ঘৃণার মেরিন সিজন ৪(পর্ব ৩)

0
531

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 3
writer : Mohona

.

মেরিন : তাই কারো আলাদা করে ভাবনা চিন্তার প্রয়োদন হয়না… ১০ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে নিন।
নীড় : হবোনা।
মেরিন : দেখুন এখানে উপস্থিত আছি । তাই কি ঘটতে পারে তা আল্লাহ ছারা কেউ জানেনা।
নীড় : কি করবে কি তুমি হ্যা ?
মেরিন : আপনার সম্মানিত বাবার সম্মান কিছুটা হানী হবে। পুলিশ আসবে। কারন আপনি কন্ট্র্যাক্টের নিয়ম ঠিক মতো ফলো করেননি…
নীড় : যা মন চায় করো। আই ডোন্ট কেয়ার। আমি এখন ঘুমাবো। গুড বাই…
নীলিমা : বাট আই কেয়ার … চৌধুরী বাড়িতে কখনো পুলিশ প্রবেশ করেনি নীড়।
নীলিমার কথা শুনে মেরিন নীলিমার দিকে তাকালো। পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো। এরপর বাকা হাসি দিলো।
নীড় : তো? আমি কি এই মেয়েটার হাতের পুতুল হয়ে যাবো নাকি?
নীলিমা : দেখো ভুলে যেওনা যে তুমি ডক্টর। আর তাছারাও কালকে তোমার সাথে এ নিয়ে কথা হলো বলো…
নীড় : সো হুয়াট?
মেরিন : আমার আম্মুকে যদি সুস্থ না করেন আমি আপনার মামনিকে অসুস্থ করে দিবো…
নীলিমা : 😱।
নীড় : কি বললা তুমি? শুনেছো মামনি মেয়েটা কি বলছে? কি খারাপ …
মেরিন : দেখেন আমি হাওয়ায় গুলি চালাইনা। যেটা বলি সেটা করেই ছারি। এখন আপনি ঘুমাবেন নাকি তাকিয়ে থাকবেন সেটা আপনার ব্যাপার। আমি নিচে অপেক্ষা করছি…
মেরিন রুম থেকে বের হলো।
নীলিমা : বাবারে… যে মেয়ে তোর মতো ১টা ছেলেকে বাসা থেকে তুলে নিতে পারে সে মেয়ে সবই পারে। রেডি হয়ে নিচে আয়…
বলেই নীলিমাও বেরিয়ে গেলো।

.

মেরিন নিচে নামছে আর তখন নিহাল ভেতরে ঢুকলো।
নিহাল : নীলা … এই নীলা… আমি ব্লু ফাইলটা নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। দাও তো একটুখানি। ওটা নিয়ে ফ্যা…. মেরিন বন্যা খান?!!!
মেরিন : হ্যালো মিস্টার চৌধুরী।
নিহাল : তুমি এখানে?
মেরিন : হামমম।
নিহাল : কেন?
মেরিন : আপনার ছেলেকে হাইজ্যাক করতে।
নিহাল : দেখো বিজনেস ওয়ার্ল্ডে নিহাল চৌধুরী তোমার আর তোমার কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল। বাট। বাবা নিহাল চৌধুরী তোমার ওপর কিন্তু কোনোক্রমেই নির্ভরশীল নয়… তাই যদি আমার ছেলের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করো। তাহলে…
মেরিন নিহালের সামনে এগিয়ে গেলো।
মেরিন : তাহলে?
নিহাল : আমি তোমাকে ছেরে দিবোনা…
কথাটা শুনে মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো … এ যেন এক অদ্ভুদ হাসি। নীলিমা নিচে এলো। মেরিন গিয়ে বড় ১টা রাজকীয় চেয়ারে বসলো। আসলে ওটা নীড়ের চেয়ার।
নিহাল : এই মেয়ে ওঠো ওই চেয়ার থেকে… নাহলে…
মেরিন : নাহলে….? তাহলে নাহলে আপনি কাকে বলছেন? মেরিন বন্যা খানকে ? দেখুন আজও আমার ক্ষোভটা আপনার ওপর গিয়ে পরেনি। কারন আপনি ১জন ভালো বিজনেসম্যান। তাই এমন কিছু বলবেন না বা করবেন না যারজন্য আমি আপনাকে বরবাদ করতে বাধ্য হই। পুলিশও আপনার কথা শুনবেনা। পুলিশ মন্ত্রীও আপনার কথা শুনবেনা। এন্ড এন্ড এন্ড … শহরের যে বড় মাফিয়া বা গুন্ডা সেও আপনার কথা শুনবেনা। তার আমার কথাই শুনবে। কারন মানি ইজ মানি। অযথা শত্রুতা করতে আসবেননা। শত্রু শত্রু খেলা আমার ১টা অন্যতম প্রিয় খেলা। দীর্ঘ ৭বছর ধরে খেলে আসছি। চ্যাম্পিয়ন আমি এটাতে … বন্যার সাথে লরতে এলে বন্যায় তলিয়ে যাবেন। টোপাপানার মতো ভাসবেন… আই মিন ইট…
তখন নীড় নেমে এলো। এসে নিজের চেয়ারে মেরিনকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। কারন এই চেয়ারে কেউ বসেনা। নীড় পছন্দ করেনা। নীরাও সাহস পায়নি বসতে।
নীড় : তুমি আমার চেয়ারে বসেছো কেন ?
মেরিন : চেয়ারটা সুন্দর। রাজকীয় রাজকীয় ভাব আছে। ভালো লেগেছে আমার …তাই বসলাম…
নীড়ের রাগ আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে গেছে। মেরিন দারালো।
মেরিন : চলুন যাওয়া যাক।
নীড় : গিভ মি টু মিনিটস …
বলেই নীড় কিচেনে গিয়ে কেরোসিন আর দিয়াশলাই নিয়ে এলো। এরপর চেয়ারটা জ্বালিয়ে দিলো।
নীড় : তুমি জানোনা আমি তোমার থেকেও ডেন্জারাস।
মেরিন বাকা হাসি হেসে হাতে তালি দিলো।
মেরিন : হুয়াট অ্যান অ্যাটিটিউড। ইমপ্রেসিভ … আপনার মতো কাউকেই খুজছিলাম। ইট উইল বি গ্রেট ফান মিস্টার চৌধুরী। লেটস গো…

