#কৃষ্ণপক্ষের_চাঁদ
#পর্ব :১৫(something special)
#JannatTaslima(writer)
.
.
.
–আমার ভাবীতো ভালোই শাড়ি পরতে জানে।
চাঁদনি হাসিমুখে কাউকে শুনিয়ে হয়তো কথাটা বললো।সেই সময় ডাইনিংয়ে ঠাস করে আওয়াজ পেলাম।উকি দিতে দুটি জিনিস চোখে পড়লো, ছোট ফুপুর বড় বড় পায়ে রুমে হেটে যাওয়া আর বেচারা ফ্রিজের কাপাঁকাপিঁ।চাঁদনিকে একটা মিষ্টি হাসি হাদিয়া দিলাম,কারণ তার মুখনিসৃত এই ‘ভাবী’ সম্মোধনটা গতকাল রাত হতেই আমার নিকট শ্রেষ্ঠ শব্দ বলে মনে হচ্ছে। ওর ‘ভাবী’ ডাকটার জন্যই গতকাল ঐ অসভ্য লোকটার কবল থেকে ছাড়া পেয়েছি।ওর একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য।তবে এই শুভ কাজটা আমি ভেতরে ভেতরে সেরে নিলাম।কারণ মুখে ধন্যবাদ দেওয়ার সাধ আমার গতকাল মিটে গেছে।
–একি তুমি শুধু শাড়ি পরেছো সাজগোজ করো নাই। সবাই চলে আসবেতো।
আমি ম্লান হাঁসি দিয়ে বললাম,
–তার আর দরকার নাই। আমি এভাবেই ঠিক আছি।
চাঁদনি মুখ ভেঙ্গিয়ে বললো,
–কচু ঠিক আছো।কত শখ করে তোমার জন্য শাড়িটা আনলাম, তুমি সকলের সামনে সুন্দর করে সেজে যাবে বলে।আর তুমি সব আশায় পানি ফেলতে চাচ্ছো।আর কোনো কথা না এক্ষুনি ভিতরে চলো,আমি তোমাকে সাজিয়ে দিবো।
চাঁদনি আমায় ঠেলেঠুলে অল্প সাজিয়ে দিলো।
~~~~~~~~~~
রিসিপশন নামধারী ছোটখাটো আয়োজনটা খুব ভালোভাবেই সম্পন্ন হলো।পুরো আয়োজনটা সামলানোর গুরু দ্বায়িত্ব পালন করেছেন, চন্দ্রদের বিশেষ সহযোগী মান্না খালা।ওদের মা মারা যাওয়ার আগ থেকেই তিনি এ বাসায় কাজ করেন।তার অসুবিধার কারণে এ বাসায় রাতে থাকতে না পারলেও,দিনে একবেলা হলেও এসে সবকিছু সেরে দিয়ে যান।বলা যেতে পারে,তিনি এ পরিবারেরই কেউ।চন্দ্রের আমন্ত্রণে সাড়া প্রদানকারী লোকসংখ্যা ছিলো বেশ। সবার মধ্যে আমাদের বিয়ে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া নজরে এলো। নিশুর আব্বু আম্মুও এসেছিলেন, আপু আমায় একটা শাড়ি উপহার দিলেন।আগের মতো আন্তরিকতার একটু ঘাটতি হলেও,আমার এতটুকুতেই প্রাণ জুড়িয়ে গেল।চন্দ্র আমাদের বাড়িতে আর তার মামাকেও দাওয়াত করেছিলো।তাঁরা কেউই আসেন নি।তাতে এই ধূসর মানবটার মনে কিঞ্চিৎ খারাপ লাগা কাজ করেছিলো বলে,মনে হয় নি আমার।কিন্তু আমার খারাপ লেগেছিল, আমার এমন বিশেষ দিনে আমার প্রাণের বান্ধবী(সানজু) আর প্রিয়জনেরা(মা ও ভাইয়েরা)অনুপস্থিত ছিলো বলে।ফুপুরা বিকেলেই চলে গিয়েছিলেন।তাঁরা আমায় বলে যাওয়ার প্রয়োজন মনে না করলেও,আর কোনো কটু কথা বলারও সাহস পান নি।ভালো লাগা আর খারাপ লাগার মধ্যেই দিনটা কাটলো।
==============
