গোধূলিলগ্ন ৪৪

0
216

উপন্যাসঃ”গোধূলিলগ্ন”
শান্তনা আক্তার
পর্বঃ৪৪

কাব্যর নীমিলিত চোখ, গভীর একাগ্রতা সাজিদকে বেশ ভাবিয়ে তুলছে। পরদিন আজিমপুর গোরস্থান হতে রাত্রির দাফনকাজ শেষ করে ফিরছিল কাব্য ও সাজিদ। পুরো একটা দিন রাত্রির লাশ তদন্তে ছিল বিধায় গোটা একদিন পর দাফনের নির্দেশ আসে।
কাব্য একটা ঝিলের পাশে গাড়ি থামায়। দূরদূরান্ত অন্ধকারে মোড়ানো। আশেপাশে যতগুলো লাইট রয়েছে, তা চলাচলে ব্যাপক সহায়ক। চারিপাশের পিনপতন নীরবতা কাটিয়ে সাজিদ বলল,
‘রাত্রি খুব ভালো একটা মেয়ে ছিল। কে বা কারা রাত্রির মতো ভালো মনের মেয়েকে আমাদের থেকে ছিনিয়ে নিল, তা জানা নেই। তবে কষ্ট হচ্ছে খুব। ভাবতে পারছি না এখন থেকে রাত্রি নামের কাউকে আর দেখতে পাব না।’
কাব্যর চোখ বাঁধ মানতে চাচ্ছে না। অশ্রুসজল চোখে কাব্য বলল, ‘রাত্রির বাবা-মার জন্য খারাপ লাগছে খুব। যুবতী মেয়েকে হারানো বিশাল কষ্টের। এটা আমি বা তুমি উপলব্ধি করতে পারবো না।’
‘কি বা করার আমাদের বলুন? যার মৃত্যু ঘনিয়ে আসবে, তাকে বিদায় জানাতেই হবে। কারা রাত্রিকে খুন করতে পারে- আপনার কি মনে হয় স্যার?’
কাব্য কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল, ‘জানি না আমি। তবে আমার জন্যই রাত্রি আজ আমাদের মধ্যে নেই, এ ব্যাপারে আমি শতাধিক নিশ্চিত।’
‘একদম ঠিক বলেছেন স্যার। আপনার জন্যই মেয়েটা প্রাণে মরেছে। আপনার ডানপিটে স্বভাবটা কোন দিন না আপনার বাবা-মার জন্য কাল হয়ে আসে!’ আনমনে বলে থমকে গেল সাজিদ। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হতে থাকল তার। নড়েবড়ে চোখ কাব্যর দিকে ঘুরিয়ে নিতিবিতি করে সে বলল, ‘মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসল।’
কাব্যর চাহনি স্বাভাবিক। ভেতর থেকে একটা তপ্ত নিশ্বাস বেরিয়ে আসল তার। সাজিদের কাঁধে হাত রেখে সে বলল, ‘সত্যি কথাই বলেছো। আসলেই আমার বাবা-মার যদি কোন ক্ষতি হয়, তবে সেটা আমার জন্যই। তা যেন না হয়, সেই ব্যবস্থাই করেছি আজ।’
সাজিদের উৎকন্ঠা, ‘কি তা?’
‘অজানাই থাক।’ কাব্যর নির্বিকার উত্তরের পিঠে সাজিদ মৌনতা ধরে হাসল। তবে সেটা কাব্যর চোখ ফাঁকি দিয়ে।
‘শুনেছি মিতু পালিয়েছে। আপনি কি জানেন তার সম্পর্কে?’
কাব্যর মস্তিষ্ক অকস্মাৎ নাড়া দিয়ে উঠল সাজিদের প্রশ্নে। তার মুখচোখে স্পষ্ট অস্থিরতা দেখতে পেল সাজিদ।
‘এত চিন্তা করলে আপনার শরীর খারাপ করবে স্যার। এত দুঃশ্চিন্তা নিতে হবে না আপনাকে, চলুন ফিরি আমরা।’
কাব্য রা না করে বাধ্যের ন্যায় মাথা নেড়ে সম্মতি দিল।
______
নাবিলা বাড়িতে ঢুকে ‘মিতু’ বলে চেঁচাতে থাকল। ডাক শুনে মিতু হন্নে ছুটে এসে তুমুল আগ্রহে শুধাল, ‘কি হয়েছে, আপনি ডাকছেন কেন ম্যাম?’
