ঘৃণার মেরিন সিজন ৪( পর্ব ২২+২৩)

0
665

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 22
writer : Mohona

.

বিকালে…
মেরিন বাসায় পৌছালো। ফ্রেশ হয়ে বেডে একটু হেলান দিয়ে বসতেই ঘুমিয়ে পরলো। আজকে কেন যেন শরীরের সাথে পেরে উঠছেনা মেরিন। ডক্টর দেখানো উচিত হয়তো। কিন্তু নিজের নষ্ট জীবনের জন্য ১টাকা নষ্ট করতে ইচ্ছা করেনা মেরিনের। নিজেকে একদমই সহ্য হয়না। মেরিন মনে করে হয়তো ওর জন্যই ওর আম্মুর আরো বেশি কষ্ট। হয়তো ও দুনিয়াতে না এলে ওর আম্মুর এতো কষ্ট হতোনা। হয়তো কবির ফয়সাল খান কে ছেরে ছুরে চলে যেতে পারতো ।

নীড় বডিগার্ড আর ড্রাইভারকে সরিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো । একদম ওদের ধরা ছোয়ার বাহিরে চলে গেলো। ওরা চিন্তায় পরে গেলো । ওরা মেরিনকে ফোন করলো। কিন্তু মেরিন তো ঘুম ।

নীড়ের পক্ষে এটা মেনে নেয়া সম্ভব না যে ও ছারা মেরিনকে কেউ টাচ করবে। তারওপর মেরিনকে কোলে তুলে হসপিটালে ঢুকেছিলো টনি। নিশ্চয়ই মেরিন অসুস্থ । সব মিলিয়ে নীড়ের মাথা প্রচুর খারাপ ।

.

রাত ১১:৩০…
মেরিনের ঘুম ভাংলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে মেরিন অবাক হয়ে গেলো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে।
মেরিন : এতোক্ষন ঘুমালাম ? কয়টা বেজে গিয়েছে? ঘুম দিয়ে একটু ভালোই লাগছে । বাহিরে তো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পরছে। নীড় … নীড় তো চলে এসেছে । নীড়.. নীড় … নীড় …
মেরিন ওয়াশরুমে দেখলো নীড় নেই । নীড়কে ডাকতে ডাকতে নিচে নামলো। নিচেও নীড় নেই। নীলিমা বসে আছে ।
মেরিন : মামনি নীড় কোথায় ?
নীলিমা : এখনও ফিরেনিরে। ফোন করছি বারবার কেটে দিচ্ছে।
মেরিন : এতো রাত হয়ে গিয়েছে এখনও ফিরলোনা। আচ্ছা মামনি… তুমি আমাকে ডাক দাওনি কেন?
নীলিমা : ঘুমিয়ে ছিলি তাই আর ডাক দেইনি ।
মেরিন : ডাক দেয়ার দরকার ছিলো । আচ্ছা এক কাজ করো তুমি ঘুমিয়ে পরো। চিন্তা কোরোনা। আমি দেখছি ।
নীলিমা : কিন্তু …
মেরিন : কোনো কিন্তু না।
মেরিন নীলিমাকে রুমে পাঠিয়ে দিলো। কিন্তু মেরিন নিজেই চিন্তায় পরে গেলো । দৌড়ে রুমে গেলো। মোবাইল হাতে নিলো। দেখলো নীড়ের ড্রাইভার আর বডিগার্ডের অনেকগুলো মিসড কল। বডিগার্ডকে কল করলো।

বডিগার্ডের কাছে জানতে পারলো নীড় সেই যে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছে ওরা আর খুজে পায়নি ওরা। ওরা এখনও খুজেই যাচ্ছে ।

মেরিন আর কিছু না ভেবে গাড়ির চাবি নিয়ে নিচে নামলো। দরজা খুলতেই দেখতে পেলো যে নীড়ের গাড়ি এসে থামলো। মেরিন নীড়ের দিকে এগিয়ে গেলো।
গাড়ির শব্দ পেয়ে নীলিমা রুম থেকে বেরিয়ে এলো।

নীড় গাড়ির দরজা লাগিয়ে । সামনে বারতে গিয়ে বেসামাল হয়ে পরে যেতে নিলো। মেরিন এসে ধরে ফেলল। নীড় ১টা বার মেরিনকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো। কালো রঙের ১টা শাড়ি পরে আছে। এতোক্ষন ঘুম দেয়ায় মেরিনের মুখটা একটু ফুলে আছে। চুল গুলো খোলা …

নীড় মেরিনকে সরিয়ে দিয়ে নিজেই হাটতে লাগলো।
নীড়ের টলমল পা আর ওর থেকে আসা বিশ্রী গন্ধে মেরিন বুঝতে পারলো যে নীড় নেশা করে এসেছে। আর নেশার পরিমান যে অনেকবেশি সেটাও মেরিন বুঝতে পারলো।
মেরিন নীড়কে ধরতে গেলে নীড় ধরতে দিলো না । মেরিন আবারও ধরতে গেলে নীড় একই কাজ করলো। এদিকে বৃষ্টিতে ২জন হালকা ভিজেও গেলো।

