উপন্যাসঃ”গোধূলিলগ্ন”
শান্তনা আক্তার
পর্ব-৪৩
সেতুর চালচলন,গতিবিধিতে বিশাল পরিবর্তন এসেছে। কথা বলা কমিয়ে এনেছি সে। নাহিদ আগের মতো বাড়িতে আসেনা। আসলেও কয়দিন পর পর। এ নিয়ে নিয়ম করে দিনে হাজারবার মছিদা সেতুকে কথা শুনিয়ে যান। তাতে অবশ্য সেতুর কিছু যায় আসেনা। বর্তমানে সে নির্জীব, নিষ্ক্রিয়। শ্বাসতন্ত্র সচল মাত্র। পরিবেশ থমথমে। কিছুক্ষণ আগের রৌদ্রজ্বল বসুধা এখন ঘন মেঘের ছায়াতলে গা ঢাকা দিয়েছে। চারিপাশ অন্ধকার হয়ে আসছে। বৃষ্টির সময় হুটহাট প্রকৃতি তার রঙ বদলায়। কখনো কাঠফাটা রোদ, কখনো বা মুষলধারে বৃষ্টি। রশিদা চলে গেছেন বেশ কিছুদিন হলো। যাবার দিন সেতুর নিষ্প্রভ মলিন মুখটা কতক্ষণ যে কাতর মনে দেখেছিলেন, তা হিসাব ছাড়া। সেতু সেদিন তার সমস্ত অসহায়ত্ব চোখেজোড়াতে ঢেলে দিয়েছিল। সে রশিদাকে চোখের ভাষায় আটকাতে চেয়েছিল, মুখের ভাষায় নয়। রশিদা সুযোগ পেলে সেতুকে নিজ হাতে খাইয়ে দিত। আলগোছে সেতুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিত। সেতুর নিকট সেই হাত ছিল ভরসাযোগ্য, শান্তির। মানুষ ভারী অদ্ভুত প্রকৃতির৷ এরা বয়সের থেকে মনকে অধিকতর প্রাধান্য দিয়ে থাকে। বয়সের সাথে সাথে শরীর বুড়িয়ে গেলেও, মন বুড়িয়ে যায়না কখনো। সেতুর ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। এই বয়সে এসেও তার ছোট হওয়ার প্রবল ইচ্ছে জেগে উঠেছিল খালা-শ্বাশুড়ি রশিদার থেকে নিঃস্বার্থ স্নেহময় বৃক্ষছায়া পেয়ে। তবে এও যেন তার ভাগ্যে সইলো না। রশিদাকে চলে যেতে হয়েছে নিজ বাড়ি। তার স্বামীর বাড়ি। কলপাড় হতে ধৌত করা বাসনকোসন নিয়ে আসার পথে পিচ্ছিল কাঁদায় পা পিছলে পড়ে গেল সেতু। পায়ের হাড় মড়মড় করে উঠল। ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে ‘মাগো’ বলে উঠলে মছিদা দৌড়ে আসেন। তিনি নাক ছিটকে কিড়মিড় করে বলেন, ‘হাত-পা আসমানে রেখে চলাফেরা করোস নাকি? যতসব উটকো জুটেছে। বড়ো বউ ভাতার জুটিয়ে পালিয়েছে, ছোটটাও সেই দিকেই এগোচ্ছে। আমার ছেলেটাও আছে বদের হাড্ডি। কত বলি বাবারে অনেক হয়েছে, এবার আপদ তাড়া। কে শোনে কার কথা? ঢং কমিয়ে রান্না বসা। তোর হাতের রান্না গলাধঃকরণ করেও শান্তি নেই। কি জানি বিষ-টিশ মিশিয়ে দিতে তোর বিবেকে বাঁধবে কিনা! বিশ্বাস নেই বাবা, বিশ্বাস নেই।’
আরও কিছু বলতে বলতে চলে যান মছিদা।