.

ওরা মেন্টাল অ্যাসাইলামে পৌছালো । নিজ নিজ গাড়িতে।
নীড় : কোথায় তোমার আম্মু …?
মেরিন : আগে আম্মুর মেডিকেল হিস্ট্রি তো দেখুন।
নীড় : নট নিডেড। আমি তোমার আম্মুর প্রেজেন্ট এন্ড ফিউচার দেখবো। তোমার আম্মু কোথায়…?
মেরিন : আসুন আমার সাথে।
ওরা ভেতরে ঢুকলো।
মেরিন : ওই যে আমার আম্মু … পুতুল হাতে।
নীড় কনিকার পেছনটা দেখলো।
নীড় : হাম চলো।
মেরিন : আপনি যান আমি যাবোনা।
নীড় : হুয়াই…?
মেরিন : আমার আমাকে দেখলে পালিয়ে যায়।
নীড় : গ্রেট ডটার ইউ আর। তোমার মাও তোমাকে দেখলে ভয় পায়।
মেরিন : আম্মু ‘আমাকে’ দেখলে ভয় পায়না।
নীড় : তো? 😒
মেরিন : মেরিন বন্যা খান কাউকে জবাব দেয়না।
নীড় : জবাব থাকলে তো দিবে…
মেরিন : …
নীড় কনিকার দিকে এগিয়ে গেলো। কনিকা ওর দিকে ঘুরলো। আর কনিকাকে দেখে নীড় অবাক হয়ে গেলো।
নীড় : বনপাখির ছোটআম্মু …
নীড়ের মুখে হাসি ফুটলো। ও ওর মোবাইল খুজতে লাগলো। দেখলো কোনো পকেটেই নেই। তখন মনে পরলো যে গাড়িতে। ছুটে গাড়ির কাছে যেতে নিলো।
মেরিন : একি আপনি চলে যাচ্ছেন কেন?
নীড় : আসছি দারাও …

নীড় নিরাকে ফোন করলো।
নিরা : হ্যালো বাবু…
নীড় : হ্যালো বনপাখি… শোনো আমি তোমার ছোটআম্মুকে দেখেছি…
নিরা : আমার আবার ছোটআম্মু ক… ওহ ছোটআম্মুকে দেখেছো? সত্যি বলছো?
নীড় : হ্যা সত্যি বলছি।
নিরা : কোথায় দেখেছো?
নীড় : মেন্টাল অ্যাসাইলামে…
নিরা : মেন্টাল অ্যাসাইলামে? ছোটআম্মু ওখানে কি করছে?
নীড় : মানসিকভাবে অসুস্থ।
নিরা : কি ?কি বললে তুমি? এটা তুমি কি বলছো?
নীড় : হ্যা সত্যি বলছি।
নিরা : না এটা হতে পারেনা। আমার ছোটআম্মু… আমি দেখি ইতালির কাজ কিভাবে তারাতারি শেষ করা যায়… শেষ করেই আমি ফিরবো ছোটআম্মুর কাছে।
বলেই নিরা ঝটপট ফোন কেটে দিলো।

নিরা : উফফ ওই কনিকার চেহারা ছেলেটা আজও ভোলেনি কেন?

