#খোঁজ ৭ম_পর্ব
লেখক মোঃ কামরুল হাসান
অদিতি কক্সবাজারে প্লেনে করে পৌঁছে ছিলো।পুলিশ সি সি টিভির ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হলো। পুলিশের লোকজনের আসার কিছুক্ষণ পরেই আমি ও আমার শ্বাশুড়ি কক্সবাজারে এসে উপস্থিত হলাম।
পুলিশের লোকজন যেমন বুঝতে পারছেনা, অদিতি হঠাৎ করে প্লেনে করে কেন কক্সবাজারে গেলো? সময় বাঁচাতে না-কি নিজেকে সাধারণ ভাবে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে? আমারও ঠিক একই প্রশ্ন!
পুলিশের ধারণা সে ইচ্ছে করেই নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছে। কারণ সি সি টিভির ফুটেজ দেখে বারবার তাই মনে হচ্ছে। সে তার মুখটি যথেষ্ট আড়ালে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরে-ও কয়েক জায়গায় ঠিক সে ধরা পড়ে গেছে!
নিজেকে লুকিয়ে রাখার কি কারণ থাকতে পারে? তা কেউ বুঝতে পারছে না। তবে কি অদিতি কারও সাথে ইচ্ছে করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে! কিন্তু কেন? সেটাই এখন সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে! কারণ হঠাৎ এমন কি হলো যে অদিতি আমাকে ছেড়ে অন্য আরেকজনের হাত ধরে নিখোঁজ হওয়ার চিন্তা করতে পারে? তেমন কিছুই তো আমাদের মধ্যে হওয়ার কথা না!
যদিও পুলিশের শেষ কথাটায় আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে। কিন্তু কারও মুখ বন্ধ করে রাখার ক্ষমতা আমার নেই! তাই চুপ করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সেই কথাটা আমাকে হজম করতে হলো।
আর মিথিলার দেখা সেই ছোট্ট মেয়েটির কথাটা কতটুকু সত্যি তা বোঝা যাচ্ছে না একেবারে। এই প্রশ্নের জবাব একমাত্র অদিতির পক্ষেই দেওয়া সম্ভব! কারণ বাস্তবে আদৌ মেয়েটির কোন অস্তিত্ব আছে না-কি সম্পূর্ণ বানানো কাহিনি এটা? সেটা নিয়েও পুলিশের মতো আমিও অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছি।
যদি মেয়েটার কোন অস্তিত্ব থেকেই থাকে। তবে, কি তার পরিচয়? কোথায় তার বাড়ি ঘর? সব মিলিয়ে মেয়েটি যেনো এক রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার সামনে!
অনেক খোঁজ করেও তেমন কোন বাচ্চা মেয়ের সন্ধান পুলিশ বের করতে পারেনি। তাই এখন অদিতির খোঁজ করাটাই পুলিশের একমাত্র লক্ষ্য।
লিটু আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করে, আচ্ছা একটা কথা সত্যি করে বলতে হবে তোকে! জিজ্ঞেস করলাম কি কথা? লিটু একটুখানি ইতস্তত করে বলে, অদিতির সাথে তোর সম্পর্ক কি সত্যিই ভালো ছিলো? আমি জিজ্ঞেস করলাম, একথা কেন বলছিস? তোদের ধারণা কি অদিতি আমাকে ছেড়ে অন্য কারও সাথে পালিয়ে গেছে! হুম ঠিক তাই!
