ইফ্রিতে মুসনাত পর্ব ৫

0
387

#ইফ্রিতে_মুসনাত
#পর্বঃ০৫
#লেখিকাঃ আস্থা রাহমান শান্ত্বনা

একটা কালো অবয়ব আয়ানার শরীরের উপর ঝুকে পড়ে আয়ানার দুইহাত শক্ত করে চেপে ধরল। আয়ানা নিজের হাত দুটো ছাড়ানোর খুব চেষ্টা করছে, কিন্তু অবয়বের শক্তির সাথে পেরে উঠছেনা। অবয়ব টা তার খুব নিকটে এসে তার শরীরের ঘ্রাণ নিচ্ছে, আর আয়ানার শরীরে অবয়বের প্রচন্ড গরম নিঃশ্বাস পড়ার সাথে সাথে তার খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই নিঃশ্বাসের তাপে তার চামড়া ঝলসে যাচ্ছে। আয়ানা অবয়ব টার দিকে তাকিয়ে থু থু মারল, সাথে সাথে অবয়বটার লাল চোখগুলো আগুনের স্ফুলিঙ্গ এর মত দাউদাউ করে জ্বলে উঠল। এতে আয়ানাকে সে আরো শক্ত করে চেপে ধরে, আয়ানার বাহুর অংশ জোরে জোরে টিপতে লাগল। তারপর আয়ানার তলপেট ছোয়ার জন্য হাত বাড়াল। আয়ানা নিজে রক্ষা করার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, অবয়ব টা তাতে তাকে আরো শক্ত করে চেপে ধরছে। অবয়বটা একটানে আয়ানার গায়ের ওড়নাটা ছুড়ে ফেলে দিল। আয়ানা কাদতে কাদতে চিৎকার করে উঠল।
এইটুকু দেখেই আয়ানার ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে দেখল পুরো রুমের পরিবেশ স্বাভাবিক, তার গায়ের ওড়না গায়েই আছে। আয়ানার চিৎকার শুনে সায়মা ছুটে এল। সায়মা আয়ানার পাশে বসতেই আয়ানা সায়মাকে জড়িয়ে ধরে ফোপাতে লাগল। সায়মা নিজের বোনের মাথায়-পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলল,
” খারাপ স্বপ্ন দেখেছিস?”
” সেই একই স্পর্শ, একই গরম নিঃশ্বাস….. সে আবার আমাকে ছুয়েছে।”
” ভয় পাসনা, আমি আছি তো তোর কাছে। ওসব কিছুনা, খারাপ স্বপ্ন দেখেছিস মাত্র। সারাদিন আজেবাজে চিন্তা করিস, তা স্বপ্নে প্রভাব ফেলে। কিচ্ছু হবেনা। তুই আজ দোয়া পড়ে ঘুমাসনি?”
” না আপু, হঠাৎ চোখ লেগে গেছিল তো। তাই আর খেয়াল ছিলনা।”
মাহবুব এসে সোজা রুমের ভিতরে ঢুকে পড়ে বলল,
” কি হল ভাবী! আয়ানার চিৎকার শুনলাম মনে হল।”
” ও কিছুনা, খারাপ স্বপ্ন দেখে খানিকটা ভয় পেয়ে গেছে। মাঝে মাঝে খারাপ স্বপ্ন দেখলে আয়ানা ভয়ে চিৎকার করে উঠে।”
” আয়ানা তুমি একবার সাদ ভাইকে ঘটনাগুলো বলে দেখতে পারে। সাদ ভাই খুব সুন্দরভাবে স্বপ্নের ব্যাখা দিতে জানেন।”
আচ্ছা ভাবী তুমি তাহলে তোমার বোনের কাছেই ঘুমাও। আমি বরং মায়ানের সাথে ঘুমাতে যাই।”
মাহবুব চলে যাওয়ার পর সায়মা আয়ানার পাশে শুয়ে পড়ে। সায়মা আলো নিভিয়ে দিতে গেলে আয়ানা বারণ করে বলল, ” আলোটা জ্বলুক আপু।”
শোয়ার পর আয়ানার চোখে আর ঘুম আসলনা। এতদিন পর সে আবার এসব স্পর্শের শিকার হচ্ছে। ভয়ানক জ্বীনটা আবার তার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আজ কি করে যে সে দোয়া পড়তে ভুলে গেল!! সময়মত যদি ঘুম টা না ভাঙত না জানি তার সাথে আরো কি কি খারাপ ঘটনা ই না ঘটত। আল্লাহ সহায়।
সায়মা রান্না করতে ব্যস্ত, আয়ানা বাদাম চিবুতে চিবুতে সায়মার পাশে এসে দাড়াল। সায়মা মুচকি হেসে বলল,
” কিরে, কিছু বলবি?”
