এক বেরঙ চিলেকোঠায় পর্ব ৩

0
519

#এক_বেরঙ_চিলেকোঠায়
#লেখনিতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্ব-৩

ওড়না কোমড়ে বেধে রান্নার কাজে ব্যস্ত দোয়া।ভাগ্যিস আজ ভার্সিটিতে ক্লাস নেই।থাকলে কয়দিক সামলাতো ও?অবশ্য খুব একটা ঝামেলা হচ্ছে,তাও নয়।অভ্যস হয়ে গেছে ওর।ওর কাজগুলোতে সাহায্যের হাত মা ভাইকে কোনোদিনও বানাতে চায়নি,বানায়নি।কেনো বানাবে?শরীরটা যে কারোরই ভালো না।তরকারীটা নামিয়ে রেখে মাটির চুলোতে আরো শুকনো গোবর পুরে দিলো।এ বাড়িতে গ্যাসের ব্যবস্থা আছে।তা শুধু তিনতলার ফ্যামিলিদুটো ব্যবহার করে।বাকি আর সব ভাড়াটিয়ার মতো গ্যাসবিল দেওয়ার সামর্থ্য দোয়ার নেই।মাটির চুলোয় রান্না করে সবাই।যদিও অরুনাভ মুখার্জী ওকে বলেছিলেন,স্টোভ কিনে দেবেন আর এর খরচটা উনিই বহন করবেন,দোয়া রাজি হয়নি।মাটির চুলো বারান্দায় বসিয়ে,পাশের গোয়ালিনিবাড়ি থেকে কমদামে শুকনো গোবর এনে বেশ চলে যাচ্ছে ওর রান্নাঘর।

-দোয়াপু,আজকে ভার্সিটি যাবো না!

হাতের পিঠে কপালের ঘামটা মুছে পাশ ফিরলো দোয়া।তন্নি আর তৃষা।দুইতলার এরাই বাসিন্দা।দুজনেই অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছে।ওখান থেকেই পড়াশোনা,তারপর ভাগ্যক্রমে পাব্লিক ভার্সিটিতে চান্স।আঠারো শেষের পর অনাথ আশ্রম ছাড়তে হয়েছে ওদের।তবে দুঃখে নেই।পড়াশোনা করছে,টিউশনির টাকায় নিজেদের ভরনপোষন,নিজের পায়ে দাড়িয়েছে,এ চিলেকোঠায় পরিবার পেয়েছে,আর কি চাই।দোয়া ভ্রুকুচকে বললো,

-কেনো?ভার্সিটি যাবি না কেনো?

-আজকে তোমার রান্নায় হাত লাগাবো।

দোয়া হাসলো।নিজের কাজে মন দিয়ে বললো,

-তাই বুঝি?তা বাটনাগুলো তো বেটেই দিলি।আর কি করবি শুনি?

-তোমার একটা কাজে হাত লাগাতে পারি না দোয়াপু।কোনোদিনও তো ডাকো না।আজ একজন অতিথির রান্না হচ্ছে,সেখানে একটু বাটনা বেটে দিলাম,এতেই এভাবে বলছো?

তৃষার কথায় দোয়া আরো বর্ধিত হাসিমুখে বললো,

-ওমা!মেহমানের রান্না তো কাকাবাবুর রান্নার প্রক্সিতে হচ্ছে।কাকাবাবু তো আজ আর খাবেন না।তাই এটার জন্য আলাদা কোনো ঝামেলা নেই।তাছাড়া তোরা কেনো আমার রান্না নিয়ে পরলি বলতো?সময়ের অভাবে তোদের রান্নাটা করে দিতে পারিনা বলে আমার কি কম আফসোস হয়?তোরাও তো করতে দিস না।যাইহোক,সবে ফার্স্ট ইয়ারে,এখন ক্লাস ফাকি দিলে,সেমিস্টার সেমিস্টারে ডাব্বা মারবি বুঝলি?যা এখন!

-কিন্তু….

-আমার রান্না শেষ তন্নি।এখন যদি তোদের খুন্তি হাতে ধাওয়া লাগাতে হয়,সমস্যা নেই,আমি ফ্রি আছি কিন্তু!