তাগাদার সুরে নাবিলা বলল ‘তুমি আগে এই ভিডিও টা দেখো জলদি।’
নাবিলা দ্রুত তার ফোন মিতুর হাতে গুজে দিল। ফোনের পর্দায় সেতুর হাতজোড় করা ক্রন্দনরত মুখটি মুহুর্তেই মিতুর মুখের রঙ পাল্টে দেয়। পর্দায় দৃষ্টি ধরে রেখে বিস্ময়াহত মিতু বলল, ‘এইডা তো আমার বুবু! তয় আমার বুবু ওই চেয়ারম্যানের পোলার ধারে কি করে?’
‘কি বললে? ইনি তোমার বুবু? আমি তো ভেবেছি তোমাকে ধরার জন্য বাদশা এই মেয়েকে তোমার বোন সাজিয়ে এনেছে হয়তো। তার মানে বাদশা তোমার নিখোঁজের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার জন্য এসব করছে। অতিরিক্ত সেয়ানা এই বাদশা।’ বলল নাবিলা।
মিতুর সম্পূর্ণ মনোযোগ সেতুর দিকে। সেতুকে ঘিরে একের পর এক প্রশ্ন করে চলেছে মিডিয়ার লোকজন। সেতু তাদের প্রশ্ন উপেক্ষা করে বারবার বলছে, ‘আপনাগো ধারে একটাই আবেদন, আমার বোইনরে আর তার মাইয়ারে আপনারা খুঁইজ্যা বাইর করেন যেইহানতে পারেন। আমরা সাধারণ মানুষ, আমগো নিয়া এত তামাশা কইরেন না।’
সেতুর সামনে অগণিত মাইক। ডানে বাদশা, বামে নাহিদ আর পেছনে লুৎফর দাঁড়িয়ে। তাদের প্রত্যেকের মুখে গাম্ভীর্য। সহসাই মিতু ধপাস করে মেঝেতে পা ছড়িয়ে বসে পড়ল। অস্থিরতা নিয়ে সে বলল,
‘আমার বুবু ওইহানে কি করতাছে? আমার বুবুরে এহন আমি কেমনে ছাড়ামু ওই জানোয়ারের হাত থেইক্যা?’
নাবিলা বলল, ‘বাদশা জানোয়ারের থেকেও অধম। এইবারও তোমাকে হাত করার জন্য তোমার কাছের মানুষকে শিকার বানিয়েছে। দুষ্টু লোকেরা শুধু পারে অন্যের দুর্বলতার সুযোগ নিতে। এদের শিক্ষা দিতেই হবে। কিন্তু কে করবে আমাদের সাহায্য? কিভাবে পেরে উঠবো বাদশার মতো বিত্তবান নরপশুর সাথে?’
‘কাব্য ভাই! আপনি কাব্য ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। পারলে কাব্য ভাই-ই পারবে।’
‘কোন কাব্য?’ নাবিলার কৌতূহল ভরা চোখ।
‘সাংবাদিক কাব্য।’
______
‘মিঞা ভাইকে খুন করলেন, মিতুর মেয়েকে অপহরন করলেন, আপনার কথা মতো আমার বউকে ঢাকা নিয়ে আসলাম- এতকিছুর পরও আপনার মাথায় হাত ভাইসাব! আসল কথা আপনি মানুষটাই ভেজালের, তাই আপনার সাথে সবসময় ভেজালই হয়। আর ভেজাল লোকদের কাজ কখনোই সোজাভাবে হয়না।’
নাহিদের কথা মাটিতে পড়ার আগেই বাদশা নাহিদের পাঞ্জাবির গলা টেনে তাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরল।
‘তুই কেমন আগে সেটা ভাব। নিজের ভাইকে খুন হতে দেখেও যার একটুও মায়া হয়না, সে অন্যকে কথা শোনায় কোন মুখে?’