পায়ের ব্যথা ও মছিদার বলা বিকৃতভাষ্য মিলিয়ে অঢেল কষ্টে বুক ফুড়ে কান্না বেরিয়ে আসল সেতুর চোখ বেয়ে। শাড়ির অর্ধাংশ কাদায় মাখামাখি। হাতখোপা আস্তে আস্তে আলগা হয়ে আসছিল। পা রগড়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে নাহিদ এসে দু’বাহুতে আটকে ফেলে সেতুর দেহ। সেতু ভেজা চোখে নাহিদের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা চালায়। নাহিদ ধমকে বলে, ‘একদম ছুটোছুটি করবে না, সবসময় তেজ দেখাতে নেই।’ এতটা বলে কোলে তুলে নেয় সেতুকে। সেতুর নির্বিকার চাহনি। নাহিদ কলপাড়ে পাতানো মোড়ায় বসিয়ে দিল সেতুকে। এরপর টিউবওয়েল চাপল। বালতি ভরে এলে সেতুর আঘাতপ্রাপ্ত পা সামান্য উঁচু করে ঘুরিয়ে,বাঁকিয়ে সেখানে মাসাজ করে দিল। শেষে জোরে পা সোজা করে টান দিতেই ব্যথায় চোখ ঠেসে বন্ধ করে নেয় সেতু। নাহিদ, সেতুর কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বলল,
‘এবার ব্যথা কমেছে কি?’
সেতু পা নাড়িয়ে দেখল ব্যথা অনেকটা উপশম ঘটেছে। মাথা উপর-নীচ করে সেতু অস্ফুটে বলল, ‘হুঁ।’
‘তাহলে গোসল করিয়ে দেই তোমায়?’
‘লাগবো না। আমি পারুম।’
সেতুর নিষেধাজ্ঞা মেনে উঠে দাঁড়ায় নাহিদ।
চলে যাবার পথ ধরে বলে, ‘মিতু ও মায়ার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে৷ যাবে কি তাদের কাছে?’
সেতুর বিস্ময়কর মুখশ্রী সাথে উৎকন্ঠা,
‘সত্যি? কই তারা? আমার মিতু, মায়া কেমন আছে? আমারে নিয়া যান ওগো ধারে।’
‘সেটার জন্যই তো আসা। ঢাকা শহরে আছে ওরা দুজন। আমরাও যাচ্ছি আজ বিকেলে।’
____
রেখা বানু বেশ কয়বার রাত্রির ফোনে কল করে ফোন বন্ধ পেলেন। প্রথমবার রিং হয়ে হঠাৎ বন্ধ! বিষয়টি অদ্ভুত লাগায় কাব্যকে জানান তিনি। কাব্য জানা মাত্র সকল কাজ ফেলে ছুটে আসে রাত্রির ফ্ল্যাটে। খাবার টেবিলের পাশে পড়ে থাকা রাত্রির রক্তাপ্লুত নিথর দেহটা মুহুর্তেই শোকাহত করে তুলল কাব্যকে। কিছু সময় আগেও তো মেয়েটা তার সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলল। ভালোই তো ছিল মেয়েটা তার স্বাভাবিক জীবন নিয়ে। তবে কি রাত্রির জীবনাবসানের সম্পূর্ণ দায়ভার কাব্যর? কাব্যর চোখ ভারী হয়ে আসল সে কথা ভেবে। কেন সে রাত্রিকে জড়ালো তার ব্যক্তিগত কাজে? সে যদি এমনটা না করতো, তাহলে রাত্রি হয়তো জীবিত থাকতো। ভাবতে ভাবতে এগোলো কাব্য। দু’হাটু ভেঙে বসল সে। রাত্রির চোখ খোলা। কাব্যর মনে হচ্ছে, রাত্রির চোখদুটো যেন নিজের খুনের নালিশ জানাচ্ছে তার কাছে। বলছে, ‘আপনি আমার খুনি স্যার, আপনার জন্য আমাকে জীবন দিতে হয়েছে। আপনি অনেক বড়ো সেলফিশ।’
