায় না বলার মতো কোনো ভাষা। এদিকে আরাভ উবু হয়ে সযত্নে সেই বই তুলে দিয়ে পাশের সীটটায় বসে পড়ল। মুখে গাম্ভীর্যের ছাপেও ক্ষীণ কোমলতা থাকল। আশপাশ থেকে দুই দলের বন্ধুদের চাপা জয়ধ্বনি শ্রবণেন্দ্রিয় হতেই ফোন বেজে উঠল নীলাশার। সে স্বাভাবিকভাবেই তাকাল ফোনের পর্দায়। ইয়াসিন চৌধুরীর কল এসেছে দেখেই তা রিসিভ করে নিল ভীষণ তড়বড় করে,

“ হ্যালো, ড্যাড? ”

অপরপক্ষের আওয়াজ কেউ শুনতে না পেলেও নিশান মন্তব্য করে বসল,

“ এই দেশের মাইয়ারা কত সুন্দর আব্বা, বাবা, আব্বু বলে ডাকে। আর হেতিরে পদে-পদে প্রমাণ করা লাগবে যে, হেতি বিদেশ থেকে আসছে। মানে কী কমু! কুত্তার লেজ আরএফএল পাইপের মধ্যে ঢুকালেও সোজা হয় না। এই ব্রিটিশ ছেড়ি ব্রিটিশই থাকল। এক্কেরে কুত্তার লেঙ্গুড়! ”

হাসির রোল পড়ল সেখানে। নীলাশার বিশ্রীভাবে কুঁচকানো মুখশ্রী দেখে সেই হাসির মাত্রা যেন ধাপে ধাপে বৃদ্ধিই পেল সবার। ফোনে কথা বলতে বলতেই নীলাশা খেয়াল করল কোনো এক কারণে আরাভকে বাস থেকে নেমে যেতে। সে তড়িঘড়ি করে কল কেটে তার আশেপাশে তাকাল। বেশ অর্থোদ্ধার করে নিল সকলের মিটমিটিয়ে হাসার পিছনের কারণটি। নীলাশা নিজের মাঝে কৃত্রিম রাগ ফুটিয়ে তুলে খানিকটা চেঁচিয়েই বলল,

“ দরকার ছিল এই হাঙ্গাটা করার? ”

বাসের শেষাংশের সদস্যদের থতমত মুখটা ভেসে উঠল নীলাশার এরূপ প্রশ্ন শুনে। এমনকি অবিদিত ছেলে দুজনও তাকিয়ে থাকল নীলাশার দিকে।কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত হলো। সর্বপ্রথম সানামই প্রশ্ন করল,

“ হাঙ্গা? কার হাঙ্গা? ”

নীলাশা ভ্রু কুঁচকে তাকাল। ভাবটা এমন করল যেন সকলের ন্যাকাবোকা মুখশ্রী দেখে সে অত্যন্ত বিরক্ত। অতঃপর সাহেলের কণ্ঠ এলো,

“ আই থিঙ্ক নীল ‘হাঙ্গামা’ বুঝাতে চাইছিল। ”

নীলাশা তড়িঘড়ি করে সহমত পোষণ করল,

“ হ্যাঁ, ওই হাঙ্গামা-ই বলছি। শুধু ‘মা’ বাদ পড়ে গিয়েছিল। ”

এই কথা শুনে সকলে আরও কয়েক মুহূর্ত নীরবতা পালন করল। অতঃপর পরিবেশকে অতিমাত্রায় চাঞ্চল্যকর করে তুলে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল তারা। নীলাশা বিরক্ত হয়ে জানায় যে, একটা শব্দ ভুল করে বলে ফেলেছে বলেই কি এভাবে রাক্ষুসে হাসিতে বাস কাঁপিয়ে ফেলতে হবে সবার? ‘হাঙ্গামা’ শব্দটাকে কি সংক্ষিপ্ত আকারে ‘হাঙ্গা’ বলা যায় না? নীলাশার বিরক্তি প্রকাশ হতে না হতেই আরাভের উপস্থিতি ঘটে সেখানে। তাদের এরূপ দশা দেখে নিজেও কৌতূহলী হয়ে সকলকে জিজ্ঞাসা করতেই সাইফ বিষয়টি জানায় তাকে।আরাভও নীলাশার পাশে বসে নীরবে হাসতে লাগল। এই দেখে নীলাশার আর বোঝার বাকি রইল না যে, শব্দোচ্চারণে নীতিভ্রংশ ঘটিয়েছে সে। তখন রিশানকে বলতে শোনা গেল,