” না তেমন কিছুনা। কি রান্না করছিস?”
” তোর জন্য কালাভুনা, ডিমের কোরমা, শ্বাশুড়ী মায়ের জন্য মাছের মুড়ো দিয়ে পালংশাক।” আয়ানা হেসে বলল,
” তুই কি আমাকে মোটা বানিয়ে বাড়ী পাঠানোর প্রতিজ্ঞা করেছিস?”
” রোজ রোজ খাওয়াচ্ছি নাকি যে মোটা হবি তুই! আর তুই কি রান্নাবান্না শিখবিনা?? বিয়ে হলে স্বামীকে কি খাওয়াবি?”
” ওই যে বিয়ের আগে তুই যেটা পারতি, গরম ভাতে পানি ঢেলে তার সাথে শুকনো মরিচের ভর্তা।”
” খুব পচানী দেওয়া হচ্ছে আমাকে! নাহয় পান্তা ভাত খেতে একটু বেশী ভালবাসতাম, তাই বলে এভাবে বলবি!!”
বোনের কপট রাগ দেখে আয়ানার প্রচন্ড হাসি পেল। হাসতে হাসতে হঠাৎ সাদের বাসার জানালার দিকে চোখ পড়ল। সায়মাকে জিজ্ঞেস করল,
” ওই বাসাটাতে কে থাকেরে?”
” ওটা তো মা ভাড়া দিয়ে দিয়েছেন, তারা ই থাকে।”
” তুই তাদের দেখিসনি?”
” না, এই পর্যন্ত কাউকে দেখিনি। ৪ বছর আগে যখন এসেছিলাম শুনেছিলাম সেখানে এক ফ্যামিলি ভাড়া থাকত, তারা যাওয়ার পর আর কাউকে ভাড়া দেওয়া হয়নি। খালি ই পড়ে ছিল, আমার জা ওখানে নিজের সংসার পাতার চিন্তা ভাবনা করেছিল অবশ্য। এখন মায়ের কাছে শুনলাম, একজন ছেলেকে ভাড়া দিয়েছে। আমি তাকেও দেখিনি, হয়ত বাসায় কেউ নেই।”
আয়ানা চুপ করে ভাবতে লাগল, সাদ কি তাহলে বাসায় একা ই থাকে?
” একবার ওই বাসায় গিয়ে দেখা যাবে বাসাটা দেখতে কেমন?”
” যাওয়া যায়, কিন্তু সেখানে যে আছে সে যদি মাইন্ড করে! যাওয়ার দরকার নেই।”
আয়ানা জানত সায়মা নিষেধ করে দিবে। তাই আর কথা বাড়ালনা। কেন জানি, আয়ানার সাদের বাসায় যেতে ইচ্ছে হচ্ছে। সেখানে কে কে আছে জানতে ইচ্ছে করছে, আর সবচেয়ে বড় কথা দিনের আলোতে সাদ কে খুব কাছ থেকে আবারো দেখার শখ জাগছে। কিন্তু কি অযুহাতে যাবে ও! সাদ ব্যাপারটা কিভাবে নিবেন।
তাই আয়ানা সুযোগের অপেক্ষা করছে। দুপুরে ডাইনিং টেবিলে সবাই একসাথে খাওয়ার সময় সায়মার শ্বাশুড়ি বললেন,
” আহা, বউমা। আমাকে এত দিওনা, আয়ানাকে দাও। না খেয়ে খেয়ে মেয়েটার মুখ শুকিয়ে গেছে।”
” আর পারবনা আন্টি। এমনিতেই আপনারা এই কয়দিন যা খাওয়াচ্ছেন, তাতেই মোটা হয়ে যাচ্ছি।”
” তোমাদের বয়স ই তো খাওয়ার। এখন না খেলে, আমাদের বয়সে দাত পড়ে গেলে আর খেতে পারবেনা।”
সবাই এই কথা শুনে একসাথে হেসে উঠল। উনি আবার বললেন,
” বউমা, কিছুটা কালাভুনা একটা টিফিন বক্সে ভরে দাও তো। সাদ এটা খেতে খুব ভালোবাসে।”
” সাদ কে মা? কাল যে ছেলে এসেছে সে না?”