কাব্য চিৎকার করে উঠল, ‘হ্যাঁ আমি আপনার খুনি রাত্রি। আমি সেলফিশ। আমাকে মাফ করবেন না কখনো। আপনার স্নিগ্ধ ভালবাসা উপলব্ধি করেও আমি না বোঝার অভিনয় করেছি। কি করতাম বলুন? বুঝেও কিছু করার ছিল না আমার। কিন্তু তারপরও আপনি একপাক্ষিক ভালবেসে আমার পাশে থেকেছেন সবসময়। এভাবে ঋণী না করলেও পারতেন! অভিমান করে দূরে চলে যেতেন নাহয়। তাহলে আজ হয়তো আপনি জীবিত থাকতেন৷ এত ভালো হতে নেই। কারণ ভালোদের জন্য নয় এই সমাজ। আমি ভুলতে পারবো না আপনাকে। কখনোই পারবো না। আপনি আমার জীবনে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মধ্যে একটি হয়ে থাকবেন সর্বদাই। আবারও বলছি, আমাকে মাফ করবেন না। আমি ক্ষমার অযোগ্য।’
কাব্য হাত চালিয়ে রাত্রির চোখজোড়া বন্ধ করে দিল। অঝোরে ফেলতে থাকল সরু অশ্রুজল।
________
অসীম ক্রোধ নিয়ে বাদশা লাথি বসান নিজ চেয়ারে। উল্টে পড়ল চেয়ার। লুৎফর দেয়ালের সঙ্গে সেঁটে দাঁড়িয়ে। তার চোখে উপচে পড়া ভয়।বাদশা হঠাৎ বললেন, ‘মিতুর দিকে খেয়াল রাখতে বলিনি তোকে? ওর হাতে ফোন ধরিয়ে দেওয়ার পর কি করছিলিস তুই?’
লুৎফরের তোতলানো কন্ঠস্বর, ‘আ আ আমি ত তো পুরো স স সময় মিতুর ক কাছেই ছিলাম ব বস।’
‘ভিডিও কল শেষে কোথায় ছিলি? ওর রুমের বাহিরে নজর রাখতে বলিনি সর্বক্ষণ?’
‘বলেছেন তো। কিন্তু ওতো কখনো যায়না কোথাও। আমি কিভাবে জানবো ও বুঝে যাবে ওর মেয়ে ছয় তলায় বন্দী?’ বলল লুৎফর।
‘খুব সেয়ানা বুদ্ধির অধিকারী ওই মেয়ে। গতকাল বেশি সময় নিয়ে মেয়ের সাথে কথা বলার সুযোগ দিয়েছি বলে আশেপাশে কি আছে না আছে সব খুটিয়ে খুটিয়ে পরখ করেছে। পুরো বিল্ডিং এর দেওয়ালে একই ডিজাইন। ব্যস! বুঝে ফেলল ওর মেয়ে এখানকার কোন এক রুমেই আছে। বেশ বিচক্ষণ বের হলো মেয়েটা!’
‘ঠিক ধরেছেন বস। ওই মেয়ে গেঁয়ো হলেও, বুদ্ধি ও তেজ, দুটোই ওর মধ্যে সমানভাবে বিদ্যমান। একবার আমাদের বোকা বানিয়ে চোখে লাল মরিচ গুঁড়ো ছিটিয়ে দিয়েছিল মনে নেই আপনার?’
বাদশা হিসহিসিয়ে উঠলেন, ‘আর মনে করাস নাতো লুফু! আমার এখনও সেই দিনের কথা মনে আসলে মাথার রগ ছিড়ে যায়৷ কয়েকটা শ্যুট পরে ওকে বুঝাতাম আমার চোখে মরিচ গুঁড়ো ছোড়ার ফল কতটা ভয়াবহ হতে পারে। কিন্তু তার আগেই হাতের নাগালের বাহিরে চলে গেল। সত্যি ওকে বোকা ভেবে বড্ড ভুল করে ফেলেছি।’
তাদের কথার মাঝে ওয়াচম্যান এসে বাদশার উদ্দেশ্যে বলল,
‘কেউ একজন আসছে আপনার সঙ্গে কথা বলতে। ভেতরে আসতে বলবো কি তাকে?’
