গুছিয়ে রাখা আবেগ পর্ব ৫

0
661

#গুছিয়ে_রাখা_আবেগ
#পর্ব_৫
#আজরিনা_জ্যামি

ওদের অবাকতার মাঝেই প্রিন্সিপাল স্যার বললেন,,

“উনি হচ্ছে তোমাদের নতুন স্যার মিস্টার আরহাম মাহমুদ খান। আজ থেকে উনি তোমাদের অর্থনীতির এই সাবজেক্ট টা পড়াবেন। তোমাদের সবার জন্য শুভকামনা।

বলেই প্রিন্সিপাল স্যার চলে গেলেন। এদিকে আরহাম মুচকি হেসে আরুহিদের দিকেই তাকিয়ে আছে।মানুষটিকে দেখে ওরা তিনজন যেনো অবাকের চরম পর্যায়ে চলে গেছে। হয়তো এই মানুষটাকে এখানে একদম আশা করে নি ওরা। হুট করে রোজা ফিসফিস বলল,,

“এই নিশি ভুত দ্যাখ আমার দুলাভাই আইছে। ভাবিই নাই ওনারে এনে পাইয়া যামু। যাক উনি যখন আইছেন তাইলে আমার আর চিন্তা নাই বিয়া খাওয়ার বন্ধবস্ত করতে হবে। আহা আমার ছোটবেলার শখ আমি বিয়া খামু।”

তখন আফরিন রোজার হাতে চিমটি কাটলো তা দেখে রোজা আউচ বলে উঠলো। তখন আরহাম বলল,,

“মিস কোন সমস্যা?”

“নো স্যার কোন সমস্যা নেই। ঐ একটা মশা খুব জোরে কামড়ে দিয়েছে।”

“ওকে আপনি বসুন। তাহলে আমাদের যেহেতু এখন থেকে নিয়মিত দেখা হবে। তাহলে পরিচয় পর্বটা সেরে নিই। আমি আরহাম মাহমুদ খান। এখন এক এক করে আপনাদের পরিচয় বলুন।”

সবাই এক এক করে পরিচয় দেওয়া শুরু করলো। রোজার বলা শেষ এখন পালা আফরিন এর আফরিন মজা করে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,,

“এখনকার পরিচয় বলবো নাকি ভবিষ্যতের পরিচয় বলবো স্যার।”

তখন আরহাম মুচকি হেসে বলল,,

“মিস আমাদের জীবনের কোন নিশ্চয়তা নেই। যেকোন সময় আমাদের কিছু হয়ে যেতে পারে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমান কে হেয়ো করা উচিৎ নয়। যেহেতু ভবিষ্যতটা এখনো অনিশ্চিত তাই বর্তমানের টাই বলুন। বেশি রুড হয়ে থাকলে দুঃখিত মিস।”

আফরিন এর গায়ে লাগলো কিনা জানা নেই তবে ও আস্তে করে বলল,,

“আমার নাম নিশি আফরিন খান।”

এরপর পালা আরুহির। আরুহি দাড়াবে এমন সময় আরহাম বলল,,

“মিস আপনার ফুল নেম না বলে শর্ট নেম বলুন সবার কতো বড় বড় নাম এত বড় নাম আমার জন্য মনে রাখা কষ্টকর। সবার ছোট নাম থাকা উচিত মিস রোজার মতো ছোট।”

একথা শুনে আরুহি হাসলো আর বলল,,

“আমার নাম আরুহি আপনি চাইলে শর্ট ফর্ম আরু বলতে পারেন।”

“ওকে মিস আরুহি। তো সবার পরিচয় পর্ব শেষ এবার একটু পড়াশোনায় যাওয়া যাক।”

সবাই সব স্বাভাবিক ভাবেই নিল। কেউ এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করলো না। কারন ওরা উপস্থাপন ই এমনভাবে করেছে কেউ ধরতেই পারলো না। তিনটি ক্লাস শেষ এখন ওদের আর কোন ক্লাস নেই আবার এক ঘন্টা পর। আরহাম ক্লাস থেকে বের হয়ে একটা ফোন কানে নিল আর একটু এক সাইড করে দাঁড়ালো ও জানতো আরুহিরা এখনি বের হবে তাই ওরা বেরুনুর পর দেখলো আরহাম দাড়িয়ে আছে তখন আরুহি আরহাম কে মেসেজ করলো ,,

