ছন্দহীন পদ্য পর্ব ৯

0
249

ছন্দহীন পদ্য
.
পর্ব_৯
.
সন্ধ্যায় দু’জন একই সঙ্গে টিউশনি থেকে ফিরেছে। এ বাসায় ইভার বেশ কয়েক মাস কেটে গেল৷ এখন নিজেরই বাড়ি মনে হয় তার। মানুষগুলোও কেমন যেন। খুব সহজে আপন করে নিয়েছে তাকে৷
ইভা এখন নিজ থেকে কিছু কাজ-কর্ম করে। ওরা স্বামী-স্ত্রী অফিসে থাকে, সে এসে ঘর-দোর গুছায়। অনিক ভাইকে টেবিলে খাবার দেয়। যখন যা দরকার আগ্রহ নিয়ে সাহায্য করে। উনিও তাকে টিউশনি থেকে রাতে বাসায় নিয়ে আসেন। মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যান। মানুষটাকে সে প্রথমে অনেক ভুল বুঝেছিল৷ আসলে ভেতরটা ভালো। বাইরে শুধু লাগামছাড়া আর উদ্ভট কথাবার্তা। ভেতরে ভেতরে অনেক কেয়ারিং। তা না হলে কি তাকে জুঁইদের বাসার সামনে থেকে রোজ গিয়ে নিয়ে আসতেন? মোটেও না। আরেকটা টিউশনিও দিয়েছেন জোগাড় করে৷ ভোরেও পড়াতে যায় ইভা। তবে মানুষটাকে পুরোপুরি বুঝা যায় না। মাঝে মাঝে মনে হয় উনি খুবই দুঃখী৷ তা কেন মনে হয় ইভা নিজেও ঠিক বুঝতে পারে না। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে অনিক ভাই থেকে সুখী মানুষ এই সংসারে খুবই কম আছে। হাসি-খুশি মুখ, সারাক্ষণ রসিকতা, যা ইচ্ছা বলে ফেলা, চাকরি না করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো। এগুলো দেখে তো যেকেউ বলবে ভালোই আছেন৷ তবুও সবকিছুতে একটা কিছু যেন আছে, বিষাদের সুর। টের পায় ইভা। উনার সঙ্গে যতক্ষণ থাকে সে, কেন যেন প্রচণ্ড ভালো লাগে। অদ্ভুত মানুষ, যার মুখে সারাক্ষণ উদ্ভট কথাবার্তা, তার সঙ্গ ভালো লাগার কারণ কি আসলে? ইভা বুঝতে পারে না। সে খুব একটা চিন্তাশীল মানুষও নয়। তবুও অনিক ভাইয়ের কিছু বিষয় সে খেয়াল করেছে। উনি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে তুচ্ছ করে দেখেন, আর তুচ্ছ বিষয়গুলোকে বড়ো করে৷ টাকা-পয়সা থেকে পৃথিবীতে বড়ো কিছু কি আছে? আসলেই নেই৷ কিন্তু এগুলো উনার কাছে, তুচ্ছ। খুবই তুচ্ছ। ইভা এরকম মানুষ জীবনে দেখেনি।

এই ব্যাপারগুলো মাঝে মাঝে তার মাঝেও চলে আসে, তখন সবকিছু ভীষণ ভালো লাগে। সকল দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। খুবই ডিপ্রেশনে কেউ আছে, ইভার ধারণা অনিক ভাইয়ের সঙ্গে মিশলে উধাও হয়ে যাবে৷ কারণ যে কারণে সে ডিপ্রেশনে, সেটাই অনিক ভাই তুচ্ছ করে দেবেন। কিছু কিছু বিষয়ে এখনও ইভার প্রচণ্ড রকমের রাগ উঠে।
এইতো, সেদিন রিকশায় আসার সময় ইভা বলেছিল, ‘আচ্ছা অনিক ভাই, আপনার কি প্রেমিকা নেই?’