” হ্যা, ও ই তো আমাদের পাশের বাসাটায় ভাড়া থাকে। বড্ড ভালো ছেলে। নিজের বাসায় ভালোমন্দ রান্না হলে আমাকে সযত্নে দিয়ে যায়। নিয়মিত খোজ-খবর রাখে, বিপদ-আপদ হলে ওকেই প্রথমে ডাক দিই আমি।
খুব সুন্দরভাবে সব গুছিয়ে নেয়। খাওয়ার পর্ব শেষ হলে মাহবুব ওকে টিফিনবক্স টা দিয়ে আসিস। আমার বাতের ব্যথা বেড়েছে, আমি যেতে পারছিনা।”
” মা, আমার একবার চায়ের ফ্যাক্টরিতে যেতে হবে। মেশিনে কি ঝামেলা হয়েছে, কাজ বন্ধ হয়ে আছে। ভাবী তুমি গিয়ে দিয়ে এসো। আমি এখন আসলাম।”
” সাবধানে যাস।
বউমা, তুমি বরং খাওয়া শেষ করে দিয়ে এসো। আমি যাই, একটু শুয়ে ঘুম দিই। শরীরটা ইদানিং যা খারাপ যাচ্ছে।”
আয়ানা শুনে খুশি হয়ে গেল, এমন একটা সুযোগের অপেক্ষা ই তো ছিল সে। এখন সায়মা পটিয়ে দায়িত্বটা নিজে নিয়ে নিলেই হয়। সায়মা সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে টিফিনবক্স হাতে যেই বের হবে, মাহমুদের কল আসল। আয়ানা বলল,
” এটা আমায় দে, আমি দিয়ে আসছি। তুই ভাইয়ের সাথে কথা বল। ব্রেক টাইমে বউকে কত মিস করছে।” সায়মা লজ্জামাখা হাসি দিয়ে বলল,
” তোর ফাজলামী গেলনা! আচ্ছা তাহলে তুই দিয়ে আয়, আমি রুমে যাচ্ছি।”
আয়ানা টিফিনবক্সটা নিয়ে সাদের বাসার সামনে চলে এল। কলিংবেল টিপার আগে ভেজা চুলগুলো শক্ত করে খোপা বেধে গায়ের ওড়নাটা ভালোভাবে মাথায়-গায়ে জড়িয়ে নিল। আজ সে স্কার্ট আর টপস পড়েছে, সচরাচর এসবের সাথে ও বড় ওড়না পড়ে না, মিনি স্কার্ফগুলো গলায় পেচিয়ে রাখে। কিন্তু কাল সাদ বলেছে বলে সে সাদের সামনে যাওয়ার আগে বড় ওড়না পড়েছে।
দুইবার কলিংবেল টিপেও যখন কোনো সাড়া পেলনা, আয়ানা ভাবল সাদ হয়ত বাসায় নেই। একটু মন ভার হয়ে গেল। চলে যাবে এমনসময় সাদ দরজা খুলে বলল, ” আপনি?”