তোরা এই বিষয়ে এতোটা নিশ্চিত করে বলছিস কিভাবে? লিটু আমার কাঁধে একটা হাত রেখে বলে, শোন আমি জানি নিজের বউয়ের বদনাম শুনতে কারোরই ভালো লাগে না! কোন স্বামীই মনেপ্রাণে চায় না, তার বউয়ের বদনাম লোকের মুখে মুখে ঘোরে ফিরুক।
কিন্তু তবুও একটা কথা ভেবে দেখ, আমাদের সমাজে এরকম ঘটনা কিন্তু এখন অহরহ হচ্ছে! তুই কি কখনো অদিতির মধ্যে তেমন কোন লক্ষ্মণ দেখতে পেয়েছিলি? মানে, কারও প্রতি তার মোহ! আমি একটু রাগান্বিত হয়ে বললাম, আমি ওর মাঝে এমন কোন লক্ষ্মণ দেখতে পাইনি। আর পাওয়ার কথাও না! কারণ আমরা দু’জনেই একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। তাই এমন কথা ভাবাও অন্যায়!
আমার বাবা-মা এমনকি কোন আত্মীয় স্বজনদের কারও এই বিয়েতে মত ছিলো না। তারা কেউ বিয়েতে আসেও নি। আমি আমার বন্ধুবান্ধব নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে এনে আমাদের বাড়িতে তুলেছি অদিতিকে। এমনকি এখনো পর্যন্ত আমার বাবা-মা দুজনেই অদিতির সাথে স্বাভাবিক হতে পারেনি। অদিতি একরকম শুধু আমার ভালোবাসার কারনেই সেই বাড়িতে এখনো টিকে আছে।
তবুও কি তুই বলবি অদিতি এতোকিছুর পরেও আমার সাথে বে*ঈমানী করতে পারে? লিটু জবাব না দিয়ে কি যেনো ভাবতে থাকে। আমিই বললাম, যদি তবুও অদিতি কারও সাথে পালিয়ে যেতো তবে কেন মিথিলার কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিল? সে কি তবে প্রমাণ রেখে পালিয়ে যাওয়ার প্ল্যান করেছে?
হতেই পারে এমনটা! সে সবাইকে বোঝাতে চেয়েছে যে, কোন একটা বাচ্চা মেয়েকে মুক্ত করতে এক অজানা বি*পদের মধ্যে ছুটে গেছে সে! কিন্তু যখন আর ফিরে আসবে না। তখন সবাই ভাববে সেখানেই তার কোন ক্ষতি হয়েছে। তাই ফিরতে পারেনি! নিজের উপর থেকে দোষ মুক্ত করার জন্য এরচেয়ে ভালো বুদ্ধি আর কি হতে পারে? কেউ তখনো অদিতির দোষ দিবে না। সে সারাজীবন নিখোঁজ হয়েই থাকবে!
লিটুর কথা শুনে আমার মনে হচ্ছিল ওর টুঁটি চে*পে ধরি! কিন্তু নিজেকে সামলিয়ে বললাম, কেসটার কোন কূলকিনারা করতে না পেরে তোরা এখন মন গড়া কাহিনি বানাতে শুরু করেছিস। তাই না?
হয়তো কয়েক দিন অনুসন্ধান চালিয়ে তারপর সাংবাদিক ডেকে এনে বলবি, অদিতি নিখোঁজ হয়নি! নিজের ইচ্ছেতে কারও হাত ধরে পালিয়ে গেছে! এটাই তো! কেসটার ফাইল বন্ধ করতে বুদ্ধিটা তোদের একেবারে মন্দ নয়! নাকি বলিস লিটু?
আমার মনের মধ্যে থাকা ক্ষোভ মুখ দিয়ে ঝরে পড়তে দেখে, লিটু আমার কাঁধে হাত রেখে বলে, শান্ত হ! তুই যেমন ভাবছিস তেমন টাও কিন্তু নয়! তবে অদিতির এই নিখোঁজ হওয়ার পিছনে কারও না কারও নিখুঁত পরিকল্পনা আছে স্বীকার করতে হবে। সেটা অদিতিই হোক বা অন্য যে কেউ!