তিনি আনমনা ছিলেন। প্রশ্ন শুনে তার দিকে তাকিয়ে বললেন,

– ‘আমার?’

– ‘হ্যাঁ আপনার।’

– ‘আমি তো বিয়ে-শাদি করবো না। তাই প্রেমও করি না৷ কেউ আমার প্রেমে পড়ুক, তাও চাই না।’

– ‘বিয়ে-শাদি করবেন না কেন?’

তিনি এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তীক্ষ্ণ চোখে সিরিয়াস মুখে ইভার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এই ইভা শোনো, তুমি দেইখো আবার ভাইয়ার প্রেমে-টেমে পড়বে না। এসব আমার দ্বারা হবে না, অকারণ কষ্ট পাবে।’

ইভা ভীষণ অপমানবোধ করলো৷ কোনো মেয়েকে কেউ এভাবে বলবে? তোমার ভাই এত পণ্ডিত হয়ে কি লাভ, একটা মেয়ের সঙ্গে যদি সুন্দর করে কথা বলতে না জানো? এই যে বললেন, ‘এই ইভা শোনো, তুমি দেইখো আবার আমার প্রেমে-টেমে পড়বে না’ এই কথা কাউকে বললে সে অপমানবোধ করবে না? এটা কি বুঝার মতো জ্ঞান নেই উনার? এগুলোই ইভার বিরক্ত লাগে, প্রচণ্ড রাগ হয়।
সেও তাচ্ছিল্য করে জবাব দিয়েছিল,
– ‘আমি কোনো সিগারেটখোরের প্রেমে পড়বো ভাবলেন কি করে? নিজেকে কি ভাবেন আপনি। সালমান খান?’

অনিক ভাই তার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। হেঁসে বললেন, ‘গুড গার্ল, এইতো ঠিক আছে।’
এই কথা শুনে ইভার আরও বেশি রাগ উঠেছিল৷ শরীর যেন জ্বলে যাচ্ছিল রাগে। এমনভাবে বলেছিলেন, ‘গুড গার্ল’। যেন সে গায়েপড়া মেয়ে। উনার সাথে প্রেম করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন প্রেম করবে না বলায় খুশি হয়ে বলেছেন, ‘এইতো গুড গার্ল।’

এখন দু’জনই টিউশনি থেকে ফিরেছে। অনিক ভাইয়ের একটা লেখার অংশ সামনে বসে পড়তে হবে। হাত-মুখ ধুয়ে চা বসিয়ে দিল সে। মানুষটা চা ভীষণ পছন্দ করে। এটা খেয়াল করেছে ইভা। কিন্তু নিজে জ্বাল দেবে সেই খেয়ালটুকুও যেন উনার থাকে না। কেউ চা নিয়ে গেলে বেশ খুশি হন। সেটা দেখেই বুঝা যায়। ট্রে-তে করে দু-কাপ চা নিয়ে অনিকের রুমের দিকে গেল সে। বাতি জ্বলছে। অনিকের হাতে একটা বই। ইভা তাকিয়ে দেখে ‘সত্যের সন্ধানে’ নিচে লেখা আরজ আলী মাতব্বর। সে ভ্রু কুঁচকে বললো, ‘আরজ আলী মাতব্বুর’ আবার কে?’

অনিক বই থেকে মুখ সরিয়ে উঠে বসে বললো, ‘বাহ চা নিয়ে এসেছো, ধন্যবাদ।’

ইভা বসলো। অনিক চা হাতে নিয়ে চুমুক দিয়ে বললো,

– ‘এই রাইটারের কথা বলছিলে?’

