#আমায়_ডেকো_একা_বিকেলে?
#লামিয়া_সুলতানা_সিলভী ( লেখিনীতে)
#পর্বঃ_৫
দেখতে দেখতে আরো কেটে গেলো ২ মাস, দিন যত যাচ্ছে আমার বিয়ের দিন ততো এগিয়ে আসছে! আর মাত্র কিছুদিন অপেক্ষা তারপরই আমাদের বিয়ে, দিন দিন আয়াশের সাথে আমার সম্পর্কটাও আরো সহজ হয়ে আসছে! তবে হ্যা, আমি এখন জোর গলায় বলতে পারি আমি ওকে ভালোবাসি, আর আয়াশ তো আমাকে চোখে হারায়! যদিও তার ভালোবাসার ধরন টা অন্যরকম, কিন্তু আমার ওর এমন স্বভাবই ভালো লাগে! সাহেব আমার একদম স্ট্রেটকাট,, যখন যা মুখে আসবে বলে দিবে, সেটা বিপরীতে থাকা মানুষটির ভালো নাও লাগতে পারে কিন্তু সেটা তার দেখার বিষয় না! এটা সত্যি যে,, সে আমায় সত্যিই অনেক ভালোবেসে ফেলেছে, তবে সে যে আমায় মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে সেটা কখনো প্রকাশ সেভাবে করে না, আমাকে বুঝে নিতে হবে! আয়াশের ভাষ্যমতে,, “আমি তোমাকে যে ভালোবাসি সেটা কি তুমি বুঝতে পারো না? তাহলে আমাকে বলতে কেন হবে প্রতিদিন!” সেই যে একদিন রাতে আমার বাসার নিচে এসে কদম ফুল দিয়ে আমায় ভালোবাসি বলেছিলো তারপর এই দুইমাসে আর একদিনও এই ব্যাক্তি নিজ থেকে ভালোবাসি বলেনি! ওর কথা, “ভালোবাসা কি সস্তা নাকি যে বলে বলেই প্রতিদিন শেষ করবো! ভালোবাসা হলো মনের অনুভূতিগুলো জাগিয়ে তোলা, তোমাকে যদি ফিলই করাতে না পারি যে তোমায় ভালোবাসি তাইলে সারাদিন বলে বলেও কোন লাভ হবে না! আর তখন আমি প্রেমিক হিসেবে ব্যার্থ হবো!”
আজকে ওর সাথে বের হবার কথা, তবে যদি অফিস থেকে ছুটি পায় তাইলে! তাই দুপুরে লাঞ্চ করে শুয়ে শুয়ে ইউটিউবে আমাদের বাংলাদেশের সুন্দর সুন্দর নাটক গুলো দেখছিলাম এমন সময় সামিয়া আমার রুমের ভেতর চিলের মতো দৌড়ে এলো,,
সামিয়াঃ আপু জানিস বাহিরে কে এসেছে?
আমি ফোন থেকে চোখ সরিয়ে বললাম,,,
লামিঃ কে?
সামিয়াঃ হি হি,, একটা আন্টি তোর বিয়ে নিয়ে এসেছে!
আমি ওর কথা শুনে বেশ অবাক হলাম,,,
সামিয়াঃ এক ভাইয়া নাকি তোর প্রেমে মজনু হয়ে পাবনা ফেরত পাগল হয়েছে, হা হা হা!
লামিঃ ফাইযলামি রাখ, কাহিনী কি বল নাইলে ভাগ এখান থেকে আমি নাটক দেখছি ডিস্টার্ব করিস না!
সামিয়াঃ ভাইয়াটা নাকি একদিন তোকে ভার্সিটি যেতে দেখেছিলো, সেই থেকে তোকে খুঁজে হয়রান! অনেকদিন পর নাকি খুঁজে পেয়ে তোর পিছু নিয়েছিলো, আমাদের বাসা পর্যন্ত দেখে গেছে আর আজ তার মা’কেই পাঠালো! কি পাগল প্রেমিক দেখেছিস, দেখ তুই কত লাকি!
লামিঃ সিট বুকিং এর আগে এইসব পাগল প্রেমিক গুলো কই ছিলো? হুহ, এখন আসছে!
আবার নাটক দেখায় মনোযোগ দিলাম!
সামিয়াঃ তুই কি আজকে আয়াশ ভাইয়ার সাথে বের হবি?
লামিঃ দেখি, কি করি!