নীড় : ডোন্ট টাচ মি। আমার তোমাকে সহ্য হয়না । রাগ ওঠে। খুব রাগ ওঠে। নিজের ওপর রাগ ওঠে। কারন আমি…

মেরিন এবার শক্ত করে ধরে ভেতরে ঢুকলো।

নীড় : এই মেয়ে ছারো আমাকে… ছারো।
মেরিন এবার ছারলোনা। শক্ত করে ধরে রাখলো। নীড়ের ধাক্কাও তেমন জোরে ছিলোনা।

ছেলেকে এমনভাবে বাসায় ঢুকতে দেখে নীলিমা লম্বা ১টা নিঃশ্বাস ফেলল।
নীড়ের মন খারাপ হলেই একমাত্র ড্রিংকস করে। আর মন খারাপ হলেও নীড় মারাত্মক রেগে যায়।

ভাবলো মেরিন সামলে নিবে তাই রুমে চলে গেলো …

.

মেরিন নীড়কে রুমে নিয়ে গেলো ।

নীড় : আমি কি কোরবানির গরু নাকি.. ? আমাকে এভাবে টানছো কেন?
মেরিন : চুপ একদম চুপ। চুপচাপ ওয়াশরুমে চলুন। শাওয়ার নিবেন। ততোক্ষনে আমি তেঁতুল গুলে আনছি।
নীড় : না না আমি টক খাবোনা। বাজে লাগে।
মেরিন : চুপ …

নীড় : অ্যা … আমার বউ আমাকে বকেছে।
মেরিন : নীড় …

নীড় কিছুনা বলে ঠাস করে বসে পরলো।
মেরিন : একি বসে পরলেন কেন?
নীড় : আমি রাগ করেছি আমার বউয়ের ওপর। হুহ…

মেরিন বেশ বুঝতে পারছে নীড় এখন ফুল মাতাল। তাই ভুলভাল বকছে। নিজের মধ্যে নেই। আগেই তেতুল খাওয়াতে হবে…

যেতে নিলে নীড় হাত ধরে চেনে বসিয়ে দিলো।
নীড় : বউ তুমি কোথায় যাও?
মেরিন : 😒।
নীড় : তুমি এভাবে তাকাও কেন? একটু মিষ্টি করে তাকাও না। মিষ্টি করে ১টা হাসি দাওনা… তোমাকে মিষ্টি হাসিতে কেমন লাগে ভীষন করে দেখতে মনে চায়।
মেরিন উঠে গেলো। এবার নীড় মেরিনকে কোলেই বসিয়ে দিলো। এরপর কোমড় জরিয়ে ধরে রাখলো…

নীড় : এবার যাবে কি করে শুনি?
মেরিন : …
নীড় : তুমি এমন কেন? আমার সাথে কিছু শেয়ার করলে কি হয়? এতো ভালোবাসো… তবে নিজের দুঃখ টাকে কেন শেয়ার করোনা? বলোনা…

মেরিন দেখলো নীড় ১টা আঙ্গুল কিছুটা কাটা…
মেরিন : একি আপনার হাত কাটলো কি করে?

নীড় : মনে নেই…
মেরিন : মলম লাগাতে হবে। দেখি ছারুন…
নীড় : ছারলেই তুমি পালাবে।
মেরিন : না আমি পালাবোনা…
নীড় : তোমার কি বিশ্বাস?
বলেই নীড় মেরিনের আচলটা নিজের হাতে বেধে নিলো।
নীড় : এখন পালাতে পারবেনা… আচ্ছা তুমি সবসময় শাড়ি কেন পরোনা? শাড়িতে তোমাকে খুব সুন্দর লাগে। যখনই তোমাকে শাড়িতে দেখি তখনই মনে হয় জরিয়ে ধরে আদর করি…

মেরিন উঠে ফার্স্ট এইড বক্স আনতে গেলে আচলে টান লাগলো।
মেরিন : নীড়… বক্সটা নিবো তো…

নীড়ও মেরিনের পিছে পিছে গেলো।

মেরিন ফু দিয়ে দিয়ে নীড়ের হাতে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে। বৃষ্টি পরছে। তাই শীতল বাতাস। আর বাতাসগুলো মেরিনের চুল নিয়ে খেলছে। নীড় মেরিনকে দেখছে।

নীড় টুপ করে মেরিনের নাকে কিস করলো। মেরিন অবাক হয়ে নীড়ের দিকে তাকালো।

নীড় : এভাবে তাকিয়ো না… তুমি যতোবার এভাবে তাকাও আমার মাথা কাজ করেনা।

নেশায় মানুষ কি কি করে ভেবে মেরিন নিজের কাজে মন দিলো।।

নীড় : মেরিন…

এমন করে কখনো নীড় ডাকেনি…

নীড় : তোমাকে ভালোবাসবো…
মেরিন কিছু বলল না। নীড় মেরিনের গাল ২টা চেপে ধরে মেরিনকে কিস করে বসলো।

