কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ পর্ব ১০

0
847

#কৃষ্ণপক্ষের_চাঁদ
#পর্ব :১০
#JannatTaslima(writer)




গগন জুড়ে আঁধার নেমেছে।যাকে বলে ভয়াবহ আঁধার। চন্দ্র, তারা অবসর নিয়েছে নাকি। আজ কী তাহলে আবার সেই কৃষ্ণপক্ষ।ঘোর অমানিশায় আচ্ছন্ন কৃষ্ণপক্ষ।চারিদিকে মুক্ত বাতাসের ছড়াছড়ি, হৃদয় শীতল করতে যার একটু স্পর্শই যথেষ্ট।বহুল আকাঙ্ক্ষিত সেই মুক্ত বায়ু আজ এই প্রকৃতিপ্রেমীর হৃদয় শীতল করতে অপরাগ।এসব ভাবতে ভাবতে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে,হাতের মুঠোয় পুরে থাকা জানালার লোহার শিক ছেড়ে বিছানার সামনে চলে আসলাম। ব্যাথাতুর দেহ খানাকে বিছানায় এলিয়ে দিতেও ইচ্ছে হচ্ছে না।বিছানার পাশে অবস্থিত সেকেলে ডেসিন টেবিলের বড় আরশিতে নিজের প্রতিবিম্ব ভেসে উঠছে।ধীর পায়ে সেদিকেই এগিয়ে চললাম। সম্মুখ বরাবর পৌঁছাতেই স্থির হয়ে দাড়ালাম। এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি নিজের প্রতিচ্ছবির পানে।কী আছে এই নারী দেহে,যা এতো লোভনীয়।কই অযত্নে লালিত ক্লান্তি ভরা একখানা মুখ, নির্ঘুম রাত্রি যাপনের ফলে কালি ভরা চোখ, সদ্য মিলিয়ে যাওয়া ব্রনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দাগ,রঙতো বেশি বলতে গেলে বড়জোড় উজ্জ্বল শ্যামলাই ,মায়াবী চেহারাটা যেন লুকোচুরি খেলছে আর তো তেমন কিছুই নেই।এখানেতো রুপ-ই নেই তাহলে রুপের অহংকার আসবে কোত্থেকে।বিছানায় ভাজ করে রাখা হাজার দু-এক দামের লাল বেনারসি পরখ করছি আর আরশিতে নিজের প্রতিবিম্ব দেখে ভাবছি, এটাতো আমার দেহ আমি এখানে লাল বেনারসি জড়াবো না সাদা কাফন মুড়াবো,এটা একান্ত আমার ইচ্ছা।
কিন্তু তাতেই সবার এতো আপত্তি কেন। আমিতো মানুষ আমারওতো ইচ্ছা আছে।শরীরে ক্ষত হওয়া স্থানগুলো ব্যাপক পীড়া দিচ্ছে।চন্দ্রের দেয়া সেই অভিশাপটাই সত্যি হলো। সেদিনের সেই ছবিটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো।আমার মা বরাবরই সরল প্রকৃতির, অতো চল-চাতুরী, পেঁচ গোচ তার জানা নেই। জানা থাকলে হয়তো আজ আমরা নিজের পরিবারে এই অবস্থায় থাকতাম না।আমি যে মায়ের সাথে লুকিয়ে ফোনে কথা বলি, ছোট চাচীর জহুরি দৃষ্টি থেকে তা আড়াল হয় নি। বড় চাচী হলে সমস্যা ছিলো না, মা যে আমার সাথে ফোনে কথা বলেন এটা বুঝতে পারলেই, তিনি বড় গলায় বাড়ি শুদ্ধ মাথায় তুলে নিতেন।কিন্তু ইনিতো ছোটো চাচী চালাকি করতে যেমন দক্ষ, চালাকি ধরতেও তেমন দক্ষ।মায়ের অগচোরেই মায়ের ফোন থেকে চাঁদনির নাম্বার নিয়ে মেজো ভাইয়াকে দিয়েছেন। মেজো ভাইয়া বার বার চাঁদনিকে কল করে তার গলার স্বর চিন্তে ব্যর্থ হলে, ওর নাম্বারটা সেইভ করলেই ওর হোয়াটসঅ্যাপ পেয়ে যান।হোয়াটসঅ্যাপ -এ ভিন্ন ভিন্ন নাম্বার থেকে বার্তা পাঠালে চাঁদনি প্রতিবারই ব্লক করে দেয়।