“তাহলে এই ছিল আপনার নতুন চাকরির সারপ্রাইজ। সারপ্রাইজ টা ভালোই।”

আরুহিরা যেতে লাগলো তখন আরহাম মুচকি হেসে ফোন চেক করে মাথা নাড়ালো।

_________________

“কি ব্যাপার বলতো আরুহি তোর ভাই এই ভার্সিটির লেকচারার হয়ে এলো তুই কিছু জানালি না। আফরিনের কথা ভেবে হলেও তোর আগে থেকে জানানো উচিৎ ছিল। বেচারি অল্পের জন্য হার্ট অ্যাটাক করে নি।”

রোজার কথায় আরুহি বলল,,

“আমিই জানতাম না তবে ভাইয়া বলেছিল নতুন চাকরি করবে আর আমার জন্য নাকি সারপ্রাইজ আছে। এখন বুঝলাম সব।”

তখন আফরিন বলল,,

“তোর ভাই কবে এসেছে?”

“আজই ভোরে এসেছে!”

“হুট করে আসার কারন?”

“কেন তুই খুশি হোস নি?”

“আমার খুশি দিয়ে কি হবে।” উনি তো আবার কারন ছাড়া কোন কাজ করে না। এসেছে যখন তখন বড় একটা কারন নিয়েই এসেছেন।”

“তা অবশ্য ঠিক তবে দুটো কারনেই জন্য এসেছে একটা বলবো না।”

“তাহলে আরেকটা বল।”

“আরেকটা ও বলবো না।”

“বলবি না তখন তাহলে ভনিতা করছিস কেন?”

“চল আজ তোদের ফুচকা খাওয়াবো। আমার ভাই নতুন চাকরি জয়েন করেছে সেই হিসেবে ট্রিট।

তখন আফরিন বলল,,

“যার ওনারে ট্রিট দিচ্ছিস সে থাকলে ভালো হতো না।”

“সোজাসুজি বল না তুই ভাইয়ার সাথে কথা বলতে চাস এভাবে ঘুরিয়ে বলার কি আছে।”

“হুম কথা তো একটু বলতে বলতেই হবে। তোর ভাই যদি এবার শুধু না করে আরুহি তোর ভাইকে তুলে নিয়ে বিয়ে করবো আমি।”

আরুহি কিছু বললো না শুধু মুচকি হাসলো। তখন রোজা বলল,,

“বিয়ে যেভাবেই করিস আমারে রাখতে কিন্তু ভুলিস না। ”

“এহ আইছে তুই বিয়ে করবি কবে রোজা?”

“আরহাম ভাইয়া আর আবরার ভাইয়া এর মতো একটা ছেলে পেলেই করে নিব। ওদের দুজনের মধ্যে একজন কে করতাম কিন্তু ওগুলো রে করা যাবে না বান্ধবী বলতে আমার একটা মানবতা আছে না। ”

তখন আরুহি বলল,,

“তুই চাইলে মিস্টার নিশান আবরার কে বিয়ে করতেই পারিস। তাকে দেখে তো মনে হয় সব দিক দিয়েই হাজবেন্ড ম্যাটারিয়াল।”

“আমাকে বলছিস কেন তাহলে তুই করে নে না।”

এ কথা শুনে আরুহি থতমত খেয়ে গেল। ও সামনে তাকালো তখন আবরার কে দেখতে পেল ও একদৃষ্টিতে ওকে দেখতে লাগলো কিন্তু আবার চোখ নামিয়ে নিল। ওর অবস্থা দেখে আফরিন আর রোজা কিছু বললো না। আবরার আরুহির সামনে এসে দাড়ালো আর পেছন থেকে হাত বের করে তিনটা হাওয়ার মিঠাই ধরলো আর বলল,,

“কাল আপনাকে হাওয়ার মিঠাই খাওয়ার কথা বলে ছিলাম না। তাই নিয়ে এলাম এখন খান। আপনাদের তিন জনের জন্যই এনেছি।”

আবরার আফরিন আর রোজাকে হাওয়ার মিঠাই দিল। আরেকটা আরুহির সামনে ধরলো আরুহি কিছু বললো না শুধু হাত দিয়ে হাওয়ার মিঠাই নিল। তা দেখে আবরার বলল,,

“একটা ধন্যবাদ দিবেন না নাকি।”

তখন আরুহি বলল,,

“দিন দিন আপনি কিন্তু আপনার ব্যক্তিত্ব হারাচ্ছেন!”