নীড় : বলো …
মেরিন কিছু না বলে নীড়ের হাত থেকে আচলের বাধনটা খুলতে লাগলো। নীড় নেশা নামাতেই হবে।
নীড় মেরিনের নাক টেনে দিলো।
নীড় : বাধন খুললেও কি আজকে তুমি পালাতে পারবে? বলো?
বলেই নীড় মেরিনের চোখে গালে কিস করলো।

মেরিন : নীড়… আপনি এখন নিজের মধ্যে নেই। মাতাল। আমরা কালকে কথা বলবো।
নীড় : মাতালরা কি বউকে ভালোবাসে না… আমি তো তোমার নেশায় আসক্ত হয়ে পরেছি … তোমার এই শাড়িতে আসক্ত হয়ে পরেছি।

বলেই মেরিনের নাকে নাক ঘষে দিলো ।

মেরিন যতোই নীড়ের থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিতে চাইলো নীড় ততোটাই আকরে ধরলো।
😒😒😒

.

সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাংলো । চোখ মেলতেও কষ্ট হচ্ছে অস্বাভাবিক মাথাব্যাথা।
নীড় : ওহ গড… মাথা যে ব্যাথায় ছিরে পরে যাচ্ছে। উফফ।
নীড় উঠে বসলো। মাথা চেপে ধরলো। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে লেবুর শরবত রাখা। নীড় ১বার নিজের দিকে তাকালো। গায়ে শার্টটা নেই… মেজাজটা বিগরে যাবো বিগরে যাবো করছে ।
হুট করে গতকালের দুপুরের হসপিটালের ঘটনাটা মনে পরে গেলো। রাগ উঠে গিয়েছে।
নীড় : আমি বারে গেলাম। ওখান থেকে বাসায় …
নীড় সবটা মনে করতে লাগলো।

.

একটুপর …
মেরিন রুমে এলো। এসে দেখে সারা রুম তছনছ করে দিয়েছে নীড়। ২হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে বসে আছে। মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারাল। নীড়ের কাধে হাত রাখলো।
মেরিন : নীড় … আর ইউ ওকে?
নীড় সোজা হয়ে দারিয়ে ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলো।
নীড় : আই অ্যাম নট ওকে… বুঝেছো?
মেরিন : …
নীড় : খুব খুশি আজকে তুমি তাইনা ? কারন নিজের উদ্দেশ্য যে হাসিল হলো।
মেরিন : আমার উদ্দেশ্য?
নীড় : ন্যাকামো কোরোনা। তোমার সাথে ন্যাকামোটা যায়না। বোঝোনা তুমি কিসের উদ্দেশ্য । তুমি খারাপ জানতাম কিন্তু এতোটা খারাপ তা জানতাম না।
মেরিন : …
নীড় : আমি নেশায় ছিলাম । তুমি তো ছিলেনা। তবে কেন আটকালে না আমায় ? অবশ্য আটকালে তো নিজের উদ্দেশ্য পূরন হতো না। তাইনা।
মেরিন নিজের আচলের মাথাটা শক্ত করে ধরলো। দোষটা হয়তো ওরই। সত্যিটা জেনেও আবেগে ভেসেছিলো। স্থির চোখে নীড়কে দেখছে। আর অপবাদগুলো শুনছে । নীড় মেরিনের আচলের এক কোনা ধরলো।
নীড় : তোমার রূপ দিয়েও কাবু করতে পারোনি তখন তুমি আমার নেশার সুযোগ নিলে? শাড়িতে নারীদের সৌন্দর্যবৃদ্ধি হয়। বাট তুমি … যে কাজটা করেছো সেটার জন্য তোমাকে কি উপাধি দেয়া যায় জানো? প… মুখেও আনতে লজ্জা করছে।
বলেই নীড় টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। মেরিন নিজের দিকে তাকালো।

মেরিন : নুপুর নুপুর…
নুপুর : জী ভাবি…
মেরিন : রুমটা ক্লিন করো।
নুপুর : জী ভাবি।
৩-৪জন মিলে রুমটা পরিষ্কার করলো।
নীড় ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখে রুমের একপাশে আগুন জ্বলছে। নীড় দেখলো মেরিন ওর শাড়িগুলো পুরাচ্ছে । ওর পরনের শাড়িটাও নেই। নীড় কিছুনা বলে বেরিয়ে গেলো।

.