প্রোফাইলে চাঁদনির ছবি যতোদিন ছিলো ততোদিন কোনো সমস্যা ছিলো না। কিন্তু ওর জন্মদিনের সেই ছবিটাই অভিশাপ অনুযায়ী কাল হয়ে দাঁড়ালো। মেজো ভাইয়া ঔ নাম্বারটা সম্পর্কে জানতে না পেরে স্বভাবজাত রাগে ঔ নাম্বারের মালিককে খোঁজার চেষ্টা বন্ধ করে দেন।দুইদিন আগে আবার ঔ নাম্বারটার খোঁজ নিতে গিয়ে,প্রোফাইলে সানজুর ছোটো বেলার ছবি ও তাদের বাড়ির লোকের ছবি দেখে তার আর বুঝতে অসুবিধে হয়নি আমি কোথায় আছি। ছোটো চাচীর পরামর্শে এসব কিছু লুকিয়ে রাখা হয়।বড় চাচাও জানতেন না এ ব্যাপারে।খুবই চতুরতার সহিত চাঁদনিদের বাসার ঠিকানা বের করে চাচাদের অবগত করা হয়।মা এসব কিছু বিন্দু পরিমাণও আঁচ করতে পারেন নি।তাই তখন
আমি প্রফুল্ল মনে দড়জা খুলে দেখতে পাই,ছোট চাচা,বড় চাচী আর মেজো ভাইয়া দাঁড়ানো। আমায় দেখেই বড় চাচীর সব ক্ষোভ পুনঃজন্ম নিলো।তিনি অশ্রাব্য গালি গালাজের মন্ত্র পড়ে আমার বাহু চেপে বাইরে নিয়ে আসতে লাগলেন।আমি সেদিনের মতো, ” আমি যাবো না”বলে হয়রান হচ্ছি তাতে তাদের কারোই কোনো খেয়াল নেই। আমার আকষ্মিক ভিন্ন কাঠামোর কথা শুনে চাঁদনি দৌড়ে এলো।চাঁদনি বাধা দিতে চাইলে, অবস্থা বেগতিক হতে শুরু করলো।পুরো ভবনের লোকজন জড়ো হয়ে গেলো।আন্কেল আর চন্দ্র তখনও ফেরেন নি।বাকি লোকেরা বাধা দিলে, আমার বাড়ির লোকেরা সব দোষ চাঁদনিদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন।বলেন ওনারা নাকি আমায় বাড়ি থেকে ভাগিয়ে নিয়ে এসেছেন। কেউ সেটা মানতে না চাইলে,আমার চরিত্র নিয়েও কথা তুলতে ছাড়েন নি।বড় চাচীতো ঠিক আছে। কিন্তু ছোট চাচা তিনি কী করে এতোগুলো লোকের সামনে বলতে পারলেন,”আমার ভাতিজির চাল-চলন ঠিক না,গ্রামেও এক ছেলের সঙ্গে নোংরামি করে আমাদের মান সম্মান ডুবিয়েছে, আমরা ঔ ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইলে, কাউকে কিছু না বলে ঔ মেয়ের(চাঁদনিকে দেখিয়ে) ভাইয়ের সাথে পালিয়ে এসেছে।”নিজের বাবার সমান চাচার মুখে এমন নোংরা কথা শুনে আমি কথা বলার শক্তি হাড়িয়ে ফেলেছি প্রায়।তবুও সবাই আন্কেল আর চন্দ্রের জন্য অপেক্ষা করতে বলেছিলো।আমার বাড়ির লোকেরা সেই প্রস্তাব গ্রাহ্য করলো না।আমার শতো আপত্তি সত্ত্বেও আমায় ঠেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে শুরু করলেন।আমায় নিয়ে আসার ভূত তাদের মধ্য এতোটাই চেপেছিলো যে, তাঁরা ভুলে গিয়েছিলো এই বারো তলা ভবনে সহজে উঠানামা করার জন্য লিফট রয়েছে। মেজো ভাইয়া শক্তিশালী হাতে আমায় প্রাণপণ ঠেনে চারতলা থেকে সিড়ি দিয়ে নামান।আমার প্রতি তাদের ভরসা উঠে গিয়েছিলো বটে।তাই সাথে করে আনা রহিম ভাইয়ের মাইক্রোতে উঠেই, আমায় জোর করে এক বোতল পানিতে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাইয়ে দিলো। আমি বলি বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দিল না কেনো।