“সবার কাছে না মিস। তাছাড়া নির্দিষ্ট একজনের সামনে ব্যক্তিত্ব হারালে যদি তাকে পাওয়া যায় তাহলে ক্ষতি কি! ”

আরুহি কিছু বললো না। ওখান থেকে চলে গেল পেছনে রোজারাও গেল। হুট করে আফরিন বলল,

“কিরে ভাইয়ার সাথে ওমনি করলি কেন?”

“যে পথ আমি ছেড়ে এসেছি সেই পথে আর যেতে চাই না। আমার মন আর মস্তিষ্ক এক হতে পারে না এই সিদ্ধান্তে।”

হুট করে ওর ফোনে মেসেজ আসলো ,,

“কিছু ভালোবাসা নিরবে নিভৃতে একাকী জমা রয়ে যায়। হয়তো প্রকাশিত হয় না । তবুও মনের গহীন কোনে খুব যত্নে থাকে। উঁহু আপনার মতে দূর্বাফুলের মতো নয় খুব যত্নে থাকে সে। ”

আরুহি মেসেজ টা পরে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। ইস এমন কেন জীবনটা। তখনি নিতু এলো ওর সামনে আর বলল,,

“হেই আরুহি কেমন আছো?”

“এই তো আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি কেমন আছেন? আপনি যে আফরিনের ফুপাতো বোন জানতামই না।”

“আসলে আমাদের বয়সের গ্যাপ থাকায় আমরা ক্লোজলি মিশি না আর কি!”

“ওহ আচ্ছা তা আজ আমার খোঁজ নিচ্ছেন ব্যাপার কি?”

“কিছু না এমনি আসলে কাল তোমার ব্যাপারে জানলাম খুব কষ্ট পেলাম তোমার মা বাবা নেই শুনে।”

আরুহি কিছু বললো না ও বুঝতে চেষ্টা করছে নিতু ঠিক চাইছে টা কি। ওর কথায় অন্য কিছু দেখতে পাচ্ছে। তখনি আরহাম কে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়। তা দেখে আরুহি দৌড় দিতে গিয়েও দেয় না। ও বলে ,,

“নিতু আপু পরে কথা হবে আমার একটু কাজ আছে। ”

আরুহি একটু তাড়াতাড়ি হাঁটা ধরলো আর আরহাম কে ফোন দিল। আরহাম বোধ হয় জানতো আরুহি ফোন দেবে তাই ও তাড়াতাড়ি ফোন ধরে বলল,,

“আরুহি এখন কথা বলার সময় নেই। তুই রোজা কে আগেই কিছু বলিস না রোজার ভাই এক্সিডেন্ট করেছে। খুব খারাপ অবস্থা। সবার ওপরে আমার নাম্বার ছিল তাই আমাকে ফোন করে জানিয়েছে। তুই জানিস আমি আর রনি কতো ভালো বন্ধু আজও কথা হয়েছে। আমি তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যাচ্ছি তুই রোজাকে নিয়ে আয় আর হ্যা আমি আংকেল আন্টি কে ফোন করে জানাচ্ছি।”

“আচ্ছা ঠিক আছে সাবধানে যেও!”

আরুহি রোজার কাছে গেল আর বলল,,

“রোজা চল!”

“কোথায়?

“যেতে যেতে বলছি!”

তখন আফরিন বলল,,

“তোরা কোথায় যাচ্ছিস আমিও যাবো।”

“ওকে!”