নাহিদ হো হো করে হেসে উঠল। লুৎফর বলল,
‘ইনি মনে হয় পাগল। ছাড়ুন এনাকে। আমরা অন্য কোন উপায় খাটাই চলুন। আর যদি সেতুর খোঁজ মিতু অবধি পৌঁছায়, তাহলে তো ভালোই হয়। বোনের জন্য হলেও সে আবারও আমাদের কাছে ধরা দেবে।’
বাদশা নাহিদকে ছেড়ে দিল। যাবার পথে বলে গেল, ‘যতক্ষণ না মিতুর খবর পাই, ততক্ষণ বউকে নিয়ে এখানেই থাকবি। পালানোর চেষ্টা করলে ভাইয়ের মতো তোকেও দুনিয়া ছাড়া করবো মনে রাখিস কথাটা!’
নাহিদ বিছানায় গা এলিয়ে আয়েসি ভঙ্গিতে বলল, ‘না, না। ফ্রিতে কদিন ড্রামা দেখতে পারবো, এই সুযোগ হাতছাড়া করার মানুষ আমি না। আপনি যা ইচ্ছে করেন আমার শালী, বউয়ের সাথে, আমার কোন অবজেকশন নেই তাতে। দুইটাই তেজে ভরা বাঘিনী। ভেঙে গেলেও মচকায় না, হাজার মার খেয়েও মরে না। কৈ মাছের প্রাণ ওদের, কৈ মাছের প্রাণ।’

বাদশা ও লুৎফর চলে গেলে বাথরুম থেকে বের হয় সেতু। দ্রুত পায়ে সেতু নাহিদের দিকে তেড়ে গিয়ে বলল, ‘তার মানে এই ব্যাডায় মিঞা ভাইরে খুন করছে, মায়া-মিতুরেও এই ব্যাডায় শহরে নিয়া আইছে। আর আপনি সব জাইন্যা হুইন্যাও অভিনয় কইরা গেছেন না জানার!’
নাহিদ সেতুর কথায় কান না দিয়ে পাশের বেডসাইড ড্রয়ার থেকে ফলের ঝুড়িটা বুকের উপর নিয়ে এলো। সেতু সীমাহীন ক্রোধে এবার চেঁচিয়ে উঠল,
‘আপনি আর কত নিচে নামবেন? এমন কোন জঘন্য পাপ নাই যে আপনি করেন নাই। আপনার ভাইয়ের পরিণতি দেইখ্যা তো একটু ভয় পাওন উচিত। পাপের সের কিন্তু পূরণ হইয়া গেছে আপনার! মৃত্যু রে ভয় পান কইতাছি। আপনি একাধারে খুনী, লম্পট, চরিত্রহীন লোক। রাস্তার কুত্তাও ভালো আপনার থেইক্যা। আপনার লাগান হাঁটাচলা করা মানুষ নামের শয়তান আমি দুইডা দেহি নাই। আপনার ভাই ও কম না মানলাম, কিন্তু হেয় তো আপনার নিজের ভাই। নিজের ভাইরে যে খুন করছে, তার কথামতো কাজ করতে লজ্জা করে না আপনার? কেমন ভাই আপনি?’
নাহিদের ভাবলেশহীন জবাব, ‘না লজ্জা করে না। আমি হচ্ছি দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ। তাই নিজের ভাইকে চোখের সামনে মরতে দেখেও, একটুও মায়া হয়নি৷ মায়া দেখিয়ে আমি নিজে মরতাম নাকি!’
সেতুর সর্বাঙ্গে একরাশ ঘৃণার স্রোত বয়ে গেল। ক্ষুব্ধ চোখে সে বলল, ‘ক্যান মারল হেয় মিঞা ভাইরে? তারে মাইরা লাভডা কি হইল?’