– ‘হ্যাঁ।’

– ‘উনি কবি বা ঔপন্যাসিক না। একজন বাংলাদেশি দার্শনিক। এবং বিস্ময়ের ব্যাপার হলো উনার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই ছিল না। কৃষক ছিলেন। শুধু লাইব্রেরিতে বই পড়তেন। লোকে তাকে স্বশিক্ষিত বলতো। তার লেখা বই পড়ে অবাকই হতে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া, জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পর্কে এত জানলো কিভাবে? তার লেখায় অনেক জিজ্ঞাসা, এই পৃথিবী, মানুষ, জগৎ নিয়ে অনেক ভয়ংকর প্রশ্ন। চমকে দেয়ার মতো যুক্তি। যদিও সেসবের উত্তর এখন অনেকেই দিয়েছেন, দিচ্ছেন।’

‘বাবা এগুলোতে আমি নাই’ তারপর চায়ে চুমুক দিয়ে বললো, ‘ভুলেই গিয়েছিলাম, বাসায় এত মশা৷ যাই অ্যারোসল দিয়ে এসে বসি।’

ইভা গিয়ে আফরা এবং ওর রুমে স্প্রে মে’রে এসে বললো, ‘অনিক ভাই সিটিং রুমে চলে আসুন। স্প্রে দেই। ওখানে বসে আপনার লেখা পড়ে নিব।’

অনিক চায়ের কাপ রেখে বললো,

– ‘আসো, ভেতরে আসো।’

– ‘রুমে থাকলে ক্ষতি হবে তো বের হোন।’

অনিক একটা সিগারেট ধরিয়ে নিয়ে বললো,

– ‘এই বস্তু আমার রুমে লাগবে না।’

– ‘কেন, মশা কি আপনার রুমে নাই?’

– ‘তা প্রচুর আছে।’

– ‘তাহলে কি কামড়ায় না?’

– ‘সুযোগ পায় না। তাদের অভিযোগটা হলো আমি ফ্যান ছেড়ে মুখ ঢেকে ঘুমাই। ফলে মশারি ছাড়া ঘুমানো ব্যক্তিকেও তারা বিশেষ সুবিধা করতে পারে না।’

প্রথমে ইভা খিলখিল করে হেঁসে উঠলো। তারপর ভ্রু কুঁচকে বললো, ‘মানে, আমি প্রথমে খেয়াল করিনি৷ আপনি এই গরমেও মুখ ঢেকে ঘুমান? এখনও শীত আসেনি এতটা!’

অনিক আঙুল দিয়ে বিছানার দিকে দেখায়। ইভা অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো, ‘তাইতো, আপনি একটা অদ্ভুত, উদ্ভট লোক।’

অনিক হাসতে হাসতে বললো, ‘বিছানায় বসো, হোয়াটসঅ্যাপে দিয়েছি দেখো, পড়ো বসে।’

এই কাজটা ইভার জন্য ভীষণ কঠিন লাগে। উনি মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন৷ তার শব্দ করে পড়তে হয়৷ অবশ্য অংশগুলো ছোট্ট থাকে। এমনিতে পুরো উপন্যাস একা একা পড়ে শেষে বানান বা অনুভূতি ভালোমন্দ বললে হয়। কিন্তু উনার ‘বিশেষ অংশ’ নামে যে লেখা সামনে বসে পড়তে হয় তা অস্বস্তিকর। কেউ ‘হা’ করে তাকিয়ে আছে৷ তার সামনে বসে শব্দ করে পড়া বড়োই মুশকিল। সবচেয়ে মুশকিল হয় অংশটা যদি রোমান্টিক থাকে। ইভা লেখা বের করে পড়তে শুরু করলো। এই অংশটাও রোমান্টিক।
.
ভোরে ঘুম থেকে উঠে ‘আজ শুক্রবার’ মনে হতেই নাঈমের মনটা ভালো হয়ে গেল৷ অফিসে যাওয়ার কোনো তাড়া নেই। ফুরফুরে মেজাজে পাশ ফিরে সে। আফরা বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। চুলগুলো সরিয়ে ঠোঁট আলতো করে কপালে ছুঁয়ে দিল সে। সঙ্গে সঙ্গে ঘুম ভেঙে গেল আফরার৷ ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে বিরক্ত হয়ে অন্যদিকে পাশ ফিরিয়ে নিল সে। নাঈমও নাছোড়বান্দার মতো অপর পাশে এসে জড়িয়ে ধরে ওর গলায় নাক ডোবায়। নাঈমের ছোঁয়া আর উষ্ণ শ্বাসে পুরোপুরি ঘুম ভেঙে গেল আফরার৷ সে চুল ধরে টেনে সরিয়ে বললো, ‘ভোরেই কি শুরু করলে তুমি?’