টনি : কার ফোন ছিলো বেবি…
নিরা : নীড়ের বেবি…
টনি : তো কি বলল তোমার নীড় জানু…
নিরা : কনিকার কথা বলল। আর কোন কুক্ষনে যে ওর সামনে ভালো সাজতে গিয়ে কনিকাকে ছোটআম্মু ডাকার কথাটা বলেছিলাম। ড্যাম ইট।
টনি : কিছুই বুঝলাম না।
নিরা : সে এক লম্বা কাহিনি। আগে মাম্মির সাথে কথা বলা প্রয়োজন….

.

মেরিন : আপনি ওভাবে বেরিয়ে গেলেন কেন?
নীড় : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন জবাব দিতে বাধ্য নয়…
বলে়ই নীড় কনিকার কাছে।

নীড় : হ্যালো ভালো আন্টি …
ডাকটা শুনে কনিকা নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : ভালো আছো ভালো আন্টি ..
ভালো আন্টি ডাকটা কনিকার স্মৃতির পাতায় করা নারালো। কিন্তু কিছুই মনে করতে পারলোনা। ছুটে পালিয়ে যেতে নিলে নীড় হাত ধরে ফেলল।
নীড় : সেকি কোথায় যাচ্ছো?
কনিকা : আমি যাবো… তততুমি আমার মেয়ের ক্ষতি করবে।
নীড় : আল্লাহ বলে কি।। আমি তোমার মেয়ের ক্ষতি করবো? আমি তোমার মেয়ের ক্ষতি করতে পারি? আমি তো তোমার মেয়েকে আদর করবো। খুব খুব আদর করবো। হামম।
মনে মনে : ওহ গড। কি বলে ফেললাম? ভালো আন্টির মেয়ে তো পচা মেরিন …
কনিকা : তুমি সত্যি আদর করবে?
নীড় : হ্যা হ্যা সত্যিই আদর করবো। খুব আদর করবো…😅…
কনিকা ছুটে পালিয়ে গেলো।
নীড় : ওয়েল ট্রাই নীড়…
বলেই নীড় পিছে ঘুরলো। আর দেখে ওর ঠিক পিছেই মেরিন দারিয়ে আছে। কিছুটা চমকে গেলো ।
নীড় : তুমি এখানে কি করছো?
মেরিন : আমি সবখানেই থাকতে পারি।
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার …
মেরিন নীড়ের ঘাড়ে হাত রাখলো।
মেরিন : আপনি আম্মুকে কি বলছিলেন আমার কথা?
নীড় : কি বল….
মেরিন : কি হলো? চুপ হয়ে গেলেন কেন ?
নীড় : স্টুপিড কোথাকার…
বলেই নীড় মেরিনের হাত ছারিয়ে নিয়ে চলে গেলো।
মেরিন : পৃথিবীতে ২টা জিনিস কখনো ফেরত নেয়া যায়না। ১টা বন্দুকের গুলি আর অন্যটা মুখের কথা । তাই আপনিও ফেরত নিতে পারবেননা মাই জান …

.

নীড় আবার কনিকার কাছে গেলো। তবে কনিকা আর নীড়ের সাথে কথা বললনা। নীড় অন্য ডক্টরদের সাথে কথা বলছে। আর মেরিন নীড়কে দেখছে। তখন এই অ্যাসাইলামের মেইন ডক্টর রাজীব ওখানে এলো। সে মেরিনকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।