অফিসে…
মেরিন বসে আছে।
মেরিন : আবেগ… বড্ড বাজে জিনিস…
জন : ম্যাম আসবো?
মেরিন : হামমম।
জন ভেতরে ঢুকলো।
মেরিন : কাজটা হলো ?
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : গুড। তোমার জন্য আরো ১টা কাজ আছে।
জন : কি কাজ ম্যাম?
মেরিন : নতুন ১জন সাইকিয়াট্রিস্টের সন্ধান করো। সময় ৪৮ঘন্টা।
জন : জী ম্যাম। হয়ে যাবে । ম্যাম কার জন্য ?
মেরিন : আম্মুর জন্য ।
জন : কনিকা ম্যামের জন্য ?
মেরিন : হামমম।
জন : কিন্তু কনিকা ম্যামের ট্রিটমেন্ট তো নীড় স্যার করছে ।
মেরিন : মুক্তি দিয়ে দিবো। আম্মুর চিকিৎসার কাজ থেকে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনকে মুক্তি দিয়ে দিবো।
জন : ম্যাম এ…
মেরিন : আর কোনো প্রশ্ন নয় জন…
জন হতাশা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

রাতে মেরিন খেয়ে বাসায় ফিরলো। ফিরে দেখে নীড় রুমে বসে টিভি দেখছে। মেরিন নীড়কে কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে এসে ১টা ব্ল্যাংকেট নিয়ে সোফায় শুয়ে পরলো। নীড় খানিকটা অবাক হলো। তবে রিয়্যাক্ট করলোনা।

টানা ২দিন মেরিন নীড়ের সাথে কোনো কথাই বললনা। এমন কি নীড়ের দিকে তাকায়ও নি। প্রথম ২দিন রেগে থাকলেও এখন নীড়ের আফসোস হচ্ছে। বেশ অনুতপ্ত ও। অনেক বেশি বাজে আচরন করে ফেলেছিলো। সেটার জন্য তো কষ্ট হচ্ছেই। তবে বেশি কষ্ট হচ্ছে মেরিনের এমন অবহেলায়।

.

পরদিন…
পরদিন নীড় গিয়ে জানতে পারলো যে কনিকা সেখানে নেই। ওকে অন্য কোথাও শিফ্ট করা হয়েছে। সেখানে জনকে পেলো। জন কনট্র্যাক্ট পেপারটা নীড়ের হাতে ফেরত দিয়ে দিলো। সেই সাথে ১কোটি টাকার ১টা চেক।
নীড় : এসব কি জন?
জন : এতোদিন কনিকা ম্যামের চিকিৎসা করার জন্য ধন্যবাদ। তবে এখন আপনি এই দায়িত্ব থেকে মুক্ত। আর এটা আপনার পেমেন্ট। আসছি…
নীড় ওগুলো ছুরে ফেলে দিলো।
নীড় : এসবের মানে কি জন?
জন : এই প্রথম আমি নিজেও জানিনা।
নীড় : আম্মু কি অ্যাসাইলামে?
জন : না।
নীড় : তবে কোথায় ?
জন : সরি স্যার বলতে পারবোনা।
নীড় : তোমার ম্যামকে কোথায় পাবো?
জন : ম্যাম নিজেই জানে …
বলেই জন চলে গেলো। সারাদিন নীড় মেরিনের খোজ করলো। কিন্তু পেলোনা।

.

রাতে…
মেরিন বাসায় ফিরলো। বুঝতে পারলো নীড় বসে আছে। না তাকিয়েই ফ্রেশ হতে যেতে নিলো ।
নীড় : এসবের মানে কি ?
মেরিন যেন শুনতেই পায়নি। ওয়াশরুমে চলে গেলো। বের হতেই নীড় আবার
বলল : এসবের মানে কি?
মেরিন : …
নীড় : কিছু বললাম তো নাকি?
মেরিন নীড়ের দিকে তাকালোও না। নীড় মেরিনের সামনে গিয়ে বাহু ধরে নিজের দিকে ফিরালো।
নীড় : এসবের মানে কি?
মেরিন নীড়ের দিকে না তাকিয়ে নিজেকে ছারাতে ব্যাস্ত।
নীড় : মেরিন… রাগ তুলোনা।
মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিলো। এবার নীড় মেরিনের ২বাহ শক্ত করে ধরলো ।
নীড় : অনেক রাগ দেখিয়েছো এতোদিন। এখন না। একদম না। যা জানতে চেয়েছি তা বলো…
মেরিন সরে যেতে নিলে নীড়ের দৃষ্টি পরলো মেরিনের হাতে
লেখা বনপাখির নীড়ে…
নীড় অবাক হয়ে গেলো। দেখলো অন্যহাতেও বনপাখির নীড় লেখা।
নীড় : বনপাখির নীড়… তোমার হাতে এটা কেন লেখা?
মেরিন কিছু না বলে গিয়ে শুয়ে পরলো।
নীড় পায়চারি করতে লাগলো। ‘বনপাখি’ … বিষয়টা নীড়ের মাথাটা ঘুরিয়ে দিলো। নামটা ওর দুর্বলতা।

নীড় মনে মনে : বনপাখি… বনপাখি… বনপাখি…. মেরিনের হাতে এটা কেন লেখা?ঢ় কে বলতে পারবে? দাদুভাই… হ্যা দাদুভাই । আজকে দাদুভাইকে জবাব দিতেই হবে? না হলে আজকে আমি দাদুভাইয়ের সামনে….