“ ওরে ব্রিটিইশ্শা! তুই বিলেতি পড়ুয়া মাইয়া বিলেতিই বল। হুদাই বাংলা বলতে গিয়ে বাংলার বংশপরিচয় পাল্টায় দিতাছোস ক্যান? তুই জানিস হাঙ্গা মানে কী? হাঙ্গা মানে বিয়ে। তার মানে তোর কথার মিনিং হইছিল… ”

কথা সমাপ্ত করার আগেই সামনে থেকে মিশমি বলে উঠল,

“ একটু আগেই ইংলিশ বলা নিয়ে নিশান খোঁটা দিল আর তুই খোঁটা দিচ্ছিস বাংলা বলা নিয়ে। ওকে কি শান্তিতে কথাটাও বলতে দিবি না? তোরা মানুষের পিছে লাগতেই পারিস যা! মানুষকে বুঝতে জানিস না। ”

নিশান নাটকীয় ভঙ্গিমায় অনুনয়-বিনয় করে বলল,

“ বোইন রে বোইন, দয়া করে তোর টেপরেকর্ডারটা ঘুরতে যাওয়ার সময় চালাইস না। তুই আমার গিলা, তুই আমার কলিজা, খালি আমার কথাটা শোন। আন্টির বাণী আমরা ঘুরে এসে তারপর সবাই মিলে… ”

মিশমি মৃদু নিঃস্বনে ধমকে উঠেল,

“ রাখ তোর গিলা-কলিজা! ভালো কথা গায়ে লাগছে না-কি কোনোদিন? আমি ভালো বললেও আমার মায়ের সুনাম আর আমি খারাপ বললেও আমার মায়ের দুর্নাম। এই পৃথিবীত্ আমার কোনো কদর-ই নাই! ”

রিশান হো হো করে হেসে বলল, “ উচিত কথা বলছোস তো মামা! ”

মিশমিকে নিয়ে হৈহৈ করতে-করতেই বাস তার যাত্রার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। শৈত্য হাওয়ার চঞ্চলতা সহ্য করতে না পেরে নীলাশা জানালার কাঁচ লাগিয়ে দিতেই প্রশ্ন শোনা গেল পিহুর,

“ ওই সানাম! নীলের হাঙ্গা মার্কা টপিক থেকে মনে পড়ল, তোর বিয়ের কী হইলো? ফাইনাল না-কি বিয়ে ভাঙছে? ”

সানাম দাম্ভিক স্বরে বলল,

“ ভাঙছে মানে? বল আমি ভেঙে দিয়ে আসছি। ”

রিশান বলল, “ ক্যামনে ভাঙলি? তোর জ্বালাইন্না চাচি কিছু বলে নাই? ”

সানাম ঠোঁট চেপে হাসল একবার। সোজা হয়ে বসে হাসতে হাসতেই বলতে লাগল,

“ অতো কিছুই করি নাই। ছেলেটার সাথে কথা বলতে পাঠালো যখন তখন খালি বলছিলাম ‘ভাই, আপনারে আমার পছন্দ হয় নাই। দেখেই ভাই-ভাই লাগে আপনারে। বিয়ের পর তো খালি কেলানি-ই খাবেন আমার হাতে! চাচির কাছে শুনছেন নিশ্চয়ই রাগ উঠলেই আমি যারে-তারে ধরে মারা শুরু করি? কিন্তু একটা কাজ করা যায়। যদি আপনি লিখিত দেন যে, আপনারে এমনকি আপনার পরিবারের কারো উপর রেগে গিয়ে যদি ধুপধাপ করে মাইর ফেলাই দুই-একটা; তাহলে আপনি সেই নিয়ে কোনো অভিযোগ তুলতে পারবেন না কোনোদিন। আর বিয়ের পরেও যে আপনারে ভাই ডাকলে কিছু বলবেন না সেইটাও লিখিত দিয়েন। ভাইয়ের সঙ্গে কি আর বউ-বউ টাইপ প্রেম করা যায়, ভাইয়া আপনিই বলেন? বোন-বোন টাইপ প্রেম করব আপনার সাথে। আর বউ-বউ টাইপ প্রেম করার জন্য আলাদা একটা… আচ্ছা সেইটা পরে না-হয় আমি আর আপনি মিলে একটা ছেলে খুঁজে নিব। তাহলে ভাইয়া, যদি এগুলা লিখে সিগনেচার দিয়ে দেন তো আমি এখনি কাজী ডেকে চাচিকে বিয়ের আয়োজন করতে বলব। আপনাকে বিয়ে করেই আমাকে বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে আবার। ’ এগুলা বলে পরে বলছি যে, ফিরে এসে না-হয় ওর সাথে একটা সিঙ্গেল হানিমুনে যাব। সারাদিন ঘুরব আর হোটেলে এসে যে যার-যার রুমে ঢুকে যাব। নো হাসবেন্ড-ওয়াইফ টাইপ হানিমুন। কিসসা শ্যাষ! ”

