খোঁজ পর্ব ৮

0
433

#খোঁজ ৮ম_পর্ব
লেখক মোঃ কামরুল হাসান

যখন জানতে পারলাম আমার শ্বাশুড়ি বাচ্চাটির কথা আগে থেকেই জানতেন, উনার উপর তখন আমার খুব রাগ হলো। যদিও প্রথম থেকেই আমি একটু একটু করে বুঝতে পারছিলাম ব্যাপারটা। তিনি সবসময় আমার কাছ থেকে কিছু একটা লুকিয়ে রাখতে চাইছেন।

কিন্তু তবুও উনার এই লুকোচুরি খেলার মানেটা কি? আমি তো এর কিছুই বুঝতে পারছি না! আরেকটু ভেবে দেখলাম, এই দলে শুধু আমার শ্বাশুড়িই একা নয়! আমার বৌ অদিতি থেকে শুরু করে তাদের পরিবারের সবাই এতোদিন ধরে আমার কাছে এই বাচ্চা মেয়েটির কথা লুকিয়ে রেখেছে।

কে এই মিতুল নামের মেয়েটি? যার জন্য অদিতির হৃদয়ে এতো মায়া! নিজের জীবনের ঝুঁকি নিতেও বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ করে নি সে! এই সমীকরণ মেলানোর জন্য বলতে হয়। মিতুল কি তবে অদিতির নিজের সন্তান? কারণ এই পৃথিবীতে নিজের সন্তানের জন্য একমাত্র কোন মা,ই পারেন এমন ত্যাগ স্বীকার করতে!

কিন্তু সেটাও তো আমি বলতে পারি না। আবার মানতেও পারি না! অদিতি আমার সাথে এতোবড় বেঈমানী কখনো করতে পারে? এই কথা আমি সত্যি মেনে নিতেও পারি না। যদি উপরোক্ত কথাগুলো আমি বিশ্বাস করি তবে অদিতি কে অবিশ্বাস করা হয়! আর এক কথায় বলতে গেলে সেটা অসম্ভব ব্যাপার! কারণ এমন কিছু ঘটলে অবশ্যই আমি খবরটা আরও আগেই জানতে পারতাম।

তাই সেই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে অন্য কিছু ভাবতে চাইলাম। কিন্তু স*ন্দেহ এমন রোগ ধরলে আর সহজে ছাড়তে চায় না। তবুও নিজেকে সতর্ক করে দিলাম! ভুলেও মুখ থেকে এমন কথা যেনো না বেরিয়ে যায়।

সেই আয়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে লিটু কে একটা ফোন করে জানিয়ে দিলাম। লিটু জিজ্ঞেস করে আমি কেমন করে জানতে পারলাম? বললাম, একজনের কাছে জানতে পেরেছি। তাকে ধরতে চাইলে তারাতাড়ি করে আসতে হবে। নয়তো পালিয়ে যাবে সে! লিটু বললো আমরা এখনই রওনা হয়ে যাবো।

মামা শ্বশুরের বাড়িতে এসে আমার শ্বাশুড়িকে আড়ালে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি মিতুল নামের যে মেয়েটিকে দেখাশোনার জন্য আপনার আরেক আত্মীয়ের কাছাকাছি রেখেছেন। তার আসল পরিচয়টা কি তা, দয়া করে আমার কাছে একটু খোলাসা করে বলবেন?

আমার শ্বাশুড়ি আমার কাছে এমন কথা শুনে যারপরনাই আশ্চর্য ও একই সাথে হতাশ হলেন। একেবারে চুপসে গেলেন তিনি! কোনরকমে নিজেকে সামলিয়ে তিনি বললেন, বাবা! আমি তোমার সাথে কোন অন্যায় করিনি! এটা কি অন্যায় নয় বলতে চান আপনি?