.

চলবে…

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 23
writer : Mohona

.

নীড় : না হলে আজকে আমি দাদুভাইয়ের সামনে নিজেকে শাস্তি দিবো। যা তা করবো নিজের সাথে। তাহলে নিশ্চয়ই দাদুভাই বলবে… আজকে যতোক্ষন দাদুভাই না বলবে ততোক্ষন আমি হাল ছারবোনা।
নীড় বেরিয়ে গেলো। মেরিন বুঝলো যে নীড় বের হলো। মেরিন উঠে বসলো । গত ৩দিন ধরে মেরিন একটুও ঘুমাতে পারেনি। নতুন করে গরা এতোদিনের অভ্যাসটা এতো সহজে ছারা যায়না। স্লিপিং পিল ছারা ঘুমানোর অভ্যাসটা তো নীড়ের জন্যই হয়েছিলো। অন্যরকম প্রশান্তি আছে নীড়ের বুকে মাথা রাখার মধ্যে।
মেরিন : জীবনটা এমন না হলেও পারতো… নীড় এতোদিন আপনি আমার ভালোবাসা দেখেছেন… এখন থেকে আপনি আমার ঘৃ… অবহেলা দেখবেন। ঘৃণা হয়তো আপনাকে করতে পারবোনা। তবে আমি চেষ্টা করবো আপনাকে ঘৃণা করার। ভেবেছিলাম আপনার দেয়া ভালোবাসার উপহার নিয়ে আমি আপনার থেকে চলে যাবো। কিন্তু আপনি সেই অপশনটা রাখেননি। আপনি আমার থেকে মুক্তি পাওয়া ডিজার্ভ করেননা। এখন জুনিয়র নীড় পাওয়া তো আর সম্ভবনা। আপনাকে টাচ করতেও এখন আমার বিবেকে বাধবে। বিবেক… হাহাহা… বিবেক? আমার মধ্যে কি বিবেক নামের বস্তুটা আছে? হয়তো নেই। তবে নীড় আপনাকে স্পর্শ করার ইচ্ছাটাও আমার মরে গিয়েছে। এতোদিন ভালোবেসে বন্দী করে রেখেছিলাম… এখন কি ঘৃণা করে বন্দী করবো। তবে আগে আমার আপনাকে ঘৃণা করা শিখতে হবে।

.

নীড় খান বাড়িতে পৌছালো । সোজা গেলো দাদুভাইয়ের রুমে। দেখে দাদুভাই এখনো ঘুমায়নি । বসে বসে অ্যালবাম দেখছে।

নীড় : দাদুভাই…
দাদুভাই দরজার দিকে তাকালো । দেখলো নীড় দারিয়ে আছে । খানিকটা অবাক হলো।
দাদুভাই : নীড় দাদুভাই তুমি…?
নীড় গুটিগুটি পায়ে দাদুভাইয়ের সামনে এসে। দাদুভাইয়ের পায়ের সামনে বসে পরলো।
দাদুভাই : নীড় দাদুভাই… কি হয়েছে? আমার দিদিভাই ঠিক আছে তো?
নীড় : হামমম।
দাদুভাই : তুমি এতো রাতে এখানে ? কি হয়েছে বলো তো …
নীড় : দাদুভাই … তোমার কাছে যখনই আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি তখনই তুমি বলেছো যেদিন মেরিনকে ভালোবাসবো সেদিন উত্তর দিবে… কিন্তু আজকে তোমাকে আমার ১টা প্রশ্নের জবাব দিতেই হবে। আর যদি না দাও তবে তোমার সামনে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করবো। আর তখন তুমি তোমার দিদিভাইকে জবাব দিও। বলো বলবে…?
দাদুভাই : কি জানতে চাও বলো।
নীড় : মেরিনের ২হাতে বনপাখির নীড় কেন লেখা?
দাদুভাই অবাক হলো। কারন এটা মেরিনের অতীতের তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ন কথানা। আর এই প্রশ্নের জবাব দিবেইবা না কেন?
নীড় : বলোনা দাদুভাই …
দাদুভাই নীড়ের হাত নিলো। এরপর ওর শার্টের হাতা ফোল্ড করলো। নীড়ের হাতে লেখা #ঘৃণার_মেরিন টা বের করলো।