তারপর চোখ খুলে নিজেকে বাড়িতে পাই।আমি কিছু বুঝে উঠার আগে আমার মুখের উপর বিয়ের বেনারসি তুলে দিলেন বড় চাচী। বললেন আর কোনো সুযোগ তাঁরা আমায় দিবেন না।আজ রাতেই আমায় আলম ভাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে।সবাই আমার দিকে ক্ষোভ ভরা দৃষ্টিতে চেয়েছিলো।বড় চাচাতো আমার মুখই দেখতে চান না।মাকে তো আমার আসেপাশেই ঘেষতে দেওয়া হচ্ছিলো না।আদনান-আরিয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারছিলাম বড় লোকের বড় নীতি। হাতে না মারতে পারলেও ভাতে মেরেছে।গ্রামের সবাই একটু পর পর দলে দলে আমাদের বাড়িতে আসছে। মহিলারা আমায় বাঁকা চোখে দেখছে।সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে মেজো চাচার তখনকার মিথ্যা বিবৃতিই চিরন্তন সত্য।আমরা বাড়িতে আজ সকালেই আসলেও,ঘুমের ঔষধের প্রভাবে বারোটার দিকে আমার ঘুম ভাঙ্গে।আমি এখনো নিশ্চিত না ওঠা ঘুমের ঔষধ ছিলো। এতো সব কিছুর পর আমার হঠাৎ চাঁদনিদের কথা মনে পড়লো। না জানি ওরা আমায় নিয়ে কী ভাবছে? ওদের কতো অপমানিত হতে হচ্ছে।আমার বাড়ির লোকেরা শেষ পর্যন্ত ওদের ও ছাড়ে নি।আসলে আমার বাড়ির লোকেরা এমনই। সব সময় নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে ভালোবাসে।একারণে কদিন পর পর গ্রামের লোকদের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে।কখনোতো মারামারিও হয়।বাবা থাকতে এগুলোকে যথাসম্ভব আটকে রাখতো।কিন্তু সে মারা যাওয়ার পর তার পরিমাণ আরো বাড়তে থাকে। গ্রামের প্রায় অর্ধ-ভাগ লোকের সাথে চাচাদের বিভাদ লেগেই রয়েছে। সবাই ওত পেতে থাকে কখন রহমান বাড়িতে নতুন কিছু ঘটবে আর তাঁরা তা নিয়ে ব্যাঙ্গ করবে।তাই চাচারা আমাদের অনেক কঠোর শাসনে বড় করেছেন। কিন্তু তাতে লাভ কী হলো।অবশেষে রহমান বাড়ির মান-সম্মানতো মিটিয়ে দিলো সাজ্জাদুর রহমানের ছোটো ভাই সৈকত রহমানের একমাত্র মেয়ে ‘আধারিকা রহমান’।আমাদের পাশের বাড়ির মর্জিনা ফুপু বিলাপ করে বলছেন, “কী জমানা আসলো,আগে আমরা স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসার অনুমতি পাওয়া সত্ত্বেও একা আসতে ভয় পাইতাম।আর এখন মেয়েরা বাপের বাড়ি থেকে পালিয়ে একা নাগরের হাত ধরে চলে যায়,কোনো ডর ভয় নাই।” আমার খুব বলতে ইচ্ছে হলো, “ফুপু এতোই যদি মান্যতা করতেন, তবে আজ আপনি নিজের বাপের বাড়িতে কেন? আপনি নিঃসন্তান বলে তাঁরা আপনাকে তাড়িয়ে দিলো কেন?”কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কিছুই বলা মানে মহা-অন্যায় করা।”
এভাবে নানাবিধ কটূক্তি শ্রবণ করে ক্ষুদার্ত পেট ভরছিলাম।তখন সানজুর বাবা মুমিনুল হকের আওয়াজ শুনতে পেলাম,