ফিক করে হেসে দিলো তিনজনই।তন্নি-তৃষা উঠে আসলো চুলার কাছ থেকে।নিজেদের ঘরে চলে আসলো ওরা।ভেতর থেকে দোয়ার মা দুবার কেশে বললো,

-দোয়া?ছেলেটা কোথাকার?

কিছুক্ষন চুপ রইলো দোয়া।হাতের কাজটাও থেমে গিয়েছিলো ওর।আবারো তেলে মরিচ ভাজতে দিয়ে স্বাভাবিক হয়ে বললো,

-ওনার নাম আরাব।বাসা ঢাকাতে।

-ওহ্।একবার দেখতে যাবো ভেবেছি।এক্সিডেন্ট করে কতোখানি চোট পেলো ছেলেটা,দেখতেও যাইনি।

-ভালোই আছেন।হসপিটালাইজড্ করাতে হয়নি!

-দোয়া!এভাবে কেনো বলছিস?আমি তো শুধু দেখা করতে যাওয়ার কথা….

-কি দরকার মা?সেবা তো কম হচ্ছে না তার।তোমার বারবার উপর নিচ করার কি দরকার?এমনিতেও দিয়ান গেছে ওখানে।

-এমন করছিস কেনো তুই দোয়া?আমি খেয়াল করছি।এ বাড়িতে একটা চড়ুইপাখি আসলে তারও বসার জায়গা করে দিস তুই।নিজে না খেয়ে তার খাওয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরিস।আর আজ একজন বিপদে পরে,অসুস্থ্য হয়ে এসেছে,তাকে নিয়ে এতো বিরক্তি কিসের তোর?রাগ কেনো করছিস?

দোয়া থামলো।ইচ্ছা করছিলো চেচিয়ে বলতে,ওই লোকটা বায়োমেডির একজন সাইন্টিস্ট।যে বায়োমেডি ওদের জীবনটাকে এমন করে দিয়েছে।সেই সাইন্টিস্টগুলোর একজন,যারা কয়েকবছর আগে ওদের সর্বস্ব কেড়েছে।তবুও কিছু বললো না।হাতের কাজটুকো নিরবে করে যেতে লাগলো।চুলোর আগুন নিভে গেছে।সালমা বেগম এবার ঘর থেকে বেরোলেন।চুলোর কাছে আসতেই ধোয়ায় দুবার কাশি হলো তার।হাতপাখাটা খুজে বাতাস করে আগুন জ্বালিয়ে দিলো দোয়া।আসমা বেগম ওর কাধে হাত রেখে বললেন,

-আমি জানি,তোর ভেতরটায় অনেককিছু চলে মা।কিন্তু ওই অচেনা ছেলেটার কি দোষ?

-ঘরে যাও।ধোয়া হচ্ছে এখানে।

আসমা বেগম গেলেন না।রান্না করা খাবারগুলো বাটিতে বেড়ে দিতে লাগলেন।ভাত,শিং মাছের তরকারী,লালশাক ভাজা,উঠোনের কোনায় হওয়া ছোট লাউগাছটার পাতা দিয়ে শুটকি।লালশাক দোয়া আগের দিন সকালে কিনেছিলো।দিয়ানের পছন্দ বলে।আরাবের সামনে দেওয়ার মতো খাবার লাউপাতা শুটকি না।তবে লালশাক ভাজাটা দেওয়া যেতেই পারে ভেবে আলাদা করে শিং মাছ আর লালশাক বাড়লেন সালমা বেগম।বাড়া শেষে দেখলো দোয়া শুকনো মরিচ ভাজছে।এটা ওর খাবার।তিনআঙুলের ডগায় তোলা একটুখানি শাকভাজার সাথে দুটো তেলে ভাজা শুকনোমরিচ হলেই পেটপুরে খেয়ে নেয় ও।তরকারী ছুয়েও দেখে না।বলে বেরাবে,এটা ওর প্রিয় খাবার।কিন্তু সালমা বেগম ভালোমতোই জানেন,আরো দুবেলা তরকারী বাচিয়ে রাখার জন্যই ওর এই প্রিয় খাবার।আচলে চোখের জলটুক মুছে বললেন,

-এই সংসারটাকে তুই যেভাবে শুষে নিয়েছিস নিজের মাঝে,তাতে তো তুই নিশেষ হয়ে যাচ্ছিস মা!আর কতো দোয়া?আর কতো করবি তুই?