দাদুভাই : তোমার হাতে তুমি ঘৃণার মেরিন কেন লিখেছো?
নীড় অবাক হলো। এটা কেমন প্রশ্ন ?
দাদুভাই : তুমি তোমার হাতে ঘৃণার মেরিন লিখেছো তুমি দিদিভাইকে ঘৃণা করো বলে । তুমি যদি ঘৃণা করে দিদিভাইয়ের নাম নিজের হাতে লিখতে পারো তবে দিদিভাই ভালোবেসে নিজের ২হাতে তোমার নাম লিখতে পারবেনা? তাই দিদিভাই নিজের ২হাতে লিখেছে তোমার নাম।
নীড় : নীড় লিখেছে ভালো কথা। বনপাখির নীড় কেন লিখেছে?
দাদুভাই : তুমি তো বনপাখির নীড়ই। একমাত্র তোমাতেই তো বনপাখি আটকে গিয়েছে। তুমিই সে যাকে দিদিভাই ভালোবেসেছে।
নীড় : বনপাখি মানে? বববনপাখি কে?
দাদুভাই : কেন দিদিভাই…
নীড় : মেরিন?
দাদুভাই : হামমম।
নীড় : ওর নাম তো মেরিন বন্যা। তাহলে বনপাখি কি করে ?
দাদুভাই : হ্যা মেরিন বন্যা ওর নাম। কিন্তু বনপাখি তো কনা মায়ের দেয়া নাম।
নীড় : আম্মুর ?
দাদুভাই : হামমম। মেরিনের দীদা মানে আমার প্রিয়তমা দিদিভাইয়ের নাম রেখেছিলো বন্যা। বন্যার মধ্যে হয়েছিলো তো। কবির রেখেছিলো মেরিন । আসলে ও নিরার নাম রাখতে চেয়েছিলো মেরিন। কিন্তু সেতু রাখলো নিরা। কবির যে নিজের মেয়ের নাম মেরিন রাখতে চায় সেটা কনামা আগে থেকেই জানতো। ২জন বেস্টফ্রেন্ড ছিলো তো। তাই কনামা মেয়ের নাম রাখলো মেরিন বন্যা। মেরিন বন্যা খান । কিন্তু দিদিভাই দুনিয়াতে আসার পর কি থেকে যে কি হয়ে গেলো। কবির রেগে গেলো মেরিন নাম রাখাতে। বারবার পাল্টাতে বলল। আমিও জেদ ধরেছিলাম যে পাল্টাবোনা। কবির কনামাকে অনেক কথা শোনায় । সেইদিন থেকেই কনামা দিদিভাইকে আর কখনো মেরিন বলে ডাকেনি। মেরিনের দীদা বন বলে ডাকতো। আর কনামা ডাকতো বনপাখি। সেই ২মাসের বয়স থেকেই দিদিভাইকে বনপাখি বলে ডাকতো কনামা। আসলে আমার দিদিভাই যেদিন জন্মনিয়েছিলো সেদিন হয়তো ওর ভাগ্যে দেয়ার মতো কোনো সুখ ছিলোনা। হয়েছিলো সাত মাসে। তখনই কোনো রকমে বেচেছে। এই দেখো দিদিভাইয়ের ছোটবেলার ছবি । ওর দীদাবেচে থাকতে। তখন ওর বয়স ছিলো ৫বছর। আমি , রাবেয়া , কনামা আর দিদিভাই… এটাই আমাদের ১মাত্র ফ্যামিলি ফটো
নীড় ১বার তাকালো। মেরিন যখন অতোটুকু ছিলো তখনই ওর সাথে দেখা হয়েছিলো।

দাদুভাই : যেই সময় কতো কিছু বলে ফেললাম। পেয়েছো তোমার জবাব…
নীড় সোজা হয়ে বসে আছে । চোখ ২টা স্থির । ও মিলাতে লাগলো সবটা। মেরিনের গলার লকেট , কনিকার ডাক , মেরিনের প্রিয় কালো রং … সবটা। হয়তো সেই ছোট্ট বনপাখির সাথে বড় বনপাখির কোনো মিল নেই কিন্তু … মেরিনই ওর বনপাখি… আর ৩টা বছর ধরে নিরা ওকে মিথ্যা বলে এসেছে। সেই ভালোবাসা ভোগ করেছে যেই ভালোবাসা ওর না… মেরিনের।

নিরার ওপর রাগ হচ্ছেনা। নীড়ের রাগ হচ্ছে নিজের ওপর। ও কি সত্যিই ওর বনপাখি ভালোবেসেছে ? যদি বেসেই থাকে তবে কি করে নিরার কথা মেনে নিলো… আর মেরিনের সাথে কতো বাজে ব্যাবহার করেছে। ছিঃ …

নীড়কে এভাবে দেখে দাদুভাই বেশ চিন্তায় পরে গেলো। নীড়ের কাধে হাত রেখে হালকা ঝাকি মেরে
বলল : নীড় দাদুভাই …
নীড়ের হুশ ফিরলো।
নীড় : হ্যা …
দাদুভাই : কি হয়েছে ?
নীড় : কিছুনা। নিরা কোথায়?

দাদুভাই ১টা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল।
দাদুভাই : আজও তুমি নিরার খোজই করছো… তোমাকে আর কি বলবো? তোমার ওপর রাগ করতেও রুচিতে বাধছে । ও ওর বেডরুমেই আছে। যাও। ভয় নেই আমি দিদিভাইকে বলবোনা। কারন তোমার মতো বাজে মানুষের জন্য আমি দিদিভাইকে আর উত্তেজিত করবোনা….

.