সামিয়াঃ করো করো, তোমারই তো সুখ! আজ ছোট বলে আব্বু- আম্মু আমার কথা ভাবেই না ( ন্যাকা কান্নার ভাঙ করে)
লামিঃ তুই যাবি এখান থেকে?
সামিয়াঃ ইশ আপু, তোর এই পাগল প্রেমিক টার জন্য আমার মারাত্মক লেভেলের মায়া হচ্ছে! আমি আর একটু বড় হলে আমিই একে বিয়ে করে সুস্থ করে তুলতাম!
লামিঃ তোকে বিয়ে করলে সুস্থ মানুষও পাগল হয়ে যাবে, এবার আমার রুম থেকে বের নে হলে লাথি দিবো!
সামিয়া ওঠে দাঁড়িয়ে,,
সামিয়াঃ আমারও কিন্তু বিয়ের বয়স হয়েছে, এই পোলার গলায় আমারেই ঝুলিয়ে দে!
বলেই দিলো দৌঁড়, আমি বিরক্তি নিয়ে আবার নাটক দেখতে লাগলাম! ১০ সেকেন্ড পরেই সামিয়া আবার আমার দড়জার সামনে এসে বলছে,,,
সামিয়াঃ আপু বিষটা কিন্তু তোরা ভেবে দেখতে পারিস!
আমি ওঠে মারতে যাবো তার আগেই পগারপার! আমি আবার নাটক দেখতে লাগলাম, আরও কিছুক্ষন পর আয়াশের কল আসলো,,,
লামিঃ আসসালামু ওয়ালাইকুম!
আয়াশঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম! কি করো?
লামিঃ নাটক দেখি, তুমি?
আয়াশঃ এইতো, বললাম না আজকে হাফ অফিস করেই ফিরে আসবো! একটু আগে এসে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করে তোমায় কল দিলাম!
লামিঃ ওহ!
আয়াশঃ খেয়েছো?
লামিঃ হুম, তাইলে কি বের হবে আজকে?
আয়াশঃ অবশ্যই, ছুটিই পাই না! আজকে কতোদিন পর পেয়েছি, এই সুযোগ টা কাজে লাগাবো না?
লামিঃ কখন বের হবো?
আয়াশঃ আমি এখন ঘুমাবো, এক ঘন্টা পর আমি তোমাদের বাসায় গিয়ে নিয়ে আসবো!
লামিঃ কিন্তু আব্বু আছে তো!
আয়াশঃ তো কি? আমি আমার বউকে নিয়ে ঘুরতে যাবো এতে বাবা কি বলবে?
_____________________
সন্ধার হবার এক ঘন্টা আগেই আমি আর সামিয়া আয়াশের সাথে বের হয়ে যাই, ভাগ্যিস আব্বু ছিলো না বাসায়! আমি আব্বুকে জমের মতো ভয় পাই, আর এই ঘারত্যাড়া লোক কে তো আমি প্রচন্ড লেভেলের ভয় পাই! আম্মু বলেছে আব্বু আসার আগে বাসায় ফিরলেই হবে! এই বিয়েতে কিন্তু আম্মুর মত ছিলো না, আব্বুর জন্যই বিয়েতে আমি আর আম্মু রাজি হয়েছি! আর আজ আব্বুকে লুকিয়ে আম্মুকে বলে বের হই, হায়রে জীবন পুরাই প্যারাময়!
যাই হোক,,, সামিয়া, আমি আর আয়াশ এসেছি একটা রেস্টুরেন্টে! আয়াশ গিয়ে আমার আর ওর জন্য কোল্ড কফি এবং আইসক্রিম অর্ডার করলো আর সামিয়া কি কি খাবে সেটা যেয়ে অর্ডার করলো! তারপর এসেই আমার পাশে বসলো,,,
সামিয়াঃ জিজু, আপনাদের কিন্তু জোশ মানিয়েছে!
আয়াশঃ তা তো মানাতেই হবে, আমার বউ যে পরিমাণ সুন্দর! আর আমিও কি কম নাকি? ( আমার কাধে হাত দিয়ে)
আয়াশের হাত সরিয়ে দিলাম, এই ছেলে করে কি রে বাবা!
সামিয়াঃ হুহ দেখতে হবে না এটা কার বোন?
আয়াশঃ আমার শালিকাও কিন্তু কম না!
সামিয়াঃ হুম হয়েছে, আর পাম দিতে হবে না!