–ভাই সাব, এসব কী শুনছি?আপনি নাকি সারা গ্রামের লোকদের বলেছেন আমার ভাগিনা চন্দ্র আপনার ভাতিজীকে নিয়ে পালিয়েছে।

আমার মতো বড় চাচীর ঘরে থাকা সব মহিলারও এবার বারান্দার দিকে কান খাড়া করলেন। অনেকে উঁকি দিচ্ছে,

বড় চাচা এবার গম্ভীর স্বরে বললেন,
–যা শুনেছেন ঠিক শুনেছেন।আমার ভাতিজী আধারিকা যেদিন বাড়ি থেকে নাই হয়,ঔদিন আপনার ভাগিনাও শহরে গেছিলো।আর সব থেকে বড় কথা আমরা আধারিকারে আপনার বইনের বাসায় পাইছি।

এবার চাচা আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে বললেন,
–পেয়েছেন, তার মানে এই না আপনার ভাতিজীকে নিয়ে আমার ভাগিনা পালিয়েছে।হতে পারে আধারিকা ঔ বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

তাদের আলাপের মধ্যে ফোড়ন কেটে ছোট চাচা বললেন,
–আপনার বোন জামাইয়ের মাথায় কী কিছু নাই যে, একটা যুবতী মেয়ে আশ্রয় চাইলো আর তিনি দিয়ে দিলেন।

সানজুর বাবা এবারও নরম স্বরে বললেন,
–আমার বোন জামাই খুব নরম মনের মানুষ তাই হয়তো দিয়েছে।তাছাড়া তো আধারিকা কে সে সানজুর বন্ধু হিসেবে জানেও।

তিনি হয়তো আরো অনেক কিছু বলতে চাইছিলেন কিন্তু তা আর হলো না,কারণটা মেজো ভাইয়া,
–হ্যা এই আপনার মেয়ে সানজুইতো সব নষ্টের মূল। নইলে আমাদের বাড়ির মেয়েদের এতো সাহস আছে যে বড়দের সিদ্ধান্ত অমান্য করবে, বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবার মতো সাহস করবে।আপনার মেয়ের সাথে থেকে থেকে তো আঁধার আজ এতো অবাধ্য হয়েছে।আমার মনে হয় বাড়ি থেকে পালানোর বুদ্ধিটা আপনার মেয়েই আঁধার কে দিয়েছে।

সানজুর বাবা এবার আর চুপ থাকতে পারলেন না,
–কী যা তা বলছো সামির?প্রথমে তোমরা আমার ভাগিনাকে নিয়ে বললে এখন আমার মেয়েকে নিয়ে বলছো।তোমার সাহস তো কম না!আর আপনারা দুজন (চাচাদের উদ্দেশ্য করে) চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছেলের বেয়াদবি দেখছেন। তার মানে আপনারা বুঝাতে চাইছেন আমরা সবাই মিলে আপনার ভাতিজীকে ভাগিয়ে দিয়েছি।

চাচারা কিছু বলার আগে মেজো ভাইয়া তার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলতে থাকলেন,
— তা নয়তো কী? সেদিন শালিশে আব্বা আপনার বিপক্ষে কথা বলার পর থেকে, আপনি আমাদের পরিবারের ক্ষতি করতে চাইছেন। আমরা কী সেসব বুঝতে পারি না নাকি।