আজকে আমি সেখানে গিয়ে নিজের চোখে অদিতি ও সেই মিতুল নামের বাচ্চা মেয়েটির একসাথে তোলা ছবিটা দেখে এসেছি। আর জেনেও এসেছি সেই মেয়েটিকে দেখতে অদিতি মাঝে মাঝেই সেখানে যেতো। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না আপনার ও আপনার মেয়ে অদিতির সাথে মিতুলের কি সম্পর্ক? সেই শুরু থেকে দেখে আসছি আপনি আপনার ইচ্ছে মতো আমার সাথে লুকোচুরি খেলছেন! আমি আর এ-সব নিতে পারছি না! এর উপযুক্ত জবাব দিয়ে আমার মনটা কে শান্তি দিতে চাই আমি!

বলুন আম্মা! নাকি আমার কথা এখনো আপনার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে? তবে এই দেখুন অদিতি ও মিতুলের ছবিটা! এই কথা বলে মোবাইল স্ক্রিনে ভেসে থাকা ছবিটা আমার শ্বাশুড়ির চোখের সামনে তুলে ধরলাম।

আমার শ্বাশুড়ি ছবিটার দিকে একবার তাকিয়ে কাঁদতে লাগলেন। আমার তখন রাগে শরীর জ্বলে উঠলো। তাই রাগান্বিত কন্ঠে বললাম, প্লিজ আম্মা! আমার সামনে আপনি আর এভাবে কাঁদবেন না। আপনার এই নাকী কান্না শুনে শুনে আমাকে আজ এতদূর আসতে হয়েছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না!

আমার মুখের কঠিন কথাগুলো তার হৃদয়ে গিয়ে হয়তো লেগেছে? তাই তিনি চোখের জল মুছে আমাকে বলেন, আমি জানতাম বাবা! আমাকে একদিন তোমার মুখের এইসব কথা শুনতে হবে। জানো বাবা “কেবলমাত্র একজন মা,ই আমার মনের কথা বুঝতে পারবে। তুমি নও! তুমি তো পুরুষ মানুষ! মেয়ে হলেও তবু কথা ছিলো?

উনার এমন ন্যাকামো করা কথা শুনে আমার শরীরে আরও জ্বালা ধরে গেলো। বললাম দয়া করে এসব কথা রেখে আসল কথাটা বলুন আম্মা! এটা আপনার বাড়ি নয়। যে কেউ এসে এসব নাটক দেখে ফেলতে পারে? তখন দুজনেই লজ্জা পাবো।

তিনি বললেন, ন্যাকামো নয় বাবা! এটা সত্যি যে আমি তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু লুকিয়ে রাখতে চেয়েছি কিন্তু সেটা তোমার অমঙ্গল কামনা করে নয়। আমি সবসময় চেয়েছি তোমার আর অদিতির মধ্যে সম্পর্কটা যেনো ভালো থাকে। ওর উপর তোমার যেনো কখনো কোন সন্দেহ না হয়, তার জন্যই আমার এই লুকোচুরি খেলা! তাতে তোমার কোন ক্ষতি হয়নি বাবা!

অনেক হয়েছে আম্মা! আমি এইসব আরও আগেই বুঝতে পারছি। এখন বলুন মিতুলের সাথে অদিতির কি সম্পর্ক? একটু দাঁড়াও বাবা! সেই জবাব আমি তোমাকে দিচ্ছি! এই বলে তিনি ঘরের ভিতরে চলে গেলেন। আমি অন্ধকারে নিশ্চুপ হয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলাম। একটু পরেই আমার শ্বাশুড়ি তার মোবাইলটা নিয়ে এসে একটা মেয়ের ছবি বের করে বললো, দেখো এই হচ্ছে মিতুলের আসল মা! অদিতির অনেক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আইরিন!