‘লাভের কিছু না। মিতুকে দিয়ে তার লাভ। কিন্তু মিঞা ভাইয়ের, মিতু আর ওই সাংবাদিকটার উপর রাগ থাকায় সে বাদশার বিরুদ্ধে গিয়ে মিতুকে খুন করতে চেয়েছিল। বলেছিল মিতুকে সে আর বাদশার সঙ্গে শহরে যেতে দেবে না। তবে প্রথমে সে মিতুকে বাদশার সঙ্গে পাঠাতে চেয়েছিল। এর বিনিময়ে মোটা টাকাও হাতিয়েছে বাদশার থেকে। আরও পেতো। কিন্তু ওই সাংবাদিককে বাঁচাতে গিয়ে মিতু ভাইয়ের হাতে আঘাত করেছিল বলে ভাই তার মত বদলে ফেলে। তখন মিতুকে মেরে ফেলার ভূত চাপে ভাইয়ের মাথায়। এ নিয়ে বাদশার সাথে শালিসির রাতে অনেকক্ষণ ঝগড়া হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ভাইকে আমিও বুঝিয়েছিলাম। কিন্তু তার তো মরার চুলকানি উঠে সেই মুহুর্তে। একটা সময় বাদশা না পেরে ভাইকে খুন করতে বাধ্য হয়। তখন যদি আমি বাঁধা দিতাম, তাহলে ওই সময়ে মিঞা ভাইয়ের সাথে আমিও মরতাম। এনাদের মতো মানুষের সাথে আমি কি পেরে উঠতাম নাকি? পারবো না বলেই তো বাদশার কথা মতো মায়াকে তার হাতে তুলে দেই।’
সেতুর তখন যেকোন ভাবে নাহিদের মুখ বন্ধ করে দিতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু তাকে মিতু ও মায়া অবধি পৌঁছাতে হবে। এরূপ চিন্তা মাথায় রেখে সে নিজেকে ধাতস্থ করে নেয়।
‘এহন হেইসব কথা বাদ। মিতু, মায়া কই কন। কই লুকাইছে তারে বাদশায়? খবরদার, একটাও মিছা কথা কইবেন না! কইলেও আর কাম হইব না।’
নাহিদ সেতুর কথা অগ্রাহ্য করে একের পর এক কামড় বসাচ্ছে নাসপাতি ফলে। সেতু নাহিদের হাত থেকে নাসপাতি কেড়ে আনলে নাহিদ বলল,
‘আরে গর্দভ, মিতু যদি বাদশার কাছেই থাকতো, তাহলে কি সে মিতুকে খোঁজার জন্য কুত্তা পাগল হতো? তার সব কথাই তো বুঝলি, তাহলে তার কথার ঢং শুনে বুঝিসনি সে মিতুকে খুঁজে বের করার জন্য কতটা পাগল?’
সেতু সময় নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবল। তার চিন্তাপূর্ণ মুখে এবার বিরক্তির আনাগোনা দেখা দেয়। নাহিদ বলল, ‘তবে একটা সুসংবাদ আছে।’
নাহিদের এহেন কথায় সেতুর ধ্যানমগ্নে ছেদ পড়ে। বিস্ময়পূর্ণ চোখে সে শুধায়, ‘কিসের সুসংবাদ?’
‘তোর সাংবাদিক আপা মরেছে নিজ বাসায়। কারা যেন তাকে খুন করে পালিয়েছে। আহা দারুণ সুসংবাদ!’
সেতুর জন্য কয়েক মুহুর্ত থমকাল দুনিয়া। চোখ ভারী হয়ে আসলে সম্বিৎ ফেরে তার। ভেজা চোখে সে শুধায়, ‘কি কইলেন?’
‘বয়ড়া নাকি তুই? তোর সাংবাদিক রাত্রি আপা খুন হয়েছে। আরেকবার বলা লাগবে?’