বাদশা ধমকের সুরে বলল, ‘এখন কে আসলো আবার! আচ্ছা গিয়ে তাকে আসতে বলো।’
দু’মিনিটের মাথায় সুপ্ত সাখাওত তার বডিগার্ড নিয়ে বাদশার ক্যাবিনে প্রবেশ করে। সুপ্ত একটা চেয়ার টেনে বসতে-বসতে বলে, ‘আমাকে হয়তো চেনেন, আর নয়তো চেনেন না। কিন্তু আমি আপনাকে ভালো করেই চিনি। কি অবস্থা আপনার? ভালো তো?’
বাদশা জহুরি নজরে সুপ্তকে দেখল ক্ষণকাল। তাগড়া যুবক সুপ্তর ঠোঁট খয়ে বিচ্ছুরিত হাসি বাদশার ভ্রুকুটি করে আনে। সুপ্ত বলে, ‘তাহলে চেনেন না। সমস্যা নেই। চিনিয়ে দেব। আমি হচ্ছি কুখ্যাত গ্যাংস্টার সুপ্ত সাখাওত। ভালো করে খোঁজ নিলে বিস্তারিত জানতে পারতেন। তবে আমি যেহেতু….’
বাদশার অকস্মাৎ বাঁধা, ‘তো? এখানে কি চাই আপনার?’
‘গুড কোয়েশ্চেন। আমার এখানে আসার কারণ মিতু। তাকে আমার লাগবে। সাংবাদিক কাব্যর সাথে কিছু বোঝাপড়া ছিল।’
‘মানে? মিতুকে দিয়ে আপনার কি কাজ?’
‘কান টানলে মাথা আসে- প্রবাদটি তো শুনেছেনই। কাব্যর প্রেমিকা নাকি মিতু। তাই মিতুকে দিয়েই তাকে জব্দ করতে হবে। আপনি আমাকে সাহায্য করলে আপনার লাভ বৈকি ক্ষতি হবে না। আস্থা রাখুন।’
‘আপনাকে কিভাবে সাহায্য করি যেখানে আমি নিজেই হেল্পলেস! মিতু গতকাল তার মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে। আমি জানি না সে এখন কোথায়।’
সুপ্ত উল্কা গতিতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। তার বিস্ময়াহত কন্ঠ, ‘কিহ, মিতু পালিয়ে গেছে!’
আহত কন্ঠে বাদশা বলে, ‘হ্যাঁ ভাই, মিতু পালিয়েছে। আমারও হিসেব বাকী মিতুর সাথে। কিন্তু তার আগেই সব শেষ।’
‘কোন ভাবে খুঁজে বের করা সম্ভব কি তাকে? কোথায় পাওয়া যেতে পারে জানেন কি?’
‘না, তবে আমার সন্দেহ সে কাব্যর কাছেই আছে। তাছাড়া কোথায় বা যাবে?’
‘তাহলে তো সমস্যা।’
‘কিন্তু আমি আরেকটা উপায় সাজিয়ে রেখেছি। এতে করে মিতুর সন্ধান পাওয়া যাবে। শতাধিক নিশ্চয়তাও রয়েছে।’
বাদশার কথায় সুপ্তর নিভে যাওয়া আশা আবার উজ্জীবিত হয়ে উঠল। তিনি উৎকন্ঠিত হয়ে শুধান, ‘কি সেটা?’