কিন্তু সে এখন আর বেঁচে নেই। ওর নাম হচ্ছে আইরিন। ভালোবেসে এক গুন্ডা বখাটের সাথে ওর বিয়ে হয়। ওর বাবা-মা কেউ জানতো না। একদিন যখন মিতুল তার গর্ভে আসে। তখন ঐ গুন্ডা বাচ্চাটিকে ফেলে দিতে বলে। কিন্তু আইরিন অদিতির পরামর্শে বাচ্চাটিকে জন্ম দেয়। তারপর একদিন সেই গুন্ডা মার্কা ছেলেটা কোথায় যেনো উধাও হয়ে যায়। আর কখনো ফিরে আসেনি। কোন খোঁজ তার পাওয়া যায়নি।

এদিকে বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে বিয়ে করার জন্য আইরিনের পরিবার তাঁকে চিরতরে ভুলে গেছে। সেখানে যাওয়ার আর কোন রাস্তা তার সামনে থাকে না। অদিতির পরামর্শে সে একটা চাকরি নিয়ে কোনমতে জীবনধারণ করতে থাকে। মিতুলের যখন দুই বছর বয়স তখন আইরিনের এক কঠিন রোগ ধরা পড়ে।

অনেক চিকিৎসা করিয়েও কোন লাভ হয়নি। মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে সে অদিতি কে ডেকে বলে, তার যদি কিছু হয়ে যায়। তবে যেনো মিতুলকে সে নিজের সন্তানের মতো দেখে রাখে। অদিতির মুখে না বলার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। ওরা দু’জন অনেক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিল। আর কিছুটা দায় অদিতির ছিলোও বটে! আইরিনও একসময় তার স্বামীর কথামতো বাচ্চাটি ফেলে দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু একমাত্র অদিতির জোরাজোরির কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।

অদিতি যখন দুই বছরের শিশু মিতুল কে বাড়িতে নিয়ে আসে। তখন আমরা ওর উপর অনেক রাগ করে ছিলাম। কারণ একে তো অদিতি অবিবাহিতা! লোকে নিশ্চয়ই সত্য মিথ্যা বানিয়ে অনেক কথা রটাবে? তখন ওর জন্য কোন পাত্র খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে পড়বে! আর বদনামের কারণে হয়তো আমাদেরও অনেক সম্মানহানি হবে। দ্বিতীয়ত একটা বাচ্চা লালন-পালন করা মুখের কথা নয়!

তার জন্য আলাদা খরচ, আলাদা দেখাশোনা করা, এগুলোর কোনটাই আমি করতে রাজি হলাম না। বললাম, আইরিনের বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে। তাদের নাতনিকে তারা যা খুশি তাই করুক! অদিতি আমাদের কথা হজম করতে না পেরে সেখানে গিয়ে নিরাশ হয়ে ফিরে আসে।

তারপর দৃঢ়কণ্ঠে বলে, লোকে যা-ই বলুক না কেন মা? এই বাচ্চা মেয়েটি কে আমি কোথাও কষ্ট করতে দিবো না। দরকার পরে ওর জন্য আমি চাকরি করতেও রাজি আছি। তাই অদিতি একটা বাচ্চাদের স্কুলে পড়ানোর দায়িত্ব নেয়। সেখান থেকে যা পেতো তা দিয়েই মিতুলের খরচ বহন করতে শুরু করে।

এদিকে মিতুল কে কিছু দিন ধরে লুকিয়ে রাখতে রাখতে আমি হাঁপিয়ে ওঠে একদিন বললাম, হয়তো তুই বাচ্চাটিকে নিয়ে কোথাও চলে যাবি! নয়তো ওকে দূরে কোথাও রেখে দায়িত্ব পালন করবি। সিদ্ধান্ত এখন তোর হাতে। তুই যা বলবি তাই হবে? এখন তুই বোঝে শুনে যা বলিস?