আয়াশঃ পাম না পাম সত্যি, তো শালিকা বলো প্রেম ট্রেম করো না?
সামিয়াঃ ছি ছি,,, জিজু কি যে বলেন না, আমি এখনো বাচ্চা!
লামিঃ হু,,, তুই বাচ্চা? হু হা হু, আমার চেয়েও প্রেম ভালোবাসা এসব নিয়ে তুই পিএইজডি করা!
সামিয়াঃ এইজন্যই তো আব্বু আম্মুর থেকে লুকিয়ে তোর আর ভাইয়ার দেখা করার ব্যাবস্থা করিয়ে দেই, হুহ!
আয়াশঃ শালিকা কিন্তু আমাদের ভালোই উপকার করে, লামি বলো!
সামিয়াঃ হু হু এই উল্লুক টা কে ভালো করে বুঝিয়ে বলেন! আমার সাথে খুব বাজে বিহেব করে!
লামিঃ এই তুই কি বললি?
সামিয়াঃ ঠিকই তো বলেছি!
আয়াশঃ হয়েছে হয়েছে,, এবার থামো তোমরা! লামি তুমি আমার এই মাসুম শালিকার ওপর এমন অত্যাচার করো? নট ফেয়ার, আমার ওপর ও এমন করবে?
লামিঃ হ্যা ওর তাই তো তোমার চোখে পড়বে, আর আমাকে যে উল্লুখ বললো তার বেলা? সেটা কিছু বলবে না?
সামিয়াঃ ওইতো, জিজু জানে কার দলে টানলে বেশি লাভ হবে!
এরই মাঝে ওয়েটার খাবার নিয়ে আসে!
_____________________
সন্ধায় পর বাড়ি ফিরতেই দেখি বাড়ির পরিবেশ থমথমে! আম্মু আর আব্বু ডয়িংরুমে বসে আছে, আম্মু মুখ কালো করেই বসে আছে! বুঝতে পারছিলাম না কি হয়েছে, আম্মু মন খারাপের কারণ কি? দেখে মনে হচ্ছে, কোন কিছু নিয়ে আব্বু আর আম্মুর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে! আমাকে দেখেই আম্মু অসহায় ভঙিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,
সামিয়াঃ কি হয়েছে? সবাই এতো চুপচাপ কেনো?
আব্বুঃ কোথায় গিয়েছিলে তোমরা?
সামিয়াঃ আব্বু আয়াশ ভাইয়ার,,,,
সামিয়া এতোটুকু বলতেই আব্বু ধমক দিয়ে ওঠলেন,,,
আব্বুঃ তোমাদের সাহস বেশি হয়েছে? কেনো গিয়েছো তোমরা? ও কি আমাদের বাড়ির জামাই হয়েছে, তাহলে কেনো গেলে? উত্তর দাও! লামি, আজকে থেকে তুমি আর আয়াশের সাথে কোন যোগাযোগ করবে না! আমি ওখানে তোমাকে বিয়ে দেবো না! কালকে ওদের ডাকবো,,, ওদের দেওয়া চেইন, আংটি যা যা দিয়েছে সব ফেরত দিয়ে দিবে!
আব্বুর এই কথায় আমি জাস্ট বাকরুদ্ধ, আমার মাথা ঘুরছে! কি বলে আব্বু এসব? কেনো বলে? আয়াশকে তো আব্বুই পছন্দ করলো, তাহলে? ও কি কোন ভুল করেছে? আমি ওকে ছাড়া থাকবো কিভাবে?
লামিঃ আব্বু কি হয়েছে? আয়াশ কি কোন ভুল করেছে?
আব্বুঃ আমি আর এই বিষয় নিয়ে কোন কথা বলতে চাই না!
আব্বু কথাটা বলেই চলে গেলো বাহিরে, আমার চোখের পানি টুপটুপ করে পড়ছে! কেননা, আব্বু যা বলে তা করেই ছাড়ে,, তার ওপর আমাদের কারোর সাধ্য নেই কথা বলার! কিন্তু কেনো বললো আব্বু এসব? আব্বু যেতেই আমি আম্মুর কাছে দৌড়ে গেলাম!
লামিঃ আম্মু কি হয়েছে, আব্বু এমন কেনো বললো? বলনা কি হয়েছে? ( অস্থির হয়ে)
সামিয়াঃ আপু তুই শান্ত হো,, আম্মু তুমি বলো আব্বু আয়াশ ভাইয়ার ওপর এতো ক্ষেপেছে কেনো?