নীড় উঠে গেলো। নিরার রুমে গেলো। দেখে নিরা বসে বসে কারসাথে যেন মোবাইলে কথা বলছে ।
নিরা : বেবি তু…
নীড় নিরাকে কথা বলতে না দিয়ো ১টা থাপ্পর মারলো। নিরা বুঝতেই পারলোনা হলোটা কি। কিছু বলতে নিলে নীড় আরো ১টা থাপ্পর মারলো।

নীড় নিরার গলায় হায় হাত দিয়ে ১টানে চেইনটা খুলে ফেলল । নিরা যথেষ্ট ব্যাথা পেলো।
নিরা : আহ… মাম্মি … মাম্মি…
নিরা জোরে জোরে সেতুকে ডাকতে লাগলো।
নীড় : ডাক তোর মাকে ডাক… কাকে ডাকবি ডাক … আজকে আমার হাত থেকে তোকে কেউ বাচাতে পারবেনা ….
নিরার শব্দ পেয়ে সেতু আর কবির ছুটে এলো।
নীড় আরো ১টা থাপ্পর মারতে নিলে কবির ওর হাতটা ধরে ফেলল।

কবির : তুমি আমার মেয়েকে থাপ্পর মারছো কেন? হাউ ডেয়ার ইউ?
নীড় : এখন তো কেবল থাপ্পর মেরেছি … আমি ওকে জানে মেরে ফেলবো। একেবারে জানে মেরে ফেলবো।
কবির : নীড়…
নীড় : এই চুপ… আমাকে একদম চোখ রাঙাবেনা । চোখ তুলে নিবো।
হৈচৈ শুনে দাদুভাইও এলো রুমে।
নীড় নিরার চুলের গুছি ধরলো।…
নীড় : তোকে এমনভাবে মারবো যে কেউ আর কোনোদিন এমন ধোকা দিতে পারবেনা…
দাদুভাই : কি হচ্ছেটা কি নীড়…? ছারো ওকে। ছারো।
নীড় : না দাদুভাই… ওকে আমি মেরেই ফেলবো। বলেই আবার নিরাকে আঘাত করতে নিলে কবির-সেতু সাথে আরো কিছু সার্ভেন্টস নীড়কে এসে ধরে ফেলল। ওকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে।
দাদুভাই কিছুই বুঝতে পারছেনা। নিরা নীড়ের হাতে মরতে পারেনা… দাদুভাই মেরিনকে ফোন করলো।

এতোরাতে দাদুভাইয়ের ফোন পেয়ে মেরিন ভয় পেয়ে গেলো।
মেরিন : হ্যালো দাদুভাই.. তুমি ঠিক আছো ?
দাদুভাই : আমি ঠিক আছি। কিন্তু নীড় …
মেরিন : নীড় …?
দাদুভাই সবটা বলল। মেরিনও যথেষ্ট অবাক হলো।
মেরিন : আমি আসছি…

.

নীড়কে ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। ও নিরার দিকে তেরেই যাচ্ছে। উন্মাদের মতো আচরন করছে। আসলে নিরার দেয়া ধোকার থেকে নীড় নিজের ব্যাবহারের জন্য রেগে আছে। বিশষত ৩দিন আগে মেরিনের সাথে যে আচরনটা করেছে তারজন্য। অনেকবেশি অনুতপ্ত নীড়। আর এসবকিছু রাগ হয়ে বের হচ্ছে । বারবার নিজের আচরনের কথা মনে পরছে। আর মনে পরছে আজ পর্যন্ত যতো অপবাদ দিয়েছে সবকয়বার মেরিনের রিয়্যাকশন । সবথেকে বেশি মাথায় আসছে সেদিন সকালেরটা। সেদিন মেরিন স্থির চোখে চেয়ে কেবল ওর দেয়া অপবাদগুলো শুনছিলো। কিচ্ছু বলেনি। সেদিন মেরিনের চোখে চিরচেনা রাগটাও দেখতে পারেনি। খুব কষ্ট হচ্ছে এগুলো ভেবে। আর ওর কষ্ট হলে ও আরো রেগে যায়। ভয়ংকর রাগ ।

সেতু মনে করলো এখন নিরাকে নীড়ের চোখের সামনে থেক সরানোর দরকার । তাই ধরে ধরে নিরা হলরুমে নিয়ে গেলো।

নীড় : ছারতে বলেছি কিন্তু…
কেউ ওকে ছারছেনা ও নিজেকে ছারিয়ে যেতে নিলে দাদুভাই ওর সামনে দারালো ।
নীড় : দাদুভাই সরো… আমার মাথা প্রচন্ড গরম… সরো…
দাদুভাই : আর যদি না সরি? কি এমন হলো যে তুমি তোমার ভালোবাসার জীবন পর্যন্ত নিতে চাইছো? এই কয়েকমিনিটের মধ্যে সব ভালোবাসা শেষ ?
নীড় : দাদুভাই নিরা আমার ভালোবাসা ছিলোনা… আমার ভালোবাসা ছিলো বনপাখি… যা ছিলো আছে আর থাকবে …
দাদুভাই আবারও অবাক হলো। আজকে দাদুভাইয়ের অবাক হওয়ার শেষ নেই…

সেতু : কি হয়েছে মাই বেবি…
নিরা : জানিনা মাম্মি…
সেতু : আমার মনে হয় এখন তোমাকে নিয়ে বাসা থেকে বেরোতে পারলে ভালো হয়।
নিরা : মাম্মি… নীড় বনপাখির কাহিনি জেনে যায়নি তো ?