তুঙ্গে ওঠা বিস্ময় নিয়ে সকলেই তাকিয়ে রইল সানামের দিকে। নিশান তিক্ত মুখে প্রশ্ন করল সেই সময়,

“ এগ্লা তুই সত্যিই বলে আসছোস? ছিঃ, ছিঃ তুই পাগল না-কি পায়জামা? ওই পোলা যদি তোর চাচিরে এগ্লা বলে দেয় তুই বুঝতাছোস কী হবে? আর তাছাড়াও ওই পোলা যদি তোরে তহন-ই এডা থাপ্পড় মারত তাইলে তুই না থ্যাতলে যাইতি গা? ”

সানাম খিলখিল করে হাসল,

“ আরে বিয়ে ভাঙার জন্যে মানুষ কত কিছু করে। তার উপর তুই দেখলেই বলতি যে, হাবাগোবা পোলা। নাহলে এমনিই আমার এগুলা কথা শুনে পলায়ে যায়? চালাক হইলে না মামা! আমারে সত্যিই থ্যাতলে দিয়ে যেত। মানুষ বুঝেই বুলি ছাড়ছি আমি। আমারে দিবে বিয়ে, হাহ্! আমি হইলাম সানাম। মানুষরে নাচানিই আমার কাম। ”

পিহু নিশানের অনুরূপ বলল,

“ তুই এমন ক্যান রে ভাই? বিয়ে করবি না ভালো কথা। তাই এগুলা বাগড়া দিয়ে বিয়ে ভাঙবি? কী করতে চাস তুই বল তো? ”

সানাম সীটে গা এলিয়ে বসল। বাসের সর্বোচ্চ স্তরে তাকিয়ে কাল্পনিক দৃশ্য দেখার ভঙ্গিতে বলল,

“ আই ওয়ান্ট টু নো দ্য মিনিং অফ মাই লাইফ।আমার স্বার্থপর বাপ-মা ভালো এক কাজ করছে বুঝলি? স্বার্থপর দুনিয়া চোখের সামনে রেখে বলে গেছে, ‘সুমনা, তুই দুনিয়া দেখবি। দুনিয়া দেখাবে তোর করণীয়।’ দায়িত্ব দেওয়ার আর মানুষ পায় নাই তারা। আজগুবি চিন্তাভাবনা! এইরকম ‘নো টেনশন ডু মাস্তি’ টাইপ ইচ্ছা নিয়েই কাটায় দিব জীবন। আমার এত প্যারা নাই লাইফে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার, বিয়ে-শাদি করার, বাচ্চা পয়দা করে নিজেরা মরে গিয়ে তাকে অনাথ দেওয়ার। ইট’স আ বিউটিফুল লাইফ এন্ড আই শুড এনজয় ইট। ”

সানামের ছন্নছাড়া কথায় সবাই তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোনো ব্যতিক্রমী ইচ্ছা প্রকাশ করে উঠতে পারল না। নীরবতা কাটিয়ে রিশান মাছি তাড়াবার ভঙ্গিতে হাত নাড়িয়ে উত্তর দিল,

“ যা ছেড়ি! এইটা কোনো লাইফ হইলো? যত দোষ খালি আঙ্কেল-আন্টির, নাহ্? ”

সানাম খিলখিলিয়ে হেসে উঠলেও রিশানের উত্তর হলো শূন্য। সে নিজেও নিজেকে নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে যে, তার জীবনের মানে কী? জীবনের মানে জানার যে তার প্রবল উত্তেজনা তা নয়। সে শুধু চায় একটি ছলাকলাশূন্য জীবন। যেখানে নেই কোনো সুখময়ী জীবনের বিষাক্ত আশ্বাস… নেই কোনো দুঃখময়ী অসুখের বিষাক্ত নিঃশ্বাস!