অদিতি হয়তো সেদিন আমার কথার সঠিক অর্থ বুঝতে পেরে ছিলো! তাই আমার কথার অবাধ্য না হয়ে মিতুলের লালন পালনের জন্য আমাকে একটা ভালো জায়গা দেখতে বলে।আমি তখন আমার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই তাঁরা মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে মিতুল কে ওখানে নিয়ে যাই।

অদিতি মিতুল কে পেটে ধরেনি ঠিক কিন্তু মায়ের মতোই আদর যত্ন করতো। মিতুলের জন্য ঠিক মায়ের মতো স্নেহ মমতা অন্তরে লালন করতো। আমিও এরচেয়ে বেশি বাঁধা তাকে দেইনি। কিন্তু তোমার সাথে যখন অদিতির বিয়ে হলো তখন আমার মনের মধ্যে এই একটা ভয় সবসময় কাজ করতো।

কোনদিন না জানি তোমার সামনে মিতুলের কথা প্রকাশ হয়ে যায়? তুমি কি তখন সেটা মেনে নিতে পারবে? তুমি কি সেটা বিশ্বাস করতে পারবে? এইসব কথা আমার হৃদয়ে সবসময় তোলপাড় সৃষ্টি করতো!

সেদিন যখন অদিতির কাছে মিতুলের নিখোঁজ হওয়ার খবর পেলাম। আমি তখন এই দিনের ভয়ে মনে মনে কুঁকড়ে গিয়েছিলাম। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যেমন করেই হোক অদিতির না বলা কথাগুলো তোমার কাছে থেকে লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করবো। সেটা করার যথেষ্ট চেষ্টাও আমি করেছি। কিন্তু সত্যিটা হয়তো কখনো গোপন থাকে না? একদিন না একদিন প্রকাশ হয়ে যায়!

যার জন্য অদিতির ভীষণ বিপদেও আমি ওর সাথে যাইনি। বলেছি মিথিলা কে সাথে নিয়ে যেতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার মেয়ে কে একাই যেতে হয়েছে। সেই কষ্ট আজ-ও আমার হৃদয় কে কুরে কুরে খাচ্ছে। কি করে ভুলবো এমন ব্যাথা আমি! যদি আর কখনো ওঁকে খুঁজে না পাই? আমি কি বলতে পারি! তাই চুপ করে রইলাম।

আজও দেখো সত্যিটা যখন তুমি জানতে পারলে। তখন তুমি মনের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভে ফেটে পড়ে আমার সামনে জবাব চাইতে দ্বিধা করোনি? ভেবে দেখো কেউ কিন্তু এখনো তোমাকে সরাসরি বলেনি, মিতুল অদিতির সন্তান! তবুও কিন্তু তুমি হয়তো নিজের অজান্তেই ভেবে নিয়েছো মিতুল অদিতির সন্তান! অদিতি তোমার সাথে বেঈমানী করেছে?

এখন যখন কথাটা তুমি জেনেই গেছো। তাই সতি কথাটা তোমার সামনে তুলে ধরলাম। এখন বিশ্বাস করা আর না করা সম্পূর্ণই তোমার কাছে? তিনি আমার হাতে একটা কাগজের টুকরো দিয়ে বললেন, এখানে আইরিনের বাবা-মায়ের ঠিকানা লেখা আছে। তুমি চাইলে যাচাই করে আসতে পারো?

আমার আর কিছু ভালো লাগে না। কে কি মনে করলো? আজ আর তাতেও আমার কিছু যায় আসে না। আমি আমার অদিতি কে খুঁজে পেলেই সন্তুষ্ট হবো। ওকে বুকের মাঝখানে জড়িয়ে রাখবো আজীবন। ওঁকে আগলে রাখতে পারলেই আমার হৃদয়ে প্রশান্তি মিলবে। বাবা! আর কিছু চাই না আমার।

আমি কাগজের টুকরোটা উনার হাতে দিয়ে বললাম, আমি ভীষণ লজ্জিত আম্মা! এটা নিয়ে যাচাই করতে গিয়ে আমি অদিতি কে কষ্ট দিতে চাই না। কখনো সে ফিরে এসে এই কথা শুনতে পেলে তার হৃদয়ে প্রচন্ড আঘাত পাবে। আমি তখন কোন মুখে তার সামনে গিয়ে দাঁড়াবো? আমিও আজ থেকে মিতুলের বিষয়টা মেনে নিলাম।