ওরা তিনজন গাড়িতে উঠলো তখন রোজা বলল,,

“কি হয়েছে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস।”

“আমি কি বলি মাথা ঠান্ডা করে শোন আমরা হাসপাতালে যাচ্ছি রনি ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে।”

এ কথা শুনে রোজা যেন পুরো জমে গেল। আরুহির চোখটা ছলছল করে উঠলো আফরিন রোজা কে জরিয়ে ধরলো। রোজার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরছে। ও কোন রকম এ বলল,,

“আমার ভাইয়ার কিছু হতে পারে না তাই নারে আজও আমি আর ভাইয়া দু’জনে কতো খুনসুটি করলাম। জানিস আজ মা আমাকে আর ভাইয়াকে এক সাথে বকেছে আমরা কেন দুজন সবসময় ঝগড়া করি। যখন একে অপরকে ছাড়া থাকবো তখন নাকি বুঝতে পারবো। আরুহি ভাইয়ার কিছু হলে আমি কিভাবে আমি কিছু ভাবতে পারছি না।”

তখন আফরিন বলল,,

“শান্ত হ রোজা দেখবি রনি ভাইয়ার কিছু হবে না। ভাইয়া একদম সুস্থ হয়ে যাবে।”

তখন আরুহি বলল,,

“ধৈর্য্য ধর আল্লাহকে ডাক। কিছু হবেনা রনি ভাইয়ার। আল্লাহ তায়ালা সব সময় ধৈর্য ধারন করতে বলেছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে আল্লাহ তায়ালা আছেন।”” ভেঙে পড়ো না, নিরাশ হয়ো না, আল্লাহর সাহায্য আসবেই – এটা আল্লাহর ওয়াদা। জেনে রেখো আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে। ”

[সূরা বাকারাঃ-২১৪]

ওরা হাসপাতালে পৌছে গেল। আরুহি আর আফরিন রোজার দুই হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে। এই মুহূর্তে কিছুতেই ছাড়বে না ওদের বন্ধুকে। রোজারা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। রোজার বাবা এখনো হাসপাতালে পৌঁছায় নি। আরহাম দেখছে সব টা রনি মাথায় খুব জোরে বাড়ি খেয়েছে তাই অপারেশন করতে হবে। আরহাম সমস্ত টাকা জমা করে দিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো রনির রক্ত লাগবে A নেগেটিভ এখানে কারো সাথে মিল নেই ব্লাড ব্যাংকেও নেই। তখন আরুহির মনে পড়লো আবরার এর রক্ত সেম গ্ৰুপ ও তাড়াতাড়ি আবরার কে ফোন দিল।

” প্লিজ আপনি তাড়াতাড়ি **** হাসপাতালে আসুন রোজার ভাইয়ের রক্ত লাগবে A নেগেটিভ আপনার ও তো সেম গ্ৰুপ।”

“ওকে চিন্তা করবেন না আমি হাসপাতালের কাছাকাছিই আছি পাঁচ মিনিট লাগবে।”

কয়েকমিনিট এর মধ্যেই আবরার পৌঁছে গেল। আর তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢুকে গেল। আরুহি আর আফরিন রোজাকে সামলাচ্ছে। ডাক্তার বেরিয়ে এসে বলল অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে চিন্তার কোন কারন নেই। একথা শুনে সকলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলো। কিছুক্ষন পর আবরার বেরিয়ে এলো রক্ত দিয়ে এসে দেখলো রোজা এখনো চুপ করে বসে আছে। তাই ও রোজার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,,

“হেই লিটল সিস্টার এভাবে চুপ করে বসে আছো কেন? তুমি জানো তোমার ভাইয়াকে কে রক্ত দিয়েছে এই আমি জানো ডাক্তাররা ছোট বেলায় আমাকে বলতো আবরার তুমি অনেক স্ট্রং। এই স্ট্রং মানুষের রক্ত তোমার ভাইয়ের শরীরে যাচ্ছে দেখবে তোমার ভাই ইনশাআল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি একেবারে ঠিক হয়ে যাবে। ডাক্তার বলেছে সব ঠিক থাকলে কোন সমস্যা হবে না।

আবরারের কথা বলার ভঙ্গিতে রোজা একটু হাসলো। আর বলল,,

“ধন্যবাদ আবরার ভাইয়া তুমি যদি ঠিক সময় না আসতে তাহলে রক্ত পেতাম কোথায় মাথাই কাজ করছিল না।”