আম্মুঃ আয়াশের ওপরে কোন রাগ না, ওদের ফ্যামিলি অনেক এলোমেলো রে তাই তোর আব্বু চাচ্ছে সেখানে বিয়ে দিতে!
আমার তো চোখ দিয়ে পানি পড়েই যাচ্ছে,, সামিয়াই আম্মুকে সব টা ক্লিয়ার করে বলতে বললো,,,,
সামিয়াঃ আম্মু পুরো কাহিনী টা বলো তো!
আম্মু একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতে শুরু করলো,,,
আম্মুঃ আয়াশ আর রাইসা আপন ভাই-বোন না! মানে হলো, আয়াশের বাবা ওর মাকে ফেলে অন্য কাওকে নাকি বিয়ে করেছিলো,, পরে ডিভোর্স দিয়ে দেয়! তারপর আয়াশের মামারা বোনকে নিয়ে রাইসার আব্বুর সাথে বিয়ে দিয়েছিলো! রাইসার মা রাইসাকে ছয় মাস রেখেই মারা যায়, আর তখন আয়াশের মায়ের সাথে রায়হান শিকদারের বিয়ে হয়! এখানে বিয়ে হবার পর প্রথমে তো তারা মেনেই নিতে চায়নি আয়াশকে, মানে রাইসার দাদুরবাড়ির লোকজন! তখন আয়াশ দু’ এক বছর নানুরবাড়ি থেকেছে মাকে ছাড়া তারপর আয়াশের মায়ের জেদের কাছে হার মেনে রাইসার আব্বু রায়হান ভাই নিজের পরিবারের সাথে সম্পর্ক ভেঙে আয়াশকে নিজের ছেলের মতো করেই বড় করে তোলে! এখন তোর আব্বুর কথা হলো,,, আয়াশের বাবারই ছিলো এমন চরিত্র তাহলে তার ছেলেও যে কখনো আমার মেয়েকে ফেলে অন্য কোথাও বিয়ে করবে না এর কি কোন মানে আছে?
লামিঃ আম্মু আয়াশ অমন না!
আম্মুঃ সেটা তো আমরা বুঝছি মা, কিন্তু তোর আব্বুকে কেমনে বোঝাবো?
সামিয়াঃ তুমি বোঝাও আব্বুকে, এভাবে কি সম্পর্ক ভেঙে দেওয়া যায়?
আম্মুঃ তোর আব্বু তো এখন বলছে, এমন জানলে কখনোই এই বিয়েতে হ্যা বলতাম না আর এংগেজমেন্টে হয়েছে তাই কি, বিয়ে তো হয়নি!
সামিয়াঃ আম্মু এটা কোন কথা হলো? তুমি আপুর দিকে তাকিয়ে দেখো আপুর কি অবস্থা! আয়াশ ভাইয়া আর আপু দু’জন দু’জনকে ভালোবেসে ফেলেছে, হুট করে বললেই তো হয় না তাইনা!
সামিয়াঃ তোদের বাপ কেমন একরোখা মানুষ জানিস না? আমি কি করবো?
লামিঃ আব্বু কি ওদের জানিয়েছে যে বিয়ে ভেঙে দিবে?
আম্মুঃ মনে হয় না এখনও বলেছে, তবে বলবে!
আমি আর কিছু বললাম না,, ওঠে ঘরে চলে আসলাম! আমার আর এসব শুনতে একটুও ভালো লাগছে না! রুমে এসে দরজা লাগিয়ে অঝরে কাঁদতে লাগলাম!
লামিঃ আমি এখন কি করবো, আয়াশ জানলেই বা কি করবে? ও কি মেনে নিতে পারবে ব্যাপার টা? এই জন্যই কি ও সেদিন বলেছিলো ওর জীবনের তিক্ততার পেছনে অনেক কষ্ট লুকিয়ে আছে! আমি তো বুঝতেই পারিনি ব্যাপারটা এরকম হবে! আমার তো এখন কিচ্ছু ভালো লাগছে না!
কিছুক্ষন পর দেখি আয়াশের কল এসেছে, তাহলে কি ও কিছু জানতে পারলো? এখন কি হবে? ফোনটা বাজতে বাজতে কেটে গেলো, আবার কল বেজে ওঠলো! এবার গলার স্বর পরিষ্কার করে ফোন ধরে কথা বলতে থাকলাম,,,
লামিঃ হ্যালা!