ঘড়ির কাটা বারোটার ঘর ছুঁই ছুঁই। সব মেহমান বিদায় করে শেষে সবকিছু গুছিয়ে রুমে আসতে আসতে রাত বারোটা প্রায় হয়ে গেলো।পরনে এখনো সেই বেগুনি শাড়ি, সাজসজ্জা মুছে গেছে বললেই চলে।রুমে এসেই চোখ পরলো চন্দ্রের উপর।ওয়শরুম থেকে বেরিয়েছেন মাত্র।ফ্রেশ হয়ে আসলেও সকালের পরিহিত ধূসর বর্ণের পাঞ্জাবি এখনো খুলেন নি।অধিকাংশরা আটটার দিকে চলে গেলেও,ওনার তিন চারজন কাছের বন্ধুকে রাতের খাবার না খাইয়ে ছাড়লেন না তিনি।ওনাদের এগিয়ে দিয়ে ফিরেছেন কিছুক্ষণ আগে।আমি শাড়ি পাল্টানোর উদ্দেশ্যে আলমারির দিকে এগুতে গেলেই ওনার ডাক পরে,
–আধারিকা,,,
–কিছু বলবেন,(পেছন ফিরে)
–হুম, টেবিলের ওপর তাকাও। (হাত টেবিলের দিকে ইশারা করে)
— কী এটা?এভাবে কাপড় দিয়ে ঢাকা।(প্রশসূচক দৃষ্টিতে জানতে চাইলাম)
–গিফট,
আমি অবাক স্বরে বললাম,
–গিফট, কীসের গিফট।
চন্দ্র আমার পাশে দাড়িয়ে, আমার ন্যায় টেবিলের উপর দৃষ্টি রেখে বললেন,
–আমাদের বিয়ে কদিন আগে হলেও।আজ কিন্তু অফিসিয়ালি সবার সামনে এটা প্রকাশ হলো।তাই ভাবলাম আজকের দিনটাকে একটু স্পেশাল করবো।তাই তোমার জন্য এই ছোট্ট গিফট।
আমি বাকহীন জিজ্ঞাসু নয়নে চন্দ্রের পানে চেয়ে রয়েছি।ওনি দুই হাত দিয়ে আমার কাঁধ স্পর্শ করে টেবিলের সামনে নিয়ে আসলেন।এবং হাত দিয়ে ইশারা করলেন কারুকার্যে পরিপূর্ণ কাপড়খানা সরাতে।কাপড়খানার অভ্যন্তরীণ রহস্য এখনো আমার আন্দাজের বাহিরে।বাহির দিকটা অবলোকনে উঁচু স্তুপ ব্যতীত কিছুই ঠের পাওয়া যাচ্ছে না।আমি কাঁপা কাঁপা হাতে সরাতে গিয়েও একবার তার পানে চাইলাম।ওনি আবারও চোখের ইশারায় অসম্পূর্ণ কাজটা সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিলেন।অবশেষে সকল রহস্য ভেদ হলো।কাপড়খানা সরাতেই আমার এই সেমিস্টারের সকল বইপত্র, নোট নজরে এলো।আমি অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে সেগুলোই দেখে চলেছি।ওনি আমার ধ্যান ভেঙে দিলেন,
–লিস্ট অনুযায়ী দেখো সব কিছু ঠিক আছে কী না।কোনো কিছু বাদ পড়লে বলো।এমনিতেই অনেক দেরী হয়ে গেছে।এসব চাকরি বাকরির পেছনে না ছুটে এখন পড়ালেখায় একটু মনযোগ দাও।তুমি এখন আমার দ্বায়িত্ব।সো, তোমার সব খরচ বহনের দ্বায়িত্বটাও এখন আমার।তাই আজ থেকে এসব বিষয় নিয়ে সব চিন্তা শুধুই আমার।বুঝলে,
চন্দ্রের এসব কথাবার্তার বিপরীতে আমার ঠোঁট না নড়লেও, চোখের পল্লব অনবরত নড়ে যাচ্ছে।ওনি আমার দুই গালে হাত রেখে বললেন,
–এখনো আরো অবাক হওয়া বাকি ডিয়ার। তাই দেরী না করে, ফ্রেশ হয়ে সোজা ছাঁদে চলে এসো।আমি তোমার অপেক্ষায় আছি।আর শাড়িটা কিন্তু খুলবে না একদম,ঠিক আছে।