দোয়া পাশ ফিরলো।মায়ের চোখের জল দেখে বুকফেটে কান্না আসছিলো ওরও।কান্না সংবরন করে বললো,

-মা,তোমরাই তো আমার সব।আমি যা করি নিজের জন্যই তো করি।কেনো এসব বলে আমাকে নিজের কাছে ছোট করে দাও বলোতো?কেনো?

সালমা বেগম থামলেন।মেয়ের উপর পুরো সংসারটা ঠিক কিভাবে রয়েছে,তার আন্দাজ আছে তার।দোয়া ওনাকে ধরে ঘরে এনে বিছানায় বসিয়ে দিলো।চুলোর ধার থেকে একে একে সবগুলো জিনিস গুছিয়ে ঘরে তুললো।তারপর মেঝেতে বসে মাথা রাখলো মায়ের কোলে।সালমা বেগম মাথায় হাত বুলাতে লাগলো ওর।দোয়া ধীর কন্ঠে বললো,

-মা?আমি তোমাদেরকে তোমাদের প্রাপ্যটা দিতে পারিনি তাইনা?

-এসব কি বলছিস কি তুই দোয়া?

-ঠিকই তো বলছি।পরিবারের বড় মেয়ে হয়েও কি দিলাম তোমাদের?তোমরা তো এই সস্তা খাবার,এই জীর্ন পোশাক,এই বেরঙ চিলেকোঠা ডিসার্ভ করো না মা।বাবাকে তো আমি কথা দিয়েছিলাম মা,তোমাদেরকে আগলে রাখবো।আমি তো সে কথা রাখতে পারছি না মা!পারছি না!

-চুপ!একদম চুপ!আর একটা কথা বলবি না তুই!

-এখন তুমি যদি বারবার আমার পরিবারের প্রতি আমার ভালোবাসাটাকেই আমার কাছে বোঝা বলে বলে আমাকে অপমান করো,তখন আমার এসব বলা অপরাধের কিছু না।খবরদার আর কোনোদিন এসব কথা বলবে না।

মেয়ের দিকে তৃপ্তি নিয়ে তাকিয়ে রইলেন সালমা বেগম।পাশের মসজিদ থেকে যোহরের আযান ভেসে এলো।দোয়ার মুখের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে কপালে চুমো দিয়ে বললেন,

-ঠিকাছে।ঠিকাছে।আর বলবো না।আযান পরেছে।যা গোসলটা সেরে আয়।

মুখে হাসি ফুটলো দোয়ার।মাকে ছেড়ে আগে গোসলটা সেরে নিলো।তারপর বারান্দায় গিয়ে ডাক লাগালো দিয়ানকে।

পেট চেপে ধরে রেখে উপরের রঙচটা ছাদের দিকে তাকিয়ে আরাব।প্রচন্ডরকমের খিদে পেয়েছে ওর।এতে রাগও হচ্ছে ওর মনে মনে।কিছুক্ষন আগ অবদিও এই রাক্ষুসে খিদেভাব ছিলো না ওর।দিয়ানের সাথে বেশ আড্ডা দিচ্ছিলো।যেইনা দোয়া দিয়ানকে ডাক লাগিয়েছে,আরাবের আশপাশও যেনো ক্ষুধার্ত হয়ে উঠেছে।আসছি বলে দিয়ান তো চলে গেলো,কিন্তু এদিকে হাসফাস করছে আরাব।পেট তো ধরে আছে,অস্থিরতাটা ঠিক কোথায়,তাতে সায় দিচ্ছে না একদমই।উঠে বসলো এবার ও।লুঙ্গিটা নিয়েও হয়েছে জ্বালা।হবেই বা না কেনো?জীবনে লুঙ্গি পরেছে ও?অসহায়ভাবে কাদোকাদো মুখ বানিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো শুধু।ওদিকের সবুজ নারিকেল পাতাটাও দেখতে বিরক্ত লাগছে ওর এবার।ঘার ঘুরিয়ে দরজা দিয়ে তাই বাইরেই তাকালো।বিনিময়ে মুগ্ধতার বহরে আটকে গেলো ওর চোখজোড়া।