আয়াশঃ ফোন ধরছো না কেনো?
লামিঃ এমনি!
আয়াশঃ তোমার ভয়েস এমন শোনা যাচ্ছে কেনো, কি হয়েছে?
লামিঃ কই, কিছু হয়নি তো!
আয়াশঃ আমাকে ফাঁকি দিচ্ছো? তোমার কখন কি হয় আমি বুঝতে পারি না? তোমাকে তোমার থেকেও বেশি চিনেছি ম্যাডাম, সময় টা খুব কম হলেও তোমাকে যে এতো সহজে এতোটা আপন করতে পারবো কখনো ভাবিনি!
লামিঃ আয়াশ যদি কখনো তুমি আর আমি আলাদা হয়ে যাই, তুমি কি মেনে নিতে পারবে?
আয়াশ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে,,,
আয়াশঃ তুমি কোন কথার ভিত্তিতে এটা বলছো আমি জানি, তুমি কি চাও সেটা বলো!
লামিঃ মানে?
আয়াশঃ তোমার আব্বু ফোন করেছিলো, সে চায় না আমার মতো পালিত ছেলের সাথে তোমাকে বিয়ে দিতে! তুমিও কি তোমার আব্বুর সাথে একমত?
আমার এবার সত্যি খুব কষ্ট হচ্ছে ওর কথায়, আবারো মন খারাপের মেঘগুলো জরো হয়ে ঝরতে লাগলো! ওকে যেমন হারাতে চাই না, আব্বুর কথাও তেমন ফেলতে পারি না! তবে এখন কি বলবো, আমার আর কি করার আছে? আব্বু কি আমাকে হাতের পুতুল পেয়েছে, একবার বিয়ে দিতে চাপ দেয়, আবার ছেড়ে দিতে বলে!
আয়াশঃ আমি মনে হয় আমার উওর পেয়ে গেছি, নিরাবতাই সম্মতির লক্ষন! তুমি তোমার আব্বুর কথাই রাখবে তাইতো? ঠিক আছে রাখছি!
লামিঃ কালকে একটু দেখা করতে পারবে?
আয়াশঃ আর দেখা করে কি করবে? যা শোনার সেটা তো শুনেছোই! তুমি তো মেনে নিতে পারবে না, সো এখানেই আমাদের কন্টাক্ট শেষ!
লামিঃ প্লিজ আয়াশ!
আয়াশঃ বাই!
আয়াশ বাই বলেই ফোন টা রেখে দিলো, আমি এতোবার ফোন দিলাম সে কোন মতেই ধরলো না! বাজতে বাজতে এক সময় ফোন বন্ধই করে দিলো! আমার তখন যতটা কষ্ট হয়েছিলো আব্বুর কথা শুনে তার চেয়েও বেশি কষ্ট হচ্ছে আয়াশের এমন ব্যাবহারে! আমি তো কোন মতেই ওকে ছাড়তে পারবো না, আবার আব্বুর কথাও ফেলতে পারবো না! কিইবা করবো আমি? যেভাবেই হোক আমার আয়াশের সাথে দেখা করতেই হবে!
আজকে হয়তো সারা রাতই আমার চোখের পানি আমার বন্ধু হবে! মনের কষ্ট গুলো নিবারন করার ক্ষমতা গুলো একমাএ তারই থাকে যার জন্য মনের গহীনে কষ্টগুলো জরো হয়ে থাকে! আয়াশই দূর করতে পারতো কিন্তু সে তো দূর করতে চাইলো না! আদৌ কি সে আমাকে ভালোবাসে তাইলে এভাবে কষ্ট দিচ্ছে কেনো? এতোবার ডায়েল করছি কিন্তু সেই এক বিশ্রী মহিলার কন্ঠই বারবার শুনতে হচ্ছে! আর ভালো লাগছে না আমার, আম্মু আর সামিয়া অনেকবার ডাকতে এসেছিলো কিন্তু আমি রেগে সবাই কে আসতে বারণ করেছি আমার রুমে! নিজের চুলগুলো এখন ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে! আচ্ছা, আয়াশও কি তাহলে আমার মতোই কষ্ট পাচ্ছে? পাবে তো অবশ্যই, ও তো আমাকে নিজের থেকেও ভালোবাসে এখন! আমার মাথা প্রচন্ড ব্যাথা করছে, আর কিছু ভাবতে পারছি না!
#চলবে…
[ , হ্যাপি রিডিং❤️]