চন্দ্র বিনা বিলম্বে প্রস্থান করলেন।আর আমি মূর্তির ন্যায় এখনো দন্ডায়মান আছি।কীসব বলে গেলেন ওনি।এগুলো কী সত্য! না শুধুই আষাঢ়ে গল্প।আমি একবার টেবিলে রাখা বইয়ের স্তুপের দিকে আরেকবার দরজার দিকে তাকিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম।নতুন করে আবার সাজুগুজু করতে মন চাইছে না।তাই শাড়ি ভালো ভাবে পরিপাটি করে, দীপ্ত পায়ে প্রথম বারের মতো নিশিরাতে ছাঁদে অবস্থান করলাম।চিলেকোঠার দড়জা পেরুতেই, বহুল আকাঙ্ক্ষিত সেই ভরা পূর্ণিমার সাথে সাক্ষাৎ হলো।পুলকিত নয়নে গগণপানে চোখ বুলালাম, আকাশ জুড়ে তারার মেলা,নেতৃত্বে আছে গোলাকার মস্ত বড় একটা চাঁদ।এসব দেখে হৃদয়ে আনন্দের ঢেউ খেলে গেলো।ঠোঁটে হাঁসি নিয়ে সামনে দাড়িয়ে থাকা দ্বিতীয় চাঁদের দিকে তাকালাম।সেও আমার দিকে মুগ্ধ নয়নে চেয়ে আছে।আসলে চন্দ্র বলি আর চাঁদনি বলি দুজনেরই নাম মানুষের সাথে মিলিয়ে রাখা হয়েছে বলতে হবে।দু’জনই চাঁদের মতো স্নিগ্ধ, অপূর্ব।চাঁদনির ক্ষেত্রে নিসংকোচে এ শব্দদ্বয় ব্যয় করলেও,চন্দ্রের প্রতিতো অসহ্য আর অভদ্র এ দুই শব্দই আমার মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয়।কিন্তু কাকতালীয় ভাবে আজ তার ব্যতিক্রম ঘটলো।ওনি ধীর পায়ে আমার সামনে আসলেন,ছাঁদে থাকা ঝুলন্ত দোলনার দিকে ইশারা করে বললেন,
–পচ্ছন্দ হয়েছে।
আমি শুধু অবাকতার সঙ্গে মাথা উপর নিচ করলাম।কারণ এখানে অপচ্ছন্দ হওয়ার কিছুই নেই, পুরো দোলনাটাই শুভ্র রাঙা ফুলে সুসজ্জিত। আমি কৃতজ্ঞতার সহিত তার পানে চেয়ে বললাম,
–আপনি এসব আমার জন্য করেছেন।
–হুম, শুধু তোমার জন্য। (তার প্রতিত্তোরে চোখের কোণায় আনন্দ অশ্রু ভীর জমালো।)
–আপনি আমার জন্য এতো কিছু করলেন, কিন্তু আমি আপনাকে বিনিময়ে কিছুই দিতে পারবো না।নিজে রিজাইন দেওয়ায় স্কুলের বেতনটাও দেয় নি।
বলে মন খারাপ করে ফেললাম।ওনি স্বল্প হেসে বললেন,
–তুমি কিন্তু চাইলে অনেক কিছু দিতে পারো।ইচ্ছে করলে কালকের স্টাইলে ধন্যবাদও দিতে পারো।
কথাটা শ্রবণমাত্র আমার গালদ্বয় গরম হতে শুরু করলো। ওনি আবারো বললেন,
–এটা যদি দিতে না পারো।তবে আরেকটা জিনিস চাইবো,সেটা দিতে পারবে।
–কী?(মুখেতো বললাম কী,কিন্তু মন বলছে না জানি কোন শেয়ালের গর্তে পা ফেলছি)
চন্দ্র আমার আরেকটু কাছে এসে, আমার গালদ্বয় তার দুই হাতের মুঠোয় পুরে,আমার মুখ তার বরাবর রাখলেন। একজন আরেকজনের চোখের গভীরতায় হারিয়ে যাচ্ছি।অজানা কারণে তার স্পর্শ, চাহনি আমার খারাপ না লাগলেও বুকের ভিতর সংশয়ের দানা বাঁধলো, কী করতে চান ওনি!