আচ্ছা আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি! তুই পরে আবার আমার সাথে যোগাযোগ করিস। আমি লিটু কে আর কিছু না বলেই চলে এলাম আমার মামা শ্বশুর বাড়িতে। আপাতত আমি আর আমার শ্বাশুড়ি সেখানেই এসে উঠেছি।
আমার মামা শ্বশুর কে এর আগে আমি আর কখনো দেখিনি। তিনি আমার সাথে সাধারণ কিছু কথাবার্তা বলে চলে গেলেন। এখানে বিভিন্ন জায়গায় তার কয়েকটি ছোটখাটো হোটেল আছে। তিনি তাই সবসময় তার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। বুঝতে পারলাম অদিতির নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনে তিনিও খুব মর্মাহত হয়েছেন। তবুও তাঁকে স্বাভাবিকই মনে হলো।
বারান্দায় বসে আছি এমন সময় আমার মামা শ্বশুরের একমাত্র মেয়ে তিন্নি এসে বলে, ভাইয়া একা একা বসে কি ভাবছেন? তিন্নি আর তরু সমবয়সী। একটুখানি হাসতে চেষ্টা করে বললাম, তোমার আপুর বিষয়টা নিয়ে ভাবছি। ভেবেও কোন কূলকিনারা করতে পারছি না। কি হলো অদিতির? কোথায় গেছে, কেমন আছে সে? ওর কোন বিপদ হয়নি তো! এমন অসংখ্য প্রশ্নের জবাব খুঁজে মাথাটা আমার নষ্ট হতে চলেছে।
তোমার কোন ধারণা আছে তিন্নি! অদিতির সাথে কি হতে পারে? তিন্নি কি যেনো বলতে গিয়েও থেমে গেলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কিছু বলতে চেয়ে থেমে গেলে কেন? তিন্নি কথা ঘুরিয়ে বলে, না তেমন কিছু না ভাইয়া! আপু তো অনেক দিন আগে এখানে ছিলো। তখন আমি ছোট ছিলাম। তেমন কিছু আমার মনে নেই! তবে আপু খুব ভালো ছিলো। আমাকে খুব আদর করতো।
তিন্নির এমন আচরণ দেখে হঠাৎ আমার মনে হলো। অদিতির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা হয়তো তার বিবাহ পূর্ব কোন ঘটনার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে? যদি তাই হয়, তবে ওর কোন আত্মীয় স্বজনরা এই কথা প্রকাশ করবে না আমার কাছে। এখন আমার শ্বাশুড়ির লুকোচুরি খেলার কথাও মনে পরে গেলো আমার। তাহলে অদিতির অতীত জীবনের কোন ঘটনার জের ধরে এই ঘটনার সূচনা হয়েছে?
আমি তাই তৎক্ষনাৎ বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। তিন্নি দের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মোবাইলে অদিতির ছবিটা বের করে দেখলাম। এই ছবিটাই এখন আমার একমাত্র রাস্তা তাঁকে খুঁজে বের করার জন্য। এখানে ওখানে দেখাতে লাগলাম অদিতির ছবিটা। কিন্তু আশেপাশের কেউ অদিতি কে চিনতে পারলো না। দেখেও বলতে পারলো না, কখনো তাকে দেখেছে কিনা?
হতাশ হয়ে ফিরে আসবো এমন সময় একজন মধ্যে বয়স্ক লোক নিজে থেকেই এসে বললো, ছবিটি আরেকবার দেখতে পারি? আমি সাথে সাথে তাকে ছবিটি বের করে দেখালাম। ছবিটা তিনি ভালো করে দেখে বললেন, এই মহিলা কি-না তা ঠিক করে বলতে পারবো না। তবে ঠিক এই রকম একজনকে আমি আমার বোনের বাড়িতে কয়েক বার দেখেছি। মানে আমার বোনের বাড়ির সামনে যে রাস্তা সেখানে তাকে দেখেছি। সাথেই আরেকটা দোতলা বাড়িতে সে মনে হয় থাকে। সেখান থেকেই তাকে বের হতে ও প্রবেশ করতে দেখেছি।
সাথে তার ছোট্ট একটা মেয়েও ছিলো। ভীষণ কৌতূহলের সাথে জিজ্ঞেস করলাম, কতদিন আগে দেখেছেন তাকে? লোকটা কপাল ভাজ করে একটুখানি ভেবে দেখে বলে, হ্যা তা মাস ছয়েক আগে শেষবার দেখেছি তাকে। এখন অবশ্য সেদিকে বেশি যাওয়া হয় না আমার। জিজ্ঞেস করলাম আপনার বোনের বাড়িটা কোথায়?
