কেন আমি ডাকি তারে- পর্ব ১২

0
781

কেন আমি ডাকি তারে -১২

নিতু কি করছিলে? – তুহিন জিজ্ঞেস করল।

কিছু না৷ – নিতু সংক্ষেপে উত্তর দিলো।

এতক্ষণ দেরী হলো, তোমার তো এখন সকাল!

ব্যস্ত ছিলাম।

সেটাই তো জিজ্ঞেস করলাম, কিসের এত ব্যস্ততা!

তুহিন, কাল থেকে তোমার সময় হয় নি আমার সাথে একটু কথা বলার৷ এতক্ষণ পরে কল করে তুমি আবার কৈফিয়ত চাইছ! আশ্চর্য!

নিতু, তুমি কিছুটা বদলে গেছ, তুমি জানো আমি এখানে কত ঝামেলার মধ্যে থাকি! তারপরেও এমন করো!

তুহিন এমন ভাবে বলল, যেন সব দোষ নিতুর।

নিতু বিষয়টা নিতে পারল না। ও চিৎকার করে বলল, আমাকে কাজ দেখাবা না, তুমি একাই বিদেশ যাও নাই, আমিও অশিক্ষিত না। দেখ তুহিন, তোমার যদি আমার বিষয়ে দ্বিধা থাকে, সেটা আমাকে জানিয়ে দিবা।
অকারনে আমাকে ঝুলিয়ে রাখবা না।

তুহিন বলল, তুমি কি ঝুলে আছ, বিয়ে করে স্বামীর সংসারে দিব্যি ভালো আছ।

নিতু বলল, ভালো আছি না কিভাবে আছি, এটা তোমার জানার কথা! তুমি বলেছ বলেই বিয়েটা করেছি।

দেখ নিতু, একটা ছেলে তোমার স্বামী, তার সাথে রুম শেয়ার করছ, তাকে নিশ্চয়ই তুমি খালি মুখে রাখতে পারবে না! কিছু না কিছু তাকে দিতেই হবে! আমি কি এসব কথা কখনো বলেছি!

নিতু বলল, শাট আপ তুহিন। তুই আর আমাকে কল করবি না। একদম না! রেহানের বিষয়ে আমি একটাও বাজে কথা এলাউ করব না।

বাহ, এই তো, আসল কথা বের হয়েছে,
ভালো ঘর, বড়লোক জামাই পেয়ে সব ভুলে গেছ, আর দোষ সব আমার!

নিতুর মনে হলো, তুহিন কেমন পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করছে৷ অকারণে তাকে ব্লেম করার চেষ্টা করছে। নিতু ফোন কেটে সাইলেন্ট করে খাটের উপর বসে পড়ল।

কিছুক্ষণ পরে নিতুকে ডাকতে এলো রেহানের ছোটো বোন। সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয় নি।

নিতুকে দেখে বলল, কি ব্যাপার! সকাল সকাল শাওয়ার নিলে৷ আরেকজন অফিস না গিয়ে ড্রয়িংরুমে বসে আছে! প্ল্যান কি তোমাদের!

নিতু শুকনো হাসি দিলো। খেতে ইচ্ছে করছে না, এখন রেহানকেও ডাকা যাবে না।

নিতু বলল, তুমি যাও আমি আসছি৷

নিতুর প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে। মনে হচ্ছে চিৎকার করে কাঁদলে একটু হালকা লাগত। রেহান রুমে এসে ঢুকেছে কোনো কারনে। নিতু ওয়াশরুমে ঢুকে বেসিনের কল ছেড়ে কাঁদতে লাগল। বেশ কিছুক্ষণ পরে রেহান নক করল৷ নিতু, বাইরে এসো।

নিতুর মনে হচ্ছে, ওর মরে যাওয়া উচিৎ! এত ভালোবাসা, এত অপেক্ষা যার জন্য, সে এমন করল, এই কষ্ট কাকে বোঝাবে! রেহান, সে তো আরেকজনের বাকদত্ত পুরুষ! হ্যাংলার মত রেহানকে জড়িয়ে ধরার কোনো মানে হয় না।
নিতু এখানে থাকবে না। বাপের বাড়িতে চলে যাবে। তুহিনের জন্য আর অপেক্ষা না।

নিতু, দরজা খোলো।

নিতু দরজা খুলে বাইরে এলো৷ চোখ মুখ টকটকে লাল।

কি হয়েছে?

কিছু না৷ একটু থেমে ফুপিয়ে, নিতু বলল, আমি একটু আমাদের বাসায় যাব।

রেহান বলল, ঠিক আছে। এখন না৷ আমি দিয়ে আসব বিকেলে৷ ওকে?
একটু নরমাল হও।

নিতু ঘাড় নাড়ল।

ছাদে যাব?

এখন!

হুম!

এখন তো অনেক রোদ!

রোদেরও আলাদা সৌন্দর্য আছে, মেঘলা দিনে বোঝা যায়।
চলো, ঘুরে আসি।

নিতু চোখ মুখ মুছে তৈরি হলো৷

রেহান নিতুকে নিয়ে বের হয়ে আগে ব্রেকফাস্ট করল। তারপর কফিমগ নিয়ে দুজন ছাদে উঠল।

চলবে

শানজানা আলম

পর্ব এলোমেলো নম্বর হলেও সিরিয়ালি আসছে। প্রতিদিন পেজে খেয়াল রাখলেই হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here