কোমড় অবদি ভেজা চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে দরজার সামনে উঠোন দিয়ে যাচ্ছিলো দোয়া।পরনে আকাশী রঙের থ্রিপিস।অজান্তেই খোড়াতে খোড়াতে দরজায় এসে দাড়ালো আরাব।দরজায় ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে বুকে হাত গুজে দৃষ্টিতৃষ্ণা মেটাতে পারি জমালো অন্য কোনো দুনিয়ায়।

তুলসী গাছটায় পানি দিচ্ছিলো দোয়া।শুধুমাত্র গোসলের পরই তাতে পানি দেওয়ার অনুমতি আছে।অরুনাভ মুখার্জী সবাইকেই বলে দিয়েছেন,গাছটার যত্ম নিতে।কিন্তু সময় আর ভুলোমনের জন্য হয়ে ওঠেনা কারোরই।এ কাজটা দোয়াই করে।সকালসন্ধ্যায় অবশ্য অরুনাভ মুখার্জী নিজেই পানি দেয়।পানি দেওয়া শেষে পেছন ফিরেই আরাবের দৃষ্টি চোখে পরে ওর।ওই মুগ্ধ চাওনি আর মুচকি হাসি দেখে যে কোনো মেয়েই ঘায়েল হবে হয়তো।চোখ সরিয়ে নিতে গিয়ে আরাবের লুঙ্গি পরার স্টাইলটা দেখে আরো বড়বড় চোখে তাকাতে বাধ্য হলো।

লুঙ্গি গুছিয়ে না পরে তা দুটো ভাজে তামিল নায়কদের মতো করে পরেছে আরাব।এতে আগেরদিন দেখা গোছানো পার্সোনালিটির মানুষটাকে বৈদ্যুতিক খুটির মতোই দেখাচ্ছে।কিছুক্ষন হাসিটা অতিকষ্টে আটকে রেখে শব্দ হেসে দিলো দোয়া।হাসিটা দেখে বেশ অনেকটাসময় পর প্রশান্তি অনুভব করলো আরাব।তাকিয়েই রইলো।কিন্তু সেটা একদমই খেয়াল করেনি দোয়া।আরাব বলে উঠলো,

-এইযে মিস দোয়া?হাসছেন কেনো?এখানে কি কেউ লাফিং গ্যাস দিয়ে গেছে?নাকি আমি দেখতে জোকারের মতো?

দোয়া থামলো।এভাবে হাসাটা খুব কম হয় ওর।কিন্তু হাসার কারনটা আরাব ভেবে আবারো রাগ হলো নিজের উপর।ইতস্তত করে বললো,

-দুঃখিত।

এটুকো বলেই চলে আসলো ওখান থেকে।আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আরাব।দোয়ার মলিন চেহারায় হাসি দেখতে ঠিক কতোটা শান্তি লাগছিলো ওর তার বর্ননা নেই ওর কাছে।এখান থেকে হয়তো স্বাভাবিকতার শুরু হতে পারে এই ভেবে কথাগুলো মজার ছলেই বলেছিলো ও।কিন্তু এই মেয়ে তো স্বাভাবিক ব্যবহারের ধারই ধারে না।হেসে যেনো কোনো দন্ডনীয় অপরাধ করে ফেলেছে এমন ভাব করে চলে গেলো।জীবনের দুর্বিপাকেই হাসাটা ভুলে যেতে বসেছিলো হয়তোবা।কিন্তু যদি জীবনই তাকে সৌন্দর্যের অনুভবে জরিয়ে নিতে চায়,তবে দোষ কোথায়?স্বীকার করতে ক্ষতি কিসের?

ছোট পড়ার টেবিলটায় দোয়া খাবার পরিবেশনে ব্যস্ত।দোয়ার মাও এসেছে।আরাব তার সাথে আলাপের মাঝে মাঝে দোয়ার দিকে তাকাচ্ছে।কিন্তু সে নিজের দুনিয়ায় মত্ত্ব।আরাবের মন তখনো অস্থির।কিছুক্ষন আগের হাসিটা দেখার পর এই চিন্তিত হৃদয়ের দোয়াকে দেখতে ওর কষ্ট হচ্ছে।ভেবে পাচ্ছে না ঠিক কিভাবে দোয়ার সাথে দিয়ানকে নিয়ে কথা বলবে।অরুনাভ মুখার্জী এসে গোসল সেরে তিনতলার নিমন্ত্রন খেতে চলে গেছেন।দোয়া আর ওর মা এসেছে আরাবকে খাবার বেড়ে দিতে।দিয়ান তখন যাওয়ার পর আর আসেনি।