সেতুর ভেতর থেকে ক্ষোভের দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। চোখ কার্ণিশে জমা হয় নোনা জল। অঢেল দুঃখ, হা-হুতাশ করে সেতু বলল,
‘দুনিয়ায় খারাপ মানুষগো ছড়াছড়ি। এই দুনিয়ায় যে যত খারাপ, হেয় তত শক্তিশালী। আর যে যত ভালো, হেয় তত দুর্বল।’
______
রেখা বানু এখনও নিজেকে ধাতস্থ করতে পারছেন না। শেষবার রাত্রিকে যেভাবে দেখেছিলেন, সেই মুখটা তাকে কোন ভাবেই শান্তি দিচ্ছে না দু’দন্ডের জন্য। ঘুমের মধ্যেও তিনি রাত্রির হাস্যজ্বল মুখটা দেখে কাতর হয়ে যান৷ রাত্রির লাশ দেখতে যাননি তিনি। খুব আঘাত পাওয়ায় দেখার সাহস জুগিয়ে উঠতে পারেননি। হঠাৎ রেখা উচ্চস্বরে কেঁদে উঠলে কাঁচা ঘুম ভেঙে যায় তৌসিফ সাহেবের। কাব্যও ছুটে আসল মায়ের কান্নার আঁচ পেয়ে। দরজা খোলা থাকায় হুড়মুড়িয়ে ভেতরে চলে আসল। রেখার কপালে হাত ছুঁইয়ে আতংকিত গলায় সে শুধাল,
‘কি হয়েছে আম্মু? তুমি এভাবে কাঁদছো কেন? আব্বু, আব্বু কি হয়েছে আম্মুর?’
রেখা কেঁদেই চলেছেন। তৌসিফ বললেন,
‘তোমার মা রাত্রির মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। কিছুক্ষণ পর পর কেঁদে ওঠেন। তুমিতো বাড়িতে থাকো না, তাই দেখো না কেমন অবস্থা হয় তার। মেয়েটাকে খুব বেশি পছন্দ করে তোমার মা। তাছাড়া ভালোকে কার পছন্দ হবে না? তুমি কেন যে ওকে আমাদের দায়িত্ব দিলে? আজ আমরা দায়ী মেয়েটার অকালে মৃত্যুর জন্য।’
কাব্যর ক্ষুব্ধ চোখ আরও ভয়ংকর রূপ নিল। ক্রোধের ভাড়ে দেহ কাঁপছে তার। কাব্য রা না করে দরজার কাছে চলে যায়। পেছন থেকে রেখা বাধ সাধে, ‘কাব্যরে, বাবা আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। মেয়েটার হাতের শেষ রান্না খেয়েছি। সারাজীবনের জন্য না হলেও, একবার অন্তত আমাকে আর তোর বাবাকে খাওয়াতে পেরেছে নিজ হাতে রান্না করে। মেয়েটা তোকে অনেক ভালবেসেছিল রে। তোর জন্য, আমাদের জন্য, শেষে নিজের জীবন ত্যাগ করতেও ভয় পায়নি সে। এটা ভাবলে আমার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে। আমি রাত্রিকে ফেরত চাই। নইলে আমি শান্ত হবো না বাবা। মেয়েটার মুখ ছাড়া যে কিছুই দেখিনা আমি।’
কাব্য ক্ষণকাল রেখার হাহাকারের কান্নায় নিজেকেও দাখিল করল। তার মুষ্টিবদ্ধ হাত উন্মুক্ত হয়ে এলে সেখান থেকে চলে আসার জন্য উদ্যত হয়। আসার পথে বলে,
‘রাত্রিকে তো আমার ফিরিয়ে আনার সামর্থ্য নেই। কিন্তু আগামীকাল কিছু সংখ্যক জঞ্জালদের শেষ পরিণতি নিশ্চিত।’
চলবে ইনশাআল্লাহ…..
বিঃদ্রঃ জ্বর,ঠান্ডা, গলাব্যথার জন্য পাঁচদিন হলো কলেজে যেতে পারিনা। বাসায় থাকলেও লিখার জন্য মন সায় দেয়নি। শরীর ভালো না লাগলে প্রিয় কাজটাও অসহ্য লাগে। শেষের পর্ব বিশাল হবে। তাই দেরি হবে সাজাতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here