নীড় : সরো দাদুভাই…
বলেই আসতে করে দাদুভাইকে সরিয়ে বের হয়ে এলো। নীড়কে দেখে তো নিরার জান যায়যায়।

নীড় দেখলো মেরিনের চাবুকটা ঝুলানো। নীড় সেটা হাতে নিয়ে নিরার দিকে এগোতে লাগলো।

সেতু : তুমি আমার মেয়েকে কিছু করবেনা। একদম না।
বাকিরাও বাধা দিতে আসলো। নীড় সবাইকে উপেক্ষা করে সেতুকে ১টানে সরিয়ে নিরাকে চাবুক দিয়ে বারি দিলো। পরপর ৩টা বারি দিলো। ৪বারের বেলায় চাবুকটা নামানোর সময় মনে হলো কেউ চাবুকের মাথাটা ধরে রেখেছে…

নীড় ঘুরলো। দেখে মেরিন দারিয়ে আছে। আর ওই ধরে রেখেছে।

.

মেরিন চাবুকটা ধরে রেখেছে ঠিকই কিন্তু দৃষ্টি অন্য জায়গায় । মেরিন নীড়ের দিকে না তাকালেও ও বেশ বুঝতে পারছে যে নীড় ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মেরিন ১টানে চাবুকটা নিয়ে নিলো।

মেরিন : আমার জিনিসে কেউ হাত দিলে আমার সেটা ভালো লাগেনা। আর আমার পারমিশন ছারা আমার জিনিসে হাত দেয়া যায়না… আর আমি কাউকে পারমিশন দেইও না । আর নিয়মটা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ইনক্লুডিং মিস্টার চৌধুরী …
‘মিস্টার চৌধুরী’ … এই ডাকটা নীড়কে বড্ড পীরা দিলো। মেরিন নিরার দিকে তাকালো ।

মেরিন : অ… আমাদের ননীর পুতুলের ননীর শরীরটার কি অবস্থা করেছে মিস্টার চৌধুরী। সো স্যাড। এসব ঘটলো তাও মিস্টার খানের সামনে ? ভাবা যায়? আর মিস্টার খান এগুলো দেখে এখনো হার্ট অ্যাটাক করে মরে না গিয়ে দিব্যি দারিয়ে আছে… টু মাচ শকিং… জন কল ডক্টর নিরার ট্রিটমেন্ট করতে হবে

নীড় মেরিনকে দেখছে।
মেরিন : এই টিয়া… টিয়া…
টিয়া : জী ম্যাডাম…
মেরিন : কিচেন থেকে হলুদ , মরিচ গুরোর বক্সটা নিয়ে আয় …
টিয়া : জী ম্যাম…

সেতু : এএএই … তুই ওগুলো দিয়ে কি করবি? এই …
মেরিন : এখনই দেখতে পারবেন ।
টিয়া বক্সগুলো আনলো। মেরিন ওগুলো নিলো।
মেরিন : এগুলো দিয়ে হোলি খেলবো…
নিরা : নননা মেরিন… না… না…

মেরিন সবকিছু উপেক্ষা করে নিরার ক্ষত গুলোর মধ্যে ওগুলো দিয়ে দিলো। আর নিরা ছটফট করতে লাগলো। ততোক্ষনে ডক্টর চলে এলো।

মেরিন হাত ধুয়ে এলো। ডক্টর নিরাকে দেখতে লাগলো ।

.

মেরিন : দাদুভাই… ঘুমিয়ে পরো…
দাদুভাই : হামম।
মেরিন : হামমম বললে হবেনা… চলো ঘুমাবে চলো। আসো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি … এসো…
মেরিন দাদুভাইকে রুমে নিয়ে গেলো। শুইয়ে দিলো। এরপর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
দাদুভাই : দিদিভাই … নীড় দাদুভাইয়ের সাথে কি হয়েছে?
মেরিন : কি হবে?
দাদুভাই : জানিনা… তবে কিছু হয়েছে।
মেরিন : …
দাদুভাই : দিদিভাই… জীবনটাকে শেষ সুযোগ দাও । আর কিছু হারাতে পারবেনা… আমি জানি…
মেরিন : ঘুমাও ।

দাদুভাই ঘুমানোর পর মেরিন নেমে এলো। নীড় এখনও ঠায় দারিয়ে আছে।

মেরিন : জন… কালকে দেখা হচ্ছে। মিস্টার চৌধুরীকে বলে দাও বাড়ি ফিরতে।

বলেই মেরিন গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here