এখন সানজুর বাবাও রেগে গেলেন শুরু হলো প্রচন্ড কথা কাটাকাটি। সবশেষে সানজুর বাবা নিজেকে নির্দোষ হিসেবে প্রমাণ করতে, রাতে নিজে উপস্থিত থেকে আমার সাথে আলম ভাইয়ের বিয়ে দিবেন বলে কথা দিলেন।এসব শুনে আমি বিস্মিত নয়নে সেদিকেই চেয়ে রয়েছিলাম।বড় চাচী এবার আমার থুতনি চেপে ধরে বললেন,
“শান্তি হলোতো তোর নতুন করে আবার জগড়া বাধিয়ে।গ্রামের গণ্য মান্যদের মধ্যে শুধু মুমিনুল ভাই ছিলেন যার সাথে কোনো বিভাদ ছিলো না।তোর জন্য সেটাও হলো। মরে যেতে পারিস না।মরলেই তো বাঁচি। ” ঘর ভর্তি মহিলারা ও এ কথার প্রেক্ষিতে সায় দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করলেন। আমি যাতে আর কোনো ভাবে না পালিয়ে যেতে পারি তাই আমায় বাড়ির একটি অবহেলিত কক্ষে তালাবন্ধ করে রাখা হলো। সঙ্গে কিছু খাবার আর বিয়ের বেনারসি দিয়ে বলেছিলেন, রাতে যেন তৈরি হয়ে বের হই।

~~~~~~
আমার নিকট এখন দুইটা উপায়ন্তর আছে লাল বেনারসি পরে বের হওয়া নইলে লাল বেনারসি গলায় পেচিয়ে সাদা কাফন আপন করে নেওয়া।এছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই। মনে পরে গেলো বড় চাচীর সেই কথা,”মরে যেতে পারিস না, মরলেই তো বাঁচি “।হ্যা আমি মরে যাবো এখন এটাই একমাত্র উত্তম সমাধান।বেনারসি হাতে নিয়ে ফ্যান ঝুলিয়ে রাখার শূন্য স্থানে বেধে দিলাম। বিছানার উপর বালিশের স্তুপ বানিয়ে গলায় পেচিয়ে দিলাম শাড়ি। এটা আমার সেদিনই করা উচিত ছিলো।না করে অনেক বড় ভূল করেছি।আজ আমার জন্য চন্দ্র, চাঁদনি, আন্কেল, সানজু, সানজুর বাবা,আমার মা,আদনান, আরিয়ান সবাইকে ভুগতে হচ্ছে। আমি আজ সবাইকে মুক্তি দিবো,,,,,

দড়জায় অনেকের উন্মাদের ন্যায় ধ্বাক্কা দেওয়ার শব্দ হচ্ছে।আবছা আবছা বড় চাচা আর ছোটো চাচার কথা শুনা যাচ্ছে,
–তোমরা সব সময় বাড়াবাড়ি করো।কে বলছে ওকে এই ঘরে বন্ধ করে রাখার জন্য।এখন যদি ও আত্মাহত্যা করে তখনতো ফেঁসে যাবো আমরা। পুলিশ আসলে তো আমাদের আগে ধরে নিয়ে যাবে।

ছোটো চাচীর অনুশোচনা শুনতে পেলাম,
–আসলেই বড় আপা মাঝে মাঝে একটু বেশিই করে ফেলে। এখন আঁধারের কিছু হলেতো আমরাই আগে ফাঁসবো।

বড় চাচী নিকট কথাটা হয়তো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠার মতো,
–এখন সব দোষ আমার। তুই-ই তো প্রথমে বললি
ও আবার বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবে। ওকে যেভাবে পারি বন্দি করে রাখি।

বড় চাচার ধমক দিতে ভুল হলো না,
–তোমরা কী চুপ করবে?শাহেদ(ছোট চাচা) তাড়াতাড়ি দড়জা ভাঙার ব্যবস্থা কর।যেভাবেই হোক কোনো অঘটন ঘটতে দেওয়া যাবে না।

তাদের কথা বার্তা শুনে ঠোঁটে পৈশাচিক হাঁসি ফুটে
উঠলো।আমার বেছে নেওয়া পথই হবে সর্বোত্তম প্রতিশোধ।তাই গলার বাঁধন হাত দিয়ে আরো শক্ত করে দিলাম।
#চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here