” হ্যা, আসলে আন্টি আপনার জন্য কালাভুনা পাঠিয়েছেন।”
সাদ টিফিনবক্সটা হাতে নিয়ে বলল, “আন্টিকে ধন্যবাদ জানিয়ে দিবেন আর আপনাকেও ধন্যবাদ।” সাদের গলায় তোয়ালে জড়ানো, ভেজা চুল থেকে টপটপ করে পানি ঝড়ছে। মাত্র ই বাহিরে থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়েছে হয়ত।
ভেজা চুলে ছেলেদেরকে এত সুন্দর লাগে সেটা সাদকে না দেখলে বুঝত ই না আয়ানা। সাদকে ভেজা চুল আর চেহারায় আরো বেশী পবিত্র আর নিষ্পাপ লাগছে। আয়ানা বলল,
“আমাকে ধন্যবাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
” ঠিক আছে ভালো থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।” বলে দরজাটা বন্ধ করে দিল সাদ। আয়ানার ভীষণ খারাপ লাগল, একবার ভিতরেও আসতে বললনা ছেলেটাকে। আয়ানা কথা বলার মাঝখানে কয়েকবার উকি মেরে ঘরের ভিতরটা দেখার চেষ্টা করেছে, কিন্তু কিছুই দেখতে পারেনি। সামনে লম্বা আর বিশাল দেহের মানুষ দাড়ালে আর কিছু দেখা যায়!
কিন্তু এটা কেমন হল! সৌজন্যতাবোধ থেকে তো একবার ভিতরে আসতে বলতে পারত। কি অদ্ভুত ছেলে! এখন মনে হচ্ছে, এ ছেলেদের পর্যায়েই পড়েনা। কোনো ছেলে কি এভাবে কোনো মেয়েকে দরজার সামনে থেকে ফিরিয়ে দেয়!
আজ সাদের চোখগুলো একবারো দেখতে পেলনা আয়ানা। সাদ কথা বলার মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য ও চোখটা মেঝে থেকে সরালনা।
সাদের প্রতি একটা চাপা অভিমান কাজ করল আয়ানার।
.
” আচ্ছা আপনি এমন কেন?”
” কেমন?”
” অন্য ছেলেদের মত না। বলতে গেলে কিছুটা অদ্ভুত।”
আয়ানার কথায় সাদ মুচকি হাসল। তাও ক্ষণিকের জন্য, চোখের পলকে তা মিলিয়ে গেল। সাদ অন্যদিকে তাকিয়ে বলল,
” সবকিছুর রহস্য ভেদ করতে যাবেননা, তাহলে নিজেই রহস্যের অতলে তলিয়ে যাবেন। আপনি কি কিছু বলতে এসেছিলেন?”
আয়ানা কি বলবে ভেবে পেলনা। দ্বিতীয়বারের মত একটা অযুহাতের ভিত্তিতে সাদের বাসায় এল আয়ানা। আগের বারের মত সাদ দরজার বাহিরে দাড়িয়েই কথা বলল। আজ অবশ্য সাদের জ্বলজ্বল করা অদ্ভুত সুন্দর চোখগুলো দেখার সুযোগ পেল আয়ানা। দিনের আলোতে চোখগুলোর রঙ আর বেশী উজ্জ্বল আর গাঢ় দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন দুখানা স্বচ্ছ আয়না। মৌনতা ভেঙে আয়ানা বলল,
” এককাপ চা হবে?”
” সকালেই চাপাতা ফুরিয়ে গেছে।”
আয়ানা হতাশ হল, ভাবল এই অযুহাতে অন্তত সাদ তাকে ভিতরে আসতে বলবে। এখন যেহেতু চাপাতা ই নেই, আয়ানার ভিতরে ঢোকার আশা ছাড়তে হল। চলে আসবে এমনসময় সাদ বলল,
” মিষ্টি খাবেন?” কোনো ভাবনাচিন্তা ছাড়াই আয়ানা হ্যা বলে দিল।
সাদ রহস্যময় কন্ঠে বলল, ভিতরে আসুন।
আয়ানা খুশি হয়ে সাদের বাসার ভিতরে পা রাখল। ভিতরে ঢুকতেই তার মাথাটা কেমন জানি চক্কর দিয়ে উঠল। অদ্ভুত মাতাল করা সুগন্ধ তাকে আবিষ্ট করল, আয়ানা ভালোভাবে চারিদিকটা দেখল।