নাঈম ওর গালে হাত রেখে মুচকি হেঁসে বললো,

– ‘কেন, তুমি কি জানো না ভোরে পুরুষ মানুষদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায়?’

আফরা স্মিথ হেঁসে বললো,

– ‘তাই না-কি?’

– ‘হ্যাঁ, ভোরে পুরুষ মানুষদের সে*ক্স হরমোন টেস্টোসটেরনের ক্ষরণ অন্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায়।’

– ‘আর মহিলাদের?’

– ‘রাতে।’

আফরা ঠোঁট টিপে হেঁসে বললো,

– ‘তাহলে আমি কেন ঘুম নষ্ট করে ভোরে তোমাকে সঙ্গ দেবো? আমার কাছ থেকে সরো বলছি, সরো।’

নাঈম ওর হাত টেনে এনে চুমু খেয়ে বললো,

– ‘ভোরে যে এর আলাদা উপকারও আছে ম্যাডাম। ব্যায়াম হয়। পুরো রাত ঘুমিয়ে শরীর বসে যায়৷ ঘনিষ্ঠ হওয়ার ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনও বেড়ে যায়। সুতরাং রাতের থেকে ভোরে কি ভালো নয়?’

আফরা ফিক করে হেঁসে বললো,

– তাই বুঝি? আর ঘুম থেকে উঠে যে সবার মুখে দূর্গন্ধ থাকে, তার কি হবে?’

নাঈম আচমকা তাকে পাঁজাকোলা করে কোলে নেয়। আফরা খিলখিল করে হেঁসে উঠে বললো, ‘কি করছো?’

নাঈম কোনো জবাব না দিয়ে বাথরুমে চলে গেল। আয়নার সামনে আফরাকে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ বাড়িয়ে দিয়ে বললো, ‘নাও, ব্রাশ করো ম্যাডাম। আমিও করি।’

– ‘আজব! ছুটির দিন ঘুম থেকে তুলে কি পাগলামি শুরু করলে।’

নাঈম কোনো কথা না বলে পেস্ট লাগিয়ে দিল ওর ব্রাশে। তারপর পেছনের দিকে হাত নিয়ে জড়িয়ে ধরে নিজেও ব্রাশ করতে শুরু করে। দু’জনের ফ্রেশ হওয়া শেষ হতেই নাঈম পুনরায় তাকে কোলে করে নিয়ে এলো বিছানায়।

আফরা গোসল থেকে বের হলো সাতটার দিকে। নাঈম পুনরায় ঘুমিয়ে পড়েছে। ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো আফরা। আজ সে শাড়ি পরবে। চুল মুছে তোয়ালে শুকিয়ে দিয়ে এসে একা একা শাড়ি পরে নিল। নিজেকে কেমন যেন অসহ্য রকমের সুখী মানুষ মনে হচ্ছে। ইভার রুমে গিয়ে দেখে ও বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। সে পশ্চিমের দরজা খুলে বারান্দায় গেল। সূর্যের কোমল নরম আলো এসে পড়েছে বারান্দায়। সবুজ মাঠ আর পাহাড়ের ওপরে চা-গাছ দেখা যাচ্ছে। ইস নাঈম কখনও এই দৃশ্যটা দেখতে পায় না। মানুষটা অফিসে চলে যায়। আবার ছুটির দিনে বেলা করে ঘুমায়। এখন গিয়ে কি একটু ঝাড়ি দেবে? ঝাড়ি দিলেই বাচ্চা ছেলেদের মতো ঘুম থেকে উঠে যাবে। আফরা আবার রুমে চলে এলো। নাঈমকে ধাক্কা দিতে গিয়েও বুকটা হু হু করে উঠলো। মানুষটা ঘুমাচ্ছে, একটু শান্তিতে ঘুমাক না৷ সে আবার চলে এলো রান্নাঘরে। দীর্ঘ সময় রান্নাঘরে কাটিয়ে নাশতা বানিয়ে প্রথমে অনিকের রুমে এলো। ওর বিছানায় বসে মনে হলো, থাক ঘুমাক৷ আজ মন ভীষণ ভালো, মন ভালো থাকলে আফরার সকলের প্রতি কেমন ভীষণ মায়া লাগে৷ তখন কাউকে কষ্ট দেয়া সে কল্পনাই করতে পারে না। অনিককে ঘুমে দেখে উঠে চলে যাচ্ছিল। তখনই হাত ধরে ফেললো অনিক। ভালো ভাবে তাকিয়ে বললো, ‘বাহ শাড়ি পরেছো, সুন্দর লাগছে তোমাকে ভাবি। কেমন শান্ত-স্নিগ্ধ চেহারা। চোখে-মুখে তৃপ্তি, প্রশান্তির ছাপ।’