পরের দিন সকালেই লিটু আমাকে ফোন করে বললো, মিতুলের আয়া খুব বেশি কিছু জানে না। তার দায়িত্ব ছিলো বাচ্চাটাকে দেখাশোনা করা। কে বা কারা মিতুল কে অপহ*রণ করেছে এর বিন্দুবিসর্গও তার জানা নেই।

আরও কিছু কথা তোর সাথে আছে। তাই তোর সাথে একান্তে কিছু কথা বলার প্রয়োজন আছে। জিজ্ঞেস করলাম কোন সময়? লিটু বললো আজ রাত আটটার সময়। জিজ্ঞেস করলাম কোন জায়গায় দেখা করতে চাস? লিটু একটা কফি শপের ঠিকানা দিয়ে আমাকে সেখানে আটটার আগেই যেতে বললো।

আমিও কথামতো রাত আটটার আগেই সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলাম। কফিশপে প্রবেশ করতেই লিটুর হাতছানি দেখে দোকানের এককোনায় ওর পাশে গিয়ে বসে পড়লাম।

জিজ্ঞেস করলাম, অদিতির কোন খোঁজ পাওয়া গেল? লিটু বললো, ঠিক পাওয়া যায়নি। আবার পাওয়া গেছেও বলতে পারিস! জিজ্ঞেস করলাম এমন কথার মানে কি? লিটু বললো, এক সোর্স থেকে জানা গেছে আশেপাশের এক এলাকায় অদিতি কে দেখা গেছে।

কিন্তু পরে অনেক খোঁজ করেও তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। আমাদের লোকজন সেই জায়গায় পাহারা দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বাইরের লোকজন তার চেহেরাটা ঠিক মতো চিনতে পারবে না! জিজ্ঞেস করলাম কেন? লিটু হেসে সহজ কন্ঠে বলে, কারণ যে দোকানে তাঁকে দেখা গেছে সেখানে কোন কারণে তাঁকে নেকাব খুলতে হয়েছিল। তাই সেই দোকানের লোক তার চেহেরাটা দেখতে পেয়েছিলো।

কিন্তু সচারাচর এখন সে নেকাব পড়েই চলাচল করে মনে হচ্ছে আমার। তাই অপরিচিত মানুষের কাছে তার চেহেরাটা অপরিচিত হয়েই থাকার কথা। এখন তোকে যে জন্য ডেকেছি, সেই কথা বলি! আমি জিজ্ঞেস করলাম কি কথা? লিটু দ্বিধাবোধ করছে মনে হলো। আমি তাই দেখে বললাম তুই পুলিশের লোক। সেখান থেকেই কথাটা বলে ফেল!

লিটু বলে, আমাদের ধারণা অদিতি কে খুঁজে পেলেও তোর খুব একটা উপকার তাতে হবে না! এটা অবশ্য আমার ধারণা! আর সবার ধারনার ওপর ভিত্তি করেই অবশ্য আমার এই ধারণা হয়েছে।

কারণ অদিতি কে মনে হচ্ছে কেউ অপহ*রণ করে নি। কারণ সে স্বাধীন ভাবে নেকাব পড়ে শহরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর নেকাবটা অন্য কারও জন্য পড়ছে না সে! আমাদের কাছে থেকে নিজের অবস্থান ও নিজেকে লুকিয়ে রাখতেই সে এই নেকাব পড়ে বেড়াচ্ছে!

অপ*হর*ণ হলে কি এভাবে ঘোরাঘুরি করতে পারতো? না-কি কোন অপহরনকারী এভাবে ওঁকে ছেড়ে নিশ্চিন্ত ভাবে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকতো?

আমি আশ্চর্য হয়ে লিটুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই কথার মানে কি?

লিটু যেতে যেতে বলে, সেটা তুই নিজের মনের কাছে জিজ্ঞেস করে দেখ! কি হতে পারে?

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here