দোতলা বাসাটা বেশ সুন্দর ভাবে সাজানো- গোছানো। যেন কেউ নিপুন হাতে সাজিয়ে রেখেছে। সোফাসেটের টেবিলের ফুলদানিতে অনেকগুলো কালো গোলাপ রাখা। প্রথমে আয়ানা ভেবেছিল এইগুলো প্লাস্টিকের। কিন্তু যখন একটা হাতে নিল, সেগুলোর উপর স্নিগ্ধ শিশির লেগে থাকতে দেখল। প্রচন্ড অবাক হল আয়ানা। কালো গোলাপ খুব নগণ্য পরিমাণেই পাওয়া যায়, সেখানে এতগুলো তাজা কালো গোলাপ সাদ কোথায় পেল! পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও তো সে কালো গোলাপ দেখেনি, আর পাওয়া যায় বলে শুনেওনি। পুরো বাসায় কেউ নেই, তার মানে সাদ একাই ব্যাচেলর থাকে। এতসুন্দর ভাবে সেই বাসাটা গুছিয়েছে, এমন ও ছেলে হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে সাদ মিষ্টি সাজানো থালা নিয়ে এল। আয়ানার সামনে রেখে বলল, মিষ্টি নিন। আপাতত রান্না হয়নি আর বাসায় তেমন কিছু নেই। প্রায় সব ই ফুরিয়ে গেছে। তাই মিষ্টি ছাড়া উপায় নেই।
আয়ানা মিষ্টিগুলোর দিকে তাকিয়ে ঢক গিলল। আসলে সে মিষ্টি পছন্দ করেনা, কেন যেন মিষ্টি খেলে ওর বমি পেয়ে যায়। তখন সাদের বাসায় ঢোকার জন্য ই সে মিষ্টি খাওয়ার জন্য হ্যা বলে ফেলল। কিন্তু রঙ বেরঙ্গের মিষ্টিগুলো দেখে ওর আবার খেতেও ইচ্ছে করছে। এখন ভয় হচ্ছে যদি ওর বমি পেয়ে যায়!
সাদ তাগাদা দিল, ” খাচ্ছেননা কেন?”
” হ্যা,খাচ্ছি তো।” বলে গোলাপি রঙের মিষ্টিটা নিয়ে ভয়ে ভয়ে কামড় বসাল আয়ানা। মিষ্টিটা মুখে দিতেই ও আলাদা একটা তৃপ্তি বোধ করল। মিষ্টিটা এত মজাদার আর মুখে দেওয়ার সাথে সাথেই গলে গেল, এমন মিষ্টি ও এর আগে কখনো খায়নি। দু-তিনটে মিষ্টি ও মূহুর্তে মুখে পুরে নিল। লজ্জায় আর খেতে পারলনা। সাদ তার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছে বলে।
মিষ্টিগুলো টাটকা আর মনে হল মাত্রই বানানো হয়েছে বা ফ্রিজ থেকে বের করা হয়েছে। মিষ্টি খেয়ে উঠে চলে আসবে এমন সময় দেখল সোফার পাশের ছোট্ট টেবিলের উপর একটা মেয়েদের ওড়না আর একজোড়া কানের দুল। দেখে আয়ানার অদ্ভুত লাগল। তাও সাদকে কিছু না জিজ্ঞেস করে বাহিরে চলে এল।
” ধন্যবাদ আপনাকে।”
” আর কোনো অযুহাতে অপরিচিত কারো বাসায় হুটহাট করে ঢুকবেননা, বিপদ হতে পারে।” বলে সাদ ভিতর থেকে আবার দরজাটা বন্ধ করে দিল।
আয়ানা বিষন্ন মনে বাসায় ফিরে এল। তার মাথা শুধু ঘুরপাক খেতে লাগল, সাদের বাসায় মেয়েদের ওড়না এল কোথা থেকে? ওর বাসায় তো কোনো মেয়েকে দেখেনি সে। বলতে গেলে কাউকেই চোখে পড়েনি!
আচ্ছা সাদ কি বিবাহিত? ওর সাথে কি ওর স্ত্রী ও এই বাসায় থাকে! হয়ত ওর স্ত্রী কারো সামনে আসেনা বলে আয়ানা বা এই পরিবারের কেউ ই দেখেনি। আয়ানা এই হিসাব টা মিলাতে পারছেনা। তবে সাদ বিবাহিত এই কথাটা ভাবঅতেই ওর বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠছে। এমনটা কেন হচ্ছে আয়ানা সত্যিই বুঝতে পারছেনা। এটা কি শুধুই সাদের প্রতি ভালোলাগা থেকে উদ্ভুত নাকি অন্য কিছু!!
(চলবে…..)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here