রাজীব : ওহ নো এই ভয়ংকরী আবার এসে হাজির …
রাজীবের নজর গেলো নীড়ের দিকে।
রাজীব : ডক্টর আহমেদ চৌধুরী?? 😱। এই মুসিব্বত এখানে কি করছে? মেরিন ওকে আনেনি তো… কি করি কি করি… তপুকে ফোন করি… হ্যালো তপু…
তপু : হ্যা চাচ্চু…
রাজীব : এখনি এখানে চলে আয় …
তপু : কিন্তু কেন?
রাজীব : মনে কর এখানে আমেরিকা আর রাশিয়া ২দেশের প্রেসিডেন্ট হাজির। যেকোনো মুহুর্তে হয়তো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে। আর ভু্ক্তভোগী হবে বাংলাদ… মানে আমি…
তপু : কি পাগলের মতো কথা বলছো চাচ্চু….
রাজীব সবটা বলল।
তপু : ডক্টর নীড়… সেই সাইকো ডক্টরটা না?
রাজীব : হ্যা হ্যা ওই সাইকো..
তপু : যতো বড়ই সাইকো হোক। মেরিনের সাইকোগিরির সামনে নীড়ের সাইকোগিরি কিছুইনা।
রাজীব : তুই আয়…
তপু : চাচ্চু আমি যদি এখনো রওনা দেই তবুও ২-৩ঘন্টা লাগবে । যদি জ্যাম না থাকে। কালকে আসবো।
রাজীব : ততোক্ষনে আমি নীড় বা মেরিন কারো হাতে খুন হয়ে গেলে…
তপু : চাচ্চু ১কাজ করো। তুমি কেটে পরো।
রাজীব : গুড আইডিয়া। রাখি… তপু কারেক্ট আইডিয়াটাই দিয়েছে। কেটে পরি।
তখনই ১জন এসে হাজির হলো।
¤: স্যার স্যার …
রাজীব : কি?
¤: ডক্টর নীড় আপনাকে ডাকছে।
রাজীব : শেষ রক্ষা হলোনা।
¤: মানে?
রাজীব : কিছুনা। শোনো তুমি গ…
নীড় : হাই ডক্টর শিকদার …
রাজীব : হ্যালো ডক্টর নীড়…
মনে মনে : বিপদ…
নীড় : আমার নামটা মেরিন বন্যা খান কিভাবে জানলো? আই মিন আমি যে ১জন সাইকিয়াট্রিস্ট সেটা ও কিভাবে জানলো?
রাজীব : আমি কিভাবে জানবো? 😅।
নীড় : আপনি আমার সিনিয়র … তাই যদি আপনি নিজে থেকে আমাকে বিষয়টা বলেন তো শাস্তি পাবেননা। বাট যদি আমি জানতে পারি তাহলে…
রাজীব : আমি জানিনা মিস খান কিভাবে জানলো? এক্সকিউজ মি।।।
বলেই রাজীব কেটে পরলো।
নীড় খেয়াল করে দেখলো মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এই দৃষ্টির মানে ও বোঝে…

.

রাত ১২টা …
নীড় বাসায় ফিরলো। ১ম দিন ছিলো তাই এতো দেরি হলো ফিরতে। নীড় ভেতরে ঢুকলো। তখন পেছন থেকে মেরিনের ডাক শুনলো।
মেরিন : নীড় …
নীড় পেছন ফিরলো।
নীড় : একি তুমি আবারও?
মেরিন নীড়ের সামনে এসে দারালো।
মেরিন : হ্যা আমি। অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। যদি কোনো বিপদ আপদ হতো…. তখন কি হতো? তাই আপনার ছায়া হয়ে এসেছি…
কথাটা শুনে নীড় তো জাস্ট শকড। ১টা মেয়ে ওকে প্রোটেকশন দিয়েছে সারা রাস্তা।
নীড় এই ঘটনা থেকে বের হওয়ার আগেই মেরিন নীড়ের ঠোটে কিস করে বসলো।
মেরিন : আপনার চেয়ারে বসেছিলাম বলে চেয়ারটাকে জ্বালিয়েছিলেন… এখন নিজেকে জ্বালানোর চেষ্টা ভুলেও করবেন না। গুড নাইট।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীড় : এই মেয়েটা কি?

.

পরদিন …
সকাল ৯টা…
নীড় অ্যাসাইলামে পৌছে গিয়েছে।
নীড় : উফফ। ভাগ্যিস পৌছে গিয়েছি। ওই মেয়েটা নিশ্চয়ই ১১টা ১২টার দিকে আমাদের বাসায় যাবে। দেখবে আমি নেই। তারপর এখানের জন্য রওনা দেবে। আসতে আসতে ২-৩ ঘন্টা । আর ৫টার দিকে কল টাইম শেষ। ব্যাক করার সময় হবে। যারমানে মানে ওই অতৃপ্ত আত্মাকে বেশিক্ষন ফেইস করতে হবেনা।
মেরিন : ইউ আর মিসটেকেন …
নীড় সামনে তাকিয়ে দেখে মেরিন দারিয়ে আছে। ডাবের পানি খাচ্ছে ।
নীড় : এই মেয়ে তো আসলেই অতৃপ্ত আত্মা…
মেরিন : ইয়েস অফকোর্স ।
নীড় : তুমি কি ব্ল্যাক ম্যাজিক জানো?
মেরিন : প্রয়োজনই নেই জানার। কারন আই ক্যান রিড আদারস মাইন্ড … এন্ড হার্ট অলসো। এ্যাজ ইউ সি ….

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here