আমার সব সংশয়কে দূরে ঠেলে দিয়ে তিনি বলে উঠলেন,
তুমি কী আমাকে একটি
ঘুমহীন রাত দিবে,
আমি তোমাকে একটা
তারা ভরা আকাশ দিবো।
যে আকাশে তুমি
চাঁদ মামাকে টিপ দিতে পারবে,
জোৎসনায় হাত বুলাতে পারবে,
মেঘের বেলায় চড়ে নৌকা বাইতে পারবে,
তারা হাতের তালুতে মিটমিট করতে দেখতে পারবে।
বলো দিবে আমাকে,
একটি ঘুমহীন রাত।
(by Jannat Taslima)
আমি মুগ্ধ চোখে চন্দ্রকে দেখে অবাক হচ্ছি।আর্কিটেক্টরা ভবনের সুন্দর নকশা,লোগো এসব তৈরি করতে পারে জানি।পরন্তু,এতো সুন্দর কবিতা তৈরি করতে পারে তাতো জানতাম না।ওনার এই নিঃসংকোচ আবদারের বীপরিতে খুব করে বলার বাসনা জেগেছে, তার নামে আমার একটি কেন প্রতিটি ঘুমহীন রাতই লিখে দিবো। কেননা,,”তাঁর ছোঁয়ায় দূর হলো আমার সব,
নিকষকৃষ্ণ রাত।
সকল কৃষ্ণে সেইতো আমার,
কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ। ”
মনে বাসনা জাগলেইতো আর মুখ ফোটে বলা যায় না। নিজের কথা নিজের অন্দরমহলেই চেপে রাখলাম।চোখ দিয়ে সম্মতির এক পলক ফেলতেই,
তিনি আমার হাত ধরে গিয়ে দোলনায় বসলেন।
~~~~~~~~
চন্দ্রের কাঁধে মাথা রেখে চন্দ্রবিলাস করছি।সব কিছু যেন নিছক একটা স্বপ্ন মনে হচ্ছে।গ্রাম থেকে আসার পর এই ইট পাথরে ব্যস্ত শহরে কখনো খোলা আকশে জোৎসনা বিলাস করতে পারবো,তা আমার প্রত্যাশার বাহিরে ছিলো।শুভ্র ফুলে সুসজ্জিত ঝুলন্ত দোলনায় দুজনেই দোল খাচ্ছি।যেন মেঘের বেলায় চড়ে নৌকা বাইছি।চারিদিকে উঁচু উচুঁ প্রাচীরে মিটমিট করার কৃত্রিম আলো।যেন এইতো চন্দ্রের সেই তারা ভরা আকাশ।চন্দ্র পকেট থেকে একটা ছোট বাক্স বের করে, আমার হাতের ওপর রাখলেন।আমি আলতো হাতে,বাক্স খুলেতেই।দুটি জোনাকি পোকা বেরিয়ে এলো।যেন হাতের তালুতে তারা মিটমিট করতে শুরু করলো।আমি উচ্চাসিত মুখে চন্দ্রের দিকে মুখ তুলে তাকাতেই, আমার কপালে তার কপাল ছোয়ালেন,যেন আমি চাঁদকে নয় চাঁদই আমায় টিপ দিলো।আর রইলো জোৎসনায় হাত বুলানো বাকি।চাঁদ হতেই তো জোৎসনার উৎপত্তি আর সেই চাঁদইতো,আমি এখন হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে আছি।সব মিলিয়ে স্বর্গীয় সুখ অনূভুত হচ্ছে।এতো সুখকর অনূভুতি গুলোর মধ্যে শঙ্কারও শেষ নেই।কখন না আমার ঘুমটা ভেঙে যায়।চন্দ্রকে দেওয়া আমার এই ঘুমহীন রাত্রিটা মিথ্যে হয়ে যায়।আবেগের বশে মুখ থেকে বেরিয়ে এলো,
–ধন্যবাদ।আমায় এতো সুন্দর উপহার দেওয়ার জন্য।
চন্দ্র বোধহয় কোনো সুযোগ কাজে না লাগিয়ে ছাড়েন না,
–আমার এমন পানসে ধন্যবাদে চলবে না, কালকের মতো বিশেষ ধন্যবাদ দিতে হবে।
এমন কিছু কর্ণপাত হওয়ার পর,আমার কারো প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়ার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের অভিলাষ, দ্বিতীয় বারের মতো আত্মাহুতি দিলো।
!!!!!!!!!!!!!