খাবার বাড়তে বাড়তেই হাতের উল্টোপিঠে গালে লেপ্টে থাকা কিছু ভেজাচুল সরিয়ে দিলো দোয়া।কিন্তু গালের ওখানেই গুনে গুনে আরো চারটে চুল লেগেই আছে,স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে আরাব।কাধের দিকটা দিয়ে গালে আবারো ডলা লাগালো দোয়া।খুতখুত করছে গালের দিকটা।সালমা বেগম বললেন,

-মুখার্জীদা বললো তুমি নাকি দুপুরে খেয়েই চলে যাবে?

-জ্বী।এভাবে আপনাদের উপর বোঝা হয়ে আর কতোদিন?

দোয়ার দিকে তাকিয়েই কথাটা বলেছে আরাব।সালমা বেগমের বুঝতে বাকি রইলো না,আগুন্তক দোয়ার ব্যবহারেই এভাবে কথাটা বললো।বললেন,

-এভাবে কেনো বলছো বাবা?বোঝা কেনো হতে যাবে তুমি?

আরাব স্বাভাবিক হলো।হাসিমুখে বললো,

-বলছেন?বোঝা নই?তাহলে এখানে থেকে যাই আরো কিছুদিন?

দোয়ার হাত থেমে গেলো।এতোক্ষন আরাবের কোনো কথায় ওর কাজে এতোটুকো ব্যাঘাত ঘটেনি।থাকার কথাটা শুনতেই কিছু তো একটা হয়েছে ওর।আর সেটা লক্ষ করেছে আরাব।ঠোট টিপে হেসে সালমা বেগমের দিকে তাকিয়ে বললো,

-মজা করছিলাম আন্টি।থেকে যাওয়া সম্ভব না।তবে আসবো,মাঝেমধ্যে।আফটার অল,জীবন বাচিয়েছেন আপনারা আমার।

মৃদ্যু হাসলেন সালমা বেগম।মুখ আচলে ঢেকে দুবার কাশি দিয়ে বললেন,

-আমরা বাচানোর কে বলোতো?বাচানোত মালিক তো আল্লাহ্ তায়ালা।যাইহোক,একা একা যেতে পারবে বাসায়?

-সমস্যা নেই আন্টি।ফোন করে দিলেই গাড়ি পাঠিয়ে দেবে বাসা থেকে।

-বেশ।তাহলে তো হলোই।তুমি তবে….

-মা?ও মা?

দিয়ান ডাক লাগিয়েছে উপর থেকে।সালমা বেগম বললেন,

-ওই দেখো।তার ডাক পরেছে।আমি আসি বাবা।কোনো সমস্যা হলে বলো কিন্তু!

আরাব মাথা নেড়ে স্বায় দিলো।সালমা বেগম উঠে দাড়িয়ে দোয়াকে বললেন,

-দোয়া?তুই খাবারগুলো গুছিয়ে দিয়ে আয়।আমি আসছি।

-আমার হয়ে গেছে মা।বাকিটা উনি নিজেই করে নিতে পারবেন।চলো।

আয় বলে সালমা বেগম বেরিয়ে গেলেন।দোয়াও চলে যাচ্ছিলো।উঠে দাড়াতে গিয়ে পা ধরে আর্তনাত করে উঠলো আরাব।থেমে পেছন ফিরলো দোয়া।বড়সর হাসি টেনে আরাব বললো,

-আ’ইল ম্যানেজ।

চোয়াল শক্ত করে আবারো ভেতরে ঢুকলো দোয়া।প্লেটে বাড়া খাবার টেবিল থেকে এনে বিছানায় আরাবের সামনে রাখলো একদম।বিশ্বজয়ের হাসি দিয়ে বিছানায় বসলো আরাব।দোয়া পানির জগটা টেবিল থেকে আনতে যাবে,হুট করেই ওর হাত ধরে ওকে আটকে দিলো আরাব।

#চলবে…

[ভুলত্রুটি মার্জনীয়]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here