– ‘ও তাই না-কি?’

– ‘হ্যাঁ।’

– ‘কিন্তু তুমি না ঘুমে ছিলে?’

– ‘ঘুমে না, চোখবন্ধ করে শুয়ে আছি। কবিতার মতো কয়েকটা লাইন মাথায় এলো।’

– ‘বলো শুনি।’

আফরার হাত ধরে সে চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,

“জীবন থেকে যেতে যেতে
কম যায়নি কাল,
অথচ আজও আমার কেউ নেই-
যে মুঠোফোনে কিংবা
কপালে হাত রেখে বলবে, ‘শুভ সকাল’।

আফরা ফিক করে হেঁসে বললো, ‘সুন্দর হয়েছে ডিয়ার দেবর। কিন্তু চাকরি-বাকরি করে বিয়ে করো। তাহলে তো একজন পেয়ে যাবে, যে ভোরে কপালে হাত রেখে ‘শুভ সকাল’ বলবে। তুমি বিয়েটাকে যত অশান্তির মনে করো, ততটাও কিন্তু না।’

অনিক হাত ছেড়ে দিয়ে বললো, ‘যাও তো, ফিলিংসটাই মাটি করে দিয়েছো। আরে বাবা বিরহ যে একটা ভালো লাগার বিষয়, কেউ সেটা বুঝতে চায় না৷ একটা বউ রুমে ঢুকিয়ে দিয়ে সবাই আমার জীবনটাকে তছনছ করে দিতে চায়।’

‘হইছে, উঠে এসো, চা খাবে’ আফরা কথাটি বলে চলে যাচ্ছিল। আবার ফিরে এসে বললো, ‘আচ্ছা একটা কথা সত্যি করে বলবে ভাবিকে?’

– ‘জানি সেটা।’

– ‘কিভাবে জানো? বলো তো কি?’

– ‘যদি বলি তাহলে তুমি বলবে ‘চো*রের মনে পুলিশ পুলিশ’ তখন আর না করলেও বিশ্বাস করাতে পারবো না। তাই জিজ্ঞেস করে ফেল।’

– ‘না আগে বলো তুমি কি বুঝেছো? না হলে বলবো না।’

‘তাহলে যাই, আমি গিয়ে দাঁত ব্রাশ করি। আমার শোনার ইচ্ছা নেই’ অনিক কথাটা বলে বাথরুমে চলে গেল।

আফরা দরজায় নক করতে করতে বারবার বলছে, ‘অনিক তুমি কি শুনছো? আমি বলি কি বলতে চাচ্ছিলাম, অনিক শুনছো….?’

অনিক কোনো জবাবই দিচ্ছে না। ভোরটা সুন্দরভাবেই শুরু হয়েছিল। এখন কথাটা না বলতে পেরে কেমন অশান্তি লাগছে আফরার।
__চলবে….
লেখা: জবরুল ইসলাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here