ভদ্রলোক বললেন, তারা তো আর সেখানে থাকে না! আমি উত্তেজনা নিয়ে বললাম, না থাকুক! কোন সমস্যা নেই! আমি তো আর আপনার বোনের বাড়িতে যেতে চাচ্ছি না! আমি সেখানে যাবো ছবির এই মেয়েটাকে খুঁজতে। অবশ্য আপনার বোন সেখানে থাকলে আপনার সাথে যাওয়া যেতো। না-কি বলেন? জ্বি, জ্বি, তা তো অবশ্যই।
আচ্ছা বাচ্চাটি কি আপনার দেখা সেই মহিলার সাথে সবসময় থাকতো? হ্যা আমি যতোবারই উনাকে দেখেছি। তার সাথে একটা বাচ্চা মেয়ে থাকতো। বাচ্চাটি বেশ মিষ্টি দেখতে ছিলো তো! তাই আমি দেখলেই তাঁকে খেয়াল করতাম।
আচ্ছা ভাই আপনার এই উপকারের কথা আমি মনে রাখবো। এখন ঠিকানাটা একটু দিবেন প্লিজ! জ্বি, জ্বি! লিখে নিন আমি বলছি। ঠিকানা লিখে লোকটার কাছে বিদায় নিয়ে তিন্নিদের বাড়িতে ফিরে এলাম।
রাত হয়ে গেছে তাই আর যেতে মন চাইলো না। সারাদিন প্রায় অদিতির ছবিটা নিয়ে শহরময় ঘুরে রীতিমতো ক্লান্ত ও দূর্বল লাগছে আমার! তাই সকালেই সেখানে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
সকালে উঠেই সেই লোকটার দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী রামুতে গিয়ে পৌঁছে একটা অটো নিয়ে নিলাম। অটোর ড্রাইভার আমাকে ঠিকানা মতো পৌঁছে দিয়ে গেল আমার কাঙ্ক্ষিত জায়গায়। সেখানে একটি পানের দোকানে জিজ্ঞেস করলাম তাঁরা মিয়ার বাসাটা কোথায়? দোকানী হাতের ইশারায় দেখিয়ে দিলো আরেকটু সামনে যান। আরও কয়েকজনের কাছে জিজ্ঞেস করে অবশেষে পৌঁছে গেলাম তাঁরা মিয়ার বাড়িতে।
কলিং বেল টিপে দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। একটু পরে দরজা খুলে একজন বয়স্ক লোক আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে কাকে চাই। জিজ্ঞেস করলাম এটা তো তাঁরা মিয়ার বাড়ি তাই না?
লোকটা আমার দিকে ভালো ভাবে তাকিয়ে বলে, কিন্তু আপনি কে? আমার তো মনে হয় না, এ-র আগে কখনো আপনাকে দেখেছি? জ্বি, আমি এই প্রথম এখানে এলাম। তাঁরা মিয়াকে কি দরকার?