_______
খোশমেজাজে ফ্যাশন হাউজ থেকে বেরিয়ে আসছেন সুপ্ত সাখাওত। গাড়িতে চড়ে বসতেই তার ফোন বেজে ওঠে। অচেনা নাম্বার। প্রথমবার অগ্রাহ্য করলেও দ্বিতীয়বার রিসিভ না করে পারলেন না তিনি। অপর প্রান্তে থাকা সুক্ষ্ম কন্ঠের মানুষটিকে চিনতে সুপ্তর দু’সেকেন্ড সময় লাগলো না। তিনি আলগোছে থুতনিতে হাত চালাতে চালাতে বলেন, ‘আসছি আমি।’ কল কেটে ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে সুপ্ত বললেন,
‘গাড়ি নাইট ক্লাবে ঘোরা।’
দূরে একটা টেবিলের কর্ণারে কাব্যকে বসা অবস্থায় দেখে হাত নেড়ে ডাকল সুপ্ত। উচ্চশব্দে গান-বাজনার ফলে কাব্যর কান অবধি সেই ডাক গিয়ে পৌঁছাতে অক্ষম হয়। সুপ্ত এগিয়ে গিয়ে কাব্যর পাশের চেয়ারটায় বসলে কাব্য হাত বাড়িয়ে দেয়, ‘হ্যালো মিস্টার সুপ্ত সাখাওত।’
সুপ্ত ভ্রু কুঁচকে আশ্চর্যান্বিত কন্ঠে বলেন,
‘আপনার হাত আমার দিকে?’
কাব্য হেসে বলল, ‘বন্ধুত্বের হাত। আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। ওসব ন্যায়ের পথে চলা আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। পরিবারের মায়া আছে আমার। আমি চাইনা আমার জন্য আমার বাবা-মায়ের কোন ক্ষতি হোক।’
‘চমৎকার! কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছে যে সাংবাদিক সাহেব। আপনার জন্য আমি প্রায় পথে বসে গিয়েছি, এখন আপনাকে বন্ধু বানাতে চায়না আমার দুর্বল হার্ট। টাকার শোকে আজ আমি হার্টের রোগী। এরজন্য দায়ী আপনি। তাই আপনার কঠিনতম শাস্তি প্রাপ্য।’
কাব্য হাতজোড় করে বলল, ‘আমাকে এবারটার মতো মাফ করে দিন। আমি অনুতপ্ত আমার কাজে। আচ্ছা, আমি আপনার অর্ধেকের বেশি টাকা বদলি করিয়ে আনতে পারলে আমাকে নিজের বন্ধু বানাবেন তো?’
‘সত্যি পারবেন?’ চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল সুপ্তর।
কাব্য বলল, ‘পারবো। এক সপ্তাহ সময় দিন, আমি নিজে আপনার বাড়ি গিয়ে দিয়ে আসবো সেই টাকা।’
‘তাহলে ঠিক আছে, আমরা বন্ধু আজ থেকে। তবে পরে পাল্টি খেলে চলবে না কিন্তু!’
‘আমি সত্যি ক্লান্ত মিস্টার সুপ্ত। ভয়ে ভয়ে বেঁচে থাকা আর যায়না। আমি আমার বাবা-মাকে খুব ভালবাসি। তাদের ক্ষয়ক্ষতি আমি সহ্য করতে পারবো না। তারা আমার সব। তারা নেই তো আমিও নেই। শুধুমাত্র তাদের জন্যই আমি ন্যায়ের পথ থেকে সরে আসতে বাধ্য হলাম। এভাবে জীবন চলবে না। এক না একদিন হেরে যেতেই হতো আমায়। সেই দিনের আশায় থেকে বর্তমানে আমি আমার বাবা-মাকে হারাতে চাইনা। আপনি আমার কথা বুঝেছেন তো মিস্টার সুপ্ত?’
সুপ্ত বিস্তর হেসে আলিঙ্গন করে নেয় কাব্যকে। তার কন্ঠে আত্মতুষ্টি, সন্তোষ প্রকাশ পায়,
‘আমি খুব খুশি আপনার এরূপ বদলে। খুব বেশি খুশি সাংবাদিক সাহেব।’
চলবে ইনশাআল্লাহ….