“তোমার বান্ধবীই তো ফোন করে ডাকলো। তাই তো জানতে পারলাম তোমার ভাইয়ের কথা।

“আরুহি বলেছে কিন্তু ও তো।”

“যাক সেসব কথা তোমার ভাই সুস্থ হলেই হলো।”

“কিন্তু আরুহি কোথায়? ও তো এখানেই ছিল।”

সবাই এদিক ওদিক খুঁজলো আরহাম আর আরুহি হাসপাতালের শেষের দিকে একটা জানালার কাছে সামনের দিকে দাঁড়িয়ে আছে।

_________________

“আরুহি চুপ করে আছিস কেন?”

“আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল ভাইয়া যখন রোজা কাঁদছিল।”
সব ভাইবোন এক রকম হয় না কেন ভাইয়া? রোজা যখন কাঁদছিল তখন বাবার মৃত্যুর দিনের কথা মনে পড়ছিল। কতোবার বাবা তার পরিবার কে ফোন দিয়েছিল কিন্তু কেউ তার সাথে দেখা করতে আসেনি। কি বলেছে তাদের কথা না শুনে বাবা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে দেখে তারা তার সাথে দেখা করতে চায় না। তাদের সাথে নাকি তার কোন সম্পর্ক নেই। বাবা সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিল ভাইয়া। আজ বাবার কথা খুব মনে পড়ছে ভাইয়া।”

“কিন্তু বাবা তো বেরিয়ে আসতে চায় নি। ওরাই বাবাকে বাধ্য করেছে আসতে।”

“ভাইয়া আমি যেদিন মরে যাবো সেদিন তুমি একদম কাঁদবে না।”

এ কথা শুনে আরহামের বুকটায় মোচড় দিয়ে উঠলো। ও আরুহিকে জরিয়ে ধরে বলল,,

“আরুহি এসব কি বলছিস তুই। তুই কেন মরবি আমার বোন অনেক দিন বাঁচবে।”

“আমার কেন যেন মনে হচ্ছে আমি বেশি দিন বাঁচবো না ভাইয়া। আমার খুব ভয় হচ্ছে ভাইয়া।”

“কিছু হবে না ওগুলো সব তোর মনের ভুল । কিছু হবে না তোর। কি বলছিস আবোল তাবোল আল্লাহ তোকে অনেক বছর বাঁচার তৌফিক দান করুক।

কথা বলতে বলতেই আরুহির নজর পরলো হাসপাতালের নিচে কাউকে একটা দেখেই আরুহি বলল,

“ভাইয়া মা!”

বলেই আরুহি আরহাম কে ছেড়ে দৌড় দিল। আরহাম ও একবার জানালায় দেখে দৌড় দিল ওদের দৌড় দেখে আবরার আর আফরিন ও দৌড় দিল কিছু তো একটা হয়েছে নাহলে ওরা দৌড়াবে কেন? আরুহি নিচে এসে দেখলো ওর মা একটা গাড়িতে উঠছে। ও “মা” চিৎকার দিল। কিন্তু কেউ ওর ডাক শুনলো না। গাড়িটা চলে যেতে নিল আরুহিও দৌড়াচ্ছে পেছনে আরহাম আরহাম চিৎকার করে বলছে

“বোনু সাবধানে সামনে রাস্তা।”

আরুহির কানে বোধহয় কিছু ঢুকছে না। ওর দৃষ্টি গাড়ির দিকেই ও একমনে দৌড়াচ্ছে গাড়ির পেছনে। হুট করেই একটা বাইক এলো ওর সামনে ও পড়ে গেল রাস্তায়। আরহাম আরুহি বলে এক চিৎকার দিল। পেছনে আবরার আর আফরিন ওরা দুজনেই বোধহয় এটা আশা করেনি। আরহাম আরুহির কাছে গেল ওর মাথাটা কোলে নিল তখন আরুহি আরহাম কে বলল,,

“ভাইয়া মা ঐ গাড়িতেই আছে আমি দেখেছি।”

আরুহি আর কিছু বলতে পারলো না। তার আগেই ঢলে পড়লো আরহামের কোলে।

~চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here