জ্বি, তার সাথেই বলবো। লোকটা ভ্রু কুঁচকে বলে, আমি তাঁরা মিয়া! কিন্তু আমার সাথে আপনার কি দরকার? লোকটার আচরণ দেখে অবাক হলাম। একবার ভিতরে এসে বসতেও বললো না।
যাইহোক, আমি তাঁকে অদিতির ছবিটা দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই মেয়েটা কে চিনেন? লোকটা আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেনো আমি কোন ভ*য়ংকর প্রাণী! বললো, আপনি এখন আসুন! আমি জিজ্ঞেস করলাম চিনেন কি-না সেটা তো বলুন! লোকটা বললো ভাই আমি কোন ঝামেলায় পড়তে চাই না। আপনি দয়া করে আসুন! অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করে দেখুন! এই বলে লোকটা মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলো।
লোকটার এমন ব্যবহারে আমি হতাশ হলাম। আরও কয়েকজন কে জিজ্ঞেস করতেই একজন বললো, মাঝে মাঝে ঐ বাড়িতে আসতে দেখেছি উনাকে। সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে দরজায় নক করতেই একজন মহিলা দরজা খুলে দিয়ে জিজ্ঞেস করে কাকে চাই?
আমি ছবিটি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, নিশ্চয়ই চিনেন তাকে? মহিলাটি চুপ করে রইলো। বুঝতে পারলাম নিরবতাই সম্মতির লক্ষ্মণ। বললাম অদিতিকে ডাকুন! মহিলাটি তবুও চুপ করে রইলো! তাঁকে একটুখানি ভড়কে দিতে বললাম, মিথ্যা বলার চেষ্টা করে কোন লাভ নেই। অনেক সমস্যায় পড়বেন কিন্তু আপনি!
একরকম জোর করেই তার ঘরে প্রবেশ করলাম। ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম অদিতির সাথে মিতুলের ছবি দেওয়ালে টাঙানো। ছবির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ওরা কোথায়? ওদেরকে ডাকুন! স্যার এই আপা তো এই বাড়িতে থাকে না। কোথায় থাকে সে? জানি না স্যার!
আগে মাঝে মাঝে আইসা মিতুল দিদি মনিকে দেইখা যাইতেন। তবে মিতুল কে ডাকেন! জ্বি স্যার! দিদি মনিও তো আর এখানে থাকে না। কোথায় থাকে সে? জানি না স্যার!
সেটা তো আমিও জানি! তাই সেই প্রসঙ্গে আর কোন কথা জিজ্ঞেস করলাম না। জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা তবে এটা বলেন, মিতুল আর অদিতির মধ্যে কি সম্পর্ক? অদিতি আপা কোন এক এনজিওর চাকরি করে। তবে মিতুল আপনার কি হয়? আমি ছোট থেইকা দিদি মনির দেখাশোনা করি।
তবে মিতুল আপনার কেউ হয় না, তাই তো? জ্বি স্যার! মিতুলের খরচ কে দেয়? পাশের বাড়ির তাঁরা সাহেব! আচ্ছা মিতুলের বাবা-মা কে? আমি এই সবের কিছু জানি না স্যার!
আমারে যাইতে দেন! হঠাৎ খেয়াল করলাম ঘরের জিনিস পত্র সব বেঁধে গোছগাছ করা শেষ। আমি যদি এখন এসে না পৌঁছাতাম তবে এই মহিলা পালিয়ে যেতেন! বললাম আরেকটা প্রশ্নের জবাব দিলেই আমি চলে যাবো। কি বলবেন? তারাতাড়ি বলেন স্যার!
মিতুলকে আপনার এখানে কে নিয়ে এসেছলো? তাঁরা সাহেব আর একজন সুন্দর মতো মহিলা! মোবাইল থেকে একটা ছবি বের করে উনাকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, দেখুন তো সে কি-না?
মিতুলের আয়া ছবিটা দেখেই চিনতে পেয়ে বলে উঠে স্যার ইনিই সেই মহিলা! এই কথাটা শুনার পর থেকে বুঝতে পারলাম, আমার শ্বাশুড়ি এতোদিন ধরে শুধু শুধু লুকোচুরি খেলেনি!
চলবে,,,