বাসে নীরবতা খেলে গেল বেশ কিছুক্ষণ। বাহিরে এক ফোঁটা, দুই ফোঁটা বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টিগুলো এসে জানালার কাঁচে ভীড় করে বসেছে বিন্দু বিন্দু কোলাজের মতো। সেই ঝাপসা কাঁচের দেয়ালটার দিকে নীলাশা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল বেশ কিছুক্ষণ। অতঃপর তাতে আঙুলের মসৃণ ছোঁয়ায় লিখে ফেলল,

“ গায়কবাবু, কোনো নারীর নিবেদিত প্রেমকে প্রত্যাখান করতে নেই। আপনি দেখি ভীষণ অবুঝ! ”

মলিন হাসল নীলাশা। হাসির সেই ক্ষীণ আওয়াজে ফোনের পর্দায় ব্যস্ত থাকা আরাভের চোখ দুটো বিনা মুহূর্ত ব্যয়েই ফিরে তাকাল নীলাশার দিকে। সে দেখতে পায় নীলাশাকে জানালার দিকে তাকিয়ে থাকতে। তাই আরাভ বোঝার চেষ্টা চালালো সেই হাসির কারণ। হয়তো ভেবেছিল নীলাশা বাহিরেই কিছু দেখছে। কিন্তু না, চোখে পড়ল আবছা কাঁচে স্পষ্ট ছাপা অভিমানিনীর কিছু অভিমান। আরাভ নিঃশব্দে হাসির রেখা প্রসারিত করল। উদ্দেশ্যহীন সামনে চোখ রেখে, দারুণ কাব্যিক ভঙ্গিতেই বিড়বিড় করে বলে উঠল আরাভ,

“ নীল… প্রণয় মাখালেই হয় নীলা। সেই কী ভীষণ সুন্দর রঙ! ”

অতঃপর সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ল নীলাশার দিকে,

“ তোমার নীল রঙ কেমন লাগে, নীলা? ”

নীলাশা চমকে উঠে পাশে তাকায়। দেখে ফেলল না-কি লেখাটা? সে অপ্রস্তুত হলো বেশ। আবার পরক্ষণেই মনে হলো যে, এমন চলন্ত বাসে পাশে বসা মানুষটি কী করছে তা খেয়াল করার মতো সময় আরাভের কেন থাকবে? নীলাশা নিজের পোশাকের আস্তিন দিয়েই মুছে ফেলল কাঁচে লেখা অভিমানখানা। বেশ এলোমেলো স্বভাবে বিশুদ্ধ বাংলায় উত্তর দিল,

“ স্বল্পপ্রিয়। তা যে বিষাক্ত রঙ! ”

তৎক্ষনাৎ-ই কোনো উত্তর দিল না আরাভ৷ চোখ বুজে নিয়ে সীটে মাথা ঠেকাতেই ভেসে উঠল নীলাম্বরীতে এক প্রণয়িনীর প্রতিচ্ছবি। ও যে নীলাশা! অবাধ্য অনুভূতি মুহূর্তেই বিড়বিড়িয়ে উঠল শ্যামপুরুষের ওষ্ঠদ্বারে,

“ সেই নীল বিষেই কি এলোমেলো হয়ে গেলাম আমি? ”

নীলাশা অস্পষ্ট শুনে সেই কথা, “ কী বলছেন? ”

আরাভ তাকাল। হালকা হেসে আচমকাই নীলাশার গাল টেনে দিয়ে বলল,

“ কুমিল্লা এসে গেছি। চলো, কিছু খেয়ে নেওয়া যাবে এখন। ”

সকলকে ডেকে বাসের প্রথমার্ধেকে চলে গেল আরাভ। নীলাশা সেথায় ঠাই তাকিয়ে, থম মেরে বসে রইল শুধু। আরাভের ওইটুকু আদুরে স্পর্শেই যেন শুরু হয়ে গেল তার গায়ের কাঁপুনি। সে কি আদৌ তাকে প্রত্যাখ্যান করছে না-কি করছে না, তা নিয়ে বিভ্রান্তই হলো নীলাশা। সেই সাথে তিরতির করে কেঁপে উঠল তার ঠোঁট দুটো। গায়ের তাপমাত্রাটা বোধহয় এবার শূন্যতেই পৌঁছাতে চাচ্ছে। অত্যন্ত শীতল শিহরণে প্রণয়িনী বাকশক্তি হারিয়ে ফেলল। নরম গদির আসনে নিশ্চল হয়ে হেলে পড়ল নীলাশার শিরশিরিয়ে ওঠা দেহ।

#চলবে ইন শা আল্লাহ!

( #বিঃদ্রঃ একটি বিশেষ কারণে আগেই দুটো কথা আমি জানিয়ে রাখি যে, এই উপন্যাসটি পুরোটাই এর এন্ডিং এর উপর নির্ভর করে প্লট সাজানো হয়েছে, প্লট থেকে এন্ডিং সাজানো না। #বিঃদ্রঃ২ এরপরের উপন্যাসটি এমন করে লেখার ইচ্ছা আছে যেখানে দুটো মূল চরিত্রই ঘটনা সাপেক্ষে নিজের অনুভূতি ব্যাখ্যা করবে ইন শা আল্লাহ ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here