ভেবেছিলাম এমন রোমান্টিকতার পর, চন্দ্রের সামনে দাঁড়াতেও লজ্জা পাবো।বস্তুত, তেমন কিছুই হলো না।পরদিন থেকেই শুরু হয়ে গেলো, আগের ন্যায় সেই তর্ক বিতর্ক।যার মূল উদ্যোক্তা চন্দ্র নিজেই।আমার সব বাক বিতন্ডা চাঁদনির সামনেই।রুমে প্রবেশ করতেই আমার সব সাহস অতিথি পাখি হয়ে যায়।তার সামনে একা থাকা মানেই আমার হাড় কাপানো জ্বর।তবে ওনি সেটার সুযোগ কখনোই নেন নি।তারমানে ওনি এতোটাও ভালো না,বেফাঁস কথা বলে আমার গাল গরম করতেও ভুলেন নি।এভাবে বাসায় চন্দ্রের সঙ্গে, ভার্সিটিতে প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিতর্ক করতে করতে, আন্তঃবিতর্কের জন্য নির্বাচিত হয়ে গেলাম।আজকে মূল প্রতিযোগিতা চন্দ্র আমার সাথে এসেছেন।কারণ প্রতিযোগিতা আমাদের ভার্সিটিতে নয়, অন্য এক ভার্সিটিতে।যা আমাদের বাসা থেকে অনেক দূরে।চন্দ্র দর্শক সারিতে বসলেও আমার মনে হয়েছিল সে বিপক্ষ দলের প্রধান বক্তার আসনে বসে আছে।তাই তর্কের খাতিরে তর্ক করে চন্দ্রকে হারিয়ে দিলাম।কিন্তু এই প্রথম চন্দ্র আমার কাছে পরাজিত হয়ে,নিজে হাত তালি দিচ্ছেন।হ্যা আমি জিতে গেছি।তবে চন্দ্রের কাছে নয় প্রতিযোগিতায় জিতে গেছি।আর শ্রেষ্ঠ বক্তাও হয়েছি আমি। সত্যিই চন্দ্র আপনার জুড়ি নেই,স্বল্পভাষী, শান্তশিষ্ট, চাপা স্বভাবের, ক্যালকুলেটার দিয়ে গুনে কথা বলা ‘আধারিকা রহমান’কে আপনি শ্রেষ্ঠ বক্তা বানিয়ে দিলেন। এজন্য আপনার আরেকটা ধন্যবাদ প্রাপ্য।অথচ আমি তা দিতে অপরাগ।
প্রতিযোগিতা বিকেলের দিকে শুরু হওয়ায়, ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেল।চন্দ্র অনেক খুশি।আসার সময় মিষ্টিও নিয়ে এসেছেন। বাসায় এসে বাবা আর চাঁদনিকে খবরটা জানাতে তাঁরাও অনেক আনন্দিত হলো।কিন্তু রাতে খেতে বসে, চাঁদনির মুখে একটা সংবাদ শুনে আমার সব খুশি মিইয়ে গেলো।ভেতরের আধারিকা চিৎকার করে বলতে লাগলো,আজ কেন বাসায় থাকলি না।বাইরে যাওয়াটা কী খুব জরুরি ছিলো তোর!!!!!!!!
#চলবে,,,